আমার হৃদবক্ষে শুধুই তুই পর্ব -১৪

#আমার_হৃদবক্ষে_শুধুই_তুই💖
|পর্ব-১৪ |

জুসের গ্লাস হাতে হা হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে রইলো রুবা।কুরিয়ার করা লোকটা হা হয়ে দাড়িয়ে আছে রুবার দিকে।রুবা মনে মনে ভাবছে

– এইরে ভেবেছিলাম কে না কে এহন দেখি কুরিয়ার ম্যান ! (মনে মনে বলে উঠলো রুবা)
কুরিয়ার ম্যান এখনো হাতে পার্সেল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
মুখ বেয়ে বেয়ে এখনো জুস গড়িয়ে পড়ছে । চুল গুলো প্রায় ভিজেই গেছে আর সেখান থেকেই জুস পড়ছে । এদিকে নদী বসে বসে বিরক্ত হচ্ছে মেয়েটা এখনো আসছে না কেনো কোনো ভি আই পি আসছে নাকি যে এতক্ষন দেরি করছে । রুবার লেট করা দেখে নদী বির বির করে বলে উঠলো ।

– এই মাইয়া ডা যহনই কোন কাজে যায় চব্বিশ ঘন্টা কাটা ইয়া আসে যাই গিয়ে দেখি মহা রানী কট কটি দরজার সামনে দাড়িয়র দাড়িয়ে করছেটা কি !
(বির বির করে বলেই নদী একরাশ বিরক্তি নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো)

নদী ওখানে গিয়ে দেখলো রুবা গ্লাস হাতে সামনে থাকা লোকটার দিকে তাক করে দাড়িয়ে আছে
রুবা ভ্রু কুচকে সামনে তাকায়েই দেখে এক টা লোক হাতে পার্সেল নিয়ে কাক ভেজে মুখে দাড়িয়ে আছে তাদের দিকে তাকিয়ে হা করে আছে।

নদীর বুঝতে বাকি রইলো না এটা কুরিয়ার ম্যান পোশাক আর পার্সেল হাতে দেখেই বুঝলো।
রুবা এই লোকটার মুখে জুস ছুড়ে মেরেছে।

ঢোক গিলল নদী । রুবার কানে কানে ফিস ফিস করে বলে উঠলো ।

– কানি চোখে কম দেহোস লোক টার উপর জুস মেরে দিসোস এক্ষন তোরে থাপ্রানি শুরু করবো দেহিস ! এইডা কি করলি কানি কা বাচ্চু !

রুবা ও ঢোক গিলল সামনে দাড়িয়ে থাকা কুরিয়ার ম্যান লোকটা এখনো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে । লোকটা বলে উঠলো ।

– ম্যাম ! আপনার পার্সেল ! (বড় বড় চোখ করে)

রুবা পার্সেলটা হাতে নিয়ে ছোট স্বরে বলে উঠলো ” সরি ”
লোকটা একটা পেপার দিয়ে বলল
– ” ম্যাম এখানে একটা সাইন করে দিন !
(অস্পষ্ট স্বরে)

রুবা না দেখে পেপারটা হাতে নিয়ে নকল হেসে সাইন করে দিলো । এরপর কাগজ টা লোক টা কে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো !
লোকটা হা হয়ে চলে গেলো !

– বাপ রে বাপ জোর বাচাঁ বেচে গেছি ! কি ডেন্জারেস আর জীবনে ও না দেখে জুস মারবি না , যদি আজ লোক টা র জায়গায় অন্য কেউ হতো ভাব যদি আন্টি হতো তাইলে তোরে কাচাঁ খাইতো ! বজ্জাত মাইয়া !(রাগী স্বরে বলল নদী)
রুবা মাথা নিচু করে পার্সেল টা র দিকে তাকিয়ে আছে । নদীর দিকে এক নজর তাকিয়ে পার্সেলটা খুলতে শুরু করলো !

রুবা পার্সেল খুলে দেখলো।
ওখানে কালো কালার শাড়ি,কালো চুড়ি,কালো টিপ সব কালো অর্নামেন্টস রাখা আছে সাথে হলুদ একটা চিরকুট টাইপ কাগজ ও ।
রুবা ভ্রু কুচঁ কালো ভ্রু কুচঁ কানো অবস্থা য় নদীর দিকে তাকালো দেখলো নদী ও বিস্ময় বিস্মিত হয়ে পার্সেলে র ভেতরে র জিনিস গুলো র দিকে তাকিয়ে আছে ।

রুবা চিরকুট টা খুলল !

প্রিয় রুবা লেবু

আসসালামু অলাইকুম।
কেমন আছো জানি ভালো আছো । আমাকে ভুলে গেছো তাইনা ।
ভোলারই কথা তোমাকে ছেড়ে চলে গেছি দু বছর হয়ে গেছে জানো কেনো তোমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম কারন টা বলি না থাক না বলা ই ভালো শুধু এটুকু জেনে রেখো তোমার কথা ভেবে ই আমি তোমাকে ছেড়ে গেছি ! কারন তখন আমার কাছে টাকা পয়সা কিছুই ছিলো না।
আজ আমার সব কিছুই আছে টাকা,গাড়ি-বাড়ি সব তোমাকে খুশি,সুখে রাখতে পারবো।
আচ্ছা একটা কথা তুমিকি আমার হবে!
আমাকে একটু ভালোবাসবে!
আমার প্রেমময়ি হবে!
হয়তো ভাবছো আমি কে!আমাকে চিনছো না।
কিন্তু আমি তোমাকে চিনি তুমি আমার ভালোবাসা!
আমার ভালোবাসার প্রথম উপহার হিসেবে তোমাকে একটা শাড়ি আর কিছু অর্নামেন্টস গিফট করলাম।
জানি আমার চিঠিটা খাপছাড়া লাগছে আমি ভালোবাসা চিঠিতে প্রকাশ করতে পারিনা।বাস্তবে প্রকাশ করতে পারি।
অবশেষে বলবো তুমি আমার ভালোবাসা আমার প্রেমময়ি।
আজ নাহয় থাক চিঠি দেওয়ার জন্য তো সারাজীবন থাকবে।
আমাকে নিয়ে ভেবোনো চিনবেনা আমায়।তবে আমি তোমায় ভালো করেই চিনি প্রেমময়ি।

