গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ১৪

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_১৪
.
.
🦋
সাজিত বসা থেকে উঠে তার ভাইয়ের রুমে গিয়ে দরজায় নক না করে ভেতরে ঢুকে দেখে তার ভাই যাস্ট শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছে ৷ চুল দিয়ে এখনো পানি গড়িয়ে পড়ছে ৷ তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে জ্বিজ্ঞাসা করে, কেমন আছিস সাজিত?”

” ভালো আর থাকতে দিলি কই ভাইয়া ৷ তুই নিজে যেটা চাস সেটাই তো করলি? প্রাণো এখন তোর আমার নয়৷”

সাজিতের কথা শুনে গা কাঁপিয়ে হাসতে হাসতে স্মরণ বলে উঠলো , ” ইফতেকার মাহমুদ স্মরণ আমার নাম সাজিত৷ এই স্মরণের প্রিয় জিনিস কেউ কেড়ে নিবে এমন কলিজার পাটা কারো হয়নি সাজিত আর তুই হাহ! তুই আমাকে এখনো চিনতে পারিস নি সাজিত আমি মানুষটা দেখতে সহজ সরল মনে হলেও আমি মটেও সহজ সরল নই ৷ আল্লাহর কাছে প্রাথর্ণা কর কখনো যেন আমার হিংস্র রুপ টা তোকে দেখতে না হয়৷ আমি চাইনা প্রিয়ার মতো নিশ্পাপ বাচ্চা মেয়েটা রঙিন কাপড় ছেড়ে সাদা কাপড়ে নিজেকে জড়িয়ে নিক৷ ”

স্মরণের এমন ঠান্ডা শীতল থ্রেট শুনে সাজিত হতবিহ্বল ৷ সে তার ভাই কে চিনে কিন্তু আজ প্রথম স্মরণ তাকে সামনা সামনি কথা গুলো বলল ৷ সাজিতের শরীরের লোম গুলো এখনো দাড়িয়ে আছে৷ সাজিত স্মরণ শীতল হিংস্র চাহনি দেখে মুখ থেকে একটা শব্দ বের হলো না ৷ বরং দ্রুত পায়ে স্মরণের রুম ত্যাগ করে ডাইনিংয়ে এসে তাড়াতাড়ি গ্লাসে পানি ঢেলে খেতে লাগলো৷ কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে সাজিতের, মিহু ফ্রিজ থেকে চকলেট বের করে খেতে খেতে সাজিত এর সামনে এসে দাড়িয়ে বলে,” কি হলো ভাই? তুই এতো ঘামছিস কেন? ”

” ভা,, ভাই ফিরে এসেছে মিহু৷” সাজিতের কথাটা মিহুর কানে পৌছাতে মিহুর হাত থেকে চকলেট টা ফ্লোরে পড়ে গেল৷

” ক,,কি বললি ভাইয়া ফিরে এসেছে?”

” হুম..” স্মরণের সাথে বলা কথা গুলো সাজিত মিহু কে এক এক করে বললো৷ সব শুনে মিহুর মুখের কথা যেন হাড়িয়ে গেছে৷

” ভাই প্রাণোকে ভুলে যা ৷ প্রাণো তোর হবার নয় ৷ আর যদি তুই ওকে পাবার চেষ্টা করিস তাহলে স্মরণ ভাই তোকে ছাড়বে না ৷ তুই আমি দু’জনে খুব ভালো করে জানি ভাইয়া যা বলে তাই করে আর ওর এই শান্ত রুপটা ধারণ করে থাকে সব সময় আর তা কেন? বাঁচতে চাইলে প্রাণোকে ভুলে যা আর প্রিয়ার সাথে সংসার কর ৷”

” অসম্ভব ওই বাচাল বেয়াদপ মেয়েটার সাথে আমি সংসার করতে পারবো না আর না প্রাণোকে ভুলতে পারবো৷ আমি কোন ভাবে ভাইয়ার কাছে হারতে রাজি নই মিহু৷”

” হার জিত নিয়ে লড়াই তখনই তুই করতে পারবি ৷ যখন তুই বেঁচে থাকবি সাজিত৷” সাজিত মিহু দু’জনের হাত পা কাপঁছে স্মরণ কে সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে, ট্রাউজারের পকেটে হাত দিয়ে বাঁকা ঠোঁটের হাসি নিয়ে দাড়িয়ে আছে৷ সাজিত মিহুর গলা ভয়ে শুকিয়ে গেছে ৷ স্মরণ সাজিতের সামনে এসে গ্লাসে পানি ঢেলে সাজিতের সামনে গ্লাস ধরে বলে, ” পানি টা খেয়ে নে সাজিত৷ এটা এখন তোর খুব প্রয়োজন৷”

