আমার_মনপাখি পর্ব ১+২

আহাদ ভাইয়ের রুম থেকে বের হতেই পেছন থেকে কেউ আমাকে হেচকা টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। হঠাৎ এমন কাজে আমি ভয় পেয়ে যাই। যার ফলে চোখমুখ কুচকে ফেলি। আমি অনুভব করি আমার মুখের উপর কারো গরম নিশ্বাস পড়ছে। আছতে আছতে চোখ মেলে দেখি আহাদ ভাই আমার দিকে ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আহাদ ভাইয়ের এমন চাহনি আমার কাছে অসত্বি লাগছে। কিছুক্ষন আগে ওনার রাগ দেখে আমার জান যায় যায় অবস্থা। তবুও কিছুটা সাহস নিয়ে আহাদ ভাইকে প্রশ্ন করলাম,
“আহাদ ভাই কিছু বলবেন ”
আমার কথায় আহাদ ভাই মুখে বাকা হাসি টেনে বললো,

“বলার তো আনেক কিছুই আছে, আবার করার ও অনেক কিছু আছে ”

আহাদ ভাইয়ের কথা শুনে আমি অবাক
হয়ে গেলাম, আমার সাথে ওনার কি কথা থাকতে পারে, আবার আমর সাথে কি বা করবেন। একটু আগেই তো আমাকে রুম থেকে বের করে দিলেন তাহলে এখন আবার কি কথা বলবেন উনি। আমার ভাবনার মাঝেই আহাদ ভাই আমার মুখের সামনে তুরি বাজিয়ে বললেন, “কিরে কি ভাবছিস?
ওনার প্রশ্ন শুনেই উওর দিতে প্রস্তুত হয়ে গেলাম, কিছুটা ঢোক গিলে প্রশ্ন করলাম

” আমার সাথে আপনার কি কথা থাকতে পারে আহাদ ভাই,একটু আগেই তো আমার কথায় বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বের করে দিলেন, এখন আবার কি বলবেন ”
আমার কথা যেন আহাদ ভাইয়ের মোটেই পছন্দ হলোনা। তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন,

“আমি কখন তোকে কছে টানবো, কখন দূরে সরাবো তা আমার ইচ্ছা ”

এবার আহাদ ভাই আমাকে আবাক করে দিয়ে উল্টো করে কাছে টেনে নিলেন যার কারনে আমার পিঠ গিয়ে ওনার বুকে ঠেকলো,। এমন কাজে আমার অসত্বি লাগছিলো। কিন্তু আহাদ ভাইয়ের সে দিকে কোন খেয়াল নেই। তিনি আমার চুলের ঘ্রান নিতেই ব্যস্ত।
এবার উনি ঘোর লাগা কন্ঠে বললেন

“কি শ্যাম্পু ব্যাবহার করিসরে তুই, কি সুন্দর ঘ্রান, নাম বলতো আমার বউ এর জন্য নেব।
আহাদ ভাইয়ের এমন কথায় আমি চরম মাএার বিরক্ত। তাই ওনার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতে লাগলাম
কিন্তু আহাদ ভাইয়ের শক্তির সাথে আমি পেরে উঠলাম না। এবার আহাদ ভাই আমার কানে কছে ফিসফিস করে বললেন
” এখনো অনেক হিসাব বাকি আছে রাইফা, আমার বিবশময় প্রতিটি দিন, প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি সেকেন্ডের হিসাব বাকি। সবেতো শুরু রাইফা ”
এ কথা বলেই আহাদ ভাই আমাকে রুম থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলেন। আহাদ ভাইয়ের আচরন আমার মাথায় ডুকছেনা। কি বুঝাতে চাইছে আহাদ ভাই।

এদিকে, আহাদ নিজের চুল টেনে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। আর মনে মনে বলছে
“গত কয়েক বছর অনেক লাফায়েছো রাইফা। তোমার ভেবে আমার প্রতিটি দিন বিবশ হয়ে কেটেছে আর তুমি আমার আবেগ, অনুভূতি উপেক্ষা করে অন্য ছেলেদের নিয়ে প্রেম প্রেম খেলছো”।
আহাদ নিজেকে কিছুটা শান্ত করে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। দুপুর সময় তাই সূর্যের তেজ প্রখর। আহাদদের বাড়ির পাশেই আরেকটা বিলিং।যা মূলত রাইফাদের । তাই রাইফার বারান্দার সবকিছু খুব সহযে দেখা যায়। আহাদ দেখলো রাইফার বারান্দায় খাচায় একটি টিয়া পাখি, আর পুরো বারান্দা জুড়ে বিভিন্ন ফুল গাছ লাগানো। যাতে ফুটে আছে হরেক রং এর ফুল।

