#আফিম_বড্ড_নেশালো_০২
#লেখিকা_মাহযাবীন
#পর্বঃ২১
অন্ধকারের চাদরে মুড়ানো অর্ধ পৃথিবী।এ অর্ধ পৃথিবীর এক ছোট্ট শহরের শূন্য পথ ধরে হেঁটে চলছে নাফিয়া।চোখ অশ্রু ভেজা।কপালে চিন্তের ছাপ।আর হৃদয়ে একরাশ অনিশ্চয়তা,ভয় ও পীড়া।
হাঁটতে হাঁটতে চারিপাশে চোখ বুলিয়ে নিতে ব্যস্ত সে।যদি কোনো খালি যানবাহনের দেখা পায় তবে যেনো শত চিন্তের মাঝ থেকে একটি চিন্তে হতে রেহাই পাবে মেয়েটা।
একটু আগেই মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এক নতুন গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে নাফিয়া।বিদায় বেলায় নুরানি বেগম জড়িয়ে ধরেছিলেন নিজের কলিজার টুকরো মেয়েটাকে।অশ্রু সিক্ত নয়ন ও কাঁপা কন্ঠস্বরে বলেছিলেন,
-আল্লাহ ছাড় দেন তবে ছেড়ে দেন না।দেখিস এই জঘন্য লোকটা একদিন নিজের কর্মের শাস্তি পাবে।
কথাখানা বলে থেমেছিলেন নুরানি বেগম।পরমুহূর্তেই কিছু একটা ভেবে আবারও বলে উঠেছিলেন,
-শোন মা,জীবনে প্রথম এতো রাতে একা বাইরে পা দিচ্ছিস।জানি মনে ভয় কাজ করছে।কিন্তু কিছু কিছু পরিস্থিতিতে মানুষকে ভীষণ রকমের শক্ত হতে হয়।মনে ভয় পেলেও মুখে তা প্রকাশ করতে হয় না।সাহসী ভাব বজায় রাখবি ঠিক আছে?আর তোকে আমি আমার ফোনটা দিয়েছি না?ওটা সাবধানে নিজের হাতের মুঠোয় রাখবি।রাস্তায় আল্লাহ না করুক কোনো কুলাঙ্গারদের মুখোমুখি হলে সুযোগ করে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে পুলিশের সাহায্য চাবি।তাছাড়া ব্যাগে ছুরি,শুকনো মরিচ গুঁড়ো এসব তো ঢুকিয়ে দিয়েছিলামই।
মায়ের কথাগুলো শুনে নিরবে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়েছিলো নাফিয়া।নুরানি বেগম চুমু এঁকে দিয়েছিলেন তার মেয়ের কপালে।অতঃপর মায়ের চেহারা পানে শেষ বারের মতো এক পলক তাকিয়ে বিদায় নিয়েছিলো নাফিয়া।
রাস্তার পাশ ঘেঁষে টলমলে চোখ নিয়ে হেঁটে নিজের নতুন গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা।এক এক কদম বাড়াবার সাথে সাথে মনে মনে একটা খালি রিকশা পাওয়ার দোয়া করে যাচ্ছে সে।এরই মাঝে ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হতে আরম্ভ করে।আবহাওয়া খারাপের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ক্রমশ।ভয় বাড়ে নাফিয়ার।বাম হাতে নিজের প্রয়োজনীয় সকল জিনিস দিয়ে ভর্তি একখানা ব্যাগ ধরে রেখেছে সে।আর ডান হাতে ফোন।যেকোনো সময় বৃষ্টি নামবে বলে মনে হতেই সাথে সাথে নিজের ডানহাতে থাকা ফোনটা ব্যাগ খুলে কয়েকটা কাপড়ের নিচে রেখে দেয় সে।যাতে বর্ষণ হলেও তার ফোনটা সুরক্ষিত থাকে।মেয়েটা নিজের কাজ নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে তার আশেপাশের কোনোদিকে বিন্দু পরিমাণ খেয়াল টা তার নেই।
