আমার তুমি পর্ব ৩৩

#আমার_তুমি ❤️
#লেখিকা:-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:-৩৩

রাত এক টা বাজে আরুশি গভীর ঘুমে পাশে সোনালী ঘুমিয়ে আছে। আরুশির ফোনটা একটু পরপর লাইট জ্বলে আবার নিভে যাচ্ছে সাইলেন্ট থাকায় শব্দ হচ্ছে না।
এদিকে রাইয়্যিন রুমে পায়চারি করছে আর একের পর এক ফোন মেসেজ দিয়ে যাচ্ছে আরুশিকে কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না যাকে নিয়ে এত ভাব ছে সে তো গভীর ঘুমে তলিয়ে।
কিন্তু রাইয়্যানের তো ঘুম হচ্ছে না একবারে আরুশিকে না দেখতে পারলে ওর ঘুম হয় না।
দরজা খুলে দেখে ড্রয়িং রুমে কয়জন সার্ভেন্ট জেগে আছে হয়তো কাজ করছে।
রাইয়্যান এসে দরজায় আঘাত করল কিন্তু একি দরজা ভেতর থেকে ছিটকে লাগানো আরু তো কখনই দরজা ভেতর থেকে ছিটকে লাগায় না।

ব্যর্থ হয়ে রাইয়্যান খাটে শুয়ে পড়ে চোখ বন্ধ করছে ঘুম আসছে না। হঠাৎ ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে এত রাতে আবার কে করলো হাতে নিয়ে দেখে আরুর নম্বর থেকে ফোন চমকে বড় বড় চোখ করে ফোনের দিকে তাকিয়ে। কিভাবে এটা হচ্ছে এতক্ষণ এত ফোন দিলাম ধরল না এখন নিজেই কল করছে। এতটাই অবাক হয়েছে যে ফোন ধরতেই ভুলে গেছে।

বাজতে বাজতে ফোন কেটে যায়। ফোন কাটতে রাইয়্যানের ধান ভাঙ্গে ও তাড়াতাড়ি ফোন নিয়ে আরুর নাম্বারে কল করে সাথে সাথে ঐ পাশে থেকে উদ্বিগ্ন চিন্তিত গলায় জিজ্ঞেস করে উঠে,,,,

—হ্যালো আপনি ঠিক আছেন ? আপনি কিছু হয়েছে কি ? এতবার ফোন দিয়েছেন কেন আপনার শরীর ঠিক আছে। কি হল কথা বলছেন না কেন আমার কিন্তু টেনশন হচ্ছে অনেক।
—-আমি ঠিক আছি আরু এত ব্যাস্ত হয়না।
—ব্যস্ত হবো না কি বলছেন আপনি! আমার আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে জানেন টেনসনে?
—আরু একটু ছাদে আসতে পারবে।
—কেন ছাদে আসব কেন আপনি ঠিক আছেন তো! সত্যি করে বলেন?
—আমি ঠিক নেই।
—আমি এক্ষুনি আসছি।

রাতে আরুশির পানি খাওয়ার অভ্যাস আছে তাই পানি খাওয়ার জন্য। উঠিয়ে টি টেবিলের ওপর থেকে পানি খেয়ে ঘুমোতে যাবে । তখন কটা বাজে দেখার জন্য ফোন হাতে নিতেই চমকে উঠে 50 মিসকল 1 নাম্বার থেকে সবগুলো রাইয়্যানের নাম্বার থেকে এসেছে। চিন্তায় ওর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফুটে। সাথে বুকের ধুকধুকানি বেড়ে যায় রাইয়্যানের কিছু হল না তো।
সাথে সাথে নাম্বারে কল ব্যাক করে কিন্তু ধরছেনা আরুশির হাত পা অবশ হয়ে আসছে উঠে দরজা খুলে রাইয়্যানের রুমে যেতে নেয়।

