আমি সেই তনু পর্ব -১২

#আমি_সেই_তনু
#১২_পর্ব
#জান্নাত_উল_ফেরদৌস

আকাশের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে আকাশের দিকে তাকালো তনু!! ভাইয়া মানে আমার শাড়ী…

আকাশ: তোর শাড়ী খুলে যাচ্ছে তাই তো? বলে ই তো হয় , বলে ই আকাশ নিজে থেকে শাড়ি ঠিক করে দিচ্ছে তনুর।

তনু লজ্জায় লাল হয়ে গেছে ,তবু চুপ চাপ দাড়িয়ে আছে । আকাশ শরীর কুচি গুলো সুন্দর করে তনুর কোমরে গুঁজে দিচ্ছে তনু লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে ….

আকাশ একবারও তনুর শরীর এর দিকে দৃষ্টিপাত করে নি , আকাশ অন্য ছেলেদের মত মেয়েদের কিকে কোনো অশ্লীল দৃষ্টিপাত করে না। এটা ই হয়তো আকাশ কে আরো সুদর্শন করে দেয়….

আকাশ তনুর দিকে তাকিয়ে দেখে চোখ বন্ধ করে আছে , আকাশ জানে তনু লজ্জা পাচ্ছে। তনুর থুতনি ধরে, তনু চোখ টা খল?

তনু চোখ খুলে মাথা নিচু করে ফেলে।
আকাশ: তোকে আজ বড্ডো বেশি সুন্দর লাগছে, তোকে দেখলে ইচ্ছা হয় সারা জীবন তোর এই মুখ টা দেখে ই কাটিয়ে দেই।
তনু মাথা নিচু করে ই , আপনাকে ও ভীষণ সুন্দর লাগছে ভাইয়া।
আকাশ: শুধু কি সুন্দর লাগছে? তোর কি আমাকে আর কিছু বলার নেই?
তনু মাথা নিচু করে ই আকাশের হাত টা দুই হাত দিয়ে ধরে শক্ত করে চেপে ধরলো….
আকাশ জানে তনু মুখে না বললে ও আকাশ কে ভালোবাসে শুধু লজ্জায় বলতে পারে না। আকাশ ও আর একটা হাত দিয়ে তনুর হাত টা ধরলো….

কালকের পর থেকে তুই প্রতিদিন শাড়ী পরে থাকবি আমার সামনে বুঝলি , শাড়ী তে তোকে ভীষণ ভালো লাগে।
তনু মুচকি মুচকি হেসে মাথা নাড়ল।
আকাশ তনুর মাথার চুল গুলো মুখের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে হাত দিয়ে মুখে একটু মৃদু স্পর্শ করলো।
যাওয়ার সময় তনুর হতে একটা চুমু খেল।

কাল আকাশ আর তনুর বিয়ে…. প্রীতি কে অফিস কলিগরা ফোন করে জানিয়েছে । প্রীতি প্রেগনেন্ট অবস্থায় অনেক অ্যালকোহল খেয়ে আসক্ত অবস্থায় ক্লাবে পড়ে আছে…. ঝাপসা চোখে তনুর মত কাউকে ড্যান্স করতে দেখছে ক্লাবে… প্রীতি নিজের মনের ভুল ভেবে সেখানে আনমনে ঝিমুতে থাকে।

আকাশ সাদে দাড়িয়ে আনমনে আকাশ দেখছে আর ভাবছে তনু কে কি আকাশ সারাজীবন আগলে রাখতে পারবে….
রোহিত আকাশের কাধে হাত দিতে ই আকাশ পেছন ফিরলো, বাবা তুমি? (আকাশ)

রোহিত: তোকে একটা গল্পঃ বলি শোন…. তোর মাকে যখন প্রথম বিয়ে করে আনি তখন সবাই ছিল সংসারে , তনুর মত আমিও একটা ছোট্ট লতিফকে বিয়ে করেছিলাম । প্রথমে মাঝে মধ্যে তরকারিতে লবণ দিতে ভুলে যেত, মাঝে মাঝে বেশি দিত। আমি সব হজম করে ফেলতাম। প্রথম দিকে তোর মা আমাকে পছন্দ না করলেও ধীরে ধীরে আমি তার সব থেকে প্রিয় মানুষ হয়ে উঠলাম সেটা কিন্তু একদিন এ না বাবা , প্রতিদিন আমি তোর মায়ের প্রিয় হয়ে উঠেছি একটু একটু করে।
তার পর তোর মা আস্তে আস্তে সব শিখে গেল, তুই হলি তোকে পেয়ে যেনো তোর মা নিজেকে আবার নতুন করে খুজে পেল এক নতুন সত্তায় আর সেটা হলো মা হওয়া।

