একটি নির্জন প্রহর চাই পর্ব -১৯

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
১৯
#Writer_Mousumi_Akter.
ঝুম বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছি।চারিদিকে ঢল নেমেছে।রাস্তায় ভ্যান,রিক্সা,অটো কোনো কিছুরই দেখা মিলছে না।মাথার উপরে ধরে রাখা ছাতাটির উপর ঝুমুর ঝুমুর করে নৃত্যে মেতেছে বৃষ্টিকণা।পায়ের নিচ থেকে হাঁটু অবধি ভিজে গিয়েছে বৃষ্টির পানিতে।ছাতায় বাঁধ মানছেনা।সাইড ব্যাগ টা কোনোরকম ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছি।মনটা বড্ড অস্থির হয়ে আছে।তন্ময় আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।ওর কোনো কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারব না।ভ্যান-গাড়ির জন্য অপেক্ষা না করে হাঁটা শুরু করলাম।মন দৌড়ালে কি কখনো পথ ফুরায়!আধাঘন্টা হাঁটার পরে একটা অটোর দেখা পেলাম।অটোওয়ালাকে হাত ইশারা করতেই থেমে গেল।জিজ্ঞেস করলাম,
‘সিটি হসপিটালে যাবেন?’
অটোওয়ালা বলল, ‘না আমি বাজার নিতে এসেছিলাম।আজ আর ভাড়া টানব না।বাসায় গিয়ে ঘুমাব।’
আধাঘন্টা পরে আর একটা অটো পেয়েছি। এখানেও হতাশ হলাম।কিন্তু এনাকে কোনো ভাবেই ছাড়া যাবেনা।এই অটো টা ধরতেই হবে।খুব কাকুতি মিনতি করে বললাম,
‘মামা আমার বন্ধু সু*ই*সা*ই*ড করেছে। অবস্থা খুব একটা ভালো না। ইমারজেন্সি হসপিটালে পৌঁছাতে হবে আমাকে, প্লিজ চলুন।’
‘না, না ওইদিকে এখন যাব না।তাছাড়া আর প্যাসেঞ্জার ও পাওয়া যাবে না।’
‘মামা আপনার ভাড়া তো ত্রিশ টাকা।আমি আপনাকে ২০০ টাকা দিবো,প্লিজ চলুন।’
‘আচ্ছা ওঠেন।’
ঘন্টা খানিক এর মাঝে ভিজে নেয়ে উপস্থিত হলাম সিটি হসপিটালে।
হসপিটালের করিডরে দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপ।দ্বীপকে ভীষণ ব্যাস্ত দেখাচ্ছে।হাতে প্রেসক্রিপশন।রিসেপশনে কথা বলছে।দ্বীপ আমাকে দেখেই চিন্তিত কন্ঠে বলল, ‘সারাহ এসেছিস তুই?’
হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম, ‘তন্ময় কই দ্বীপ,কী অবস্থা ওর?’
‘দো’তলায় আছে। জ্ঞান ফেরেনি এখনো।আমি স্যালাইন নিয়ে আসছি।যা তুই।’
আমি ব্যাস্ততার সাথে দো’তলায় উঠলাম।খুব দ্রুত বেগে উঠার ফলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
আমাকে দেখেই মৃন্ময় ডাক দিল, ‘সারাহ এদিকে আয়।’
তন্ময় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে।স্যালাইন চলছে।ফর্সা গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে তন্ময়কে সব সময় সুন্দর লাগে।মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে আছে আজ!
মৃন্ময়কে বললাম, ‘ডাক্তার কী বলেছে?’
বলল আর একটু পরে আনলে কী হতো ঠিক নেই।
‘তন্ময়ের বাড়িতে জানিয়েছিস?’
‘ওর মা অসুস্থ।আর কেউ নেই।শৈশবকালে বাবা ও মা*রা গিয়েছে।একমাত্র ছেলের এমন খবর শুনলে আন্টির কী অবস্থা হবে এটা ভেবে বলিনি।তাতে আবার হাই প্রেসারের রোগী।’
‘তন্ময় কি পা* গ * ল হয়ে গিয়েছে মৃন্ময়? এমন একটা ভুল কীভাবে করল?যদি কিছু হয়ে যেত!’
‘সারাহ!আমি আর দ্বীপ জানি তন্ময় ছোঁয়ার জন্য কত পা* গ* ল।মেসের ওয়াল জুড়ে ছোঁয়ার নাম লেখা।ওয়াল জুড়ে ছোঁয়ার ছবি টাঙানো।ছোঁয়াকে দেখার জন্য রাত নেই দিন নেই ছুটে গিয়েছে ছোঁয়ার বাসার সামনে।সারা মাস পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে টাকা বাঁচিয়েছে ছোঁয়ার সাথে একটু রিক্সায় চড়ার জন্য,ছোঁয়ার পছন্দের চকলেট, আইসক্রিম খাওয়ানোর জন্য।ছোঁয়া ধনী পরিবারের মেয়ে। গাড়িতে চড়তে ওর ভাল লাগেনা আর।রিক্সায় চড়তে পছন্দ করে।আর জানিসই তো রেগুলার রিক্সায় যাতায়াত তন্ময়ের মত ছেলের জন্য কতটা টাফ।তন্ময় রোজ দুই কিঃমিঃ হেঁটে যাওয়া আসা করে। যাতায়াত ভাড়া বাঁচিয়ে ছোঁয়াকে এটা সেটা গিফট দিয়েছে।ছোঁয়া কি জানে তন্ময়ের দু’পায়ে কতশত ব্যাথা জমেছে হাঁটতে হাঁটতে!ছোঁয়া অনেক বার আপত্তি জানিয়েছে এসব গিফট নিতে;কিন্তু তন্ময়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে।মাস শেষে তন্ময়ের হাতে টাকা থাকেনা।একটা শার্ট, টি-শার্ট কতদিন ইউজ করে তার হিসাব নেই।টিউশন থেকে টাকা জমিয়ে মায়ের জন্য টাকা পাঠাতে হয়,নিজের লেখাপড়া। তন্ময় জীবন-যুদ্ধে লড়াই করা একজন বীর।ছোঁয়াটা যে কবে বুঝবে!সিজিপিএ তে তন্ময় ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট।আমরা জানি তন্ময় একদিন সবার মুখ উজ্জ্বল করবে। ‘