আজকে ফোন বায়বিষন ছিল তাই একটা কলে শব্দ ওর আর কানে পৌছায় নাই।
সাথে সাথে দেখে রাইয়্যান করেছে। তাইই যাওয়া অফ করে ফোন কানে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করতে থাকে কি হয়েছে? ছাদে কেন যেতে বলছে অসুস্থ হলে সেখানে যেতে বলবে কেন? তবুও আরুশি এত কিছু ভাবনা চিন্তা করার সময় নাই। খুব টেনশন এ আছি ওড়না মাথায় দিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। হঠাৎ হাতের টান অনুভব করে চমকে পিছনে তাকিয়ে দেখি সোনালী বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে ওর দিকে তাকায়। হঠাৎ কেউ হাত ধরায় প্রচন্ড ভয় পেয়েছিল আরুশি। সোনালীকে দেখে হাফ ছেড়ে বাঁচে।

—এই তুই কই যাচ্ছিস?
ব্রু কুচকে প্রশ্নটা করল,,
—-আমি আসলে,

সোনালী কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে! হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস,,,,
—এই তুই ভাইয়ার সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস তাই না।
হাসি হাসি মুখ করে।
আরুশি কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সোনালীকে যদি এখন বলি রাইয়্যানের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি তাহলেই হলো অন্যদিকে চলে যাবে। প্রেম করতে যাচ্ছিস ঘরে বসবে।

–ওই কোন ভ্যানে পড়লি?
—কই তুই যা তো ঘুমা আমি একটু আসছি।
—কই যাচ্ছিস বল আগে তার পর যেতে দেব।
—আমি নিচে যাচ্ছি পানি খেতে।
—মিথ্যে বলছিস?
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে,
—মিথ্যে কেন বলতে যাব সত্যি।
—রুমে তো পানি নিয়ে রেখেছিলাম। তাহলে বাইরে যাচ্ছিস কেন। আমাকে মিথ্যা বলার জায়গা পাওনা নে।
সত্যি সত্যি বল নয়তো আমি কোথাও যেতে দিচ্ছে না।
— রাইয়্যান মনে হয় অসুস্থ তাই আমাকে ডেকেছে প্লিজ যেতে দে।
—অসুস্থ মানে?
—হ্যাঁ অসুস্থ আমাকে বলল নাকি ভালো নেই।
—আরে হাঁদারাম এই ভালো সেই ভালো ন‌ই রে।
—মানে?
—আচ্ছা তুই যা তোকে ছেড়ে দিলাম।

সোনালীর রুমে গিয়ে খাটে শুয়ে পড়ে। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলো।
এই মেয়েটার মতিগতি কিছুই বুঝিনা ‌

এসব কিছু না ভেবে চিন্তা মুক্ত করে নিজেকে। রাইয়্যানের চিন্তা নিয়ে তাড়াতাড়ি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে,
ছাদে পা রাখে চারপাশের ঘুটঘুটে অন্ধকার আজকে চাঁদে আলো কম তাই ছাদে অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না একটু একটু দেখা যাচ্ছে। অন্ধকারে আরুশির হালকা ভয় আছে তবুও রাইয়্যান আছে ভেবে সামনে এগোয় আবার কি জানি ভেবে পিছিয়ে যায়।
আরুশির চিন্তা করতে লাগে এই অন্ধকারে এখানে কি করছে রাইয়্যান কাউকেই তো দেখছি না অন্ধকারে অবশ্য দেখাও যাচ্ছে না। সুস্থ থাকলে ছাদেই বা কেন আসবে সে তো রুমে শুয়ে থাকার কথা। ভাবনার মাঝে নিজেই নিজেকে বোকা ভাবে আসলেই সে বোকা প্রচন্ড বোকা না হলে কেউ এই কথাটা বিশ্বাস করে। রাইয়্যান এইভাবে আমাকে বোকা বানালো,,,
তাইতো সোনালী ওই ভাবে আমাকে দেখে হাসছেন চোখ টিপলো আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। কোথায় ভাবলাম রাইয়্যান অসুস্থ হয়তো কিন্তু আমার মাথায় আসলো না অসুস্থ হলে ছাদে কেন আসতে বলব।

