আমার গল্পে তুমি পর্ব -২৬+২৭

#আমার_গল্পে_তুমি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#২৬_পর্ব
,
ইয়ানা ভয়ে ভয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আর ওর সামনেই আর্দ্র চোখ লাল করে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে ভালো করে ঘুম হয়নি তাই জন্য চোখ লাল টকটকে হয়ে আছে, মাথার চুল বেঁয়ে টপটপ করে পানি পরছে,, ইয়ানা তখন ভেবেছিলো যে মজা করে পানি দিলে আর্দ্র কিছু বলতে পারবে না কেননা অনিক অন্তরা ওর সাথেই আছে, কিন্তু ইয়ানার ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে ওকে এখানে ফাঁসিয়ে দিয়ে দুজনই পালিয়েছে,, ইয়ানাও অবশ্য পালাতে চেয়েছিলো কিন্তু আর্দ্র আর পালাতে দিলো কই পালানোর আগেই ওকে ধরে ফেলেছ।

হাউ ডেয়ার ইউ, তোমার সাহস হলো কি করে আমার গায়ে পানি দেওয়ার।

ইয়ানা ভয়ে কিছু বলতে পারছে না, অবশ্য অন্য সময় হলে আর্দ্রর সাথে তর্ক করে ও জিতে যেতো কিন্তু এখন দোষ তো ওর তাই কিছু বলতে পারছে না ,,, কি হলো কথা না বলে এভাবে চুপ করে আছো কেনো ইডিয়ট।

দ,,দেখুন আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলতে পারেন না, আমি কি এমন করেছি যে আপনি আমায় এভাবে বকা দিচ্ছেন।

হুমম তুমি কি করেছো?? ওকে ওয়েট, এই বলে আর্দ্র গায়ের থেকে কাথাটা সরায়ে বিছানা থেকে নেমে ইয়ানার কাছে গেলো তারপর টুপ করে ইয়ানাকে কোলে তুলে নিলো,, ইয়ানা বুঝতে পারছেনা আর্দ্র ঠিক কি করতে চাইছে, আর্দ্র ইয়ানা কে কোলো নিয়েই ওয়াশরুমের দিকে গেলো তারপর ইয়ানাকে শাওয়ার এর নিচে নামিয়ে শাওয়ার অন করে দিলো এদিকে ইয়ানা তো রাগে ফেঁটে যাচ্ছে দাঁড় কিড়মিড় করে বলল,, এটা কি করলেন আপনি আমি তো ভিজে গেলাম,, আর ইউ ম্যাড??

আমি কি এমন করলাম যে তুমি এভাবে রাগ করছো,, আর্দ্র ইয়ানার বলা কথাটা ওকেই ফিরিয়ে দিলো।

আপনি এখনো জিগাস করছেন যে আপনি কি করেছেন?? দেখতে পাচ্ছেন না কি করেছেন সকাল সকাল আমায় এভাবে ভিজিয়ে দিলেন কেনো??

এই একি প্রশ্ন আমারও সকাল সকাল তুমি আমায় ভিজিয়ে দিলে কেনো?? আর আমি যখন তোমায় কথাটা বললাম উল্টে তুমি কি বললে যে তুমি কি এমন করেছো যে আমি এভাবে বকা দিলাম,, শোনো এরপর থেকে আর্দ্র চৌধুরীর সাথে পাঙ্গা নিতে আসলে ভেবে চিন্তে আসবে বুঝলে খুকি,, কথাটা বলে আর্দ্র নিজের মুখ থেকে পানি নিয়ে ইয়ানার মুখে দিয়ে চলে গেলো।

ইইই ওনি নিজেকে কি ভাবে কে জানে একে তো আমায় ডাকাতি করে বিয়ে করেছে তার উপর এতো বড়বড় ডায়লগ, ওকে মিস্টার আর্দ্র চৌধুরী আমিও এই টা মনে রাখবো তবে আমিও মনে রাখবেন আপনি ইয়ানার সাথে পাঙ্গা নিয়েছেন এর ফল আপনাকে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দেবো।
,,,,,,,
দুটো রুমে যে কি করছে কে জানে তখন ওভাবে মেয়েটাকে রুমে একা ফেলে আসা ঠিক হয়নি বলো??

