কখনো বা দেখা হবে পর্ব -০৮+৯ ও শেষ

#কখনো_বা_দেখা_হবে
#পর্বঃ৮
#লেখিকাঃদিশা_মনি

আজ সিনথিয়ার বিয়ে। বিয়ের জন্য প্রস্তুতি চলছে। এসব কিছুর মাঝে সিনিথিয়ার মন একদম ভালো নেই। অভি নামের ছেলেটার স্মৃতি কষ্ট দিচ্ছে তাকে। সিনথিয়া বুঝতে পারছে সে হয়তো ভালোবেসে ফেলেছে অভিকে। সিনথিয়াকে পার্লার থেকে সাজাতে আছে। সাজগোজ হয়ে যাওয়ার পর সিনথিয়া একা রুমে বসে আছে। এমন সময় কেউ একজন ছুটে তার রুমের দিকে আসল। সিনথিয়া ঘোমটা সরিয়ে চোখ তুলে দরজার দিকে তাকাতেই দেখতে পেল রাজীবকে। রাজীব মুখ ঢেকে এসেছে এইদিকে। সিনথিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাজীব তাকে বলে,
‘তোমার সাথে যার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে ভালো ছেলে নয়। তার আগের একজন স্ত্রী আছে। কিন্তু তার প্রথম স্ত্রী সন্তান জন্ম দিতে পারেনি। এই জন্য এখন সে তোমাকে বিয়ে করতে চাইছে। তোমাকে শুধু সন্তানের জন্যই বিয়ে করতে চায়। সন্তান হয়ে গেলে তোমাকে ছেড়ে দেবে।’

কথাগুলো শুনে হতবাক হয়ে যায় সিনথিয়া। সে তো এতকিছু ভাবতেও পারেনি। আবারো এভাবে ঠকে গেল মেয়েটা! ভেবেই খারাপ লাগছে তার। রাজীবের দিকে তাকিয়ে কান্নাজড়ানো গলায় সিনথিয়া বলে,
‘এখন তাহলে আমি কি করবো? বিয়ে করা ছাড়া যে আমার হাতে আর কোন উপায় নেই। আমাকে এখান থেকে বিদায় করতে পারলেই যে ওনারা বেঁচে যান।’

রাজীব কিছু একটা ভেবে বলে,
‘তোমাকে এখানে আর থাকতে হবে না। চলো আমি এখান থেকে তোমাকে নিয়ে যাব।’

‘কোথায় যাব আমি? আমার যে যাওয়ার কোন যায়গা নেই।’

‘তুমি কি অভি নামের ঐ ছেলেটাকে ভালোবাসো?’

‘এটা,,এটা কেমন প্রশ্ন?’

‘তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। আমি জানি তোমার মনে আমার জন্য কোন যায়গা নেই। কিন্তু সেদিন তোমাকে কাদতে দেখে আমি কিছুটা অনুমান করতে পেরেছি তুমি হয়তো অভি নামের ছেলেটার জন্য নিজের মনে কোন ধরনের অনুভূতি লালন করে চলেছ। তাই আমি আজ আসার আগে অভির সাথে যোগাযোগ করেছি। তোমার ব্যাপারে সবকিছু বলেছি ওকে। অভি তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসে। তোমার জন্য অপেক্ষা করছে ও। তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে আমি তোমাকে অভির কাছে পৌছে দেব।’

সিনথিয়া সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। এইরকম পরিস্থিতিতে তার কি করা উচিৎ সেটাই বুঝতে পারছিল না। তার মধ্যে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ কাজ করছিল। রাজীব ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলে,
‘আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। যেকোন মুহুর্তে কেউ এদিকটায় চলে আসতে পারে। তুমি একটা কাজ করো চোখ বন্ধ করো। মন দিয়ে ভাবো তুমি কি চাও।’

সিনথিয়া ঠিক তাই করে। নিজের আখিযুগল বন্ধ করতেই সে অভিকেই দেখতে পায়। এর মানে তার মন অভিকেই চায়। ভালোবাসা ভীষণ অদ্ভুত! মন যে কখন কার প্রেমে পড়া যায় বলা মুশকিল। আমরা কেউ বলতে পারব না যে পরিকল্পিত ভাবে কারো প্রেমে পড়ে গেছি। কখনো কাউকে প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়েছি, তো কখনো কারো ব্যবহারে, আবার কখনো অকারণে ভালোবেসে ফেলেছি কাউকে। সিনথিয়ার ক্ষেত্রেও অন্যকিছু হয়নি।

১৫.
‘আমি পালিয়ে যেতে চাই। আমি সত্যি অভিকেই পছন্দ করি।’

