অস্তিত্বে_তুমি পর্ব ২১

#অস্তিত্বে_তুমি
#পর্ব_২১
#সুলতানা_পারভীন

সকালের প্রথম আলোর কিরণ চোখে এসে পড়তেই নীলা নির্ঘুম চোখ জোড়া পিটপিট করে মেলে সকালের প্রথম সূর্যটা দেখতে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেললো। ঘুম আসছে না দেখে বিছানা ছেড়ে উঠে বসতে গিয়ে টের পেল ছোট্ট জিশান তার গুঁটিগুঁটি দু হাতের বাঁধনে ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। নীলা অপলকে কয়েকটা মিনিট জিশানের ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবার চেষ্টা করলো। এই ছোট্ট বাচ্চাটার কি এই মূহুর্তে নিজের বাবা মায়ের আদরে ঘুম থেকে জেগে ওঠার কথা না? নীলা ছোট্ট করে জিশানের কপালে একটা আদরের পরশ বুলিয়ে দিয়ে আস্তে করে জিশানের হাতটা সরিয়ে বিছানা থেকে উঠে জিশানের গায়ে চাদর টেনে দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। সকালের স্নিগ্ধ বাতাস গায়ে মেখে নীলা ভাবার চেষ্টা করছে। আসলে কোনটা সত্যি? যেটা নিজের চোখে সাত বছর আগে দেখেছিল সেটা? নাকি জিহানের মুখে কাল রাতে যা শুনেছে সেটা সত্যি?

-এই যে ম্যাডাম? এতো ভোরে ভোরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কি করছেন? তাও আবার কোন এক ভাবনার দুনিয়ায় হারিয়ে কি এতো ভাবছে মেয়েটা? এই নীল? বলছি কি এতো ভাবছো আমাকে বলা যাবে?

খোলা বারান্দায় শীতল বাতাসে গা এলিয়ে দিয়ে সাত বছর আগের সেদিনের বিয়ের দিনটার কথা মনে করার চেষ্টা করছিল নীলা। এর মধ্যেই পিছন থেকে কারো জড়িয়ে ধরায় চমকে উঠে জিহানের উপস্থিতি টের পেল নীলা। জিহানের হাতে হাত রেখে কিছু বলার আগেই ঘাড়ে জিহানের ঠোঁটের আলতো স্পর্শ পেয়ে আরেকবার কেঁপে উঠলো মেয়েটা। জিহান নীলার জবাবের অপেক্ষা না করেই একটু পর পর আলতো করে নীলাকে ছুঁয়ে দিচ্ছে ঠোঁটের আদরে। নীলা কেঁপে উঠছে প্রত্যেকবার জিহানের এমন আলতো স্পর্শে।

-কিছু তো বলো বউপাখি? কি এতো ভেবে ভোর ভোর উঠে এখানে দাঁড়িয়ে আছো? রাতেও পিচ্চিকে মাঝখানে শুইয়ে দিয়েছ, আর ঘুম ভাঙ্গতেই সকাল হতে না হতেই পালিয়ে বেড়াচ্ছ? ব্যাপারটা কি হ্যাঁ? এতো ফাঁকাবাজি মানবো না বুঝলেন ম্যাডাম?

-ঘুমালে তবে না ঘুম ভাঙ্গার প্রশ্ন আসতো তাই না?

-ঘুমাও নি মানে কি? সারা রাত জেগে জেগে মশা মারছিলে? ঘুম আসছিল না তো টুক করে আমার বুকে মুখ লুকিয়ে নিতে। সারারাত এই বিচ্ছুটা তোমাকে এমন জাপটে ধরে ঘুমিয়েছে যে আমার নিজেরই জেলাস লাগছিল। আমার বউকে আমিই জড়িয়ে ধরতে পারলাম না ঠিক করে—।

-জিহান?

