#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ১৫
বাসায় ভর্তি মানুষ। আমি চাচির হাতে হাতে কাজ করে যাচ্ছি। এখন ঘড়িতে এগারোটা বাজে। খাওয়া দাওয়ার পর চাচি ভেতরে কিছু রান্না করছে আন্কেলের জন্য তার বাইরের তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
আমি তাকে সাহায্য করছি।
আপু আমাকে আজ আর ডাকে নি হয়তো আজ একাই যাবে পার্লারে। ভালোই হয়েছে আমাকে না নিলেই ভালো কি বিরক্ত যে লাগে বলে বুঝাতে পারবো না।
–এই যে আরুশি না কি যেন তোমার নাম?
হঠাৎ তানিশা আপুর কথা শুনে চমকে তাকায় আরুশি।
–জি আরুশি আমার নাম কিছু বলবেন!
–হুম আমার সাথে এসো তো একটু।
–এখন এখানে বলেন।
–মুখে কথা বলো কেন রুমে তোমাকে কাজ দেব এখানে বললে কি হবে?
–আমি তো কাজ করছি তাহলে আপনি যান আমি এটা শেষ করে আসছি। আর চাচি ও এখানে নেই সে আসুক।
–আমার সাথে আগে আসো এটা পরে করে নিও।
আরুশি কি করবে বুঝতে পারছে না। চাচি আমাকে রান্না ঘরে রেখে গেছে।
রান্নার তোরজোর হচ্ছে সেখান থেকে ডেকেছে তাই। সে না আসা পযর্ন্ত রেখে যাই কিভাবে।
–কি হলো এখন ও দাড়িয়ে আছো কেন? আসো।
বলেই হাটাঁ ধরলো সামনের দিকে।
আরুশি যাচ্ছে না রান্না পুড়ে যাবে রেখে গেলে। গ্যাস কমিয়ে চাচিকে ডাকতে গেল। এই মেয়ে ওইদিন কেমন করছিলো আমি না গেল ও তাই করে যদি আজকে ও করে। বাসার মানুষ বেশি আজকে সেদিনের থেকে ও চাচিকে ডাক দিয়ে সিড়ির দিয়ে দৌড়ে দিলাম হঠাৎ ঠাস করে কারো সাথে ধাক্কা লাগলো,
সামনে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে উপরে থেকে আসলো এটা আবার কে?
–আরুশি কিছু বলতে যাবে ছেলেটি সরি বলে উঠলো,
–আই এম সো সরি আমি খেয়াল করি নি আপনার কোথায় কী লেগেছে?
আরুশি রাগ হয়েছিল ধাক্কা লাগায় কিন্তু কিছু বলল না সরি বলায় রাগ উবে গেছে ইটস ওকে বলে আরেক দৌড়ে সোজা উপরে চলে আসে।
ছেলেটা আরুশি কে দৌড়াতে থেকে হা করে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে আমার দিকে ভালো করে তাকালো ও না।
আরুশি হাঁপাতে হাঁপাতে দরজা কাছে এসে দাড়ালো।
–এতো সময় লাগে আসতে কেন?
কিছু বলল না আরুশি চুপ করে থাকাটাই ভালো।
বকতে বকতে ভেতরে গেল ও আমাকে ইশারায় যেতে বললো,
–এটা ধুয়ে আনো।
একটা শাড়ি এটা কাল পরেছিল।
কথা না বাড়িয়ে নিয়ে নিলাম।
–ভালো করে ধুবে।
কিছু না বলে বাথরুমে চলে যায়।
রুমে এসে বসলো তেমন কাজ করিনি তবুও ক্লান্ত লাগছে। নিচে সব শেষ ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখে বারোটা বাজে। আমার ত রেডি হতে সময় লাগে না একটু রেস্ট নেই। দরজা চাপিয়েই এসেছি। ঘুমিয়ে পরে।
তীব্র চিৎকার কানে আসতেই ঘুম ছুটে গেল এমন করে ডাকছে কে তাকিয়ে দেখি জেসমিন আপু সাজছিল মনে হয় মুখের মেকাপ পুরো হয় নি শাড়ি পেচিয়ে আছে সাথে আর ও দুইটা মেয়ে। আমি কি পার্লারে আছি কিন্তু আমার তো মনে আছে আমি আজ পার্লারে যাই নি।
এটা তো আমার রুম তাহলে।
–আমি কোথায় আছি আপু!
