এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব -৩৫+৩৬

#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_৩৫
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

আজকে আটদিন পরে আবির’কে বাসায় নিয়ে আসা হলো।খুব ভালো ভাবেই আহত হয়েছিল আবির।ফাইয়াজ প্রিয়াকে খবর দেওয়া’র সাথে সাথে প্রিয়া এবং আবিরের বাবা-মা হসপিটালে উপস্থিত হয়।আবির কেমন জানি শান্ত হয়ে গেছে।সেদিনের বিষয় নিয়ে,একটা কথা-ও মুখ দিয়ে বের করে নাই।কেমন জানি শান্ত দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকিয়ে থাকে।হয়তো সুস্থ হবার অপেক্ষায়।ছেলেকে নিয়ে শত-শত চিন্তা হাসনা বেগমে’র মাথায়।কোমল কণ্ঠে বলল।

–আচ্ছা আবির আজকে আমাকে কয়টা সত্যি কথা বলবি।তোকে না আমি চিনতে পারছি না।তুমি আদৌও আমার ছেলে তো’।নাকি ছেলের রুপ ধরে অন্য কেউ।আমি এই আবিরকে তো’ চিনি না।তুই তো’ এমন ছিলি না।এমন হয়ে গেলি কি করে,তুই তো’ তানহাকে ভালোবাসতি।তাহলে প্রিয়াকে কেনো বিয়ে করলি?তোর চোখে তানহার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা দেখে ছিলাম।তোর ভালোবাসা দেখে,আমার ভেতরে অপরাধবোধ কাজ করছিল জানিস।আমি মানছি,আমি তানহাকে দেখতে পারি না।কিন্তু তুই আমার ছেলে,তোকে কখনো কষ্ট দিতে চাই নাই।আমি তো’ তানহাকে তোর কাছে নিয়ে আসতে চাই ছিলাম।তুই আবার চৈতালির সাথে সম্পর্কে গেলি।আমি ভেবে ছিলাম।তুই হয়তো তানহাকে ভুলে গিয়েছিস।চৈতালিকে আমি মনে মনে ভারি পছন্দ করতাম।তোর বউ করার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু তুই চৈতালির সাথে যা করলি।লজ্জায় ওদের সামনে মুখ দেখাতে পারি না।তুই তানহার জন্য বিয়ের শাড়ি,গহনা,আরো কতকিছু নিয়ে আসছিলি।তানহাকে নিয়ে ডায়েরিতে কতকিছু লেখতি।এসব কি ছিল।আজকে তোকে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

–এটা যদি তোমার ফাঁকা মাথায় ঢুকতো।তাহলে এই প্রশ্ন গুলো আজকে করতে না।সেদিনই করতে।যখন বোঝার তখন বুঝো নাই।এখন বুঝে লাভ নাই।তানহাকে আমার ছোট বেলায় ভালো লাগতো।এখন লাগে না।তাই ওকে বিয়ে করি নাই।প্রিয়াকে ভালো লেগেছে।তাই প্রিয়াকে বিয়ে করেছি।মানুষ সময়ের সাথে বদলে যায় আম্মু।আমি’ও বদলে গিয়েছি।

–আমি তোর মা আবির।তুই বদলে গিয়েছিস।আমি তো’ বদলায় নাই।আমি তোকে ঠিক আগের মতো ভালোবাসি।তুই এত অপরাধ করেছিস।তবু্ও সেই ছোট বেলার মতো ভালোবাসি।তুই বললি মানুষ সময়ের সাথে বদলে যায়।কই আমি তো’ বদলায় নাই।তাহলে আমি কি মানুষ না।

–আম্মা এই অমানুষটা’কে বুঝিয়ে লাভ নেই।আপনার ছেলে বিদেশ থেকে এসে,এমনি এমনি এত নাটক করে নাই।বিদেশে গিয়ে কি আকাম করে পালিয়ে এসেছে,
আপনার ছেলেকে জিগ্যেস করেন।প্রিয়ার কথা শুনে,
রাগী দৃষ্টিতে প্রিয়ার দিকে তাকালো আবির।হাসনা বেগম তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন।

–রিয়াদ আমার মনে হচ্ছে,এবার বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।চল বাসায় ফিরে যাই।ইফাদের কথায় মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লো রিয়াদ।

–তুই তীরে এসে নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া’র চিন্তা করছিস।

ইফাদ কেমন জানি ছটফট করছে।রিয়াদ ইফাদের কাঁধে হাত রাখলো।ইফাদ রিয়াদের হাতটা নিজের রুমের মাঝখানে চেপে ধরলো।ইফাদের হৃদপিণ্ডের গতিতে বেগ দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে।কেমন অস্থির হয়ে আসছে ইফাদ।

