গোধুলি বেলায় পর্ব ১

রেস্টুরেন্টে কোনার একটা টেবিলে বসে আছে আনন্দি। তার অপোজিটে বসে আছে তারই পনের বছরের মেয়ে আনুসমি। তার চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। আনন্দি জানে শুধু বিরক্তি না এর মাঝে খুব সুক্ষভাবে কিছু ঘৃণাও মিশে রয়েছে। তার আপন মেয়ে যে তাকে ঘৃণা করে এটা বেশী ভাবাচ্ছে না আনন্দিকে। বরং সে অনেক খুশি। আজ প্রায় দশটা বছর পর ও দেখছে ওর এই নাড়ি ছেড়া আদরের সন্তানকে। এতোদিন শুধু একটা বার দেখার জন্য ছটপট করে গেছে কিন্তু এতোদুরে থেকে সেটা সম্ভব হয় নি। আজ দশ বছর পর আনন্দি দেশে এসেছে শুধু একটা বার আনুসমিকে দেখা জন্য। কিন্তু ওর জন্য ওরই মেয়ের চোখে এই ঘৃণাটা খুব পোড়াচ্ছে আনন্দিকে। বারবার ভাবাচ্ছে সেদিন ও কি সত্যি খুব বেশি সার্থপর হয়ে গেছিল যার জন্য আজ নিজেরই মেয়ের চোখে এমন ঘৃণা দেখতে হচ্ছে । তবুও মুখে একটা হাসি টেনে বলল,,
– কেমন আছ?

– আপনি নিশ্চয় এতোদিন পর আমি কেমন আছি এটা জানতে এখানে আসেন নি। আপনি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার সময় যখন আমার কিছু হয় নি তখন আজও কিছু হবে না। আমার বাবা আমাকে তখন যেমন আগলে রেখেছিল ভবিষ্যতেও রাখবে।

আনন্দি একটু মৃদু হাসল। মানুষটা তাহলে খুব সুন্দর ভাবে এই ঘৃণাটা ঢুকিয়ে দিতে পেরেছে এই ছোট্ট আনুসমিটার মনে। আজ তার জয় হয়েছে। বারবার শুধু হেরেছে আনন্দি। তবে এটা নিয়ে ওর বিশেষ কোন মাথা ব্যাথা নেয়। এই পৃথিবীতে আর আছেই বা কয়দিন। থাক না ওরা ওদের মতো ভালো, আনন্দিরা না হয় এভাবেই অকালে ঝরে যাবে বারবার। আনন্দি সেই হাসিটা মুখে রেখেই বলল,,
– খুব ঘৃণা কর আমায়?

– সেটাই কি স্বাভাবিক নয়?

– আবারও হাসল আনন্দি বলল,, আমাকে ঘৃণা করার কারণ?

– আপনি একজন খুব খারাপ আর সার্থপর মহিলা। আপনার মতো মেয়েরা শুধু নিজেদের সার্থটা দেখে, বাকি কোন কিছুই তাদের জীবনে বড় নয়। না পরিবার না নিজের সন্তান।

নিজের মেয়ের মুখে নিজের সম্পর্কে এসব কথা শুনে বুকটা মুচড়ে উঠল আনন্দির। মনে হচ্ছে যেন সুক্ষ সুঁচের মতেো কোন বস্তু বারবার আঘাত করছে তার হৃদয়কে, ক্ষত বিক্ষত করেও যেন তার শান্তি নেয় আরও জালাটা বেড়েই যাচ্ছে । নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল গাল বেয়ে। আনন্দি সব সহ্য করতে পারলেও নিজের মেয়ের মুখে ওর সম্পর্কে এমন কথা কিছুতেই সহ্য হচ্ছে না ওর। এটা সহ্য করা যে কোন মায়ের জন্যই সম্ভব নয়।