–কেন তোর রুমে আছিস কেন কি হয়েছে?
–আমার রুমে তাহলে তুমি এভাবে এখানে কেন আর এরাই বা কে?
–ওহ এই কথা আমি তোর রুমে সাজতে এসেছি নিচে আমার রুমে অনেক মানুষ তাই। আর এরা তো পার্লারের লোক আমাকে সাজাতে এসেছে।
–বাসায়?
–হ্যাঁ কাল আমরা গিয়ে সেজে আসতে লেট হয়েছে তাই বাসার ই রাইয়্যান লোক আসতে বলেছে।
–রাইয়্যান, উনি তো বাসায় নেই।
–হ্যা সকালে বলে গেছিলো আমাকে।
–অহ আমি তো অবাক হয় গেছিলাম তোমাকে দেখে।
–ভালো এবার উঠ দেখ কতো বাজে রেডি হবি না। আমাকে সাজাতে হেল্প কর।
–আমি কি হেল্প করবো?
–কি ভাবে সাজালে ভালো লাগবে ওইটা বলে দে।
–আমি বুঝি নাকি?
–কালকে তোর বলা মতো সেজেছি আর সেটি জুনায়েদ এর পছন্দ হয়েছে আজকে ও তুই বল না। তার আগে গোসল করে আয় যা দেখ দেরটা বাজে।
–আমার লেট হবে তুমি আগে সেজে নাও।
আপু বসে পরলো একটু আকটু বলে দিলাম।
আপুকে অনেক সুন্দর লাগছে লাল টকটকে শাড়ি পরেছে। আপুর সাজ হতেই
আমি গোসল এ চলে গেলাম।
আসতে আসতে আপুর সাজ কমপ্লিট।
আপু আজকেও ওনাদের কাছে সাজতে বলছে আমি না করে দেয়। ওনারা বের হয়ে যায়। আমি আমার গত ঈদে মামার দেওয়া ড্রেস টা বের করে পরতে যাব। হঠাৎ দরজা খুলে কেউ রুমে ঢুকে দেখি ওই পার্লারের মেয়ে দুটো।
— আপনারা ! আপনাদের তো চলে যেতে বললাম
–ম্যাম আপনাকে সাজিয়ে দিতে বলেছে।
–কে?
–স্যার আপনাকে রেডি করে দিতে বলেছে।
–কোন স্যার আমি সাজবো না আপনারা চলে যান।
–আপনাকে সাজাতে হবে না হলে আমাদের চাকরি থাকবে না প্লিজ না করবেন না।
আরুশি কিছু বুঝতে পারছে না ওকে আবার কে সাজাতে বলল,
আপু নাহ আপুকে তো আমি না করে দিছি।
স্যার আবার কে? আন্কেল না রাইয়্যান।
রাইয়্যান তো বাসায় নেই তাহলে আন্কেল।
–শাড়ি দেখে তো আর ও হা এটা তো সেই শাড়ি এটা কোথা থেকে এলো।
–এই শাড়ি কোথায় পেলেন আপনারা
–স্যার দিলেন আপনাকে এটা পরতে বলেছে।
–এটা।
এটা আমার পছন্দ আন্কেল জানল কি করে। সে তো আমাদের সাথে যায় ও নি।
হাতে নিয়ে শক এর উপর শক খাচ্ছি।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছি। মেয়ে দুটো চলে গেছে সাজিয়ে দিয়ে আজ আমাকে বেশি সাজিয়েছে। গরজিয়াস লজ্জা লাগছে বের হতে দেখতে খারাপ লাগছে না কিন্তু কখনো এতো সাজ গোজ করা হয় নি তাই।
শাড়িটা কিভাবে পেল এটা মাথায় থেকে যাচ্ছে না।
আর কতোক্ষণ বসে থাকবো তিনটে বাজে নিচে সবাই এসে গেছে। রাইয়্যান কি এসেছে নিচে গেলেই দেখা যাবে।
সবাই নিজেদের মতো মজা করছে। তানিশা মেয়েটি ও আছে আজকে শাড়ি পরে নি। হাটো পযর্ন্ত টাইস পরেছে লাল শট টপস। চুল উচুতে জুটি করে আছে। কয়েক জন ছেলের সাথে কথা বলছে হেসে হেসে।
আপু আর ভাইয়া একসাথে বসে আছে তাদের ফটো তোলা হচ্ছে।
