কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব : ১৭+১৮
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
– তোমার পরিবর্তন সম্ভব না কোন ভাবেই ❓
– একবার সু্যোগ করে দাও প্লিজ তোমাকে ভাল বেসে পরিবর্তন হবার। তুমিই পাড়ো তোমার ভালবাসা দিয়ে আমাকে পরিবর্তন করতে। প্লিজ বলো আমাকে ভাল হবার সুযোগ করে দিবে। (হাতে হাত রেখে) – একবার সু্যোগ করে দাও প্লিজ তোমাকে ভাল বেসে পরিবর্তন হবার। তুমিই পাড়ো তোমার ভালবাসা দিয়ে আমাকে পরিবর্তন করতে। প্লিজ বলো আমাকে ভাল হবার সুযোগ করে দিবে। (হাতে হাত রেখে)
– আমার মনে হয়না তুমি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবে ।
– প্লিজ একবার সুযোগ করে দাও নিজেকে পরিবর্তন করার।
– দেখো এসব সম্ভব না।
– তুমি কি চাওনা আমি ভাল হয়❓বাঙালী মুসলমান মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকি। নাকি চাও আমি বাজে তো আছি আরো বাজে হয়ে যায়।
– তুমি কি জানে তুমি যদি কখনও কাউকে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় করে দিতে পারো তাইলে আল্লাহ পাক তোমার উপর কতটা সন্তুষ্টি হবে একবার ভেবে দেখেছো ।
– ডানা যে আমাকে ভালবাসে।
– দেখ আমরা একটা ভালো ছেলে দেখে ডানাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। তাইলে ডানাও সুখী হবে আর আমরাও সুখী ভাবে জীবন কাটাতে পারব।
– ডানা আমাকে ছাড়া বাঁচবে না।
– দেখ এটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি না এটা বাস্তব জীবন।
– আমিও যে খুব ভালবাসি ডানাকে
।।
– আম্মু।
– আয় মা কাছে আয়।
– আম্মু তোমার ছেলের এসএমএস পেয়েছো।
– হুমম পেয়েছি।
– আমাদের আসলে না বুঝে তাকে খারাপ ভাবা ঠিক হয়নি। ( আম্মু কাছে গিয়ে বসে মাথা নীচু করে)
– কি লজ্জা ❓কি ভালবাসা ❓
– আম্মু তুমি যে কি বলো না। লজ্জা লাগেনা বুঝি।
– ওরে আমার লজ্জাবতী বৌমা।
– তা আপনার সাহেব কখন ফিরতে পারে কিছু বলেছে।
– না আম্মু।
– তাইলে আজকে সারারাত জান্নাতের সাথেই থাকবে। ( রাগান্বিত করার চেষ্টা)
– আমি মেরে ফেলব তোমার ছেলেকে এরকম কিছু করলে।
– আমি শিওর দেখবি রেজন আজ বাসায় ফিরবে না।
– আম্মু আমার কিন্তু খুব রাগ হচ্ছে। ( রেগে গজগজ করছে)
– তোর বিশ্বাস নেই আমার ছেলের প্রতি ❓
– হুমম আছে তো।
– তাইলে কিভাবে ভাবতে পারলি আমার ছেলের দ্বারা এমন কিছু হবে।
– স্যরি আম্মু।
– তাইলে এখন আমার পায়ের উপর শুয়ে পড় একটু গল্প করি।
– ওকে আম্মু।
।।
– দেখ তুমিও আবেগ আর অনুভূতি দিয়ে কথা বলছো।
– দেখ এটা আমার আবেগ না।
হটাৎ গাড়ী ব্রেক করল।
– পেয়ে গেছি।
– আর বাসায় গিয়ে স্বাভাবিক ব্যাবহার করবে। কারণ আমি বাড়ির সবাইকে বলে দিছি আমাদের সব কিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে।
– কথাটা বলা কি ঠিক হয়েছে ❓
– সেটা পড়ে দেখা যাবে। ( হাত ধরে)
– হুমম।
তারপর দুজন পাশাপাশি হেঁটে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে গিয়ে আমি অবাক হতে লাগলাম।