ইতি ‘ তোমার অনাকাক্ষিত সে,,,

চিঠিটা পড়ে রুবা বিস্মিত হয়ে গেলো । প্রথমে ভেবেছিলো কেউ ভুল করে তাকে পার্সেল দিয়ে দিয়েছে এখন দেখে তারই জন্য পার্সেলটা।
নদী ই পাশে ছিলো বিধায় চিঠি র সব অংশ পড়তে পেড়েছে । চিঠিটা পড়ে রুবা হাসি হাসি মুখে বলে উঠলো ।

– আরে বাহ্ বান্ধুপিকে না জানিয়েই গোপনে লাভার রেখেছিস ! তুই কেমনরে দুলা ভাইয়ের কথা আমাকে জানালে কি এমন হতো দেখ কতো ভালো ভালো গিফট পাঠাইসে আমাকে যদি শালিকা হিসেবে পরিচয় দিতি তাহলে আমার জন্য‌ ও গিফট পাঠাইতো ! ( মুচকি হেসে বলল নদী )
রুবা বাক রুদ্ধ নদী র দিকে বিস্ময় নিয়ে তাকালো সে এই মুহুর্তে নদী মজা নিচ্ছে ভাবতেই রাগ হচ্ছে রুবার রুবা চিঠি টা ছিড়েঁ ফেলতে নিয়েও ছিড়লো না বক্সে এ থাকা শাড়ি আর বাদ বাকি জিনিস গুলো দেখে পরক্ষনে ই মুচকি হাসলো তারও যে একটা অনাকাক্ষিত প্রেমিক আছে আগে জানতো না । রুবা কিছু না বলে বক্স সহ চিঠি টা স যত্নে নিয়ে রুমে র দিকে অগ্র সর হলো নদী রুবা র এহেন কান্ডে হা করে রইলো। মেয়েটা যে এতো নিরামিষ কেম্নে হলো রুবা তাই ভাবছে হু।

– হু হ ভাই মনে ডোজটা কম দিলো সেই জন্যই মাইয়া নিরামিষের মতো ভাগছে হু যা ভাগ ভাগ কত ভাগবি কচুর ডা (বলেই ভেংচি কাটলো নদী আর চুপচাপ সোফায় হেলান দিয়েই বসলো।

অন্যদিকে।

আজ বাড়িতে কেউ নেই নীলা কিছুক্ষণ আগেই বেরিয়েছে এখনি বাড়িতে আসেনি।
জুহি আয়নার সামনে বসে আছে আজকে কেনো জানি তার একটু সাজতে মন চাইলো। হালকা সাজে সেজে নিজেকে আয়নার দেখছে সেই অনেকক্ষণ ধরে।

আয়নার দিকে তাকিয়ে জুহি নিজেকে ভালো মতো একদম দীর্ঘ সময় নিয়ে পরখ করে আনমনে বলে উঠলো।

– এক্টু সাজে ফাহয়াজ আমায় দেখতে চেয়েছিলো আজ সেজেছি কিন্তু উনি থেকেও আমার থেকে দূরে ! ( বলেই দীর্ঘ শ্বাস ফেলল জুহি )
জুহি কে বার বার সপ্নে রা ফাহয়াজের কথা জানান দিচ্ছে।
জুহির ভাবতেও অবাক লাগছে যে ফাহয়াজের সাথে তার আগেও বিয়ে হয়েছে।
সেই সাথে জুহি বর্ত মানে খুশি যে ফাহয়াজের কিছুই হয়নি সে বেচেঁ আছে।
তবে পাশাপাশি জুহি র ভয় ও করছে রিয়ান সেদিন যা বলেছে তাকে যদি জানে ফাহয়াজ বেচেঁ আছে তাহলে আবার যদি ফাহয়াজে র ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
সে নিয়ে জুহি যথেষ্ট ভীত ।

জুহির ভাবনার মাঝেই হঠাৎ দরজায় টোকা পড়ায় জুহি র ধ্যান ভাংলো সেদিকে তাকিয়ে ভাবলো নীলাকি চলে এসেছে কিছু ক্ষন ভেবে উঠে দরজা খুলল।
জুহি দরজা খুলতে ই ভ্রু কুচঁকালো সামনে ই দু জন মেয়ে দাড়িয়ে আছে কালো শার্ট প্যান্ট পড়ে।
জুহি কিছু বলার আগেই তারা জুহি মুখে স্প্রে জাতিয় কিছু স্প্রে করে দিলো।জুহি কিছু না বুঝেই ঢলে পড়লো নিচের দিকে।

চলবে,,

#Rubaita_Rimi(লেখিকা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here