সিনথিয়ার সহজ স্বীকারোক্তি। যা রাজীবের জন্য মোটেও সহজ ছিল না৷ রাজীবের মনে দারুণ ক্ষত তৈরি করে এই কথা। সে অনেক কষ্টে নিজের চোখের জল লুকিয়ে বলে,
‘চলো আমি এখান থেকে সুরক্ষিতভাবে তোমাকে নিয়ে যাবো।’

সিনথিয়া রাজীবের সাথে বেরিয়ে যেতে ধরে। এমন সময় লুবনা আক্তার সিনথিয়ার রুমের দিকেই আসছিলেন। যার ফলে তিনি ধরে ফেলেন তাদের। মুহুর্তেই চিৎকার করে ওঠেন। রাজীব সিনথিয়ার হাত শক্ত করে ধরে তাকে নিয়ে দৌড় দেয়।

রাজীব সিনথিয়াকে নিয়ে বাড়ির বাইরে পর্যন্ত আসে। নিজের বাইকে উঠে সিনথিয়াকে বলে,
‘তুমি আর সময় নষ্ট করো না। তাড়াতাড়ি আমার বাইকে উঠে পড়ো। ফাস্ট। যেকোন সময় আমাদের আটকানোর জন্য সবাই চলে আসতে পারে।’

সিনথিয়া তাই করে। নিজের শাড়িটা ভালোভাবে সামলে নিয়ে উঠে পড়ে বাইকের মধ্যে। রাজীব বাইক স্টার্ট দিতে যায়। কিন্তু বাইক কিছুতেই বাইক স্টার্ট হচ্ছিল না। রাজীব চেষ্টা করতে থাকে। অবশেষে অনেক চেষ্টার পর যখন বাইকটা একটু স্টার্ট হয় তখনই রায়হান ও তার বন্ধুরা এসে তাদের চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে। শেষ আশাটাও যেন মোমবাতির আলোর মতো নিভে যায়।

সবাই মিলে রাজীবকে টেনেটুনে বাইক থেকে নামায়। সিনথিয়াকেও নামানো হয় বাইক থেকে। রায়হান এসে ছিনিয়ে নেয় সিনথিয়াকে। বলে,
‘আমি যখন আজ বিয়ে করতে এসেছি তখন বিয়ে করেই ফিরবো।’

রাজীব কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু সবাই এমনভাবে তাকে ঘিরে ধরেছিল যে সে চাইলেও কিছু করতে পারছিল না।

১৬.
সিনথিয়াকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে টেনে নিয়ে বিয়ের আসরে নিয়ে যেতে থাকে রায়হান। রাজীব চেষ্টা করেও কিছু আটকাতে পারে না। শুধু চিৎকার করে বলতে থাকে,
‘ছেড়ে দাও সিনথিয়াকে। আমি থাকতে ওর কোন ক্ষতি হতে দেবো না।’

এমন সময় সিরাজুল হক চলে আসে সেখানে। রাজীব তাকে দেখে ঘৃণাভরা দৃষ্টিতে তাকায়। মাটিতে থুথু ফেলে বলে,
‘কেমন বাবা আপনি? আপনি আসলে বাবা নামে কলঙ্ক। নিজের মেয়ের জীবন নিজে নষ্ট করছেন। আপনার মতো বাবা থাকার চেয়ে অনাথ হয়ে জন্ম নেওয়া অনেক ভালো। যদি আপনার মধ্যে একটুও মনুষ্যত্ব থেকে থাকত তাহলে আপনি এমন করতে পারতেন না। ডাইনিও নিজের ঘর ছেড়ে আক্রমণ করে অথচ আপনি নিজের মেয়ের এত বড় সর্বনাশ করতে চাইছেন।’

সিরাজুল হক মাথা নিচু করে দাড়িয়ে থাকেন। আজ প্রথমবারের মতো তার খুব খারাপ লাগছে। নিজের করা অন্যায়ের জন্য অনুশোচনা হচ্ছে।

অন্য দিকে, রায়হান সিনথিয়াকে নিয়ে বিয়ের আসরে উপস্থিত হয়েছে। তাকে জোরপূর্বক নিজের পাশে বসায়। অতঃপর কাজিকে বলে,
‘আপনি বিয়ে পড়ানো শুরু করুন কাজি সাহেব। আজ আমি যখন বিয়ের উদ্দ্যেশ্যে এসেছি তখন বিয়ে করে বউ নিয়েই ঘরে ফিরব।’