রোহিত এর কথা শুনে আকাশ রোহিত কে জড়িয়ে ধরলো….
রোহিত: কালকের জন্য শুভকামনা বাবা, তোমাকে পরিপূর্ণ দেখলে ই আমার আর লতিফার শান্তি ।
আকাশ: আমি চেষ্টা করবো তোমার মত স্বামী হওয়ার বাবা।
রোহিত : best of luck বাবা।

পরদিন সকাল থেকে ই ধুম ধাম আয়োজন চলছে … তনু কে হলুদ মেখে গোসল করিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে একটু পরে ই সাজাতে আসবে তনু কে….
তনুর বেশ অস্বস্তি লাগছে, তবু কাউকে কিছু বলছে না।

অনেক গেস্ট এসেছে , আকাশ কিছু গেস্ট সামলাচ্ছে হঠাৎ আকাশের মুখে মাস্ক পড়া একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগে ,খুব তাড়াহুড়া করে যাচ্ছিল। আকাশ মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে যায় !! একদমই তনুর মত চোখ গুলো।
আকাশ: কে তুমি?
মেয়েটি কোনো উত্তর না দিয়ে পালিয়ে যায়…

আকাশ বেশ বিস্ময় নিয়ে ই তনুর ঘরে যায় তাড়াহুড়া করে!! তনু কোথায় মামী?
হঠাৎ আকাশ কে তনুর ঘরে দেখে মামাতো ফুপাতো ভাইবোন গুলো হ হ করে হেসে ওঠে…

মুহিব: দেখলি তনু আকাশ ভাইয়া তোকে না দেখে এক মুহুর্ত ও থাকতে পারে না। আহহহ কি প্রেম রে বাবা বলে ই সব অট্ট হাসি তে ভেসে পড়ে।

তনুর বেশ রাগ হচ্ছে…. আর তো মাত্র কয় এক ঘন্টা এখনই এখানে কেনো আসতে হবে ভাইয়া কে !!

আকাশ: কি হলো তনু কোথায়? মামী?
মামী: আরে ঐযে তোর তনু ।
তনুকে সাজানো হচ্ছে…. আকাশ হয়তো ভুল দেখেছে, তনুকে খুব বেশি ভালোবাসার জন্য হয়তো ভুলভাল দেখছে।
আকাশ: sorry আচ্ছা আসি …
মুহিব: 2মিনিট পর আবার যেনো এসো না ভাইয়া বলে ই আবার হেসে উঠলো সবাই।
আকাশ কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো।
আকাশ কে শেরওয়ানি পরিয়ে রেডী করা হলো …. কিভাবে যে দিন টা কেটে গেলো।
কাজী সাহেব বিয়ে পরিয়ে দিয়ে গেছেন, আকাশের ঘর সাজানো হচ্ছে তাই আকাশ ছাদে দাঁড়িয়ে আছে।
গেট এর দিকে তাকাতে ই সেই মাস্ক পরা মেয়ে তাকে বেরিয়ে যেতে দেখলো আকাশ!!
কিন্তু অত পাত্তা দিলো না , আজ আকাশের জীবনে স্পেশাল ডে বাজে চিন্তা করে নষ্ট করতে চায় না…

তনু কে আকাশের ঘরে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে…. আকাশের কলিগরা ছাদ থেকে আকাশ কে ডেকে এনে দরজার সামনে দাঁড় করিয়েছে….
বিচ্ছু ভাইবোন আকাশের ঘরের সামনে দাড়িয়ে আছে, টাকা ছাড়া ঢুকতে দিবে না। টাকার অঙ্ক 50হাজার টাকা…

তনু চুপ চাপ বসে আছে সময় যত ঘনাচ্ছে ভয় তত বাড়ছে!!

আকাশ আর ভাইবোন দের মধ্যে তরকা তরকি চলছে…..

একপর্যায়ে আকাশের থেকে টাকা নিয়ে, আকাশ কে ঢুকতে দেওয়া হয়, পড়ে একে একে প্রস্থান করে ওখান থেকে , আকাশ দরজা আটকে দিতে যাচ্ছে।

তনু ভয়ে ঘেমে যাচ্ছে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here