একমুঠো সুপ্ত বাসনা পর্ব ৩৫+৩৬+৩৭

#একমুঠো_সুপ্ত_বাসনা
#সুপ্তি_আনাম
পর্বঃ ৩৫

চোখের পলকে নিমিষেই কেটে গিয়েছে সাত সাতটি দিন। আনজানাকে সারাদিন ব্যাপক প্রাইভেসির ভেতরে থাকতে হয়। তার ব্যাপারটা বাসার শিল্পীবানু পর্যন্ত জেনে গিয়েছে। কথাটা শোনার পর আনাজের বাবা আনুজ (নাম চেঞ্জড্) ঠিক থাকতে পারেননি। একই কথা আয়নারও। তাদের মতে এতো কিছু হয়ে গেলো তারা একবার জানানোর প্রয়োজনও বোধ করলো না? আনুজ তিন দিন কথাই বলতে পারেননি আনাজের সাথে। পরে সবার জোড়াজুড়িতে অভিমান কেটেছে। এখন আনজানাকে পদে পদে দেখে রাখা হচ্ছে। সিকিউরিটি গার্ড চেঞ্জ করা হয়েছে। আদ্রর ব্যাপারে এখনো কিছু বলতে পারেনি আনাজ। নতুবা আনুজ নিশ্চিত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবেন। এই কয়দিন ভার্সিটিতেও ক্লাসগুলো মিস্ করেছে আনজানা। রক্ত দেওয়ার পর ভীষণ রকমের দূর্বল হয়ে পড়েছিলো। তাই মা আর যেতে দেননি। আদ্ররও কোনো খবর নেই কেনো জানি। ছেলেটা আর পাগলামো করে না? নাকি আনজানা তার খোঁজ নিচ্ছেনা বলেই জানতে পারছে না? বুঝতে পরছে না আনজানা। বিকালের সূর্যটা ডুবডুব। একটু একটু আলোর বিকিরণ চারপাশে। সময়টা বেশ লাগছে আনজানার কাছে। ব্যালকোনির ডিভানের পাশে বসে কফি এনজয় করছে। কানে হেডফোনে চালিয়ে দিয়েছে সফ্ট একটা গান। মাঝে মাঝে গুনগুন করে সুর মিলাচ্ছে। হুট করে কাউকে পেছনে উপলব্ধি করতেই পিছে তাকায়। দেখলো তার মা একবার পরখ করে চলে গিয়েছে। ‘স্ট্রেঞ্জ! আমাকে নিয়ে এতো মাতামাতি করার কি আছে? এতো সিকিউর করে রাখলে মুভ অন করবো কিভাবে? ’ মনে মনে বলে আনজানা। মনে মনে ভাবছে, ভাবিকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে গেলে কেমন হয়?
কথাটা মনে আসতেই হেডফোনটা খুলে চট করে উঠে পড়ে। ইয়ানাকে বলা দরকার। ইয়ানার রুমের কাছে যেয়ে দাড়িয়ে যায়। গেটটা ভিড়ানো। মনে হলো ইয়ানা কারো সাথে কথা বলছে। আর ডিস্টার্ব না করে ব্যালকোনিতে চলে যায় আনজানা।

———————-

এতোদিন পর সুহানা ফোন দেয়ায় জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে ইয়ানা। হাসাহাসি হচ্ছে তাদের মাঝে। ইতোমধ্যে বাসার সবার সাথে কথা বলে ফেলেছে ইয়ানা। বেশ প্রফুল্লচিত্তে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কথা বলছে।

–‘ তা ভালোই তো দিনকাল কাটছে তোর হুম?’
–‘হ্যা তা কাটছে। কিছুদিন আগে একটু ঝামেলা হয়েছিলো..’ (ইয়ানা)
–‘তাই নাকি। কি নিয়ে রে? ‘ (সুহানা)
–‘ওই আনজুকে নিয়ে। তেমন কিছু না বাদদে’
বিষয়টিতে আর যেতে চাইলো না ইয়ানা।

–‘তা সুসংবাদ কবে পাচ্ছি? ‘ (সুহানা)

–‘সুসংবাদ মানে? কিসের সুসংবাদ? (অবাকের সুরে)

–‘ এইযে নটাঙ্কি কা পাঠশালা আবার শুরু হয়ে গেলো। বলি আমাদের ইচ্ছাগুলোও তো একটু দেখবি নাকি? ‘

–‘শুন একদম ফাও কথা বলবি না। কি বোঝাতে চাচ্ছিস ঠিক করে বল না!’