–ভাই চিন্তা করিস না।সাতটা দিনের-ই তো’ ব্যাপার।রিয়াদের কথা শুনে,ইফাদ চোখ বড় বড় করে তাকালো।

–তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।আমি কালকেই চলে আসবো।তানহা অনেক কষ্ট পাচ্ছে।ওকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে,নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাচ্ছি।ওকে কষ্ট পেতে দেখলে,আমার মাথা ঠিক থাকে না।এমনিতেই সাতদিন বাসায় যাই নাই।তাই কান্না-কাটি করে,নিজের কি হাল করেছে দেখছিস।দু’দিন না খেয়ে ছিল।চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গিয়েছে।এখন যদি আবার সাতদিন ওকে রেখে থাকি।আবার কান্না করবে।ঠিকমতো খাবে না।নিজের যত্ন করবে না।পাগলের মতো হয়ে থাকবে।ও’ যা শরীর এত চিন্তা করলে,
শরীরের অযত্ন করলে অসুস্থ হয়ে যাবে।তার থেকে ভালো চল বাসায় চলে যাই।আমি আর পারবো না ভাই।আর এক মুহুর্ত তানহাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।আমি বাসায় চলে গেলাম।

–তোর মতো কেয়ারিং হাসবেন্ড-ই আমার দরকার ছিল।এই জন্যই তোকে এত ভালোবাসি।কেনো যে,
আমি মেয়ে হলাম না।আমি মেয়ে হলে,তোকেই বিয়ে করতাম।আর তোর সব ভালোবাসা আমি পেতাম।এতগুলো দিন কষ্ট করলি।আর কয়টা দিন সহ্য করতে পারবি না।আচ্ছা বেশ সাতদিন না।তিনটা দিন অনন্ত আমাকে সময় দে’।রিয়াদ ইফাদের দিকে তাকিয়ে দেখলো,ইফাদের চোখ দু’টো লালা হয়ে উঠেছে।ছেলে মানুষের কাঁদতে নেই।তাই অশ্রু কথাগুলো বৃষ্টিতে রুপান্তরিত হয়ে ঝরে পড়ছে না।ইফাদ আস্তে করে বলল।

–তানহা অনেক কষ্ট পাচ্ছে,বুকের মাঝখানে অসহ্য ব্যথা অনুভব করতে পারছি।

রিয়াদ কোনো রকম বুঝিয়ে ইফাদকে নিয়ে চলে গেল।

পুরো রুম জুড়ে নীরবতা বিরাজমান করছে।আবির মুখ দিয়ে টু শব্দ বের করছে না।প্রিয়া বিরক্ত হয়ে বলতে শুরু করল।