অসভ্য লোক বিরবির রাইয়্যানকে বকতে থাকে তারপর পেছনে ঘোরে চলে আসতে নেয়।
কিন্তু পারে না কেউকে হেঁচকা টানে দেয়ালে চেপে ধরে আরুশি। ঘটনা এত দ্রুত ঘটল যে ও ছোটানোর চেষ্টাও করতে পারলো না। হতভম্ব হয়ে সামনের অভয় কে দেখছে অন্ধকারে কিছুই বুঝতে পারছে না হ্যাঁ কিন্তু স্পর্শটা খুব চেনা এটা রাইয়্যানের স্পর্শ।

রাইয়্যানের নিশ্বাস আরুশির মুখে বাড়ি খাচ্ছে।
আরুশির বুকে হাতুড়িপেটা হচ্ছে নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে। অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে যা এর আগে কখনো হয়নি। রাইয়্যান এতটা কাছে কখনো আসেনি। নিজের দম বন্ধ হয়ে আসছে এভাবে আর কিছুক্ষণ থাকলে মনে হয় মরেই যাব। রাইয়্যান কে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে নিজের থেকে দূরে সরাতে চায়। কিন্তু রাইয়্যান আর শক্ত করে কোমড় জড়িয়ে ধরে।
—ক ক কি ক করে ছছেন ছার রুন ন
আরুশি কথা বলতে পারছে না ওর কথা বেজে যাচ্ছে।
—ভালোবাসি আরু।
ফট করে রাইয়্যান কথাটা বলে বসল কথাটা আরুশির গানে বারবার প্রতিধ্বনি হতে লাগলো। সারা শরীর মন জুড়ে এক ভালোলাগা সে য়ে যেতে লাগলো।
দমকা হাওয়া যেন আরুকে বারবার ছুঁয়ে যাচ্ছে।
চোখ বন্ধ করে জিজ্ঞেস করল,,,
—-কি বললেন?
রাইয়্যান এক দৃষ্টিতে আরুশির দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক যেন পড়ছে না ঘুটঘুটে অন্ধকার তার মাঝেও হালকা আরুশির মুখ দেখা যাচ্ছে। এত ভালো লাগছে দেখতে মনে হচ্ছে সারা জীবন এভাবেই তাকিয়ে থাকি মুখের দিকে। আরুশি আবার জিজ্ঞেস করতে রাইয়্যান কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে ওঠে,
—ভালবাসি আরূ খুব বেশি ভালবাসি কখনো ছেড়ে যাবে নাতো।
—আর কিছু না বলে রাইয়্যান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
এত ভালো কেন লাগছে আমার মনে চাচ্ছে সারাজীবন এভাবে রাইয়্যানে বুকে মাথা দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে থাকি।

,

আরুশিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে রাইয়্যান। রাইয়্যানের কথা শুনে আরুশি একবার হেসে উঠছে আবার লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলছে। দুজনের এখন খুনসুটি চলছে ভালোবাসার।

রাইয়্যান আর আরুশির ছাদে বাম কর্নারে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা ফিসফিসিয়ে কথা বলছে। হঠাৎ কারও গলার আওয়াজ শুনে আরুশি রাইয়্যান কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
—কি হলো?
রাইয়্যান আরুশিকে ছাড়েনি ওইভাবে ধরে রেখেই জিজ্ঞেস করে।
—মনে হলো আমরা ছাড়াও আরো কেউ আছে এখানে।
—কি বলছো আর কে থাকবে।
—জানিনা আমার মনে হচ্ছে ওই পাশটা থেকে কথার আওয়াজ পেলাম মনে হল কেউ আছে।