আরে এতো চিন্তা করছো কেনো আমার ভাই কি বাঘ নাকি যে ইয়ানা কে খেয়ে ফেলবে, কিচ্ছু হবে না তুমি এতো চিন্তা না করে খাও তো৷, তখনি আর্দ্র হাত দিয়ে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে নিচে আসলো,,, সেকিরে এটুকু সময়ের মধ্যে সবকিছু করে আবার গোসল ও করে ফেললি??

হোয়াট?? পাগলের মতো কি সব বলছিস, কি করবো আমি??

কেনো বাসর।

কিহ এসব ভুলভাল চিন্তা মাথা থেকে সরায়ে ভালো হ, ভাবি আপনার গুনধর বরকে সামলে রাখুন কথাটা বলতে বলতে,,
ডাইনিং টেবিলের চেয়ার টেনে বসতে যাওয়ার আগেই ইয়ানা দৌড়ে এসে বসে পড়ল।, এটা কি হলো??

যা হবার তাই হলো চেয়ার ফাঁকা ছিলো তাই বসে পড়লাম সিম্পল।

একে তো আমি,,, আরে ভাই আমার এতো রাগ করলে হয় নাকি বউ হয় তো তোর যা ওর পাশের চেয়ার টাই বসে পড়।

আর্দ্র রাগি একটা লুক দিয়ে ইয়ানার পাশের চেয়ারে বসে পড়ল,, ইয়ানা এমন একটা ভাব করল যেনো আর্দ্র কে ও চেনেই না, তখনি ওখানে কবির আসলো কবির কে দেখে ইয়ানা মাথার কাপড়টা আর একটু টেনে দাঁড়িয়ে পড়ল কবির এসে চেয়ারে বসে বলল,, আরে ইয়ানা তুমি আবার দাঁড়িয়ে পড়লে কেনো বসো বসো,, আর তুমি এটা ভেবো না যে আমরা তোমার উপর রেগে আছি আসোলে আমার ছোট ছেলেটা ওমনি তুমি কিছু মনে করোনা অনিক আমাকে সব বলেছে।

এক মিনিট,, ভাইয়া তোমাকে কি বলেছে বাবা?? এই তুই বাবাকে কি বলেছিস?? আর্দ্র কথায় অনিক আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট ফুলায়ে কিছু না জানার ভান করে বলল কই কিছুই না তো।

উল্টা পাল্টা বাবা কে কি বলেছি তুই?? -তোকে ওতো শত জানতে হবে না আমরা সব জানি আর ইয়ানাকে আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে তুই বস মা, তুই বললাম বলে আবার রাগ করেছিস নাকি?

এমা না না আন্টি রাগ করবো কেনো।

আন্টি?? কে আন্টি? খবরদার যদি আবার আন্টি বলিস মা বলবি এখন থেকে বুঝলি, ।
,,হুম এখন তো তোমরা মেয়ে পেয়ে গেছো আর আমাকে ভুলেই গেছো, পাশের চেয়ার থেকে মন খারাপ এর অভিনয় করে বলল অন্তরা।

তুই চুপ কর পাকা মেয়ে, আমি কাউকেই ভুলি নাই আজ থেকে আমার দুটো ছেলে দুটো মেয়ে।

এ বাবা তাহলে তো আমাদের বর আমাদের ভাই হয়ে গেলো,, অন্তরা কথায় সবাই হেসে দিলো তখনি চোখ ডলতে ডলতে উপর থেকে পরশ নামলো।

এই তো আমার দাদু ভাই চলে এসেছে, তা ঘুম কেমন হলো??

অনেক ভালো, জানো তো দাদুন আজকে না আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি,।

তাই?? তা কি স্বপ্ন দেখেছো তুমি?