আমি যাওয়ার পর সবাই কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে আপুর কাছে একবার গেলাম। সে তো বলতে বলতেই শেষ আমাকে নাকি অনেক সুন্দর লাগছেশাড়িটা কোথায় পেলাম। আমি জানিনা বলে দিলাম।
সবাই আছে কিন্তু রাইয়্যান নেই। আসে নি নাকি এখন। একজন ওয়েটার এসে কোল্ড ডিংক্ম নিতে বলছে।
আমি খাইনা বলে না করে দেয়।
রাইয়্যানকে কে মিস করছি উনি না আগেই আসবে বললো এখন ও এসে উপস্থিত হয়নি কেন?
হঠাৎ সবাই পেছনে তাকায় আমি ও তাকিয়ে দেখি রাইয়্যান আসছে। বাপরে কি স্টাইল চুল ঠিক করতে করতে এ্যাটিডিউট নিয়ে আসছে।
অবাক করা বিষয়ে আমার শাড়ির সাথে ম্যাচিং করা ব্লেজার পরেছে।
আমার পাশ কাটিয়ে চলে গেল। যাওয়া আগে চোখ মেরে গেল আমি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছ সোজা উনি ওই তানিশাদের পাশে গিয়ে দাড়ালো সবার সাথে কথা বলছে। আমি এখন ও তাকিয়ে আছি হা করে চোখ মারলো কেন?
আবার কথার মাঝে হেসে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো এবার চোখ বের হবার উপক্রম। পাগল হলো নাকি এমন করছে কেন আপু ডাকছে তার কাছে স্টেজে গেলাম। রাইয়্যান কে ও ডাকলো রাইয়্যান ও এলো।
আপু আর জুনায়েদ ভাইয়া একপাশে আপু আমার হাত ধরে রাইয়্যানকে আমার পাশে দাড়াতে বলে পিক তুলতে লাগলো।
এই সুযোগ আমি ফিসফিস করে রাইয়্যান কে জিগ্গেস করলাম।
–কি হয়েছে আপনার এমন করছেন কেন?
–কই কি হবে কিছু হয়নি তো।[ একটু জোরেই বলেছে]
–আরে আরে জোরে বলছেন কেন? আস্তে বলেন আপু শুনবে আপনি আমায় চোখ মারলেন কেন?
–হোয়াট আমি তোমায় চোখ মারছি!
অবাক হয়ে বললো, যেন কিছু করেনি আমি মিথ্যা মনে হয় বলেছি।
–এতো অবাক হচ্ছেন কেন যেন আমি মিথ্যা বলছি।
— মিথ্যাই তো বলছো আমি এইসব কখনো করিনি।
–ইউ আপনি আমাকে মিথ্যাবাদী বলছেন।
–সেটা আবার আমি কখন বললাম তুমি বেশি শুনো। আমি বলেছি আমি চোখ মারিনি।
পিক তোলা বাদ দিয়ে রাইয়্যানের দিকে রেগে তাকালাম।
–একদম মিথ্যে বলবেন না এই মাএ দুইবার চোখ মেরেছেন।
— অসম্ভব।
–এইভাবে অশিকার করছেন আপনার কপালে,
আর বলতে পারল না জেসমিন টেনে ধরছে,
–উফ আরুশি বোন একটু পিকটা তোল আর কি সব বলছিস সবাই কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখ।
আরুশি সামনে তাকিয়ে চুপ হয়ে ছবি তুলে রেগে হনহনিয়ে নেমে এলাম।
রাইয়্যান ও নেমে আরুশির দিকে তাকিয়ে রাগিনী বলল,
আরুশির কানে কথাটা এলো গাল ফুলিয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইল,
রাইয়্যান মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে কিছু বিরবির করে চলে গেল।
–হে মিস আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে ইউ আর সো হট?