—তোমার মনের ভুল বাদ দাও তো। এত সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটাচ্ছি তুমি আবার ঝামেলা করছে কে আছে বল।
—আরুশি থেমে যায় আর কথার আওয়াজ হচ্ছে না তাই?
একটু পরেই একটা হাসির আওয়াজ পেয়ে দুজনেই চমকে পেছনে তাকায়,,
কেউ নেই তাহলে হাসির আওয়াজ কোথায় থেকে আসলো এবার রাইয়্যান ও পেয়েছে আশেপাশে খুঁজতে লাগে কেউ আছে কিনা। পকেট থেকে ফোন বের করে লাইট জ্বালিয়ে সামনে এগোয় পেছনে আরুশিও আছে।হঠাৎ আরুশি রাইয়্যানের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে লাইট অফ করে।
রাইয়্যানের হাত ধরে আগের জায়গায় ফিরে আসে। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আরুশির দিকে রাইয়্যান।

—কি হলো এভাবে টেনে নিয়ে এলে কেন?
আরুশি মাথা নিচু করে আছে কিভাবে বলবে এই কথাটা। লজ্জায় ওর গাল লাল হয়ে গেছে রাইয়্যান বিষ্ময়ে হা হয়ে তাকিয়ে আছে আরুশির দিকে।
—হোয়াট হ্যাপেন্ড তুমি এতো লজ্জা পাচ্ছো কেন? এমনভাবে লজ্জা পাচ্ছ মনে হচ্ছে আমি তোমার সাথে কি না কি করেছি? এভাবে লজ্জা কেন পাচ্ছো বলবে তো তুমি এমন লজ্জা পেলে কিন্তু আমি সত্যিই কিছু করে বসবো। তখন আমার দোষ দিতে পারবে না বলে রাখছি।
–আরুশি কিছু না বলে সিড়ির দিকে চলে।
—আরে আরে চলে যাচ্ছ কেন?
রাইয়্যান দৌড়ে আরুশির পাশে আসে।
রাইয়্যান কথাটা জুড়েই বলেছে তাই ওর কথা শুনে ছাদের ডান কানারে দুজন নর-নারী ছিটকে দূরে সরে দাঁড়ায়।
চোখ বড় বড় করে একে অপরের দিকে তাকিয়ে সিঁড়ির দিকে তাকায়। একটা ছায়া দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নেমে গেল। দুজনে হতভম্ব হয়ে সে দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে দুজনে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে তাদের সাথে কেউ দেখে ফেলেনি ত।

রাইয়্যান আরুশির হাত চেপে ধরে সিঁড়ির মাঝে।
—কি হল কিছু না বলে চলে যাচ্ছে কেন?
—আমার ঘুম পাচ্ছে ছাড়ুন তো।
–তাই বলে এভাবে না বলে চলে যাবে।
—আচ্ছা সরি এবার হাত ছাড়ো আমি ঘুমাবো।
—আচ্ছা যাও
রাইয়্যান হাত ছেড়ে দেয় আরু দৌড়ে চলে যায় অবাক হয়ে ওর চলে যাওয়া দেখছে এভাবে চলে এলো কেন?
কি আর করার রাইয়্যান নিজের রুমে চলে যায়।

