#এখানে_আকাশটা_ভালবাসার
#লেখিকাঃ নয়নতারা নাতাশা
#৩৪_শেষ_পর্ব
.
বিছানায় অনেকক্ষন যাবত এপাশ ওপাশ করলো রিদিমা।
তার শাস্তি কবে শেষ হবে!
এ কি শুনলো সে!
এ কথা শোনার আগে কেন তার মৃত্যু হলো না!
তার মেয়ে কেন এত কষ্ট পাচ্ছে!
এসব ভাবনা রিদিমাকে জর্জরিত করে দিচ্ছে। বালিশে মুখ ডুবিয়ে নির্ঝর ভাবে কেঁদেছে সে।
ঈশানের থেকে মায়ার খবর শোনার পর থেকে তার মনে হয়েছে এখনি যদি ছুটে যেতে পারতো!
কোনোদিন যা নয় আজ তাই করলো রিদিমা।
ধর্মের প্রতি কোনো বিশ্বাস বা ধর্মীয় কোনো ইবাদত রিদিমা করত না।
কিন্তু আজ মনে হলো স্রষ্টার কাছে চেয়ে তার সব আয়ু দিয়ে যদি মেয়েটাকে বাঁচানো যেত!
সারারাত নামায পড়লো রিদিমা।
আল্লাহর কাছে সারারাত কান্নাকাটি করল।
সকাল না হতেই ছুটে গেল মেয়ের কাছে।
হাসপাতালের নিচে গিয়ে নওশিকে কল করল।
“নওশি আমার মেয়ে!” কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল রিদিমা।
নওশি ধীরে ধীরে কেবিন নাম্বার বলে দিলো।
রিদিমা দৌড়াতে লাগল কেবিনের দিকে।
আজ রিদিমা পাগলপ্রায়।
কেবিনের বাইরেই নওশি দাঁড়িয়ে ছিল।
“নওশি!” আর কিছু বলতে পারল না রিদিমা।
মেয়েকে দেখার আগেই সেখানে বসে অঝোরে কাঁদতে লাগল!
এ কান্না সহ্য করা খুব শক্ত।
বেশ কিছুক্ষণ কান্নার পর শান্ত হলো রিদিমা।
“ভাবি শান্ত হও রাফসানার সামনে গিয়ে কান্না করো না”
“মায়া উঠেছে?”
“না তবে এতক্ষণে উঠার কথা। তুমি যাও ওয়াশরুম থেকে একটু ফ্রেশ হয়ে এসো”
“আচ্ছা” হতবিহ্বল ভাবে হেঁটে চলল রিদিমা।
নওশির মনে হলো রিদিমা যেকোনো সময় পড়ে যাবে।
দৌড়ে গিয়ে ধরল রিদিমাকে।
কি অদ্ভুত!
একসময় রিদিমা তাদের কেউ ছিল না।
তারপর পরিবারের একজন,
তারপর আবার বাইরের মানুষ হয়ে গিয়েছিল।
হয়তো বাইরের মানুষ হয়েই থাকতো যদি না রাফসানা না থাকতো।
রাফসানা কি থাকবে!
নিজের মনেই চমকে উঠে নওশি।
রিদিমাকে নিয়ে মায়ার কেবিনে ঢুকতে ঢুকতে মিষ্টি করে নওশি,
“রাফসানা আম্মু, দেখো সোনাপাখি কে এসেছে!”
“মামনি?” মায়ার ছোট্ট মুখের প্রশস্ত হাসিটুকু তার মুখের স্নিগ্ধতা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
জ্বলজ্বল করছে মুখটা।
মেয়ের মুখে এই প্রথম মা ডাক শুনে রিদিমার যেন সব কান্না উপচে পড়তে চাইল।
বুঝতে পেরে নওশি চাপা স্বরে বলল,
“ভাবি না!”
রিদিমা বহু কষ্টে নিজেকে সামলে বলল,
“হ্যাঁ রে সোনা মামনি এসেছে”
“অনেক দেরি করে এলে কেন?”