-ওকে বাবা। দুষ্টুমি করবো না। কিন্তু ঘুমাও নি কেন রাতে? আর এতো ভোরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কি প্ল্যান করছ? শোনো মেয়ে আমাকে ছেড়ে পালানোর প্ল্যান ছাড়া যা ইচ্ছে ভাবতে পারো। বাট আমাকে রেখে এক পাও কোথাও যাওয়া চলবে না বুঝলেন?

-প্রত্যেকটা গল্পের দুটো করে সাইড থাকে জিহান। এক, যেটা আমরা দেখি, আর দুই, যে দৃশ্যটা, যে অংশটুকু আমাদের সবার চোখের আড়ালেই থেকে যায়। এই ছোট্টো জিশানের গল্পের একটা অংশ তো কাল আপনি আমাকে শোনালেন, যে অংশটুকু আপনি দেখেছেন, যে অংশে আপনি ছিলেন, আপনার পরিবার ছিল। গল্পের অন্য দৃশ্যটা শুনবেন জিহান? তাহলে কিছুটা হলেও ধোঁয়াশা কাটবে আপনার। অন্তত কাউকে অন্ধভাবে ঘৃণা করবেন না।

-মানে?

অবাক কৌতূহলে জিহানের হাতের বাঁধনটা কিছুটা হালকা হতেই নীলা জিহানের দিকে ঘুরে তাকালো। জিহান কিছুটা বিব্রত চোখেই দেখছে নীলাকে। মেয়েটা কি বলতে চাইছে সেটাই বুঝতে পারছে না জিহান।

-তখন আমি কোন ক্লাসে পড়ি? উমমম সেভেন কি এইটের কথা। ভাইয়া প্রথমবার বাবাকে একটা ছবি দেখিয়ে বলে ছবির এই মেয়েটাকেই ভাইয়া বিয়ে করবে। ছবির মেয়েটাকে দেখে আমিও কি খুশি! এক দেখাতেই ভাবি বলে মেনে নিয়েছি। বাবাও প্রথমে আপত্তি করে নি, কিন্তু কি হলো কে জানে ছবির সেই মেয়েটার ফ্যামেলির কথা শুনে আর বিয়েতে রাজি হলেন না বাবা। ভাইয়াও জেদ ধরে তার পছন্দের মেয়েটাকেই বিয়ে করবে। বাবা নিহার ভাবির সাথে বিয়ে করতে রীতিমতো জোর করে ভাইয়াকে। ভাইয়াও নাছোড়বান্দা। ভাবির বাবার সামনেই জানিয়ে দেয় বিয়ে করলে কায়রাকেই করবে। তারপর একসময় ভাইয়ার জেদের কাছে হার মানে বাবা। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করা হয়। হল বুক করা হয়, আত্মীয় স্বজন, পরিচিত, অপরিচিত, বিজনেসের ক্লাইন্ট বলতে গেলে গোটা শহরকে জানিয়ে ভাইয়ার বিয়ের আয়োজন করেছিল বাবা জানেন?

-তাহলে লাস্ট মূহুর্তে কি এমন হয়েছিল যে কায়রার বদলে নিহারকে বিয়ে করতে হলো তোমার ভাইয়াকে?

-আমি জানি না। আমরা সেদিন ম্যারেজ হলে বরযাত্রী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি অনেকটাই ছোটো ছিলাম জিহান। কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে। ভাইয়াকে নওশা সাজিয়ে আমরা কত লোক বউ আনতে গেছিলাম সেদিন। গিয়ে দেখি ম্যারেজ হলে কেউ নেই। পাত্রী পক্ষের আত্মীয় স্বজন যারা ছিল তারা বলতে গেলে সবাই চলে গেছে। যে দু একজন ছিল তারাও জানে না কি হয়েছে। কয়েকজন বললো বিয়ে হবে না, বউ চলে গেছে।

-হোয়াদ্দা হেল! চলে গেছে মানে কি? কায়রা সিক হয়ে পড়েছিল। আমরা সবাই ওকে নিয়ে হসপিটালে ছুটোছুটি করছি আর কেউ একজন বলে দিলো বিয়ে হবে না, বউ চলে গেছে?