আনুসমি একটু থামল। আনন্দির চোখে পানি দেখে আবারও ঘৃণায় কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস নিল। তারপর বলল,, এসব ন্যাকা কান্না আমার সামনে কাদবেন না তো। আমি আপনার এই কান্নায় গলব না। আমি আপনাকে ঠিক চিনেছি। কিন্তু আমার বাবা চিনতে পারে নি তাই তো আজও সবাই ঘুমিয়ে গেলে বারান্দায় গিয়ে আপনার ছবি বুকে জাড়িয়ে কাঁদে। বিশ্বাস করেন বাবাকে যখন এভাবে কাঁদতে দেখি তখন আপনার উপর ঘৃণার পরিমানটা আরও বেড়ে যায়। কি দোষ ছিল বলুন তো আমার বাবার, নিরহ মানুষটা আপনার সুখের জন্য নিজেকে এভাবে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে সারা জীবন। আমার বাবার কি এটাই দোষ ছিল যে সে মনে প্রাণে আপনাকে ভালবেসেছিল।

– তোমাকে এসব কথা তোমার বাবা বলেছে?

– না আমার বাবা আপনার মতো না। বাবাকে আপনার সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করলে তো বলতেই চায় না। বরং আপনার যতো ভাল ভাল কথা আছে সেগুলো বলে। কিন্তু আমি জানি আপনি কেমন! আমি নিজে নিজে আপনেকে চিনেছি, জেনেছি এবং খুব ভাল করেই চিনেছি যেটা অন্য কেউ পারে নি । আমার বাবার কাছে তো আপনি একজন মহিওষী নারী।

– তোমাকে কে বলল তোমার বাবা আমায় ভালবাসে?

– কারও বলা লাগে না। কোন মানুষ যখন মাঝরাতে উঠে কোন মানুষের জন্য কাঁদে তখন সে নিশ্চয় তাকে ভালবাসে বলে কাঁদে। ভাল না বাসলে কেউ এমন করে কারও জন্য কাঁদতে পারে না আমি জানি।

– তুমি ভুল জানো। তোমার বাবা আমাকে ভালোবাসে নি কখনও বাসে নি। তিনি কাঁদেন কারন হয়তো তিনি অনুশোচনায় ভুগছেন কিংবা তোমার থেকে সিমপ্যাথি পেতে চায় তাই।

– হোয়াট ননসেন্স! আমার বাবা সম্পর্কে এমন কথা বলার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?

– অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। নিজে থেকে অর্জন করে নিতে হয়। হয়তো আমি সেটা পারি নি তাই আজ তুমি আমাকে এতোগুলো কথা শোনানোর সাহস পাচ্ছ। তোমাকেও কিন্তু কেউ আমার সাথে এভাবে কথা বলার অধিকারটা দেয় নি। আফটার অল তুমি কিন্তু আমার মেয়ে হও ভুলে যাবে না।

– ভুলি নি কিন্তু ভুলে যেতে চাই। ভুলতে চাই এই সার্থপর মহিলাটা আমার মা, কোন এককালে সে আমাকে এই পৃথিবীতে এনেছিল। আর তারপরেই নিজের সব দ্বায়িত্ব ফেলে পালিয়ে গেছিল।

– তুমি এসব বলছ কারণ তুমি কিছুই জানো না। আমি তোমাকে ফেলে পালায় নি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল।

আনুসমি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিল। কে বাধ্য করেছিল আপনাকে, বলুন নিজের জন্য পালিয়েছিলেন! এভাবে অন্যকে দোষ দেবেন না।

– আমি কখনও কাউকেই দোষ দেয় না, বরং সবার সব দোষ নিজের কাধে নিতে নিতে আজ আমার কাঁধটাই বাকা হয়ে গেছে। কিন্তু তাই বলে নিজের মেয়ের চোখে নিজেকে এভাবে দেখতে চাই না আমি। তুমি কি জানতে চাও সে সব কথা? কেন চলে গিয়েছিলাম আমি? জানতে চাও?

আনুসমি কিছুক্ষণ ভাবল তারপর চোখ মুখ শক্ত করে বলল,, হ্যা জানতে চাই বলুন কেন গেছিলেন আপনি? কেন? কেন? কেন?