সাজিত স্মরণের হাত থেকে পানির গ্লাস টা নিয়ে দ্রুত পানিটা খেয়ে নিলো৷ স্মরণ তার আগের স্টাইলে দাড়িয়ে আবার বলতে লাগলো,” তো সাজিত মিহু কি যেন বলছিলি তোরা? শুরু থেকে বল আমিও একটু শুনি৷”

” ভা,, ভাইয়া সাজিত ভাই বলছিলো যে এবার প,, ” বাকিটা বলার আগে সাজিত বলে উঠলো ,” প্রিয়াকে নিয়ে আমি সংসার করবো এটা বলছিলাম ভাইয়া৷”

” ওহ! দ্যাট’স গুড ডিসিশন সাজিত ৷”

” থ্যান্কিউ ভাইয়া”

” ছোট মা কোথায় মিহু?”

” জানি না ভাইয়া”

” ইউজলেস পিপল..”

স্মরণ ডাইনিং টেবিলে বসে ছোট মা বলে চেঁচাতে লাগলো৷ রুমে বসে প্রিয়া কাউকে ছোট মা বলে চেঁচাতে শুনতে পেয়ে রুম থেকে বের হয়ে ডাইনিংয়ে এসে একটা হ্যান্ডসাম ড্যাসিং ছেলে কে দেখতে পায়৷ প্রিয়া হা করে স্মরণ কে দেখছে ৷ মাথার ভিজের চুল গুলো কপালের সাথে লেপ্টে আছে ৷ ভরাট কপাল , জোড়া ভ্রুযুগলের নিচে তীক্ষ্ম চোখের চাহনি , সুরু নাক চাপা ঠোঁট জোড়া , গালে চাপ দাড়ি, সুঠাম দেহের অধিকারী দেখলে বুঝা যায়৷ প্রিয়া মনে মনে স্মরণের পাশে প্রাণো কে কল্পনা করলো ৷ দু’জনকে বেশ মানাবে৷

” একেই আমার জিজু বানাবো ৷ কি সুন্দর পোলা আল্লাহ ৷ আপু দেখলে নিশ্চয় পছন্দ হবে৷ আগে শুনতে হবে পোলা সিঙ্গেল না মিঙ্গেল ৷ মিঙ্গেল হলে কপাল খারাপ আর সিঙ্গেল হলে আপুর সাথে সেটিং করিয়ে দিবো ৷ আর আপু রাজি না হলে আমার ইমোশনাল ব্লাকমেইল তো আছেই ওহ আল্লাহ কি ভাবনা আমার আই এম সো প্রাউড অফ মি”

নিজের মনে মনে নিজেকে সাবাসি দিতে লাগলো প্রিয়া৷ হঠাৎ এক সুমিষ্ট গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে ধ্যান ভাঙে প্রিয়ার৷

” প্রিয়া এদিকে এসো৷”

প্রিয়া গুটি গুটি পায়ে হেটে স্মরণের সামনে গিয়ে দাড়ায়৷

” তুমি তো প্রিয়া সাজিতের বউ?”

” জ্বি”

” আমি সাজিতের বড় ভাই স্মরণ৷”

” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া৷”

” ওয়ালাইকুম আসসালাম ৷ শোন তুমি আমার অনেক টা ছোট তাই তুমি বলছি মাইন্ড করো না৷ ”

” না না ভাইয়া ঠিক আছে৷( ওহ আল্লাহ এ তাহলে সাজিত্তার বড় ভাই ৷ ভালোই হলো এনি সিঙ্গেল তাহলে আপুর সাথে সেটিং টা করিয়ে দিতে হবে তাহলে) ভাইয়া আপনাকে তো এতোদিন দেখেনি এবাড়িতে কোথাও গিয়েছিলেন?”

” হুম বান্দরবান গিয়ে ছিলাম বন্ধুদের সাথে, বাই দ্যা ওয়ে ছোট মা কোথায়?”

“ছোট মা কে ভাইয়া?”