আমি একটা টুল টেনে তন্ময়ের পাশে বসলাম।আমরা বন্ধুদের যেমন সব থেকে পঁচাতে বেশি ভালবাসি,তেমনি বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসি।তন্ময়কে দেখে আমি সহ্য করতে পারছিনা।কাঁন্না আটকাতে কষ্ট হচ্ছে,ঠোঁট অনবরত কাঁপছে। তন্ময়ের হাতের উপর হাত রেখে বললাম,

‘তন্ময় তুই মৃন্ময় আর দ্বীপ সারাজীবন আমাকে আর ছোঁয়াকে আগলে রেখেছিস,শাসন করেছিস আবার ফানও করেছিস,গা**লি দিয়েছিস।আমাদের কত শত স্মৃতি বিজড়িত মুহূর্ত।আমরা কেউ কাউকে ছেড়ে থাকার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনা।তোর কিছু হলে আমাদের কী হতো?এমন কেনো করলি বল?এত সহজে হেরে যাবি,তুই না ছেলে মানুষ? ছেলেদের এত সহজে ভেঙে পড়তে নেই।”সব ভালো যারা শেষ ভাল তার”।কেনো আমাকে একটু সময় দিলি না তন্ময় সবটা গুছিয়ে দেওয়ার জন্য?আমি তোকে সবটা গুছিয়ে দিতাম।’

দ্বীপ নিচ থেকে ব্যাস্ততার সহিত উঠে এসে মৃন্ময় কে বলল,

‘নার্স কে ডেকে নিয়ে আয়।’

