ক্রাশ ডাক্তার বউ পর্ব ১১+১২

10+11
#ক্রাশ_ডাক্তার_বউ
#Writer_Sarjin_Islam [সারজীন]
#Part:10
সারা আরো কিছু কড়া কড়া কথা বলে ওখান থেকে চলে যায়।সারার বলা কথাগুলো মাহিরের বুকে তীরের মত বিঁধে।মাহিরের অজান্তেই চোখ দিয়ে বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে যায়। মাহির সারার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে যতক্ষন পর্যন্ত সারা ভিরের মধ্যে হারিয়ে না যায়। সারা মাহিরের চোখের আড়াল হলে মাহির এক পা এক পা করে সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। সমুদ্রের এক একটা ঢেউ আছড়ে পড়ছে মাহিরের গায়ে।মাহিরের চোখের পানি আর সমুদ্রের পানি এক হয়ে যাচ্ছে। মাহির এক দৃষ্টিতে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে ভাবে।মাহিরের একটা আঘাতে সারা কতটা বদলে গেছে।যে সারা কখনো মাহির কে কষ্ট দিয়ে কথা বলতো না সে সারা আজ মাহির কে কষ্ট দিতে দুইবার ভাবে না।এসব ভেবে মাহিরের ইচ্ছে করছে সমুদ্রের বুকে ঝাঁপ দিতে। কিন্তু ওর ভালোবাসার মানুষটা যে ওর উপর অভিমান করে আছে।যে করেই হোক ওকে সারার মান ভাঙাতে হবে।
.
মাহির এসব আকাশ কুসুম ভাবছে তখন কে যেনো ওর কাঁধে হাত রাখে। মাহির পিছনে তাকিয়ে দেখে রাজ দাঁড়িয়ে আছে। মাহির কিছুক্ষণ রাজের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে সামনের দিকে ফিরে মাথা নিচু করে বলে।
.
মাহির : ভালোবাসায় এত কষ্ট কেনো বলতে পারো রাজ? ভালোবাসালেও কষ্ট না বাসলেও কষ্ট। পৃথিবীতে ভালবাসা নামক বস্তুটা না থাকলে বোধহয় প্রেমিক প্রেমিকারা এত কষ্ট পেতো না।
.
উঠে দাঁড়িয়ে রাজের দিকে ফিরে আবার বলতে শুরু করে।
.
মাহির : জানো রাজ সারা না কখনো আমার কষ্ট দেখতে পারতো না। তোমাদের মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় সারা যখন ফাস্ট হয় তখন আমি ওর জন্য ওর প্রিয় খাবারগুলো রান্না করি। কিন্তু জানো আমি ঐদিন রান্না করতে গিয়ে নিজের হাত কেটে ফেলি সারা তা দেখে সে কি কান্না সেদিন অনেক কষ্টে ওর কান্না থামাই। আমার একটু হাত কেটে গেছে বলে ও আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছে যতদিন পর্যন্ত না আমার হাত কাটা ঠিক হয়েছে। আমি অফিসে গেলে ও দুপুরে অফিসে গিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে আসতো।( হাসি দিয়ে ) কি পাগলামিটাই না কারতো সারাদিন আমাকে নিয়ে।আর আজ ( ছোট নিঃশ্বাস ফেলে ) আমার করা একটা ভুলের জন্য আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান মানুষটাকে হারাতে বসেছি।যে সারা আমার কষ্ট দেখলে কান্না করতো সেই সারা আজ আমায় কষ্ট দিয়ে কথা বলে।( তাচ্ছিল্য করে ) আসলে এসব আমার পাপের শাস্তি। আমি আমার আত্মাকে বিশ্বাস করিনি। আমি আমার আত্মাকে অবিশ্বাস করার শাস্তি পাচ্ছি।
.
রাজ মাহিরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দৈর্ঘ্য শ্বাস ফেলে বলে।
.