অবাক হবার এইটাই কারণ বাসা ভর্তি মানুষ।
আমি ভাবতে লাগলাম এতো মানুষ কি করতে। আমার আবার বেশি মানুষ
,বেশি কোলাহল ভাল লাগে না।
কতক্ষণ পড়ে আমাদের সবাই দেখা মাত্রই ঘিরে ধরলো। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। সবাই আমাকে জামাই জামাই বলে কান ঝালাপালা করে ফেলে দিতেছে।
একজন বলতে লাগল ছেলেটা দেখতে খুব সুন্দর।
অন্য একজন ছেলেকে দেখতে তো রাজপুত্রের মতো। এক পিচ্চি বলতে লাগল দুলাভাই তো তামিল নায়কের মতো দেখতে।
এসব শুনতে শুনতে আমি বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি।
।।
।।
।।
কতক্ষণ পড়ে আমাদের ভিতরে যেতে বলা হলো। আমি জান্নাতের পাশে হাঁটতেছি আর জান্নাতকে বলছি।
– এসব কি ❓
– আরে আমি আম্মুকে মাত্র বলছিলাম তোমাকে সাথে নিয়ে আসব। আর আম্মু আমার সকল আত্মীয় স্বজনদের ডেকে নিয়ে এসেছে তোমাকে দেখাতে ।
– তোমরা কি শুরু করেছো আমাকে নিয়ে ❓আমায় কি বানর মনে হয় তোমাদের সবাইকে ডেকে দেখাতে হবে।
– স্যরিরে বাবু।
– কে বাবু ❓
– তুমি বাবু।
– কিসের ❓
– তুমি আমার বাবু।
।।
ডানা মায়ের পায়ের উপর শুয়ে আছে।
– আচ্ছা আম্মু।
– হুমম বল।
– তোমাদের মাঝে যখন রাগ অভিমান হয় আমার শ্বশুর কিভাবে তোমার রাগ ভাঙ্গায়।
– এই ফাজিল কোথাকার তুই কি বলছিস বুঝতে পারছিস তো ( গাল দুটো ধরে)
– হুমম আম্মু বুঝতে পারছি।
– এসব কথা কেউ আম্মুর থেকে জিজ্ঞাসা করে।
– আমার তো আর কেউ নেই যার সাথে আমার কথা গুলো শেয়ার করব।
– তাইলে আমি তোর কে ❓
– আম্মু।
– তাইলে কেন বলছিস তোর কেউ নেই ❓
– স্যরি আম্মু।
– আম্মু মন ভাল নেই একটা গান শোনাও না।
– আমি তো গান পারি না রে আম্মু।
– তাইলে একটা গল্প বলো সেটা শুনে আমার মন ভাল হয়ে যায়।
– ওকে বলছি।
।।
– দেখ আমি তোমার সাথে থাকতে পারব না। কারণ আমি ডানাকে ভালবাসি।
– এই বিষয় নিয়ে পড়ে কথা বলি ❓
– আব্বু তোমার জন্যে অপেক্ষা করছে কথা বলার জন্য।
– হুমম।
জান্নাতের বাবার সামনে গিয়ে।
– আসসালামুয়ালাইকুম স্যার। কেমন আছেন ❓
– ওয়ালাইকুমুস সালাম। ভাল আছি বাবা তুমি কেমন আছো❓ ( একটু নড়ে চড়ে বসে। আমার একটা বিষয় নিয়ে হাসি পাচ্ছিলো জান্নাতের বাবার নড়াচড়া করতে একটু কষ্ট হচ্ছে। কারণ তাহার যে পেট। ইয়া বড়ো পেট। যখন একটু নড়ছে তখন মনে হচ্ছে যেন সোফা ভেঙ্গে পড়ে যাবে )
হাসি লুকিয়ে রেখে
– হুমম ভাল স্যার।
– এই তুমি আমাকে স্যার বলছো কেন ❓
– তাইলে কি ম্যাডাম বলব ❓( মজা নিতে)
জান্নাতের বাবা বসা থেকে দাড়িয়ে এমন একটা কথা বলল যেটা শুনে হাসব নাকি কাঁদব বুঝে উঠতে পারছি না।
আপনারাই বলেন কি করব এখন ❓হাসবো নাকি কাঁদবো
।
চলবে
কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব : ১৮
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
হাসি লুকিয়ে রেখে
– হুমম ভাল স্যার।
– এই তুমি আমাকে স্যার বলছো কেন ❓
– তাইলে কি ম্যাডাম বলব ❓( মজা নিতে)
জান্নাতের বাবা বসা থেকে দাঁড়িয়ে এমন একটা কথা বলল যেটা শুনে হাসব নাকি কাঁদব বুঝে উঠতে পারছি না।
