আধারের মায়াবী ডাক পর্ব -১১

#আধারের_মায়াবী_ডাক
#লেখক_তুষার_আহমেদ_কাব্য
#পর্ব_১১

সকাল বেলা তামিম আর বাকিরা ফিরে আসে৷ গ্রামবাসী রাতের সব কিছু বলে তাদের। আয়েশা আর নাদিয়া হাসতে শুরু করে কারন কাব্য এমন সিচুয়েশনে কখনো পড়েনি।

কিন্তু হঠাৎ একজন বলে কাব্য মেয়েটাকে অনেক্ষন দেখছিলো। এটা শুনে সবার হাসি থেমে যায়। অতীত কে আবার ফিরিয়ে আনবে?

অন্যদিকে কাব্য একটা আম গাছের উপর বসে আছে । হঠাৎ…

:ওই!!!!(নিচ থেকে)

কাব্য খেয়াল করে না

:আরে ওই!!!

কাব্য গুরুত্ব দেয়না।

:আরে ওই angry bird!

কাব্য রেগে নিচের দিকে তাকায়। আরে এতো সেই মেয়েটা।কাল রাতে যাতে একটুর জন্য মেরে ফেলেনি।

:আরে বোবা নাকি। আচ্ছা শোনো তোমার পাশেই খেজুর গাছে একটা কলসি ঝুলানো,সেটা ফুটো করো!(মুখে বলে আর ইশারায় দেখায়।)

কাব্য তাকিয়ে দেখে আসলেই একটা কলসি ঝুলছে।কিন্তু কাব্য আবার নিজেত মতো বসে থাকে

:কি হলো? দাও?(মেয়েটা)

কাব্য কথা এড়িয়ে যায়। এবার মেয়েটা নিচ থেকে বার বার বলতে থাকে। এক সময় কাব্য রেগে যায় আর ঘুরে কলসি তে একটা টোকা দিতেই কলসি ফেটে যায় আর সব রস মেয়েটার গায়ে পড়ে

:ষ্টুপিড এটা কি করলে! ইস সব চুলের ১২ ট বেজে গেলো! you!!! তোমাকে আমি দেখে নেবো(যেতে যেতে) তোমাকে যদি আমি মজা না দেখিয়েছি আমার নাম ও কথা নয়!

বলতে মেয়েটা চলে যায়।
কাব্য আবার নিজের মতো বসে থাকে।

গ্রামে…

:আপু কাব্যের কোন অতীত নিয়ে তোমরা এতো চিন্তায়?(তারিন)

:না কিছু না!(নাদিয়া)

:প্লিজ বলুন!

:আচ্ছা শোনো ছোট করে বলি।(আয়েশা)

” ২বছর আগে, কাব্য নিজের মতো দিন কাটাচ্ছিলো। আমাদের সাথে কলেজ থেকে ফিরে বিকেলে চুপ করে সময় কাটানো তার রুটিন। ভালোই যাচ্ছিলো দিন। কিন্তু একদিন.. কলেজ থেকে ফেরার সময় কাব্যের ধাক্কা লাগে নিধির সাথে। কাব্য তেমন খেয়াল না করলেও মেয়েটা কাব্যকে পছন্দ করে ফেলে। নিধি আমাদের কলেজেই পড়তো অনেক কস্ট করে কাব্যের সাথে বন্ধুত্ব করে। ধীরে ধীরে তা গভীর হয়।কাব্যের ও নিধিকে ভালো লাগতে থাকে। এক সময় তা ভালোবাসা হয়ে যায়। কাব্য নিধির জন্য সব করতো। যদিও কাব্য কখনো বলেনি ভালবাসি।কারন সে এটার মানেই জানতো না। একদিন কাব্যের শত্রু জ্বিন নিধির উপর নজর দেয়।কাব্য সেটা খেয়াল করে আর এক রাতে সে সেই জ্বিন কে মারতে থাকে৷। জ্বিন টি নিজের সব শক্তি দিয়েও কাব্যের সামনে টিকতে পারেনা।
তখন সে চালাকি করে নিধির বাসার সামনে এসে কাব্যের সাথে লড়তে থাকে আর রুপ বদলে নিজেকে নিধির বাবার রুপ দেয়
নিধি বাসা থেকে বের হয়ে দেখে কাব্য তার বাবাকে মেরে ফেলছে।

তখনই নিধি কাব্যের তলোয়ার টান দিয়ে সেটা কাব্যের পিঠ দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়। হেরে যায় ভালোবাসা। এরপর বিশাল একটা বিষ্ফোরন হয় যাতে এলাকার সব মানুষ মারা যায়৷ চারদিকে আগুন তখন আমরা সেখানে যাই। গিয়ে দেখি কাব্য রক্তাক্ত হয়ে উঠে দাঁড়ায়, হাতে সেই তলোয়ার। নিধি মারা গেছে। কাব্য ও অনেক আহত। শেষ অব্দি কাব্য ও নিচে পড়ে যায়। এরপর কাব্য বন্দি হয়ে যায় এই তলোয়ারে। ”