রাজ : জানো ভাইয়া আমাদের জীবনের এমন এমন পরিস্থিতি আসে তার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি না।এই যেমন ধরো আমি,আরো একবছর পর বিয়ে করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ঐ যে পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করতে। তবে একদিক থেকে ভালো হয়েছে ভালোবাসার মানুষটাকে সারাজীবনের মত নিজের করে পাবো। পরিস্থিতি দুটো দিক আছে একটা ভালো দিক আর একটা খারাপ দিক। তুমি খারাপ দিক না ধরে ভালো দিকটা ধরো না। তুমি দুইদিন আগেও জানতে না সারা কোথায় আছে কেমন আছে কিন্তু আজ সারা কে কাছ থেকে দেখতে পারছো। তোমার সন্তানদের সাথে কথা বলতে পারছো। তাহলে এতোটা ভেঙে পড়ছো কেনো? চিন্তা করো না আমি জানি সারা এখনো তোমাকে ভালোবাসে। ওর ভালোবাসার বইয়ের পাতাগুলোতে অভিমানের ধুলো পড়েছে। তোমার ভালোবাসার বাতাস দিয়ে অভিমানের ধুলো সরিয়ে সারা কে তোমার করে নেও।
.
মাহির রাজের কথা শুনে এক চিল হেসে দিয়ে বলে।
.
মাহির : জানো ডিপ্রেশনের সময় তোমার মত কিছু মানুষ যদি মনবল জোগায় যা অনেক বড় একটা প্রাপ্তি।যা তুমি আমাকে দিয়েছো। থ্যাংক ইউ রাজ।
.
রাজ একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে।
.
রাজ : এটা আমার দায়িত্ব ছিলো।দেখেছো কি অবস্থা করেছো তোমার?সমুদ্রের ঢেউ এ একদম ভিজে গেছো।চলো রিসোর্টে ফিরে চেঞ্জ করে নিবে। তোমাদের মেয়ে তখন থেকে পাপা পাপা করে যাচ্ছে তাই তোমাকে ডাকতে এসেছিলাম!চলো এবার তোমার মেয়ের কাছে।
.
মাহির প্রতিউত্তরে একটা হাসি দিয়ে রাজের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটতে শুরু করে।
.
সারা রিসোর্টে নিজের রুমে গেলে ওর চোখ ওর অবাধ্য হয়ে পড়ে। না চাইতেই ওর চোখ দিয়ে বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে যায়। সমস্ত পৃথিবী সামনে শক্ত হয়ে থাকলেও যখন একা থাকে সারা তখন আর ঠিক থাকতে পারে না। অতীত বারবার মাথা নাড়া দিয়ে ওঠে। না চাইতেও মাহির আর ওর মিষ্টি মুহূর্তগুলো ওর চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সারা কখনো মাহির কে কষ্ট দিতে চায়নি, কিন্তু মাহির বাধ্য করছে সারা কে আজ এত কঠিন হতে।
.
সারা : মাহির জানো আজও তোমার কষ্টে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে।আজ নিজেকে শক্ত করে তোমাকে অনেক কঠিন কঠিন কথা বলছি। আমি জানি তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো আমার কথায়।বাসর রাতে তুমি আমাকে বলছিলে, তুমি আমাকে ভালোবাসা শিখাবে! সেই তুমি আমাকে ভালোবাসা শিখিয়ে নিজে ভালোবাসতে ভুলে গেছে। কিন্তু দেখো আমি আজও নিজের থেকে বেশি ভালোবাসি তোমাকে! আর তুমি?
.