-এর পর কি হয়েছে আপনি নিজেই কল্পনা করতে পারছেন আশা করি। আমাদের ইনভাইটেড সব গেস্ট চলে এসেছিল ম্যারেজ হলে। আত্মীয় স্বজন, বিজনেস রিলেটেড লোকজন, প্রতিবেশী। বাবার সম্মান বাঁচাতে শেষে বাবার পছন্দের মেয়েটাকেই বিয়ে করতে বাধ্য হয় ভাইয়া। এবার বলুন তো এখানে ভাইয়ার দোষটা কোথায়? যাকে বিয়ে করবে বলে এতো যুদ্ধ করে বাবাকে রাজি করালো বিয়ের আসরে গিয়ে যদি শোনে সে চলে গেছে, অন্য কারো সাথে সুখে সংসার করতে ভাইয়াকে ছেড়ে চলে গেছে, তাহলে সেই লোকটা সেই মূহুর্তে কি করতে পারে? আমরা কেউই তখন বুঝতে পারি নি কেউ পুরো ব্যাপারটা এভাবে সাজিয়েছে।

-অন্য কারো সাথে সুখে সংসার করতে চলে গেছে? বাহ! এক কাজ করো নীল, রেডি হয়ে নাও। ভিজিটিং আওয়ার দশটায় শেষ হয়ে যায়। দশটার মধ্যে না গেলে দেখতেও পারবে না কায়রা কেমন সুখের সংসার করছে অন্য কারো সাথে, অন্য কোন জগতে।

-কোথায় যাবো আমরা জিহান?

-হয়তো তোমার ভাইয়ার আসলেই দোষ ছিল না। আবরার ভাইয়া কায়রাকে কতোটা ভালোবাসতো সেটা আর কেউ না জানুক আমি দেখেছি। বিয়ের এতো বছর পরও নিহার ভাবিকে দেখে বুঝতে পেরেছি ভাইয়ার মনে আজও কায়রার নামটাই আছে আগের মতোই। কিন্তু আমার বোনটা কখনো উনাকে ধোঁকা দেয় নি এটাও তো উনার জানা উচিত। নিজের ভালোবাসাকে আর কতদিন এভাবে ঘৃণা ভরেই মনে করবে? চলো, কায়রাকে দেখে আসবে। কি শান্ত হয়ে লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমিয়ে আছে মেয়েটা দেখবে চলো। তুমি রেডি হয়ে নাও নীল। আমি জিশানকে ডেকে দিচ্ছি। ওকেও তো রেডি করিয়ে দিতে হবে।

কথাটা বলেই জিহান আর অপেক্ষা না করে নীলার কপালে ছোট্ট করে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে রুমে চলো এলো। আর নতুন সকালের নিস্তব্ধতার মাঝে নিজের মনের হাজারটা প্রশ্ন নিয়েই নাড়াচাড়া করছে নীলা। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা যা এতোগুলো মানুষের জীবন ওলোটপালোট করে দিল, তার দায়টা কার? শুধুই সামান্য একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের? নাকি পুরো ব্যাপারটাই কারো সাজানো? কারো জেনে বুঝে সাজানো ফাঁদ, যা এক নিমিষে এতোগুলো জীবন তছনছ করে দিল?

