আলো_আঁধার পর্ব শেষ

#আলো_আঁধার_২২
#জেরিন_আক্তার_নিপা
#শেষ_পর্ব

নিজের বিয়ে নিয়ে আলো ভয়ে আছে। দীপ্ত শুভ্রর কথা জানতে পারলে শুভ্রর কোন ক্ষতি করে দিবে।
আলো শুভ্রর কিছু হতে দিতে পারবে না। নিজের সাথে শুভ্রকে জড়িয়ে ওকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারবে না।
দীপ্তর ভয়ে আলো শুভ্রর সাথে দেখা করে না। ফোন তুলে না। কোন একসময় শুভ্রর ভালোবাসায় সায় দিয়ে সে নিজেও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন শুভ্রর কথা ভেবেই ওকে এড়িয়ে যাচ্ছে। বিয়ের কথাটা আলো ভুলে যেতে চায়। জীবনে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। মাঝে দুর্বল হয়ে গেলেও এখন আবার ওকে শক্ত হতে হবে।
শুভ্র আলোর বাসায় আসে। অনেকক্ষণ সময় ধরে কলিংবেল চাপে। আলো কি বাড়িতে নেই? দরজা খুলছে না কেন?
আলো নিরস মুখে দরজা খুলে দেয়। শুভ্র ওকে দেখে চাপা অভিমানে বলে,

-“আমার কল তুলছ না কেন তুমি? মা তোমাকে একবার যেতে বলেছিল। তুমি গেলে না। আমি এসেছি এখন দরজাও খুলছ না। কী হয়েছে তোমার আলো? আমি কোন ভুল করেছি?”

-“ভেতরে এসো।”

আলোর নির্লিপ্ততায় শুভ্র দমে যায়। এই মেয়ের সাথে রাগ দেখানোর মানে নেই। নিজের মন মতনই চলবে সে।

-“তোমার হয়েছে কী বলবে?”

-“চা খাবে?”

-“তোমার মনে হয় আমি তোমার এখানে শুধু চা খেতে এসেছি আলো? তুমি কি ভুলে গেছ, আমাদের বিয়ের কয়েকদিনই আছে মাত্র।”

আলো চোরা দৃষ্টিতে শুভ্রকে দেখে। কষ্টে বুক ফাটে ওর। তবুও তাকে কঠোর হতে হবে।
শুভ্র আলোকে আগের রূপে দেখে মনে মনে ঘাবড়ায়। অজানা কারণে ভয় পায়। আলোর দিকে এগিয়ে যায় সে। এই প্রথম সাহস করে আলোর হাত ধরে,

-“তুমি আমাকে ভালোবাসো না আলো? বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন কি তুমি পস্তাচ্ছ? আমি লক্ষ করছি, এই কয়দিন তুমি আবার আগের মত আচরণ করছ। আমার কি কোন ভুল হয়েছে আলো? এরকম কোরো না প্লিজ। আমি মেনে নিয়েছিলাম। কষ্ট হলেও মনকে বুঝিয়েছিলাম। আমাকে এত বড় সুখের স্বপ্ন দেখিয়ে ভেতর থেকে এভাবে ভেঙে দিও না। তুমি যদি এখন বলো, বিয়েটা তুমি করবে না। তাহলে আমি শেষ হয়ে যাব আলো। কী হয়েছে আমি জানি না। কী জন্য তুমি এমন আচরণ করছ তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। যে কারণই ঘটে থাকুক আলো, আমাকে বলো। আমরা দু’জন মিলে যেকোনো পরিস্থিতির সাথে লড়ে যাব। শুধু তুমি আমার পাশে থেকো।”