–‘মানে ওই বলছিলাম আর কি এ জনমে আমি খালামণি টালামণি হতে পারবো নাকি….’

–‘বড্ড পেকে গেছিস না তুই? চুপচাপ পড়াশোনায় কনসেনট্রেশান কর!’

–‘শুরু হয়ে গেলো আফার সাতই মার্চের ভাষণ! বলি তুই গিনেস বুকে যেয়ে স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখালেই তো পারিস! আচ্ছা বাদদে, রাখছি। আর জামাই পায়ে তো ভুলেই গেছিস। আমাদের ছায়াও মাড়াস না। মাঝে মাঝে একটু দেখা করতে আসলে কি হয়?’

সুহানার কথায় মনটা কেমন করে উঠে ইয়ানার।

–‘তোদের আবার ভোলা যায় পাগল! মিসড্ ইউ অল। যাবো কয়েকদিনের মধ্যেই যাবো।’

–‘হু ঘটা করে যেনো ডাকতে না হয়। জিজুকে নিয়ো আসবি। জিজুর সাথে মজা করাটাও বাকি আছে ধুর! আচ্ছা ভালো থাকিস।’

–‘তোরাও খেয়াল রাখবি’
হাসতে হাসতে ফোন কেটে দেয় ইয়ানা। সুহানার সাথে কথা বললে মনটা ভালো হয়ে যায়। রসিকতার দিক থেকে মেয়েটা পাক্কা শেয়ানা!

ফোনটা চার্জে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ইয়ানা। ইয়ানাকে দেখা মাত্রই ছুটে আসে আনজানা।

—‘ভাবিইইইই! বলছিলাম যে চলো না কোথাও ঘরতে যাই?’

–‘এখন বলছো? বেলাই তো ফুরিয়ে গেলো!’

–‘তাহলে যাবা না? ‘
–‘তোমার কিছু নিডি নিতে আছে? ‘
–‘ওই ধরে নাও’ (আনজানা)

দুজনেই আয়নার দিকে তাকায় আয়নাও তাদের মুখের দিকে চেয়ে আছে। মুখে গম্ভীর গম্ভীর একটা ভাব বিদ্যমান।

–‘সপ্তাহ না যেতেই আবার বেড়িয়ে পরবি? ‘
আনজানার দিকে তাকাতেই মুড অফ হয়ে যায় তার।

–‘মা সেদিনের জন্য তুমি কি আর কোথাও যেতে দিবে না? আর আমার সাথে তো ভাবিও আছে তাই না? ‘

আনজানার প্রচন্ড জোড়াজুড়িতে যেতে বলে আয়না। উৎফুল্লতায় ঘিরে ধরে আনজানাকে। ফটাফট যেয়ে রেডি হতে নেয় সে। ইয়ানাও বাধ্য হয়ে রেডি হতে যায়। রেডি হয়ে আনজানার রুমে যেতে দেখে মুখে লিপস্টিক পাউট করছে। ইয়ানাকে দেখা মাত্র ছুটে চলে যায় আর দেরি না করে। খানিক বাদেই একটা সিএনজি নিয়ে বেড় হয়ে পরে তারা। গাড়ি নেয়নি আর। কিছুক্ষণ পরেই একটা মলের সামনে সিএনজি এসে দাড়ায়। আনজানা আর ইয়ানা নেমে পড়ে। সামনে এগোনোর উদ্দেশ্যে ইয়ানা পা বাড়াতেই এক ভদ্রমহিলার সাথে চোখাচোখি হয়। মহিলাটা হালকা মুখ ভ্যাঙচানোর মতো ভঙ্গি করে চলে যায়। মুখটা কেমন চেনাচেনা লাগে ইয়ানার কাছে। যেনো অনেকদিন আগে তা দেখেছে। কিন্তু মুখ ভাঙানোর কারণটি ঠিক বোধগম্য হলো না তার। মনে মনে ভাবতে ভাবতে সামনে পা বাড়ায়।
#একমুঠো_সুপ্ত_বাসনা
#সুপ্তি_আনাম
পর্বঃ ৩৬+৩৭ 🥳

