#আধারের_মায়াবী_ডাক
#লেখক_তুষার_আহমেদ_কাব্য
#পর্ব_১২
সকাল বেলা।
আয়েশা পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে…
:নিধি মারা গেছে এই গল্প না বললেও পারতে!(নাদিয়ে পেছন থেকে)
:কাব্যের জন্য ও মারা গেছে,আর সত্যি টা সামনে আসুক চাই না আমি(আয়েশা)
:নিধি এখন কেমন আছে?
:ভালোই থাকবে,স্বামী সংসার করছে হয়তো
বলেই আয়েশা চুপ হয়ে যায়।
জন্যদিকে… কাব্য ঘুমিয়ে আছে। কথা কিভাবে যেন তার রুমে চলে আসে। কাব্য যে এখানে থাকে তা কথা জানতোনা। কিন্তু এখন কাব্যকে দেখে মাথায় দুস্ট বুদ্ধি আসে।
এক জগ পানি নিয়ে এসে দুরে দাঁড়ায়। ভাবলো দৌড়ে এসে পানি ছুড়ে মারবে.. সেই অনুযায়ী দৌড়ে যেতেই পায়ের সাথে লম্বা স্কার্টটা পেচিয়ে কথা সোজা কাব্যের গায়ের উপর পড়ে। কাব্য ঝট করে উঠে যায়। কথা এখনো তার গায়ের উপর
:হ্যালো গুড মর্নিং (হেসে বলে কথা)
কাব্য ভ্রু কুচকে তাকায়। কথা দ্রুত উঠে পালিয়ে যায়। কাব্য বিরক্ত হয়ে উঠে ঘর থেকে বের হয়। হঠাৎ দেখল উঠানের এক কোণে বিশাল একটা বাঘের পায়ের ছাপ। ভালো করে দেখার আগেই তা উধাও হয়ে যায়। কাব্য একটু অবাক হয়।
তারপর ফ্রেশ হতে চলে যায়।
কিছুক্ষন পর সবাই এক সাথে নাস্তা করতে বসে। সবাই কে ভালো ভালো খাবার দিলেও গ্রামবাসী কাব্যকে দেয় কাচা মুরগী,৪০টা রুটি, বিশাল এক পাতিল গোস্ত,হাড়গোড় এসব
কাব্য এসব দেখে ভ্রু কুচকে এদিকওদিক তাকাতে শুরু করে। সে এসব খাবে?
তামিম হাসতে থাকে
:চাচা ওর কাছে জ্বিনের শক্তি আছে,ও জ্বিনের মতো এসব খায়না।😄😄(আয়েশা)
কাব্য রাগী চোখে সবার দিকে তাকায়। সবাই দ্রুত এসব সরিয়ে ভালো খাবার দেয়।
নাস্তার পর তামিমের কাছে আসে তারিন। ভোরে তার দেখা সেই রহস্যময় বাঘটার ব্যাপারে বলে তামিম কে। তামিম চুপ করে থাকে। তার কাছেও এর কোনো জবাব নেই।
হঠাৎ বাইরে থেকে একটা চিৎকারের শব্দ আসে।তামিম বাইরে তাকিয়ে দেখে একটা লোক তার ছেলেকে কোলে নিয়ে ছুটছেন। চোখে মুখে ভয়। তামিম দ্রুত উঠে লোকটা কাছে যায়
:কি হয়েছে? (তামিম)
:দেখুন আমার ছেলের কি অবস্থা!(বলেই লোকটা ঘুরে তাকায়)।
তামিম দেখে আতকে উঠে। ছেলেটার শরীর একদম শুকনো। মুখটা ভয়ানক রুপ ধারন করছে। মুখের অনেক জায়গায় মাংস নেই।
তামিম ১ পা পিছিয়ে যায়। তখনই ছেলেটা চিৎকার দিয়ে উঠে।
লোকটা আবার ছেলেটাকে নিয়ে ছুটতে থাকে ।
তামিম দাড়িয়ে থাকে। তারপর দৌড়ে লোকটা কাছে যায়।
হঠাৎ দেখল লোকটা দাঁড়িয়ে আছে
কাছে যেতেই দেখল লোকটা কাদছে। সামনে গিয়ে দেখে ছেলেটা মারা গেছে।
কি হচ্ছে এসব। এমন টা হবার কথা না।
তামিম দ্রুত মাঠের গাছটির সামনে যায়। গিয়ে অবাক।৷ সেই সুতো দিয়ে গাছকে ৭ বার পেচিয়েছিলো।কিন্তু কে যেন এক প্যাচ খুলে সুতো কেটে দিয়েছে। নিচে পড়ে আছে। তামিম দ্রুত সুতো টা আবাত জোড়া দিয়ে ৭ম প্যাচ দিয়ে দেয়।
কে করতে পারে এই কাজ? আর কেন?