” ওহ তুমি জানবে কি করে ৷ সাজিত মিহুর মা কে আমি ছোট মা বলে ডাকি৷ আমার মা মারা যাওয়ার পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন এনি হলে সে আমার দ্বিতীয় মা৷”

” ওহ স্যরি ভাইয়া৷”

” ইটস ওকে৷ বাট স্যরি বলার কিছু নেই ৷ তুমি জানো না তাই প্রশ্ন করেছো৷”

” ভাইয়া মা বাসায় নেই ৷ বাইরে বেড়িয়েছেন বিকেলে ফিরবে৷ আপনি বসুন আমি আপনাকে খাবার বেড়ে দিচ্ছি৷”

” ওকে ”

প্রিয়া সুন্দর ভাবে গুছিয়ে স্মরণ কে খেতে দিয়ে হুট করে প্রশ্ন করে, ” ভাইয়া আপনি এখনো বিয়ে করেন নি কেন?”

” কারণ মনের মানুষ পাইনি তাই” অকপটে খেতে খেতে উওর দিলো স্মরণ….

” ভাইয়া একটা কথা বলবো যদি কিছু না মনে করেন?”

” বলো আর এতো ফর্মালিটি করার প্রয়োজন নেই কারণ তুমি শুধু সাজিতের বউ এই বাড়ির বউ নও আমার আর একটা ছোট বোন৷”

স্মরণের কথা শুনে প্রিয়ার মন টা আরো ভালো হয়ে গেল সাথে সাহস টা ও বেড়ে গেল৷

” ভাইয়া আমি সোজা সাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করি ৷ তাই বলছি আপনাকে আমার পছন্দ হইছে ৷ ” এই কথা শুনে স্মরণের খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল৷ তখন প্রিয়া বুঝতে পারলো সে কি বলতে চাইলো আর কি বলে ফেললো,

” মানে আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে এ্যাজ এ বড় ভাই + জিজু হিসেবে ৷ আপনাকে আমার জিজু বানাতে চাই৷”

প্রিয়া বাচ্চা টাইপ কথা গুলো শুনে স্মরণের প্রচন্ড হাসি পেলো কিন্তু হাসলো না ৷ হাসি চেপে বললো, ” বড় ভাই ঠিক আছে কিন্তু জিজু কেন? তোমার কি বোন আছে? (না জানার ভাণ করে)”

” হুম আছে তো কিউট সুইট একটা আপু আছে ৷ আপনার সাথে মানাবে৷ এখন আপনি চাইলে সব হবে৷”

” শুধু আমি নয় তোমার আপুকেও তো চাইতে হবে প্রিয়া৷”

” আমি ওতো কথা বুঝি না আর বুঝতেও চাই না ৷ আপনি না তুমি যদি আমাকে বোন ভাবো তাহলে বোনের আবদার পূরণ করা একজন ভাইয়ের কর্তব্য ৷”

” বোকা মেয়ে তোমার বলার আগে প্রাণো কে আমার মন দিল সব দিয়ে বসে আছি ৷ এখন শুধু তার একটা পজিটিভ সাইন পাওয়ার আশায় বসে আছি ৷ এটা যদি এই পিচ্চি মেয়ে জানতো তাহলে যে কি হতো আল্লাহ জানে, ”

” ছোট বোন আবদার করেছে আর ভাই তা রাখবে না তা কখনো ও হয় ৷তোমার আপুর নাম্বার টা দিও ৷”

” ওকে ভাইয়া৷ ”

__________

” প্রাণো মেয়ে গুলো কে কণা বাঁচিয়ে এনেছে৷ আর ওদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছে ৷”( Rv)

” আর যাদের কেউ নেই তাদের কে আশ্রমে পাঠিয়ে দিয়েছি প্রাণো৷” (কণা)

” গুড , মেয়ে গুলোকে পাচার করার কাজে কে কে জরিত আছে তা জানতে পেরেছো তোমরা?”(প্রাণো)

” হ্যাঁ, ঢাকা শহরের নামিদামী বিজনেসম্যানরা তাদের লিস্ট করেছি৷” (RV)

প্রাণো বিজনেসম্যানদের লিস্টে একটা নামে চোখ আটকে যায়৷ প্রাণো বিশ্বাস করতে পারছে না এমন একটা লোক এমন জঘন্য কাজের সাথে লিপ্ত৷ রাগে পুরো শরীর রি রি করছে৷ রাগ সামলাতে না পেরে টেবিলের উপর গোলক টা ছুড়ে মারে ৷

” প্রাণো কি হয়েছে তোর? এতোটা রেগে যাচ্ছিস কেন তুই?”

