কিচিরমিচির পর্ব -১১+১২

#গল্প_কিচিরমিচির
#লেখিকা_আদিয়া_মির্জা_সানা(জ্যোতি)
#ক্যাটাগেরি_রোম্যান্টিক

১১.

” সালফিউরিক এসিড তো অনেক শক্তিশালী এসিড।এটা স্কিনে লাগলে স্কিন পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ”

স্যার অবাক হয়ে আবিরকে জিজ্ঞেস করলো। আবির ভড়কে গেল। ঘাড়টা কয়েকবার নাড়িয়ে বললো,

” জানি স্যার কিন্তু এসিডটা আমার সত্যিই খুব বেশি প্রয়োজন। মানে আমার রিসার্চের জন্য অনেক প্রয়োজন এসিডটা।প্লিজ স্যার…! ”

স্যার ইতস্ত করে বললো,

” ল্যাব থেকে এসিড নেওয়া..! তা কি করে হয়?তাও আবার এতো শক্তিশালী এসিড! ”

আবির কিছু বললো না চুপ করে স্যারের দিকে তাকিয়ে থাকলো।স্যার আবিরের দিকে তাকিয়ে বললো,

“সরি আবির আমি এটা অনুমতি তোমাকে দিতে পারছি না! ”

আবির স্মিত হাসলো বললো,

” আচ্ছা স্যার কোনো ব্যাপার না..!”

স্যার আবিরের কথা শুনে উত্তেজিত কন্ঠে বললো,

” কিছু মনে করোনা আবির তবে ল্যাব থেকে এভাবে তোমাকে এসিড দিতে পারছিনা..”

আবির আবার মুচকি হাসি দিলো চেয়ার পিছনে ঠেলে উঠতে উঠতে বললো,

” আসি স্যার আসসালামু আলাইকুম…. ”

স্যার মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।আবির ভিসি স্যারের রুম থেকে বের হয়ে মোবাইল বের করলো।মোবাইলের স্ক্রিনে লেখা ডেট বলছে আজ পনেরো তারিখ তাহলে আর মাত্র সাতদিন পর পর্ব আর ইশিতার বিয়ে।

————
” ইশু চল ফুসকা খায়।আমার অনেক ফুসকা খেতে ইচ্ছে করছে ”

অরিচার কথায় নোট থেকে মুখ তুললাম।এই মেয়েটা সবসময় এইকাজটা করে নিজে ফুসকা খেতে ইচ্ছে করচে বলে আমাকেও খাওয়াবে তারপর বলবে আমি বড়লোক মানুষ আমার কাছে ভাংটি টাকা থাকে না তুই দিয়ে দে।মানে কোনো কথা হলো।এগুলো নিজের মনে মনে ভাবছি আর ভ্রু কুঁচকে অরিচার দিকে তাকিয়ে আছি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অরিচা বললো,

” এভাবে তাকানোর কি আছে হ্যাঁ?আমিই দিবো আজকে টাকা তোর কাছ থেকে নিবো না..”

আমি মুখটা একপাশে বাঁকিয়ে নিলাম। তা দেখে ও ভেংচি কেটে সামনে ফুসকার দিকে গেল।আমি ওর কাণ্ড দেখে মুচকি হাসলাম।তারপর ওর পিছন পিছন গেলাম।

একটা ফুসকা কেবল মুখে তুলেছি। সামনে তাকিয়ে আমার চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। এ কি পর্বভাই একটা মেয়েকে আইসক্রিম খাইয়ে দিচ্ছে মুখে তুলে।আমার মাথায় দপ করে আগুন জ্বলে গেল।সবকিছু অন্ধকার দেখছি চোখের সামনে শুধু ঐ পেত্নীটার হাসি আর পর্বভাইয়ার হেসে ওর মুখে আইসক্রিম তুলে দেওয়া দেখছি।ফুসকার প্লেটটা চেয়ারের উপর রেখে। সোজা ওদের দিকে চলে গেলাম পর্বভাই আমাকে দেখে মুখে হাসি নিয়ে বললো,

” আরে ইশুপাখি! তোর নোট করা শেষ?বাবা তুই এতো ফার্স্ট হলি কবে থেকে..”

আমি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললাম,

” আমি ওলোয়েজ ফার্স্ট ছিলাম কেন আপনাদের অসুবিধা করলাম নাকি?”