দ্বীপ এর চোখে মুখে চরম বিরক্তি,আর রাগ। কপালে ঘামের বিন্দু বিন্দু ফোঁটা জমেছে।আঙুল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে আমার দিকে তাকাল।চোখে অগ্নিরূপ।অগ্নিকন্ঠেই বলল,

‘সারাহ! তোরা মাইয়ারা এক একটা কা**ল না**গি**নী।একটা পোলারে এমনে ছো*ব*ল মারিস সোজা কাল ছো*ব*ল।আর এমন বি*ষ ঢেলে দিস একটা পোলা আজীবন জ্বলতে থাকে।’

‘তোরা ছো*ব*ল নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসিস কেনো?’

‘কী জানি! আল্লাহ কী এমন বিশেষ পাওয়ার তোদের মাঝে দিয়ে দিছে।পুরুষ আজীবন ধ্বংস হয় এই মাইয়াগো জন্য।’
মৃন্ময় নিরবতা ভেঙে বলল,

‘ছোঁয়া যে ক্যান তন্ময় রে বোঝেনা!’

দ্বীপ আরো বেশি বিরক্ত হয়ে বলল,

”আচ্ছা ছোঁয়া ওশানের মাঝে কী পাইছে?ক্যামনে ভালোবাসার ফিল পায়?ওইটারে দেখতেই তো আমার কাছে কেমন লুইচ্চা লুইচ্চা লাগে।আমি সিরিয়াসলি বলছি সারাহ ছোঁয়াকে থা* প্রা** মু। ওই শা**লী*র জন্য তন্ময় কষ্ট পাচ্ছে।’

‘ছোঁয়াকে খবর দিয়েছিস?’

‘মৃন্ময় দিয়েছে।আমিতো না করছিলাম।’

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে বললাম,

‘দ্বীপ তন্ময় কে আমরা সামলাতে পারব।কিন্তু ছোঁয়াকে কীভাবে সামলাবো?অনেক কিছু বলার আছে তোদের।তন্ময়ের আর কতটুকু মন ভেঙেছে,তন্ময়ের ছিল
একপাক্ষিক ভালবাসা।যেখানে তন্ময়ের কোনো এক্সপেকটেশন ছিল না।ছোঁয়ার মুখের মিষ্টি কোনো প্রেমের বাণী ও তন্ময় শোনেনি।তন্ময় কে ছোঁয়া কোনো স্বপ্ন ও দেখায় নি।কিন্তু ছোঁয়ার ব্যাপার টা ভিন্ন।ও ওশানের সাথে রিলেশন এ আছে।দুজন দুজন কে ভালবাসে।সেখানে যদি ছোঁয়ার মন ভাঙে কীভাবে সহ্য করবে?’আমার তো ছোঁ**য়া কে নিয়ে ভয় হচ্ছে বেশি!ছোঁয়াকে কি বাঁচাতে পারব!’

দ্বীপ আর মৃন্ময় এক সাথে জিজ্ঞেস করল,

‘কেনো রে?’

‘ছোঁয়ার পুরো জীবন টা এলোমেলো হয়ে যাবে। মন ভাঙার কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।যেটা সামলানো খুব একটা সহজ হবেনা ছোঁয়ার পক্ষে।’

মৃন্ময় উত্তেজিত হয়ে বলল,

‘আচ্ছা খোলাসা করে বলবি?’

ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বললাম,

‘ওশান ম্যারেড! ‘

মৃন্ময় আর দ্বীপ দু’জনেই যেন আকাশ থেকে পড়ল।ভীষণ ভাবে চমকে গেল।যেমন টা প্রথমে আমি হয়েছিলাম।ওরা দু’জনেই বলল,

‘হোয়াট?’

‘হ্যাঁ! আমি ঠিকই বলছি।’

দ্বীপ বলল,

‘তুই শিওর সারাহ?’

‘আমি শিওর না হয়ে একথা কেনো বলব?’

‘তাহলে কি ওই শা*লা*র পুত ছোঁয়াকে ঠকালো?দেখে তো মনে হয় ছোঁয়াকে মারাত্মক ভালবাসে।তাহলে কেমনে কী?’