” Rv কমিশনার কে ফোন করে এখুনি এখানে আসতে বলো ৷ কণা আজ আর্জেন্ট মিটিংয়ে সবাই যেন থাকে ৷”

” ওকে প্রাণো কিন্তু তুই এতোটা রেগে আছিস কেন? ”

” লিভ মি এলোন গাইজ”

প্রাণোর কথার পিঠে আর কথা বলার সাহস পেল না কেউ৷ কেভিন থেকে বেড়িয়ে গেল সবাই৷ প্রাণো তার চেয়ারে বসে লিস্টে থাকা নাম গুলো চোখ বুলাতে বুলাতে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো, ” আ’ম স্যরি আমাকে আমার কাজ টা করতেই হবে৷ এদের কে কাউকে ছাড়বো না আমি কাউকে না৷ ”

একঘন্টা পর প্রাণো মিটিং রুমে ঢুকতে সবাই বসা থেকে উঠে দাড়ালো৷ কমিশনার আব্বাস আলী প্রাণোর মুখ দেখে বুঝতে পারলো আজ হয়তো কোন কারণে প্রাণো রেগে আছে৷ তিনি বাড়তি কথা না বলে সরাসরি প্রাণোকে কে বললো,” আর্জেন্ট মিটিং টা কিসের জন্য প্রাণো?”

” আঙ্কেল আপনি আমাকে পাঁচ বছর ধরে দেখছেন ৷ এই পাঁচ বছরে হাতে গোনা কয়বার আর্জেন্ট মিটিং করেছি আমি?”

কমিশনার এবার একটু ভেবে বললেন ” দু’বার৷ এক বার যখন শহরে জঙ্গি হামলা হয় ৷ আর এক তখন শহরে ছোট ছোট বাচ্চাদের কিডন্যাপ করে তাদের পাচার করা হতো৷ আর তুমি ছিলে সকলের আড়ালে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কে সাহায্য করতে৷ ”

” আঙ্কেল আজ আপনাদের একটা কথা সরাসরি বলার জন্য এই মিটিং এরেন্জ করা৷”

” ম্যাম আপনি যা বলবেন বা ডিসিশন নিবেন আমরা তার সাথে একমত৷” (অন্যরা বলে উঠলো )

” ফাইন , কথাটা হচ্ছে আমার হাতে একটা লিস্ট এসে জমা হয়েছে ৷ এই লিস্টে ঢাকা শহর শুধু নয় পুরো বাংলাদেশের বড় বড় বিজনেসম্যানদের নাম আছে যারা মেয়ে পাচার , চোরা কারবার , হিরোইন আদান প্রদান, ইভেন বাচ্চাদের কিডন্যাপ করে তাদের অর্গ্যান’স নিয়ে বিক্রি করে বিভিন্ন হসপিটালে ৷ এই সব বন্ধের একটাই পথ খোলা আছে৷”

” কি সেই পথ?” (কমিশনার)

” মৃত্যু”

” মৃত্যু” (এক সাথে সবাই বলে উঠলো )

” কিন্তু প্রাণো তুমি তো কখনো মানুষ খুন করো না ৷ কিন্তু এবার কি হলো?”

” Rv আমি মৃত্যু বলেছি তার মানে এই নয় সকল কে মারবো৷ এবার মিশন টা হবে অন্য রকম ৷ তুমি এই লিস্টে থাকা লোক গুলোর মধ্যে প্রথম দশ জন বাছাই করবে যারা সব কাজের সাথে জরিত বলতে গেলে মাথা এরা , এদের কে আলাদা করো বাকি টা পরে বলবো৷”

” প্রাণো যাকে শেষ করবে তার ফুল প্রুফ প্রমান রেডি রাখবে না ৷ ”

” আঙ্কেল এতো গুলো বছরে আমাকে এখনো চিনতে পারলেন না৷ প্রাণো কখনো কোন প্রমান রেখে কাজ করে না ৷ আর একটা কথা মিডিয়া এটার পেছনে হাত ধুয়ে পড়বে হতে পারে আপনাদের উপর চাপ আসবে ৷ আপনাকে কিন্তু এই সব সামলাতে হবে৷কারণ হুট হাট করে শহরের নাম করা বিজনেসম্যানরা উধাও হয়ে যাবে আর তার তদন্ত হবে না এটা কি করে সম্ভব?”

” মামুনি তোমাকে এই সব নিয়ে ভাবতে হবে না আমি সবটা সামলে নিবো ৷ তুমি শুধু তোমার কাজ টা মন দিয়ে করো৷”

” থ্যান্কিউ ৷ আর বাকিদের কি কোন প্রশ্ন আছে?”