ফোনটা তো আরুর কাছে রাইয়্যান আবার দরজা খুলে বেরিয়ে আসে।
দরজায় ঠোকা দেয়।
এদিকে আরশির রুমে এসে দরজা বন্ধ করে বড় বড় করে শ্বাস নিচ্ছে। এমনই একটা দৃশ্য তার চোখে পড়বে সে কল্পনাও করেনি। আপু কি ওই ভাইয়াটা কে ভালবাসে হয়ত না হলে এভাবে তো থাকত না। ছি ছি ছি একি দেখলাম এভাবে কারো চুমু খাওয়া দেখব জীবনেও ভাবিনী।
আরুশি লজ্জায় কুকড়ে উঠে সামনে দাঁড়িয়ে থাকার আর একটু সাহস হচ্ছিল না। প্রচণ্ড লজ্জা লাগছিল ওর।
রুমি আপু আর রাইয়্যানের ফ্রেন্ড জিসান ভাইয়াকে আপুর সাথে এমন অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেছি আমি। রাইয়্যান তখন অন্যদিকে তাকে লাইট ধরেছিল । আমি দেখেই চোখ বড় বড় করে ফেলি।
সোনালী জেগেই ছিল আরুশি রুমে আসতে ও চোখ খোলে আরুশির দিকে তাকায় দেখে আরুশির লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে।
—কিরে এত লজ্জা পাচ্ছিস কেন চুমু খেয়ে আসলি নাকি?
কথাটা শুনে আরুশি বড় বড় চোখ করে সোনালী দিকে তাকায় তারপর রেগে বলে ওঠে,
—ছি কি কথার সেরী এসব বলতে তোর লজ্জা করেনা।
এই যে কথাটা বলল,,
–আমি কি সবাইকে বলছি নাকি তোকেই তো জিজ্ঞেস করছি। লজ্জার কি আছে তুমি করতে পারবে আর আমি বললেই দোষ তাই না।
—সোনালী তুই কিন্তু;
বলতে ছিল কথাটা তার মাঝে দরজায় ঠোকা রাইয়্যানের কণ্ঠস্বর থেমে যায়।
—বাব্বাহ আসতে না আসতেই আবার ডাক। যাও তোমার জানেমন আইছে কথা বল গিয়ে।
সোনালী আবার গিয়ে খাটে শুয়ে পড়ে।
—আরুশির রাগী ভাব ও দিয়ে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে,, দরজা খুলে দেয় আবার কেন এসেছে আল্লাহই লোকটাকে নিয়ে আর পারিনা।
—আপনি আবার বললাম না আমার ঘুম পাচ্ছে।
—তো ঘুমাও তোমাকে না করছে কে।
—কিভাবে ঘুমাবো আপনি তো আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না।
—যাও ঘুমাও আর ডাকবো না আমার ফোন নিয়ে এসেছে তুমি ফোন দাও।
আরুশির কিছু বলবে তখন দেখে হাতে ফোন আছে রাইয়্যানের হাতে ফোন দিয়ে দরজা ঠাস লাগিয়ে দেয়। রাইয়্যান তখনো দরজার সামনে দাঁড়ানো কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারলো না পেছনে ফিরে আসতে দেবে তখন থেকে ছাদের সিঁড়িতে কেউ আসছে মুখটা স্পষ্ট হতে মুহূর্তেই ও বুঝে ফেলে চিনে ফেলে দুজনকে। তাহলে এরা ছিল সাথে ছাদে।