সারা একা একা অনেকক্ষন কথা বলে, কিছুক্ষণ যেতেই রোদ আর রোদ্রি কথা মনে পড়ে সারা। সারা তদি গরি করে মিথিলা কে ফোন করে। মিথিলা যখন বলে রোদ আর রোদ্রি মাহিরের সাথে শপিং এ গেছে তখন সারা স্থির নিঃশ্বাস ফেলে। সারা শাওয়ার নিয়ে নিচে নেমে হাঁটাহাঁটি করছে রোদ আর রোদ্রি এলে একসাথে খাবে। দুপুরের এই সময়টা তেমন মানুষ জন থাকে না এখানে কিন্তু সারা নিজো ভাবনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, হঠাৎ করে কি থেকে কি হয়ে গেলো সারার জীবন। রোদ আর রোদ্রি সাথে সময় কাটানো আর হসপিটাল নিয়ে ব্যস্ত থাকতো সারা।যাই হোক এসব নিয়ে আপাদত ভাবতে চাচ্ছে না সারা। মিথিলার বিয়ে শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবার ইউকে ফিরে যেতে হবে সারা কে ও আর কারো মায়ার বাঁধনে বাঁধাতে চায় না। সারা এসব ভাবতে ভাবতে চোখ যায় রিসোর্টে গেটের সামনে মাহির খুব সাবধানে রোদ আর রোদ্রি কে গাড়ি থেকে নামাতেছে।রোদ আর রোদ্রির হাতে অনেক বড় দুটো টেডি। রোদ খুব কষ্ট করে টেডির গলা জড়িয়ে ধরে আস্তে আস্তে হেটে আসছে।রোদ্রি চোখ যায় সারার দিকে ও সারা কে দেখে একটা মিষ্টি হাসি দেয়। মাহির রোদ্রির হাসি অনুসরণ করে তাকলে সারা কে দেখতে পেয়ে ঠোঁটে এক চিল হাসি ফুটে উঠলে মুহূর্তে ই সারার মাহির কে বলা কথা মনে পড়লে মাহিরের হাসি বিলুপ্ত হয়ে যায়।রোদ্রি টেডির একটা কান ধরে টানতে টানতে নিয়ে চলে ওর মাম্মার সামনে।মাহিরের এমন চাওনি দেখে সারা অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মাহিরের দিকে।রোদ্রি সারা সামনে এসে মাম্মা বলে ডাকলে সারা একবার রোদ্রি দিকে আর একবার মাহিরের দিকে তাকিয়ে থেকে রোদ্রির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে মুখে হাসি নিয়ে বলে।
.
সারা : বলো মাম্মা!
.
রোদ্রি টেডির কান ধরে সারার সামনে উঁচু করে ধরে বলে।
.
রোদ্রি : দেখু মাম্মা পাপা আমালে আল ভাইকে তেডি তিনে দিয়েছে।সুন্দুর না বলু?
.
সারা দেখে রোদ্রির টেডিটা ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে সারা টেডিটা ওর কোলে নিয়ে বলে।
.
সারা : হ্যা সুন্দর টেডি কিন্তু এই টেডির থেকেও আমার কলিজা দুটো যে আরো বেশি সুন্দর!
.
রোদ্রি সারার কথা শুনে খিলখিল করে হেসে দেয়। এরমধ্যে রোদ আর মাহির ও ওদের পাশে এসে হাজির হয়। রোদ সারা কে বলে।
.
রোদ : মাম্মা পাপা আমালে আল বোনকে অনেক গুনো তকলেট আল আতক্রিম তিনে দিয়েছে।ওসব গাড়িতে আছে। পাপা বলেথে দুপুলে খাবাল মাম্মার সাথে খেয়ে তাপর খেতে।
.
সারা আড়চোখে একবার মাহিরের দিকে তাকিয়ে আবার একটু পর রোদের দিকে তাকিয়ে বলে।
.
সারা : বাবা তোমার পাপা ঠিক কথা বলছে।
.
রোদ,রোদ্রি : তাই মাম্মা?( দুজন একসাথে )
.
সারা : হ্যা কলিজারা!( হেসে দিয়ে ) এখন তোমরা হাঁটা শুরু করো মাম্মা একটু তোমাদের পাপার সাথে কথা বলে এখনি এসছি।
.
রোদ,রোদ্রি : থিক আথে মাম্মা।
.
বলে রোদ আর রোদ্রি হাঁটা শুরু করে। রোদ আর রোদ্রি একটু সারাদের থেকে দূরে গেলে সারা মাহিরের দিকে তাকায়। মাহির যখন শুনলো সারা ওর সাথে কথা বলতে চায় তবে কি সারা ওকে ক্ষমা করে দিয়েছে? না কি সকালের জন্য সরি বলবে? নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মাহিরের মাথায়।

To be continue…🍁

সরি দেরিতে গল্প দেওয়া জন্য।

#ক্রাশ_ডাক্তার_বউ
#Writer_Sarjin_Islam [সারজীন]
#Part:11
বলে রোদ আর রোদ্রি হাঁটা শুরু করে। রোদ আর রোদ্রি একটু সারাদের থেকে দূরে গেলে সারা মাহিরের দিকে তাকায়। মাহির যখন শুনলো সারা ওর সাথে কথা বলতে চায় তবে কি সারা ওকে ক্ষমা করে দিয়েছে? না কি সকালের জন্য সরি বলবে? নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মাহিরের মাথায়।
.
