আমার_শহরে_তুমি পর্ব ১৩+১৪

#গল্পের_নাম_আমার_শহরে_তুমি
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১২ + ১৩
,,,,,,,
,,,,,,,
আমার সামনে এখন দাড়িয়ে আছে আমার নতুন টিচার আর সেই ব্যক্তিটি আর কেউ নয় স্বয়ং রক্তিম রায়জাদা।তাকে দেখে আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলাম লিনা আমার অবস্থা চিন্তিত হয়ে বললো,
~দোস্ত,তুই ঠিক আছিস?কী হয়েছে?
আমি মাথায় হাত দিয়ে লিনার দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললাম,
~দোস্ত,আমার সব শেষ।
লিনা বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।হঠাৎ রক্তিম গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন,
~আমার ক্লাসে অযথা কথা বল যাবে না।যদি আপনাদের কথা আমার পড়ানো থেকেও জরুরি তাহলে বের হয়ে যেতে পারেন।
রক্তিমের কথায় লিনা ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলো।রক্তিম তার পরিচয় পর্ব শেষ করে ক্লাস নেওয়া শুরু করলেন।আর আমি মনে মনে তার গোষ্ঠী উদ্ধার করতে লাগলাম।
~কেমন বজ্জাত লোক সারপ্রাইজের নামে আমাকে হার্ট অ্যাটাক দিয়ে দিলো।খচ্চর লোক একবার বাসায় পাই তখন কাঁচা খেয়ে ফেলবো আপনার ইগনোর লেভেল আমিও দেখবো।
~এমন ভাব করছে আমাকে চিনে না যাক ভালো আমিও দেখে নিবো।আপনি তো শুধু এখানে ইগনোর করবেন।আর আমি বাসায়ও আপনাকে ইগনোর করবো দেখা যাক কে জিতে।
এতটুকু ভেবে বাঁকা হেসে ক্লাসে মনোযোগ দিলাম।
রক্তিম ক্লাস নিচ্ছে আর ভাবছে অধরা এতো ঠান্ডা ভাবে রিয়েক্ট করছে কেন নিশ্চয় এই মেয়ে মনে মনে ফন্দি আটছে।আমিও কম না এই খেলা তো মাত্র শুরু দেখা যাক কী হয়।
ক্লাস শেষ হলে আমরা ৫-৬ জন মাঠে গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ সাকিব আমার ক্লাসমেট বললো,
~অধরা,তোমার রক্তিম স্যারের ক্লাস কেমন লাগলো?
আমি বললাম,
~ভালোই।
সাকিব বললো,
~আমারও স্যারের ক্লাস ভালোই লেগেছে।সে প্রতিটি টপিক একদম নিখুঁতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে।
রক্তিমের প্রশংসা শুনতে অনেক ভালো লাগছে।সে যতই রাক্ষস হোক না কেন তার পড়ানো মাশআল্লাহ।
লিনা বললো,
~স্যার কিন্তু দেখতেও মাশআল্লাহ।
লিনার কথায় আমার সব ভালো ভাবনায় জল পরে গেলো।লিনা রক্তিমের এতো প্রশংসা করবে কেন?এতে লিনার কোনো দোষ নেই সব দোষ ওই বিটকেলের এতো ফিটফাট হয়ে ভার্সিটি আসার কী দরকার যত্তসব।আমাকে বোরখা ছাড়া বাইরে বের হতে দিবে না আর নিজে হিরো সেজে থাকবে বেয়াদব ব্যাটা।লিনা আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললো,
~দোস্ত, তুই কী ভাবছিস?
আমি লিনার দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম,
~এতো মাশআল্লাহ বলে লাভ নেই।স্যার বিবাহিত
লিনা অবাক হয়ে বললো,
~তুই কীভাবে জানিস?
আমি ওর প্রশ্ন শুনে আমতা আমতা করে বললাম,
~শুনেছি কারো কাছ থেকে।তুই এতো গোয়েন্দা গিরি করছিস কেন?
লিনা বললো,
~এতো রাগ করছিস কেন?