আনুসমি কথাগুলো প্রায় চিৎকার করে বলল। এতোক্ষনে আনন্দি তার মেয়ের চোখে কয়েকফোটা পানি দেখল। মেয়েটা অসম্ভব সুন্দর হয়ে একেবারে সমাপ্তর মতো। ওর সবকিছু সমাপ্তর সাথে মিলে যায়, আনন্দির কোন কিছুই মনে হচ্ছে মেয়েটা পায় নি। আর কাঁদো কাঁদো চোখে যে কি মায়াবী লাগছে। মনে হচ্ছে যেন ওর নিজেরই নজর লেগে যাবে নিজের মেয়ের উপর। এতোদিন ও কি করে ছিল এই পিচ্চি পুতুলটাকে ছেড়ে। সত্যি এতোদিনে ও অনেক পাষন্ড হয়ে উঠেছিল। না হলে কি কেউ পারে নিজের নাড়ি ছেড়া ধনকে এভাবে ছেড়ে থাকতে।

মৃদু হেসে বলল, বলব তবে আজ না। তুমি একটা সারাদিন আমাকে সময় দিবে তখন বলব।

আনুসমি একবার আনন্দির দিকে তাকালো। তারপর শান্তভাবেই বলল, সেটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আজকেই বলুন।

– আজ আমি বলব না। এবার তুমি ভেবে দেখ তুমি শুনবে কি না।

– ব্লাকমেইল করছেন। নিজের মেয়েকে ব্লাকমেইল করতে আপনার লজ্জা লাগে না।

– না লাগে না, আমি তোমাকে ব্লাকমেইল করছি না জাস্ট বলছি। আর তুমি তো বললে তুমি আমাকে মা হিসেবে মানো না। সে সব মুছে ফেলতে চাও। তাহলে?

– আচ্ছা আমি ভেবে আপনাকে জানাব। আপনার কনট্রাক নাম্বারটা দিন। আমি যে পুনরায় আপনার সাথে দেখা করছি এটা আমি বাবাকে জানাতে চাই না। উনি আবারও কষ্ট পাবেন এটা আমি চাই না।

– তোমাকে যোগাযোগ করতে হবে না। আমি নিজেই করে নিব।

– ওকে দেন ওয়েল। গুড বাই। ভালো থাকবেন।

আনন্দি মৃদু হাসল। তারপর আনুসমির দিকে তাকিয়ে বলল, তুমিও।

আনুসমি চলে যাওয়ার পরও কিছুটা সময় আনন্দি সেখানেই বসে ছিল। এখানেই তার ছোট্ট মেয়েটা বসে তাকে এতো কড়া কড়া কথা শুনিয়ে গেল। চেয়ারটার দিকে তাকালে মনে হচ্ছে যেন এখনও এখানে বসে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কথা বলছে আনুসমি। এটা একেবারে ওর বাবার মতো পেয়েছে। ওর বাবাও এভাবে হাত নেড়ে কথা বলে। মেয়েটার কথা বলার ধরনটাও ওর বাবার মতো। মনে হচ্ছিল যেন ওর বাবার কার্বন কপি। সবশেষে মেয়েটা ভাল আছে। এজন্যেই তো ও ওকে ফেলে গিয়েছিল, তা আজ সার্থক হয়েছে। বুঝক না ওকে একটু ভুল বাচ্চা মেয়েটা।

আনন্দি উঠে গিয়ে চেয়ারটাতে মৃদু ভাবে হাত বুলালো। যেন ও ওর মেয়ের স্পর্শ পাচ্ছে এই চেয়ারে। মন চাইছে চেয়ারটা উঠিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে। বেশ খানিকটা সময় সেই চেয়ারে বসে থেকে বেড়িয়ে পড়ল রেস্টুরেন্ট থেকে। এই শহরটাতে ও আর কখনও আসতে চায় নি কিন্তু ওর মমতা আবারও ওকে টেনে আনল এই শহরের মাটিতে ।