আমি স্বপ্ন দেখেছি যে চাচ্চু আর কিউটিপাই বক্সিং বক্সিং খেলছে দুজনের মাথায় হেলমেট হাতে ওই বক্সিং খেলার মোটা গ্লাভস তারপর ঘন্টা বাজতেই ঢিসুম ঢিসুম শুরু হয়ে গেলো অনেকক্ষণ মারামারি হওয়ার পর কিউটিপাই চাচ্চুর মুখে জোরে একটা ঘুষি দিয়েছে আর চাচ্চুর সামনের দুটো দাঁত ভেঙ্গে নিচে পড়ে গেছে। পরশের স্বপ্নের কথা শুনে সবার হাসি পেলেও আর্দ্রর ভয়ে কেউ হাসলো না তবে ইয়ানা হাসি আর চেপে রাখতে পারলো না হুহা করে হেসে দিলো, পাশে বাবা আছে খেয়াল হতেই জিব্বায় একটা কাঁমড় দিয়ে মুখ চেপে হাসতে লাগল।

আর্দ্র রেগে বলল,,এই ইডিয়ট মেয়ে একদম হাসবে না আর এই চাম্প এসব কি বাজে স্বপ্ন দেখো আজ থেকে তোমার টিভি দেখা অফ, টিভিতে কিসব উল্টা পাল্টা দেখবে তারপর রাতে সেসব স্বপ্নে দেখবে, এই ভাইয়া তুই না ওর বাবা বোঝা ওকে।

কি বোঝাবো আমার ছেলে ভুল কি বলেছে ও যা দেখেছে তাই বলেছে,, এখন তুই যদি খেলায় হেরে যাস তাহলে ও কি বলবে বল।

যেমন বাবা তার তেমন ছেলে।
,,,,
আর্দ্র অফিস যাবার জন্য রেডি হচ্ছে ইয়ানা আজকে আর অফিসে যাবে না তবে বাড়ির সবাই ওকে অফিসে যেতে নিষেধ করেছিলো , কি দরকার এখন অফিসে যাওয়ার তবে ইয়ানা বলেছে যে ও অফিসে যাবেই কেননা ও চাই না অন্য কারোর টাকা ও ওর মাকে দেয় ইয়ানা বলেছে যে মাস শেষে ও যেই টাকাটা পাবে সেটা ও ওর মায়ের হাতে তুলে দিবে, ইয়ানার এই কথায় আর কেউ দ্বিমত পোষণ করেনি আর্দ্র ও বলেছে যে ইয়ানা ঠিকি বলেছে প্রতিটা মেয়েরই নিজের পায়ে দাঁড়ানো উচিত সারা জিবন কেনো অপরের ভরসায় থাকবে।

শুনুন আজকে আপনি আমার সাথে আমাদের বাসায় যাবেন তারপর মাকে বলবেন যে আমার এখানে কোনো দোষ ছিলো না সব দোষ আপনার, কাল থেকে আম্মু আমার সাথে কথা বলেনি ফোন দিলেও রিসিভ করছে না।

কেনো বলবো??একটু ভেবে,,ওকে ওমমম বলতে পারি তবে আমার একটা শর্ত আছে,, কোর্ট গায়ে দিতে দিতে বলল আর্দ্র।

কি শর্ত??

শর্তটা হলো তোমাকে আমায়,, আর্দ্র ইয়ানার দিকে এগোতে এগোতে বলল তোমাকে আমায়,,, আপনাকে আমায় কি?? আর্দ্র ইয়ানার আরো কাছে চলে গেলো ইয়ানা পিছাতে পিছাতে একদম দরজার সাথে লেগে গেলো,, দ,,দেখুন আপনি এমনটা করতে পারেন না এভাবে একটা অবলা মেয়েকে একলা পেয়ে সুযোগ নেওয়া ঠিক নাহ।

কিহ তুমি অবলা?? আর কিসের সুযোগ এর কথা বলছো ইডিয়ট সব সময় এক লাইন বেশি ভাবো, আমি বলতে চেয়েছি যে তোমাকে আমায় সরি বলতে হবে তারপর আমি আন্টিকে সব কথা বলবো।