এই কথার উত্তর যোগালো না রিদিমার মুখে।
“আম্মু তুই সুস্থ হ, দেখবি মামনি বাবা সবাই থাকবে তোর পাশে”
“আমি সুস্থ হলে আমার মা কেও চাই, মা খুব ভাল”
মায়ার কথা শুনে রিদিমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল নওশির দিকে।
নওশি বলল,
“তানহার কথা বলছে”
একমুহূর্তে চুপ করে রইল রিদিমা।
আজ তার মেয়ের মনে সে যে জায়গা নিতে পারেনি তানহা নামের কোনো একটা মেয়ে তা পেরেছে।
রিদিমার খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে মেয়েটাকে।
মায়াকে সকালে অল্পকিছু খাওয়ানো হলো।
সাধারণত খুব কম খায় মায়া।
হঠাৎ প্রশ্ন করে বসল,
“ফুপি আমি কবে বাড়ি যাবো? আমার বাগানের গাছ গুলো….”
“এইতো সোনা আর কয়েনদিন পরেই যাব”
“হুম, এখানে আর ভাল লাগছে না”
এভাবে রিদিমা আর নওশির সাথে কথা বলতে থাকল মায়া।
কিছুক্ষণ পর বাসার সবাই আসলো আজ একসাথে।
সাহরাফ সাহেবের পুরো ফ্যামিলি।
সাধারণত এত মানুষের মাঝে রোগীকে রাখা হয়না।
কিন্তু মায়া আর নওশি ঈশানের বিশেষ অনুরোধে মায়ার ইচ্ছে অনুযায়ী তিরিশ মিনিটের জন্য এলাও করা হয়েছে।
নিশিকার ছেলে নাহিয়ান মায়াকে খেলতে ডাকল,
“আপি উঠো, খেলবে চলো”
মুচকি হাসলো মায়া।
“আমাকে যেতে দিচ্ছে না নাহিয়ান!”
“আচ্ছা ঠিক আছে তুমি সুস্থ হও, তারপর খেলব আমরা”
আরজু একটা কথাও বলছে না।
মায়ার খুব কাছাকাছি থেকেছে সে।
পাঁচ বছরের আরজু খুব বুঝতে পারছে আপুর কি যেন হয়েছে।
নওশি একবার ভাবল বাচ্চা দুটো থাক, তারপর আবার কি ভেবে দুজনকে খেলতে বসিয়ে দিয়ে এলো।
এমন পরিবেশে বাচ্চাদের না থাকায় ভালো।
রুমে সবার শেষে ঢুকেছিল সায়ান, তানহার হাত ধরে।
নওশি আগে থেকেই সবাইকে বলেছিল রিদিমা থাকবে।
তাই কেউ বিরূপ কোনো কিছু ভাবল না বা বলল না।
এই পরিস্থিতিতে কারোর তেমন অবস্থা নেই।
“বাবা…” চমকে উঠে সায়ান, চমকে উঠে রিদিমাও কিন্তু রিদিমা ফিরে তাকায় না।
“কি রে সোনা?”
“আমার পাশে এসে একটু বসবে?”
সায়ান দ্রুত গিয়ে মায়ার পাশে গিয়ে বসল।
“এইতো আম্মু!”
মায়া তখন রিদিমার দিকে তাকিয়ে ডাকল,
“মামনি?”
রিদিমা অন্যদিকে মুখ লুকালো, সহ্য করতে পারছে না সে।
“একটু এদিকে এসো মামনি!” ক্ষীন কণ্ঠে বলল মায়া।
ধীরে ধীরে রিদিমা গিয়ে মায়ার বামপাশে বসল।
মায়ার শরীরের শক্তি কমে এসেছিল।
সে খুব ধীরে খুব সন্তর্পণে এক হাত দিয়ে সায়ানের একটা হাত আর আরেকটা হাত দিয়ে রিদিমার একটা হাত নিয়ে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে রাখল।
এ দৃশ্যের অনুভূতি হয়তো কোনো শব্দের বর্ণনা করা যায় না।
মায়া চোখ বুজলো।
সায়ান রিদিমা নিজেদের দিকে একবার তাকিয়ে মায়ার দিকে চেয়ে রইল।
মায়া ভাবছে, ‘আমি আরো আগে কেন অসুস্থ হলাম না? অন্তত বাবা মায়ের পাশে এভাবে থাকতে পারতাম!