–‘সিলেটে আমাদের রিসোর্টে যে আপনার পরিচিত কোনো কাপল উঠেছিল, সেখানের মহিলাটা কে? ‘

থমথমে গলায় ইয়ানার প্রশ্নে ভরকে যায় আনাজ। মাত্রই হসপিটাল থেকে এসে রেস্ট করছিলো সে। ইয়ানার এরকম প্রশ্নের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না সে।
এদিকে ইয়ানাও সেদিন শপিং মলে ভদ্রমহিলার চেনাচেনা মুখ দেখে প্রথমে বুঝতে না পারলেও বাসায় এসে বুঝতে পেরেছে সেদিনের থতমত খেয়ে যাওয়া মহিলাটাই তিনি! ইয়ানার স্পষ্টভাবে মনে আছে আনাজ সেদিন মহিলাকে কিভাবে ঠেস মেরে কথা বলেছিলো। এ ব্যাপারে আনাজকে বহুবার জিজ্ঞেস করলেও অন্য প্রসঙ্গ তুলে ব্যাপারটাকে এড়িয়ে এড়িয়ে চলেছে। তবে আজ সে ছাড়ছে না আনাজ। যে হালেই হোক শুনে ছাড়বে।

–‘মানে? কোন মহিলার কথা বলছো? ‘
–‘ আপনার কোন সহকারী ডক্টরের ওয়াইফ ছিলো। এখনো বুঝছেন না? নাকি মেলোড্রামা করছেন?’ (কঠোর গলায়)

–‘আরেহ কি আজব! মেলোড্রামা কেন করতে যাবো। আমি ঠিক বুঝছি না হঠাৎ তুমি এরকম জেরা কেন করছো? ‘

–‘তাহলে সেদিন ভদ্রমহিলাকে শুনিয়ে শুনিয়ে কেন কথা বলেছিলেন? আর কালকে যখন মলে গিয়েছিলাম তখনই বা ওই মহিলা আমাকে মুখ কেন ভাঙালেন? ইটস মিস্ট্রিয়াস! ‘

ইয়ানার কথা শুনতে পেয়ে আনাজের মুখের রঙ কেমন কালচে বর্ণ ধারণ করে। রীতিমতো ঘামতে শুরু করে আনাজ।

–‘কি হলো আপনার মুখ এরকম বিষাদের রূপ নিলো কেনো? ‘

আনাজের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। হাতের মুঠো চেপে ধরে সে৷ চোখের কোনে বিন্দু বিন্দু পানি এসে জড়ো হলো। ইয়ানার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। চোখে চশমা থাকায় ব্যাপারটা বুঝেনি ইয়ানা। ইয়ানা আরো কিছু বলতে যাবে এ সুযোগটা তাকে না দিয়ে আনাজ তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় পাশের রুমে। ইয়ানার সর্বাঙ্গে যেনো কাটা ফুটে ওঠে।