ল্যামপোস্টের আলোয় ফুটপাত ধরে হাটতে লাগল আনন্দি। আজ ওর বাড়ি যাওয়ার কোন তাড়া নেয়। যেয়ে কি করবে কেউ তো ওর জন্য অপেক্ষা করে বসে নেয়। এই বিশাল বড় পৃথিবীটাতে ও যে বড় একা।

ফুটপাত দিয়ে যাওয়ার সময় দেখল একটা বাচ্চা ছেলে খাওয়ার জন্য কাঁদছে। আনন্দির বড্ড মায়া হল। ও নিজের সন্তানকে চাইলেও কাছে পায় না আর কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের সন্তানকে রাস্তায় ফেলে যেতে একবারও ভাবে না। ও সামনে একটা হোটেল থেকে কিছু খাবার কিনে দিল বাচ্চাটাকে। কিন্তু বাচ্চাটা এতো ছোট যে নিজ হাতে খেতেও পারছে না। সব এদিক সেদিক ছড়িয়ে দিচ্ছে।

রাস্তার সব সভ্য মানুষগুলো অবাক হয়ে একটা জিনিস দেখছে। শাড়ি পড়া এক সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে রাস্তার পাশে বসে এক পথশিশুকে খাইয়ে দিচ্ছে। সবার কাছে বেশ বিষ্ময়কর লাগছে বিষয়টা। কেউ কেউ তো আবার মজা নিচ্ছে। কিন্তু আনন্দির এতে কিছু যায় আসে না। ওর বাচ্চাটাকে খাওয়াতে বেশ ভাল লাগছে, যেন মনে হচ্ছে ওর সেই পুতুল পুতুল আনুসমিটাকে খাওয়াচ্ছে। এটাকেই হয়তো বলে মায়ের ভালবাসা।

আজ আনন্দির ঘরে ফিরতে মন চায়ছে না। মনে হচ্ছে এই ফুটপাতে বসে এই বাচ্চাগুলোর সাথে পুরোটা রাত কাটিয়ে দিতে। আজ কেন যেন ওর সেই আলিশান ফ্লাটের থেকে এই ফুটপাতটা বেশি শান্তির জায়গা বলে মনে হচ্ছে। ওর সেই নরম বিছানার থেকেও এই শক্ত রাস্তায় বসে থেকে বেশি শান্তি লাগছে।

বেশ রাত করে বাসায় ফিরল সমাপ্ত । এসে দেখলো ওর মেয়ে এখনও মুখ কালো করে সোফাতে বসে আছে। ওকে আসতে দেখেই দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল। তারপর অভিযোগের সুরে বলল,, এতো রাত করলে কেন? জানো না আমি খিদা সহ্য করতে পারি না।

– ওমা সেকি আমার প্রিনন্সেসটা এখনও খায় নি কেন?

– তোমাকে ছাড়া আমি কখনও খেয়েছি বাবা?

– হ্যা তা ঠিক কিন্তু তুমি তো আজ বাইরে গিয়েছিলে। আমি ভাবলাম ডিনার করে আসবে!?

– ওহ্ বাবা তুমি কি করে ভাবলে আমি ওই মহিলার সাথে ডিনার করে এতো সুন্দর মুহু্র্তটা মিস করব। তোমার সাথে আমি অনলি রাতে একসাথে খেতে পারি সো এই সময়টা আমি কিছুতেই অন্য কারো জন্য নষ্ট করব না।

– আনুসমি উনি তোমার মা। উনার সম্পর্কে এভাবে বলবে না। আর আমার সাথে তো প্রত্যেকদিন খাও, ওর সাথে একদিন খেলে এমন কোন ক্ষতি হতো না। আফটার অল উনি তোমার মা। ওর তো ইচ্ছা করতে পারে তোমার সাথে একদিন ডিনার করতে।