কিহ?? আমি সরি বলবো তাও আবার আপনাকে কেনো কোন দুঃখে আর কিসের জন্য?? উল্টে সরি তো আপনি বলবেন আমায় কেননা আপনার জন্যই আম্মু আমার সাথে কথা বলছে না।

আমি ওতো শত জানি না তুমি আমায় সরি বলবে তারপর আমি তোমার মাকে সব বলবো রাজি থাকলে বলো নয়ত আমি গেলাম বাই।

এই না না আপনি যাবেন না প্লিজ,, পিছন থেকে আর্দ্র হাত ধরে বলল ইয়ানা। , যাবো না বলছো কি করতে চাইছো তুমি হমম এভাবে হাত ধরেছো কেনো??

এই লোকটার মাথায় সব সময়ে উল্টা পাল্টা চিন্তা ঘোরে কখন কি করে আমায় ফাঁসিয়ে দেবে কে জানে,, ওতো কিছু না ভেবে সরিটা বরং বলেই দিই আর এখানো তেমন কেউ নেই,,, শুনুন।

হুম বলো।
—সরি।
–মিনমিন করে কি বলো বুঝি নাহ জোরে বলো।
— সরি,, একটু জোরে।
–আরে কিহ বলো বুঝি না জোরে বলো।
–এবার ইয়ানা রেগে আর্দ্রর কানের কাছে গিয়ে জোরে বলল, সরি সরি সরি।
–আহ আস্তে বলো কানের পর্দ ফেঁটে গেলো গলা তো নয় যেনো মাইক, শুনেছি আমি, আর হ্যাঁ বিকেলের দিকে রেডি হয়ে থাকবে আমি এসে নিয়ে যাবো ওকে এবার খুশি??
–হুম অনেক খুশি।
— কিহ বললে??
–আবারো কানের কাছে গিয়ে বলবো নাকি??
–নাহ থাক তোমার যে গলা না জানি আমি আবার কানে কালা না হয়ে যায়, ওকে থাকো আমি গেলাম।
–আর্দ্রর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আনমনেই হেসে উঠল ইয়ানা।
#আমার_গল্পে_তুমি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#২৭_পর্ব
,
দেখতে দেখতে আর্দ্র ইয়ানার বিয়ের একমাস পূর্ণ হয়ে গেলো কিন্তু ওদের সম্পর্কের কোনো উন্নতি হয়নি এখনো দুজন সেই টম এন্ড জেরির মতোই আছে, ইয়ানার কথা মতো সেদিন আর্দ্র ইয়ানাকে নিয়ে ওর মায়ের কাছে গিয়ে সবটা বলেছিলো আর নিজের করা কাজের জন্য অনুতপ্ত ও হয়েছিলো এখন মুটামুটি সবটা ঠিক আছে,, আজকে সকাল থেকেই ইয়ানার কেমন যেনো মাথাটা বেথ্যা করছে আর গলার মধ্যে ও কেমন খচকচ করছে পেটেও হালকা বেথ্যা করছে যেনো এখনি বমি হয়ে যাবে,, বলতে বলতে ইয়ানা দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো আর হরহর করে বমি করে দিলো, এখন একটু ভালো লাগছে টাওয়াল দিয়ে মুখটা মুছতে মুছতে রুমে এসে কেবলি বেডে বসছিলো ইয়ানা তখনি অন্তরা রুমে আসলো,,

একি কি হয়েছে তোমার? মুখটা এমন লাগছে কেনো? শরীল খারাপ নাকি?, অন্তরা এখন আটমাস চলছে ভারি পেট নিয়ে চলতে ফিরতে একটু সম্যাসাই হয়।

আপু তুমি আবার এই শরীল নিয়ে আসতে গেলে কেনো, আমাকে ডাকলেই তো আমি চলে যেতাম,, আর কি বলোতো সকাল থেকেই শরীলটা ভালো লাগছে না এখনি আবার বমি করে আসলাম, তার উপর আজকে আবার অফিসে জুরুরি একটা মিটিং আছে কি যে করবো।

