কি ছিলে আমার পর্ব -০২

#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব-২

মেঘের পালক চাঁদের নোলক কাগজের খেয়া ভাসছে…..

“আম্মা এই মেয়েলি গান আমি গাইতে পারব না। অন্যকোন অপশন দাও তো!”

বির-ক্ত হয়ে নাকি সুরে বলে উঠলো ময়ূখ। আকাশ জুড়ে নক্ষত্রের রাজত্ব এক ফাঁকে কাঁ-চির মত বাঁকা চাঁদটাও যেন মুচকি হাসছে। একটুও আগেই কারেন্ট চলে যাওয়ায় ইরিন বেগম তিনটে চিপসের প্যাকেট নিয়ে এসে বসলেন ইরশাদের ঘরের বেলকোনিতে৷ ময়ূখও পেছন পেছন এসেছে এক হাতে তার গিটার অন্যহাতে শতরঞ্জিটা নিয়ে। নতুন ফ্ল্যাটে এসে আজ তারা ব্যস্ততার জন্য ঘরদোর মুছতে পারেনি শুধু ঝাড়ুতেই কাজ চালিয়েছে। এই পুরো ফ্ল্যাটে তাদের সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে এই একটা বেলকোনিই। এটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ সবটাই এত দীর্ঘ যে অনায়েসে একটা সিঙ্গেল খাট বিছানো যাবে। ইরশাদ অবশ্য তার পাখির খাঁচা আর দুটো ফুলের টব রেখেছে। আসার সময় বেশিরভাগ ফুলগাছই সে রেখে এসেছে নিজ বাড়িতে৷ এই ভাড়াটিয়া জীবন তার আটাশ বছরের জীবনে দু বার থেকেছে দু বারই শখের গাছগুলো ফেলে এসেছে। তবে এ বাড়িতে বেলকোনি দেখে আফসোস হচ্ছে আরও কিছু গাছ আনলেই পারত!

“আম্মা এ্যাশেজ এর একটা গান ধরি?”

“লাগবে না তোর গান শোনা ওসব ছাইফাই এর গান আমি শুনি না। ইরশাদ তুই একটা গা।”

মুখ ঝামটি মে-রে বললেন ইরিন বেগম। চিপস মুখে পুরতে পুরতে ইরশাদ বলল, “আম্মু তোমরা দুজন যাও তো এ ঘর থেকে। সবসময় শুধু বাচ্চাদের মত লেগে থাকো এটা কেমন? আর তুই কেন আম্মুকে এমন রা-গা-স সেই তো একটু পর পিছন পিছন গিয়ে বলবি, আম্মা আসো তোমার মেয়েলি গানই গাইব!”

ময়ূখ চোখ মুখ কুঁচকে আঁধারেই দেখার চেষ্টা করলো ইরশাদের হাতটা। ছোঁ মে-রে চিপসটা নিয়ে মুখ বাঁকিয়ে বলল, “আজ ভুলেও এমন হবে না। আমি তো আজ ওসব গান একদমই গাইব না। নতুন এলাকা আশপাশের মানুষ শুনলে আমার ইমেজ থাকবে না ভাই।”

এই ছেলের সর্বদা আ-র্তনাদের কারণ থাকে সুন্দরী মেয়েরা। সে সব করবে শুধু সেই করাটা যেন সুন্দরীদের সামনে তার ইমেজ ব্রাইট করার মত হয়। অন্যথা বেচারা হা-হুতাশ করে ম-রে। ইরশাদের ফা-জলা-মো করার মাঝেই ময়ূখ দোতলার ডান পাশের বেলকোনির দিকে তাকালো৷ আঁধারে আবছায়া চোখে পড়ছে সেখানে কেউ দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে। সারাদিনে এ বাড়ির প্রায় প্রত্যেকটা সদস্য সম্পর্কে জানা হয়ে গেছে তার তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই ডাকলো, “আন্টি আমাদের ঘরে গানের কনসার্ট চললে কি খুব বেশি স-ম-স্যা হবে আপনাদের?”

ময়ূখের ডাক এবং উদ্দেশ্য সফল কতটুকু হলো কে জানে বেলকোনির মানুষটা তো তৎক্ষনাৎ ভেতরে চলে গেল। নিজ মনেই ভাবতে লাগলো সে ‘এটা কি হলো!’