১২-১৩ বছর বয়সী ছিনতাইকারী এক কিশোরের চোখ পড়ে নাফিয়ার উপর।মধ্য রাত,তার উপর খারাপ আবহাওয়া!একলা এক মানবী রাস্তায় কিনারায় দাঁড়িয়ে ব্যাগে নিজের ফোন গুঁজে রাখতে ব্যস্ত।ছেলেটার চোখ ফোনটিকে ভালোভাবে পরখ করে নেয়।স্মার্ট ফোন,বেচলে নির্ঘাত ৩-৪ হাজার টাকা পাবে।এমনটি ভেবে সুকৌশলে এগিয়ে যায় সে নাফিয়ার দিকে।
এদিকে মেয়েটা নিজস্ব চিন্তায় মগ্ন।নিজের মতো করে হেঁটে চলছে।অপর দিকে,সেই কিশোর ধীরে ধীরে নাফিয়ার কাছাকাছি এসে হুট করে নিজের গতি বাড়িয়ে দিলো।হাওয়ার বেগে দৌড়ে এক টানে নাফিয়ার ব্যাগ নিয়ে ক’সেকেন্ডের মাঝেই অন্ধকারের কালো আবরণে হারিয়ে গেলো।তাকে আর দেখতে পেলো না নাফিয়া।কয়েক মুহুর্তের মাঝে তার সাথে কি ঘটে গেলো সেটিও যেনো বোধগম্য হলো না তার।ক’সেকেন্ড সময় নিয়ে সবটা বুঝতেই চেচিয়ে উঠলো নাফিয়া।দৌড় লাগালো সামনের দিকে।অনেকটা পথ খুঁজলো সেই কিশোরকে।কিন্তু খোঁজ মিললো না।একই দিনে একের পর এক আঘাতে ক্লান্ত হয়ে পড়লো নাফিয়া।দৌড়াতে দৌড়াতে কোনো এক ব্রীজের কাছে চলে এসেছে সে।এই জাগয়া টা সম্পূর্ণ অপরিচিত তার।এই মুহুর্তে না সে নিজের বাসায় ফিরতে পারবে আর না নিজের নতুন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে! কি করবে সে এখন।মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে আছে তার।ক্লান্ত পায়ে ব্রীজের মাঝ বরাবর যেতেই ধরণীর বুকে স্নিগ্ধ বৃষ্টি কণা সমাধিত হতে আরম্ভ করলো।আর পা চললো না নাফিয়ার।এমনিও পেটে ভীষণ খিদে ছিলো তার।তার উপর একের পর এক বিপদ।দেহ-মন উভয়ই আর সহ্য করতে পারলো না।ব্রীজের এক কোণায় হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে পড়লো সে।
বর্তমানঃ-
বিছানার যে এক কোণে বসে ছিলো আফিম সেথায় নিজের পেছন দিকে একটি বালিশ রেখে পিঠ ঠেকায় ছেলেটা।আফিমকে নিজের অতীত বলতে গিয়ে স্মৃতিচারণে এতোটাই মগ্ন হয়ে যায় নাফিয়া যে সে খেয়ালই করেনি কখন আফিম তাকে নিজের বুকে টেনে নিয়েছে।বালিশে পিঠ ঠেকিয়ে আধশোয়া হয়ে বসে আছে আফিম আর তার বুকে মাথা ঠেকিয়ে অতীত বিলাস করছে তার মায়াবীনি।নিজের অতীতের কাহিনিগুলো বলা শেষ হতেই আফিমকে আরেকটু নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে নাফিয়া।কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে ওঠে,
“আমার সাথে তো এতো কিছু না হলেও পারতো,তাই না?অন্যদের মতো আমার জীবনটাও তো সহজ হতে পারতো!হলো না কেন?”