রেগে রাইয়্যানের দিকে তাকিয়ৈ ছিলো আবার এমন কথা কানে আসতেই দ্বিগুণ রেগে তাকালো সকালের সেই ছেলেটি?
–কি বললেন?[ দাতেদাত চেপে]
ছেলেটা রাগি কথা শুনে ভয় পেয়ে বলল,
–আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। পরের কথাটা আর বললনা।
–তো আপনাকে বলতে বলেছি আমি আমাকে সুন্দর নাকি বিচ্ছিরি লাগছে। কেন বলতে এসেছেন?
–নাহ কিন্তু সুন্দর কে সুন্দর বললে কি কোন সমস্যা।
–হ্যাঁ সমস্যা আমি সুন্দর হই বোনধর হয় আপনার বলতে হবে না যান নিজের কাজে। যওসব?
–আপনার নামটা জানে পারি।
–আপনি যাবেন।
জোরে বলল, ছেলেটা চলে গেছে।
সবাই খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম আমি আপুর পাশে বসেছি।
আমার পাশে রাইয়্যান বসেছে তার পাশে তানিশা। আমি আর তাকিয়ে ও দেখিনি রাইয়্যানকে রাগে ছিলাম অসভ্য লোক এভাবে অশিকার করলো। রাইয়্যান খুচিয়ে ছে আমি পাওা দেয়নি।
বিয়ে শুরু হবে এখন কাজি চলে এসেছে আরুশি নিজেকে ঠান্ডা করে জেসমিনের পাশে গিয়ে দাড়ালো সবার বর কনের দিকে নজর এখন। ভাইয়া তো সাথে সাথেই কবুল বলে দিয়েছে কিন্তু আপু আর বলছে না চাচিকে ধরে সেকি কান্না। আমার ও কষ্ট হচ্ছে জানিনা কেন? অবশেষে আপু কবুল বলল আর বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।
জুনায়েদ ভাইয়া এখানেই থাকে ওনার আলাদা কোন জায়গা না থাকায় বাসর এখানেই হবে। পরে নতুন বাসায় উঠবে বউ নিয়ে বলেছে।
আপুর রুম সাজানো হলো। আপুকে রুমে নয় টার দিকে রেখে চলে এলাম বাইরে।
রুমে ঢুকতে যাবো কেউ হাত টেনে ধরেছে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে মনে হচ্ছে ছাদে এনে ছারলো।
রেগে সামনের লোকটার দিকে তাকিয়ে আছি।
–এখানে নিয়ে এসেছেন কেন?
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ১৬
–এখানে নিয়ে এসেছেন কেন?
আরুশি রেগে কথাটা বলল,
রাইয়্যান কিছু বলল না শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
–কি হলো কথা বলছেন না কেন? ওকে বলতে হবে না আমি যাই।
বলেই চলে যেতে যায় রাইয়্যান আবার হাত ধরে।
–বারবার হাত ধরছেন কেন? আমার এসব একদম পছন্দ না আপনাকে ফ্রেন্ড বলেছি বলে বারবার হাত ধরবেন এটা মেনে নেব না।
— সরি,
হাত ছেরে দিয়ে রাইয়্যান সরি বলে উঠে আরুশি সরি শুনে ৪৪০ ভোল্টেজের শক খেয়েছে বড় বড় চোখ করে রাইয়্যান এর দিকে তাকায়েছে।
–হোয়াট হ্যাপেনস? এভাবে তাকিয়েছো কেন?
–আপনি ঠিক আছেন। [ অবাক হয়ে]
–অবকোর্শ আমি তো ঠিকই আছি।
–আমার মনে হচ্ছে ঠিক নেই আপনি একদম ঠিক নেই। কি সব করছেন বলছেন? আচ্ছা আপনার কি শরীর খারাপ জ্বর হয়েছে নাকি।
বলেই কপালে হাত দিতে যায়। আবার হাত সরিয়ে নেয়।
–আপনি দেখেন তো আপনার কপাল কি গরম নাকি?
