দশটা লেখকের নাম একটা কাগজে টুকে নেবার পর মনে হলো, আমি কেন কষ্ট করে লাইব্রেরি ঘুরছি? ইন্টারনেটে খুঁজলেই তে পাওয়া যাবে বাকি দশটা লেখকের নাম! যেই ভাবা সেই কাজ। সার্চ দিয়ে দেখি লেখকের সংখ্যা শত শত। শুধু বাংলা ভাষার এত লেখক আছে কে জানত! এদের মধ্যে শতকরা দশ ভাগকে চিনলেও বর্তে যেতাম। আচ্ছা আফ্রিতা কি সবাইকে চেনে? সে চিনুক বা না চিনুক, আপাতত এখান থেকে দশটা লেখকের নাম নিয়ে সেগুলো মুখস্থ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় আজকের মধ্যেই করতে পারলে।
ডিপার্টমেন্টের করিডোর দিয়ে হাঁটছি, হঠাৎ দেখা জুবায়েরের সাথে। জুবায়ের আমার জুনিয়র। ছেলেটা কবিতা লেখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য সংঘের সদস্য। প্রায়ই সভার আয়োজন করে, সেখানে কবিতা আবৃত্তি, গান, গল্প পড়া ইত্যাদি হয়। এই ছেলেই বেশিরভাগ সময় সেসবের আয়োজন করে। আমাকে একবার জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। গিয়ে প্রচন্ড বিরক্ত হয়েছিলাম। একেকজন ব্যর্থ প্রেমিক হৃদয়ের বেদনা কাব্যের আকারে প্রকাশ করতে গিয়ে পাতার পর পাতা লিখে মহাকাব্য বানিয়ে ফেলেছে। সেই মহাকাব্য পাঠের আসরে সবাই বসে মুগ্ধ হয়ে শুনছে। সেদিনের পর আর ওমুখো হইনি। আজ জুবায়েরকে দেখে প্রশ্নটা মাথায় এলো, আফ্রিতা কি ওদের সংঘের সদস্য?
আমি ডাক দিলাম ওকে, “জুবায়ের শোন!”
“জি ভাই বলেন।” বেশ বিনীত ভঙ্গিতে এগিয়ে এলো জুবায়ের। এই ছেলের আদব কায়দা দেখবার মতো। কথা শুনলে মনে হয় পৃথিবীর সব বিনয় ঢেকে তাকে বানানো হয়েছে।
“তোদের সাহিত্য সংঘে কি ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের আফ্রিতা আছে?”
জুবায়ের একগাল হেসে বলল, “জি ভাই। আফ্রিতা আপু তো খুবই সক্রিয় সদস্য। যদিও তিনি নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারেন না, অনেক পড়াশুনা করেন তো! তবে অবসর থাকলে সময়মতো পৌঁছে যান।”
“ও কি কবিতা লেখে?”
“জি না ভাই। উনি শুধু শোনেন। মাঝেমধ্যে আমাদের গাইড করেন, সমালোচনা করেন। অবশ্য আকিব ভাই থাকলে ভিন্ন কথা। আকিব ভাই এর কবিতা আফ্রিতা আপু খুবই পছন্দ করেন। তিনি যদি আবৃত্তি করতে বলেন তাহলে আপু না করতে পারেন না।”
“আকিব ভাইটা কে?”
“ভাই আপনি চেনেন না? আকিব ভাই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র। মাস্টার্সে পড়ে। তিনি তো খুবই জনপ্রিয়।”
“জনপ্রিয়তার কারণ কী?”