আপনারাই বলেন কি করব এখন ❓হাসবো নাকি কাঁদবো ।
– বাবা তোমার কথা গুলো আমার খুব ভাল লাগে। তোমাকে একটু বুকে জড়িয়ে ধরি ❓
– না না না না না আঙ্কেল । অন্যকোন দিন জড়িয়ে ধরবেন ।
– না আজকেই।
– হুমম যাও বাবা তোমার শ্বশুর জড়িয়ে ধরতে চাচ্ছে আর তুমি না করছো কেন ❓
– আন্টি আপনার হাজবেন্ডের যে পেটের সাইজ। আমার মতো ক্ষুদ্র মানবকে জড়িয়ে ধরলে মারা যাব পেটের আঘাতে। আপনাকে জড়িয়ে ধরে কেমনে আমার বুঝে আসে না।
– কি বলো বিড়বিড় করে ।
– কিছুনা আন্টি।
কতক্ষন পড়ে দেখলাম বিশাল দেহী পেট ওয়ালা আমার দিকে আসতেছে।
ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও জড়িয়ে ধরলো আমায়। কিন্তু আমি তাঁর বুকের দেখে পেলাম না। তাঁর পেটকে অতিক্রম করে তাঁর বুকের দেখে মিললো না।
।।
এদিকে আম্মু আর ডানা বসে বসে হাজারো গল্প জুড়ে বসেছে।
কিছুক্ষন পড়ে।
– আচ্ছা আম্মু তোমার ছেলে তো এখনও বাসায় ফিরল না।
– হয়তো বা দরকারী কোন কাজে আটকিয়ে গেছে ।
– হুমম হয়তো।
– আম্মু বাবা আসবে কখন ❓
– এখনই হয়তো চলে আসবে।
– আচ্ছা আম্মু চলো খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।
– আমার খেতে ইচ্ছা করছে না মা। তুই খেয়ে ঘুমিয়ে পড় রেজনের আসতে আসতে হয়তো লেট হবে।
– আমারও খেতে ইচ্ছা করছে না আম্মু।
– কেন আমার বাবুর অপেক্ষায় আছিস বুঝি ❓
– কত প্রেম কত ভালবাসা । আল্লাহ যেন এই ভালবাসা কখনও কমিয়ে না আনে।
– হুমম আম্মু তোমার দোয়া থাকলে সব কিছু হবে।
– আমার দোয়া তো সবসময়ই তোদের পাশে।
– হুমম আম্মু। ( জড়িয়ে ধরে)
– যাহ্ পাগলী গিয়ে ঘুমের প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমিয়ে পড়।
– হুমম আম্মু।
তারপর ডানার নিজের রুমে এসে গেল।
।।
কতক্ষণ গল্পগুজব করে রাতে জামাই আদর খেয়ে বাসার দিকে রওনা দিতে সিধান্ত নিলাম।
জান্নাতের আব্বু আম্মু অবশ্য বলছে আজকের রাতটা থেকে যেতে কিন্তু আম্মু ও ডানার জন্যে হলেও বাসায় যাওয়া লাগবে।
– এই আজকে না গেলে হয় না ❓( আমার দুই কাঁধের উপরে জান্নাত হাত দিয়ে আছে )
– বাসার সবাই টেনশন করবে।
– আমি বাসায় ফোন দিয়ে দেয়। তখন টেনশন করবে না।
– তখন আবার টেনশন বেশি করবে। তার চেয়ে আমার বাসায় যাওয়া উত্তম।
– একটু আদর করি প্লিজ।
– না আমার আদর লাগবে না।
– আমার তো আদর লাগবে বাবু।
কথাটা বলেই আমার খুব কাছে চলে আসল জান্নাত। দুজনের মাঝে কোন জায়গা রাখে নি জান্নাত।
– এই প্লিজ এইরকম করছো কেন তুমি ❓
আমার কোন কথা না শুনেই জান্নাত তাঁর ঠোঁট আমার ঠোঁটের দিকে আগাতে থাকে।
ঠোঁট দুটি খুব কাছাকাছি যে কোন সময় সংঘর্ষ লাগতে পারে। নিশ্বাসটা কেমন যেন ভারী হয়ে যাচ্ছে। একজনের গরম শ্বাস অন্যজন উপলব্ধি করতে পারছে।
হঠাৎই আমি জান্নাতকে তাঁর দুই কাঁধে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে দিলাম।
– এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। তুমি যদি আমার সাথে এমনটা করো তাইলে কিন্তু আমি আর ভুল করেও তোমাদের বাসায় আসব না। প্লাস অফিসেও আসব না।
