আমার হৃদবক্ষে শুধুই তুই পর্ব -১৫

#আমার_হৃদবক্ষে_শুধুই_তুই💖
| পর্ব-১৫|

চোখে, মুখে হালকা পানির ছিটে পেতেই জুহি চোখ মেলে তাকালো । দেখলো তখনকার সেই ‌মেয়ে দুটো তাকে চেয়ারে র সাথে বেধেঁ রেখেছে । জুহি প্রচন্ড তর ঘাবড়ে গেলো তাকে এখানে এভাবে তুলে আনার মানে কি !
জুহিে মুখ বাধাঁ ছিলো তাই জুহি টু শব্দ ও করতে পার ছেনা ।

মেয়ে দুটো গম্ভীর হয়ে চেয়ার নিয়ে জুহির সামনে বসে আছে দৃষ্টি জুহি র দিকেই হঠাৎ ওখানে থাকা প্রথম মেয়েটার ফোন বেজে উঠলো –
– হ্যালো বস আপনার কথা মতো মেয়ে টা কে উঠিয়ে আনা হয়েছে !
( গম্ভীর গলায় )

জুহি র ভয় হচ্ছে প্রচন্ড ভয় হচ্ছে তাকে কে তুলিয়ে এনেছে । জুহি ভয়ে হিতা হিত জ্ঞান হাড়া নোর উপক্রম হয়েছে !

জুহি নড়াচড়া করছে বেশ ভালো ভাবে ই কিন্তু মোটা রশি র এই শক্ত বাধঁন ছাড়াতে পারছেনা । মেয়ে দুটো পুন রায় তার দিকে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ।

এভাবে বসে থাকতে থাকতে অনেক ক্ষণ হয়েছে জুহি কেদেঁ ফেলা র মতো মুখ করেছে চোখে র কোণে জল ও জমে গেছে ।
জুহি চোখে ঝাপসা দেখছে তখনি দরজা খোলার খট করে আওয়াজ আসলো । বসে থাকা মেয়ে দুটো উঠে দাড়ালো এবং গিয়ে দরজা র সামনে দাড়ালো মেয়ে দুটো ।

জুহি কাদোঁ কাদোঁ চোখে দরজা র দিকে দৃষ্টি উপেক্ষা করে আছে ! তখনি দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলো রিয়ান !

জুহি অবাকে র সাথে সাথে ভয়ে নুইয়ে গেলো রিয়ান তাকে উঠিয়ে এনেছে মানে নিশ্চয় ই রিয়ানে র কোন বাজে মতলব আছে ।জুহির ভয়ে কাপাঁ কাপি শুরু হয়ে গেলো হৃদ স্পন্দন দ্রুত তড়িৎ গতি তে ছুটছে তার ।
রিয়ানে র মুখে বাকাঁ হাসি জুলছে তার মনের মধ্যে যে শয়তানি বুদ্ধি আটঁ ছে জুহি ভালো ই বুঝতে পেরেছে রিয়ান বাকাঁ হাসি দিতে দিতে জুহি র দিকে এগিয়ে গেলো এবং জুহি র একদম সামনে চেয়ার নিয়ে বসে গেলো ।
জুহি ভয়ে চোখ মুখ খিচাচ্ছে আর চেয়ারে র সাথে মিলে যাচ্ছে ।
রিয়ান এটা দেখে বাকাঁ হাসি অটুট রাখলো হাত এগিয়ে জুহি র মুখের বাধঁন খুলে দিলো ।
জুহি গভীর এক নিশ্বাস ছাড়ালো এবং নিশ্বাস নিলো ও ।
সেই কখন থেকে বাধাঁ অবস্থা এক ই জায়গায় শ্বাস বিহীন পড়ে ছিলো ।
জুহি র অবস্থা দেখে রিয়ান হাসি দিয়ে বলে উঠলো –

– কেমন লাগছে জুহুপাখি ! তোমাকে এখানে তুলে আনা হয়েছে কারন আজ কে তোমার আর আমার বিয়ে হবে কি রাজি তো ! অবশ্য তোমার রাজি আর অরাজি তে রিয়ানে র কিছু ই এসে যায় না রিয়ান যেহেতু বলেছে তোমাকে তার জুহুপাখি বানাবে তাহলে বানিয়ে ই ছাড়বে দ্যাট ‘ স ফাইনাল ! আজকে এই মুহুর্তে এখানে আমাদের বিয়ে হবে রেডি থাকো এখনি কাজি আসছে !
( বলেই বিশ্ব জ্বয়ের হাসি দিলো রিয়ান আর অনেক দিন পর যে নিজের জিনিস টাকে পাবে তাও বিয়ে করে )