————————–
আনাজ পাশের থাকা গেস্ট রুমে যেয়ে বসে আছে। ভেতরে কি করছে বুঝতে পারছে না ইয়ানা। আয়না আর আনুজ বাসার বাহিরে গিয়েছে। আনজানা ঘুমিয়ে আছে৷ রুমে রেগে গজগজ করছিলো ইয়ানা। হঠাৎ কি মনে করে শান্ত হয়। এই মুহূর্তে আনাজের কথা শুনতে হলে তার রাগ দমিয়ে রাখতে হবে এই মনোভাব নিয়ে খানিকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। এরপর বড় বড় দম ফেলে আনাজের রুমে যায়৷ দরজাটা ভিরানো ছিলো। একটু চাপ দিয়ে ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে যায়। আনাজের দিকে দৃষ্টি দেয় ইয়ানা। আনাজ ইয়ানার আসা লক্ষ্য করতেই নড়েচড়ে বসে। ইয়ানার মনে হলো আনাজ চোখের পানিগুলো চট করে মুছে নিলো মাত্রই। ব্যাপারটাকে আরো ভালে করে বুঝতে তার দিকে এগোয়। আনাজ নিজের মুখটা হাইড করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আনাজের মুখশ্রী অবলোকন করতেই আতকে উঠে ইয়ানা। আনাজের চোখ মুখ ফুলে রয়েছে। চোখদুটো রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। দেখে মনে হচ্ছে আনাজ অনেকক্ষণ যাবত কান্নাকাটি করেছে। তাছাড়া তার গালদুটো ভেজা দেখে ইয়ানা নিশ্চিত হয়। খানিকটা অবাকও হয়। আনাজকে তো কোনোদিনই কাঁদতে দেখেনি। সেটা যতোই সিরিয়াস ম্যাটারই হোক না কেনো। তবে আজ? কি এমন রহস্য আছে যে আনাজ এর জন্য এরকম কষ্ট পাচ্ছে?

–‘আনাজ! আপনি কাঁদছেন? আমি কি একটু বেশি বেশি করে ফেলেছি? সরি!’
শান্ত গলায় ইয়ানা বলে। তার মেজাজকে এখন ঠান্ডা রাখতে হবে অপপাত। ইয়ানার কথাশুনেই আনাজ তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে বড় বড় শ্বাস ফেলতে শুরু করে। ইয়ানা থতমত হয়ে তাকেও জড়িয়ে ধরে। আনাজের পিঠে পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,

–‘আপনি কি আমার থেকে কিছু লুকচ্ছেন? দেখুন আপনার উত্তর ‘না’ হলেও আমি তাই ধরে নিবো।’

ইয়ানার কাঁধ থেকে মাথা তুলে নেয় আনাজ তাকে বলতে শুরু করে।

–‘ তুমি বারবার যেই ভদ্রমহিলার কথা জিজ্ঞেস করছিলে না? সে একসময় আমার ভালোবাসার মানুষ ছিলো। হৃদয় এর সর্বত্র জুড়ে শুধু তারই রাজত্ব ছিলো। ভালোবাসতাম তাকে পাগলের মতো। আর এটাই হয়তো আমার অন্যায় ছিলো। তার জন্য লাইফে আমাকে প্রচুর স্ট্রাগল করতে হয়েছে। কিন্তু জানো যখন তার বিয়ে হয়ে যায় তখন আমি অনার্স পরীক্ষাই দেইনি। ঠিক বিয়ের আগের দিন এসে আমার কাছে স্বার্থপরের মতো বলে কালকে তার বিয়ে। তারপরও আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। এতোটাই তার পাগল ছিলাম। বুকে পাথর রেখে হেসে হেসে বলছিলাম ‘তুমি মজা করছো না? মিথ্যে বলছো? ‘ তারপর ঠাস করে আমার গালে চড় দিয়ে বলে,
সবসময় মজা করা ভালো নয়। আর আমি যার সাথে বিয়ে করছি না? সে একটা ডাক্তার। অনেক ভালো স্যালারি পায়। এমন বড়লোক ঘরের ছেলেকে তোমার মতো মিডল ক্লাসের জন্য ছেড়ে দিবো? আর তোমার সাথে বিয়ে হলেই বা আমি খাবো কি? জানো আমার না বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছিলো তোমাকে ভালোবাসাটা। আমি বলদের মতো ফিউচারের দিকে না দেখেই তোমাকে ভালোবেসেছি। আবার তোমার পাগলামো দেখে ছাড়তেও পারছিলাম না। তবে আজকে না হলেও কোনো একদিন তোমাকে এটা দেখতেই হতো !’

