#এক_রক্তিম_আলো
#আরোহী_ইসলাম
#পর্ব:১১+১২
ধ্রুব অবনির দিকে সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বললো ‘ অবনি তুই মা’র’পি’ট করলি কিভাবে?
অবনি তখন মুচকি হেসে বললো ‘ দেখতেই তো পেলে।’
ধ্রুব তখন বললো ‘ আসলে তুই কে বলবি?
অবনি ভ্রু কুচকে বললো ‘ আমি অবনি।’
ধ্রুব তখন বলললো ‘ শুধুই অবনি নাকি এর পিছনে অন্য কোনো কিছু আছে?.
অবনি তখন শান্ত চাহনিতে বললো ‘ তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো?.
ধ্রুব শ্বাস নিয়ে বললো ‘ না।’
অবনি তখন বললো ‘ আচ্ছা চলো বাসায় যেতে হবে।’
ধ্রুব হুম বললো।
তারপর অবনি আর ধ্রুব বাসায় আসলো। অবনিকে দেখে ধ্রূবের মা বললো ‘ কোই গিয়েছিলি তোরা?
অবনি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বললো ‘ যারা আমার পরিবারের ক্ষ’তি করতে আসবে।তাকে আমি তার উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবো।’
এই বলে অবনি হন হন করে ধ্রুবের রুমে আসলো। ধ্রুব ওর মায়ের সাথে কিছুক্ষন কথা বলে সেও নিজের রুমে আসলো। ধ্রুব রুমে এসে দেখে অবনি বসে আছে সোফায়। ধ্রুব অবনির কাছে এসে মুচকি হেসে বললো ‘ তোকে না রাগলে ভিষন কিউট গুলুমুলু লাগে।’
অবনি তখন রেগে বললো ‘ সর এইখান থেইকা শালা। তুই যে এতোটা ভিতু সেটা জানলে তোর মতো ভিতুরে বিয়ে করতাম না।’
অবনির কথায় ধ্রুব বুঝতে পারলো অবনি রেগে গেছে। ধ্রুব শান্ত কন্ঠে বললো ‘ আমি যদি ওদেরকে মা’র’তাম তাহলে তোর এই সাহসিকতা দেখতে পারতাম না।’
ধ্রুবের কথা শুনে অবনি রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে বললো ‘ সরি রেগে গিয়ে তুই বলে ফেলেছি।’
ধ্রুব মুচকি হেসে অবনির নাক টিপ দিয়ে বললো ‘ বুঝতে পারছি।’
কিছুক্ষন পর
অবনি ড্রয়িং রুমে আসতেছে হঠাৎ রাহির মায়ের রুমের সামনে আসতেই শুনতে পেলো রাহির মা ফোনে কাউকে বলছে ‘ আমার মেয়েকে তুমি দেখে রেখো।’
অবনি কথাটা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে গেলো। অবনি ওইখান থেকে নিজের রুমে এসে আনিসুল আহমেদকে কল দিলো। কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর আনিসুল আহমেদ ধরতেই অবনি বললো’স্যার!
আনিসুল আহমেদ বললো’ বলো?
অবনি শ্বাস নিয়ে বললো’ আপনাকে রাহির মায়ের ফোন হ্যাক করতে হবে তারপরই আমরা জানতে পারবো রাহি কোথায়
আনিসুল আহমেদ চিন্তিত কন্ঠে বললো’ ওকে তুমি কি এখন আসতে পারবে?
অবনি কিছু একটা ভেবে বললো’ আচ্ছা আমি আসতেছি।’
এই বলে অবনি কল কেটে দিয়ে পিছনে ঘুরে দেখে ধ্রুবের মা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অবনি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো। অবনি ধ্রুবের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ তুমি এইখানে?
