কলেজের বড় আপু
Sumon Al-Farabi
১০ম পর্ব
একটু পরে আম্মু আসলো।
– কিভাবে হলো এমন?
– ও উপর থেকে নামার সময়
– তুই কি করছিলি? দৌড়ে গিয়ে ধরতে পারিস নি?
– আমি অনেক দূরে দাড়িয়ে ছিলাম
– ডাক্তার কি বললো?
– বললো যে মাথায় একটু বেশি আঘাত পাইছে জ্ঞান ফিরতে সময় লাগবে
আম্মু আর আমি কথা বলছি এমন সময় আব্বু আর নীলাদ্রির আব্বু আসলো।
– নীলাদ্রি কেমন আছে এখন ।
– ডাক্তার দেখছে
– কি বললো
– বলল আজ রাতে জ্ঞান নাও ফিরতে পারে ঘুমের ঔষধ দিয়ে দিছে
– ওহহ।
– আপনারা সবাই বাসায় চলে যান। আমি এখানে আছি
– না আম্মু তুমি যাও আব্বু কে নিয়ে ।
– তুই পারবি থাকতে
– হুম ।
– সমস্যা হবে না তো
– কিসের সমস্যা আম্মু
– আচ্ছা থাক।
এরপর আম্মু আব্বু সবাই চলে গেল । আমি ওর পাশে বসে থাকলাম ।
রাতে নুসরাত ফোন দিলো
– হ্যালো
– কেমন আছো
– আমি ভালো আছি । কিন্তু
-কিন্তু ? কিন্তু কি?
– নীলাদ্রি অসুস্থ ।
– ওহহ। কি হইছে ?
– সিড়ি থেকে পড়ে গেছে ।
– সাবধানে চলাচল করতে পারে না ।
– আচ্ছা আমি রাখছি ডাক্তার আসছে
– তুমি কি এখন হাসপাতালে
– হুম বাই।
– ওকে ।
এরপর আমি ফোন কাটলাম ।।।
– রোগীর সাথে কি আজ আপনি থাকবেন ?
– হ্যা।
– কে হন আপনি ওনার ?
– হাজবেন্ড ।
– ওহহ।।
– তাহলে আপনি ওনার কাপড় চেঞ্জ করিয়ে দিয়েন।
– কেন?
– কাপড় টা অনেক টা টাইট টাই।
– বলছিলাম যে
– কি?
– এখানে কোনো নার্স করলে ভালো হতো না ।
– আপনি কি আজব? ওনার স্বামী থাকতে অন্য কেউ কেন করতে যাবে ?
– কিন্তু আমি শুধু শাড়ি পড়াতে পারি
– তাহলে তাই পড়ান। তবে বেশি যেন চাপ না পায় শরীরে ।
– আচ্ছা ।
– আর ঘুম ভাংলে এই ঔষধ গুলো খাওয়াবেন।
– রিলিজ দিবেন কবে ?
– কালকেই নিয়ে যেতে পারবেন যদি বডি ফিটনেস ঠিক থাকে ।
– আচ্ছা ।
রাতেই আবার বাসায় আসলাম । হসপিটাল বেশি দূরে নয় বাসা থেকে । এসে আম্মুর কাছে একটা শাড়ি নিলাম ।
– এখন কেমন আছে রে?
– ঘুম ভাঙ্গে নি
– ওহহ।।
– আম্মু একটু হাসপাতালে যাবে
– কেন?
– ওকে একটু শাড়ি পড়িয়ে দিবে
– তুই তো পারিস
– হ্যা তা তো পারি ।
– তো
– তবুও একটা মেয়ে কে পড়াবো?
– ওটা কী অন্য কারো বউ? তোরি তো বউ।
– তা তো হ্যা।
– তো? তুই এখন যা ও একাই আছে
– আচ্ছা ।
এরপর খুব দ্রুত হসপিটালে আসলাম । কি আজব? যেটা পরে আছে ওটা থাকলে সমস্যা কই? শালা ডাক্তার গুলোকে কি আজকাল কাপড় নিয়েও পড়ায় নাকি?
এখন কি আমি ওর কাপড় চেঞ্জ করবো? না জানি যখন জানতে পারবে তখন কি করবে ? দূর পরের টা পরে দেখা যাবে ।
আমি ওর কাপড় চেঞ্জ করিয়ে দিলাম । সারা রাত সেভাবে ঘুম হয়নি । সকাল বেলা আম্মু আব্বু আসলো
– কি রে ঘুম ভাংছে ?
– না আম্মু
– পরে ডাক্তার আর আসে নি?
– আসছিলো
– কি বলছে ?
– ঘুম ভাংলে এই ঔষধ গুলো খাওয়াতে বলছে
– আচ্ছা তুই বাসায় যা। আমরা আছি ।
– না থাক ।
– যা গিয়ে একটু ঘুমা।
– আচ্ছা ।
এরপর আমি বাসায় আসলাম । এসে ঘুমালাম। আমি এমনিতেই ঘুম কাতুরে তার উপর আবার কাল রাতে ঘুমাই নি। এক ঘুমেই সন্ধ্যা ।
ঘুম থেকে উঠে দেখি ওরা সবাই বাসায় আসছে ।
– তুই মানুষ ?