– স্টপ ইট বাবা। উনার ইচ্ছা দাম দিতে গিয়ে আজ আমাদের এই অবস্থা। আমি মা থাকা সত্ত্বেও অনাথ আর তুমি সারাটা জীবন একা একা কাটিয়ে দিলে। আমি আর পারব না উনার কোন ইচ্ছের দাম দিতে।

– আনুসমি তোমাকে বলেছি না এ বিষয়ে তুমি আর কিছু বলবে না। আমি এই টপিকটা নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী না। আর আনন্দির সাথে যা হয়েছে আমার হয়েছে। ও তোমার মা, তোমাকে অনেক ভালবাসে আর আমি চাইব তুমিও তাই কর।

আনুসমি আর কিছু না বলে রেগের হনহন করে ঘরে চলে গেল। সমাপ্ত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরে গেল। আজ আবারও সেই পুরোনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ছে। বড্ড মনে পড়ছে আনন্দিকে। আচ্ছা আনন্দিও কি মনে করে সমাপ্তকে। জানে না সমাপ্ত। ওদের অতীতে যা হয়েছিল তারপরও ওকে আর মনে করা যায় কিনা তা সমাপ্ত জানে না।

সমাপ্ত ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো সব খাবারগুলো ঠান্ডা হয়ে গেছে। এতো রাতে কোন কাজের মেয়েও জেগে নেয়। ওদের ডিসর্টাব করতে চাইলো না সমাপ্তর । নিজে খাবারগুলো মাইক্রোওয়েভে গরম করে নিয়ে গেল আনুসমির ঘরে।

আনুসমি এখনও রাগ করে উল্টো হয়ে বসে আছে। ওর কেন যেন ওর মা নামক মহিলাটাকে একেবারে ভাল লাগে না। কেউ বলে নি ওকে যে উনি খারাপ বরং বাসার সবাই যেন ওর মার নামে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু এটা আনুসমি নিজেই অনুধাবন করেছে। ছোটতে যখন ওর চাচাতোই ভাই বোনদের নিজের মা আছে অথচ ওর নেই এটা দেখেছে তখন অনুধাবন করেছে। সবাই মাকে ঘুমানোর সময় বুকে জাপটে ধরে ঘুমায় কিন্তু ও জাপটে ধরেছে ওর বাবাকে তখন অনুধাবন করেছে। স্কুলে সবার মা রাখতে যেত, প্রত্যেক মাদার ডে তে সবার মা আসে কিন্তু ওর মা আসে না তখন অনুধাবন করেছে। আরও অনেক কারণ আছে। আর তারপর থেকেই মা নামের এই মহিলাটাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে।

সমাপ্ত ঘরে ঢুকে আনুসমি কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, প্রিনন্সেস না খেলে যে বাবা খেতে পারে না তা কি প্রিনন্সেস জানে না? তবুও প্রিনন্সেস না খেয়ে চলে এলো কেন?

– আমি খাব না বাবা।

– সত্যি খাবে না?

– না বললাম তো।

– ওকে তাহলে আর কি করার। আজ রাতে আর প্রেসারের ওষুধটা খাওয়া হবে না ফলে কাল বাবা,,,,

– চুপ আর একটাও কথা বলবা না। তোমরা সবাই শুধু আমাকে ব্লাকমেইল কেন কর বলতো? বলে সমাপ্তকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।

– হুস, কাঁদে না। প্রিনন্সেসরা কখনও কাদে। আমার প্রিনন্সেস কাঁদলে কিন্তু আর প্রিনন্সেস বলে ডাকব না। ছিচকাঁদুনে বলব।

আনুসমি কাঁদার মধ্যে একটু হেসে দিয়ে বলল, দাও খাইয়ে দাও।

সমাপ্ত মনোযোগ দিয়ে বেশ যত্ন সহকারে ভাত মাখিয়ে আনুসমিকে খাওতে লাগল। মাঝে মাঝে নিজেও নিচ্ছে। এভাবেই বাবা মেয়ের খুনসুটি চলতে থাকলো।

চলবে,,

#গোধুলি_বেলায়
#সূচনা_পর্ব
জাকিয়া সুলতানা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here