কাজি তাই করে। সিনথিয়া ছটফট করছিল। কারণ সে এই বিয়ে কিছুতেই করতে চায়না। এরমধ্যে কাজি বলে ওঠে,
‘কবুল বলো মা।’

সিনথিয়া মুখে কুলুপ আটে। কিছুতেই কবুল বলবে না সে। রায়হান তখন ভয়ানক একটি কাজ করে বসে। সিনথিয়াকে হুমকি দেয়,
‘যদি তুমি কবুল না বলো তাহলে কিন্তু আমি ঐ রাজীবকে শে’ষ করে দিবো।’

সিনথিয়ার নিজেকে অপরাধী বলে মনে হয়। তাকে বাচাতে এসেই আজ রাজীব এত বাজেভাবে ফেসে গেছে সবকিছুতে। আজ তো রাজীব হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারতো। শুধুমাত্র সিনথিয়ার ভালোর জন্য তার কথা ভাবতে গিয়ে তাকে পালাতে সাহায্য করার জন্যই ছুটে এসেছে এতদূর। আর শুধুমাত্র তার জন্যই এখন সে এত বড় বিপদে পড়ে গেছে। এখন কি করবে সিনথিয়া? নিজের স্বার্থ দেখে চুপ করে থাকবে নাকি রাজীবকে বাচানোর জন্য এই বিয়েটা করে নিবে। এখন সবটাই নির্ভর করছে তার উপরে।

সিনথিয়া নিজের সাথে নিজেই যুদ্ধ করছিল। তার মনে নানা ভাবনা খেলা করে যাচ্ছিল। সিনথিয়াকে মৌন থাকতে দেখে ক্ষেপে যায় রায়হান। ফোন করে নিজের বন্ধুদের নির্দেশ দেয়,
‘ঐ রাজীবকে মা’রতে থাক তোরা। প্রয়োজনে ওর হাত পা সবকিছু ভেঙে দে।’

এই পর্যায়ে আর চুপ থাকতে পারে না সিনথিয়া। বলে ওঠে,
‘প্লিজ এমন কিছু করবেন না। আমি আপনার সব কথা মেনে নেব। আমি এই বিয়েটা করে নিচ্ছি। রাজীব ভাইয়ের কিছু করবেন না।’

‘গুড গার্ল। এখন ভদ্র মেয়ের মতো কবুল বলে দাও।’

সিনথিয়ার মাথা কাজ করছিল না৷ রাজীবকে বাচানোর এখন আর কোন উপায় নেই। তাই সিনথিয়া নিজেকে প্রস্তুত করে কবুল বলার জন্য।

চলবে ইনশাআল্লাহ ✨#কখনো_বা_দেখা_হবে
#পর্বঃ৯
#লেখিকাঃদিশা_মনি

সিনথিয়া কবুল বলতে যাবে এমন সময় ঘটে যায় এক অদ্ভুত ঘটনা। সিরাজুল হক বলে ওঠেন,
‘থামাও এসব। কোন বিয়ে হবে না।’

সাথে সাথে পুলিশও চলে আসে। এসে গ্রেফতার করে রায়হান ও তার বন্ধুদের। লুবনা আক্তার দাত কটমট করতে থাকেন। সিরাজুল হকের পিতৃত্ব হঠাৎ এভাবে জেগে ওঠায় তার সব পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে গেল।

সিরাজুল হক সিনথিয়ার কাছে আসেন। সিনথিয়ার মাথায় হাত রেখে বলেন,
‘আমি জীবনে অনেক ভুল করেছি সিনথিয়া। তোর সাথে, তোর মায়ের সাথে অনেক বেশি অন্যায় করেছি। আমি নিজের ভুলটা এখন বুঝতে পেরেছি। তুই দয়া করে পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস।’

সিনথিয়া অশ্রুসজল চোখে তার বাবাকে বলে,
‘আমি হয়তো নিজের প্রতি করা সব অন্যায়ের জন্য তোমাকে ক্ষমা করতে পারব কিন্তু আম্মুর সাথে তুমি যে অন্যায় করেছ তার জন্য আমি তোমাকে ক্ষমা করতে পারবো না। কারণ তার কোন ক্ষমা হয়না। তবুও তুমি আমার আব্বু, আমি চাই তুমি আমাকে দোয়া করো যেন আমার ভবিষ্যৎ জীবন সুখের হয়।’

সিরাজুল হক বলেন,
‘আমি চাই তুই সুখী হ। আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনাই করব যেন তোকে সুখী করে। আমার করা অন্যায়ের জন্যও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব। এখন থেকে আমি সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাবো দেখিস।’