নাফিয়ার মাথায় হাত রেখে চুলে চুমু এঁকে দিলো আফিম।সে বুঝলো নাফিয়া এখনো অতীতের ঘোরে আছে।মন বিষাদে ভরে উঠেছে মেয়েটার।নাহয় যদি মেয়েটা স্বাভাবিক থাকতো তাহলে নির্ঘাত অভিযোগ না করে বরং ঠোঁটে হাসি টেনে বলতো,
“এতো কষ্ট সহ্য করে এসেছি দেখেই তো স্রষ্টা আমাকে ‘আফিম’ নামক এক মাদকতা দান করেছেন।যে মাদকতার ঘোরে আমার দুঃখগুলো প্রশমিত হয়ে যায় আর জীবনটা রঙিন লাগতে আরম্ভ করে।”
উক্ত কথাগুলো ভাবতেই ঠোঁটে মৃদু হাসি ফুটে ওঠে আফিমের।সে আরো নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে নাফিয়াকে।মনে দুঃখ এসে জায়গা করে নিলে প্রিয় মানুষটার একটু ভরসার স্পর্শই তো যথেষ্ট হয় কষ্ট প্রশমিত করার জন্য।এটা জানে আফিম।তাই তো অযথা কোনো বাক্য ব্যয় না করে শক্ত বাহুবন্ধন ও মাথায় ছোট্ট চুমু এঁকে নিজের মায়াবীনিকে ভরসা দিচ্ছে আফিম।মুখে কিছু না বলেও সে অনুভব করালো,”এখন থেকে তোমার ঠোঁটে আনন্দের হাসি ফুটাবার দায়িত্ব আমি নিলাম”।
আফিমের বুকে প্রশান্তি খুঁজে পাচ্ছে নাফিয়া।এ যেনো এক মারাত্মক শান্তির জায়গা!এমন এক জায়গা যেথায় বড় বড় কষ্টগুলোও ভীষণ তুচ্ছ মনে হয়।মনের কষ্টগুলো ধীরে ধীরে প্রশমিত হয়ে গেলো নাফিয়ার।এতোটা সময় চোখ বুজেই রেখেছিলো সে।আর এখন শান্তিতে তন্দ্রা ঘোরে বিলীন হতে চলেছে সে।
!!
মোটামুটি নব্বই শতাংশ বাংলাদেশী যুবকদেরই ইচ্ছে থাকে বিয়ের পর বউকে বুকে নিয়ে ঘুমোবে।তবে ব্যতিক্রম ছিলো আফিম।সে কখনো বিয়ে,বউ এসব নিয়ে ভাবেনি।ভাবেনি এই জীবনে সে কখনো বিয়ে করবে।মেয়ে জাতিকে সম্মান করতো সে।কিন্তু নিজের ভাগ্যের উপর বিশ্বাস ছিলো না তার।অর্থ লোভী,চরিত্রের ১২ টা বাজানো মেয়েদের দেখতে দেখতে প্রেম,ভালোবাসায় জড়ানোর সাহস জোগাতে পারেনি সে।’যদি কোনো ভুল মানুষকে ভালোবেসে ফেলে?’ এমনিও জীবনে কম তো সংগ্রাম করেনি সে।এর উপর বাড়তি কষ্ট পাওয়ার ইচ্ছে ছিলো না।কিন্তু এই মায়ায় মোড়ানো মেয়েটাকে প্রথম দেখেই বুকের মাঝে এক অদ্ভুত টান অনুভব করেছিলো আফিম।তাই তো প্রথম দেখার তৃতীয় তম দিনেই এই মায়াবতীকে নিজের অর্ধাঙ্গীনি করে নিতে দ্বিধা করেনি সে।মেয়েটাকে নিজের অর্ধাঙ্গীনি বানানোর পূর্বেই মেয়েটির সমন্ধে সবকিছু জেনে নিয়েছিলো।আর জানার পর ‘বিয়ে’ নামক হালাল বন্ধনে আবদ্ধ হতে বিলম্ব করেনি সে।
বিয়ের গুণে গুণে ১ মাস ২৭ তম দিনে এসে প্রথম বার নিজেকে বিবাহিত মনে হচ্ছে আফিমের।কারণ এটাই প্রথম রাত যে রাতে সে একা নয়।তার বুকে বাচ্চাদের মতো লেপ্টে ঘুমিয়ে আছে তার স্ত্রী।সময় যত যাচ্ছে ঠিক ততই বাড়ছে মায়া।মেয়েটাকে ভালোবাসার ইচ্ছেও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।এইযে বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে,তাতেও যেনো আকৃষ্ট হচ্ছে আফিম।এই মেয়ের মায়াবী মুখশ্রীতে দৃষ্টি আঁটকে যাচ্ছে বারংবার।ইচ্ছে করছে নিজের মাঝে জমানো সব আদরে মেয়েটাকে জড়িয়ে নিতে।
নিজের ইচ্ছেকে দমালো আফিম।হটাৎ তার মনে পড়লো একজনকে কল দেওয়ার কথা।
!!