“তবে তোমার ডানা এবার কাটবো রাইফা, তোমার যে একটু বেশিই উড়া হয়ে গেছে। তোমার অবস্থা হবে তোমার পোষা টিয়ার মতো। তোমার ঠাকানা হবে শুধু আমার রাজ্যে। (বাকা হাসি দিয়ে)”

রাইফা আহাদের রুম থেকে বেরিয়ে আনমনে হাটছে আর ভাবছে, আহাদের কোন কাজই রাইফার মাথায় ঢুকছে না। আহাদ কি তবে আগের সব কথা মনে রেখেছে। রাইফা আবার ভাবতে থাকে কিছুক্ষন আগের কথা।

🍁

আজ চৌধুরী বাড়ি এবং মির্জা বাড়ি জুড়ে খুশির আমেজ। চৌধুরী বাড়ির পাশেই মির্জা বাড়ি। আহাদ চৌধুরী বাড়ির ছেলে। আহাদের বাবার নাম ওয়াহিদ চৌধুরী, মায়ের নাম হাবিবা চৌধুরী, তাদের সাথে থাকে তাদের দাদিমা জামিলা চৌধুরী, আর আহাদের ছোট ভাই সামাদ চৌধুরী।
আহাদ দীর্ঘ দশ বছর পর দেশে।আসছে তাই সবার মাঝেই আনন্দ বিরাজ করছে।
অন্যদিকে মির্জা পরিবারে দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রাইফা মির্জা, ছোট মেয়ে রাইসা মির্জা, রাইফার বাবার নাম জহির মির্জা রাইফার মায়ের নাম ডালিয়া মির্জা।
রাইফা দেখতে ফর্সা,চঞ্চল,
অন্যদিকে আহাদ দেখতে ফর্সা, ভদ্র, শান্ত – শিষ্ট,তবে ভিষণ রাগি। আহাদ us থেকে পড়াশোনা শেষ করে এসেছে। এবার সে বাবার ব্যবসার দেখাশুনা করবে। রাইফার যখন বার বছর বয়স তখন আহাদের পনের বছর বয়স। রাইফা আর আহাদের সবসময় ঝগড়া লেগে থাকতো। আহাদ সব সময় চাইতো রাইফা যেন অন্য ছেলেদের থেকে দুরে থাকে কিন্তু রাইফা নিজের কথামত চলতে পছন্দ করতো। অন্যর হস্ত্যক্ষেপ তার পছন্দ ছিল না। যার কারনে তাদের ঝামেলা লেগেই থাকতো।
একদিন আহাদের বাবা সিধান্ত নে আহাদ কে তার ছোট চাচার কাছে us পাঠাবে পড়া লেখা শেষ করে তবে আসবে আহাদের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাকে জেতে হয় us। এদিকে রাইফা হয়ে যায় স্বাধীন।

এই দীর্ঘ সময় রাইফার সাথে আহাদের কোন যোগাযোগ হয়নি। তবে আহাদ প্রতিদিন রাইফার খোঁজ খবর রাখতো।
কিন্তু রাইফা কি খোঁজে খবর রাখতো?
#আমার_মনপাখি
#পলি_আনান
#পর্ব_২