ইরিন বেগম ছেলের বাহুতে চ-ড় মে-রে বললেন, ” এত ফাজিল হচ্ছিস কেন দিন দিন। ওটা বাড়িওয়ালি নাকি তার মেয়ে ছিল।”

ইরশাদ বেলকোনির গ্রিলে পিঠ এলিয়ে বসা ছিল মায়ের দিকে মুখ করে। মায়ের মুখের কথাটুকু শুনে ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো, নাহ মেয়েটা চলে গেছে!

আম্মার ব-কাঝকা ময়ূখ কখনোই কানে তোলে না। সে দাঁত কে-লিয়ে বলল, মেয়েটা একটা পেঁ-চা-মুখী আম্মা তারে বললে সে জবাব দিত না। এই যে আন্টি ডেকে বললাম এখন দেখবে জবাব আসবে।

মৈত্রী আজ সন্ধ্যা থেকেই আর্ট পেপার, রঙতুলি এসব নিয়ে বসেছিল কিছু বুকমার্ক বানাবে বলে। শখের কাজ তার পেইন্টিং, বুকমার্ক বানানো আর অসংখ্য বইয়ের চরিত্রের মাঝে ডুবে থাকা। কিন্তু এখন কারেন্ট যাওয়ার পর চার্জার বাতিতেও দেখলো চার্জ নেই। ঘরে আরও একটা চার্জার বাতি আছে সেটা এখন মিশুর ঘরে সে পড়তে বসেছে। ভু-লটা তারই দিনের বেলায় খেয়াল করে চার্জ করলে এখন আর এমন হতো না। কিন্তু কি আর করা! এমনিতেও শীত আসছে আসছে করা বাতাসে হালকা হিম হিম আমেজ৷ গলায় ওড়ানাটা পেঁচিয়ে খোঁপা খুলে চুলগুলোকে এলিয়ে দিলো পিঠে। তারপর ফোন হাতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল আকাশ দেখবে বলে। কিন্তু নিচতলার সেই পা-গল ছেলেটার অমন ফা-তরামো করা ডাক শুনে সে উল্টেপায়ে আবার ঘরে ফিরলো। রোকসানা বেগম সোফায় বসে মোমের আলোয় ছোট কাঁথা সেলাই করছিলেন রোকসানা বেগম। আর মাত্র মাস দুই পরেই উনার ছোট বোনের ডেলিভারি উপলক্ষে। মৈত্রী এসে জানালো নিচতলার ভাড়াটিয়া ডাকছে উনাকে। মৈত্রীর বাবাও সেখানেই ছিলেন। মেয়ের কথা শুনে বেলকোনিতে গিয়ে দাঁড়ালেন স্বামী-স্ত্রী দুজনাতেই। তাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে মৈত্রী। অন্ধকারেই রোকসানা বেগম ডাকলেন, “ইরিন ভাবী! আমাকে ডেকেছেন?”

ইরিন বেগম বেলকোনি থেকে সরে গিয়েছিলেন মাত্রই। ডাক শুনে তিনি এদিকে আসার আগেই ময়ূখ বলল, “জ্বী আন্টি ডেকেছি। আমরা কি বেলকোনিতে বসে গিটার বাজিয়ে গানবাজনা করতে পারি? কোন স-ম-স্যা হবে নাতো!”

ইরশাদ খ-প করে কান চে-পে ধরলো ময়ূখের। বিড়বিড় করে বলল, “তুই এমন মেয়েদের মত এত কথা বলিস কেন রে! আম্মুর চেয়েও বেশি বকবক তুই করিস আজকাল ফা-লতু!”