মধ্য রাত!দের মাসের মতো হয়েছে নুরানি বেগম তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে আরম্ভ করেছেন।আগে ফরজ নামাজ গুলো ঠিক মতো পড়ার চেষ্টা করলেও তাহাজ্জুদ পড়া হতো না তার।তবে এখন পড়েন।নিজের দু মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দোয়া করেন তিনি।আজও এর ব্যতিক্রম হলো না।তিনি জায়নামাজে বসে তসবি পাঠ করছিলেন এমন সময়ই শুনতে পান তার ফোন বাজতে আরম্ভ করেছে।তসবিতে চুমু খেয়ে তা জায়নামাজে রেখে উঠে দাঁড়ান নুরানি বেগম।এগিয়ে যান ফোনের কাছে।ফোনে একটি নাম জ্বলজ্বল করতে দেখতে পেতেই ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে নুরানি বেগমের।দ্রুত কল রিসিভ করেন তিনি।
-আসসালামু আলাইকুম মা,কেমন আছো?তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া শেষ?
ফোন কানে ধরতেই উক্ত বাক্যদ্বয় কানে আসে নুরানি বেগমের।তিনি ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে বলে ওঠেন,
-ভালো আছি বাবা।নামাজও শেষ,বসে তসবি পড়ছিলাম।এখন বল তুই কেমন আছিস?আর আমার মেয়েটা কেমন আছে?
-আমরা ভালো আছি।আজ তোমার মেয়ে নিজের সম্পূর্ণ অতীত আমাকে বলেছে।
কথাখানা শুনতেই ঠোঁটের হাসিটি বৃহৎ হয় নুরানি বেগমের।তিনি বলে ওঠেন,
-বলিস কি!তারমানে আমার নুফির মনে জায়গা করে নিতে সফল হয়েই গেলি?
ঠোঁটে হাসি নিয়েই আফিম বলে ওঠে,
-ইয়েস!
হাসেন নুরানি বেগম।ভালো লাগছে তার এই ভেবে যে তার মেয়েটা ভালো আছে।
নুরানি বেগমের কিছু বলার আগেই আফিম বলে ওঠে,
-তোমার মেয়ে তোমাকে ভীষণ ভালোবাসে মা।আর তুমি এই ভালোবাসার পুরোপুরি হকদার।অনেকের আপন মাও তার সন্তানের জন্য এতোটা করেনা যতটা তুমি তোমার বোনের মেয়ের জন্য করেছো।প্রকৃত অর্থে তুমিই নাফিয়ার মা।
আফিমের কথায় টলমলে চোখে হাসেন নুরানি বেগম।বলে ওঠেন,
-ভালোবাসার জন্য আপন হওয়া টা কি খুব বেশি প্রয়োজন,বাবা?কই আমার তো মনে হয় না।ভালোবাসা তো মনে উৎপন্ন হওয়া এক পবিত্র অনুভূতি,তাই না?এই অনুভূতিটা যে কারো প্রতিই উৎপন্ন হতে পারে।কেউকে ভালোবাসার জন্য কি প্রয়োজন জানিস?প্রয়োজন ভালো একটা মন।মন ভালো হলে মানুষ আপন আর পর বিবেচনা করে ভালোবাসে না।আমি নুফিকে ঠিক কখন ভালোবেসেছি জানিস?যখন আমার বোন ওটিতে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মৃত্যু বরণ করলো আর নার্স এসে আমার কোলে নাফিয়াকে দিয়ে বললো, বাচ্চার মা আর এই পৃথিবীতে নেই।ঠিক তখন ভালোবেসেছিলাম সদ্য জন্ম নেওয়া আমার মৃত বোনের শেষ স্মৃতি টাকে।ভুলে গিয়েছিলাম ও আমার সন্তান না।শুধু মনে ছিলো ও আমার বোনের অংশ অর্থাৎ ও আমারও অংশ।তখন থেকে নিজের সন্তানের মতো করে মানুষ করেছি নুফিকে।আর ও আমারই সন্তান।
ঠোঁটে মুগ্ধতার হাসি ফুটে ওঠে আফিমের।এমন এক আদর্শ নারীর আদর্শে বড় হয়েছে নাফিয়া।অর্থাৎ মেয়েটা নিজেও এসব গুণাবলির অধিকারী।
আফিম দুষ্টু কন্ঠে নুরানি বেগমকে বলে ওঠে,
-আমার বৌ টারেও নিজের মতো বানাইছো তো?নাকি আমার কপালে শনি,রবি,বৃহস্পতি গ্রহ ঘুরপাক খাবে?