ধ্রুবের মা অবনিকে বললো’ তুই আসলে কি করিস? সত্যি বল।’
অবনি মনে মনে বললো ‘আমাকে আজ সত্য বলতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
এই বলে অবনি দরজা আটকে ধ্রুবের মায়ের হাত ধরে বললো’ কাকি আমি একজন সি আইডি অফিসার।’
ধ্রুবের মা অবাক হয়ে বললো’ মানে? তুই তাহলে সেই অবনি চৌধুরী?
অবনি মাথা নিচু করে বললো’ হুম।’
ধ্রুবের মা কিছুটা রেগে বললো ‘ তুই এই কথাটা এতোদিন লুকিয়েছিস কেন? আমি কি তোর কেউ হয়না?
অবনি শান্ত কন্ঠে বললো’ আমি যদি তোমাদের বলতাম তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যেতো যার জন্য বলিনি। প্লিজ তুমি এই কথাটা কাউকে বলো না সময় হলে আমি নিজেই বলবো।’
ধ্রুবের মা মুচকি হেসে বললো ‘ বলবোনা।
অবনি চিন্তিত কন্ঠে তখন বললো
‘আচ্ছা শুনো আমাকে এখনই অফিসে যেতে হবে।’
ধ্রুবের মা মুচকি হেসে অবনিকে বললো ‘ আচ্ছা যা।’
অবনি মুচকি হেসে অফিসে চলে গেলো।
কিছুক্ষন পর
অবনি অফিসে এসে আনিসুল আহমেদ কে বললো ‘স্যার ফোন হ্যাক করেছেন?
আনিসুল আহমেদ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ হ্যাঁ।’ অবনি বললো ‘ কল রেকর্ড চেক করেন।’ অবনির কথায় আনিসুল আহমেদ আচ্ছা বলে কল রেকর্ড চেক করতেই শুনে’ রাহির মা একটা মহিলার সাথে কলে কথা বলেছে।’
আনিসুল আহমেদ কল রেকর্ড শুনতেই অবাক হয়ে যায়। অবনি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলে ‘ স্যার আমার ধারনায় ঠিক হয়েছে।’
আনিসুল আহমেদ বললো ‘ তাড়াতাড়ি আমাদেরকে ** এই জায়গাই যেতে হবে।’ তুমি সবাই কে ডাক দাও।’ অবনি আচ্ছা বলে তাদের টিমদের সবাইকে বললো ** এই জায়গাই এখনই যেতে হবে।’
অবনি রাগী কন্ঠে বললো ‘ মিথ্যা কখনো ঢাকা থাকে না।’
এদিকে
ধ্রুব রুম থেকে বের হয়ে রাহির মায়ের রুমের কাছে আসতেই দেখে সে রুমে বসে হাসতেছে। ধ্রুব ভ্রু কুচকে রাহির মাকে ডাক দিতে যাবে তার আগেই শুনতে পেলো রাহির মা হো হো করে হেসে বলতেছে
এই বাড়ির লোকগুলো কতটা বোকা। বিশেষ করে ধ্রুব ওকে রাহি প্রেমের জালে ফেলেছে আর ও বুঝতেই পারেনি।’
কথাটা শুনেই ধ্রুব অবাক হয়ে গেলো। ধ্রুব মনেমনে বললো ‘ তাহলে এতোদিন রাহি আমার সাথে প্রেমের নাটক করেছিলো ওহ্ শিট।’
কিছুক্ষন পর
অবনিরা সবাই ** এই জায়গাই আসলো। অবনিরা গাড়ি থেকে নেমে দেখে একটা জঙ্গলের ভিতরে বাড়ি। অবনি শ্বাস নিয়ে আনিসুল আহমেদকে বললো ‘ স্যার আমাদেরকে ওই বাড়িতে যেতে হবে।’
অবনির কথায় সবাই বললো আচ্ছা।’ তারপর তাড়া বাড়িটার কাছে আসলো। অবনি দরজার কাছে এসে দেখে ভিতর থেকে দরজাটা লক করা। আনিসুল আহমেদ অবনিকে সরতে বলে দরজায় জোরে ধাক্কা দিতেই দরজা ভেঙ্গে গেলো। অবনিরা সবাই বাড়ির ভিতরে আসলো। অবনি সবাই কে চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো ‘ নিচের সব রুম সার্চ করতে।’