মৃন্ময় বলল,

‘আল্লাহ বাঁচা গেলো!তন্ময় এর রাস্তা এবার ক্লিয়ার।ভাই ওঠ ম*রা*র আগে গুড নিউজ টা শোন।আপাতত মরিস না।আমরা ফর্ম ফিল আপের ঝামেলায় আছি।ফ্রি হয়ে নেই দেন ম*রি*স।আর না ম* র* লে*ও চলবে আপাতত। ছোঁয়ার রাস্তা ক্লিয়ার।
দ্বীপ বলল,

‘শা**লা* মাদারবোর্ড তাহলে বিয়ে করবে না ফাউ ফাউ টাইম পাস করছিল?

আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,

‘না না বিয়ে করবে।বিয়ে করবে না ব্যাপার টা এমন নয়।ওশান এর ওয়াইফ কে ওশানের পছন্দ নয়।’

মৃন্ময় বলল, ‘তাহলে ওর বউ আমারে দিয়ে দিক।আমার আবার মন ভাঙা মেয়ে ভালো লাগে।এরা ভালবাসাহীনতায় ভুগে তাই কারো ভালবাসা পাইলে উজাড় করে ভালবাসে।দীর্ঘদিন এমন মাইয়া খুঁজতেছি।আমি ভাঙা মন জোড়া দিয়ে নেব।’

‘অলওয়েজ ফান করিস না মৃন্ময়?’

দ্বীপ মৃন্ময় কে চাটি মেরে বলল,

ঃসিরিয়াস ব্যাপারে ফান করিস না।
সারাহ তাহলে কি ওশানের ছোঁয়ার গাড়ি,বাড়ি দেখে মাথা ঠিক নেই?’

‘হ্যাঁ এটাও একটা কারণ কিন্তু।
কিন্তু ছোঁয়া এটা মেনে নিবে কীভাবে?’

‘কেনো মেনে নিবেনা?তন্ময়ের সাথে বিয়ে করায় দিবো।আমরা আছিনা ওরে মানিয়ে নেওয়ার জন্য।’

এরই মাঝে ছোঁয়া ও ভিজে নেয়ে একাকার হয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে উপস্থিত হলো।আমার আর দ্বীপের আলোচনা থামাতে মৃন্ময় বলল,

‘সারাহ, ছোঁয়া এসেছে।’

তিনজনেই ছোঁয়ার দিকে তাকালাম।ছোঁয়া আমাদের তিনজনের দিকে একবার তাকিয়ে তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে রাগে কটমট করে বলল,

‘আচ্ছা এরে জু** তা দিয়ে পিটাতে হয়না বল?ওরে টেনে তোল আগে।আমি আগে ওরে জু**তা দিবো।তারপর ও মরবে।না মানে আমি রাগ করে বলেছি যে তোর সাথে রিলেশন নেই আমার আর ও সু**ই**সা**ই**ড করবে?মানে কি ফাইজলামি পাইছে?আমার প্রেসার বাড়ায় দিছে।রিলেশন না হয় করিনা ;তাই বলে কি আমি ওরে ভালবাসিনা?ও আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।’

ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে মলিন কন্ঠে বললাম,

‘তুই বা বলিস কেনো?তুই জানিস না ও কত উইক তোর প্রতি?’

‘ও কেনো উইক হবে?উই আর বেষ্ট ফ্রেন্ড।আমার এমন কোনো ফিল আসেনা ওর প্রতি।আমার যদি এক সেকেন্ডের জন্যও তন্ময়ের প্রতি ফিল আসতো তাহলে আমি ওশান কে ছেড়ে দিতাম সাথে সাথে।ওশানের প্রতি আমার যত অনুভূতি তা কাউকে বুঝাতে পারব না।তাছাড়া তন্ময়কে তো কত মেয়ে ভালবাসে।যে ওকে ভালবাসে না কেনো তার পিছে পড়ে আছে?’