“তার চুল।”
“মানে?” এই মুহূর্তে নিজের মুখ আয়নায় না দেখলেও আমি জানি আমার মুখের প্রতিটা পেশি কুঁচকে গেছে বিরক্তিতে। প্রেম শুরু না হতেই বাগড়া! তাও নাকি কোন জনপ্রিয় আকিব ভাই! অসহ্য দুনিয়া! আর এই দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি হতভাগ্য মানুষটি হলো মাসুদ রানা।
জুবায়ের হাসি হাসি মুখে বলল, “আকিব ভাইয়ের বাবরি চুল। একেবারে কাজী নজরুল ইসলামের মতো। সেই বাবরি চুল দুলিয়ে যখন গান গায়, কী যে সুন্দর লাগে! তার আবার মেয়ে ভক্ত বেশি।”
আমি বিরক্তিতে আরও বেশি কুঁচকে গিয়ে বললাম, “ওহ আচ্ছা। যা তাহলে।”
জুবায়ের দুই হাত কচলে আরও বিনীত ভঙ্গিতে বলল, “ভাই কি সাহিত্য সংঘে যোগ দেবেন নাকি?”
“নাহ।”
জুবায়ের চলে গেল কাচুমাচু মুখ করে। সে হয়তো ভেবেছে আমি তার ওপর বিরক্ত। এই ছেলে ঘুরে একটু পর আবার আসবে। আমি তার ওপর রাগ কি না সেটা জিজ্ঞেস করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলবে!
যাহোক, সেদিন আকিব ভাইয়ের কথা শোনার পর মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়ায় আর নাম মুখস্থ হয়নি। বাসায় গিয়ে অবশ্য রাগ পড়ে গেল। দেখি গরুর মাংস আর খিচুড়ি রান্না হয়েছে। সাথে ইলিশ মাছ ভাজাও আছে। আব্বা কোথা থেকে এই বৃষ্টির মধ্যে পদ্মার ইঁলিশ পেয়েছেন তার গল্প করতে করতে খাওয়া শেষ করলেন। আমি এর মাঝে কখন যেন আকিব ভাইয়ের কথা ভুলে গেছি। আফ্রিতার কথা কিন্তু ভুলিনি!
পরদিন ইউনিভার্সিটিতে ঢুকেই আফ্রিতাকে খুঁজে বের করলাম। সে বলল, “মুখস্থ হয়েছে ঠিকঠাক?”
আমি বললাম, “হ্যাঁ।”
“আচ্ছা বলতে থাক। বিশটা নাম বলবি গুনে গুনে।”
আমি বলতে শুরু করলাম। প্রথমগুলো ঠিক ছিল, কিন্তু পরের নামগুলো শুনে আফ্রিতা কিছুক্ষণ হা করে আমার দিকে চেয়ে থেকে বলল, “ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, শিতালং শাহ এসব নাম কোথায় পেয়েছিস?”
আমি হেসে বললাম, “আমি এসব আগে থেকেই জানতাম, গতকাল বলিনি ইচ্ছে করে।”
আফ্রিতা ভুরু ওপরে তুলে বলল, “ওহ আচ্ছা! বেশ! তাহলে এবার সমূদ্র গুপ্তের কিছু সাহিত্যকর্মের নাম বল।”
আমার মুখ চুপসে গেল। এ তো প্রশ্নের ভান্ডার। কেন বড় গলায় বলতে গেলাম আগে থেকে চিনি! ধুর! আমি আবার সার্চ দিয়ে পাওয়া লেখকদের নামের মধ্যে থেকে সবচেয়ে ইউনিক নামগুলো খুঁজে বের করেছি। মনে হচ্ছে আফ্রিতা এদের নাম শোনেনি। উল্টোপাল্টা বললে কি ধরতে পারবে?
“কিরে বল?”
