এক মুঠো গোলাপ ৩৬

এক মুঠো গোলাপ
Sinin Tasnim Sara
৩৬
_____
বলা বাহুল্য ছেলে এবং মেয়ে দু’জন অন্য কেউ নয় আসাদ-অনিমা’ই।
কোনো এক সন্ধ্যায় অনিমা ডায়েরির পাতা ছিঁড়ে তাতে গোটা অক্ষরে লেখে,
“আমি আপনাকে ভালোবাসি প্রিয়তম। ভীষণ ভালোবাসি। আপনি কি আমায় প্রেমিকাস্বরূপ গ্রহণ করবেন?”
ভয় লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে আসাদের বাসায় যায়। ভাগ্য খারাপ, ঐ মুহুর্তে আসাদ বাসায় উপস্থিত ছিল না। তার হাতে তো চিঠিটা দিতে পারেনা কিন্তু সকলের অগোচরে ওর ঘরে গিয়ে পড়ার টেবিলের ওপর বইয়ের নিচে চাপা দিয়ে রেখে আসে।
বাসায় ফিরে বেশ কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তার পর মনে হয়, উত্তেজনার বশে কাজটা করা ঠিক হয়নি। যদি আসাদ ওকে বকা দেয়, ওদের সম্পর্কটা যদি খারাপ হয়ে যা তবে?
দুশ্চিন্তা এবং উৎকণ্ঠায় কাটে অনিমার রাত।
পরদিন ভয় ভয় করে কলেজে যায়। ক্লাসেও ঠিকঠাক মনযোগ দিতে পারেনা।
দুই পিরিয়ড পরে ছুটি নিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা ধরে। কি মনে করে বাড়িতে না গিয়ে ইউ টার্ন নিয়ে কলেজের কাছেই একটা পার্ক, সেখানে চলে যায়।
উদাস ভাবে বসে থাকে এক বেঞ্চে। কিছুক্ষণ পর ভূত দেখার মতন চমকে ওঠে, অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষটা ওর সামনে বসা।
আরেহ্ এটা স্বপ্ন নাকি সত্যি?
ভ্রু কুঁচকে নিজের হাতে একটা চিমটি কাটে। সত্যিই তো সে সামনে বসা । চোখ বড় বড় করে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আসাদ হাসতে হাসতে প্রশ্ন করে,
— কি বিশ্বাস হলো আমি সামনে আছি?
ও বোকার মতন মাথা ওপর নিচ করে। আসাদ শব্দ করে হেসে ওঠে। পকেট থেকে কি যেন একটা বের করে। অনিমা কৌতুহলী চোখে তাকিয়ে দেখে ওর লেখা চিঠিটা।
হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয় তার। তেতো ঢোক গিলে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকে।
আসাদ ওর ইতস্ততা বুঝতে পারে। হাসি থামিয়ে রেখে গলা খাঁকারি দেয়। চেহারায় গাম্ভীর্যতা ফুটিয়ে প্রশ্ন করে,
— এটা কি তুমি রেখে এসেছিলে কাল?
অনিমার তরফ থেকে কোনো জবাব আসেনা। মৃদু ধমক দেয় আসাদ।
— কথা বলছো না কেন?
ওর ধমকে ঈষৎ কেঁপে উঠে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে অনিমা। ধরা গলায় কাতর স্বরে বলে,
— আমি আপনাকে সত্যি ভালোবাসি।
ওর ভয়ে কুঁকড়ে যেতে দেখে পুনরায় হাসি পায় আসাদের, খুব কষ্টে নিজেকে সামলে গাম্ভীর্য্যতা বজায় রেখেই শুধোয়,
— বয়স কত তোমার?
— আঠেরো
কম্পিত কণ্ঠে উত্তর দেয় অনিমা।
— আমার বয়স কত জানো? ছাব্বিশ। আট বছরের ব্যবধান তোমার আমার। কড়ে আঙুলের সমান মেয়ে তুমি, আমাকে প্রপোজ করো হুমমম?