–আম্মা আবির বিদেশে দশ কোটি টাকা ঋণ করে,পালিয়ে এসেছে।আপনার কি মনে হয়।তানহার জন্য এত জিনিস পত্র নিয়ে এসেছিল।ওইসব আবির কিনে নিয়ে এসেছিল।ওগুলো সব আমার বিয়ের জিনিস।তানহার বাবা নাকি বিশ বছর প্রবাসে ছিল।তানহার আর কোনো ভাই বোন নেই।তানহার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে,তানহার বাবা ঢাকা শহরে জায়গা কিনে,দশ তলা বাড়ি করেছে।সেটা নাকি তানহার আঠারো বছর বয়স হয়ে যাবার পরেই তানহা’র হয়ে যাবে।তানহার বাসার দায়িত্ব নাকি আপনার আর আব্বার কাছে দিয়ে গিয়েছে।আবির বিদেশে গিয়ে ব্যবসা শুরু করে,প্রথমে ভালোই চলছিস সবকিছু।কিন্তু আবিরের লোভ আবিরকে ধংস করে দিল।বেশি লোভ করতে চেয়েছিল।যার পরিনতি এখন সে,দেখতে পাচ্ছে।ওর স্থান এতদিন জেলে হতো।যদি আমার বাবা ওকে না বাঁচাত।আমার বাবা নিজের সবকিছু দিয়ে ওকে বাঁচিয়ে দিল।আর এই বেইমান আমাদের রেখে পালিয়ে আসলো।আমার আরো দুই বোন আছে।তাদের ভবিষ্যৎ নেই।তাদের অধিকার নেই।বাবা তার সবকিছু দিয়ে আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছে।আবির বলেছিল।বাবাকে সব টাকা ফেরত দিয়ে দিবে।আম্মা একটা দুইটা টাকা না,দশটা কোটি টাকা।ছেলে খেলা না আম্মা।কয়টা বছর পার হয়ে গেল।একটা কোটি টাকা বাবার হাতে তুলে দিতে পারে নাই।ও যদি বাবার টাকা পরিশোধ করতে না পারে,বাবা ওর নামে থানায় মামলা করে দিবে।ওকে টাকা দিয়ে আজ আমাদের পরিবারের অবস্থা করুন।আম্মু মামার থেকে জমি পেত।মামাকে জমি দিয়ে টাকা নিয়ে এসেছে।সেটা দিয়েই আমাদের সংসার চলছে।আপনার ছেলে আমার গায়ে হাত পর্যন্ত তুলছে।বিদেশে নানা রকমের মেয়েদের সাথে ছিল তার মেলামেশা,তাদের পেছনে উড়িয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।বউ হয়ে স্বামীর এসব কুকর্ম নিজ চোখে দেখা কতটা কষ্টকর,আম্মা আপনি অনুভব করতে পারছেন।বাঙালি মেয়ে স্বামীর সব অন্যায় মেনে-ও স্বামীর পাশে থাকে।স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে চায় না।আমি’ও তার সব অন্যায় মেনে তার পাশে ছিলাম।সে,আমাকে কষ্ট ছাড়া কিছুই দেয় নাই।ভেবে ছিলাম তার থেকে দূরে সরে গেলে,সে হয়তো ভালো হয়ে যাবে।সুযোগ বুঝে দূরে চলে গেলাম।মাথার ওপরে টাকার চাপ,আমি পাশে নেই।তানহাকে-ও আপনি বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন।আবির প্রায় দিশেহারা হয়ে গিয়ে ছিল।জ্ঞান শূন্য হয়ে পাগলামি করতো।আপনাকে বোঝাতে চেয়েছিল,আবির তানহাকে খুব ভালোবাসে,
তানহাকে ছাড়া আবির মরে যাবে।মায়ের বোকা মন ছেলের নিখুঁত অভিনয়ে ভুলে গিয়েছিলেন।আবির এখানেই থেকে থাকে নাই।টাকার নেশায় আবির এতটা উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল।সে,তানহার গায়ে হাত তুলতে চলে গিয়েছিল।যখন তানহার কাছে মন পেল না।তানহার ননদ চৈতালি বাচ্চা মেয়েটাকে ব্যবহার করতে শুরু করল।আবির ভুল বসত।তানহার বাসার আসল দলিলটা চৈতালিকে দিয়ে ফেলছে।ভাগ্যের কি পরিহাস দলিলটা তানহার হাতে গিয়েই পড়েছে।তানহাকে ছেড়ে আবির চৈতালিকে বারবার আঘাত করছে,দলিলটা পাওয়ার জন্য।এত কিছু করার পরে-ও আমি ওর পাশে ছিলাম,ওর বিবেক কি একটা বার ভাবে না।এত কিছু করার পরে-ও একটা মেয়ে তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।কতটা ভালোবাসলে এত গুলো অন্যায় করার পরে-ও তার সাথে থাকে।অনেক হয়েছে আবির,এবার তোমার সাথে আমার কোর্টে দেখা হবে।আগামী দশদিনের মধ্যে আমার বাবার টাকা পরিশোধ করবে,তা না হলে আমার বাবা আইনের ব্যবস্থা নিবে।

হাসনা বেগম প্রিয়ার কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।তার ছোট আবির এতটা নিচে নেমে গেল কি করে,কথা গুলো স্বপ্নের মতো লাগছে।আবির মায়ের হাত ধরে বলল।

–আম্মু তুমি বাবাকে কিছু বলো না।আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।আমি নিজেকে ঠিক করে নিব।প্রিয়া প্লিজ আমাকে কয়টা দিন সময় দাও।আমি তোমাদের সব টাকা শোধ করে দিব।আমি তোমাকে ভালোবাসি।আমি তোমার জন্য সবকিছু করতে পারবো।তুমি শুধু আমার পাশে থাকবে।দেখবে সবকিছু সহজ হয়ে গেছে।

–তুমি তানহাকে ভালোবাসতে,আমাকে পেয়ে তানহাকে ভুলে গেলে,আমার থেকে ভালোকিছু পেলে,আমাকে ভুলে যাবে না।তার কোনো নিশ্চয়তা আছে।

–আমি সবকিছু করার পরে-ও তোমার সাথেই আছি।তোমার জন্য সবকিছু করছি।আমি তো চেষ্টা করছি।আর কয়টা দিন সময় দাও।আমি তোমার বাবার টাকা শোধ করে দিব।যদি শোধ করতে না পারি।তাহলে তুমি নিজ হাতে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিও।