আমি মুখটা হাসি হাসি করে বললাম, “বিষাদের নৌকো।”
আফ্রিতা দুই কাঁধ উঁচু করে বলল, “তুই তো দেখি আমার চেয়েও বেশি জানিস, আমি তো বাপু এত লেখকের কথা জানি না! আমার কাছে এসে তাহলে কী লাভ? নিজে নিজেই পড়গে!” বলে উল্টোদিকে ঘুরে ক্লাসের দিকে রওনা দিল।
আমি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর ধীর পায়ে ফেরার সময় মনে হলো এই মেয়ের সামনে বেশি ভদ্র সেজে থাকতে গেলে সে আমাকে এক হাটে বেঁচে অন্য হাট থেকে কিনে আনবে অনায়েসে। কিন্তু তা হতে দেয়া যাবে না৷ একে হাত করতে হবে বুদ্ধি দিয়ে।
কবি শ্রেণীর জনপ্রিয় লোক, বিশেষ করে মেয়ে মহলে যারা জনপ্রিয় তাদের ভাবভঙ্গি যে রাষ্ট্রপতির কাছাকাছি এই ব্যাপারটা জানলাম আকিব ভাইয়ের সাথে দেখা করতে গিয়ে। দেখা করে ফেলাটা একেবারেই ঝোঁকের বসে। হুট করে মনে হলো লোকটাকে দেখে আসা যাক, কোন পুকুরের মাছ যে আফ্রিতার মতো মেয়েকে দিয়ে কবিতা আবৃত্তি করিয়ে ফেলে!
তার সাথে দেখা করতে হলো হলে গিয়ে। সেখানে গিয়ে প্রথমবার এটাও জানতে পারলাম সে রাজনীতি করে, ছাত্রনেতা। তার কথা জিজ্ঞেস করতেই একেকজন অদ্ভূতভাবে চাইল। এক চ্যাংড়ামতো ছোকড়া আমাকে নিয়ে গিয়ে টিভি রুমের চেয়ারে বসিয়ে আমার পরিচয়ের আদ্যেপান্ত জেনে নিল। তারপর আকিব ভাইকে ফোন করে জানতে চাইল আমাকে তার ঘরে পাঠানো যাবে কি না। আকিব ভাই অনুমতি দিলে তবে আমাকে নিয়ে গিয়ে দোতলার কোণার দিকের একটা ঘরের সামনে দাঁড় করিয়ে ছেলেটা চম্পট দিল। সিনিয়র বলে সালাম দিয়ে তার ঘরে ঢুকলাম। আকিব ভাই দেখি খালি গায়ে হাফপ্যান্ট পরে বিছানায় পা ছড়িয়ে বসে আছে। হাতে প্রমাণ সাইজের একটা ডায়েরি। তাতে বোধহয় কবিতা লিখছে। লোমে ভর্তি গা দেখে শিম্পাঞ্জির কথা মনে পড়ে গেল। চুলদাড়ি সব বড় বড়। হাতে কিন্তু তেমন লোম দেখতে পেলাম না। ট্রিম করে রাখে বোধহয়! তবে যত যাই হোক, কোনোভাবে এই লোকের চেহারা বা চুলের সাথে কাজী নজরুল ইসলামের দূর দূর পর্যন্ত মিল দেখতে পেলাম না।
আকিব ভাই লাল চোখ মেলে আমার দিকে চেয়ে প্রায় অস্পষ্ট স্বরে বলল, “এইখানে কী চাস?”