— ভালোবাসা কি অপরাধ! বয়সে ছোটো হলে ভালোবাসা যাবে না কে বলেছে?
— ভালোবাসা বিশারদ হয়ে গিয়েছো যে বড়। এই মেয়ে আমায় ভালোবাসার একটা কারণ বলো। যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ দর্শাতে পারো তাহলে তোমার প্রপোজাল আ্যাকসেপ্ট করবো।
— ভালোবাসা ম্যাথ নয় যে এটা ইক্যুয়েশান দিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে। ভালোবাসায় যুক্তি বলতে কোনো শব্দ হয়না। আর না থাকে যুক্তিসঙ্গত কারণ। ভালোবাসা এমনি এমনিই হয়ে যায়। এটা একটা ম্যাজিকের মতন।
চোখের পানি মুছে বলে সে।
— এসব আবেগের কথা রাখো। প্রাক্টিক্যাল কথাবার্তা বলো।
— যার যেমন বয়স সে তো তেমন কথাই বলবে। আবেগের বয়সে আমি প্রাক্টিক্যাল কথাবার্তা বলতে পারবো না নিশ্চয়ই।
— তাহলে এই বয়সে ভালোবাসতে এসেছো?
— আবেগ টাই একদিন নিরেট ভালোবাসায় পরিণত হবে আমি বিশ্বাস করি।
— তারমানে আমার ওপর তোমার স্রেফ আবেগ, ভালোবাসা নয়?
— সেটা কখন বলেছি।
— মাত্রই তো বললে।
— আমি আপনাকে বোঝানোর খাতিরে এমন করে বলেছি।
— মেয়ে তুমি সুবিধার না। মুখের ভেতরই কথা ঘোরাও।
— তাহলে আপনি কি চাইছেন আমি লিখি, প্রিয়তম আমি আপনাকে আবেগ করি। আপনি কি আমার আবেগ কে ভালোবাসায় রূপান্তরের সুযোগ দেবেন?
সটান দাঁড়িয়ে চড়া গলায় বলে অনিমা। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে তার।
আসাদ তাকে অবাক করে দিয়ে প্রতুত্তরে বলে,
— হ্যাঁ তাই লিখবে। আবেগ করে ভালোবাসার কথা লিখলে তো হবে না। যা ফিল করো তা-ই লিখবে নইলে আমি সুযোগ দেবো না। এমন মিথ্যেবাদী কথা ঘোরানো মেয়েকে কে সুযোগ দেবে হুঁ!
অনিমা বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করে,
— আমি আবেগ লিখলে আপনি আমাকে সুযোগ দেবেন?
— আমি কি বলেছি দেবো!
আসাদের কথায় মুখ ছোটো করে ফেলে অনিমা।
মাথা নিচু করে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে মাটিতে খোঁচায়। ওর চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠতে শুরু করে।
বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় আসাদ, চিঠিটা ভাঁজ করে পকেটে ভরে হালকা কাশি দিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে ক্ষীণ স্বরে বলে,
— প্রেম-ভালোবাসার কথা মাথায় এনে পড়াশোনা নষ্ট করার দরকার নেই। পায়ের নিচের মাটিটা শক্ত করো আগে তারপর এসব ভাবা যাবে।
— আপনি কি আমায় রিজেক্ট করলেন?
আর্দ্র গলায় শুধোয় অনিমা।
একটা বড় নিঃশ্বাস ছেড়ে আসাদ বলে,
— আমি সময় দিলাম তোমাকে।
কথাটা বলে আর এক মুহুর্ত দাঁড়ায় না সে। দ্রুত পা চালিয়ে বেরিয়ে যায় পার্ক থেকে।
অনিমা মাথা তুলে তাকায়। তার চোখেমুখে অবর্ণনীয় আনন্দ খেলা করে। চোখের কার্ণিশে জমে থাকা অশ্রুজল বাঁধন ছাড়া হয়ে গড়িয়ে পড়ে কপল বেয়ে। এ অশ্রু বিরহ বেদনার নয়, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অমূল্য সুখ প্রাপ্তির অশ্রু।
অনিমার সুখে প্রকৃতিও যেন আনন্দিত হয়। আচনক রৌদ্রজ্জ্বল আকাশ ফেঁড়ে ঝুম বৃষ্টি নামে। অনিমা দেখে আকাশের বুকে ধূসর মেঘের রেশ অতি নগন্য।
ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে তার।
রোদ্দুরে বৃষ্টি-নাকি প্রেম প্রেম বৃষ্টি!