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমার ফোনে ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো।আমি ভ্রুকুচকে ম্যাসেজ অন করতেই দেখি রক্তিম ম্যাসেজ করেছে,
~ক্লাস শেষ করে ভার্সিটির বাহিরে অপেক্ষা করবে আমরা একসাথে বাসায় যাবো।
তার ম্যাসেজ দেখে আমি কোনো রিপ্লায় দিলাম না।আর তার সাথে কোনো ক্রমেই আজ বাসায় যাবো না যেভাবে একা একা এসেছে সেভাবেই একা একা যাবে।
ভেবেই মজা লাগছে রক্তিম হুতুম পেঁচার মতো আজ আমার অপেক্ষা করবে হি হি হি।এসব ভাবতেই আমি উচ্চস্বরে হেসে দিলাম আর আমার হাসি দেখে সবাই আমার দিকে বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে আছে।আমি হাসি বন্ধ করে বইয়ের দিকে নজর দিলাম

,,,,,,,
,,,,,,
ভার্সিটির বাহিরে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে রক্তিম কিন্তু কোথাও অধরাকে দেখতে না পেয়ে তার মাথায় চিন্তার ভাজ ফুটে উঠে।তাই রক্তিম গাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়ালো একবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে তো ভার্সিটির গেইটের দিকে কিন্তু অধরাকে সে দেখতে পারছে না।এভাবেই অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর রক্তিম তার ফোন বের করলো তখনই তার ফোনে ম্যাসেজ আসে। অধরার ম্যাসেজ এসেছে সে লিখেছে,
~আমি ঠিকঠাক মতো বাসায় পৌছে গেছি।আপনিও চলে আসেন তাড়াতাড়ি রায়হান চাচ্চুর বাসায় যেতে হবে।
অধরার ম্যাসেজ দেখে রক্তিমের চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো।এতোক্ষন ধরে ওয়েট করছি আর এই ম্যাডাম বাসায় গিয়ে এসির হাওয়া খাচ্ছে।একবার শুধু হাতের কাছে পাই তারপর বুঝাবো কতো ধানে কতো চাল।
ফাজিল মেয়ে এগুলো ভেবেই রক্তিম গাড়িতে উঠে বসে তারপর রওনা দেয় বাসার উদ্দেশ্যে।
আমি শাওয়ার নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছি আর মিটমিট করে হাসছি। আর ভাবছি তাড়াতাড়ি করতে হবে যদি রক্তিম এসে পরে তাহলে আমার খবর আছে তাই আমি নিজেকে পরিপাটি করে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম তখনই আমি কারো সাথে ধাক্কা খাই।তাই আমি বললাম,
~সরি,আসলে আমি দেখতে পাইনি।
বলতে বলতে আমি মাথা উঁচু করে দেখি রাত আমার সামনে দাড়িয়ে আছে সে আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।আমি রাতের পাশ কেটে যেতে নিবো তখনই সে বলে উঠলো,
~এভাবে হাঁটা চলা করলে তো ধাক্কা লাগবেই।
আমি বললাম,
~আমি সরি বলেছি।আমার ভুল হয়েছে তা মেনেছি কোনো কাপুরুষের মতো নিজের ভুলকে এড়িয়ে যাইনি।
বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম এই ব্যক্তির সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধে।
আমি চলে আসলাম দাদীর রুমে এখান থেকে আজ বের হবো না সিংহের থাবায় পরার সম্ভাবনা আছে।
দাদীমা আমাকে দেখে বললেন,
~কীরে তুই একা বিড়বিড় করছিস কেন?
দাদীমার কথায় আমি হেসে বললাম,
~ওই এমনেই।
দাদীমা হেসে বললেন,
~পাগলী মেয়ে।
রক্তিম বাসায় এসে রুমে চলে যায় আজ সে এই ফাজিল মেয়েকে ছাড়বে না।রক্তিম বিড়বিড় করতে করতে রুমে গিয়ে দেখে অধরা কোথাও নেই।রক্তিমের রাগ সাত আসমানে উঠে গেলো।রক্তিম শার্ট খুলতে খুলতে নিজে নিজেই বলছে,
~নিশ্চয় দাদীর রুমে লুকিয়েছে।যেখানেই লুকান সুন্দরী আপনাকে আজ আমি ছাড়ছিনা।আমাকে রোদে দাড় করিয়ে নিজে ড্যাংড্যাং করে বাসায় চলে আসা।আজ মজ বুঝাবো