সেকি তোমার বমি হচ্ছে?? এটা তো খুশির সংবাদ, বাবা আমার দেবর তো দেখছি একদম ট্রেনের মতো ছুটছে বিয়ের একমাস হতে না হতেই খুশির সংবাদ নিয়ে আসলো বাহ তুমি দাঁড়াও আমি সবাইকে বলি আসছি।

ইয়ানা যেনো বোকা বনে গেছে ও বলল কি আর অন্তরা বুঝলো কি, কাল রাতে ভাজা পোড়া খেয়েছে তাই হয়ত গ্যাস বেড়েছে এই জন্যই বমি হয়ে এখন একটু ভালো লাগছে আর আপু তো একদম অনেক দূর পযন্ত ভেবে ফেলেছে,, নানা এখনি আপুকে থামাতে হবে নয়ত মান ইজ্জত আর কিছু থাকবে না,, আরে আপু আপু কোথায় যাচ্ছো তুমি হ্যাঁ এই শরীল নিয়ে এতো দৌড় ঝাঁপ করা ঠিক নয়, আর তুমি জানো না তোমার দেবরের সাথে আমার সম্পর্ক কেমন তোমার মনে হয় তোমার দেবর আমার কিছু করবে.

অন্তরা একবার ইয়ানার পা থেকে মাথা অবধি দেখে বলল,, নাহ আমারি ভুল আমি তো ভুলেই গিছিলাম তোমরা হলে টম এন্ড জেরি,, আচ্ছা তুমি রেডি হও আমি রুমে গেলাম।

অন্তরা বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই আর্দ্র রুমে ঢুকলো তারপর তারাহুরো করে রেডি হতে লাগল আর্দ্র কে দেখে ইয়ানার অন্তরার তখনকার বলা কথাগুলো মনে পড়ে গেলো আর নিজে নিজেই হাসতে লাগল,আর্দ্র আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজের টাই বাঁধছিল তখনি দেখলো ইয়ানা পাগলের মতো হাসছে,, আমাকে দেখতে কি সার্কাস এর জোকারের মতো লাগছে?? ওমন হাহাহা করে হাসছো কেনো।

আমি মোটেও হা হা করে হাসি না ওকে,, জানেন তো একটু আগে আপু কি বলছিলো তারপর ইয়ানা আর্দ্র কে সবটা বলল,, আর হাসতে হাসতে বলল, আপুতো জানেই না তার দেবর কিছু করতেই পারে না এই আপনার আবার কোথাও কোনো সম্যসা নেই তো না মানে চোখের সামনে এতো সুন্দরী হট বউ ঘুরে বেড়ায় তাও কিছু করেন না এবার তো আমার ডাউট হচ্ছে সত্যি আপনার সবকিছু আছে তো নাকি শুধু বডিটাই আছে আর নিচে সব ফাঁকা ,, কথাগুলো বলে আবার হাসতে লাগল ইয়ানা,, হাসতে হাসতে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে দেখে আর্দ্র চোখ লাল করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, তখনি ইয়ানার হুশ আসলো ও ঝুলে ঝুলে কি সব বলে ফেলেছে এখন আর্দ্র যে ওকে কি করবে সেটা ভেবেই ভয়ে শুকনো ঢোক গিলল।

আর্দ্র আস্তে আস্তে ইয়ানার দিকে এগিয়ে গেলো তারপর ওকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে একহাত দিয়ে ইয়ানার কমর চেপে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে বলল,,, মিসেস ইয়ানা চৌধুরী তুমি কি যেনো বললে আমার সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, তা তুমি কি দেখতে চাও আমার সবকিছু আছে কিনা যদি চাও তাহলে বলো এখনি দেখাতে পারি, তো কি বলো খুলবো নাকি?,, বাঁকা হেসে বলল আর্দ্র।

আর্দ্রর কথা শুনে ভয়ে ঢোক গিলে দুহাতে নিজের মুখটা ঢেকে বলল ইয়ানা,,ছিঃ এই না না আমি কিছু দেখতে চাইনা আপনার সব ঠিকি আছে এখন আমায় ছাড়ুন প্লিজ।

কেনো ছাড়বো কেনো আজতো তোমায় আমি সবকিছু দেখিয়েই ছাড়বো,, ও হ্যাঁ আর কি যেনো বললে তোমার মতো হট বউ থাকতেও আমি কিছু করি না কেনো, তা তোমার করার বুঝি খুব সখ?? তুমি তো আর্দ্র চৌধুরী কে চেনো না একবার যদি আদর করা শুরু করি না তাহলে সামাল দিতে পারবে তো??