– আচ্ছা তুমি এতো ক্ষ্যাত মার্কা হয়ে যাচ্ছো কেন বলতো ❓
– কিভাবে আমি ক্ষ্যাত হলাম।
– তোমার কথা বার্তা চাল চলন জামা কাপড়ের স্টাইল সকল কিছু ক্ষ্যাত মার্কা।
– তাইলে এই ক্ষ্যাত মার্কা ছেলেকে নিয়ে বাসায় আসলে কেন আবার নাকি আমায় ভালবাসো ❓
– তুমি আমার সাথে থাকলে তুমি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
– তোমার সাথে থাকার আমার কোন ইচ্ছা নেই। আর আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো ভাল হয়ে যাচ্ছো কিছুটা কিন্তু আমার ধারণা সম্পুর্ণ ভুল ছিল ।
আমি আর একটা মূহুর্ত এখানে থাকার কোন প্রকার ইচ্ছাশক্তি নেই।
কথাটা বলেই হাঁটা দিতে শুরু করলাম।
– দাঁড়াও এতো রাতে গাড়ি পাবে না। আমি নামিয়ে দিয়ে আসি।
।।
গাড়ির পিছনের সিটে বসে আছি।
– সামনে চলে আসো।
– না আমি পিছনেই অনেক নিরাপদ আছি।
– এই আমার না ড্রাইভিং করতে কেমন যেন লাগছে।
– মানে ❓
– মাথা ঘুরতেছে।
– ওকে তোমার আমায় ছেড়ে দিয়ে আসতে হবে না আমি একাই চলে যেতে পারব।
– আমি বলি কি তুমি যদি ড্রাইভিং করতে তাইলে ভাল হতো। কারণ আমার মাথা তো ঘুরাচ্ছে।
– আমি না হয় যাবার পথে ড্রাইভিং করে গেলাম কিন্তু তুমি আসবে কেমনে।
– তখন মাথা ঠিক হয়ে যাবে। আর সমস্যা হবে না।
– ওকে৷
– তারপর আমি ড্রাইভিং সিটে বসলাম আর জান্নাত গিয়ে পাশের সিটে বসল।
আমি গাড়ি স্টার্ট দিয়ে রওনা হতে লাগলাম।
জান্নাত ভাবছে মিথ্যা বলে তো তোমার পাশে আসতে পারলাম। এটাই অনেক কিছু আমার কাছে।
গাড়ি চলছে তাঁর নিজ্বব গতিপথে। কেউ কারো সাথে কথা বলছি না। দুজনে আনমনে বসে আছি। মনে হচ্ছে যেন চুপ থাকার প্রতিযোগিতা চলছে ।
নিরব নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে শহরটা। কোন কোলাহল নেই। কোন মানুষের চিহ্ন পর্যন্ত নেই।
কতক্ষণ পড়ে হঠাৎই গাড়ি ব্রেক করলাম।
– জান্নাত চলে এসেছি।
( আমাকে জান্নাত এখন অফিস বাদে স্যার বলতে নিষেধ করছে। অফিসেও যদি শুধু দুজন থাকি তখনও স্যার বলতে নিষেধ করছে)
– আর একটু প্লিজ থাকো না।
– জান্নাত দেখো এমনিতেই মধ্যরাত পেড়িয়ে রাত শেষের দিকে চলে যাচ্ছে তার উপর আবার হাজার প্রশ্নের জবাব দিতে হবে বাসায় গিয়ে।
– হুমম যাও।
– আর একটা কথা প্লিজ একবার তোমার ওই মায়াভরা মুখে গুড নাইট বলো।
– ওকে বাবা গুড নাইট।
– গেলাম বাই। আর দেখে শুনে যাবে।
– ওকে বাই।
কতক্ষণ সময় এইভাবেই গাড়িতে বসে সময় কাটিয়ে দিলাম।
গাড়ি থেকে নেমে এসে বাসায় ঠুকে গেলাম। যতদূর পর্যন্ত আমাকে দেখা গেল ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাত তাকিয়ে রইল। আমি আড়াল হবার কতক্ষণ পড়ে জান্নাত গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গেল।
।।
।।
।।
আমি এদিকে চুপিচুপি চোরের মতো বাসায় ঠুকছি পা টিপে টিপে, যাতে কোন প্রকার শব্দ না হয়,কেউ বুঝতে না পারে।
বাসায় গিয়ে রুমের দিকে হাঁটা দিলাম। হঠাৎই একটি জায়গায় চোখ আটকিয়ে গেল।