–উফ আরু আমার কিছু হয়নি সিরিয়াসলি অযথা টেন্স হচ্ছো। আর হঠাৎ তোমার এমন কেন মনে হচ্ছে এই তো রেগে ছিলে এখন আবার চিন্তিত লাগছে কেন?
–হুম রেগেই তো ছিলাম। রাগবো না বলেন আপনি যা করলেন আমাকে চোখ মারলেন আবার অশিকার করলেন। করা এখন আমি সিউর আপনার কিছু হয়েছে না হলে এসব করতেন নাকি। সরি আপনি আমাকে সরি বললেন?
এতোক্ষণে রাইয়্যান বুঝলো আরুশির এমন করার ব্যাপারটা। রাইয়্যান নিজেও অবাক ও একটু আগে সরি বলেছে। কিন্তু কিভাবে বললাম,
নিজের প্রতি নিজেই অবাক হয়ে ভাবনায় চলে গেছে।
–আপনি আমাকে সরি বলেছেন এটা শুনে তো আমার জ্ঞান হারানোর অবস্থা আচ্ছা সত্যি বলেছেন নাকি আমি ভুল শুনেছি বলেন তো। আপনাকে কতোবার এই একটা সরি বলতে বলেছি কিন্তু আপনি বলেন নি আজ বললেন।
–আরুওওওও
–কানে হাত দিয়ে, উফ আবার চিৎকার করছেন আমি শুনি তো বয়রা না বলেন কি বলবেন?
–শুনো শুনলে এতোবার ডাকতে হতো না।
–কতোবার ডাকছেন শুনি।
–অনেক বার।
— সত্যি,
আরুশি ভাবনায় পরলো হয়তো ডাকছে কারণ আমি কথা বলছিলাম রাইয়্যার ঠোট নরেছে দেখেছি।
–জানিনা,
ভ্রু কুচকে তাকালো রাইয়্যানের দিকে,
–না জানলেন বলেন এখানে কেন এসেছি।
–গল্প করতে।
–এখন গল্প করবেন !
–হ্যা, সারাদিন তো আমাদের কথায় হয় নি আসো এখন সময় কাটায়।
–দরকার নেই আমার ঘুম পাচ্ছে।
–প্লিজজ,
–আমার সাথে কি গল্প করবেন তানিশা আপুকে নিয়ে আসেন ডেকে তার সাথে গল্প করেন।
–ওর সাথে তো বিকেল ভর করেছি এখন তোমার সাথে সময় কাটাতে ইচ্ছে হচ্ছে।
–এতো ইচ্ছে কিন্তু ভালো না।
–ভালো দিয়ে কি হবে? কফি করতে পারবে প্লিজ মাথা ব্যাথা করছে?
–মাথা ব্যাথা করছে তাহলে শুয়ে পরেন যান। নাহলে ব্যাথা আর ও বারবে।
–কফি খেলেই কমে যাবে। তোমার কি জুলুম হচ্ছে ওকে লাগবে না চলো বসি।
–দূর ছাই যান বসেন আমি কফি নিয়ে আসছি।
আরুশি বিরবির করে বকছে মাথা ব্যাথা করছে শুয়ে পর না তার এখন ই গল্প করতে হবে অসহ্য।
রাইয়্যান ওর দিকে তাকিয়ে হেসে উঠে,
দোলনায় বসে চাদেঁর দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু ভাবছে আর হাসছে,
–ধরুন আপনার কফি
আরুশির কথায় ধ্যান ভেঙে যায়। কফি নিয়ে দাড়িয়ে আছে পরনে সেই শাড়িটা আবছা আলো লাইট জ্বালানো না শুধু চাদেঁর আলোয় হালকা দেখা যাচ্ছে।
–কিহলো এমন করে তাকিয়ে আছেন কেন আগে আমাকে দেখেন নি। আমি কি এলিয়ন নাকি যে এভাবে তাকিয়ে আছেন।
— বিরক্ত নিয়ে আরুশির কথায় কফি নিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
–যাও আর তাকাবো না।
— এমন ভাবে বলছেন যেন আপনি না তাকালে আমি কান্না করবো আর বলবো একটু আমায় দেখেন।
–আরু এখন কিন্তু আমি তোমার সাথে তর্ক করি নি তুমি করছো?