জুহি রিয়ানের কথা আতৎকে উঠলো। ফাহয়াজ . থাকতে সে কিভাবে রিয়ানে র সাথে বিয়েটা করবে । ভেবে ভেবে জুহি র অবস্থা খারাপ হচ্ছে জুহি পারছেনা রিয়ানে র কথা গুলো মানতে ভিষণ কান্না পাচ্ছে তার । কান্নাটা কে প্রাধান্য দিয়ে জুহি কান্না করে উঠলো । ফুপিঁয়ে ফুপিঁয়ে কাদঁতে থাকলো ।
.
রিয়ান বাকাঁ হাসলো জুহির কান্না দেখে অবশেষে জুহিকে তার নিজের করে নিবে না রিয়ান জুহি কে এত . সহজে ছেড়ে দিবে যার জন্য নিজের বেস্ট বন্ধু , বেস্ট মুহুর্ত কে মেরে ফেলেছে সেখানে জুহিকে ছাড়া র কথা আসে ই না ভাবতে ই রিয়ান বাকাঁ হাসছে।
রিয়ানের চোখ গেলো রিশানে র দিকে রিশান মুখ কালো করে তার দিকে তাকিয়ে আছে এটা দেখে রিয়ান ভ্রু কুচঁকালো রিশানকে এবোইড করে রুম থেকে হন হন করতে করতে বের হয়ে গেলো আর রিশান প্রত্যেক বারে র মতো ই দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লো সে ভেবে পায় না জুহি র মধ্যে রিয়ান কি পেয়েছে ।

অন্যদিকে।

রুবা অনকাক্ষিত সেই লোকটার দেওয়ার গিফট গুলো র দিকে এক দৃষ্টি তে চেয়ে আছে । রুবা র কেনো জানি মনে হচ্ছে সেই ব্যাক্তিটাকে চিনে । মাথায় জোর খাটাতেই রুবা র মনে পড়লো কে তাকে এইসব দিতে পারে রুবা র লোকটা র কথা মনে পড়তে ই মুখে এক চিলতে হাসি র রেখা ফুটে উঠলো ।

– পেয়ে গেছি আমি জানতাম এইটা আপনি ই হবেন আয়াত !
( এক চিলতে হাসি দিয়ে বলল রুবা )

রুবা র আয়াতের কথা মনে পড়তেই দু বছর আগে র কথা ভাবতে লাগলো যখন প্রথম আয়াতের সাথে তার দেখা হয়েছে ।

দু বছর আগে ।

সবে মাত্র কোচিং পড়ে কোচিং সেন্টার থেকে বেরিয়ে ছে রুবা । মাথা নিচু করে বই পড়তে পড়তে একলা রাস্তা দিয়ে হাটঁছে রুবা। মাথা নিচু করে হাটাঁ ছে যার দরুন সামনে সে দেখতে পারছে না । রুবা মাথা নিচু করে হাটছে আর বই পড়সে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লেগে তার বই পড়ে রুবা ভ্রু কুচঁকে সামনে তাকালো দেখলো একটা ছেলে তার বই রাস্তা থেকে তুলে দিচ্ছে।
ছেলেটা দেখতে লাল ফর্সা , গৌরচ্ছাপ মুখশ্রী , উচা-লম্বা , ঢিলে ঢালা শার্ট ,জিন্সের প্যান্ট চোখে চশমা ।চুল গুলো আচ রানো

রুবা ভ্রু কুচঁকে ছেলেটা র দিকে তাকাতে ই ছেলেটা এক গাল হেসে বই টা তার দিকে বাড়িতে মিহি কন্ঠে বলে উঠলো ।

– সরি নিন আপনার বই ! ( এক গাক হেসে)

রুবা কন্ঠ,আর হাসি দেখে মুগ্ধ হয়ে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে । কারো কন্ঠ স্বর , হাসি এতো সুন্দর , কিউট হতে পারে রুবা জানতো না । হা হয়ে সামনে থাকা ছেলে টা অর্থাৎ‌ আয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে । এদিকে আয়াত রুবা র চাহনি তে বারবার নিজেকে খুজঁছো কি মায়াবী চোখ একদম প্রেমময়ী দের মতো ।
হঠাৎ বাইকে র আওয়াজ শুনে রুবা আয়াত দুজনের ই ধ্যান ভাংগে রুবা হালকা হাসা র নাটক করে আয়াতে র হাতে র থেকে বই টা নিলো । এর পর বলে উঠলো ।

– আসলে সরি ভুলটা আমার ছিলো মাথা নিচু করে বই পড়ে হাটঁছি লাম তোহ্ সরি !
( হাসার নাটক করে)

রুবা র কথা শুনে আয়াত আবারো এক গাল হাসলো । হাসলে আয়াতে র ট্যারা দাঁত আর ডান গালে টোল পড়ে যা এক বার দেখে ই রুবা মুগ্ধ রুবা এখনো বই হাতে আয়াতে র দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে !
আয়াত ও রুবার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে
রুবা র ধ্যান ভাংলো মুচকি হেসে হেটে সামনে দিকে চেয়ে চলে গেলো ।
আয়াত এখনো রুবা র যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ নয়নে ।
সবে মাত্র আয়াত কয়েকটা টিউশনি করে বেরিয়ে ছিলো বাজারে যাওয়া র উদ্দেশ্যে আর এখানে ই মাঝ পথে সে রুবা র সাথে দেখা করে
এই দেখা টা ই ‌ওদের প্রথম দেখা আয়াত তো রুবাকে নিয়ে মনে মনে অনেক কিছু ভেবে ফেললো । পরক্ষণেই মুচকি হেসে চলে গেলো।

এইখানেই ওদের প্রথম দেখা।
রুবা ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো।
ভাবছে যদি সত্যিই এই অনাকাক্ষিত লোকটা আয়াত হয় তাহলে রুবার চেয়ে আর খুশি কেউ হবেনা ।

চলবে,,,

#Rubaita_Rimi(লেখিকা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here