বিশ্বাস করো ইয়ানা এই কথাটা শুনে মূর্তির মতো দাড়িয়ে ছিলাম। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিলো আমার। আসলেই তো তার তো কোনো দোষ ছিলো না। দোষ তো আমার চাকরি বাকরি কিছু করি না। আমাকে আবার কে বিয়ে করবে? ইয়ানা তুমি সেদিন বলেছিলে না, আমি ভালোবাসা মানে কি সেটা বুঝিই না? হয়তো তাই! নাহলে তাকে হারাতেই দিতাম না। তাকে হারিয়ে পাগলের মতো কেঁদেছি কয়েকদিন। তাকে হারানোর যন্ত্রণা বারবার আমায় গ্রাস করে ফেলছিলো। তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছিলো। নিকোটিনের ধোঁয়ায় নিজেকে বরবাদ করতাম। আমার ধ্বংসরূপি অবস্থা দেখে মা-ও কেঁদে কেঁদে অস্থির হয়ে পড়তো। তবে মা আমাকে এসব অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছে, মনোবল জুগিয়েছে আমার মা। আর আমিও ভাবলাম। কেঁদে তো কোনো লাভ হচ্ছে না। আমাকেও ডাক্তার হতে হবে ~ এমন একটা মনোভাব আমার মনের মধ্যে গেঁথে গেলো। উন্মাদ ভাবে পড়াশোনা শুরু করে দিলাম। রাত দিন পড়া ছাড়া কিছুর প্রতি আগ্রহ ছিলো না। তারপর এভাবল ম্যাডিকেলেও চান্স পেয়ে গেলাম। আর এখন দেখো আমি গোটা ঢাকা শহরের একজন ফেমাস জেরিয়াট্রিশিয়ান! সবার হ্যাড আমি।আজ সেও আফসোস করছে। কিন্তু এখন আমার আফসোস হয় না তাকে নিয়ে৷কিন্তু স্মৃতি গুলো নাড়া দিতেই ইমোশনাল হয়ে পড়ি। দ্যাটস ইট!’

কথাগুলো বলে ইয়ানার দিকে তাকাতেই আনাজ দেখে ইয়ানার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছে সে। আনাজকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে,

–‘ মহিলাটা এতো স্বার্থপর কেনো? আপনাকে তো একটু ভালোবাসা দিতে পারতো নাকি? আপনার কষ্ট হচ্ছে তাই না? ‘

রীতিমতো ফুপিয়ে কাদতে শুরু করে ইয়ানা। আনাজ মুখে খানিকটা হাসি ফুটিয়ে বলে,

–‘উহু! আমার এখন মোটেও কষ্ট হচ্ছেনা।’

–‘তাহলে আপনি এভাবে কাঁদলেন কেন?’ (ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে)

–‘ এবার তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছো না? শান্তি লাগছে ট্রাস্ট মি!’

মিনিট খানেক শান্তি বজিয়ে রেখে আনাজকে বক্ষ- পিঞ্জরে আবদ্ধ করে রাখে ইয়ানা। মনে মনে ভাবে, আনাজের পাস্ট তো তার চেয়েও খারাপ। এ নিয়ে তো আনাজ তাকে কখনো বলে নি, যেভাবে ইয়ানা আনাজকে বলেছে। আর সে অনুতপ্ত বোধ করছে, সেদিন আনাজকে হুট করে ‘আপনি ভালোবাসার মানে বোঝেন?’ কথাটি বলা উচিত হয়নি। আনাজ সেদিনও কষ্ট পেয়েছিলো মেবি। তার হাত দিয়ে আরো শক্ত করে আনাজকে জড়িয়ে ধরে থাকে। সাথে আনাজও। নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশান্তিকর মুহূর্ত।

চলবে,,,

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here