রক্তিম একটা শার্ট আর টাউজার নিয়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে।ফ্রেশ হয়ে এসে মাথা মুছতে মুছতে হাঁটা ধরলো দাদীর রুমের দিকে। রুমের কাছাকাছি পৌছে সে দাদীমা আর অধরার হাসির আওয়াজ আসছে।
রক্তিম হালকা কেশে রুমে ডুকতেই দেখে অধরা ঘুমের ভান করে পরে আছে।দাদী রক্তিমে দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বললো,
~দেখনা মেয়েটা কতো ক্লান্ত হয়ে গেছে। তাই আমার ঘরেই ঘুমিয়ে পরলো এখানেই থাকুক এখন ঘুম থেকে উঠলে তোর কাছে পাঠিয়ে দিবো।
রক্তিম ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
~আমার বউকে আমার এখনই প্রয়োজন। তাই এখনই নিয়ে যাচ্ছি।ঘুমিয়ে গেছে তো কী হয়েছে?কোলে করে নিয়ে যাবো।
আমি রক্তিমের কথা শুনেও কিছু বলছিনা মটকার মতো পরে আছি।আজ যদি এ চোখ খুলি রক্তিম আমাকে সারাজীবনের জন্য চোখ বন্ধ করিয়ে দিবেন।আমি সেভাবেই শুয়ে রইলাম।
রক্তিম হাতের টাওয়াল রেখে অধরাা কাছে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নিলো। অধরাও চোখ বন্ধ করে আছে রক্তিম তাকে নিয়ে হাঁটা ধরলো রুমের উদ্দেশ্যে

,,,,,,
,,,,,,,
রুমে পৌছে রক্তিম অধরাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো।রক্তিম অধরার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলো কতক্ষন এভাবে থাকতে পারবে তা আমিও দেখবো।রক্তিম অধরার দিকে ঝুঁকে তার গালে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলো তারপর আস্তে আস্তে সারা মুখে ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলো যেই রক্তিম অধরার ঠোঁটের দিকে যেতে নিবে তখনই অধরা চিৎকার দিয়ে বিছানা থেকে নেমে গেলো আর বললো,
~অসভ্য মানুষ লজ্জা করে না ঘুমন্ত মেয়ের সুযোগ নিতে।
রক্তিমের এমন আচরণে আমি আর ঘুমের নাটক ধরে রাখতে পারলাম না তাই চিৎকার করে উঠলাম।রক্তিমের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।তার এভাবে আগানো দেখে আমি পিছাতে শুরু করলাম একপর্যায়ে আমার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়।রক্তিম আমার একদম কাছে এসে দুই সাইডে তার হাত রেখে আমাকে বন্ধি করে দিলো।আমি মুখ তুলে তাকাতে পারছিনা রক্তিমের গরম নিশ্বাস আমার মুখে পরছে।আমার বুকে কেউ মনে হয় ধিরিম ধারিম ঢোল বাজাচ্ছে নীরবতা আমাদের দুজনের মাঝেই কাজ করছে রক্তিম সেই নীরবতা ভেঙ্গে বললো,
~আমি কী কাউকে বলেছিলাম যে ক্লাস শেষ হওয়ার পর আমার জন্য ওয়েট করতে?
রক্তিমের শান্ত কন্ঠে বলা কথাটা আমার মনে তীরের মতো লাগলে কারণ এটা ঝড় আসার পূর্ব লক্ষন।
আমি কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি রক্তিম এবার একটু চেচিয়ে বললো,
~আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।Answer me damn it.
রক্তিমের ধমকানো শুনে আমি একটু কেঁপে উঠলাম।রক্তিমও সেটা বুঝতে পেরে বললেন,
~কেন আমাকে না বলে বাসায় চলে আসলে?
আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,
~বেশ করেছি।আপনিও তো আমাকে না বলে আমার ভার্সিটিতে টিচার হিসেবে জয়েন করেছেন।
অধরার এমন বাচ্চামী দেখে রক্তিমের হাসি পেলো কিন্তু সে নিজেকে কন্ট্রোল করে বললো,
~এখন আমার ক্যারিয়ার আমি কীভাবে গড়বো তাও তোমাকে জানাতে হবে।
রক্তিমের কথা শুনে আমি কোনো জবাব দিলাম না।রক্তিম আমার কানের পিছে চুল গুলো গুজে বললেন,
~আর কোনোদিন এমন করবে?