সিনথিয়া আচমকা তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে। সিরাজুল হকও নিজের মেয়েকে বুকে আগলে নেন। লুবনা আক্তারের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে এই দৃশ্য দেখে। কিন্তু তার কিছু করারও ছিল না। তাই দাতে দাত চেপে সব সহ্য করে। এমনিতেই আজকে সিনথিয়া এমনিই চলে যাবে। এটাই তার কাছে অনেক।

বাবার থেকে বিদায় নিয়ে সিনথিয়া আসে লুবনা আক্তারের সামনে। তার সামনে এসে বলে,
‘জানি আপনি কখনো আমার ভালো চান নি। এখনো চান না। আসলে কিছু মানুষ জীবনে কখনো বদলায় না। তবু আমি চাই আপনিও আব্বু মতো নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা করুন। অনেক অন্যায় তো করেছেন এখন আল্লাহর কাছে মাফ চান। অন্তত কিছুটা সওয়াব সঞ্চয় করুন জীবনে। আপনার ভালোর জন্যই এই পরামর্শ দিলাম। আল্লাহ কিন্তু পরম দয়ালু। তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেবেন নিশ্চয়ই।’

লুবনা আক্তারকে কতোটা প্রভাবিত করল কথাগুলো সেটা বোঝা গেল না৷ সিনথিয়া নিজের পৈত্রিক ভিটা ত্যাগ করল। রাজীবের বাইকে উঠে পড়ল। এখন তার গন্তব্য স্থল অভির নিকট। যাকে সাথে নিয়েই জীবনের বাকি দিনগুলো পার কর‍তে চায় সিনথিয়া।

১৭.
মাঝরাস্তায় আচমকা বাইক থামিয়ে দেয় রাজীব। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করে,
‘এখানে থামলেন কেন? আপনি না বলছিলেন অভি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।’

রাজীব কিঞ্চিৎ হেসে বলে,
‘আজ থেকে তো চিরকালের জন্য তুমি অভির হয়ে যাবে। তার আগে কিছু সময় কি আমি তোমার থেকে পেতে পারি সিনথিয়া। ‘

রাজীবের কাতর আবেদন। সিনথিয়ার মনকে যা নাড়া দিয়ে যায়। কিন্তু সিনথিয়া কি বলবে সেটা বুঝতে পারছিল না। রাজীব পুনরায় বলল,
‘চিন্তা করো না। বেশি সময় নেবোনা৷ পাচ মিনিট দাও আমাকে। আমি শুধু মিনিট পাচেক তোমার হাট ধরে একটু হাটতে চাই।’

সিনথিয়া নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়। রাজীব তৃপ্তির হাসি হাসে। অতঃপর সিনথিয়াকে সাথে নিয়ে ফুটপাত ধরে হাটতে থাকে। ইচ্ছা ছিল এই হাতে হাত রেখে আজীবন কাটিয়ে দেবে। কিন্তু ঐ যে ভাগ্যে নেই। রাজীবের ভাগ্য যে অনেক বেশি নিষ্ঠুর। ছোট বেলা থেকেই এই ভাগ্যের জন্য তাকে বিভিন্ন কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়।

সিনথিয়াও অনুভব করতে পারছিল রাজীবের কষ্টটা। কিন্তু সেই বা কি করবে? ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যেটা মন থেকে আসে৷ জোর করে কাউকে ভালোবাসা যায় না৷ আমাদের মনও যে বড়ই অদ্ভুত। কখন কাকে ভালোবেসে ফেলে সেটা বোঝা বড় দায়!

রাজীব আর নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল না। সিনথিয়ার কাছে আবদার করে বসে,
‘আমি কি তোমাকে জড়িয়ে ধরে একটু কাদতে পারি?’

সিনথিয়া ফেলতে পারে না এই আবেদন। অনুমতি দিয়ে দেয়। রাজীব তখন সিনথিয়াকে জড়িয়ে ধরে অশ্রু বিসর্জন করতে থাকে। এপর্যায়ে সিনথিয়াও নিজেকে আটকে রাখতে পারে না। সেও ডুকরে কেদে ওঠে। কান্নারত অবস্থায় বলে,
‘কেন এত ভালোবাসলেন আমায়? আমাকে ভালোবেসে কি পেলেন আপনি? শুধুই কষ্ট। এই কষ্ট তো আপনি ডিজার্ভ করেন না।’

‘আমি কখনো মনে করব না আমি ভালোবাসা পাই নি। কারণ আমি তো তোমাকে ভালোবেসতে পেরেছি। তুমি আমায় ভালোবাসতে পারো নি।'(রাজীব)

সিনথিয়া বলে,
‘কি লাভ হলো এই ভালোবেসে? আমাকে ভালোবাসা কি তাহলে আপনার ভাগ্যের দোষ?’