সবাইকে যখন পেলাম তখন আমি আর আনন্দ করতে পারছি না, আমার সাথেই কেন এমনটা হলো!’
অঝোরে মুক্তোর মতো অশ্রু গড়াতে লাগল মায়ার দুচোখের কোনা দিয়ে।
পৃথিবীর কোনো বাবা মায়ের পক্ষে সন্তানের চোখের পানি সহ্য করা সম্ভব হয় না।
যদি সে বাবা মা হয়।
আর মৃত্যুশয্যায় মেয়ের চোখের পানি সায়ান রিদিমা কি করে সহ্য করবে!
সায়ান মাথা নিচু করতেই তার চোখ দিয়েও ঝরঝর করে পানি পড়তে লাগল।
রিদিমা পাশে থাকা নওশিকে এক হাতে জড়িয়ে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকল।
সাহরাফ সাহেব বাইরে বেরিয়ে গেলেন।
কিন্তু তারপরই আবার ফিরে এলেন।
কান্না লুকানোর যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে সবাই!
নওশি নিজেকে খুব কষ্টে সামলে রেখেছে।
মায়ার কানে যাতে না পৌঁছায় তেমন চাপা কণ্ঠে বলল,
“কি শুরু করেছ চুপ করো তোমরা।”
সবাই কিছুটা ধাতস্থ হলো।
আরো কিছুক্ষণ মায়া এভাবে থাকার পর চোখ খুলল।
“মা…”
তানহার চমক ভাঙল।
তারমনে ভয় খারাপ লাগা সব একসাথে কাজ করছে।
বাঙালি মেয়েরা তাদের স্বামী বা ভালবাসার মানুষের পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারে না, যদি সে সত্যিকার অর্থে ভালবেসে থাকে।
“জ্বি মা বলো”
দূরে থেকেই উত্তর দেয় তানহা।
এতক্ষনে রিদিমা একবার তাকালো তানহার দিকে। মায়ার দিক থেকে একবারো অন্য দিকে ভালভাবে তাকায় নি।
সবাইকে চিনেও না সে।
“এখানে আসো”
তানহা আসলে মায়া ইশারায় সায়ানের পাশে বসতে বলে তানহাকে।
তানহা বসলে মায়া রিদিমা হাতটা ছেড়ে দিয়ে নিজের বুকের উপর রেখে সায়ানের হাতটা আর তানহার হাতের উপর দিয়ে দেয়।
তারপর খুব সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলে,
“আমার সোনা মা!”
তারপর এক হাত দিয়ে সায়ান তানহার হাতধরে আর আরেকহা রিদিমার হাত ধরে বিড়বিড় করে বলল,
“আমি কাউকে হারাতে চাই না”
আবার চোখ বন্ধ করলো।
মায়া যেন উপভোগ করছিল এই মুহুর্ত গুলো।
তারপর মায়া মেজ ফুপিকে ডাকল,
অভিমানি সুরে বলল,
“কোথায় ছিলে তুমি?”
এভাবেই মায়া তার পরিবারের সবার সাথেই খুঁনসুটি করতে লাগল।
একদম শেষে এসে ঢুকল মায়ার নানা নানি আর আর মামা মামি।
এরাও কখনো মায়ার খোঁজ নেননি।
আর পরিচয় হতে গিয়ে বড্ড খারাপ লাগলো তাদের।
এক তীব্র অপরাধবোধ ঘিরে ধরল।
মায়া কিন্তু আজ কিছু ভাবলো না।
সবার সাথেই স্বাভাবিক আচরণ করলো।
.