আমি ভয়ে মাথা দুদিকে নাড়িয়ে না বললাম।রক্তিম আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,
~যাও দাদীমার কাছে।
আমি দৌড়ে দরজার সামনে এসে কিছু একটা ভেবে আবার চেচিয়ে বললাম,
~বেশ করেছি ১০০বার এমন করবো।
বলেই দৌড় লাগাই।রক্তিম অধরার এহেন কান্ডে হো হো করে হেসে উঠলো।আর আনমনে বলে উঠলো,
~বোকা মেয়ে।
সন্ধ্যায় আমি পা টিপে টিপে রুমে আসলাম ডানে বামে ভালো মতো চেক করে নিলাম।দেখে নিলাম যে কোথাও সে রাক্ষসটা নেই তো নাহ নেই।আমি খুশি মনে কার্বাড খুলে একটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে চলে গেলাম তারপর শাড়িটা পরে বাহিরে এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে হিজাব বাঁধলাম তারপর ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে নিলাম।দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করলো রক্তিম আমাকে একনজর দেখে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আমি ভেংচি কাটলাম আর বললাম,
~ব্যাটা খচ্চর এভাবে তো সারদিন বলতে থাকে অধরা তোমাকে সুন্দর দেখা যাচ্ছে কিন্তু আজকে একবারও বললোনা।কীভাবে বলনে আজ সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত রাহির সাথে যে দেখা করতে যাবে।
বিড়বিড় করতে করতে খাটে পা ঝুলিয়ে বসে পরলাম।রক্তিম ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে আমাকে দেখে বললো,
~আমরা একটুপরই বের হবো।
আমি কিছু নাবলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।

,,,,,,
,,,,,,
আমরা এখন রায়হান চাচ্চুর বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিচ্ছি।রক্তিম গাড়ি ড্রাইভ করছে আর আমি জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে ব্যত হঠাৎ রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~অধরা,বাহিরে এমন কী আছে যে?এতো মনোযোগ দিয়ে দেখছো।
আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~বাহিরে আপনার মতো হুতুম পেঁচা নেই।
রক্তিম হালকা হেসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলেন।
কিছুসময় পর আমরা রায়হান চাচ্চুর বাসায় পৌছে গেলাম।বাড়ির ভিতরে ঢুকেই বুঝতে পারছি তারা অনেক শৌখিন মানুষ কারণ তাদের সোফার ঘরটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। সোফার ঘরে প্রবেশ করতেই একজন সুন্দরী মেয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে তার মুখে এক অমায়িক হাসি লেগে আছে।আমি যদি ভুল না ভেবে থাকি এই মেয়ের নামই রাহি।
রক্তিম আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
~ও হচ্ছে রাহি।
রাহি আমাদের সামনে এসে কুশলাদি করে আমাকে দেখে বললো,
~তুমিই অধরা রাইট।
আমি মুচকি হাসলাম রাহি রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,
~রক্তিম বাবাকে আমি সব বুঝিয়ে বলতে চাই কারণ আমি অভিকে বিয়ে করতে চাই।আর অভি আজ আমাদের বাসায় আসবে।সুতরাং আজই সব কিছু করতে হবে।
আমর রাহির কথা শুনে ডিসকো ড্যান্স করতে মন চাইছে যাক সতীন রাস্তা থেকে সরে গেলো।
রাহি বললো,
~ওইতো অভি চলে এসেছে।
রাহির কথায় আমি পিছন ঘুরে দেখি একজন সুদর্শন যুবক আমাদের দিকে হেঁটে আসছে।রক্তিম একটু আগে বেড়ে অভির সাথে হ্যান্ডশেক করলো।তারপর তারা ভিতরে চলে আসলো অভি আমার সাথে কুশলাদি করলো।রাহি বললো,
~বাবা উপরে আছে।তোমরা বসো আমি বাবাকে ডেকে নিয়ে আসছি।
আমরা সোফায় বসে পরলাম। একটুপর রাহি একজনকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে আসলেন।সেই বয়স্ক ব্যক্তিটি রক্তিমকে দেখে একগাল হেসে বললো,
~কেমন আছো?
রক্তিম হেসে বললো,
~ভালো।আপনি কেমন আছেন চাচ্চু?
রায়হান চাচ্চু বললেন,
~ভালো।তোমার সাথে এরা কারা?
রাহি বললো,
~বাবা,এই মেয়েটা হচ্ছে অধরা রক্তিমের বউ।
রায়হান চাচ্চু বিস্ফোরিত চোখে তাকালো রাহির দিকে আর বললো,
~এ কেমন মজা রাহি?
রাহি বললো,
~বাবা,রক্তিম আমেরিকা থেকে এসেই অধরাকে বিয়ে করেছে আর অধরাকে সে ভালোবাসে।সেদিন হাসপাতালে সে বাধ্য হয়ে আমার হাতে আংটি পরিয়ে দেয়।আর বাবা আমি অভিকে ভালোবাসি তাকেই নিয়ে করতে যাই।
রায়হান চাচ্চু বললেন,
~রাহাত কোথায়?