‘তুমি আমার মনে আছো কিন্তু ভাগ্যে নেই। ভাগ্যকে দোষ দেব না আমি কারণ দোষ আমার মনের।’

সিনথিয়া এপর্যায়ে রাজীবের থেকে দূরে সরে আসে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করে বলে,
‘আমার জীবনের সবথেকে বড় আফসোস থেকে যাবে যে আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারিনি।’

রাজীব তৎক্ষনাৎ সিনথিয়াকে টেনে তোলে। নিজের কষ্ট ভুলে, অশ্রু মুছে, সিনথিয়ার চোখের জল মুছে দিয়ে বলে,
‘তুমি ভালোবাসো নি তো কি হয়েছে? আমি তো বাসি। ডুবে ডুবে ভালোবাসি। তুমি না বাসলেও আমি বাসি।’

১৮.
নিজের বাইকে উঠে সিনথিয়াকেও উঠতে বলে রাজীব। সিনথিয়া বাইকে ওঠে। রাজীব বাইক স্টার্ট দেয়। সিনথিয়া রাজীবের কাধে স্পর্শ করে বসেছিল৷ এই স্পর্শের মাধ্যমে রাজীব অনুভব করার চেষ্টা করে সিনথিয়াকে।

সিনথিয়ার প্রতিটা স্পর্শ আজ থেকে অন্য কারো নামে হবে। কথাটা ভাবতেই রাজীবের ইচ্ছা করছে ভাগ্য বদলে দিতে। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে যদি ভাগ্যের লেখা পরিবর্তন করা যেত তাহলে সে যেন এক্ষুনি সিনথিয়াকে নিজের করে নিতো। কিন্তু সেটা যে সম্ভব নয়। তাই একবুক না পাওয়ার গ্লানি নিয়েই থাকতে হবে রাজীবকে।

গাড়ি এসে থামে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে। সিনথিয়ার চোখে তখনো অশ্রুবিন্দু লেগে ছিল। রাজীব টিস্যু এগিয়ে দেয় সিনথিয়ার দিকে। অতঃপর বলে,
‘আর কেদোনা তুমি। আমার জন্য কষ্ট পেতে হবে না। আমি তোমার সাথে কা’টানো স্মৃতিগুলো নিয়েই আজীবন কা’টিয়ে দিতে পারব।’

রাজীব অভিকে ফোন দেয়। অভি ফোনটা রিসিভ করলে রাজীব বলে,
‘কোথায় তুমি? আমি সিনথিয়াকে নিয়ে এসেছি।’

‘আমি দেখেছি তোমাদের। রাস্তার বিপরীত দিকে আছি। যাচ্ছি।’

অল্প সময়ের ব্যবধানে অভি তাদের কাছে চলে আসে। সিনথিয়াকে দেখে তৃপ্তির হাসি দিয়ে বলে,
‘শেষ পর্যন্ত তুমি আমার কাছে আসলেই। আমি খুব খুশি হয়েছি।’

রাজীব সিনথিয়ার হাত ধরে তাকে অভির হাতে তুলে দিয়ে বলে,
‘অনেক ভরসা করে আমার জীবনের সবথেকে দামী মানুষটাকে তোমার হাতে তুলে দিলাম। তুমি কিন্তু ওর কোন অযত্ন হতে দেবে না। আশা করি, সিনথিয়া তোমার কাছে ভালো থাকবে।’

অভিও আশ্বাস দিয়ে বলে,
‘আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে সিনথিয়াকে সুখে রাখার চেষ্টা করব।’

রাজীব এক পলক সিনথিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
‘চলো কাজী অফিসে যাই। তোমাদের বিয়ের সাক্ষী নাহয় আমি হবো।’

সিনথিয়া জানে রাজীব এই দৃশ্য সহ্য করতে পারবে না। তাই সে বলে,
‘আপনি আমাদের জন্য অনেক করেছেন। এর জন্য আপনার কাছে চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। কিন্তু আপনাকে আর কিছু করতে হবে না। আমরা আমাদের কিছু বন্ধু-বান্ধবক্র ডাকব। তারা নাহয় সাক্ষী হবে।’

রাজীব বুঝল সিনথিয়া তাকে আর কষ্ট দিতে চাইছে না তাই এমন কথা বলছে। কিন্তু সিনথিয়াকে হারিয়ে তো এমনিই যথেষ্ট কষ্ট পেয়ে গেছে সে। আর কোন কষ্ট তার কাছে কিছু নয়। তবুও সিনথিয়ার মন রাখতে রাজীব বলে,
‘আচ্ছা তোমরা ভালো থেকো। তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবন সুখের হোক। আমি তাহলে যাচ্ছি।’