–এটাই শেষ সুযোগ টাকা দিতে না পারলে তোমার কি অবস্থা করবো।তুমি নিজে-ও জানো না।

–তুমি সুযোগ দিলে-ও,এই অমানুষটা’কে আমি আর একটা সুযোগ-ও দিব না।হাসনা তুমি এই বেয়াদবটাকে আমার বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলো।আজকে যদি আমার চোখের সামনে থাকে,আমি ওকে খুন করে ফেলবো।মাহতাব সাহেবের হুংকারে সবাই কেঁপে উঠলো।হাসনা বেগম ভয়ে মুখ দিয়ে টু শব্দ করার সাহস পেল না।মাহতাব সাহেবের রাগ খুবই ভয়ংকর।মাহতাব সাহেব আবিরের ঘাড় ধরে বাসার বাহিরে বার করে দিল।প্রিয়া আমতা আমতা করে বলল।

–আব্বা আবির অসুস্থ।আজকে রাতটা যদি একটু থাকতে দিতেন।

–তোমার কোনো আত্মাসন্মান নেই।এমন চরিত্র হীন ছেলের সাথে সংসার করছো।এতকিছু করার পরে-ও তার জন্য দরদ দেখাচ্ছো।যে,অন্যায় করে আর যে, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়।দু’জনেই সমান অপরাধী।তোমার যদি এতই রাখতে হয়।নিজের বাসায় নিয়ে গিয়ে রাখো।ওকে আমি তাজ্যপুত্র করে দেয় নাই।এটাই ওর ভাগ্য ভালো।বলেই মুখের ওপরে দরজা লাগিয়ে দিল।

পরের দিন সকাল বেলা,কালকে রাতে তানহা দরজা দেওয়া’র পরে আর রুম থেকে বের হয় নাই।সকালে উঠে প্রতিদিনের মতো কাজ করছে।মেয়েটা একদম চুপচাপ হয়ে আছে।চোখ-মুখ ফুলে আছে।রোকেয়া বেগম।তানহার পাশে আসলেন।তানহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।অনেকক্ষণ ভালোবাসে বোঝালো।তানহা যেনো কষ্ট না পায়।চাইলেই কি সব ইচ্ছে পূর্ণ হয়।না চাইতে-ও বেহায়া মনটা কষ্ট পেয়ে বসে।তানহা কাজ শেষ করে নিজের রুমে শুইয়ে ছিল।চৈতালি তানহার কাছে আসলো।তানহার পাশে শুইয়ে পড়ল।পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পাশ ফিরে তাকালো তানহা।চৈতালিকে দেখে কিছু বলল না।

–বউ তুমি কষ্ট পাচ্ছ কেনো?সবাই খালি তোমাকে কষ্ট দেয়।আর তুমি সহ্য করো।তুমি আর ভাইয়ার জন্য কষ্ট পাবে না।পারলে ভাইয়াকে বেশি করে কষ্ট দিবে।ভাইয়া যদি ফোন দেয়।তাহলে ভাইয়ার সাথে কথা বলবে না।

–আমার তো’ ফোন-ই নেই।রাগ করে সেদিন ভেঙে ফেলছি।তুমি আজকে অফিসে যাও নাই।

–আজকে অফিস ছুটি।আজকে আমরা ঘুরতে যাব।ঐসব ছবি তুলে ভাইয়াকে দেখাবো।দেখবে আর জ্বলবে লুচির মতো ফুলবে।

–আমি কোথায়-ও যাব না।

–যাবে না।বললে-ই হলো বিকেলে তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যাব।একটা নাটক দেখবে ভাবি।খুব হাসির হাসতে হাসতে তোমার পেট ব্যথা হয়ে যাবে।বলেই নাটক বের করে দেখতে লাগলো।তানহার কাছে নাটকটা বেশ ভালো লাগছে।একটু পর পর দু’জনের হাসির শব্দে রুমটা ভরে উঠছে।তানহা চৈতালিকে জড়িয়ে ধরে আছে।নাটক দেখতে দেখতে দু’জনেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।রোকেয়া বেগম দু’জনকে দেখে হেসে চলে গেল।

বিকেলে দু’জন রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়ল।চৈতালি কিছুতেই তানহাকে কষ্ট পেতে দিবে না।নিজের সবটুকু দিয়ে হলে-ও তানহার মনটা ভালো রাখার চেষ্টা করবে।আজকে চৈতালি বাসায় ছিল।খুব একটা খারাপ লাগে নাই তানহার।কালকে চৈতালি থাকবে না।সারাদিন যেমন-তেমন রাতে হলে,সে কি করবে।দিনের আলোয় কষ্ট গুলো আড়াল করা গেলে-ও রাতের অন্ধকারে চোখের পানি আড়াল করা যায় না।