পর্বভাই আমার দিকে ভ্রু উঁচু করে তাকালো।তারপর বললো,

” তুই কি রেগে আছিস?যাকগে তা রেগে থাক সমস্যা নেই।এদিকে দেখ আমার ছোটবেলার সেই বান্ধবী ফাইজা..”

আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। কালো কালারের টপস্ আর জিন্স পড়া হাতে টাইটান ব্যান্ডের একটা ঘড়ি।আমাকে তার দিকে তাকাতে দেখে মুচকি হাসলো বললো,

” হ্যালো ইশু আমি ফাইজা।তুমি তো পর্বের চাচাতো বোন না?”

আমি কিছু না বলে পর্বভাইয়ের দিকে তাকালাম ঝাড়ি দিয়ে বললাম,

” বাসায় চলেন আমার ভালো লাগছে না।”

পড়বভাই উত্তেজিত হয়ে আমার কাছে এসে আমার কপালে গলায় হাত দিয়ে দেখলো বললো,

” কি হয়েছে ইশুপাখি খারাপ লাগছে তোর? কি হয়েছে বল?জ্বর তো নেই..তাহলে কি পেটে ব্যাথা?”

আমি আমার গলা থেকে পর্বভাইয়ের হাত সরিয়ে দিয়ে বিরক্তির স্বরে বললাম,

” ভালো লাগছে না বললেই কি ধরে নিতে হবে পেটে ব্যাথা আর কিছু ভাবতে পারেন না?”

পড়বভাই একটা টেডি স্মাইল দিয়ে বললো,

” মেয়েদের তো প্রধান অসুখই ঐটা পেটে ব্যাথা..”

আমি মাথা নিচু করে নিচু স্বরে বললাম,

” হুম..”

পর্বভাই ব্যস্ত হয়ে আমাকে বললো,

” তুই আমাকে আগে বলবি না? আজ আসার কি দরকার ছিল? আচ্ছা ফাইজা তোমার সাথে আমি পরে কথা বলবো।এখন ইশুপাখি অসুস্থ ওকে রেস্ট নিতে হবে আসি কেমন…”

আমি হ্যা হয়ে পর্বভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি।সে ফািজাকে বিদায় দিয়ে আমার হাত ধরে সেখান থেকে চলে এলো।বাইকের সামনে এসে জিজ্ঞেস করলো,

” বাইকে যেতে পারবি? পেটে ব্যাথা কি বেশি করছে? আজ না আসায় ভালো ছিল!কি দরকার ছিল আজকে আসার…?”

আমি ক্ষীণ স্বরে বললাম ,

” পারবো যেতে এতো চিন্তা করো না পেটে ব্যাথা আস্তে আস্তে স্টার্ট হচ্ছে বেশি হওয়ার আগেই হয়তো বাসায় পৌঁছে যাবো… ”

পর্বভাই করুণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো।বললো,

” গরম গরম কফি কিনে দিই কফি খা তাহলে পেটে ব্যাথা হবে না…”

আমি এবার সত্যি প্রচন্ড বিরক্ত এটা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার এটা নিয়ে এতো চিন্তা করার কি আছে বুঝলাম না।ধূর! বিরক্তি কন্ঠে বললাম,

” তুমি আমাকে বাসায় নিয়ে যাবে নাকি আমি রিকশা নিয়ে চলে যাবো…!”

পর্বভাই আমার কথা শুনে তাড়াতড়ি বাইক স্টার্ট দিলো।আমি পিছনে বসে পড়লাম।

———

বাইক থেকে নেমে ড্রইংরুম পার করতে করতে আব্বু আম্মু কিছু কথপোকথন কানে আসলো।আব্বু এ সময় বাড়িতে দেখে বেশ অবাক হলাম।আম্মু আব্বুকে উদ্দেশ্য করে বলছে,

” দাদা সামনে ২৩ তারিখে পর্ব আর ইশুর বিয়ে দিতে চাইছে..!কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি সবকিছু এরেঞ্জ করবো কিভাবে?”

আম্মু কথা আব্বু বললো,

” তাড়াতাড়ি কই হাতে তো সাত দিন আছে তুমি চিন্তা করোনা সব কিছু ম্যানেজ হয়ে যাবে..!”