শুভ্রর চোখ ছলছল করছে। আলো ওর চোখের গভীরে হারিয়ে যায়। জীবনে কোন পুরুষ মানুষের চোখে এতটা বিশ্বাস, ভরসা দেখেনি সে। কীভাবে ফেরাবে সে এই ছেলেকে? এই পাগলকে কষ্ট দেওয়ার সাধ্য তার আছে?
যে কথাগুলো বলবে ভেবে রেখেছিল। সব কথা মনেই রয়ে গেল। কিছুই বলা হলো না। শুভ্র পাশে থাকলে কিসের ভয় তার? আলো শুভ্রর সাথে আমিনার সাথে দেখা করার জন্য বেরুলো। আমিনা ছেলের বউয়ের জন্য হাতের বালা বানাবেন। সেটারই মাপ নেওয়ার জন্য আলোকে আসতে বলেছেন।
আলো কখনও ভেবেছিল এতকিছুর পরও সে নতুন করে জীবন শুরু করবে। আল্লাহ তার ভাগ্যে এত ভালো দু’জন মানুষকে লিখে দিবে। বউ হিসেবে সে কি শুভ্রর যোগ্য হয়ে উঠতে পারবে? নিজের মা তাকে বিশ্বাস করেনি। যে মা দশ মাস পেটে ধরেছিল, সে মা তাড়িয়ে দিলেও আমিনার মত অচেনা একজন তাকে নিজের মেয়ের জায়গা দেয়। আলো আমিনার ছেলের বউ না, মেয়ে হয়ে উঠবে।
আলোর কপালে সুখ সয়না। এবার কি এত সুখ তার কপালে সইবে? কারো নজর লাগবে না তো?
আলো সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকে। না জানি কখন দীপ্ত এসে তার সামনে দাঁড়ায়। শুভ্রর সাথে তার বিয়ের কথা শুনে নতুন কোন পাগলামি করে।

আমিনার জোড়াজুড়িতে আলোকে আবার শুভ্রদের বাসায় উঠতে হয়েছে। বিয়ের আয়োজন সব এই বাড়িতেই হবে। আলোর পক্ষ থেকে যেহেতু কেউ নেই তাই শুভ্রর পক্ষের লোকই আলোর পক্ষের লোক। বিয়েতে নিজের কাউকে না পেয়ে আলোর মন খারাপ হবে, এই ভেবেই আমিনা আলোকে নিজের কাছে নিয়ে এসেছে। মেয়েটা অনেক কষ্ট সহ্য করে একটু সুখের মুখ দেখতে যাচ্ছে। ওর সুখে কোন কমতি থাকতে দিবেন না তিনি। আলোকে সব সময় মেয়ের মতই ভালোবাসবেন।

হলুদের ঠিক একদিন আগে শুভ্র একজনকে নিয়ে বাড়িতে এলো। আমিনা ওদের বসিয়ে রেখে আলোকে ডাকতে গেল। আলো হাসি মুখেই এসেছিল। কিন্তু শুভ্রর সাথে সামনে দাঁড়ানো মানুষটাকে দেখে ওর হাসি মিলিয়ে গেল। দু’পা ঠকঠক করে কাঁপতে লাগল। ভয়ে ঠোঁট ইষৎ ফাঁক হয়ে গেছে। আলোর সুখে আবার অশুভ ছায়ার গ্রহণ লাগছে।
দীপ্ত মুখে হাসি টেনে উঠে দাঁড়াল। আলোকে দেখিয়ে শুভ্রকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-“ইনি আপনার হবু স্ত্রী?”

শুভ্র হেসে মাথা নাড়ল।

-“হ্যাঁ। ও আলো। আমার হবু স্ত্রী। দু’দিন পর আমাদের বিয়ে। আপনাকে কিন্তু আসতেই হবে।”

-“অবশ্যই। অবশ্যই আসব। আপনি ইনভাইট করেছেন আর আমি আসব না! আপনি আমার জীবন বাঁচিয়েছেন। আমি আপনার কাছে ঋণী। যেভাবেই হোক এই ঋণ তো শোধ করতে হবে!”