রাত ১১ টা।
জমিদার বাহাদুর পাশের গ্রামের এসব ভৌতিক ঘটনা শুনে একটু চিন্তায় আছেন। কারন এসবের মধ্যে তিনিও জড়িত। কি দরকার ছিলো স্কুল পড়ুয়া মেয়ে এনে হরন করার! এখন নিজের উপর রাগ হচ্ছে।
বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। বাইরে কড়া পাহারা দেয়া। কে আসবে মারতে।
হঠাৎ পেছন থেকে একটা শব্দ হয়। বুক কেপে উঠে বাহাদুরের। ঝট করে ঘুরে তাকায়
আর কেউ না,কাব্য দাঁড়িয়ে আছে
:কে.. কে.. কে তুই?(বাহাদুর)
কাব্য চুপ করে তলোয়ার বের করে
:দেখ আমাকে ক্ষমা করে দে।আমি কালই নিজের অপরাধ কবুল করবো! হা হা এমন ভাবছিস পেছনে দেখ(বাহাদুর)
কাব্য আড়চোখে পেছনে তাকায়। ৪০জনের মত বিশালদেহী যুবক দাঁড়িয়ে।
কাব্য আবার বাহাদুরের দিকে তাকায়। বাহাদুর দেখল পেছনের সবাই এক এক করে পড়ে যাচ্ছে আর এখন একজন ও নেই।
বাহাদুর এবার কাব্যের পায়ে পড়ে কেদে উঠে৷ কাব্য তার দিকে তাকাতেই বাহাদুরের চোখে ভেসে উঠে এই ভাবেই সেই স্কুলের মেয়েটি পা জড়িয়ে ধরে কেদে জীবন ভিক্ষে চেয়েছিলো
কাব্য তলোয়ার টা বাহাদুরের হাত দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে।
বাহাদুরের হাত নিজে নিজে তলোয়ার গলায় রাখে আর চালিয়ে দেয়। মাথা আলাদা হয়ে যায়।
কাব্য বাইরে হেটে চলে যেতে থেকে। উপর থেকে তলোয়ার আর বাহাদুরের মাথা উড়ে এসে কাব্যের হাতে আসে।
কাব্য মাথা টা নিচে রেখে পা দিয়ে চাপা দিয়ে ভেঙে ফেলে।রক্ত সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
কাব্য দেখল দূরে একটা মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে উধাও হয়ে যায়।
কাব্য চুপচাপ হাটতে থাকে আর বাহাদুরের বাড়ি ভেঙে পড়তে থাকে।।
কাব্য গ্রামে ফিরে আসে….কেন যেন তার মনে হচ্ছে তাকে কেউ দেখছে…
অন্যদিকে
গাছটার সামনে পাহারা দাড় করায় তামিম। সে এখনো সেখানেই দাড়িয়ে
দূর থেকে কাব্যকে আসতে দেখে এগিয়ে যায়
:কই গিয়েছিলি?(তামিম)
:হাটতে!(কাব্য)
:ওহ আচ্ছা যা তাহলে ঘুমা
:তুই?
:একটু দেখি তারপর যাবো
কাব্য হেটে চলে যায়
তখনই তামিমের কাছে একটা কল আসে…কল টা রিসিভ করে তামিম, অন্যদিক থেকে কিছু কথা বলার পর তামিম থমকে যায়। হাত থেকে ফোন পড়ে যায়। ধপ করে বসে পড়ে..
:এবার কি হবে?কেন হলো এমন? (তামিম)
চলবে…