–করছি ভালো করছি।
আপনি আমাকে চোখ মেরে না করেছেন। রেগে বলল,
–উফ এখন ও মনে রেখেছো তুমি সত্যি মাথা মোটা।
–কি বললেন আমার মাথা মোটা?
গাল ফুলিয়ে,
–হ্যাঁ।
–দূর আপনার সাথে আর কথায় বলবো না যান তো।
–যাবো না মিস।
–আপনার বাসা আপনি ছাদ আপনি থাকেন আমি যাই।
–ঝগড়া আগে তুমি করছো তাই রাগ তুমি না আমার করা উচিত কিন্তু রাগ দেখাচ্ছো তুমি?
–বেশ করেছি আপনি কিছু করলে শিকার করেন না কেন? আগে সেটা বলেন?
–আরো একটু বসো তারপর সত্যি টা বলবো।
–কি সত্যি বলবেন?
–এই যে আমি তোমাকে,চোখ মেরেছি এটার বিষয়ে।
–এই বিষয়ে আমি সব জানি কিন্তু কারণটি বলেন নি।
–তোমাকে মেরেছিলাম না অন্য একজন কে দিয়েছি তুমি ভেবেছো তোমাকে?
–এ্যা [ হা করে তাকিয়ে আছে রাইয়্যানের দিকে]
–বসো,
রাইয়্যান দোলনার কিনার ঘেষে বসে পরলো আরুশি ও আরেক পাশে বসে হা হয়ে আছে।
তারমানে আমি ভুল ভেবেছি এতো বড় ভুল আমি ভাবলাম কেমনে?
–মুখ বন্ধ করো মশা ঢুকবে?
— সত্যি আপনি আমাকে চোখ মারেননি।
–নাহ গো তোমাকে কেন মারবো তুমি আমার কে?
–তাই তো আমাকে কেন মারবেন? আমি এতো বড় ভুল ভাবলাম,
নিজের উপর রাগ হচ্ছে আমি এসব ভাবলাম কেন আমাকে কেন?
–আচ্ছা কাকে মেরেছিলেন?
–[ থতমত খেয়ে] ওইতো একটা মেয়েকে?
–কোন মেয়েকে ! [ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে ] আমার পাশে তো কোন মেয়ে ছিলো বলে আমার মনে পরছে না।
–ছিলো তুমি খেয়াল করো নি
–আমার স্পস্ট মনে অাছে আমার পাশে কোন মেয়ে ছিলো না।
–ছিলো তুমি দেখো নি।
–ছিলো না।
–ছিলোওওও
–ছিলো না বলছিনা চিৎকার করবেন না আপনি আমাকে বোকা করতে পারবেন না।
আঙুল উঠিয়ে,
–রাইয়্যানননন তোরা এখানে কি করছিস এখন?
তানিশা আপুর কথা শুনে দুজনে ঝগড়া অফ করে পেছনে তাকালো।
–তুই এখানে?[রাইয়্যান]
–তোরা এখন কি করছিস এখানে?
বলেই এগিয়ে এলো। ভালোই হয়েছে তানিশা আপু এসেছে বলো এবার কি করছিলে অসভ্য আমার সাথে ঝগড়া করা। মুখ ভেংচি কেটে নিজে ও উঠে দাড়ালো,
–কিছু না এমনি।
–এই মেয়েটা কি করছে?
–এটা কেমন কথা তানিশা এই মেয়েটা কেন বলছিস? ওর একটা নাম আছে আরুশি নাম ধরে ডাকবি।
— সামান্য কারণে রাগছিস কেন? আচ্ছা নাম বলবো তা আরুশি এখানে কি করছে?