–তুমি বুঝতে পেরেছো।তোমাকে আমি কি’ বলতে চেয়েছি।ইফাদ আসলে,তুমি তোমার কাজে লেগে পড়বে।

–জ্বী ভাইয়া।আপনারা কালকে কখন এসেছেন।

–রাতে এসেছি।এখন এখানে থেকে যাও।আর তোমার বোনকে গিয়ে বলো আমি ডাকছি।

–জ্বী ভাইয়া আমি এখনই আপুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।বলেই চলে গেল।দরজার কাছে আসতেই অনিকে দেখতে পেল।অনিকে বলল।

–প্রিয়া আপুকে বল দুলাভাই আপুকে ডাকছে।

–তোমাকে বলেছে,তুমি গিয়ে ডেকে নিয়ে আসো।

–তোর এতবড় সাহস আমার মুখে মুখে কথা বলছিস।আম্মুকে বলে তোর কি অবস্থা করি।অনি মুখ বাকিয়ে চলে গেল।

কালকে তানহার সাথে কথা বলার জন্য ইফাদ ছটফট করছে।যতবার তানহাকে ফোন দিয়েছে।তানহার ফোন বন্ধ পেয়েছে।বেশ চিন্তা হচ্ছে,তানহার জন্য।ইফাদ এবার চৈতালিকে ফোন দিল।চৈতালি সাথে সাথে ফোন তুলল।

–ভাবির খবর বাদের সব খবর দিতে পারবো।যে,মানুষটাকে একা রেখে চলে গিয়েছো।সে মানুষটা বাঁচল কি মরলো।তা’ তোমাকে জানতে হবে না।ইফাদ চৈতালিকে ধমকে উঠলো।চৈতালি ভয়ে চুপ হয়ে গেল।তুমি ভাবিকে ঠিক যতটা কষ্ট দিবে,তোমাকে-ও সমান কষ্ট অনুভব করতে হবে ভাইয়া।কষ্ট পেলে কেমন লাগে,কষ্টের অনুভূতিটা তোমাকে অনুভব করাবো।কষ্ট পেলে,ভাবি একা পাবে কেনো?ভাবির মতো তোমাকে-ও কষ্ট পেতে হবে।বলেই কল কেটে দিয়ে ফোন অফ করে দিল চৈতালি।

চলবে……#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_৩৬
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

চৈতালি পড়াশোনা করছিল।তানহা চৈতালির কাছে আসলো।তানহাকে দেখে,চৈতালি বই বন্ধ করে তানহার দিকে তাকালো।তানহা কোনো ভনিতা না করে বলল।

–তোমার ভাইয়াকে একটু ফোন দিবে।মানুষটা এত দূরের পথে গেল।ঠিক ভাবে পৌঁছেছে কি না জানা হলো না।

–ভাবি তুমি আবার ভাইয়ার কথা ভাবছো?যে,মানুষটা তোমার কথা না ভেবে,তোমাকে একা রেখে চলে গেল।তুমি তার খবর জানতে চাইছো।তোমার জায়গায় আমি হলে,কবেই ভাইয়াকে ছেড়ে চলে যেতাম।

–মেয়েদের মেনে নিতে,আর মানিয়ে নিতেই জীবন চলে যায় চৈতালি।এখন বুঝবে না।যখন তোমার সংসার হবে।তখন বুঝবে।আমি’ও বিয়ের আগে অনেক বড় বড় কথা বলতাম।কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন রে বোন।মানুষ চামড়ার মুখে অনেক বড় বড় কথা বলে,কিন্তু পাশে কেউ থাকবে না।একটা ডিভোর্সি মেয়ের দিকে সমাজের মানুষ কিভাবে তাকায়।তার আড়ালে যত বাজে কথা বলে,সেসব কথা যদি শুনতে,তোমার কলিজা কেঁপে উঠবে,উনি বাহিরের দেশেই গিয়েছেন।আমাকে ছেড়ে তো’ আর চলে যান নাই।সংসার থাকলে একটু আকটু ভুল বোঝাবুঝি হবে।তাই বলে ছেড়ে চলে যেতে হবে।ছেড়ে চলে যাওয়াটা সমস্যার সমাধান নয়।পাশে থেকে দু’জন মিলে সমস্যার সমাধান করাই শ্রেষ্ঠ কাজ।তুমি স্বামীকে ছেড়ে চলে যাবে।কোথায় যাবে,সমাজের মানুষের কাছে যাবে।ওরা তোমাকে মুখে অনেক বড় বড় কথা বলবে,কিন্তু একবেলা খাবার কেউ দিবে না।দশটা টাকা দিয়ে কেউ সাহায্য করবে না।তুমি-ও আমাকে কম কথা শোনা-ও নাই।তোমাকে মাফ করে দিতে পারলে,ইফাদকে কেনো পারবো না।উনি আমার স্বামী।উনি তো’ কোনো অন্যায় করে নাই।যে,আমি উনাকে ছেড়ে চলে যাব।আমি উনাকে ভালোবাসি।বিয়ে করেছি সারাজীবন একসাথে থাকার জন্য,ছেড়ে যাবার জন্য নয়।আমার সামনে দ্বিতীয় দিন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলবে না চৈতালি,আমার খুব রাগ হয়।তোমার সংসার ভাঙার দায়িত্ব অনেক জন নিবে।কিন্তু তোমাকে সারাজীবন ভালো রাখার দায়িত্ব কেউ নিবে না।এরা শুধু ভাঙতে জানে,জোড়া লাগাতে জানে না।কথা গুলো বলেই তানহা চলে গেল।চৈতালি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।

