“কলেজের বড় আপু ১৩ তম পর্ব

কলেজের বড় আপু
১৩ তম পর্ব
⬇⬇

– তুই ওকে মারলি কেন?

– দেখো আম্মু তুমি ওকে নিয়ে কোনো কথা বলবে না । আর ও এখনো এই বাসায় কেন?

– ও তোর বউ..

– বউ? হা হা হা।

– তুই আর ওর সাথে এমন করিস না ।

– তুমি যদি আর একবার ওর কথা আমায় বলো তবে কিন্তু আমি আবার চলে যাবো

– না বাবা। আর যাস না । তুই এবার গেলে আমরা মরেই যাবো । যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়।

আমি অধরা কে নিয়ে রুমে গেলাম । দেখি নীলাদ্রি কান্না করছে

– তুই এই রুমে কি করিস?

– কিছু না ( চোখের পানি মুছে )

– দেখছিস না আমি রুমে আসছি

– হুম ।

– তাহলে এখনো দাড়িয়ে আসিছ কেন ? বের হ রুম থেকে ।

( কিছু না বলে মাথা নিচু করে বেরিয়ে যেতে লাগলো)

– এই শোন

– হু বলো ( মুখে অদ্ভুত ভাবে হাসি ফুটে উঠলো)

– তোকে যেন আমার সামনে আসতে না দেখি

– আচ্ছা ( মুখটা আবার অমাবস্যার রাত হয়ে গেল । চোখে আবার পানি টলমল করছে )

– মামনি তোমার নাম কি?

– আমাল নাম অদলা। তোমাল নাম কি ?

– তুমি জানো না

– থুমন।

– হুম ।

– তুমি থত্যি আমার বাপি

– হুম । কেন মামনি?

– তাহলে তুমি আমাল আম্মুল সাথে এমন কলে কতা বললে কেন?

– ( কি বলবো ভাবছি )

– ইলাল বাপি ওল আম্মুল থাতে কতো থুন্দল কলে কতা বলে।

– তোমার আম্মু পঁচা

– না। আম্মু বালো।

পিছনে কিসের যেন শব্দ হলো তাকিয়ে দেখি নীলাদ্রি আমাদের কথা শুনছে। আমি পিছনে তাকাতেই ও তাড়াতাড়ি করে চলে গেল ।

– আম্মু রেডি হও।

– কেন?

– তোমার জন্য তো কিছু আনি নি চলো কিছু নিয়ে আসি

– কি নিবা

– তোমার যা ইচ্ছে

– পুতুল

– আচ্ছা চলো। তোমার কাপড় কই

– ঐটাল বিতল

– এই আলমারি তে

– হুম ।

বাহ আলমারি টা তো চকচক করছে মনে হয় কেউ অনেক যত্নে রাখে এটাকে ।

খুলে ভিতর দেখে তো আমি অবাক । আমি সব যেভাবে সাজিয়ে রাখছিলাম সব তেমনি আছে । সবগুলো পরিস্কার । মনে হয় রোজ পরিস্কার করা হয় ।

একি? আমার টি শার্ট প্যান্ট সব আছে । জিনিস গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ।

অধরার একটা জামা বের করে ওকে পরিয়ে দিয়ে বাইরে যাচ্ছি ।

– সুমন কই যাস?

– বাইরে যাচ্ছি ।

– খাওয়া করে যা।

– এসে খাবো আম্মু ।

– তাড়াতাড়ি আসিস।

– আচ্ছা ।

রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি আর ভাবছি নীলাদ্রি কতো চেঞ্জ ? শুকিয়ে পুরো কাট হয়ে গেছে । আর আগের মতো সেই চঞ্চলতা নেই ।

এমন সময় ফোন আসলো

– হ্যালো

– কি রে ব্যাটা আব্বু আম্মু কে পেয়ে বাবাকে ভুলে গলি

– কি যে বলো না।

– তো বউমা আর তোর আব্বু আম্মু ভালো আছে

– হুম । একটা গুড নিউজ আছে

– তাই নাকি?

– হুম । তাড়াতাড়ি বল

– বলা যাবে না ।

– বল না

– আমার একটা মেয়ে হইছে

– কি বলিস? তুই আমায় আগে বলবি না

– আমি জানতাম না কি? আমি নিজেই তো জানলাম একটু আগে ।

– নিয়ে আসবি কিন্তু ।

– দেখি। কথা বলবে

– কি বলিস? বলবো না মানে ? তাড়াতাড়ি ফোন দে

– আম্মু

– হ্যা বাপি

– তোমরা নতুন দাদু কথা বলো

– হ্যালো দাদু

– হ্যালো

– কেমন আছো

– বালো। তুমি ?

– আমিও ভালো আছি । তোমার নাম কি?