কি নাম দেবে তার?
_______
ইউনিভার্সিটিতে বিশেষ ভালো বন্ধু হয়নি সুপ্তর। ওর ক্লাসমেইট রা গ্রুপিং করে থাকতেই পছন্দ করে। সেও একটা গ্রুপে আছে বলা চলে কিন্তু কলেজ লাইফে যেমন হুট করেই বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যেত অমন বেস্ট ফ্রেন্ড এখনো কেউ হয়ে ওঠেনি। তার ধারণা কখনো হবেও না। একটা বয়সের পর বন্ধুত্বও হয় প্রয়োজনের।
আজ ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় হঠাৎ শাড়ি পরতে ইচ্ছে হলো সুপ্তর। কিন্তু আপুর বাসায় ওর কোনো শাড়ি নেই। ভাবলো আপুরই একটা শাড়ি পরবে।
রাফনিদ সে-ই তখন থেকে ল্যাপটপে মুখ গুঁজে আছে। কে জানে কি করছে!
আপুর ঘরে গিয়ে বিরক্ত হলো সুপ্ত। বিরক্তিমাখা গলাতেই প্রশ্ন করলো,
— তোমার আলমারির চাবি কোথায়?
— কেন
ল্যাপটপ থেকে মুখ না তুলেই বললো রাফনিদ।
— একটা শাড়ি দাও তো আমাকে।
— কি করবি শাড়ি দিয়ে?
— কি আবার। পরবো
— তুই না ভার্সিটি যাবি!
— হ্যাঁ ওখানেই শাড়ি পরে যাবো
— ভার্সিটিতে হঠাৎ শাড়ি কেন! কাহিনি কি তোর
ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো রাফনিদ।
— উফফ কিছুনা। আজকে শখ হয়েছে শাড়ি পরে যাবো। দাও না প্লিইজ।
— ওয়ারড্রবের দ্বিতীয় ড্রয়ারে চাবি আছে যা বের করে পরে নে।
— আমি একা একা শাড়ি পরতে পারিনা। তুমি হেল্প করো।
— বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস,এখনো শাড়ি পরতে পারিস না ছিঃহ্।
— তুমি কি আমাকে হেল্প করবা আপু?
— পারবো না আমি বিজি
— যাও লাগবে না তোমাকে।
অভিমানী সুরে বললো সুপ্ত। রাফনিদ তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না।
কিন্তু শাড়ি বের করার পর সে তার কাজ ফেলে ঠিকই সুপ্তকে রেডি করে দিতে চলে এলো।
সুপ্ত কিছু বললো না কেবল ঠোঁট চেপে হাসলো একটু।
,
ভার্সিটিতে গিয়ে ফাইনাল পরীক্ষার খোঁজ খবর নিলো আগে। এক বান্ধবীকে পটিয়ে তাকে নিয়ে গেলো হলে, সিট টা ছেড়ে দিতে চাইছে সুপ্ত। তারই ব্যবস্থা করতে।
এরপর ক্লাস আ্যাটেন্ড করলো। ক্লাসে মাশাল্লাহ অনেক বকাও খেলো। সবশেষে মুখ ভার করে ক্যান্টিনে গিয়ে বসলো খাবার খেয়ে খালি পেট ভরতে।
আজ ওকে যে-ই দেখছে সে-ই প্রশ্ন করছে হুট করে শাড়ি কেন?