রক্তিম বললেন,
~প্লিজ চাচ্চু এটাতে বাবার কোনো ভুল নেই।
রায়হান চাচ্চু বললেন,
~না বাবা,এতে আমার ভুল কোনো কিছু না ভেবে তোমাদের বিয়েটা আমি ঠিক করেছি আর রাহাত তো আমাকে অনেকবার নিষেধও করেছে কিন্তু আমি শুনিনি।আর রাহি তোর বিয়ে অভির সাথেই হবে তুই চিন্তা করিস না।
বাবার কথা শুনে রাহির চোখ চকচক করতে লাগলো। সে খুশি হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে রায়হানও মেয়ের খুশিতে খুশিতে।রক্তিমকে উদ্দেশ্য করে রায়হান বললো,
~তোমার আর তোমার বউকে আমার মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নিতে হবে কী পারবে না অধরা।
আমি মুচকি হেসে মাথা নাড়ি।রায়হান চাচ্চুর বাসা থেকে ডিনার করে বাসার জন্য বের হয়ে যাই।
তখনই তুমুল জোড়ে বৃষ্টি নামে আমি জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখছি আর রক্তিম গাড়ি ড্রাইভ করছে।
আমি রক্তিমকে বললাম,
~চলেন না বৃষ্টি বিলাস করি।
রক্তিম বললো,
~বৃষ্টি বিলাস করলে সর্দি বিলাস হয়ে যাবে।
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম

চলবে।।।।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন আর ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

আরেকটি পর্ব দেওয়া হলো কারণ আমি আগামীকাল গল্প দিতে পারবোনা।😢😢

#গল্পের_নাম_আমার_শহরে_তুমি
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১৩
,,,,,,
,,,,,,
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,
~নিরামিষ জানি কোথাকার।আপনি আসলেই রাক্ষস শুধু শুধু আমি আপনাকে আমি এ নামে ডাকি না।
রক্তিম হালকা হেসে বললো,
~আর তুমি রাক্ষসের বউ রাক্ষসনী।
রক্তিমের কথায় রাগ করে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলাম সে আপনমনে গাড়ি ড্রাইভ করছে এই মানুষটা আমার মনের কোনো ইচ্ছা বুঝে না। বাসার সামনে এসে গাড়ি থামলো আমি গাড়ি থেকে নামতে যাবো রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~বৃষ্টি বিলাস করবে না?
আমার চোখ খুশিতে চিকচিক করতে লাগলো।রক্তিম বললো,
~ছাদে চলো।
আমি গাড়ির দরজা খুলে বের হলাম হাত দিয়ে বৃষ্টির পানি গুলোকে ছুয়ে দিলাম,বৃষ্টির পানি আমার পুরো শরীরকে ছুয়ে দিলো।রক্তিম আমার কাছে এসে আমাকে কোলে তুলে নিলেন আমি তার দিকে চোখ বড় করে তাকালাম আর বললাম,
~ছাড়েন আমাকে। আমার পা আছে আমি হেঁটে যেতে পারবো।
রক্তিম বললো,
~হুশ।আমি জানি তোমার পা আছে আমার মন চেয়েছে তোমায় কোলে নিতে আবার ড্যাংড্যাং করতে পা পিছলে পরে যাবে।
রক্তিমের কথায় আমি লজ্জা পেলাম সে আমায় কোলে নিয়েই বাসার ছাদে চলে গেলো।ছাদে পৌছে রক্তিম আমাকে নিচে নামিয়ে দেয়। আমি রক্তিমের থেকে ছাড়া পেয়ে দৌড়ে ছাদের মাঝখানে চলে আসলাম দুহাত মেলে বৃষ্টি উপভোগ করছি।
রক্তিম তার প্রেয়সীকে দেখতে ব্যস্ত বৃষ্টির পানি গুলো তার প্রেয়সীর পুরো শরীরকে ছুয়ে দিচ্ছে।সে যদি বৃষ্টির পানি হতো তাহলে সে তার প্রেয়সীকে ছুয়ে দিতে পারতো।এখন তো এই বৃষ্টির পানিকে হিংসা করতে মন চাইছে।রক্তিম ধীর পায়ে অধরার পিছে এসে দাড়ালো।তার উত্তপ্ত নিঃশ্বাস গুলো অধরার কাধে গিয়ে পরছে।