রাজীব চলে যায়। যাওয়ার আগে একবারও ফিরে দেখে না। কারণ সে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে চায় না।

সিনথিয়া মনে মনে বলে,

‘আল্লাহ তুমি রাজীব ভাইয়ের জীবনে এমন কাউকে এনে দিও যে তাকে ভালোবাসবে যে তাকে সুখে রাখবে। নাহলে যে আমাকে চিরকাল আফসোস করে যেতে হবে। তাকে ভালো বাসতে না পারার আফসোস।’


রাজীব রাতের নিশ্চুপ রাস্তা দিয়ে হেটে চলেছে। আজ তার পুরো জীবন এলোমেলো হয়ে গেছে। জীবনের সবথেকে দামী মানুষটাকে যে আজ সে হারিয়ে ফেলেছে।

এক ব্যর্থ প্রেমিকের কষ্টে আজ রাজপথেও যেন কষ্টের মুহূর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

❝জিসকে আনে সে মুকাম্মাল হো গেয়ি থি জিন্দেগী।
দাস্তাখে খুশিও নে দিথি
মিট গেয়ি থি হার কামি
কিউ বে বাজা দি এ সাজা
কিউ খোয়াব দেকে ও লে গেয়া
জিয়ে জো হাম লাগে সিতাম
আজাব এসে ও দে গেয়া।❞

গানটি বলে নিজের মনের সব দুঃখ প্রকাশ করে রাজীব। সিনথিয়া যে তার জীবনের অনেক বড় একটি অংশ জুড়ে ছিল। যা আজ সে হারিয়ে ফেলল।
#কখনো_বা_দেখা_হবে
#পর্বঃ১০ এবং শেষ।
#লেখিকাঃদিশা_মনি

কাজি অফিসে এসে উপস্থিত হয়েছে সিনথিয়া ও অভি। মিরাজ এবং ঝর্ণাও এসেছে তাদের বিয়ের সাক্ষী হতে। অবশেষে অভি ও সিনথিয়ার বিয়ে সম্পন্ন হয়। সিনথিয়া বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বিয়েটা করে নেয়। অভিকে যেন এই অল্প সময়েই তার মনের বিশাল স্থান দিয়ে ফেলেছে। অভিও নিদ্বিধায় বিয়ে করে নিল সিনথিয়া। অতঃপর দুজনে মিলে রওনা দিল অভির বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে। না জানি সেখানে কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।

সারা রাস্তায় সিনথিয়ার ভয়ের সাথেই অতিবাহিত হয়। ভয় শুধু একটাই। অভির পরিবার যদি এই বিয়ে মেনে না নেয় তাহলে কি হবে। সিনথিয়ার মনে হতে লাগল,
‘আমার জন্য সব সময় কি অন্যরা কষ্ট পাবে? রাজীব ভাইকে তো যথেষ্ট কষ্ট দিয়েছি। এখন আমার জন্য যদি অভির সাথে তার পরিবারের সম্পর্ক খারাপ হয়৷ আমি কিভাবে এতটা স্বার্থপর হলাম? নিজের কথা ভাবতে গিয়ে আমি পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি একটু বিবেচনাতেও আনলাম না। হায় আল্লাহ কি হবে এবার।’

মনে অজানা ভয় নিয়ে অভির বাড়ির সামনে উপস্থিত হয় সিনথিয়া। সারা রাস্তা তার অতিবাহিত হয়েছে উদ্বিগ্নতার সাথে। এখনো তার মনে নানা রকম চিন্তা ভাবনা ঘুরছে।

এমন সময় অভি সিনথিয়ার হাত শক্ত করে ধরে মৃদু হেসে বলে,
‘কোন চিন্তা করো না। দেখবে সবকিছু ঠিক থাকবে।’

অভি ভরসা দিলেও সিনথিয়া সেই কথায় খুব একটা ভরসা পায় না।

অভি বাড়ির সামনে এসে কলিং বেল বাজায়। যার ক্ষণিক সময় বাদে, তাদের বাড়ির কাজের মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলে অভির সাথে বেনারসি পরিহিতা একটি মেয়েকে দেখে সে চিৎকার করে দেয়। চিৎকার করে বলে,
‘খালাম্মা দেখে যান আপনার ছেলের কাণ্ড।’