মির্জা বাড়ি আর চৌধুরী বাড়ি আজ সকাল থেকেই ব্যস্তময়। সবার মাঝেই আনন্দ বিরাজ করছে। সাবাই অপেক্ষায় কখন আহাদ আসবে। এদিকে সকাল দশটা তবুও রাইফার কোন খবর নেই।সে মনের শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ পানির ঝাপটা পড়ায় ঘুম ভেঙ্গে যায় তার।চোখ খুলে দেখে পানির গ্লাস হাতে দাড়িয়ে আছে তার ছোট বোন রাইসা।রাইসার এমন কান্ড বিরক্ত হয়ে রাইফা প্রশ্ন করে
“কি হয়েছে সকাল, সকাল আমার ঘুমটা ভাঙ্গলি কেন”
“আর কত ঘুমাবে আপু তুমি, কতও বেলা হয়ে গেছে”
কয়েক সেকেন্ড পর রাইফার মনে পড়ে যায় রাতের সপ্নের কথা। সপ্নের কথা মনে পড়তেই মন খারাপ হয়ে যায় তার।
“জানিস রাইসা আমি না খুব বাজে একটা সপ্ন দেখেছি।যার কারনে সারা রাত ঠিক করে ঘুমাতে পারিনি।আর তার উপর তুই এত তাড়াতাড়ি আমাকে ডেকে তুললি,, দূরভাল্লাগেনা।
রাইফার সপ্নের কথা শুনে রাইফা কিছুটা আবাক হয়ে যায়।কেননা রাইফা সপ্ন নিয়ে কখনো এত মন খারাপ করতে দেখা যায়নি।তাই রাইসার জানার ইচ্ছে জাগলো।তাই সে রাইফার পাশে বসে প্রশ্ন করলো
” কি দেখেছিস আপু, যে তুমি এতো ভয় পেলে ”
রাইফা একবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিল, তারপর বলা শুরু করলো
“আমি দেখেছি একটা পুরুষ মানুষের ছায়া আমার পিছনে সারাক্ষণ লেগে থাকে। ওই ছায়াটা আমার সকল কাজে বাধা দেয়া শুরু করে এবং এক সময় আমাকে তার রাজ্যে বন্ধি করে দেয়।ভাবতে পারচ্ছিস রাইসা কি ভয়ংকর সপ্ন!!,, এ সপ্ন যদি বাস্তবে রুপনেয় তবে আমি শেষ”।
রাইফার সপ্নের বিবরণ শুনে রাইসা মুচকি মুচকি হাসছে।রাইসার হাসি রাইফার চোখ এড়ায় নি।
” কিরে রাইসা তুই হাসছিস কেন, আমি কি তোকে কোন হাসির কথা বলেছি ”
“আসলে আপু আমার মনে হয় তোমার এ সপ্ন পূরন হতে আর বেশি সময় বাকি নেই,,অবশ্য এই সপ্ন বাস্তবে পরিনত হলে ভালই হবে।তোমার মতো মেয়েকে টাইট দেওয়ার জন্য ওই ছায়ার খুব দরকার”
রাইসার কথা শুনে রাগে ফুসছে রাইফা।
“এই তুই কি আমার বোন,,, রেরহ আমার রুম থেকে ”
এই কথা বলেই রাইফা, রাইসার হাত ধরে টেনে রুম থেকে বের করে দেয়।দরজার সামনে আসতেই রাইসা,রাইফাকে উদ্দেশ্যে করে বলে
“আপু বেশি সময় নেই তোমার সপ্ন বাস্তব হতে আর মাএ কিছু মুহূর্ত। ”
রাইফা, রাইসার কোন কথাই কানে নিল না।সে দরজাটা বন্ধ করে বালিশের পাশ থেকে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো ৩৫+ মেসেজ। প্রত্যকটা মেসেজ তার বিএফ দের পাঠানো।বর্তমানে রাইফার দুইটা বিএফ।রাইফা প্রতি মাসে তার বিএফ চেঞ্জ করে, মুলত সে কাউকে মন থেকে ভালোবাসেনা,।রাইফার এমন আচরনে রাইসা এবং রাইফার বেস্টু মিম মোটেই পছন্দ করে না।রাইফাকে বারন করা সত্যেও সে তার এসব পাগলামো থেকে একচুলো সরেনা।
রাইফা প্রত্যেকটা মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে, ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসে।