কারো গরম নিঃশ্বাস আমার কাধে পৌছাতেই আমি পিছন ঘুরে তাকাই বৃষ্টির জন্য চোখ পিটপিট করে তাকালাম।রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে আছে এই তাকানো স্বাভাবিক লাগছে না।এতে রয়েছে ভালোবাসা যেই না আমি একটু পিছে যেতে নিবো সেই সময়ই আমার পা পিছলে গেলো আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম।আমার কোমড়ে কারোও শীতল স্পর্শ পেতেই চোখ খুলে তাকালাম।রক্তিম আমার কোমড় জরিয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়েছে।তার নিশ্বাসের প্রতিটি শব্দ আমার কানে বাজছে।আমার বুকটা ঢিপঢিপ করছে এমন কেন হচ্ছে আমার সাথে।রক্তিম আমার কানে ফিসফিস করে বললো,
~হয়েছে বৃষ্টি বিলাস এখন রুম বিলাসও করে নেওয়া যাক।
আমি মাথা নাড়িয়ে তাকে হ্যাঁ বলতেই আমাকে কোলে নিয়ে নেয় রক্তিম।তারপর সে রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় রুমে পৌছে রক্তিম আমাকে ওয়াশরুমের সামনে দ্বার করিয়ে দেয় আমার একটা শাড়ি আর প্রয়োজনীয় জিনিস হাতে দিয়ে সে বললো,
~যাও চেঞ্জ করে আসো।
তাড়াতাড়ি করে ঢুকে গেলাম ওয়াশরুমে। ওয়াশরুমের দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে আমি জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছি।আজকাল এগুলো যে কী হচ্ছে আমার সাথে বুঝতেই পারছিনা।কিছুক্ষন এভাবে থেকে ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পরে নিলাম তখনই ওয়াশরুমের দরজায় করাঘাত করলো রক্তিম আর বললো,
~আর কতো লেট করবে আমার এখন ঠান্ডা লাগছে প্লিজ তাড়াতাড়ি করো।
আমি চটজলদি দরজা খুলে বের হয়ে বললাম,
~সরি,আসলে আমি
আমার পুরো কথা শেষ করতে পারলাম না তার আগেই রক্তিম বললো,
~তুমি পরে তোমার লেট করার কারণ বলো আগে আমি চেঞ্জ করে নেই।
বলেই সে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো আর আমি বিছানা বসে পরলাম পা দুটো হঠাৎ ব্যাথা করছে হয়তো আজ অনেক দিন পর ভার্সিটিতে ভাগাভাগী করেছি তার কারণেই হচ্ছে।

,,,,,
,,,,,
কিছুক্ষন পর রক্তিম ফ্রেশ হয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
~তোমার কী কোনো প্রবলেম হচ্ছে?
আমি বললাম,
~না।
রক্তিম বললো,
~তাহলে পায়ে এভাবে হাত বুলাচ্ছো কেন?
আমি বললাম,
~পা ব্যাথা করছে।
রক্তিম হালকা রেগে বললো,
~আরো করো দৌড়াদৌড়ি ভালো লাগবে।এখান থেকে সেখানে সবসময় ওনার দৌড়াদৌড়ি করতে হবে।ফাজিল একটা
আমি ঠোঁট উল্টে বললাম,
~আমাকে কেন বকছেন পা ব্যাথা কী আমি ইচ্ছে করে এনেছি।
রক্তিম আর কিছু না বলে আমার পায়ের সামনে বসে পায়ে হাত দিতে নিবে তখনই আমি পা সরিয়ে ফেললাম আর তাকে বললাম,
~এতটুকুর জন্য পা ধরে মাফ চাইতে হবে না।আপনাকে এভাবেই আমি মাফ করে দিলাম।
আমার কথা শুনে রক্তিম আমাকে ধমক দিয়ে বললেন,
~স্টুপিট মেয়ে।আমি তোমার পা ধরে কেন মাফ চাইবো?তোমার পায়ের কোথায় ব্যাথা করছে তা দেখতে চেয়েছি।
রক্তিমের কথায় জিহ্বা দাঁত দিয়ে কেটে বললাম,
~আমার ভাবনায় ভুল হয়েছে।সরি
রক্তিম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
~তোমার দ্বারা কিছু হবে না অধরা।
রক্তিমের এহেন কথায় আমি বোকার মতে বলে ফেললাম,
~তাহলে আপনার বাচ্চা গুলো কার দ্বারা হবে?আপনি কী আরেকটা বিয়ে করবেন বাচ্চার জন্য।
নিজের কথায় নিজে ফেসে এখন অন্য দিকে মুখ করে রেখেছি আর রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কিছু না বলে সে আমার পা দুটো কাছে টেনে টিপে দিতে থাকলো আর বললো,
~একদম ঠিক কথা বলেছো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।তো মিসেস অধরা আপনার কয়টা বেবি নেওয়ার প্ল্যান আছে?বাবা হিসেবে আমি জানতে চাই।