ক,,কি ব,বলছেন এসব ছাড়ুন আমায় অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে আর আজকে না মিটিং আছে।

ছাড়বো তো বটেই তবে আজকে যা বলেছো বলেছো আগামীতে আর বলোনা তাহলে এভাবে বলবো না সোজা প্যাক্টিকালে দেখিয়ে দেবো যে আমি কি পারি আর কতটা পারি, তখন বুঝবে আর্দ্র কি পারে আর কি পারে না,, যলদি এসো আমি নিচে অপেক্ষা করছি,, আর্দ্র ইয়ানাকে ছেড়ে চলে গেলো।

উফ বাবা বাঁচলাম একটুর জন্য আমার প্রাণপাখীটা খাঁচা ছেঁড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো এই লোকটা ভিতরে ভিতরে এতো পাজি উপর থেকে দেখলে মনেই হয় না,, না বাবা আর কিছু বলবো না শেষে দেখা যাবে আমার মতো মাছুম বাচ্চার সাথে উল্টো পাল্টা কিছু করে দিয়েছে।

তারপর ইয়ানা নিচে নেমে আর্দ্রর সাথে অফিসে চলে গেলো,, ইয়ানা আর্দ্রর সাথেই অফিসে যায় তবে এখনো অফিসের সবাই জানে না যে ইয়ানার সাথে আর্দ্রর বিয়ে হয়ে গেছে,, যথারীতি ওরা দুজন অফিসে ঢুকলো তারপর সোজা মিটিং রুমে চলে গেলো ওখানে সবাই আগে থেকেই বসে ছিলো আর্দ্র গিয়ে চেয়ারে বসে পড়ল আর্দ্রর পাশের চেয়ারে অনিক আর সবার শেষে ইয়ানা বসল,, তারপর আর্দ্র আর অনিক সবাইকে প্রজেক্টটা বোঝাতে লাগল ইয়ানাও মন দিয়ে শুনছিলো কিন্তু হঠাৎই ওর পেটে আর কমরে বেথ্যা শুরু হলো যদিও বেথ্যাটা সকাল থেকেই হচ্ছিল তবে এখন যেনো বেড়ে গেলো, নিচে ভেজা ভেজা মনে হলো এতে যেনো ইয়ানার জান যায় যায় অবস্থা ও যা ভাবছে যদি সেটা হয় তাহলে তো সব শেষ,, এতো গুলো মানুষ রয়েছে এখানে, ইয়ানা আজকের ডেটটা দেখে নিলো তারপর সবার চোখের আড়ালে চেয়ারের দিকে তাকাতেই ওর পিলে চমকে গেলো ও যা ভেবেছে সেটাই হয়েছে, এই জন্যই সকাল থেকে কমরের মধ্যে বেথ্যা করছিলো আর ও বুঝতেই পারিনি।

প্রায় অনেক সময় পর মিটিং শেষ হলো আর্দ্র সবাইকে সবটা বুঝিয়ে দিয়ে মিটিং শেষ করল, লাঞ্চ টাইম এর সময় হয়ে গেছে তাই সবাই একে একে বেরিয়ে গেলো কিন্তু ইয়ানা এখনো সেই চেয়ারেই বসে আছে, আর্দ্র বেরিয়ে যেতে গিয়ে দেখল ইয়ানা সেই আগের মতোই বসে আছে তাই আবার ফিরে এসে ওকে বলল,, কি হলো এভাবে বসে আছো কেনো মিটিং শেষ চলো, নাকি সকালের রেশ এখনো কাটিনি ফাঁকা রুম পেয়ে রোমাঞ্চ করতে ইচ্ছে করছে নাকি,, মজা করে বলল আর্দ্র ।