আরুশি উঠে দাড়িয়ে রাইয়্যানের দিকে তাকিয়ে, আরেকবার ভেংচি দিয়ে চলে যায়।
রাইয়্যান সেটা দেখেই,
–আরু দাড়াও যাচ্ছো কেন আমার কথা শেষ হয় নি।
–আপনি আপুর সাথে গল্প করেন আমি ফ্রেশ হবো। মাথা ব্যাথা করছে?
–আরে শুনো তো।
আরুশি না শুনেই চলে এলো আসার সুযোগ পেয়েছে আর কী দাড়াবে।
সোজা রুমে এসে দম নেয়।
–রাইয়্যান তুই আমার কথার উওর দিলি না কিন্তু। ওই মেয়েটা গেছে ভালোই হয়েছে।
রেগে তাকালো তানিশার দিকে,
–কি হলো আবার রাগছিস কেন?
–আবার ওই মেয়েটা বলেছিস নাম বলতে বলেছি?
–ওই মেয়েটা বললে সমস্যা কি তোর কাজের মেয়ের সাথে এতো ভালো করে কথা বলার কি দরকার বুঝি না।
–তানিশা কাকে কাছের মেয়ে বলছিস তুই ও কাজের মেয়ে না।
–এমন অদ্ভুত বিহেভ করছিস কেন? ও কাজের মেয়ে না তো কে?
–আমার ফ্রেন্ড।
–হোয়াট আর ইউ সিরিয়াস, এটা কি করে সম্ভব এই মেয়ে তোর ফ্রেন্ড কি করে হলো?[ অবাক হয়ে] আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা এমন একটা মেয়েকে তুই ফ্রেন্ড বলছিস।
–তোর বিশ্বাস করায় আমার কিছু যায় আসে না।
–চলে যাচ্ছিস কেন?
–ভালো লাগছে না।
বলেই সোজা নেমে এলো তানিশার মাথায় কিছু ঢুকছে না কি হলো দুজনেই রেগে চলে গেল।
আচ্ছা আমাকে দেখেকি এমন করলো,
আর রাইয়্যান কি বললো ওই মেয়েটা ওর ফ্রেন্ড হাউ ফানি এমন একটা মেয়েকেও ফ্রেন্ড কি করে বানালো।
নিজের মনে কথা গুলো আওরাতে আওরাতে রুমে চলে এলো।
:
মামার সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। আমি তো ভুলেই গেছিলাম রাইয়্যানকে তো জিগ্গেস করাই হয়নি মামার সাথে পরিচিত হলো কিভাবে?
কাল জিগ্গেস করবো।
পরদিন
আরুশি আগেই উঠে নিচে এসে তিন কাপ কফি নিয়ে উপরে এলো ফাস্ট আন্কেল কে দিলো। আরেকটা তানিশার জন্য রাইয়্যানকে পরে দেবো ওর সাথে কথা আছে অনেক।
তানিশার রুমে গিয়ে দরজা নক করে ভিতরে গিয়ে দাড়াতেই,
–তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে?
–জি আপু বলেন?
–রাইয়্যান তোমার,
আর বলতে পারলো না ফোন বেজে উঠলো উনার,
ফোন কানে নিয়ে সোজা বারান্দায় চলে গেল। দূর এখানে দাড়িয়ে থাকতে পারবো না। আমি যাই পরে শুনে নিবো নি ওনার কথা।
রাইয়্যানের দরজায় এসে থামলাম।
নক করে দাড়িয়ে আছি কিছু বলছে না উকিঁ দিয়ে দেখে কোলবালিশ ধরে উল্টো হয়ে ঘুমিয়ে আছে। দূর এখন ও উঠে নি চোখে হাত দিয়ে কোন ভাবে টেবিলে
কফি রেখে চলে এলাম। দরজাটা জোরে চাপালাম যাতে জেগে যায় আর কফি খায় না হলে এটা ঠান্ডা হয়ে যাবে।
পরে শুনতে হবে।
সিড়ি দিয়ে নেমে সোফায় আপুকে বসে থাকতে দেখলাম। আমি গিয়ে আপুর সাথে গল্প করতে লাগলাম।
চলবে❤
[