তেমন কোনো জবাব সে দিচ্ছে না কেবল হাসছে একটু করে।
,
ক্যান্টিনে বান্ধবীর সাথে টুকটাক কথাবার্তা বলতে বলতে মাত্রই বার্গারে কামড় বসিয়েছে সুপ্ত ঐ সময়ে কে যেন পেছন থেকে তার নাম ধরে ডাকলো।
ভ্রু কুঁচকে পিছু ঘুরে দেখে ওরই ফ্যাকাল্টির এক বড় ভাই। নাম স্নিগ্ধ। একটু মাস্তান টাইপ। কিন্তু চেহারা দেখলে বোঝা যায় না। সবসময় সাদা পাঞ্জাবি আর কালো প্যান্ট পরে থাকে। ভদ্র ভদ্র ভাব কিন্তু ভদ্রতার অভাব।
এমন অসময়ে এই পাঁজি লোককে দেখে সুপ্তর মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। কুঁচকানো ভ্রু জোড়া আরো কুঁচকে উঁকি মেরে দেখলো সদলবলে হাজির হয়েছে ব্যাটা।
ওদের দেখে সুপ্তর বান্ধবী এ্যানি চাপা স্বরে জিজ্ঞেস করলো, “মাস্তান গুলা এখানে কি করে দোস্ত?”
— জানিনা।
বিরক্তি চেপে চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়ালো সুপ্ত। কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে মিষ্টি করে বললো,
— আরে স্নিগ্ধ ভাইয়া।
— কি করছিলে সুপ্ত?
লজ্জাসূচক হাসি দিয়ে প্রশ্ন করলো স্নিগ্ধ। সুপ্ত মনে মনে কঠিন গালি দিয়ে উত্তর দিলো, “গিলতে বসছি হারামজাদা। তুই গিলবি?”
আর মুখে বললো,
— এইতো ফ্রেন্ডের সাথে বসে গল্প করছিলাম একটু।
— আমি কি ডিসটার্ব করলাম তোমাকে? (বসতে বসতে প্রশ্ন করলো স্নিগ্ধ)
সুপ্তর এবার গা পিত্তি যেন জ্বলে যায়। জোরপূর্বক হাসিটা বজায় রাখতে হলো তাকে।
— কি যে বলেন ভাইয়া! শুনেছি আপনার দর্শন পাওয়াই দুষ্কর; এত ব্যস্ত মানুষ আপনি। নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় নেই। সেখানে আমাকে নিজে এসে দেখা দিলেন, কথাও বললেন। এ যে বড়ই সৌভাগ্যের ব্যাপার।
সুপ্তর কথা শুনে এ্যানির মুখ হা হয়ে গেল, ও বিশ্বাসই করতে পারছে না সুপ্ত এই মাস্তানের এমন প্রশংসা করছে।
এদিকে এসব আহ্লাদী কথায় লজ্জা পেলো স্নিগ্ধ।লাল হয়ে উঠল ওর গাল। গলাটা খাঁদে নামিয়ে বললো,
— কি যে বলো না তুমি! কোথায় ব্যস্ততা আমার। আমি তো সবসময়ই ফ্রী তোমার জন্য।
সুপ্তর কান পর্যন্ত এসেছে ওর কথা। মনে মনে ভেঙচি কাটলো সে কয়েকবার, লাল বাঁদর তোর গালে আমি কটাস কটাস করে চড়াই। আমার জন্য তুই ফ্রী থাকবি কেন রে অসভ্য! সর এখান থেকে।
মুখে বললো,
— তা কি মনে করে ভাইয়া?
— নাহ্ মানে। সুপ্ত তোমাকে শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছে। সবসময় শাড়ি পরো । এটাই বলতে এসেছিলাম।
— থ্যাঙ্কিউ সো মাচ্। আপনি বলেছেন অবশ্যই শাড়ি পরবো ভাইয়া।
— ও কে? তোমার বান্ধবী?
এ্যানির দিকে আঙুল তাক করে জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধ। সুপ্ত মাথা নেড়ে বললো,
— হ্যাঁ। কি রে এ্যানি বড় ভাই কে সালাম দে?