আ,আপনি চলে যান আমি পরে যাবো।

কেনো পরে যাবে কেনো এখনি যাবে, আর এখন তো লাঞ্চ টাইম হয়ে গেছে যাও লাঞ্চ করে নেও উঠো।

আপনি প্লিজ জান আমি বলছি তো আমি পরে যাবো তবুও আমায় জোর করছেন কেনো?? ভালো লাগছে না আমার আমি খাবো না ক্ষিধে নেই আমার আপনি জান।

কেনো জানো ইয়ানার কথাটা আর্দ্রর পছন্দ হলো না, এতোক্ষণ তো ঠিকি ছিলো হঠাৎ করে ইয়ানার কি এমন হলো যে ও এভাবে কথা বলছে আর্দ্র কিছুক্ষণ ইয়ানার দিকে তাকিয়ে থাকল দেখল ইয়ানা ওর পেটে হাত দিয়ে পেট চেপে ধরে আছে আর্দ্রর কেনো জানো সন্দেহ হলো তাই ইয়ানাকে জোর করে ধরে চেয়ার থেকে উঠিয়ে দিলো ইয়ানা আর্দ্র কে কিছু বলতে গিয়েও পারলো না উল্টে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকল, আর্দ্র চেয়ারের দিকে তাকিয়ে যা বোঝার বোঝে গেছে ইয়ানাকে ধরে ওর কাছে নিয়ে এসে নিজের গায়ে থেকে কোর্ট টা খুলে ইয়ানার কমরে বেঁধে দিলো তারপর ওকে কোলে তুলে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।

এতোক্ষণ মাথা নিচু করে থাকলেও আর্দ্র করা কাজে ইয়ানা মাথা তুলে আর্দ্র দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে আর্দ্র গলা জরিয়ে ধরে মুচকি হেসে মাথাটা আর্দ্রর বুকে এলিয়ে দিলো,, আর্দ্র ইয়ানাকে কোলে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো সবাই ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো ইয়ানা তো লজ্জায় কোনোদিকে তাকাতেই পারিনি,, অনিক কেবলি মুখে বার্গারটা দিছিলো আর্দ্রর এহেন কাজে ও যেনো চিবাতেই ভুলে গেছে।

স্যার আপনার কোক নিন।

অনিক আর্দ্র দিকে তাকিয়ে থেকেই ওয়েটার এর হাত থেকে কোক না নিয়ে পাশ থেকে পানির গ্লাস টা নিয়ে মুখে দিয়ে বলল, ছি এটা কেমন কোক, এটা একটা কোক হলো বতলের মধ্যে পানি দিয়ে বলছেন কোক আপনাদের নামে তো দুর্নীতির মামলা দেওয়া উচিত, দিনে দুপুরে মানুষ কে ঠকাচ্ছেন।

কিন্তু স্যার আপনি তো কোক টা নেনই নি আপনি তো পানি গ্লাস নিয়েছেন।

ওয়েটারের কথায় অনিক ওর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখল ও সত্যি পানির গ্লাস নিয়েছে,, আমার ভাই তো দেখছি ওর কাজে কর্মে আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে ,, হ্যাঁ হ্যাঁ ওই হলো দেন কোকটা দিন আর আপনি যান।

ওয়েটারটা অনিকের দিকে তাকাতে তাকাতে চলে গেলো,।
,,,,,,,,,,,
আর্দ্র ইয়ানাকে কোলে নিয়ে রুমে এসে ওকে নামিয়ে দিয়ে বলল,, তুমি চেঞ্জ করে আসো, আর হ্যাঁ সব কিছু আছে তো নাকি আমি,,