অবনির কথায় পুলিশ অফিসাররা মাথা নাড়িয়ে নিচের সব রুম সার্চ করতে লাগলো। অবনি ব’ন্ধুক হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে উপরের রুমে এসে এক এক করে দেখতে লাগলো। কিন্তু রাহিকে পেলো না। অবনি ডান পাশের শেষ রুমের সামনে এসে দেখে দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ। অবনি দরজায় জোরে করে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো। অবনি ভিতরে এসে দেখে রাহি শুয়া আর তার পাশে একটা মহিলা বসে আছে। অবনিকে দেখে মহিলা এবং রাহি অবাক হয়ে গেলো। অবনি বন্ধুক রাহির দিকে তাক করে সবাই কে ডাক দিতেই সবাই সেই রুমে আসলো। অবনি রূঢ় কন্ঠে রাহিকে বললো ‘ ইউ আর আন্ডার এরেস্ট।’
রাহি ভয় পেয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললো ‘ তুই এইখানে কেনো? আর কিভাবে জানলি?.
অবনি মুচকি হেসে মেয়ে পুলিশ অফিসারকে বললো ‘ এনাদের দুইজনকে ধরো।’
অবনির কথায় তারা রাহি আর ওই মহিলার কাছে আসলো। অবনি চোখ মুখ শক্ত করে রাহির গালে নিজের সর্বত্র শক্তি দিয়ে থা’প্পড় দিয়ে বললো ‘ মিথ্যা কখনো লুকিয়ে থাকে না একদিন না একদিন ঠিকই বের হয়। সি আইডির হাত থেকে কেউ বাচঁতে পারে না। সেখানে তুই তো মাছি।’
রাহি রেগে বললো ‘ আমি তোকে ছাড়বো না।’
আনিসুল আহমেদ মুচকি হেসে বললো ‘ কে কাকে ছাড়ে এইটা পরে দেখতে পাবেন।’ অবনি ওনাদের নিয়ে চলো থানায়। ভালো করে এনাদের খাতির যত্ন করতে হবে তো।’
অবনি ‘ওকে স্যার।
তারপর সবাই ওইখান থেকে থানায় আসলো। অবনি রাহি আর ওই মহিলাকে থানায় নিয়ে এসে জেলের ভিতরে রাখলো। অবনি আনিসুল আহমেদকে বললো ‘ স্যার এদের লিডারকে তো ভালো ভাবে যত্ন করতে হবে তাই না?.
আনিসুল আহমেদ তখন বললো ‘ হ্যাঁ চলো।’
এই বলে আনিসুল আহমেদ আর অবনি নিজের বাসার দিকে রওনা দিলো। অবনি বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিতেই ধ্রুবের মা খুলে দিলো। অবনি ভিতরে এসে দেখে রাহির মা সোফায় বসে আছে। অবনি রাহির মায়ের সামনে এসে বললো ‘ ইউ আর আন্ডার এরেস্ট।’
অবনির কথায় রাহির মা অবনির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ‘ মানে?
অবনি ঝাঝালো কন্ঠে বললো ‘ নিজের মেয়ের সাথে হাত মিলিয়ে তুমি শিশুদেরকে কিড’ন্যা’প করে তাদেরকে অন্য দেশে পাচার করতে। তোমার সব কু কর্মের কথা আমরা যেনে গেছি।’
অবনির বাবা কিছুটা অবাক হয়ে অবনিকে বললো
‘ কি বলছিস তুই এইগুলো?.