সারা মাহির কে চমকে দিয়ে শান্ত গলায় বলে।
.
সারা : রোদ আর রোদ্রি সব শখ আহ্লাদ আপনাকে পূরণ করতে হবে না ওদের জন্য আমি আছি। কিছুদিন পর যে যার রাস্তায় চলে যাবো তাই ওদের সাথে যতো কম মিশবেন তত কম মায়ার বাঁধনে বাঁধাবেন। আমি কি বলতে চেয়েছি আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন?
.
মাহির কি উত্তর দিবে এই প্রশ্নের?ওর সন্তানদের কিছু কিনে দিতে পারে না? মাহির কোনো কথা না বলে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সারার দিকে। সারা সে দৃষ্টি উপেক্ষা করে পা বাড়ায় রোদ আর রোদ্রি কাছে যাবার জন্য। মাহির এক বুক নিদারুণ কষ্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
.
সময় চলতে থাকে নিজ গতিতে।এক এক করে দিন পর হয়ে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে মিথিলা আর রাজের বিয়ে প্রায় শেষ পর্যায়ে। কাল ওদের বিয়ে। এতগুলো দিনের মধ্যে সারা আর মাহিরের সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাহির প্রতিদিন সারার কাছে ক্ষমা চায় কিন্তু সারা কখনো ওকে অপমান করে কখনো অপ্রিয়ো সত্যি বলে মাহির কে কষ্ট দেয়। মাহিরের সাথে রোদ আর রোদ্রি ভালো ভাব হয়ে গেছে। সারা প্রয়োজন ছাড়া তেমন কারো সাথে কথা বলে না। সারা বিয়ের কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি, রোদ,রোদ্রি পুরো অনুষ্ঠান আরফিন,জারা,আরাফ, মাহির,মাহি এদের কাছেই ছিলো,আর সারা নিজেকে ঘর বন্দি‌ করে রেখেছিল। অনেক চেষ্টা করেও সারা কে কোনো কিছুতেই রাজি করাতে পারেনি কেউ। কাল সকালে মাহিন আর সারার মাম্মা, পাপা, ছোট মাম্মা আর ছোট পাপা কক্সবাজার আসবে। তারপর বিয়ে শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সারা কে এখান থেকে ফিরে যেতে হবে।
.
পরেরদিন সকালে সারা নিয়ম মাফিক শাওয়ার নিতে, নামাজ পড়ে নেয়। রোদ আর রোদ্রি এখন ঘুমিয়ে আছে আটার আগে ঘুম থেকে উঠবে না। সারা ভাবলো রোদ আর রোদ্রি ঘুম থেকে উঠতে উঠতে একবার সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে হেঁটে আসবে।তাই সারা বেরিয়ে পড়ে।জারা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় এলে দেখে সারা রিসোর্টের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে একা একা।জারা গেটের কাছে নিয়ে চারদিকে চোখ বুলালে কোথাও সারা কে দেখতে পায় না। জারা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করে সারা কোন দিকে গেছে উনি বলে দিলে জারা সে রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করে।বেশ কিছু দূর এলেও সারার কোনো হদিস মিলে না। জারা ব্যর্থ হয়ে রিসোর্টে কাছাকাছি ফিরে এলে হঠাৎ করে পায়ের সাথে পা বেজে উল্টে কোনো এক অজানা ব্যাক্তিকে নিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। অজানা ব্যাক্তি নেশা ভরা চোখে জারার দিকে তাকিয়ে আছে।জারা ভয়ে বিরবির করে বলে।
.
জারা : ইয়া আল্লাহ আজ বোধহয় আমার শেষ দিন।
.
অজানা ব্যাক্তি জারার কথা শুনে মুচকি হেসে বলে।
.
অজানা ব্যাক্তি : না মেম আজ আপনার শেষ দিন নয়। কিন্তু আপনি বেশিক্ষণ আমার উপর এইভাবে থাকলে বোধহয় আজ আমার শেষ দিন।
.