না না আমার সব কিছুই আছে আমি এখুনি চেঞ্জ করে নিচ্ছি মাথা নিচু করে কথাটা বলে ইয়ানা ওয়াশরুমে চলে গেলো। তার কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসলে আর্দ্র বলল,, শোনো পিরিয়ড কোনো খারাপ জিনিস নয় আর আমি তোমার হ্যাজবেন্ড তুমি আমায় বলতে পারতে শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলে, এখন থেকে কোনো সম্যসা হলে আমায় বলবে ওকে?? আর হ্যাঁ আমি নিচে বলে দিয়েছি তোমার খাবার উপরে পাঠিয়ে দিবে তুমি তাহলে এখন রেস্ট নাও আমি অফিসে যাচ্ছি , ওকে।

আচ্ছা,, লোকটা এতোটাও খারাপ নয় অনেক কেয়ারিং একটা বর শুধু মাঝে মাঝে একটু বদগিরি করে তবে মনটা অনেক ভালো, আজকে ওনি না থাকলে ভিষণ লজ্জায় পড়তে হতো,, ইয়ানার ভাবনার মাঝেই বাড়ির কাজের লোক খাবার নিয়ে আসল ইায়ানা খাবারটা খেয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল এখন একটু ঘুমালে ভালো লাগবে তাছাড়া কমরটাও হালকা বেথ্যা করছে।

,,,,,,সন্ধ্যায়,,,,
আর্দ্র আসার আগেই অনিক বাসায় চলে আসছে তারাতারি করে নিজের রুমে চলে গেলো দেখল অন্তরা বেডে বসে আছে,, এই তুমি এখানে বসে আছো আর ওদিকে যে অনেক কিছু হয়ে গেছে।

আরে আস্তে অনিক আগে তো ফ্রেশ হও জামা খুলো চেঞ্জ করো।

আরে ওসব করার সময় নেই আজকে যা হয়েছে তুমি যদি জানো তাহলে লুঙ্গি ড্যান্স করবে ,, আমার তো মনে হচ্ছেলো তখনি তোমায় ফোনে বলে দিই তবে ফোনে বললে মজা পেতে না তাই অনেক কষ্টে পেটে চেপে রেখেছি এখন আর রাখতে পারছি না তোমায় না বললে সত্যি পেট ফেঁটে যাবে।

তাহলে তারাতারি বলো কি হয়েছে তোমার আর পেটে চেপে রাখতে হবে না বল বলো।

জানো আজকে লাঞ্চ এর সময় আমি যখন লাঞ্চ করছিলাম তখন দেখি আমার ভাই ইয়ানাকে কোলে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ।

কিহ?? আর্দ্র ইয়ানা কে কোলে নিয়ে তারপর ওতোগুলো মানুষের সামনে দিয়ে বেরিয়ে আসছে?? আমি অবশ্য বিকেলের দিকে ইয়ানার রুমে গিয়েছিসাম দেখলাম ও ঘুমাচ্ছে তাই আর জাগায়নি, কিন্তু তলে তলে যে এতো কিছু হয়েছে আমিও জানিই না, দাঁড়াও ইয়ানা পরশকে পড়ানো শেষে বার হলেই ওকে চেপে ধরবো।

ওকে সোনা তুমি একটু বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,, অন্তরার কপালে চুমো দিয়ে অনিক ওয়াশরুমে চলে গেলো।

জানো তো কিউটিপাই আমার না একটাও বন্ধু নেই আর মাম্মাম আর পাপা সেই কবে বলেছিলো যে একটা বুনু আনবে এখনো আনলোই নাহ।

আনবে সোনা, তা তোমার স্কুলেও কোনো বন্ধু নেই??

আরে আমি তো সেই বন্ধুর কথা বলছি না,, আচ্ছা তুমি একটা কাজ করো তুমি আর চাচ্চু মিলে তোমার মতো আরো একটা ছোট্ট কিউটিপাই আনো তারপর তাকে আমার বন্ধু বানাবো আর পরে ওকে বিয়ে করবো।

পরশের কথা শুনে ইয়ানা কাশি উঠে গেলো মনে মনে কল্পনা করলো ওর আর আর্দ্রর বাচ্চা,, এটাও সম্ভব??

চলবে,,,,,???

,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here