রাহির মা ন্যাকা কন্ঠে বললো ‘ ও মিথ্যা বলছে প্লিজ তোমরা ওর বানানো কথা বিশ্বাস করো না।’
অবনি তখন শান্ত কন্ঠে বললো ‘ যা শুনেছো সেটাই।’
ধ্রুব প্রচন্ত অবাক হয়ে বললো ‘ কাকি এতোটা নিচু তুমি ছিহ্।’
ধ্রুবের মা ঘৃণার চোখে রাহির মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো’ তোকে দেখে না এখন নিজেরই লজ্জা করছে। এতোদিন তোর সাথে এক বাড়িতে থেকেছি।’
অবনি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো ‘ কাকি সবাই কে এখন থানায় যেতে হবে ওইখানে গেলে আরো সত্য জানতে পারবে।’
অবনির কথায় ধ্রুবের মা বললো ‘ আচ্ছা।’
কিছুক্ষন পর অবনি রাহির মাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসলো। অবনির সাথে সবাই আসছে ইতিমধ্যে সাংবাদিকরাও খবর পেয়ে গেছে শিশু পাচার কারীদের ধরেছে শুনে। অবনি জেলের ভিতরে এসে লাঠিটা হাতে নিয়ে রাহির হাতে কিছুটা জোরে বা’রি দিতে রাহি কেদেঁ দিলো। রাহির মা রেগে অবনিকে বললো ‘ তুই ওকে মা’র’ছি’স কেনো?
অবনি রাগী কন্ঠে বললো ‘ যেটা আমার কাজ আমি সেটাই করছি।’
অবনি রাহির দিকে তাকিয়ে চেচিয়ে বললো ‘ তুই আর্থিক আহমেদকে খু’ন করেছিস তাই না?
রাহি চুপ করে রইলো। অবনি শ্বাস নিয়ে বললো ‘ দেখ ভালো ভাবে বলতেছি সব বলে দে না হলে কিন্তু তোর হাড্ডি একটাও রাখবে না কেউ।’
রাহি তার মায়ের দিকে তাকিয়ে পৈশাচিক হাসি দিয়ে বললো ‘ সব তো জেনে গিয়েছিস তাহলে বলি।’
রাহি বলতে লাগলো
‘ আমি,আম্মু, আর্থিক এই কাজ করতাম। শিশুদেরকে অন্য দেশে পাচার করতাম কারন এতে লাখ লাখ টাকা আমরা পেতাম। আমাদের লোভ হয়ে যায় এই কাজ করতে করতে। কিন্তু কিছু মাস আগে আশ্রমের বাচ্চাদের কিড’ন্যা’প করে আমার লোকেরা ওদেরকেও বিদেশে পাঠানোর জন্য প্লান করা হয় কিন্তু আমাদের সব প্লানে সি আইডি অফিসাররা বাধা দেয়। আমি খুব সাবধানে সেই দিন শিশুদেরকে পাচার করার জন্য গোডাউনে গিয়েছিলাম কিন্তু তোরা জেনে গিয়ে ওইখানে আ’ক্র’মণ করেছিলি। তারপর আমি তোদের কাছে ধরা পরে যায়। আমার সাথে আম্মুও আসে। আম্মু আমার বুকে গু’লি করে সেটা তোদের অগোচরে। তারপর তোরা আমাকে হসপিটালে নিয়ে যাস কিন্তু আম্মু ডাক্তারকে মে’রে ফেলার হুম’কি দেয় যার জন্য ডাক্তার আমাকে মৃত্যু ঘোষণা করে আর তোরা ওইখান থেকে চলে যাস। আম্মু আমাকে ওই জঙ্গলের বাড়িতে নিয়ে আসে। মিলা ওনি আমাকে দেখাশোনা করতো। কিন্তু আজ তোরা আমাদের খোঁজ পেয়ে গেলি।’
এই বলে থামলো রাহি।’
ধ্রুবের মা সব শুনে অবাক হয়ে গেলো। অবনি রাহিকে প্রশ্ন চোখে বললো ‘ আর্থিককে মে’রে ফেললি কেনো?