” না , আপনি যেটা ভালো মনে করেন সেটাই হবে৷”

” তাহলে কণা আর Rv আপনাদের বাকি কাজটা বুঝিয়ে দিবে ৷ ”

” ওকে ম্যাম”

“কণা আমি বাড়ি যাচ্ছি ৷ এই দিকটা তুই সামলে নিস৷”

” ওকে বান্দুপি”

প্রাণো চোখে সানগ্লাস পড়ে মুখে স্কাফ দিয়ে মুখ ঢেকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়৷

প্রাণো রিকশায় উঠতে যাবে তখনি হঠাৎ করে পেছন থেকে কেউ প্রাণোর হাত টেনে ধরে ৷ প্রাণো পেছনে তাকিয়ে বলে ওঠে ,” তুমি!”

” বাইকে ওঠো তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিচ্ছি৷”

” কোন প্রয়োজন নেই স্মরণ ৷ আমি রিকশা করে চলে যেতে পারবো৷”

” তাই নাকি তা কোথায় রিকশা?”

” এই তো দেখতে পারছেন না৷ আরেহ রিকশা গেল কোথায়? ”

” চলে গেছে৷ বাইকে ওঠো প্রাণ৷”

” তোমাকে বললাম তো আমি যাবো না তোমার বাইকে”

” আমাকে রাগিও না ৷চুপচাপ বাইকে ওঠো প্রাণ নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে৷ ” রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো স্মরণ… প্রাণো স্মরণের রাগ দেখে আর কিছু বলার অবকাশ পেল না ৷ রাগে স্মরণের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে৷ এই প্রথম এতো রাগতে দেখলো স্মরণকে, প্রাণো স্মরণের বাইকে উঠে বসে ঠিকি কিন্তু মাঝখানে দুরত্ব নিয়ে৷ এটা দেখে হাসলো স্মরণ ৷ প্রাণোকে যখন তার বাইকে উঠাতে পেরেছে তখন এই টুকু দূরত্ব ঘুচাতে কতোক্ষণ লাগবে সেটা স্মরণ খুব ভালো করেই জানে৷

স্মরণ প্রথমে আস্তে বাইক রাইড করলেও কিছুক্ষণ পর স্পিড বাড়িয়ে দেয়৷ এতো জোড়ে চালালো যে প্রাণোর স্কাফ টা উড়ে গেল৷ নিজেও পড়ে যাওয়ার ভয়ে স্মরণের শার্ট খামচে ধরলো ৷ ঘুচে গেল মধ্যে কার দূরত্ব৷

” স্টুপিড আস্তে চালাও ৷ তোমার জন্য আমার স্কাফ টা উড়ে গেল ধ্যাত৷”

” প্রাণ আই এম স্যরি ”

” এই স্যরি দিয়ে কি করবো? আমার স্কাফটা তো উড়ে গেল৷”

” আমি স্কাফের জন্য স্যরি বলছি না ৷ সেদিন রাতে কি… ” বাকিটা বলার পূর্বে প্রাণো বলে উঠলো ,” স্টপ ”

” কিহ!”

” আই সেইড স্টপ ৷ আমার বাসার সামনে এসে গেছি৷”

” ওহ এতো তাড়াতাড়ি ”

প্রাণো বাইক থেকে নেমে যেতে নিলে আবার ব্যাক করে ফিরে এসে বলে , ” বাই দ্যা ওয়ে তুমি আমার বাড়ির এড্রেস জানলে কি করে? আমি তো তোমায় এড্রেস বলেনি৷ ”

” ভালোবাসার মানুষটা কোথায় থাকে এটা জানবো না? এটা কেমন করে হয় প্রাণ৷ ভালোবাসি তোমায় ৷”

” স্টপ এন্ড গেট আউট৷ ”

প্রাণোর কথা শুনে স্মরণের মন খারাপ হয়ে গেল৷ প্রাণো তার ফেসে কাঠিন্যতা ধারণ করে স্মরণ করে বললো, ” নেক্সট উইকে বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে স্মরণ ৷” এতো টুকু বলে প্রাণো বাসার ভিতরে চলে গেল৷

প্রাণোর কথা শুনে স্মরণের ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো৷

” নেক্সট উইক নয় প্রাণ তার আগে তুমি আমার হবে আই প্রমিস ইউ ৷ ”
.
.
.
#চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here