পরদিন
—তুই পেম করছি আর আমাকে জানালি না।
—মানে
ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে জিসান, মুখে স্পষ্ট ওর রাইয়্যান জানলে কিভাবে আমি প্রেম করি।
—কিরে ভয় পাচ্ছিস নাকি আমি কিভাবে সব জেনে গেলাম।
রাইয়্যান জিসানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
—তুই কিভাবে জানলি ?
—রাইয়্যানের কাছে লুকিয়ে রাখার এত সহজ না বুঝছিস কিন্তু আমি তোর থেকে এটা আশা করিনি প্রেম করছিস এই খবরটা আমাকেই দিলি না।
—সরি দোস্ত ক্ষমা করে দে।
—ন ক্ষমা ক্ষমা করছি না আমাকে জানালি না কেন তাই বল।
—বিশ্বাস কর আমি জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু।
—আসলে ওর মাকে ভালোবাসি কথাটা আগে বলে নাই তাই আর কাউকে জানানো হয় নাই।
—কত দিনের প্রেম।
—আর কতদিন আমি তারে পছন্দ করি এক বছর হল কিন্তু সে আমাকে পছন্দ করে এই কিছুদিন ধরে।
—মানে সব খুলে বল।
জিসান সব খুলে বলল রুমি কে অনেকদিন ধরে ভালোবাসে প্রথম রুমিকে দেখতে পায় ওর ছোটবোনের সাথে ওদের বাসায় গিয়েছিল। দুজনে একসাথে লেখাপড়া করে বেস্ট ফ্রেন্ড। প্রথম দেখাই তুমি কি ওর পছন্দ হয় প্রচন্ড পছন্দ তবে সেটা আস্তে আস্তে ভালোবাসায় পরিনিত হয়। রুমিকে প্রথমে প্রপোজ করার সাহস পায় নাতাই ফ্রেন্ডশিপ করে হঠাৎ একদিন প্রপোজ করে কিন্তু রুমের দিকে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না কিছুদিন কথা বলে নি ওর সাথে। জিসান তো পাগলপ্রায় হয়ে যায় তারপরে একদিন রুমি ওর সাথে দেখা করে আর ভালোবাসি বলে দুই মাস হল রিলেশন করছে।
— শুনলি তো সব এই 2 মাসে তোর সাথে আমার দেখা হয়নি হলে বলতাম।
মুখটা ছোট করে বলে রাইয়্যান জিসানের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে ওঠে,
–ধুর আমি রাগ করেছি নাকি আমি তো মজা করলাম তোর সাথে।

,,

একটু আগে রুমি আপা আমার রুমে এসে বসেছে।এসে কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু একটা বলতে চায় মনে হচ্ছে। কিন্তু বলতে পারছিনা হয়তো সোনালীর জন্য।
আমি সোনালীকে একটা কাজে নিচে পাঠালাম সাথে সাথে রুমি আপা আমার পাশে এসে হাত ধরে বসলো,
কিছু বুঝে ওঠার আগেই আপু বলতে শুরু করল,,,
—বোন কাউকে কিছু বলিস না প্লীজ।
আমি অবাক হয়ে আপুর দিকে তাকিয়ে আছে আপু আমাকে বোন বলল চোখ গুলো ছল ছল করে উঠলো,,আপু আমার সাথে কখন এত সুন্দর করে নরম কন্ঠে কথা বলেনি হ্যা কখন ও খারাপ ভাবে ও কথা বলেনি সে সবসময় একটা মনে থাকতো চুপচাপ নিজের ইচ্ছা মতো চলত কারো সাথে তেমন কথা বলত না। আমি খুব করে চাইতাম আপু আমার সাথে কথা বল কিন্তু বলেনি আজকে বলল তাও বোন বলে সত্যি আমি নিজেকে আটকাতে পারলাম না আপুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম।
আপু হয়তো অবাক হয়ে আছে আমার কান্নার কারণটা বুঝতে পারছেনা আমি নিজেকে স্বাভাবিক করে।
—আপু তুমি আমার সাথে কথা বলছো তাও এত সুন্দর করে।
—কেন তুই খুশি হসনি‌
—খুব খুশি হয়েছি খুব।
—পাগলী.
—কি যেন বলতে মানা করলে বুঝলাম না কিছু।
—আপু কাল রাতের ঘটনাটা বলল আমাকে,,
এবার বুঝতে পারলাম সব আমি হাসিমুখে আপুকে বললাম ,,,,
—চিন্তা করো না আমি কাউকে কিছু বলব না।
আপু খুশি হয়ে আমার সাথে গল্প করতে লাগল জিসান ভাইয়ের সাথে কিভাবে প্রেম হয়েছে সব কিছু বলল। আরো নানা কথা এত কথা কখনো বলেনি একটু পর সোনালী চলে এলো কফি নিয়ে তারপর তিনজন কফি খেতে খেতে আড্ডা দিতে লাগলাম।

চলবে ❤️
[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here