শুনে তারিন চুপ হয়ে যায়। এই জন্যই কাব্যের মনে অনুভুতি নেই।

অন্যদিকে তামিম গাছের কাছে যায় সুতোটা নিয়ে গাছে বেধে দেয়

:কি করছিস?(কাব্য পেছন থেকে)

:এবার আমাদের হাতে ৪ মাস সময় আছে। এর মধ্যেই কিছু করতে হবে(তামিম)

:হুম চল।(কাব্য)

কাব্য আর তামিম গ্রামের দিকে হাটা শুরু করে

:কাব্য?(তামিম)

:হুম(কাব্য)

:কেন জানি মনে হচ্ছে কেউ আমাদের দেখছে।

কাব্য কিছু না বলে হাটতে থাকে। গ্রামে পৌঁছে দেখে নাদিয়া আর তারিন বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে হাসাহাসি করছে আর আয়েশা গ্রাম ঘুরে দেখছে।

কাব্য আবার ঘুরে বেরিয়ে যায়। তার এখানে একদম ভালো লাগে না। মাঠের দিকে যাবে তখনই…

:ওই!(কথা পেছন থেকে).

কাব্য ঘুরে তাকায়। তাকাতেই এক বালতি পানি কাব্যের গায়ে ছুড়ে মারে কথা।ভিজে যায় কাব্য

:বলেছি না মজা দেখাবো,কেমন লাগে এখন?(কথা)

কাব্য রেগে যায় কিন্তু কিছু না বলে হাটা শুরু করে। কথা দ্রুত এসে পাশে পাশে হাটতে শুরু করে

:আচ্ছা সরি। এবার তো সামন হয়েছে। আমি কথা! আর তুমি?(কথা)

:কাব্য!(কাব্য)

:nice name.অনেক মিল। কথা কাব্য কাব্যকথা হি হি

কাব্য হাটতে থাকে।
:বন্ধু হই?(কথা হাত বাড়ায়)

কাব্য একবার তাকিয়ে হেটে চলে যায়। কথা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

অন্যদিকে

পাশের গ্রামে…

রাত ১০টা।

বাজার শেষ করে বাসার দিকে ফিরছে রহিম। আজ অনেক দেরী হয়ে গেছে। পুরোটা সাইকেল নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছে রহিম। আঁকাবাকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। এই রাস্তা টা দিয়ে যেতে কেমন যেন একটা ভয় ভয় করে…

সামনে ৩রাস্তার মোড়। আর তার মাঝে একটা বড় বটগাছ। অনেকেই বলে গাছ টা ভালো না।
তবে কেউ এখনো কিছু দেখেনি।

রহিম ৩রাস্তার মোড় টা কাছে আসতেই রহিম দেখতে পায় দূরে বট গাছে কি যেন একটা ঝুলছে.. কোনো লম্বা কিছু একটা। ঘন কুয়াশার জন্য দেখা যাচ্ছে না ভালো ভাবে।

রহিম যখন গাছটার একদম কাছে চলে আসে তখনই সে গাছটার দিকে তাকায়,সাথে সাথে রহিমের সাইকেল থেকে পড়ে যায়। তার ঠিক সামনে সেই গাছটায় একটা মেয়ের লাশ ঝুলছে

পড়নে একটা শাড়ি,খোলা চুল,চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসছে আর জ্বিব টা বেরিয়ে বুক অব্দি চলে এসেছে।

রহিম দ্রুত সাইকেল তুলে জোরে টান দিয়ে সেখান থেকে পালাতে থাকে।

হঠাৎ তার কানে আসে পেছনে থেকে একটা হাসির শব্দ

পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে ঝুলন্ত মেয়েটা হাসছে তার দিকে তাকিয়ে…

রহিম আর ঠিক থাকতে পারে না আর জ্ঞান হারায়…

অন্যদিকে

ভোর বেলা তারিন ঘর থেকে বের হয়। উঠানে যেতেই তার দম আটকে যায়, তার ঠিক সামনে দাড়িয়ে আছে বিশাল আকারের একটি বাঘ। গড়গড় শব্দ আসছে।

তারিন ভয়ে চোখ বুজে ফেলে। ৩সেকেন্ড পর চোখ খুলে দেখে সেখানে কেউ নেই।তারিন দৌড়ে ঘরের ভেতর চলে যায়……

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here