আলো এখনো ভেবে পাচ্ছে না দীপ্ত শুভ্রকে কীভাবে চিনলো। শুভ্রর সাথে দীপ্তর কী সম্পর্ক! শুভ্র ওর জীবন বাঁচিয়েছে! কীভাবে? কবে? শুভ্র কি জানে এটাই সেই দীপ্ত যে আলোর জীবনের সব কষ্টের মূল। আলোর মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। কিচ্ছু বুঝে উঠতে পারছে না সে। দীপ্ত তার আর শুভ্রর বিয়ের কথা জেনেও এতটা শান্ত আছে কীভাবে? দীপ্ত কিছু করবে না! আলোকে পেতে কত জঘন্য অপরাধ করেছে সে। আজ তারই চোখের সামনে আলো অন্য কারো হয়ে যাবে, এটা দীপ্ত এত সহজে হতে দিবে!

-“আজ তাহলে আমি উঠি মিস্টার শুভ্র।”

-“সেকি! এখনই তো এলেন। কিছুই নিলেন না। একটা বসলেন না। এখনই চলে যাবার কথা বলছেন! না,না। আপনি আমার অতিথি।”

দীপ্ত বাধা দিল। আলোর দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত ভাবে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসল।

-“সবে তো চেনাজানা হয়েছে। এখন তো আসা যাওয়া লেগেই থাকবে। আমি আসব। খুব শীঘ্রই আসব।”

কথাটা কি দীপ্ত আলোকে শুনালো? আলোর বুক কেঁপে উঠল। দীপ্ত আসবে, তাদের বিয়ে ভাঙতে আসবে। শুভ্রর ক্ষতি করে আলোকে নিয়ে যেতে আসবে।
আলো সারাক্ষণ শুভ্রর চিন্তায় থাকে। একটু পরপর কল করে শুভ্রর খবর নেয়। শুভ্র ঠিক আছে জেনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়।

-“আলো শোন, আমার আজ ফিরতে একটু দেরি হবে।”

-“কেন?”

-“আরে ওইযে মিস্টার দীপ্ত, উনি এসেছেন চেম্বারে। উনাকে একটু সময় দিতে হবে।”

-“শুভ্র, উনার সাথে তোমার এত খাতির আমার ভালো লাগে না। লোকটা ভালো নাকি মন্দ তাও জানো না তুমি। উনাকে আমার ভালো মনে হয় না। তুমি উনার থেকে যথেষ্ট দূরত্ব রেখে চলবে।”

-“আলো এসব কেমন কথা। উনাকে তুমি চেনো না। তবুও উনার সম্পর্কে এমন কথা বলছো। এটা কিন্তু ঠিক না। মানুষকে না চেনে ওর সম্পর্কে কিছু বলা অন্যায়।”

-“তুমি আমাকে মানুষ চিনিও না শুভ্র। জীবনে তোমার থেকে আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। মানুষ চেনার চোখ তোমার থেকেও আমার তীক্ষ্ণ। আমি কিছু শুনতে চাই না, ওই লোকের থেকে তুমি দূরে থাকবে।”

-“আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। তুমি শুধু শুধু টেনশন নিও না তো। কাল আমাদের বিয়ে। তুমি বিয়ে নিয়ে ভাবো।”

আলো কল কেটে বসে বসে চিন্তা করে। সেদিন দীপ্তই অ্যাক্সিডেন করে শুভ্রর হাসপাতালের এসেছিল। সেখান থেকেই শুভ্রর সাথে দীপ্তর পরিচয়। আলো শুভ্রকে দীপ্তর ব্যাপারে এখনও কিছু বলতে পারেনি। কিন্তু না বলেও শান্তি পাচ্ছে না। দীপ্ত ভয়ংকর। শুভ্রর তা জেনে রাখা উচিত।