” আড়ি পেতে মানুষের কথা শোনা মটেও ভালো স্বভাব না ইশুপাখি… ”

পর্বভাইয়ের এমন হঠাৎ কথায় কেঁপে উঠলাম আমি। একটা ঢোক গিলে পর্বভাইয়ের দিকে তাকালাম মুখ ভেঙচি দিয়ে বললাম,

” আমি মটেও আড়ি পাতছি না..হাহ্ ”

বলেই আমি সামনের দিকে হাটা ধরলাম পিছন থেকে পর্বভাইয়ের হাসির শব্দ পেলাম।আর বলতে শুনলাম,

” ও আচ্ছা তাই..! ”

দুই সিঁড়ি পাড় করতেই সবকিছু অন্ধকার দেখতে শুরু করলাম।পেটের ভিতর থেকে যেন কেউ ছুড়ি দিয়ে নাড়ি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।তারপর ধপ করে মাথায় বাড়ি খেলাম।হয়তো নিচে পড়ে গিয়েছি।আর কিছু মনে নেই!
#গল্প_কিচিরমিচির
#লেখিকা_আদিয়া_মির্জা_সানা(জ্যোতি)
#ক্যাটাগেরি_রোম্যান্টিক

১২.

ঘুমের মধ্যে পেটে উপর উষ্ণ কোনো ভারি বস্তু অনুভব করছি।পেট ব্যাথাও আপাতত অনুভূত হচ্ছে না। পিট পিট করে চোখে খুলে ঘরের চারিদিকে চোখ বুলালাম। খাটের ডান পাশে পর্বভাই আমার দিকে উঁকি দিয়ে চেয়ে আছে।আমি ভ্রু কিঞ্চিত কুঁচকে মাথা নেড়ে পর্বভাইকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে?তা দেখে সে আমার ডান দিক থেকে বা দিকে আসলো। ধীর স্বরে বললো,

” এখন কেমন লাগছে?পেটে ব্যাথা কমেছে? ”

আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি চুপ করে। সে একটা কালো টিশার্ট আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরা। বড় বড় কোকড়া চুলগুলো বরাবরের মতো চোখের উপর এসে তাকে জ্বালাচ্ছে। বড় বড় চোখের পাপড়িগুলো বারবার পলক ফেলার দরুন নড়ছে।বেশ ভালো লাগছে দেখতে।তাকে দেখতে দেখতেই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ধরা দিলো।তার দিকে তাকিয়ে এমন হাসি দিতে দেখে সে তার চোখের সামনে আসা চুলগুলো হাত দিয়ে পিছনে ঠেলে ভ্রু উঁচু করে জিজ্ঞেস করলো,

” কিরে খেয়ে ফেলবি নাকি? ”

আমি হাসি হাসি মুখেই আনমনে বললাম,

” ইচ্ছে তো করছে। তবে সম্ভব না সম্ভব হলে খেয়েই ফেলতাম তোমাকে ভাগ দিতাম না ”

পর্বভাই আমার কথা শুনে অট্টহাসি হাসি দিয়ে উঠলো। আমি চমকে কেঁপে উঠলাম।তারপর দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম।হায় আল্লাহ্!এগুলো কি বললাম আমি!

পর্বভাই আমার হাত ধরে টানছে আমি হাত দুটো দিয়ে মুখ ঢেকে আছি খুব শক্ত করে।সে হাত ধরে টানতে টানতেই বললো,

” আরে আরে ইশুপাখি মুখ ঢাকছিস কেন। আরে হাত সরা দেখি তোর আপেলের মতো মুখ দুটো…ঐ ইশুপাখি হাত সরা বলছি….আমি তোর মুখ দেখবো কি বললি তুই…!”

আমি মুখ ঢেকেই বললাম,

” কিছু বলিনি আমি সরো তুমি যাও এখন। আমি এখন সুস্থ…! ”

পর্বভাই আমার হাত ধরে টেনে মুখ থেকে সরিয়ে দিলো।আমি আবার মুখে দিলাম সে আবার সরিয়ে দিলো। এবার মুখে দিতে যাবো তখনই আমার একটানে বসিয়ে দেয়।তারপর আমার দুই হাত আমার পিছনে একসাথ করে চেপে ধরে।আমি মুচড়া মুচড়ি করে যাচ্ছি। তবে তাতে সে ভ্রুক্ষেপহীন। আমার মুখে ফুঁ দিয়ে বললো,

” না তুই বলেছিস! ”

আমি মুচড়া মুচড়ি করতে করতেই বললাম,

” না আমি কিছু বলিনি…!”