“আহ্ ভাই কান ছাড়ো ওপর থেকে ওরা দেখলে আমার মান সম্মান কিছুই থাকবে না।”

ময়ূখ নিজের কান ছাড়াতে ছাড়াতে বলল। উপর থেকে জবাব এলো সমস্যা নেই এমনিতেও এ বাড়িতে জনসংখ্যা খুবই কম আর বাড়ির এরিয়া এতই বড় যে পাশের বাড়ি পর্যন্ত ততোটা আওয়াজ যাবে না। মৈত্রীর বাবা এও বললেন, রোকসানা বেগম ভালো গান জানেন যদিও বিয়ের পর হাতে গুণে দু একবারই গেয়েছিলেন। এ কথা শুনে ময়ূখ খুব খুশি হলো। তার অবস্থাটা এমন, “একে তো নাচুনি বুড়ি তারওপর ঢোলের বা-রি!” সে বসে প্ল্যানও করে ফেলল খুব শিগগিরই গানের আসর বসবে ছাঁদে।

নতুন বাড়িতে আসার প্রায় তিন কি চারদিন পরের এক সকালের ঘটনা, ইরশাদ এলাকায় একটু ঘোরাঘুরি করে আশপাশের লোকের সাথে পরিচিত হয়ে জানতে পারলো এখানে একটা খোলামেলা পার্ক আছে। ভোরে প্রায় বেশিরভাগ ডায়বেটিস রোগীরা সেখানে হাঁটতে যায়। মায়ের আজকাল ডায়াবেটিস আপ ডাউন করছে খুব তাই ঠিক করলো কাল থেকে হাটতে নিয়ে যাবে সকাল-বিকাল। সকালে ইরশাদ ফ্রী থাকলেও বিকেলে তার ব্যস্ততা আছে। তাই ঠিক হলো সকালে ইরশাদ বিকেলে ময়ূখ নিয়ে যাবে। ছুটির দিনে বাবা নিয়ে যাবেন তাই আজ বিকেল থেকেই শুরু হাঁটাহাঁটি। ইরশাদ বাড়ি ফেরার সময় বাজার থেকে কিছু ফল কিনেছিলো। বাড়ির গেইটে আসতে তার একটা জরুরি ফোনকল এলো। সেটা রিসিভ করে পাশে দাঁড়াতেই দেখল মৈত্রী নামছে রিকশা থেকে খুব সম্ভবত কিছু কেনাকাটা করে ফিরছে হাতে তার একটা পলি ব্যাগ। ইরশাদ সেই রিকশাটাকেই থামিয়ে মৈত্রীকে ডাকলো, “শোনো”

মৈত্রী ডাক শুনে অবাক হলো ঠিকই কিন্তু বরাবরের মতই সেই অবাক হওয়ার চিহ্ন তার চোখে মুখে নেই। সে জবাব দিলো স্বাভাবিক কণ্ঠে, “জ্বী!”

“বয়সে যথেষ্ট ছোট হবে তাই তুমি করে বলছি, এটা একটু আমার আম্মুকে দিয়ে যেতে পারবে?”

মৈত্রী তাকালো ফলের ব্যাগটার দিকে। সে মাথা নাড়িয়ে জানালো দিতে পারবে। ইরশাদ তার দিকে তাকিয়ে আবার বলল, “বলবে ইরশাদ ভাইয়া দিয়েছে।”

মৈত্রী সেকেন্ড কয়েক তাকালো ইরশাদের বিড়ালচোখে। সমুদ্রের সফেদ ঢেউ নাকি আকাশের পলকা মেঘের ছাপ ওই দু চোখে ঠিক বুঝে পায় না মৈত্রী। সে সাদা চোখের আরও অনেক মানুষ দেখেছে কিন্তু এমন তো কখনও অদ্ভুত লাগেনি তাদের! মৈত্রীর দৃষ্টি আজও অপ্রস্তুত করলো ইরশাদকে তাই সে ফলের ব্যাগটা দিয়ে দাঁড়ায়নি বরং মৈত্রীর আসা রিকশাটাতেই উঠে বসল।

ইরশাদদের ফ্ল্যাটের সামনে থেকেই দোতলায় উঠার সিঁড়ি। মৈত্রী হাতের ব্যাগটার দিকে তাকিয়ে অস্বস্তিবোধ করল। কিন্তু বারবার মনে পড়ছে বাক্যটা, “বলবে ইরশাদ ভাইয়া দিয়েছে।”