জারা কারো কথা শুনে চোখ খুলে তাকায়। লোকটাকে জারার কেমন চেনা চেনা লাগছে কিন্তু কোথায় দেখছে তা মনে করতে পারছে না। আপাতত এসব না ভেবে লোকটার দিকে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকায় কি বলছে বোঝার জন্য। লোকটা চোখের ইশারায় বোঝায় জারা তার উপর পড়ে আছে।জারার লজ্জায় মাথা কাটা যাবার অবস্থা তদি গরি করে তার উপর থেকে উঠে পরে। লোকটা উঠে তার পোশাক পরিষ্কার করতে করতে বলে।
.
অজানা ব্যাক্তি : তা মেম এখন বলুন এত সকালে এখানে কি করছেন?
.
জারা : আমি একটা কাজে বের হয়েছিলাম।ফেরার সময় আমার পায়ের সাথে পা বেজে আপনার উপর পড়ে যাই। সরি!
.
অজানা ব্যাক্তি : ইটস ওকে! পরেরবার…..( বলতে পারে না। )
.
এরমধ্যে সারা হেঁটে চলে আসে। সারা অজানা ব্যাক্তি কে দেখে বলে।
.
সারা : মাহিন তুই তোর না দুপুরে ফ্লাইটে আসার কথা ছিলো?( অবাক হয়ে )
.
মাহিন : হ্যা! আসলে আপু আজে সকালের কাজটা কালকে রাতে মধ্যে শেষ করে আজ সকালে ফ্লাইটে তোদের কাছে চলে এলাম!( মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো )
.
সারা : তোকে নিয়ে আমি আর পারি না ভাই।( রাগ করে )
.
মাহিন : পরে বকিস। এখন বল তুই এত সকালে এখানে কি করছিস?
.
সারা : হাঁটতে বের হয়েছিলাম।আর জারা তুই এখানে কি করছিস?( ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করে )
.
জারা : রুমে বসে বোর হচ্ছিলাম তাই একটু বাইরে ঘুরতে বের হয়েছি।( মিথ্যা কথা বললো )
.
সারা : অহহহ…
.
জারা : আপু উনি কি হয় তোর?
.
সারা : আমার ভাই।আর মাহিন ও হলো আমার ছোট বোন জারা।
.
জারা একবার আড়চোখে মাহিনের দিকে তাকায়। মাহিন মুচকি হেসে দিয়ে বলে।
.
মাহিন : একটু আগে উনার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে।
.
সারা : পরে তোরা কথা বলিস এখন চল তুই অনেক ক্লান্ত আগে বিশ্রাম নিবি।তোরা আয় আমি এগছি।
.
মাহিন মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।জারার এখন মনে ভয় কাজ করছে মাহিন আর সারা তো একসাথে ইউকে যাবার কথা তাহলে কি মাহিন…..! জারা কৌতূহল বসত মাহিন কে জিজ্ঞাসা করে।
.
জারা : একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
.
মাহিন : বলুন কি বলবেন?
.
জারা : আপু কবে ইউকে বেক করছে?
.
মাহিন ভ্রু কুঁচকে জারার দিকে তাকালে জারা আমতা আমতা করে বলে।
.
জারা : না মানে রোদ আর রোদ্রি কে সারপ্রাইজ গিফট দিবো।
.
মাহিন হেসে দিয়ে বলে।
.
মাহিন : কালকে রাতের ফ্লাইটে! আচ্ছা আমি এখন আসি পরে কথা বলবো।
.
মাহিন চলে গেলে জারা কি করবে ভেবে পায়না। আকাশ সমান চিন্তা নিয়ে রিসোর্টে ফিরে যায়। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায় কিন্তু জারা কাউকে কিছু বলে না।জারা আর কিছু না ভেবে মাহির কে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে গিয়ে বলে।
.
জারা : জিজু তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
.
মাহির : তাড়াতাড়ি বলো ওদিকে রোদ আর রোদ্রি অপেক্ষা করছে।
.
জারা ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে।
.
জারা : আপু কাল রাতের ফ্লাইটে ইউকে বেক করছে।

To be continue…🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here