এবার বোধহয় উনি একটু চটে গেল।একটা ঝাড়ি দিয়ে বললো,

” উফ্ এতো ছটফট করিস কেন চুপ থাক… নইলে কিন্তু খবর আছে..”

আমি চুপ হয়ে গেলাম। পর্বভাই একটু সরে আমাদের কাছে এসে বসলো।শান্ত কন্ঠে বললো,

“ভালোবাসি?!”

আমি ঝড়ের ড ডানেবামে মাথা নাড়ালাম।তা দেখে পর্বভাই মুচকি হাসলো। বললো,

” কিউট পাখি আমার…কিছু দিন পর মাপাখি হয়ে যাবে। ঘুমিয়ে পড় এবার গুড নাইট গেলাম আমি..”

বলে পর্বভাই হাই তুলতে তুলতে চলে গেল।আমি মুচকি হেসে ধপ করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম!

———
আজ ২২ তারিখ আমার আর পর্বভাইয়ের গায়ে হলুদ। দেখতে দেখতে পাঁচ দিন চলে গেল।পাঁচ দিনে তেমন বিশেষ কিছু ঘটেনি।এর মাঝে তিনদিনই গিয়েছে মার্কেট করতে করতে।আর দুদিন বাড়ি ডেকোরেশন করতে করতে।আর একঘন্টা পরই পার্লার থেকে লোক আসবে আমাকে সাজাতে।আমি জালানার পাশে দাঁড়িয়ে দূর আকাশে চেয়ে আছি।কিছুদিন আগেও পর্বভাইকে আরেকজনের সাথে ভাগিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম।আর এখন অন্য কারো সাথে দেখতেই পারি না।

হঠাৎ পিছন থেকে দুটো এসে আমার পেটে পড়লো।আমার বুঝতে বাকি রইলো না এটা কে?!
তাই বললাম,

” আপনি এখানে…রেডি হবেন না গায়ে হলুদের সময় হয়ে যাবে তো! ”

সে আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে আমার ঘাড়ে থুঁতনি রাখলো। বললো,

” অনেক মিস করছিলাম তোকে..ধুর বিয়েতে এতো ঝামেলা জানলে বিয়েই করতাম না…”

আমি চমকে উঠে একটু জোরেই বললাম,

” কিহ্…”

পর্বভাই আমাকে আরও শক্ত করে চেপে ধরলো।তারপর কানে ফিসফিস করে বললো,

” হ্যা এটাই লাস্ট আর বিয়ে করবো…এটা কোনো মতে পার করতে পারলে আর বিয়ে করবো না প্রমিস বাবা গো বাবা বিয়েতে কি ঝামেলা..!”

আমি পর্বভাইয়ের হাত সরিয়ে তার দিকে ঘুরে তাকালাম।চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছি।সে আমার কপালে টুকা দিয়ে বললো,

” কিরে ফিডার এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন..?”

আমি এবার রেগে কোমরে হাত দিয়ে বললাম,

” কিহ্ ”

আর কিছু বলবো তার আগে পর্বভাই ছোট করে আমার ঠোঁটে একটা চুমু দিলো।বিষয়টা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে আমি বাধা দেওয়ার সময়টাও পেলাম না।রোবটের মতো থমকে গেলাম।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,

” আপ আপ এটা আব…”

পর্বভাই আমার মুখের কাছে এসে আমাকে ব্যঙ্গ করে বললো,

” টা..! টা..! টাটা। রাতে হলুদ রোম্যান্স করতে আসবো ওকে.. বা.. বা..বাই..!”