নীলা আর জিহান এই মূহুর্তে দাঁড়িয়ে আছে একটা কেবিনের বাইরে। কাঁচের দেয়ালের বাইরে থেকেও ভিতরের ঘুমন্তপুরীর ঘুমন্ত রাজকন্যাটিকে দেখতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না ওদের। ছোট্ট জিশান গুঁটিগুঁটি পায়ে বেডে শুয়ে থাকা মেয়েটির শিওরে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে কিছু বলছে। বাইরে থেকে শোনা না গেলেও জিহান জানে জিশান এতো উৎসুক হয়ে কার গল্প করছে নিজের মায়ের কাছে। নীলার গল্প। জিহান ম্লান হাসি ফুটিয়ে নীলার দিকে তাকাতেই দেখতে পেল মেয়েটা স্তব্ধ হয়ে বেডে মরার মতো শুয়ে থাকা এতো এতো তার, মাস্ক, নলে ডুবে থাকা কায়রাকেই দেখছে। ঠিক দেখছে বললেও ভুল হবে, হয়তো আবার ভাবনার জগতে হারিয়ে গেছে মেয়েটা। হাসপাতালে আসার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত নীলার ধারণা ছিল কায়রা হয়তো সবার আড়ালে কোথাও গিয়ে আছে বা কোথাও চলে গেছে। কিন্তু কায়রাকে এই অবস্থায় দেখতে হবে সেটা কল্পনারও বাইরে নীলার।

-কায়রা আপুর এই অবস্থা কি করে হলো জিহান?

-ওই যে বললে সুখে সংসার করছে, এটাই ওর জগত গত ছয় সাতটা বছর ধরে। বিয়ের আসর থেকে অসুস্থ কায়রাকে হাসপাতালে নেয়ার পর আমরা জানতে পারি একটা নতুন জীবন আসতে চলেছে পৃথিবীতে। মা ভুল বুঝে গায়েও হাত তোলে আপুর।আমি বাধ্য হয়ে ওদের চুরি করে বিয়ে করার কথাটা বলে দিই সবাইকে। মামা মামি মাকে সব বুঝিয়ে শান্ত করে ঠিকই, ততক্ষণে খবর আসে তোমার বাবা বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েছে। সেই আসরে তোমার ভাইয়া কায়রার বদলে নিহারকে বিয়ে করে। কথাটা শুনেই কায়রা আবার সেন্সলেস হয়ে যায়। বাবা বারবার তোমার বাবা আর আবরারের সাথে যোগাযোগ করারও চেষ্টা করে। হাহ।

-তারপর? তারপর কি হলো জিহান?

-তারপর? তারপর আত্মীয় স্বজনদের হাজার রকমের কথা শুরু হয়। সবাই ততক্ষণে জেনে গেছে আবরার আর কায়রার বিয়েটা হয়নি, এবং কায়রা প্রেগনেন্ট। আমার বোনের সন্তানটা পৃথিবীতে আসার আগেই জারজ ট্যাগ পেয়ে যায়। কেউ বলে বাচ্চাটা এবোর্ট করে ফেলতে, কেউ বলে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে ফেলতে, একেকজনের একেক কথা। তবু কায়রা সিদ্ধান্ত নেয় ও বাচ্চাটা জন্ম দিবে। বাচ্চাটা পৃথিবীতে আসলে তোমার ভাইয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। তা আর হয়ে ওঠে নি। ও কোথাও বের হতে পারতো না,লোকের কথার খোঁচায়। শেষের দিনগুলো বলতে গেলে ঘরবন্দী কাটিয়েছে কায়রা। একদিন একটা ছোট্ট চিরকুট লিখে নিজের রুমের ফ্যানের সাথেই ঝুলে সুইসাইড করতে চায়—-।

-হোয়াট! কেন?

-কি হয়েছিল আমি নিজেও জানি না। চিরকুটে লেখা ছিল ‘আমাকে ক্ষমা করে দিও।’ ডক্টররা বলেছে এতো ট্রমা নিতে না পেরে ডিপ্রেশন থেকে কাজটা করেছে কায়রা। ফ্যানের সাথে নিজের ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁসি না দিলেও অতিরিক্ত ব্লাড লসের কারণেও মরে যেত ওইদিন কায়রা যদি না আমি মাঝরাতে কায়রাকে ডাকতে যেতাম। নিজের হাতের রগটাও কেটে ফেলেছিল কায়রা। পুরো রুমে ভাঙ্গার কাঁচের বোতলের টুকরো ছড়িয়ে ছিল। আমিও কায়রার রুমে কিছু ভাঙ্গার শব্দ শুনেই এসেছিলাম। নয়তো সেদিন কায়রার সাথে জিশানকেও হারাতাম হয়তো।

-ফাঁসিও দিয়েছে আবার হাতও কেটেছে? অদ্ভুত!