অভির মা সুলতানা বেগম চলে আসেন সেই ডাক শুনে। তবে তিনি এই দৃশ্য দেখে অবাক হন না। বরং সিনথিয়াকে বরণ করার প্রস্তুতি নিতে যান। সিনথিয়া বেশ অবাক হয়। অভি বলে,
‘আমি আম্মুকে আগে থেকেই তোমার ব্যাপারে সব বলে রেখেছিলাম। আম্মুর থেকে ভরসা পেয়েই তো আমি তোমাকে বিয়ে করেছি।’

অতঃপর সুলতানা বেগম সিনথিয়াকে বরণ করে ঘরে তোলেন। অভির ভয় করছিল তার বাবা আব্দুর রহমানকে নিয়ে। কারণ তাকে এই ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি৷ তাই তিনি এই বিয়ে কিভাবে নেবেন সেটা নিয়েই মূল চিন্তা।

আব্দুর রহমান বাড়িতেই ছিলেন। অভির এভাবে হঠাৎ বিয়ে তাকে না জানিয়ে বিয়ে করায় তিনি রাগারাগি করেন। সাথে এও বলেন,
‘আমি কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নেবো না।’

এই সব ঘটনায় সিনথিয়ার নিজেকে অপরাধী মনে হয়। সুলতানা বেগম আব্দুর রহমানকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। অভি সিনথিয়াকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। সিনথিয়াকে আশ্বাস দিয়ে বলে,
‘দেখবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’

১৯.
আজ বিয়ের পর অভি ও সিনথিয়ার প্রথম রাত। যদিও অশান্তির কারণে কোন কিছুই ঠিকভাবে হচ্ছে না। তবুও তাদের এই প্রথম রাতকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য অভি নিজেই ফুল কিনে এনে সাজিয়েছে বিছানা। অতঃপর খুব সুন্দরভাবে আজকের রাত তারা কা’টায়। সিনথিয়ার মনে নানা দ্বিধা কাজ করছিল। সে মানসিক ভাবেও প্রস্তুত ছিল না। তাই অভি সিদ্ধান্ত নেয় আজ তারা বাসর করবে না। প্রথম রাতটা নাহয় গল্প করেই অতিবাহিত হোক।

সারারাত গল্প করে অতিবাহিত করার পর সকালে উঠে সিনথিয়া চলে যায় সুলতানা বেগমের কাছে। সুলতানা বেগম নিজের কিছু শাড়ি গহনা দিয়ে সিনথিয়াকে বলে,
‘বিয়েটা তো কোনভাবে হয়ে গেল। আজ তোমাদের বৌভাত হওয়ার কথা। এখন তো বড় অনুষ্ঠান করে কিছু করা সম্ভব নয়। তবে একেবারে কিছু না করলেও নয়। তাই আমাকে তোমার বাবার ফোন নম্বর দেও। আমি তাদের ফোন করে ডাকছি।’

সিনথিয়া সুলতানা বেগমকে নিজের বাবার ফোন নম্বর দেয়। সুলতানা বেগম কল করেন। সিরাজুল হক ফোনটা রিসিভ করতেই সালাম বিনিময় করেন। অতঃপর তাদের আসতে বলেন। সিরাজুল হক যদিও রাজি ছিল না কিন্তু সুলতানা বেগম এমনভাবে বললেন যে রাজি না হয়েও থাকতে পারলেন না।

ক্ষুদ্র পরিসরেই বৌভাতের আয়োজন চলছে। আব্দুর রহমান এখনো নাখোশ রয়েছেন। সুলতানা বেগমের একার তৎপরতায় চলছে সব আয়োজন। এই অব্দি সব ঠিকই ছিল।

দুপুরে সিরাজুল হক আর লুবনা আক্তার চলে আসেন এই বাড়িতে। লুবনা আক্তারের তো চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় এত বড় বাড়ি দেখে। অপরদিকে সিরাজুল হক এই বাড়িতে এসে চমকে যান। কারণ এটা যে তার প্রথম স্ত্রী সেলিনার বাপের বাড়ি। এই বাড়ি থেকেই গাড়ি পাঠানো হয়েছিল তাদের আনার জন্য। তাই আসার আগে পর্যন্ত সিরাজুল হক কিছু বুঝতে পারেন নি।

তবে বাড়িতে ঢোকামাত্রই সিরাজুল হক আব্দুর রহমানের মুখোমুখি হন। এতদিন পর সিরাজুল হককে দেখে আব্দুর রহমান ছুটে আসেন। বলেন,
‘তুমি! আমার বোন কোথায়? সেও কি এসেছে?’