‘প্রিন্সেস ডায়নার একটা উক্তি মনে পড়ে গেল ছোঁয়া, “আমি যাকে ভালবেসেছিলাম সে বাদে সারা বিশ্ব আমাকে ভালবেসেছিলো।”এ টাইপ কিছু একটা ছিল মেইবি।’

দ্বীপ বলল, ‘তন্ময় এর কথা বাদ দে সারাহ।কোনো ভনিতা না করে ছোঁয়াকে ডিরেক্ট বল ওশানের ব্যাপার টা।’

‘কী বলবে?’

‘তুই এত বোকা কেনো ছোঁয়া।শুধু ওশানের মিষ্টি কথা ই শুনে গেলি।ওর আড়ালের রুপ টের ও পেলিনা।’

‘কী টের পাব?কী বলছিস সারাহ?
ওশান ম্যারিড ছোঁয়া।’

ছোঁয়া হেসে বলল, ‘ওশান আমাকে বলেছিল তুই আমাকে পরীক্ষা করতে এসব বলবি।আমি যেন মন খারাপ না করি।’

দ্বীপ বলল, ‘বাহ!নাইস অভিনয়।ছোঁয়াকে আয়ত্তে রাখতে আগেই বলে রেখেছে।’

‘আমি যেন কষ্ট না পায় এইজন্য বলেছে।’

মৃন্ময় বলল, ‘বাহ!ট্রু ল্যাব।ওশান কে পাইলে পাব্লিক প্লেসে জু** তা দিতাম।’

‘মৃন্ময় ফান কর বাট প্লিজ ওকে অসম্মান করিস না।’

‘তোর রুচি এত জঘন্য এক পোলার বাপরে পছন্দ করলি?’

‘বেশি বেশি বলছিস এবার!’

আমি বললাম, ‘ও ঠিকই বলেছে।আর আমরা কেউ ফান করছি না।ওশান ম্যারেড ছোঁয়া।’

‘সবাই মিলে কী পাইছিস তোরা?প্লান করে ওশানের নামে বদনাম করে আমাকে তন্ময় এর ঘাড়ে ওঠাতে চাইছিস?’

আমি খেয়াল করলাম, ‘ছোঁয়ার শরীর কাঁপছে।ও মুখে যাই বলুক ভেতরে ভেতরে টেনশন করছে।ভূমিকম্পনের মত ঘুরছে ছোঁয়ার চারিপাশ;কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেনা।’

দ্বীপ বলল, ‘দেখ ছোঁয়া তন্ময় এর সাব্জেক্ট বাদ।আমরা সত্য বলছি। ‘

‘সত্য! প্রুভ কী?’

‘প্রুভ দেখালে কী করবি?ওশান কে ছেড়ে দিতে পারবি?নাকি ওই ল*ম্প*ট এর সাথেই থাকার সিদ্ধান্ত নিবি?’

‘প্রুভ দেখা প্লিজ।আমি আর নিতে পারছিনা।’

‘প্রুভ দেখালে কী করবি?ওশান কে গা*লি*গা*লা*জ করবি?দেন ওশান বিভিন্ন কারণ দেখাবে আর তুই ভালবাসার জন্য মাফ করে দিবি?’

‘প্লিজ দ্বীপ!আমি আর সহ্য করতে পারছি না।এমন কিছু হলে আমি ওশান কে জীবনের মত শিক্ষা দিয়ে ছাড়ব।আমি ওই রকম প্রেমিকা নই যে, অন্য কারো স্বামী কেড়ে নিবো।অন্তত তোরা আমাকে চিনিস।’

আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ছোঁয়ার চোখে মুখে কষ্ট।হৃদয় ভাঙার হাহাকার যন্ত্রণা। দুই ঠোঁট চেপে কাঁন্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে।

দ্বীপ আমাকে ইশারা দিয়ে বলল,

‘সারাহ! প্রুভ দেখা।’
চলবে?

(আজ এক্সাম ছিল,এজন্য গল্প দিতে লেইট হলো।সবাই রেসপন্স করবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here