– অদলা । তোমাল নাম কি?

– তুমি একটা নাম দাও

– কেন?

– আমার তো নিজের কোনো নাম নাই

– ওহহ।।

– হ্যা হ্যালো

– তুই ওকে নিয়ে আসবি। নয়তো বল আমি নিজেই যাচ্ছি ।

– আসা লাগবে না । আমি নিজেই যাবো ।

– নামটা কি বললো রে

– কি দাদু মাইরি

– আরে বুঝতে পারি নি

– অধরা।

– হুম । সুন্দর নাম। আমায় পিক পাঠা।

– আচ্ছা ।

– আর তুই আসবি কবে ?

– আরে বাপ আজকেই তো আসলাম।

– ওহহ হ্যা তো। একা একা লাগছে ।

– কয়েকটা দিন পর আসছি ।

– আচ্ছা বাই।

– বাপি তুমি আবাল চলে যাবে

– না আম্মু । আমার পরীটাকে ছেড়ে কি আমি যেতে পারি

– তাহলে যে বললা

– এমনি ঘুরতে যাওয়ার কথা বলছি ।

এরপর মার্কেটে গিয়ে ওর জন্য অনেক কাপড় পুতুল খেলনা কিনলাম । কিনা শেষে বাসায় আসলাম ।

– দাদু বাপি অনেক ভালো

– তাই

– হুম । দেখো আমায় কতো কিছু কিনে দিচে

– হুম । তাই তো। যাও বাপি কে নিয়ে খেতে আসো

– আচ্ছা ।

আমি রুমে এসে বসে আছি এমন সময় অধরা আসলো

– বাপি বাপি

– হ্যা আম্মু

– দাদু ডাকে

– কেন?

– খাইতে

– ওহহ। চলো।

অধরা আর আমি নিচে খাইতে আসলাম।

– টেবিলে এতো খাবার আগেই রান্না করা ছিলো নাকি ?

– না। তুই আসার পরেই রান্না করলো

– এতো অল্প সময়ে এতো কিছু ?

– হুম খেয়ে দেখ কেমন হইছে ।

প্রতেকটা খাবার একটু একটু করে খেয়ে দেখলাম ।

– অসাধারণ । মাইন্ডব্লুয়িং ।

– দেখতে হবে কে রান্না করছে

– হুম ।

– আর এটাও দেখতে হবে রান্না টা কে শিখাইছে

– মানে ?

– তোর আম্মু রান্না শিখাইছে

– তাহলে রান্না করছে কে?

– নীলাদ্রি ।

খাবারের টেবিল থেকে উঠে দারালাম।

– কি হলো উঠলি কেন ?

– আমি খাবো না ।

– কেন?

– আমার ক্ষুধা পায় নি। আমি গেলাম ।

নীলাদ্রি রান্না ঘরে থেকেই দেখছিলো। আমি চলে যাওয়াতে কান্না করছে । কাদুক না আমিও অনেক কেঁদেছি ।

রুমে আসলাম । অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই শুয়ে পড়লাম । কপন জানিনা শোয়ার সাথে সাথেই ঘুম এসে গেল

এক ঘুমেই সকাল বেলা হয়ে গেল ।

– বাপি ওতো না বাপি

– অধরা এমন করে না মা। বাপি ঘুমাচ্ছে ।

অধরা নীলাদ্রির কোনো কথা শুনছে না। আমিও চোখ খুলে অধরার সাথে কথা বলতে যাবো ওর দিকে হাত বাড়াইছি ঠিক তখনি

– ঠাসসসসসসসস।

কেউ কাউকে মারলো মনে হয় । হ্যা। নীলাদ্রি অধরা কে মারলো। আমার রাগ তো সেই লেভেলে পৌঁছে গেছে।

– তোমাকে বলছি না বাপি ঘুমাচ্ছে তবুও বাপির উপর লাফাচ্ছ কেন? ব্যাথ্যা পায় না।

অধরা কান্না করছে । ঠিক তখনি আমি উঠে বসলাম । আমায় বসে দেখে নীলাদ্রি রুম থেকে বেরিয়ে গেল । যদিও ওর উপর অনেক রাগ উটছে তবুও কিছু বললাম না ।

– বলছিলাম না আম্মু তোমার আম্মু পঁচা

– হুম । বাপি আম্মু পচা খুব পঁচা ।

– খুব লাগছে আম্মু

– হুহু

– কাঁদে না আমার লক্ষী আম্মু। চলো তোমার আম্মুর বিচার করবো

– চলো

অধরা কে নিয়ে নিচে আসলাম ।

– ডাকো তোমার আম্মু কে

– আম্মু বাপি ডাকে

কথা টা বলতে দেরি হলো কিন্তু ও আসতে দেরি হলো না।

– ডাকছো?