এ্যানির হাতে চিমটি কাটলো সুপ্ত। ও থতমত খেয়ে হাত তুলে সালাম দিলো স্নিগ্ধ কে।
স্নিগ্ধ হাসি হাসি মুখ করে সালাম নিলো।
— ছোটাপু ভালো আছো?
— জ্বী ভাইয়া।
— আচ্ছা ভালো থাকলেই ভালো। তো সুপ্ত তোমার সাথে আমার একটা জরুরী কথা আছে।
— তার পূর্বে আমার একটা ইন্টারেস্টিং কথা শুনুন ভাইয়া।
— হ্যাঁ বলো।
— আপনি কি একটা জিনিস খেয়াল করলেন? আপনার আর আমার মাঝে একটা দারুণ মিল আছে। আমি এক্ষুনি আ্যানালাইসিস করলাম।
— কিরকম কিরকম?
উৎসুক হয়ে জানতে চাইলো স্নিগ্ধ।
— আপনার আর আমার নামে। দেখুন আপনার নাম স দিয়ে স্নিগ্ধ আমার নামও স দিয়ে সুপ্ত।
একদম ভাইবোনের মতন ম্যাচিং নাম। আবার আপনি আমার টু ইয়ার সিনিয়র যেমন বড় ভাইয়ারা হয়।
নাম শুনলে তো যেকেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিবে স্নিগ্ধ সুপ্তর বড় ভাই। তাই না?
ঠিক বলেছি না আমি এ্যানি?
এ্যানির হাতে টোকা মেরে বললো সুপ্ত। এ্যানি ওর এই সময়ে এরকম কথার মানে বুঝতে পারলো না। বোকার মতন মাথা নাড়লো কেবল।
ওদিকে স্নিগ্ধর মুখ শুকিয়ে এতটুকু হয়ে গেছে। সে আর কিছু বলতে যাবে তার পূর্বে সুপ্ত হাত ঘড়ির দিকে একবার তাকিয়ে ব্যস্ত হবার ভঙ্গি করে বললো,
— এ মা এতটা বেজে গিয়েছে। আমায় তো ফিরতে হবে, একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে। দেখেছেন স্নিগ্ধ ভাইয়া ভুলেই গিয়েছি একদম।
আচ্ছা আমি আজ আসি? আবার কথা হবে আপনার সাথে। বাই।
হ্যান্ড ব্যাগটা টেবিল থেকে তুলে নিয়ে হাঁটা দিলো সুপ্ত।
ওকে এগোতে দেখে এ্যানিও পিছু পিছু চলে গেল।
ভার্সিটির বাইরে এসে ও সুপ্তকে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হলো এসব ভেতরে?
— বড় ভাইয়ের সংখ্যা বাড়লো একটা।
— মানে?
— মানে সে আমায় প্রপোজ করতে এসেছিল আমি তাকে বড় ভাই বানিয়ে দিলাম।
— তুই কেমনে জানলি সে তোকে প্রপোজ করতে এসেছিল?
— ম্যাজিক করে জেনেছি।
— আহা বল না।
— বুদ্ধু সে আমায় বেশ কয়েকদিন থেকেই ফলো করছিল। ভার্সিটিতে আবার নেটেও।
আজ আসবো শুনে সদলবলে কেমন হাজির হয়েছে দেখলি? আজ প্রপোজই করতে এসেছিল। ছোকরা গুলো বারবার ইশারা করছিল তাকে। আমি যখন দেখলাম সে পকেট থেকে ফুল বার করছে তখনই বুঝে গেলাম ভাইয়া থেকে সাইয়া হতে চায় ব্যাটা!
— তুই তার ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে আপন ভাই ই বানিয়ে দিলি।
হেসে উঠল এ্যানি। সুপ্ত গৌরবের হাসি হেসে বললো,
— ইয়েস ব্রো
— কি জোস আইডিয়া রে তোর।
— আমাকে বস বলে ডাকবি এখন থেকে।
— শিওর বস।
স্যালুট করে বললো এ্যানি।
সুপ্ত ওর কান্ড দেখে খিলখিল করে হেসে উঠল।
চলবে,

★Unedited

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here