–এইকেই বলে বাঙালি নারী।স্বামী যতই খারাপ হোক কেনো?স্বামীর নামে একটা কিছু বললে-ই সাপের মতো ফস করে উঠে।আরে ভাই আমি মানছি, আমি ভাবিকে কষ্ট দিয়েছি।তার জন্য আমি যে,গভীর ভাবে অনুতপ্ত হয়েছি।আমার বলা কথা গুলো আমাকে কিভাবে পোড়ায়।তোমাকে যদি দেখাতে পারতাম ভাবি।আমি তোমার সব কষ্ট দূর করে দিতাম।ভাইয়ার সাথে কথা বলতে দিব।কিন্তু আগে ভাইয়া কয়টা দিন শিক্ষা পাক,তারপরে তোমার সাথে কথা বলতে দিব।তার আগে দিব না।আমি থাকতে তোমাকে এতটুকু-ও কষ্ট পেতে দিব না।তুমি তো’ রাণী ভাবি।তুমি আমাদের রাজ্য পরিচালনা করবে,তুমি কেনো কষ্ট পাবে।চৈতালি থাকতে তোমাকে কষ্ট পেতে দিবে না।

আজকে পহেলা ফাল্গুন।চারদিকে হিমেল হওয়া বইছে।লাল রংয়ের থোকাই থোড়াই ফুটে থাকা কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো খুব সুন্দর করে জানান দিচ্ছে,ফাল্গুন মাস চলে এসেছে।বাচ্চার হলুদ রংয়ের কাপড়ে মেতে উঠেছে।ছোট বড় সবাই হলুদ রংয়ের শাড়ি পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।কেউ পরিবারের সাথে,কেউ বা তার প্রিয়জনের সাথে।ছাদ থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে তানহা।চৈতালি পেছনে থেকে,তানহাকে জড়িয়ে ধরলো।তানহা মৃদু হাসলো।

–আজকে তোমার জন্য একটা উপহার আছে ভাবি।

–তোমার ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে।

–তুমি নিজে কথা বলো না।আবার আমাকে বলছো।ভাইয়া আমার ওপরে খুব রেগে আছে।আমাকে সামনে পেলে,কি করবে আল্লাহ ভালো জানে?

–ঠিকঠাক মতো পৌঁছেছে তো’।খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করেন,নিজের যত্ন নেন তো’।

–তুমি ফোন দিয়ে জেনে নাও।

–উনি আমার কথা জানতে চেয়েছেন।আমি’ও আর উনার কথা জানতে চাইবো না।

–ভাবি মন খারাপ করো না।দেখবে ভাইয়া খুব তাড়াতাড়ি তোমার কাছে চলে আসবে।এখন আমার সাথে চলো।বলেই তানহাকে নিয়ে নিচে চলে আসলো।চৈতালির রুমে এসে,অনেক গুলো চুড়ি,সাদা রং লাল পারের দু’টো শাড়ি।দুটো নুপুর,আরো কিছু সাজার জিনিস রয়েছে।তানহা চৈতালি দিকে তাকালো।

–আমার তো’ বেশি টাকা নেই।কিছু জমানো টাকা ছিল।দু’জনের জন্য পাঁচ টাকা করে,একটা হাজার টাকা দিয়ে এই সস্তা শাড়ি দু’টো আর কিছু সাজার জিনিস কিনে নিয়ে আসছি।চুড়ি গুলো আমার অফিসের বস কিনে দিয়েছে।আজকে দু’জন জমিয়ে সাজবো।বাহিরে ঘুরতে যাব না।বাসার মধ্যে সেজে পুরো বাসায় দৌড়ে বেড়াবো।রাতে পিকনিক করবো আমাদের ছাদে,জন প্রতি একশো টাকা করে ধরেছি।এবার রুমে গিয়ে তোমার ভাগের টাকা নিয়ে আসো।আম্মুর টাকা নিয়ে আসছি।এখন ভাইয়ার থেকে টাকা নিব।তানহা চৈতালির কথা শুনে,হেসে দিল।

–তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।এসব পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না।

–আমার পাগলামির জন্য যদি আমার ভাবিমনির মুখে হাসি ফুটে,তাহলে এমন পাগলামি আমি সব সময় করতে পারবো।সন্ধ্যার আজান দিবে একটু পরে,তুমি টাকা নিয়ে আসো।জিনিসপত্র সব তৈরি করতে হবে।ছাদে চুলা বানাতে হবে।আমরা সাজবো তার জন্য সময়ের প্রয়োজন।দেরি করো না।তাড়াতাড়ি টাকা নিয়ে আসো।তানহা আর কোনো কথা বলল না।মেয়েটা তানহাকে ভালো রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।কেউ বলবে এই মেয়েটা কয়দিন আগে একটা ছেলের জন্য তার সাথে বাজে ব্যবহার করেছে।আজকে সাতদিন হলো ইফাদ বাসায় নেই।তানহার মনটা বিষাদে ছেয়ে গেছে।কোনো কিছুই ভালো লাগে না।আল্লাহ তায়ালার ওপরে ভরসা রেখে দিন গুলো পার করছে।সবাই তাকে নিরাশ করলে-ও আল্লাহ তায়ালা তাকে কখনো নিরাশ করবে না।

–ভাইয়া আমরা পিকনিক করছি।তোমার ভাগের একশো টাকা দাও।

–তোকে সামনে পেলে,কেটে কুটি কুটি করে তেলে ভাজবো।

–আমার কোনো দোষ নেই।তুমি ভাবিকে কষ্ট দিয়েছো।আমি তোমাকে ভাবির কষ্টটা অনুভব করিয়েছি।

–তানহাকে ছাড়া আমার এক একটা সেকেন্ড কেমন যাচ্ছে,আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে?আমার দম বন্ধ হয়ে আসে জানিস।আগে আমি মেয়েদের দেখতে পারতাম না।এখন একটা মেয়ে আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়লো।

–তাহলে তোমাকে পাবনা রেখে আসবো।তারপরে সুন্দর একটা ছেলে দেখে,ভাবিকে আবার বিয়ে দিব।

–চৈতালি সাহস খুব বেড়ে গেছে।বাসায় খালি আসতে দে’।

–আমাকে ভয় দেখাচ্ছো।আমি ভাবিকে সবকিছু বলে দিব।

–তুই আমার নিজের মায়ের পেটের বোন।নাকি শত্রু বল তো।এতগুলো দিন কষ্ট করেছি।তুই এক নিমিষেই সবকিছু শেষ করে দিবি।

–তুমি টাকা দাও।তাহলে ভাবিকে কিছু বলবো না।খুব যত্ন করে রাখছি বউকে।

–তোর বউ না আমার বউ।

–তোমার বউ মানের বাড়ির বউ।তাহলে আমার বউ।কথা কম বলো।ভাবি যেকোনো সময় চলে আসবে।ইফাদ চৈতালিকে বিকাশে একশো টাকা পাঠিয়ে দিল।চৈতালি খুশি হয়ে ফোন রেখে দিল।সন্ধ্যার নামাজ পড়ে দু’জন মিলে,নিজেদের কাজে লেগে গেল।

–ভাবি রাতের নামাজ শেষ করে,রান্না করতে আসবো।তারপরে রাত বারোটায় খাব।অনেক মজা হবে।

–তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।আম্মা যদি রাগ করেন।

–আম্মু কিছু বলবে না।আম্মুকে বলাই আছে।আম্মু-ও থাকবে আমাদের সাথে।তানহা চোখ গোল গোল করে চৈতালির দিকে তাকালো।চৈতালি কাজ শেষ করে তানহাকে নিজের রুমে নিয়ে আসলো।দু’জন মিলে শাড়ি পড়ে,সুন্দর করে সাজলো।দু-হাত ভরে চুড়ি পড়েছে তানহা আর চৈতালি।দু’জন মিলে পুরো বাসায় দৌড়া-দৌড়ি করছে।চুড়ি আর নুপুর রিনিঝিনি শব্দে পুরো বাড়ি মেতে উঠেছে।রোকেয়া বেগম মুগ্ধ দৃষ্টিতে দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছে।

–কি শুরু করেছিস।পড়ে যাবি,এভাবে দৌড়াদৌড়ি করিস না।

–তুমি ভাবিকে থামতে বলো।আমি ভাবিকে ভুল কিছু বলেছি।ভাইয়া ভাবিকে খালি রেখে চলে যায়।তাই বলেছি ভাবিকে আরেকটা বিয়ে দিব।আর আমার ওপরে রেগে গেছে।