আমি মাথা নিচু করে আছি তা দেখে রক্তিম মিটমিট করে হাসছে কিন্তু নিজেকে বেশিক্ষন কন্ট্রোল করতে না পেরে সে জোরে হেসে দেয়।রক্তিমের হাসির শব্দ শুনে আমার আরো বেশি লজ্জা করছে তার থেকে নিজের পা ছাড়িয়ে কাঁথা মোড়া দিয়ে শুয়ে পরলাম। রক্তিম এখনো হাসছে তার হাসি যেন থামার নাম নিচ্ছে না।
আমি কাঁথা মুখ থেকে সরিয়ে বললাম,
~আজব তো এতে এতো হাসার কী হলো?আরেকবার যদি হি হি করেছেন তাহলে আর আপনার সাথে থাকবো না এক কাপড়ে দাদীমার রুমে চলে যাবো।
রক্তিম হাসি বন্ধ করে আমাকে কাঁথা সরিয়ে আমাকে ঝাপটে ধরে শুয়ে পরলেন আর বললেন,
~থাক আমার বউ আমার কাছেই থাক।
আমি আর কোনো কথা না বলে তার বুকে গুজে শুয়ে পরলাম।ভালো লাগে রক্তিমের সাথে থাকতে সে যখন আমার আশেপাশে থাকে তখন মনে হয় আমি কোনো অন্য দুনিয়ায় চলে গেছি।পরম আবেশে নিজের চোখ বন্ধ করে নিলো ভালোবাসার মানুষ দুটি তারা এখন ব্যস্ত আছে তাদের নিজ নিজ স্বপ্নে।
এক রুমে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত আরেক রুমে একাকীভাবে নিদ্রাহীন অবস্থায় নিজ বারান্দায় বসে আছে রাত।ফোন হাতে নিয়ে সেই দূর আকাশে তাকিয়ে আছে সে কতোবার সারাকে ফোন করলো রাত কিন্তু সেই একই কথা একজন সুন্দর কন্ঠের নারী বার বার বলছে,
~এই নাম্বাটি ব্যস্ত আছে অনুগ্রহ করে আবার ট্রাই করুন।
এই বাক্যটি শুনতে শুনতে ত্যক্ত রাত।বুকে চিনচিন ব্যাথা করছে আচ্ছা সে যখন সারকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতো তখন কী অধরারও এতোই খারাপ লাগতো।
হয়তো হ্যাঁ। পরক্ষনেই নিজের মনকে শাসায় রাত অধরা তার মাকে অপমান করেছে একটা অভদ্র মেয়ের সাথে সে কোনো সম্পর্ক রাখতে চায় না।

,,,,,,,
,,,,,,,
সকালে সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে।তখনই রাহাত বললো,
~রায়হানের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে।এই মাসেই সে তার মেয়ের বিয়ে সেরে ফেলতে চায়।তোমরা তো জানো রাহির মা নেই আর রায়হানের ও তার ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ নেই।তাই রায়হান চায় রক্তিম আর অধরা বিয়ের সব দায়িত্ব পালন করুক।রায়হান অনেক খুশি হবে বাকিটা তোমাদের ইচ্ছা সময়ের উপর নির্ভর করে।
বাবার কথাশ আমি বললাম,
~অবশ্যই বাবা,আমরা বিয়ের সব দায়িত্ব নিতে চাই।
রক্তিম বললো,
~জ্বী বাবা আমারও একই মত আছে।
আমাদের কথা শুনে বাবা বললেন,
~বেশ তো তোমরা রাহি আর অভির সাথে আজই দেখা করো তারা কীভাবে সব কিছু করতে চায়।তা জেনে নিও।আর অধরা তোমার সাথে রাহি কথা বলতে চায় তাই সে তোমাকে ফোন করবে তখনই জেনে নিও কখন তারা দেখা করতে চায়।
আমি বললাম,
~জ্বী বাবা।
ব্রেকফাস্ট শেষ করে বাসার বাহিরে এসে দেখি রক্তিম ড্যাশিং লুক নিয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমি তাকে দেখেও না দেখার ভান করে অন্যদিকে তাকিয়ে হাটা শুরু করি।গাড়ির সামনে এসে যেই আমি গাড়ির পাশ কাটিয়ে যেতে নিবো তখনই রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~কোথায় যাওয়া হচ্ছে?একা একা।
আমি বললাম,
~যেখানেই যাই এতে আপনার কী?
রক্তিম হেসে বললো,
~আমারই তো সব।আচ্ছা ম্যাডাম আপনার আর আমার পথ একই৷ আমরা কী একসাথে সেই পথ পাড়ি দিতে পারি।
রক্তিমের এমন মিষ্টি মিষ্টি কথায় আমি গলে যাওয়ার মেয়ে আমি না।আমি বললাম,
~কী দরকার আছে বলেন একই পথ একসাথে পাড়ি দেওয়ার?