-“আচ্ছা শুভ্র দীপ্তর কথা জানতে পারলে কীভাবে রিয়্যাক্ট করবে? আর দীপ্তই বা এখনও চুপ করে আছে কেন? কাল সকাল হলে বিয়ে অথচ এখনও দীপ্ত চুপচাপ! এটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। দীপ্ত মনে মনে নিশ্চয় কোন পরিকল্পনা করছে। ওর শয়তান মস্তিষ্ক ভয়ংকর পরিকল্পনা ফাঁদছে।”

আলো চিন্তিত মনে ঘরজুড়ে পায়চারি করে বেড়াচ্ছে। কোনোভাবেই শান্তি পাচ্ছে না। মন কু ডাক ডাকছে। অশুভ কোন কিছু ঘটতে চলেছে। আলো আঁচ করতে পারছে। শুভ্রর কিছু যেন না হয়।

ভীষণ একটা বাজে স্বপ্ন দেখে আলোর ঘুম ভেঙে যায়। হুড়মুড়িয়ে উঠে বসে সে। বেড হাতড়ে ফোন খুঁজে বের করে। রাত কয়টা বাজে এখন? আলো ফোনে সময় দেখে। বারোটা বেজে দুই মিনিট। শুভ্র ফিরে এসেছে? আলো হন্তদন্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। শুভ্রর ঘরের দিকে যায়।
আর তক্ষুনি আমিনা উন্মাদিনীর মত ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে। চিৎকার করছেন তিনি।

-“আলো! আলো। কোথায় তোমরা সবাই? ড্রাইভার গাড়ি বের করো। হাসপাতালে যেতে হবে।”

আলো আমিনার উদ্বিগ্ন গলা শুনে ছুটে আসে। শুভ্রর কিছু হয়নি তো? ও ঠিক আছে।

-“কী হয়েছে খালাম্মা? শুভ্র কোথায়? ওকে দেখছি না কেন? কোথায় ও?”

-“আলো শুভ্রর অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। আমাকে হাসপাতালে যেতে হবে।”

আলো বাকরূদ্ধ হয়ে গেল। শরীর অবশ হয়ে আসছে তার। চোখ বেয়ে টুপ করে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল। অনেক কষ্টে আলো গলা দিয়ে শব্দ বের করল।

-“আমিও যাব।”

আমিনা আলোর মুখের দিকে তাকাল। কাল সকালে মেয়েটার বিয়ে। আজ শুভ্রর কিছু হয়ে গেলে! না, না। নিজের ছেলের অমঙ্গলের কথা ভাবতেই আমিনার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
হাসপাতালে গিয়ে দু’জন পাগলের মতো এদিক ওদিক ছুটছে। আলোর চোখের পানি থামছে না।
শুভ্রর কিছু হয়ে গেলে সে নিজেকে আর তুলে দাঁড় করাতে পারবে না। শুভ্র সন্ধ্যায় বলেছিল দীপ্তর সাথে আছে ও। দীপ্তই নিশ্চয় অ্যাক্সিডেন্টটা করিয়েছে। কিছুক্ষণ পরই শুভ্রর দেখা পেল ওরা। আমিনা চুমোয় চুমোয় ছেলের মুখ ভরিয়ে দিল। শুভ্রকে সুস্থ দেখে আলো কান্না করতে করতেই হাসল। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে অথচ ঠোঁটে হাসি।
আমিনা জিজ্ঞেস করল,

-“কীভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে শুভ্র?”

আমিনার কথার উত্তর দেওয়ার আগেই পুলিশ অফিসার এলো।

-“আপনার সাথে কিছু কথা ছিল মিস্টার শুভ্র।”

-“জি বলুন।”

-“গাড়ি কে চালাচ্ছিল?”

-“আমি।”

-“উনি আপনার সাথে কী করছিলেন? মানে উনার সাথে আপনার সম্পর্ক কী?”