রোশনি আর নিশিকা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
জাহরার অবস্থা ও খারাপ।
জয় এদিক সামলাচ্ছে।
ঈশান আর তানহা সামলাচ্ছে সাহরাফ সাহেব সায়ান আর মায়ার দিকটা।
সানজানা বাচ্চা দুটোকে।
রায়ান আর নওশিকে সবসময়ই মায়ার পাশে থাকতে হয়।
মায়া নওশিকে এক মূহুর্ত চোখের আড়াল করতে চায় না। একটু আড়াল হতেই খুঁজে ফেরে নওশিকে।
মায়ার অবস্থা আজ খুব খারাপ হলো।
গায়ে প্রচন্ড জ্বর, সেই সাথে বমি।
দুপুরের দিকে জ্ঞান হারালো।
নওশি বাসায় খবর দিলো, বিকালের আগেই সবাই আসলো কিন্তু কাউকে দেখা করতে দেওয়া হলো না।
দূর থেকে দেখে ফিরে যেতে হলো সবাইকে।
কেউই যেতে চাইছিলো না।
কিন্তু এত মানুষ একসাথে থাকা যাবে আর থেকেও কিছু হবে না বলে জোর করে নওশি পাঠিয়ে দিলো সবাইকে।
সায়ান কিছুতেই গেল না।
তানহাও থেকে গেল।
সাহরাফ সাহেব যেতে চাইছিলেন না।
কিন্তু রায়ান জোর করে পাঠিয়ে দিলো ঈশান আর জয়ের সাথে।
রাতের দিকে একবার জ্ঞান ফিরল মায়ার।
বাবা, ফুপি বলে ডাকতে চাইল একবার।
কিন্তু দুর্বল শরীরে কোনো কথা যোগালো না তার।
রাতে ভীষণ বমি করল মায়া।
পরদিন সারাদিন একটুও কথা বলেনি মায়া তবে জ্ঞান ছিল।
তৃতীয় দিনও ওভাবেই গেল।
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল সবার দিকে।
শরীর যেন বিছানার সাথে মিশে রয়েছে।
সুন্দর মায়াবী চোখ দুটোতে কোনো চঞ্চলতা নেই।
চোখের তলায় কালি জমেছে!
এ এক অন্য মায়া।
চতুর্থ দিন মায়া একটু একটু ভাঙা ভাঙা কথা বলল সবার সাথে। জ্বরটাও ছেড়ে গিয়েছিল।
পঞ্চম দিনে মায়াকে বেশ সুস্থ মনে হলো।
বেশ সুন্দর সাবলীলভাবে কথা বলল সবার সাথে।
মনেই হলো না মায়া অসুস্থ।
রিদিমা নিয়মিত আসছিল মায়াকে দেখতে।
যতটুকু সময় পারে মায়াকে সময় দিচ্ছিল।
মায়ার কথা বলা দেখে সবাই কেমন যেন আশস্ত হলো।
আশস্ত হলো না কেবল নওশি আর ডাক্তারেরা।
“প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো জ্বলে ওঠে”
এমন কঠিন সত্য কথাই মনে হয়েছিল নওশির।
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে, স্রষ্টার ইচ্ছেই ছোট মায়া সবার মায়া কাটিয়ে সপ্তম দিনের রাতে চলে গেল না ফেরার দেশে।
মায়ার মৃত্যু মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই বেশ কিছুক্ষন, কেউ কোনো কথা বলেনি।
তারপর সায়ান ধীরে ধীরে হেঁটে এসে মায়ার চোখ দুটো চিরকালের জন্য বন্ধ করে দিল।
আর তারপরই
“মা আমার” বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে সায়ান।
একটা মানুষের চলে যাওয়া পরিবারের অন্য মানুষগুলোকে কতটা নাড়া দিতে পারে তা সাহরাফ সাহেবের পরিবারকে দেখলেই বোঝা যাবে সহজেই।
কিছু মানুষ আছে যাদের জীবন শুরু হয় অপূর্ণতা দিয়ে আর শেষও হয় অপূর্নতা দিয়ে।
মায়া তাদেরই একজন।
সুবাস ছড়ানো এক মায়াবি ফুল।
যাকে অবহেলা শেষে আদরের পরশ দিতেই আয়ু ফুরিয়ে টুপ করে ঝরে পড়েছে।
মায়া হয়তো পাইনি অনেক কিছুই কিন্তু শিখিয়েছে সবাইকে কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক।
অধিক শোকে পাথর হয় যেমন, তেমনি মায়ার মৃত্যুতে সবাই যেন পাথর হয়ে গেছে।
মায়ার মৃত্যু রাহাতকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে, ইতুর কাছে শেষ সুযোগ চেয়েছে রাহাত।
রিদিমা বুঝেছিল তার ভুল তাকে কোথায় নামিয়েছে!