বলেই আমার নাকে একটা চুমু দিলো। আমি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি তার দিকে।সে একটা চোখ মেরে চলে গেল।অমনি সাথে সাথে আমার হাত ঠোঁটে চলে গেল তারপর নাকে।লজ্জায় দুইহাত দিয়ে মুখ ঢেকে নিলাম আমি।

____________

হলুদ শাড়ি সাথে বিভিন্ন কাঁচা ফুলের অলংকার পরে বসে আছি স্টেজে।কিছু সোনার অলংকারও আছে।তবে কাঁচা ফুলের জন্য তাদের অস্তিত্ব বের করা দূর্লভ ব্যাপার।কাঁচা ফুলের গন্ধে শরীরে মাখা কৃত্রিম সুগন্ধিও যেন ঢাকা পরে গিয়েছে।সারা শরীর দিয়ে বিভিন্ন ফুলের গন্ধ একসাথ হয়ে এক অসাধারণ সুঘ্রাণ বের হচ্ছে।

” আম্মু আর খাবো না প্লিজ..”

হলুদে মিষ্টি খেতে খেতে আমি শেষ। মাথা ঘুরাচ্ছে এবার আমার।তাই আম্মুকে বললাম যে আমি আর মিষ্টি খেতে পারবোনা।আম্মু ভীড় থেকে সরে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,

” কি হয়েছে? ”

আমি নাক-মুখ কুঁচকে বললাম,

” আর খেতে পারছিনা মাথা ঘোরাচ্ছে অনেক রুমে যাবো প্লিজ..”

পাশ থেকে আপু ধাক্কা দিয়ে বললো,

” মাথা ঘোরাচ্ছে কেন রে? বিয়ে তো কাল। ”

আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

” আপু…চুপ করো কি বলো এগুলো ছিঃ..”

আপু ব্যঙ্গ করে আমাকে অনুসর করে বললো,

” ছিঃ ছিঃ”

আমি আড় চোখে তাকালাম আপুর দিকে। আপু অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।আমিও মুখ টিপে হেসে দিলাম।

আম্মু আপুকে বললো আমাকে উপরে নিয়ে যেতে।আমি আর আপু স্টেজ থেকে উঠে। ভিতরে চলে গেলাম।সিঁড়ি দিয়ে পর্বভাইকে নামতে দেখলাম।হলুদ পাঞ্জাবি পরা।আমি কয়েক মিনিটের জন্য থমকে গেলাম।কারণ পর্বভাইকে যেন একদম হুমায়ুন আহমেদের হিমুর মতো লাগছে।যদিও হিমু পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে রাখতো।তবে পর্বভাই পান খায় না।পর্বভাইয়ে হলুদ আগেই হয়ে গিয়েছে।বড় বড় পাপড়ির চোখগুলো ফোলা ফোলা দেখাচ্ছে। হয়তো ঘুমিয়ে ছিল।আমাকে দেখে ঘুম ঘুম কন্ঠে বললো,

” কিরে ইশুপাখি হলুদ শেষ..?”

আপু পাশ থেকে বললো,

” এ কিরে পর্ব তুই থ্রি কোয়াটার প্যান্টের সাথে পাঞ্জাবি পরেছিস..হা হা..”

বলে আপু মুখে হাত দিয়ে শব্দ করে হেসে ফেললো।আমি আপুর কথা পর্বভাইয়ের নিচের দিকে তাকালাম আসলেই পর্বভাই থ্রি কোয়াটার প্যান্টের উপর পাঞ্জাবি পরেছে।দেখে আমিও হেসে দিলাম।এবার পর্বভাই নিজের দিকে তাকালো।হাই তুলতে তুলতে বললো,

” আন্ডারওয়ারের সাথে পরার ছিল বুঝি?”

আমরা আরও জোরে হেসে দিলাম। তা দেখে পর্বভাই দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

” এই হা হা না করে যা ভিতরে যা অসভ্য দুটো বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানে না.. ”

আমরা হাসি থামিয়ে দিলাম। আপু আবার বললো,

” লুকিং নাইস ওয়েট একটা ছবি তুলি..”

পর্বভাই আমাদের দিকে তেড়ে আসলো।আমরা দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলাম।পিছন থেকে পর্বভাই বললো,

” এই দাঁড়া কই যাস?ছবি তুলবি না?আর ইশুপাখি তোর খবর আছে…”

আমি পিছনে ফিরে মুখ ভেঙচি দিলাম পর্বভাই তা দেখে আবার তেড়ে আসার ভঙ্গিমা করতেই রুমের ভিতরে দৌড় দিলাম।

#চলবে..

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here