– কেন আম্মু
– কতো বার ফোন দিছি দেখতো
– ঘুমাইছিলাম ।
– বউ অসুস্থ আর তুই পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস।
– হুম ।
– যা ওকে নিয়ে রুমে যা।
– আম্মু তুমি আমায় নিয়ে চলো
– আচ্ছা চল।
কি মেয়ে মাইরি ? নিজে এক পা চলতে পারছে না তবুও আমার সাহায্য নিবে না । যাই হোক তাতে আমার কি ?
নীলাদ্রি সুস্থ হতে তিন দিন সময় লাগলো । এখন ও সম্পূর্ণ সুস্থ ।
আজ একটা দাওয়াতে যাবো । বাসার সবাই মিলে । আব্বুর বিজনেস পাটনার এর বাসায়।
– আম্মু আমি কি পড়বো?
– তুই শাড়ি পর।
– কেন?
– শাড়িতে তোকে অনেক সুন্দর লাগে ।
– হুম আমিও দেখছি ঐ দিন হাসপাতাল থেকে বাসায় এসে ।
– যা সুন্দর একটা শাড়ি পরে আয়।
একটু পরে নীলাদ্রি একটা শাড়ি নিয়ে আম্মুর রুমে গেল
– আম্মু পড়িয়ে দাও
– নিজে পর না।
– আমি তো পারি না
– তাহলে তোর বরকে বল
– মানে ?
– সুমন পারে শাড়ি পড়াতে
– না তুমি পরিয়ে দাও ।
– কেন ?
– ঐ দিন শাড়িটা খুব সুন্দর করে পড়িয়েছিলে। তাই ।
– পাগলী মেয়ে ।
– হুম ।
– ঐদিন তোকে সুমন শাড়ি পড়িয়ে দিছে
– কি???? ( হাই লেভেলের শক খাইছে )
– হুম । কেন?
– কিছু না ।
– যা রুমে গিয়ে শাড়ি পড়িয়ে নিয়ে আয়।
– আচ্ছা ।
রুমে এসেই কোনো কথা ছাড়া আমায় মারতে শুরু করলো ।
– আরে আপনার সমস্যা কই?
-………..
– কথা বলছেন না কেন? আর আমায় মারছেন কেন?
– কুত্তা , হারামি, হারামজাদা , বাদর, শয়তান ।
– আরে এসব বলছেন কেন?
-…….
– শান্ত হন
– তুই আমায় টাস করবি না। ছাড় বলছি ।
– ওকে । এই আবার মারছেন কেন ?
– তোর সাহস কি করে হয় আমার কাপড় চেঞ্জ করার
– ওহহ এই ব্যাপার?
– ছোটলোক
– এই ছোট লোক না থাকলে আজ আর বেচে থাকতেন না
– মানে ?
– যে টাইট জামা পড়েন তাতে তো দম আটকে ইন্নানিল্লা হয়ে যেতেন
– ওহহ তাই জন্যে তুই চেঞ্জ করবি
– কেউ ছিলো না তো
– আম্মু কই ছিলো
– বাসায়।
– শোন তুই আম্মুর সামনে গিয়ে বলবি তুই শাড়ি পরাতে পারবি না
– কেন?
– কারণ তুই বিজি
– কই না তো। আমি তো ফ্রি
– তোকে যা বলতে বলেছি তাই বলবি। এখন আয় আমার সাথে
আমায় নিয়ে আম্মুর রুমে গেল ।
– আম্মু
– কি হইছে
– দেখেন তো আমি ওকে কতবার করে বললাম শাড়ি পড়াতে কিন্তু ও বলছে পারবে না ।
( কি জিনিস গুরু তুমি ?)
– কি রে কি বলে?
– আসলে আম্মু আমি একটু বিজি
– কি করবি এখন ?
– কই কিছু না তো
– তাহলে বিজি হলি কিভাবে?
– তাই তো
– যা ওকে শাড়ি পড়িয়ে দে ।
– ওকে
( নীলাদ্রি আগ্নি দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো)
– না আম্মু আমি তবুও বিজি।
– কিসের বিজি
– হ্যালো হ্যা আমি এখনি আসছি ( ফোন কানে নিয়ে এমনি কথা বলছি )
এরপর আমি আর কারো কোন কথা না শুনে তাড়াতাড়ি বাইরে বের হয়ে আসলাম ।
ঝড় টা অল্প দিয়ে পার হয়ে গেল । এটাই অনেক । নতুন ঝড় তোলার ইচ্ছে নাই ……..
……………
…………..
………….
…………
……….
……….
………
……..
…….
……
…..
….
…
..
.
To be continue