– দেখলাম বাসার সকল লাইট বন্ধ থাকলেও ডানার ঘরে লাইট জ্বলছে।
আমি ভাবতে লাগলাম তাইলে কি ডানা এখনও ঘুমাই নি। আমার জন্যে অপেক্ষা করছে হয়তো। আবার ভাবলাম হয়তো আজকে লাইট বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে গেছে। সাত পাঁচ না ভেবে ডানার রুমের সামনে চলে আসলাম। কতক্ষন পড়ে বুঝতে পারলাম ডানার রুমের দরজা টাও পর্যন্ত খুলে রাখা।
ঠুকে গেলাম ডানার রুমের মধ্যে। ভিতরে গিয়ে দেখলাম ডানা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাবতে লাগলাম ডানা তো আবার আমাদের দেখে ফেলল না । আর দেখলেই বা কি ডানাতো জানে আমরা অফিসের কাজে বের হয়েছিলাম।
– আপনি তাইলে এসেছেন ❓
– হুমম। (ডানাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
ডানা আমার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল। ছাড়িয়ে নিয়ে গোমড়া মুখে বিছানায় গিয়ে বসল।
– এই জান কি হয়েছে ❓
– কই কিছু না তো।
– তাইলে এভাবে গোমড়া মুখে রয়েছো কেন ❓
– চুপ হয়ে আছে।
– কি হয়েছে বলবে ❓আর তুমি এতো রাত পর্যন্ত জেগে আছো কেন ❓
– ঘুম আসছিল না তাই জেগে আছি।
– আমি জানি আমার বাবুটা মিথ্যা বলছে। আমার বাবুতো মিথ্যা বলে না কোন সময়।
– আবার চুপ ডানা।
– আমার বাবুটা বুঝি রাগ করছে আমার উপর।
– একটা পাপ্পু দেই।
– লাগবে না তোর পাপ্পু।
– কেন বাবু ❓
– তুই জান্নাতকে গিয়ে পাপ্পু দিগা।
– তাঁর মানে আমি যেমনটা ভেবেছিলাম তেমন টাই হয়েছে।
– আরে বাবু অফিসে কাজে…………..
কথা শেষ করতে না দিয়েই।
– তোকে আর মিথ্যা বলা লাগবে না।
– সত্যিই বলছি।
– তাইলে বাসার সামনে এসে এতো টাইম কি করলি ❓
– আরে বাবা অফিসের কাজ নিয়েই কথা বার্তা বলছিলাম।
– সারাদিন সারারাত অফিসে কথা বার্তা বলিস তারপরেও তোদের অফিসের কথা ফুরায় না নাটক করিস।
– বাবু একটা গুড নিউজ আছে। ( রাগ ভাঙ্গানোর জন্যে)
– লাগবে না তোর গুড নিউজ।
– কালকে অফিসে যাব না।
– তো আমি কি করব ❓
কালকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাব।
– সত্যি ❓
– হুমম।
– তাইলে একটা ছোট করে পাপ্পু দাও।
– আমি তো ছোট পাপ্পু দিতে পারি না।
– ছোট পাপ্পু না দিলি যাহ। তোর পাপ্পু দেওয়া লাগবে না।
– আচ্ছা ডানা একটা সত্যি কথা বলো তো ❓
– হুমম।
– তুমি এখনও জেগে রয়েছো কেন❓
– কেন আবার তোমার জন্যে।
– আমার জন্যে কেন ❓
– তোমার জন্যে খাবার নিয়ে বসে আছি।
– তারমানে তুমি এখনও খাও নি ❓
– খেয়েছি। ( মিথ্যা)
– আমি জানি তুমি এখনও খাওনি।
– যাও ভাত নিয়ে এসো দুজন একসাথে খাই।
– ওকে বাবু।
।।
কতক্ষণ পড়ে ডানা খাবার প্লেট নিয়ে আসল।
– এই নাও খেয়ে নাও।
– আমি নিজে হাতে খেতে পারব না।
– তাইলে ❓
– খাওয়ে দাও।
– ওকে হাঁ করো।
ডানা আমাকে খাওয়া দিতেছে আর আমি তাকিয়ে আছি ডানার চোখের দিকে।
– আমি জানি ডানা খায়নি তাই আমি প্লেট থেকে খাবার হাতে উঠিয়ে নিয়ে ডানার মুখে দিলাম ।
– দুজন দুজনকে খাওয়া দিতেছি হঠাৎ দেখলাম ডানার চোখে জল।
।
চলবে
।