আফিমের কথায় হেসে দেন নুরানি বেগম। হেসেই বলে ওঠেন,
-বাচ্চাকালের মতো ফাজিলই রয়ে গেছিস।পরিবর্তন আর হইলো না।
নুরানি বেগমের কথায় মাথা চুলকে মৃদু হাসলো আফিম।নুরানি বেগম আবারও বলে উঠলেন,
-আমার মেয়েটাকে ভীষণ ভালোবাসবি,বুঝলি?ছোট বেলা দিয়ে কম তো আর সহ্য করেনি মেয়েটা!
-এতো ভালো টালো বাসতে পারবো না।শোনো, নাফিয়াকে এখন সব বলে দেই?
-না এখন বলিস না।একটা মানুষের সফল হতে কষ্ট পাইতে হয়,নিজের মাঝে জিদ জন্মাইতে হয়।নাফিয়া তোর মতো ছোটবেলা থেকেই ভালো স্টুডেন্ট না।ওর এসএসসির রেজাল্ট দেখছিস না?পাইছে জিপিএ ৫?এখন যখন আমার থেকে দূরে আছে দেখবি ওর মাঝে জিদ কাজ করবে।আমার স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজের সর্বোচ্চ টা দিবে।আর ঐ লোকটাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য হলেও নিজে সফল হওয়ার চেষ্টা করবে।কিন্তু যদি জানে যে তুই ঐ লোককে এখনই শাস্তি দিয়ে দিয়েছিস সাথে সব সত্য জেনে গেলে এই ফাঁকিবাজ আর পড়াশোনাও করবে না আর ওর মাঝে এই জিদও থাকবে না।
-হু ঠিক।আচ্ছা থাক আমি বিবাহিত ব্যাচেলর হয়েই থাকি।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কথাখানা বলে আফিম।মৃদু হাসেন নুরানি বেগম। বলে ওঠেন,
-নির্লজ্জ কোথাকার!
নুরানি বেগমের কথায় আফিমের ঠোঁটেও দুষ্টু হাসি ফুটে ওঠে।
!!
কথা শেষ করে বারান্দা হতে নিজের কক্ষে প্রবেশ করে আফিম।প্রবশ করতেই নজর যায় বিছানায় ঘুমন্ত এক রমনির দিকে।গায়ে না ওড়না জড়ানো আছে তার আর না জামা-কাপড় ঠিকঠাক আছে।সোজা হয়েই শুয়ে আছে তবে জামা পেটের কাছ থেকে কিছুটা উপরে উঠে আছে।ফলে দৃশ্যমান হয়ে আছে মেয়েটার আকর্ষণীয় গভীর নাভি।সেথায় চোখ আটকে গিয়েছে আফিমের।মৃদু ঢোক গেলে ছেলেটা। এগিয়ে যায় নিজের স্ত্রীর দিকে।
কাছে গিয়ে মেয়েটার পা হতে মাথা অব্দি একবার নজর বুলিয়ে নেয় আফিম।অনুভব করে তার হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়ছে।লোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।সেই সাথে মনে নিষিদ্ধ সব কামনার উদয় ঘটতে আরম্ভ করেছে।নিজেকে আটকানো অসম্ভব ঠেকছে আফিমের।তাই নিজের উপর আর কঠিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো না সে।নিজের ইচ্ছেতে সায় দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো সে মেঝেতে।নাফিয়ার উন্মুক্ত পেটে আলতো করে হাত রাখলো।নরম,মসৃণ পেটের ছোঁয়া অনুভব করতেই হৃৎস্পন্দন আরো বৃদ্ধি পেলো ছেলেটার।ধীরে ধীরে নাভির কাছে নিজের ঠোঁট এগিয়ে নিয়ে চুমু এঁকে দিলো সেথায়।এতে যেনো উন্মাদনা বাড়লো আফিমের।একই জায়গায় ৩-৪ টি চুমু খেলো সে।অতঃপর নাভির আসেপাশেও ঠোঁট ছোঁয়াতে আরম্ভ করলো আফিম।
চলবে।
[