লম্বা একটা নিঃশ্বাস টেনে নিয়ে মৈত্রী কলিংবেল বাজালো। এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ মনে মনে সে পাঁচ কাউন্ট করতেই দরজাটা খুলে গেল। এটা তার পুরনো অভ্যাস, যখনই কোন কিছু নিয়ে অ-স্বস্তি, দ্বি-ধা কিংবা অ-স্থি-রতায় ভো-গে তখনই মনে মনে কাউন্ট করে। এতে করে কিছুটা হলেও মন শান্ত হয়। কিন্তু আজ হলো উল্টো দরজায় দাঁড়ানো ব্যক্তিটিকে দেখে। ঢিলেঢালা ছাইরঙা টি শার্ট, থ্রি কোয়ার্টার গ্যাবাডিন প্যান্ট পরনে মাথাভর্তি ঝাঁকড়া চুল যেন এই মাত্র এক ঝাঁক পাখি তার মাথার ওপরই তাদের যু-দ্ধ সমাপ্তি ঘটিয়েছে। মৈত্রীর দিকে তাকিয়ে ময়ূখ তার স্বভাবসুলভ প্রাণখোলা না মানে বলা যায় দাঁতখো-লা হাসিটা দিয়ে ‘হ্যালো’ বলল। মৈত্রী বি-ব্র-ত হলো এমন হুট করে হেসে ওঠা দেখে। হাতের ব্যাগটা ময়ূখের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, “বলবে এটা ইরশাদ ভাইয়া দিয়েছে।”

“কিহ!”

“ইরশাদ ভাইয়া দিয়েছে” বলেই ব্যাগটা ময়ূখের হাতে হস্তান্তর করে দ্রুত পায়ে সিঁড়ির দিকে চলে গেল। এখানে আর একটা মুহূর্তে থাকলে নিশ্চিত এই ভ্যাব-লাকান্তের আরও হাসি দেখতে হবে। কি আজব এক ফ্যামিলি এসে জু-টেছে এখানে! একজন ঠিকঠাক পরিচয়ও নেই তবুও একটা মেয়ের হাতে নিজের ব্যাগ ধরিয়ে বলল, “বলবে ইরশাদ ভাইয়া দিয়েছে।”

মনে মনেই ইরশাদকে ব্যঙ্গ করতে লাগল মৈত্রী অথচ এই ব্যঙ্গত্বের একটু আভাসও পড়ল না তার মুখটিতে। একবার ফিরে যদি পেছনে তাকাতো তবে দেখতে পেতো সেই বা-দর ছেলেটা কেমন হাতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে মেঝেতে। দোতলায় নিজেদের ঘরে ঢুকতেই দেখল তিনতলার ভাড়াটিয়া বাচ্চা শিপলু এসেছে তাদের ঘরে। তিন তলায় থাকে হিন্দু একটি পরিবার৷ বছর তিনেক হল এই বাড়ির তৃতীয় তলা তৈরি করেছে মৈত্রীর বাবা। সেই নতুন ফ্ল্যাট হতেই এসেছে তারা। পাঁচ বছরের শিপলু তখন দুই বছরের ছিল। মৈত্রীদের ঘরে তার অবাধ আনাগোনা থাকলেও মৈত্রীকে সে বিশেষ পছন্দ করে না। তার এক কথা গো-ম-ড়ামুখো আপু তার পছন্দ না। মৈত্রীও খুব একটা আহ্লাদ দেখায় না তাকে তবে আজ তার মাথায় মাংকি টুপি দেখে একটু কপাল কুঁচকালো। কয়েক সেকেন্ড স্থির চেয়ে থেকে বলল, “তোকে একদম নিচতলার কোঁকড়াচুলো বাঁ-দড়টার মত লাগছে শিপু।”

নিচতলায় কোন বানর আছে শুনতেই চোখ মুখ বড় করে তাকালো শিপলু। সে চিড়িয়াখানায় গিয়ে একবার দেখেছিল কিন্তু বাড়িতেও যে বাঁদর থাকতে পারে তা শুনে ভীষণ অবাক হলো। মিশু এখন স্কুলে তাই সে তার বিষ্ময় প্রকাশ করার জন্য দৌড়ে মৈত্রীদের রান্নাঘরে ঢুকলো। রোকসানা বেগম দুপুরের রান্না চড়িয়েছেন চুলায়। ব্যস্ত হাতে সবজি কা-ট-ছেন পাশাপাশি চুলায় বসানো ভাতের দিকেও নজর রাখছেন। শিপলু গিয়ে তাকেই জিজ্ঞেস করলো, “আন্টি বাড়িতে কি বাঁদর থাকে!”