-“আমি উনাকে চিনি। কোন সম্পর্ক নেই। উনি একবার অ্যাক্সিডেন্ট করে আমার কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। আজ সন্ধ্যায় উনি আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল। কাল আমার বিয়ে তাই উনাকে ছাড়িনি। আমাদের বাসায় থাকতে বলেছিলাম আজ। উনিও রাজি হয়ে গেলেন। আর যাবার সময়ই অ্যাক্সিডেন্টটা হলো। পেছন থেকে একটা গাড়ি ইচ্ছে করেই যেন ধাক্কা দিল।”

আলো, আমিনা ওদের কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। পুলিশ অফিসার গম্ভীর মুখে বললেন,

-“কিছুক্ষণ আগে উনার মৃত্যু হয়েছে। উনাকে বাঁচানো যায়নি। উনার পরিবারকে ইনফর্ম করতে হবে। উনার এড্রেস আপনার কাছে আছে? বা উনার পরিবারের কাউকে চিনেন আপনি?”

দীপ্ত মারা গেছে! আলোর বিশ্বাস হচ্ছে না। দীপ্ত নামের শয়তানের ছায়া ওর জীবন থেকে সারাজীবনের জন্য সরে গেছে! তবুও দীপ্তর মৃত্যুতে আলোর কষ্ট হলো। আলো কখনও চায়নি দীপ্ত এভাবে মারা যাক। দীপ্ত খারাপ মানুষ ছিল। তাই বলে আলো কারো মৃত্যু চাইতে পারে না। কারো মৃত্যুর খবর শুনে খুশিও হতে পারে না।

শুভ্রর ডান পা ভেঙে গেছে। অনেকদিন বিছানায় পড়ে থাকতে হবে। হাঁটতে চলতে পারবে না। হাতে মুখেও অনেক জায়গায় ছড়ে গেছে। কপালে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। ভাগ্যের গুণে মৃত্যুর হাত ফসকে জান নিয়ে বেঁচে এসেছে সে। আলো শুভ্রর পাশে বসে থমথমে মুখে বলল,

-“আমার বর কি এখন বিয়ের দিন হুইলচেয়ার চলবে? নাকি লাঠি ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটবে? না, না খোঁড়ো এই ছেলেকে আমি বিয়ে করব না। বিয়ে ক্যান্সেল।”

শুভ্র আলোর হাত চেপে ধরল। ওর ফোলা চোখ দেখে মৃদু হাসল। কাছে টেনে এনে ফিসফিসিয়ে বলল,

-“বিয়ে ক্যান্সেল বললে মেরেই ফেলব। অনেক কষ্টের পর রাজি করাতে পেরেছি। এত সহজে তোমাকে ছাড়ছি না আমি। সারাজীবন এই খোঁড়ো বরের বোঝা বইতে হবে।”

আলো হাসছে। শুভ্র আলোর চুলে নাক ঘষে বলল,

-“বর খোঁড়ো বলেই এতক্ষণ কেঁদেকেটে সাগর বানাচ্ছিলে! নাকি বরের জন্য ভালোবাসা থেকে চোখে জল আসছিল? কাল বিয়ে। আজ তো ভালোবাসার কথা বলতেই পারো। কত ব্যথা পেয়েছি দেখো। তোমার মুখে ভালোবাসার কথা শুনলে ব্যথা দূর হয়ে যাবে। হতে পারে আজ রাতের মধ্যেই সুস্থও হয়ে উঠতে পারি। বলো না আলো। একবার বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো। তোমার মুখে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য আমার মন প্রাণ কান ব্যাকুল হয়ে আছে।”

আলো শুভ্রর মাথার ব্যান্ডেজে ছুয়ে দিলে শুভ্র ব্যথায় কাতর শব্দ করল। আলো হেসে ফেলল।

-“কাল যখন বকুল বলব। তখনই বুঝে যাবে আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। আজ রাতটা নাহয় অপেক্ষা করলে ডাক্তার বাবু।”

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here