রক্তিম বললো,
~আলবাত আছে অনেক দরকার আছপ বউ হও তুমি আমার আর কোনো নাটক দেখতে চাইনা গাড়িতে বসো।
কথা শেষ হতেই সে আমার হাত টেনে ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন তারপর গেইট লক করে
নিজে ড্রাইভিং সীটে বসলেন আমি বললাম,
~গতকাল তো একদম মুড দেখাচ্ছিলেন।আজ কী হলো মাস্টার মশাই।
আমার এহেন কথা শুনে রক্তিম বললেন,
~আজও মুড দেখাবো কিন্তু সঠিক জায়গায় গিয়ে।
রক্তিমের কথায় আমার মেজাজ খারাপ লাগছে তাই জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলাম ভার্সিটির কাছে আসতেই আমি বললাম,
~গাড়ি থামান।
রক্তিম বললো,
~কেন?
আমি বললাম,
~কেউ দেখলে নানান কথা রটিয়ে দিবে।
রক্তিম বললো,
~তুমি আমার বউ কোনো সমস্যা হবে না।
আমি বললাম,
~সবাই তো আর জানে না আমি আপনার বউ।
রক্তিম কিছুক্ষন ভেবে বললেন,
~অধরা আমরা একটা পার্টি থ্রো করি যেখানে আমি সবাইকে জানাবো তুমি আমার বউ।
আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম,
~যা ইচ্ছা করেন আমাকে এখানে নামিয়ে দেন।
রক্তিম গাড়ি থামিয়ে দেন আমি গাড়ি থেকে নেমে পরলাম সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলাম রক্তিম পিছন থেকে ডাকদিলেন।আমি পিছে ঘুরতেই সে বললেন,
~ভার্সিটির পর রাহি আর অভি সাথে দেখা করতে হবে।তাই আপনি আবার ড্যাংড্যাং করতে করতে বাসায় চলে যেয়ে না।
রক্তিমের কথা শুনে আমি বললাম,
~আমিই মনেই রাখবো আপনি আবার মুড দেখাতে গিয়ে ভুলে যেয়েন না।
বলেই চলে আসলাম সেখান থেকে ভার্সিটির ভিতরে ঢুকেই লিনার সাথে দেখা হলো আমি আর লিনা ক্লাসের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরলাম আমরা দুজন কথা বলতে বলতে এগিয়ে যাচ্ছি হঠাৎ একজন যুবক এসে আমার সামনে এসে দাড়ালো আমি তার আগমনে একটু বিচলিত হলেও নিজেকে ঠিক করে নিলাম।
সেই যুবকটি আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~আসলে আপনাকে এভাবে ভয় দেখাতে চাইনি কিন্তু একটা জরুরি কাজ ছিল তাই আপনাদের পথ আটকালাম।Kindly can you tell me where is principal room?
আমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই লিনা বলে উঠলো,
~আগে গিয়ে বাম দিকে চলে যান।
যুবকটি মুচকি হেসে বললেন,
~Thanks Ladies.
বলেই সে চলে গেলো।আমি লিনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~এই উজবুকটা আবার কে রে?
লিনা বললো,
~কে জানে?
আমরা সে বিষয় নিয়ে ঘাটালাম না ক্লাসে চলে আসলাম।সব গুলো ক্লাস করে আমি ভার্সিটির বাহিরে অপেক্ষা করছি রক্তিমের তখনই মোবাইলে ম্যাসেজ আসলো রক্তিম বলেছে,
~আজ সকালে যেখানে ড্রপ করেছিলাম সেখানে চলে আসো।
আমি চলে আসি সে জায়গায় রক্তিম গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমি রক্তিমের কাছে গিয়ে বললাম,
~চলেন যাওয়া যাক।
রক্তিম বললো,
~গাড়িতে উঠে বসো।
আমি গাড়িতে বসলাম রক্তিম ড্রাইভ করা শুরু করলো।কিছুক্ষন পর রক্তিম একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামালেন। রক্তিম গাড়ি থেকে নামলেন আমিও গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালাম হঠাৎ রক্তিম আমার চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলেন।আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম,
~কী করছেন?চোখে কাপড় কেন বেঁধেছেন।
রক্তিম বললেন,
~হুসস।একদম কথা বলবে না আমার হাত ধরে আসতে আসতে ভিতরে চলো।
রক্তিম আমার হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছেন কিছুসময় পর আমার চোখের কাপড় সে খুলে দিলো।আমি চোখ পিটপিট করে খুলে দেখলাম

চলবে।।।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading)

(পর্বঃ১০ এ আমি একটা ভুল করেছি আমার ভুল ধারনা ছিল আমি আকদ মানে ভেবেছিলাম আংটি বদল কিন্তু সেটার মিনিং কাবিন এটা আমি জানতাম না।বেশি পাকনামি করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছি তার জন্য আন্তরিক ভাবে দুখিঃত।অনেকেই আমার ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আর সরি সরি সরি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here