“বাড়িতে বাঁদর থাকবে কেন রে! বাঁদর তো চিড়িয়াখানায় অথবা বনে-জঙ্গলে থাকে।”

“মিতি আপু তো বলল নিচতলায় একটা বাঁদর আছে।”

“নিচতলায়!” বলে অবাকই হলেন রোকসানা বেগম পরমুহূর্তেই বুঝলেন মৈত্রী হয়ত কোন কারণে নতুন ভাড়াটিয়ার ছোট ছেলেটার কথা বলেছে। ছেলেটা খুব হাস্যরসাত্মক স্বভাবের আর ভীষণ চঞ্চল। কথাবার্তায় আপন আপন একটা ভাব আছে তার।

বাড়ির আবহাওয়া দু সপ্তাহের মধ্যে একদম পা-ল্টে গেছে। যে বাড়িতে সারাদিন একটা কাকপক্ষীর ডাকও শোনা যেতো না সে বাড়িতে এখন হরদম হৈ-হু-ল্লোড় লেগে থাকে। সকালের সময়টা মুরুব্বিদের কাটে নামাজ শেষে পার্কে গিয়ে হাঁটাহাঁটিতে। এর পেছনে হাত একমাত্র ইরশাদের। শান্তশিষ্ট অথচ খুব স্বাস্থ্যসচেতন আর অমায়িক স্বভাবের ছেলে সে। প্রতিদিন মসজিদ থেকে ফিরেই বাবা আর মাকে নিয়ে হাঁটতে বের হয় নিয়ম করে। ময়ূখ খুব ঘুমকাতুরে তারওপর রাত জেগে বিসিএসের জন্য পড়াশোনা করে সকালটা সে ঘুমেই পার করে দেয়। ইরশাদও তাই আর টানাটানি করে না তাকে নিজেই বাবা-মাকে নিয়ে বের হয়। এমনই দু দিন বের হওয়ার সময় বাড়িওয়ালা আঙ্কেলের সাথে দেখা হলো। কথায় কথায় তিনিও আনন্দের সাথে সঙ্গী হওয়ার আবদার করলেন। দিন কয়েক যেতেই রোকসানা বেগমকেও নিজেদের সঙ্গী করলেন মুজিব সাহেব। তিনতলার ভাড়াটিয়াদের মধ্যে শিপলুর বাবাও যুক্ত হলেন শুধু রান্নাবান্না আর ছোট শিপলু কান্না করবে বলে শিপলুর মা বাদ পড়লেন। হাটাহাটি পর্ব সেরে সবাই সকালের নাশতার পর নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার আগেই আবার বাড়ির সামনে খোলা একটুখানি জায়গাতে হৈ চৈ পড়ে যায় ক্রিকেট খেলার। তাতে খেলোয়াড় থাকে ময়ূখ, মিশু আর শিপলু। কখনো কখনো যুক্ত হয় বিড়ালচোখা মানুষটাও। মৈত্রী শো-রগো-ল শুনলে প্রায়ই মিশুর ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে। আজও সে রোদে ভেজা ঝলসানো বিকেলটাতে অসম প্রতিদ্ব-ন্দীদের খেলা দেখার উদ্দেশ্যেই উঁকি দিচ্ছিলো। ময়ূখের চোখে পড়তেই সে চেঁচিয়ে ডাকলো, “মিস চিনি ক্রিকেট খেলতে পারেন?”

ইরশাদের হাতে বল সে এখন বোলিংয়ের জন্য দাঁড়িয়েছিল গেইটের পাশে। ময়ূখের কণ্ঠ শুনে উপরে তাকাতেই দেখলো জানালার পর্দা নড়ছে দোতলার একটি ঘরের। মেয়েটি বোধহয় লজ্জা পেল। এই ময়ূখটা না!

চলবে
(ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। মন্তব্যে কৃপণতা না করার অনুরোধ রইলো 😑)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here