রাইফা নিচে এসেই অবাক হয়ে যায়,পুরো বাড়ি আবার নতুন করে সাজানো। আগের সাজের সাথে বর্তমান সাজের কোন মিল নেই।রাইফা পুরো বাড়ি চারপাশে চোখ বুলাতে, বুলাতে কিচেনে যায়।কিচেনে রাইফার মা ডালিয়া মির্জা এবং তাদের বহু পুরনো সার্ভেন্ট বিনু রান্না নিয়ে ব্যাস্ত।
রাইফা কিচেনে ঢুকেই তার মাকে প্রশ্ন করলো
“” আম্মু,পুরো বাড়ির সাজ,সজ্জা পালটালে কেন?”
মিসেস ডালিয়া কাজ করতে করতে উত্তর দিল,
“আহাদ আসছে এত বছর পরে, তাই তার জন্য এতো আয়োজন। মিসেস ডালিয়ার কথায় চরম বিরক্ত রাইফা।
“আম্মু চৌধুরী বাড়ির ছেলে আসবে তারা তাদের বাড়ি সাজাবে আর তুমি কিনা আমাদের বাড়ি সাজাতে লেগে গেলে।”
রাইফার এমন কথা শুনে কপাল কুচকে যায় তার মায়ের। কিছুটা রাগও হয়। তাই তিনি রাইফাকে ধমকানো সুরে বললেন,
“দেখ রাইফা,আমরা দুই পরিবারকে কখনো আলাদা চোখে দেখিনা।চৌধুরী বাড়ির ছেলে আমার বাড়ির ও ছেলে।ছেলেটা আজ এতো বছর পর আসছে তার জন্য এইটুকু আয়োজন করবোনা।”
রাইফা তার মায়ের কথায় অন্য দিকে তাকিয়ে আছে,মিসেস ডালিয়া আবার বললেন,
“আহাদ আসলে কিন্তু ওর সাথে কোন ঝামেলা করবিনা।ছোট থেকে ছেলেটা তোর ভালো চেয়েছে, আর তুই কিনা ছেলেটাকে উপেক্ষা করতি।,,,,,আর শুন নাস্তা করে ওই বাড়িতে যা,তোর মামনির কোন সাহায্য লাগবে কিনা জানতে চাইবি।যদি লাগে তোর মামনিকে সাহায্য করবি।”
“আচ্ছা মা নাস্তা দাও”
“হুম দিচ্ছি, তুই গিয়ে টেবিলে বস।”

রাইফা নাস্তা করে চলে যায় চৌধুরী বাড়িতে।সেখানেও একই অবস্থা, পরো বাড়ি নতুন করে সাজানো। সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত। রাইফা চলে যায় কিচেনে, সে দেখলো আহাদের মা হাবিবা চৌধুরী রান্না করছে, আর সাথে সাহায্যে করছে, তাদের সার্ভেন্ট শেলি।রাইফা সবকিছু একবার পরখ করে, মিসেস হাবিবার পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
“কেমন আছো মামনি, তোমাকে আজ খুব খুশি লাগছে দেখছি।” মিসেস হাবিবা রাইফার গালে হাত রেখে বলে,
“খুশি হবোনা রাইফা, আমার বড় ছেলে আজ এতো বছরপর আমার কাছে আসছে।”
“হুম তুমিতো এবার আমাকে ভুলে যাবে আর সব আদর তোমার বড় ছেলেকে দিবে। (গাল ফুলিয়ে) ”
রাইফার কথা শুনে হাসছে মিসেস হাবিবা।
“দূর পাগল আমি আমার ছেলে মেয়েকে আলাদা কেন করবো” তোরা দুইজন তো সারা জীবন আমার কাছে থাকবি”।
মিসেস হাবিবা আর রাইফার কথা শুনে পাশ থেকে শেলি মুচকি মুচকি হাসছে।শেলির হাসি দেখে রাইফা মিসেস হাবিবাকে ছেড়ে, শেলির সামনে গিয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে দাড়ালো।
“শেলি খালা তুমি হাসছো কেন আমি কি কিছু ভুল বলেছি?”
রাইফার হঠাৎ আক্রমণে ভরকে যায় শেলি।
“কি গো উত্তর দিচ্ছ না কেন, (ভ্রু কুচকে)
” না না তু,,তুমি কি কিছু ভুল বলতে পার, আর তুমি আমাদের মিষ্টি দিদিমনি, তোমাকে আমরা কতোও ভালোবাসি, আর তুমি কি না বলছ আমরা তোমাকে ভুলে যাবো।
শেলির কথায় খুশিতে গদগদ করছে রাইফা।সবার কথার মাঝে এগিয়ে আসে রাইসা,।
“সবাইতো শুধু আপুকে ভালোবাসে আমাকে কেউ বাসেনা(মুখ গোমড়া করে রাইসা)।
রাইসার কথায় সবাই এক সাথে হেসে উঠে, শেলি রাইসাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” তুমিতো আমাদের ছোট পুতুলমনি।আর আমাদের পুতুল মনিকেও সবাই ভালোবাসে”
“ঠিক বলেছিস শেলি” আমাদের দুই পরিবারের ছোট মেয়েতো রাইসা(কাজ করতে করতে মিসেস হাবিবা)।