সিরাজুল হক আমতা আমতা করতে থাকেন। লুবনা আক্তার চুপচাপ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। একটু পরেই সিনথিয়া এসে উপস্থিত হয় সেখানে। সিরাজুল হককে দেখে বলে,
‘আব্বু তুমি এসেছ।’

সিনথিয়া সিরাজুল হককে আব্বু ডাকায় হতবাক হয়ে যান আব্দুর রহমান। সিরাজুল হক তখন বলেন,
‘আপনি আমার সাথে একটু ভেতরে চলুন আমি আপনাকে সবকিছু বলব।’

অতঃপর সিরাজুল হক আব্দুর রহমানকে সবকিছু বলেন। যে সিনথিয়া আসলে আব্দুর রহমানের বোন সেলিনারই মেয়ে। এছাড়া তিনি সেলিনা ও সিনথিয়ার সাথে কি কি অন্যায় করেছেন সেটাও বলেন। সাথে এও বলেন যে তিনি সবকিছুর জন্য অনুতপ্ত।

আব্দুর রহমান রেগে গিয়ে সিরাজুল হকের গায়ে হাত পর্যন্ত তোলেন। তখন অভি, সিনথিয়া এসে তাকে থামায়। সবার সামনে আব্দুর রহমান সিনথিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলেন,
‘তুই আমার বোনের মেয়ে। আমার বোন সেলিনার মেয়ে তুই।’

মুহুর্তেই একটি আবেগঘন মুহুর্তের তৈরি হয়। অভিও জানতে পারে যে সিনথিয়া তার ফুফাতো বোন। সিনথিয়াও এতদিন পর তার মামাকে পেয়ে খুশি হয়। সাথে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানায় তাকে সবকিছু ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

২০.
সিনথিয়ার আসল পরিচয় জানার পর আব্দুর রহমান এই বিয়েটা মেনে নিয়েছেন৷ তাই আজ আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে সিনথিয়া ও অভির রিশেপসন হতে চলেছে। পুরো বাড়িতে চলছে অনেক বেশি আয়োজন। হরেক রকমের রান্না ও সাজসজ্জা চলছে বাড়িজুড়েই।

সিনথিয়াকে খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। সিনথিয়াকে এনে একটি চেয়ারে বসানো হয়েছে। তার পাশেই বসে আছ অভি। সিনথিয়াকে দেখে অভি মৃদু হেসে বলে,
‘তোমাকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে।’

বিনিময়ে সিনথিয়াও মিষ্টি হাসি উপহার দেয়। রিশেপসনে অনেকে আমন্ত্রিত ছিল। তাদের সাথে আলাপচারিতায় সিনথিয়ার সময় যাচ্ছিল। অনেক মানুষের সাথে পরিচিতও হয়ে নিচ্ছিল সে। এভাবেই সময় কাল অতিবাহিত হয়।

আচমকা রিশেপসনে একজনকে দেখে অবাক হয়ে যায় সিনথিয়া। কারণ রাজীবও এসেছে। রাজীব হাতে একটি উপহার নিয়ে সিনথিয়া ও অভির কাছে আসে। সিনথিয়ার হাতে উপহারটি তুলে দিয়ে,
‘মেনি মেনি কংগ্রাচুলেশনস। খুব সুন্দর মানিয়েছে তোমাদের। আশা করি অনেক ভালো আছ।’

‘হুম। কিন্তু আপনি,,,’

রাজীব সামান্য হেসে বলে,
‘বিনা দাওয়াতে আসিনি আমি। তোমার হাজবেন্ড আমাকে আসতে বলেছে তাই এসেছি। তাইনা অভি?’

‘হুম। তোমাকে তো দাওয়াত দিতেই হতো রাজীব ভাইয়া। তুমি ছিলে জন্যই তো আমি সিনথিয়াকে পেয়েছি।’

অভির কিছু বন্ধুবান্ধব চলে আসায় সে তাদের সাথে একটু কথা বলতে যায়। সিনথিয়া রাজীবকেই দেখছিল। রাজীবকে দেখে বোঝা যাচ্ছে সে মন থেকে কতটা কষ্টে আছে। তবুও সিনথিয়া জিজ্ঞেস করে,
‘কেমন আছেন রাজীব ভাই?’

‘যেমন রেখেছ।’

সিনথিয়া আর কিছু বলতে পারে না। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর রাজীব বলে ওঠে,
‘আমি আজ চলে যাচ্ছি এই শহর থেকে। তুমি ভালো থেকো। তোমার নতুন জীবন সুখের হোক।’

সিনথিয়া আনমনে বলে দেয়,
‘আমাদের কি আর দেখা হবে না?’

‘ভাগ্য যদি সহায় থাকে, কখনো বা দেখা হবে।’

সমাপ্ত ✨

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here