কথা শুনে মনে হলো সে বিশাল অফিসের হেড আর আমি সামান্য দারোয়ান। অবশ্য সিনিয়রদের এসব ভাবভঙ্গির সাথে আমরা ফার্স্ট ইয়ার থেকে মোটামুটি পরিচিত। চমকালাম না। আগে থেকে কী বলব ঠিক করে আসিনি বিধায় কথাও খুঁজে পেলাম না। আকিব ভাই আমার উত্তর না পেয়ে ডায়েরির দিকে মনোযোগ দিল। কাগজে কলম ঘষার ঘষঘষ শব্দ আসতে লাগল। আমি ঘুরে ঘুরে বিশৃঙ্খল ঘরের এলোমেলো জিনিস দেখতে লাগলাম। প্রায় মিনিট বিশেক পর আকিব ভাই উঠে দাঁড়াল। একটা ঘিয়া রঙের শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে নিল। মুখে হালকা মেনস ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি মেখে নিয়ে আমার কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে বলল, “চল ক্যান্টিনে যাই।”
আকিব ভাই আমাকে সত্যিকার অর্থেই জমিয়ে খাওয়ালো। মানে হলে যা পাওয়া যায় তার মধ্যেই। রুই মাছের পেটি, মুরগির মাংস, মুড়িঘণ্ট, ডালের বড়া আর কালোজিরার ভর্তা দিয়ে প্রায় তিন প্লেট ভাত সাবাড় করে ফেললাম। খাওয়ার সময় আবার আমার হুশ থাকে না। খেয়েদেয়ে মনে হলো আকিব ভাইয়ের মনটা সত্যি বিশাল। চেনে না জানে না, গেলাম আর খাইয়ে দিল? কিন্তু আকিব ভাইয়ের মন যদি আমার চেয়েও বড় হয় তবে? তাহলে কি আফ্রিতা তাকে ছেড়ে আমাকে পছন্দ করবে? তারচেয়ে বড় কথা আমি এসেছিলাম একপ্রকার দফারফা করতে, সেখানে কি না শত্রুর টাকায় খাচ্ছি! একটা ঢেকুর তুলে মন খারাপ করে বসে রইলাম৷ আকিব ভাই আমার দিকে ফিরেও তাকাল না। মোবাইলে ব্যস্ত।
অবশেষে আমার দিকে তাকিয়ে টাকা দিয়ে বলল, একটা দুই লিটারের সেভেন আপ কিনা নিয়া আয়।”
আমি কথামতো কাজ করলাম। সে বলল, “শোন, তোর কথা আমি জানি। আফ্রিতাকে প্রেমে ডুবাডুবি করতাছোছ তাই না?”
“ভাই আপনাকে কে বলল?” আমি অত্যাশ্চর্য হয়ে বললাম। কথাটা আমি কাউকে বলিনি। আফ্রিতাকে তো ভুলেও না। তবে?
আকিব ভাই দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলল, “জুবায়েরের কাছে তো তাই শুনলাম।”
অতি বিনয়ী লোকেরা যে অতি কিলিকবাজ হয় সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দিল জুবায়ের। মনে মনে ওর মুণ্ডুপাত করে বললাম, “আমি এমনি আফ্রিতার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি।”
“তাইলে আমার কাছে কী করোছ?”
“দেখা করতে আসলাম ভাই। জুবায়েরের কাছে আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি।”
আকিব ভাই দুই লিটার বোতলের অর্ধেক গিলে নিল প্রায় এক ঢোকে। ঝাঁঝওয়ালা তরল পানীর কেউ পানির মতো গিলতে পারে প্রথমবার দেখলাম৷ আকিব ভাইয়ের কোনো কর্মকাণ্ড প্রথমবারের মতো আমাকে একেবারে মুগ্ধ করে দিল। হা করে চেয়ে থাকতে দেখে বোতলটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “এটুকু খাইতে খাইতে যাইছ। এবার কথা শোন।”
আপনাআপনি আমার হাবভাবে গদগদ ভাব চলে এলো। বললাম, “বলেন ভাই।”
সে নিচু গলায় বলল, “সবাই মনে করে আফু আমার গার্লফ্রেন্ড। আসলে তা না। ওয় আমার আপন মামার মাইয়া। ক্যাম্পাসের কেউ ওইটা জানে না। তুইও কাউরে কবি না। ইচ্ছা কইরা আমরা ভাব ধইরা থাকি জানি আমগে মধ্যে কিছু আছে৷ আমার ডরে কেউ ওর কাছে আসে না। এই প্রথমবার দেখলাম তুই খালি আশেপাশে ঘুরোছ নাই, আমার কাছে পর্যন্ত আইসা পড়ছোছ। তুই কী জিনিস ওইটা এখনো ভালোমতো বুঝি নাই। হয় বলদ আর নয়তো বিরাট সাহসী। যেইটাই হছ, আমার আফুর লাইগা তোরে পছন্দ হইছে। যা পারলে প্রেম কর।”
আমি অতি আনন্দে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম৷ নড়ার শক্তি রইল না। মনে হলো নড়লে ঘুম ভাঙবে আর চলমান স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটবে।
এবার আকিব ভাই আরো নিচু গলায় বলল, “আফুও মনে হয় তোরে একটু আধটু পছন্দ করতেও পারে। এমনিতে ওর পিছনে কেউ ঘুরলে লগে লগে কইয়া দেয় আমারে। কিন্তু তোর কথা কিছু রিপোর্ট দেয় নাই।”
আমি এতক্ষণে মুখ খুললাম, “ভাই যা বললেন সত্যি?”