রাহির মা মাথা নিচু করে বললো
‘ ও আমাদের সাথে এই কাজ করতে চাইতো না। আমি ওকে বলেছিলাম তুমি যদি এই কাজ না করো তাহলে তোমাকে মে’রে ফেলতে বাধ্য হবো। কিন্তু ও বলেছে পুলিশকে সব বলবে। আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যার জন্য অফিসে গিয়ে ওকে মে’রে ফেলি। সিসিটিভি নষ্ট করে দেয় যাতে কেউ না জানতে পারে। আমরা প্লান করেছিলাম সব দোষ ধ্রুবের ঘাড়ে দিবো কিন্তু তার আগেই ধরা পরে যায়।’
অবনি চোখ মুখ খিচে বললো ‘ তোমাকে আমি নিজের মায়ের আসনে বসিয়েছিলাম। রাহিকে আমি পালন করেছি। ও আমাকে দেখতে পারে না কিন্তু আমি তো ওকে ভালোবাসি। তোমাদের তো টাকা পয়সার কমতি ছিলো না তারপরও এই রকম কাজ করলে?
রাহি অবনির পা ধরে বললো ‘ আমায় ক্ষমা করে দে বাঁচা আমাকে প্লিজ।’
অবনির বাবা সব শুনে রেগে বললো ‘ অবনি ওদের যেনো কঠিন শা’স্তি হয়। যা পাপ করেছে তার ফল যেনো পাই। আমি অনেক বড় ভুল করছি ওকে বিয়ে করে ছিহ্।’
এই বলে ধ্রুবের মা চলে গেলো।
অবনি রাহির থেকে নিজের পা সরিয়ে ভেজা কন্ঠে বললো ‘ মনে আছে? তোকে বলেছিলাম একদিন আমাকে তোর খুব প্রয়োজন হবে,
রাহি তখন মাথা নিচু করে রইলো। আনিসুল আহমেদ বললো ‘ এদের যাবত জীবন জেল হবে।’
রাহি কান্না করে দিলো। অবনি জেল থেকে বের হয়ে ধ্রুবের মায়ের সামনে এসে কান্না করে দিলো। অবনির কান্না দেখে ধ্রুবের মায়ের চোখে জল চলে আসলো। অবনিকে কাদতে দেখে ধ্রুবের বুকের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠলো। অবনি কান্না করতে করতে বললো ‘ সব শেষ হয়ে গেলো।’
ধ্রুবের মা তখন বললো ‘ আমি তো আছি।’ যে যা করেছে তার ফল তো তাকে পেতেই হবে।’
আনিসুল আহমেদ শ্বাস নিয়ে ধ্রুবকে বললো ‘ আপনি অনেক লাকি ম্যান অবনির মতো একটা মেয়েকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন। মেয়েটা আপনাদেরকে অনেক ভালোবাসে।’
ধ্রুব মুচকি হাসলো।
তারপর অবনি চোখের পানি মুছে আনিসুল আহমেদকে বললো ‘ স্যার আমাদের কাজ সফল হয়েছে।’
আনিসুল আহমেদ মুচকি হেসে বললো ‘ সব তোমার ক্রেডিট।’ অবনি কিছুটা হেসে বললো ‘ তাহলে এইবার আমাকে যেতে হবে।’ আনিসুল আহমেদ বললো ‘ আচ্ছা যাও।’
বেশ কিছুক্ষন পর
অবনিরা বাসাই এসেছেন কিছুক্ষন আগে। অবনি নিজের রুমে বসে মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। ধ্রুব অবনির রুমে এসে দেখে অবনি তার মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। ধ্রুব কাশি দিলো। ধ্রুবের কাশির শব্দ পেয়ে অবনি মাথাটা তুলে ধ্রুবের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ জানি তুমি আমার সত্য যেনে আমাকে ভুল বুঝতেছো। তুমি আমার থেকে ডিভোর্স চেয়েছিলে না আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো।’
অবনির কথা শুনে ধ্রুব কিছুটা রেগে বললো ‘ এই তোকে কি আমি ভুল বুঝেছি? অসহ্য,আমি তোর সত্যটা অনেক আগেই জানতাম কিন্তু জেনেও না জানার ভান করে থেকেছি।’
ধ্রুবের কথা শুনে অবনি অবাক হয়ে বললো ‘ কিভাবে জানলে?