–বাজে কথা বললে,তো রাগবেই।তুই খুব পাকনা হয়েছিস।ইফাদ আসলে,এবার তোকে বিয়ে দিয়ে দিব।

চৈতালি দাঁড়িয়ে পড়ল।মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে,মায়ের দিকে তাকালো।তানহা চৈতালির মুখের দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসছে।হঠাৎ করে দরজায় কলিং বেলে বেজে উঠলো।তানহা দরজা খুলে,ইফাদকে দেখে অবাক দৃষ্টিতে ইফাদের দিকে তাকিয়ে আছে।ইফাদের চেহারায় মলিনতা বিদ্যামান।ফ্যাকাসে হয়ে আছে মুখখানা।ইফাদ অসহায় দৃষ্টিতে তানহার দিকে তাকালো।তানহা কোনো কথা বলল না।মাথা নিচু করে সরে দাঁড়াল।

–আমার সাথে কথা বলবে না।

তানহা নিরুত্তর।সমস্ত অভিমান গুলো মনে এসে হানা দিয়েছে।দাঁড়িয়ে না থেকে,ড্রয়িং রুমে চলে আসলো।ইফাদ-ও তানহার পেছনে পেছনে আসলো।রোকেয়া বেগমকে ছেলেকে দেখে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।

–ইফাদ তুই।

–হ্যাঁ আম্মু তোমার ছেলে বিদেশে যায় নাই।কোথায় গিয়েছিল জানো।বলে গিয়ে থেমে গেল।রোকেয়া বেগম যথেষ্ট রেগে গিয়েছেন।তা উনার মুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।ইফাদ মায়ের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

–ইফাদ তুই সবকিছু ছেলে-খেলা মনে করিস।তুই কি আমাদের সাথে ফাজলামি করছিস।এটা তোর কেমন ধরনের ব্যবহার।একটা বার মেয়েটা’র দিকে তাকিয়ে দেখেছিস।তোর চিন্তায় নিজের কি হাল করেছে।আমি খুব বড় ভুল করে ফেললাম।তানহাকে তোর সাথে বিয়ে দিয়ে।

–আমার মতো করে কেউ তানহাকে ভালোবাসতে পারবে না আম্মু।আমি তো শুধু..

–চুপ কর বেয়াদব।একদম আমার সাথে কথা বলবি না।বিয়ের পর থেকে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছিস।আবার বলছিস,তোর মতো করে৷কেউ ভালোবাসতে পারবে না।মেয়েটার রুপে-গুনে কোনো দিকে কমতি আছে।অন্য জায়গায় বিয়ে হলে,রাজরানী হয়ে থাকতো।ভেবেছিলাম এতিম মেয়েটাকে কখনো কষ্ট পেতে দিব না।কিন্তু তুই আমার আশা পূর্ণ হতে দিলি না।তানহাকে নিয়ে যদি তোর এতই সমস্যা থাকে।তাহলে বলে দে’।আমি তানহাকে আবার বিয়ে দিব।

–আম্মু এমন কথা বলবে না।আমার অনেক খারাপ লাগে।ওর মুখে অন্য ছেলের নাম শুনলেই আমার বুকে ব্যথা করে।অন্য কারো হয়ে গেলে,আমি মরেই যাব।আমি বেঁচে থাকতে তানহা কারো হতে পারবে না।

–বেয়াদবি করার আগে মনে ছিল না।একটা বার ভাবলি না।মেয়েটার মনের অবস্থা কি হতে পারে।

–আম্মু আমার ভুল হয়ে গেছে।আমি আর কখনো এমন ভুল করবো না।

–আমি তোর কাছে আমার মেয়েকে আর দিব না।এখন তুই ভুল করলেই কি আর না করলেই কি?

–আম্মু আমি তো,,

–তানহার কাছে ক্ষমা চা’।তুই নিসন্দেহে অপরাধ করেছিস।ইফাদ তানহার দিকে তাকিয়ে বলল।

–তানহা আমার ভুল হয়ে গেছে।আমি আর কখনো এমন করবো না।প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও।তানহা ইফাদের কথার গুরুত্ব না দিয়ে,চৈতালিকে বলল।

–চৈতালি চলো।আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে।বলেই চৈতালির হাত ধরে ওপরে চলে গেল।ইফাদ অসহায় দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।রোকেয়া বেগম বললেন।ঠিক হয়েছে।বলেই নিজের রুমে চলে গেল।ইফাদ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।শেষমেশ আম্মু-ও আমার সাথে শত্রুতা করল।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here