– অধরা কে মারলি কেন?

– তুমি ঘুমাচ্ছিলে তখন ও

– ও কি হ্যা? ওর যা ইচ্ছে তাই করবে তাতে তোর কি ?

– না মানে

– আর যেন কোনো দিন ওর গায়ে হাত তুলতে না দেখি । আমি চাই না আমার মেয়ে কোনো কষ্ট পাক।

– আচ্ছা ।

– তোকে এসব বলছি কেন? আজকের পর থেকে তোকে যেন এই বাড়িতে না দেখি

– তাহলে কোথায় যাবো আমি ? ( কান্না করে )

– আমি কি জানি? তোর যেখানে ইচ্ছে ।

– প্লিজ এমন করো না

– তোর সাথে কথা বলার সময় নাই । আম্মু চলো আমরা আবার ঘুমাবো ।

আমি রুমে চলে আসলাম । অধরা কিছুক্ষন ওখানে দাড়িয়ে কাদলো তারপর রান্না ঘরে গেলো ।

– কি রে মা কাঁদছিস কেন ?

– এমনি

– সুমন কিছু বলছে ?

– না আম্মু ।

– তুই তো কারণ ছাড়া কাদার মতো মেয়ে না ঠিক করে বল কি হইছে ?

– ও আমায় বাসা থেকে চলে যেতে বলছে

– কি বলিশ?

– প্লিজ আম্মু আমায় তাড়িয়ে দিও না আমি এখানে থাকবো । রুমে জায়গা না দিক সমস্যা নাই আমি রান্না ঘরে থাকতে পারবো । তবুও আমায় এই বাসা থেকে তাড়িয়ে দিও না ।

– পাগলী কি বলছিস এসব

– তুমি একটু ওকে বলো না আম্মু আমায় যাতে তাড়িয়ে না দেয় । আমি বাসার সব কাজ করবো ।

আম্মু আর কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে যায় ।

আমি সকাল বেলা কিছু খাইনি তাই খুব ক্ষুধা পাইছে ।

– অধরা আম্মু

– হ্যা বাপি

– দেখতো রান্না ঘরে তোমার দাদীমা আছে কি না।

– কেন?

– যদি থাকে তবে বলবে বাপির খুব ক্ষুধা পাইছে

– আচ্চা।

অধরা কে পাঠিয়ে দিয়ে আমি আবার শুইলাম। বেশি আলস হলে যা হয় আর কি ।

একটু পরে কে যেন আমার গায়ে হাত দিলো

– এই কে?

– আমি

– তুই ? তুই রুমে কেন? তোকে না আমার সামনে আসতে না করছি

– অধরা বললো তোমার নাকি ক্ষুধা পাইছে তাই

– তাই? তাই কি?

– তোমার খাবার নিয়ে আসলাম ।

– আমি খাবো না

– প্লিজ এমন করো না। খেয়ে নাও

– আমি খাই বা না খাই তাতে তোর কি ?

– তোমার শরীর খারাপ করবে

– আমায় নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। আর অধরা কই

– আম্মুর কাছে

– নিচে যা। ওকে পাঠিয়ে দেয় ।

– খাবার গুলো ।

– নিয়ে যা।

অধরা কান্না করতে করতে খাবার গুলো নিয়ে নিচে গেলো। এরপর অধরা আর আম্মু আসলো সাথে খাবার গুলো নিয়ে

– সুমন অধরা র নাকি ক্ষুধা পাইছে তুই খাওয়াই দে তো

– আচ্ছা আম্মু ।

আমি অধরা কে খাওয়াই দিতে লাগলাম । আম্মু ও চলে গেল ।

– বাপি আমিও তোমায় খাওয়াই দেই

– না আম্মু আমার ক্ষুধা নেই

– তাহলে আমিও খাবো না ।

– আচ্ছা দাও।

– জানো বাপি দাদীমা বললো আম্মু ও নাকি কাল থেকে কিচু খায় নি।

– তো

– আমি আম্মুকে বললাম আমি তোমায় খাওয়াই দেই

– তোমার আম্মু কি বললো

– বললো তোমাল বাপি কে আগে খাওয়াও তাল পল আমি নিজেই খাবো।

– তাই তুমি আমায় খাওয়াচ্ছো

– হুম

দরজার দিকে তাকিয়ে বুজলাম কেউ আমাদের কথা শুনছে আর আমাদের দেখছে । যদিও জানি এটা নীলাদ্রি ছাড়া অন্য কেউ নয় তবুও বললাম

– দরজায় কে রে

কথাটা বলার সাথে সাথেই চলে গেল……..
………….
………..
……….
………
……..
…….
……
…..
….

..
.
To be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here