“কিরে তোদের দুই বোনকে আমি পাঠিয়েছি তোর মামনির কোন সাহায্যে লাগবে কি না,,, আর তোরা কিনা কথার হাড়ি নিয়ে বসেছিস”(চোখ গরম করে মিসেস ডালিয়া)
” আরে বোন ওরা কি করবে,আমি নিজেই ওদের কিছু করতে দিনি”(কাজ করতে মিসেস হাবিবা)
সবার কথার মাঝেই বাড়ির সামনে গাড়ি থামার শব্দ ভেসে আসে,,,,
“আহাদ ভাইরা মনে হয় চলে এসেছে”(দরজার দিকে তাকিয়ে রাইসা)
সবাই এগিয়ে যায় দরজার দিকে।

চৌধুরী বাড়ির দরজার সামনে দুটো গাড়ি এসে থামলো।প্রথম গাড়ি থেকে নামলো আহাদের বাবা ওয়াহিদ চৌধুরী, এবং রাইফার বাবা জহির মির্জা। এবার দ্বিতীয় গাড়ির সামনে থেকে নামলো আহাদের ভাই সামাদ।
পেছন থেকে নামলো আরেকটি ছেলে।দেখতে লম্বা, ফর্সা,সিল্কি চুল,হাতে ঘড়ি,চোখে সানগ্লাস, নীল রঙের ব্লেজার সাথে মনভুলানো মুচকি হাসি।ছেলেটি হলো আহাদের বন্ধু শিহাব।তাকে দেখেই রাইফা এবং রাইসার মুখ হা হয়ে যায়।রাইফা আনমনে রাইসার ঘাড়ে হাত দিয়ে বলে,

“দেখ বনু ছেলেটা কি সুন্দর।হাতের ঘড়ি, চোখে সানগ্লাসটি যেন তার জন্যই তৈরি।কি সুন্দর হাসি।না এবার এটাকে কনর্ফাম।আর কোন ছেলের সাথে মজা নিব না।এবার এটাকে পটিয়ে বিয়ে করে নেব”

রাইফার কথায় রেগেযায় রাইসা।

“খবরদার আপু তুমি ওর দিকে নজর দিবে না।আহাদ ভাইয়ের বন্ধুকে আমার আগে পছন্দ হয়েছে, তাই ওকে আমি নেব”

(মূলত রাইসা, রাইফার বিপরীত। তার কোন ছেলের প্রতি তেমন কোন ইন্টারেস্ট নেই,সে রাইফাকে রাগাতে এমনটা বলেছে)

রাইসার কথায় রেগে যায় রাইফা
“এই তোর লজ্জালাগেনা,, তোর বড় বোনের হবু জামাইর দিকে নজর দিস৷ আর মনে রাখবি ও তোর হবু দুলাভাই ” (ভাব নিয়ে)

“দাঁড়াও না দাঁড়াও হবু জামাই বলা বের হবে এবার।তোমার জীবনে এখন যা যা হবে ভাবতেই আমার হাসি পাচ্ছে।,” (বিড়বিড় করে)

“এই তুই কি বলছিস বিড়বিড় করে”
“ন্না,,,না কিছু না”

তাদের কথার মাঝেই গাড়ী থেকে নামলো আহাদ। সাদা শার্ট, কালো ব্লেজার,হাতে ঘড়ি,চোখে সানগ্লাস,আর মুখে ঘায়েল করা হাসি।রাইফা আহাদকে দেখেই একটা শক খায়।

“এই বজ্জাত আহাদ ভাই কবে থেকে এতো সুন্দর হলো।ছবিতে দেখেছি দুমাস আগে। এখন তো দেখছি আগের থেকেও সুন্দর হয়ে গেছে।
দূর আহাদ ভাই সুন্দর হয়েছে তাতে আমার কি,আমার
তো আহাদ ভাইয়ের বন্ধুকে চাই”(মনে মনে)

রাইসা আড় চোখে রাইফাকে দেখছে,আর মুচকি মুচকি হাসছে।আর তখনি,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here