আকিব ভাই উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “আমার কথা শ্যাষ। একটা কথা মনে রাখিছ, সুযোগ দিলাম, কিন্তু বেশি তেড়িবেড়ি করলে ভুড়ি ফাঁসায় দিমু এক্কেবারে৷”
“আচ্ছা ভাই।”
আকিব ভাই এমনভাবে চলে গেল যেন আমি ছেঁড়া কার্পেটের একটা উঠে যাওয়া সুতো। একবার ভুরু কুঁচকে দেখে গটগট করে বেরিয়ে গেল।
আমি অবশ্য কিছু মনে করলাম না। আনন্দে নাচতে নাচতে পৌঁছে গেলাম ইংরেজি ডিপার্টমেন্টে। তখন লাঞ্চের পর ক্লাস শুরু হওয়ার তোড়জোড় চলছে। আফ্রিতা কয়েকটা ফটোকপি করা কাগজ সাজিয়ে স্টেপল করে পাশে দাঁড়ানো মেয়েটাকে গুছিয়ে দিচ্ছে। আমি ওর কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সে আমাকে দেখেছে আগেই। এবার এগিয়ে এসে বলল, ” মাসুদ রানা! এবার কী দরকার?”
“তোমার সাথে একটু কথা ছিল।”
“কী কথা?”
“এখন তো তুমি ক্লাস করবা তাই বলা যাবে না সবটা। ফোন নাম্বারটা দিবা তোমার?”
“তুই হঠাৎ আমাকে তুমি বলছিস কেন? ঘটনা কী? আর আমি কাউকে নাম্বার টাম্বার দেই না।”
“ওহ।”
“তুই সারাদিন টইটই করিস কেন? যখনই দেখি তখনই চরকির মতো ঘুরছিস আর খাচ্ছিস?”
আমি খানিক লজ্জা পেলাম। গলা দিয়ে উঠে আসা ঢেকুরটাও কোনোমতে আটকে নিলাম৷ আফ্রিতা বলল, “আমার সাথে প্রেম করার ইচ্ছা থাকলে কেটে পড়। আমার তোকে পছন্দ না।”
“সত্যি পছন্দ না?”
“না।”
“কেন?”
“কারণ তুই একটা প্রথম শ্রেণির গাধা।”
আমি রেগে গিয়ে বললাম, “তুই এটা বলতে পারলি আফ্রিতা?”
আফ্রিতা কাছে এসে বলল, “তুই যে গাধা তার একশোটা প্রমাণ দিতে পারি। একটা বলি, তুই আমাকে তুই বা তুমি কোনোটাই জোর দিয়ে বলতে পারছিস না। তোর পার্সোনালিটি একেবারেই নিচের স্তরের। এবার তুই আমাকে শুধু একটা প্রমাণ দেখা যে তুই চালাক।”
আমি চালাকির কী প্রমাণ দেখাব সেটা বহু ভেবেও পেলাম না। আফ্রিতা ততক্ষণে ক্লাসে ঢুকে গেছে।
(চলবে)
#একটি_জটিল_প্রেমের_গল্প
ভাগ-৪
সুমাইয়া আমান নিতু
(