-বাবা আর মামার সাথে আমিও কায়রা আপুকে নিয়ে হসপিটালে ছুটে যাই। ডক্টররা জানায় অলরেডি দেরি হয়ে গেছে। কায়রার ঘাড়ের একটা হাড় ভেঙ্গে গেছে ফাঁস দেয়ার কারণে। অনেকটা ব্লাডও লস হয়েছে হাত কাটার কারণে। ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দেয় হয়তো কায়রাকে বাঁচানো যাবে নয়তো বাচ্চাটাকে। অনেকটা প্রিম্যাচিউর স্টেজেই জিশান দুনিয়াতে আসে।

-কায়রাপু?

কতাগুলো বলতে বলতে জিহানের চোখের পানিগুলো গড়িয়ে পড়ছিল গাল বেয়ে। নীলা জিহানের পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিহানের হাত জড়িয়ে ধরতেই জিহান কাচের দেয়াল ভেদ করে কায়রা আর জিশানের দিকে তাকালো।

-অপারেশন করে জিশানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে পারলেও কায়রাকে শেষ রক্ষা করতে পারে নি ডাক্তাররা। হয়তো এটাই উপর ওয়ালা লিখে রেখেছিল ওর কপালে। ঘাড়ের ভাঙ্গা হাড়টা শ্বাসনালীর উপরে এমনভাবে চেপে বসেছিল যে কায়রার ব্রেইনে অক্সিজেন না পৌঁছানোর কারণে কায়রা কোমায় চলে গেছে। ঘুমন্ত পুরীর রাজকন্যার ঘুম ভাঙলেও, কায়রার কোনোদিন ঘুম ভাঙ্গবে কিনা সেটা ডাক্তাররাও বলতে পারে না। এই ছয় সাতটা বছর একইভাবে এইসব তারঘেরা কাঁচের দেয়ালে গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে আছে আমার বোনটা। এই ঘুম আধো কোনোদিন ভাঙ্গবে কিনা এক উপরওয়ালাই জানে।

জিহানের কথাগুলো শুনতে শুনতে নীলারও চোখের বৃষ্টিরা বাঁধ ভেঙ্গেছে। আর বারবার মনে হচ্ছে কিছু একটা অন্যায় হয়েছে এই মানুষগুলোর সাথে, এই বাচ্চাটার সাথে। কিন্তু কি সেটা?

অন্যদিকে, জিশানকে জিহানের গেস্ট হাউজে দিয়ে গজগজ করতে করতে বাড়িতে ফিরে এসেছে মুগ্ধা। আর বাড়িতে পা রাখার সাথে সাথেই সশব্দে একটা চড় গালে এসে পড়তেই মুগ্ধা রীতিমতো ছিটকে ফ্লোরে এসে পড়লো। আর কারো রাগি কণ্ঠস্বরটা কানে এসে বাজতেই ভয়ে চুপসে গেল মুগ্ধা।

-মাত্র ক’টা দিন, মাত্র ক’টা দিন একটু এদিকে নজর দিতে পারি নি আর ওমনি সব গন্ডগোল করে দিলি? এবার কি হবে? জিশানকেও নিয়ে ওদের হাতে দিয়ে এসেছিস। শেষ চাল দেয়ার গুঁটিটাও ওদেরকে দিয়ে দিলি। এবার আমি ওই জিহানকে মাত দিবো নাকি ওই খন্দকারদেরকে? তোর নির্বুদ্ধিতার জন্য যদি আমার এতোদিনের পরিশ্রম মাটি হয়ে যায় মুগ্ধা তাহলে আমি ভুলে যাবো তোর আর আমার একটা রক্তের সম্পর্কও আছে।

চলবে, ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here