ধ্রুব শান্ত কন্ঠে বললো ‘ সেইদিন তুই বাড়ি থেকে বের হলি তারপর আমি তোর পিছু পিছু তোকে ফলো করি। তোকে থানায় ডুকতে দেখে আমার সন্দেহ হয়। আমি মাক্স পরে এক পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞেস করি ওনি বলে অবনি চৌধুরী। তারপর থেকে তুই একজন সি আইডি তা জানতে পারি।’
অবনি শান্ত চাহনিতে বললো ‘ রাহি তোমাকে কখনো ভালোবাসেনি। ও তোমাকে নিজের কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিলো কিন্তু তার আগেই ওকে ধরে ফেলি।’
ধ্রুব দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো
‘ হুম জানি। কাকির কথা শুনেছিলাম আমি।’
অবনি মলিন কন্ঠে বললো
‘ এখন কি করবে?
ধ্রুব মাথা নিচু করে বললো ‘ অবনি আমি তোকে ভালোবাসি। রাহিকে ছাড়া আমি থাকতে পারতাম কিন্তু তোকে ছাড়া আমি কখনোই থাকতে পারবো না। তোকে একদিন দেখতে না পারলে আমার শ্বাস প্রশাস যেনো বন্ধ হয়ে যায়।যেটা রাহিকে না দেখলে হয়না। আমি তোর ওই কিউট মুখের হাসি টাকে ভিষন ভালো বেসে ফেলেছি। তুই কি এই ভিতু ছেলেটাকে ভালোবাসবি?
ধ্রুবের কথা শুনে অবনি মুচকি হেসে বললো ‘ আমি তো তোমাকে ভালোবাসি সেন্টি জামাই।’
ধ্রুব মুখ ফুলিয়ে বললো ‘ সেন্টি জামাই?
অবনি হেসে বললো ‘ হুম।’
অবনির হাসা দেখে ধ্রুবও মুচকি হাসলো।
————-
কিছু মাস পর
কথায় অছে না সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। ঠিক তেমনি অবনির জীবনও থেমে নেই।
অবনি সোফায় বসে আচার খাচ্ছে। আর ধ্রুব মুখ ফুলিয়ে অবনির পাশে বসে আছে। ধ্রুবের মা রান্নাঘর থেকে বের হয়ে অবনির কাছে এসে মুচকি হেসে বললো ‘ অবনি তোর কি কিছু খেতে মন চাচ্ছে তাহলে বল?.
ধ্রুব বিরক্ত কন্ঠে বললো ‘ ওর খিদে নেই কিছু বানাতে হবে না।’
ধ্রুবের কথা শুনে অবনি ন্যাকা কান্না কেদেঁ বললো ‘ আমি কি কিচ্ছু খাইনি সব তোমার ছেলে খাই।’
অবনির কথা শুনে ধ্রুব বললো ‘ হ্যাঁ দেখতেই পাচ্ছি।’ ধ্রুবের মা মুচকি হেসে বললো ‘ আমি অনেক অনেক খুশি নাতি নাতনির মুখ দেখতে পারবো।’
এই বলে তিনি চলে গেলো। ধ্রুব মুচকি হাসলো। অবনি ধ্রুবের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ আচ্ছা সেন্টি জামাই আমাদের বেবি তোমাকে কি বলবে মামু না আব্বু?
অবনির এই রকম কথায় ধ্রুব চোখ মুখ খিচেঁ বললো’ আব্বু বলবে।’
অবনি মুচকি হেসে বললো
‘ এক রক্তিম আলো করে আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছে।’
ধ্রুব অবনির হাত ধরে বললো ‘ ভালোবাসি অবনি।’ অবনি মুচকি হাসলো।
– সমাপ্তি।
(