রাব্বি, অনিক, সায়ান আর সায়ানের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে এক নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছে সে।
যে জীবনে সে শুধুই না ফেরার দেশের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে চেয়েছে।
যাতে পরের জীবনটা সুখে কাটাতে পারে সে।
মায়ার শেষ স্মৃতিটুকু নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে বাকি জীবনে।
একবার মনে হয়েছিল সায়ানের জীবনে যদি একটু জায়গা হতো,
দাসীর মতো হয়ে বাঁচার জন্যও!
কি পরিবর্তন মানুষের জীবনে!
এমন অসম্ভব উদারতা তানহাও দেখিয়েছিল,
“আপু এসো মায়ার স্মৃতি নিয়ে এক সাথে বাঁচি, তুমি তো নিজের ভুল বুঝেছ, আর কি চাই”
অবাক হয়ে তাকিয়েছিল রিদিমা তানহার দিকে।
কিন্তু সায়ান কোনো কথা বলেনি।
এক বার ভেবেও আর ইচ্ছে হয়নি।
থাকনা তানহা সায়ান নিজেদের মতো!
তানহার হাত ধরে বলেছিল,
“দেখে রেখ সবাইকে, এরা সবাই বড্ড ভালো”
তানহা সেদিন কোনো উত্তর দেয়নি।
নীরব চোখের ভাষা দিয়ে বুঝিয়েছিল মানুষগুলোকে সে ভাল রাখবে।
মায়ার মৃত্যু সবাইকে নিজের ভুল গুলো বুঝতে শিখিয়েছে।
সবার মনের কোণে একটু একটু ক্ষত করেছিল মায়ার অসুস্থতা।
আর মায়ার মৃত্যু সবার সেই ক্ষত থেকে অঝোরে রক্ত ঝরিয়েছে!
আর এখন মায়ার শেষ স্মৃতি অনুপ্রেরণা দিয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে।
জানিনা রাহাত ইতু আবার এক হয়েছিল কিনা, হয়তো এক হয়েছিল।
রিদিমা তার নতুন জীবনে কতটা শান্তি পেয়েছিল রিদিমা জানে।
কিন্তু মায়াবী মায়া, ছোট্ট মায়া অনেক বড় একটা শিক্ষা দিয়ে গেল সবাইকে।
জীবন পথে ভুল বাঁধা আসবে, আলাদা হয়ে যাওয়া সমাধান নয়।
আর আলাদাই যদি হতে হয় তবে এমন কাউকে সেই শাস্তি গুলো দিতে নেই যেটা তার প্রাপ্য না।
বিনাদোষের শাস্তি সহ্য করা যায় না।
এ কষ্ট কেউ বুঝবে না।
না থাকার কষ্ট একরকম,
আর থেকেও না থাকার কষ্ট অন্যরকম
এসব মায়াই বুঝিয়ে দিয়ে গেল সবাইকে।
মায়া চলে গেল, কিন্তু রেখে গেল একরাশ ভালবাসার আকাশ।
বেঁধে দিয়ে গেল এক সুন্দর বন্ধনে।
ভাল থাকুক মায়ারা,
ভাল থাকুক সবাই….
সম্পর্কের আকাশগুলো অটুট থাকুক ভালবাসায়।
পবিত্র ভালবাসা সাথে নিয়ে অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া যায়।
যেন সবাই দিন শেষে এটুকু বলতে পারে,
এটুকু ভাবতে পারে,
“আমাদের আকাশটা ভালবাসার”
“এখানে আকাশটা ভালবাসার”।
(সমাপ্ত)