গোধূলী আকাশ লাজুক লাজুক ২ পর্ব -১৭

#গোধূলী_আকাশ_লাজুক_লাজুক (পর্ব-১৭)
সিজন ২
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

৩৭.
বসুন্ধরাতে দশ তলায় ইরফানদের ফ্ল্যাটটি। এটাও ডুপ্লেক্স। বড় পরিবার দেখেই তারা বড় বাসা প্রেফার করে। মেহজা ভেতরে প্রবেশ করেই ভীষণ চমকে যায়। পুরো বাসা বেশ সুন্দর আলোকসজ্জায় সজ্জিত। সাথে আছে নানান রঙের ফুল। কিছু আর্টিফিশিয়াল তো কিছু সতেজ তাজা ফুল। যার মোহনীয় ঘ্রাণ চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। এত সুন্দর চোখ ধাঁধানো সাজ দেখে মেহজার মন পুলকিত হয়ে উঠল। সে একটু আগের সকল ভ’য়, ডর ভুলে মুগ্ধ হয়ে সবটা অবলোকন করতে লাগল। তাদের সাথে এসেছে ইরফানের ছোট ফুপি, ইরা, ইকরা, ইনায়া, প্রথি, অনা আর অয়ন। অয়ন আসতে চায়নি কিন্তু এত রাতে এত গুলো মহিলা আসা যাওয়া করবে পুরুষ কেউ সাথে না থাকলে চলে নাকি এই বলে ইরা তাকে নিয়ে এলো। বেচারা মেহজাকে পছন্দ করেছিল। সে কিনা সন্ধ্যায় একবার বাকিদের সাথে এসে নিজ হাতে বাসরও সাজিয়েছে। আর এখনও তাকে জোর করে এনে বসিয়ে রাখছে। সে চোখের সামনে দেখবে মেহজা সেই বাসর ঘরে ইরফানের সাথে ঢুকবে। ভাবতেই তার মনটা খা’রা’প হয়ে গেল।

দূরে অনা আর প্রথি ছবি তুলছে। সেদিকে এক পলক তাকালো। প্রথি নামের মেয়েটা কেমন যেন! তার কাজ কর্ম গুলো যদিও বি’র’ক্তি’ক’র তবুও কেন যেন ভালোই লাগে। রা’গ হয় না। একটু আগেও গাড়িতে ওঠা নিয়ে কত ঢং করল। অয়ন প্রচুর বি’র’ক্ত হয়ে গিয়েছিল। পরে যখন ফ্রন্ট সিটে তার পাশে বসল তখন সে খেয়াল করেছে দুষ্ট প্রকৃতির সুন্দর মেয়েটিকে। তখন আর বি’র’ক্তি আসেনি। যদিও তার মন একদিক দিয়ে ভেঙেছে তবুও অন্যদিকটা বোধহয় গড়ে উঠছে। সে হয়তো ধরতে পারছেনা!

যা যা নিয়ম কানুন আছে তা শেষ করে গৃহ প্রবেশ হলো। মেহজাকে এখনও ইরফানের রুমে নেওয়া হয়নি। আপাতত সে ইকরার রুমে। পাশেই ইরফানের রুম। সে ফ্রেশ হতে গিয়েছে। মেহজার একটু আগের ভ’য়, ল’জ্জা, সংকোচ আবারও পোটলি বেঁধে ফিরে এসেছে। সে ইকরাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-‘আপু! বেশ অ’স্ব’স্তি হচ্ছে। এই ভারি সাজ আর পোশাকে আর থাকতে পারছিনা। ঘেমে গেছি পুরো। একটু শাওয়ার নিলে ভালো হতো।’
-‘ওহ, হ্যাঁ! ঠিক বলেছ। আমার এটা আরো আগেই ভাবা উচিত ছিল। তুমি এক কাজ করো আমার ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে নাও। গরম পানির সুইচটা দিয়ে দিচ্ছি দাঁড়াও।’
-‘গরম পানি লাগবেনা। ঠান্ডা পানি-ই দরকার।’
-‘কি বলছ! পরে জ্বর আসবে।’
-‘অভ্যাস আছে আমার আপু। কিছু হবে না।’

রুমে তারা দুইজন ছাড়াও আরো ছিল অনা প্রথি। নিচে ইরা, ইনায়া আর ফুপি বসে কথা বলছেন। অয়ন তাড়া দিচ্ছে ফেরার জন্যে, রাতের নয়টা বেজে গেছে। এখানে আসতেই তো জ্যামে আটকা পড়েছিল দুই ঘন্টা। এখন আবারও জ্যাম কাটিয়ে যেতে কত সময়! তার নাকি রেস্ট নিতে হবে।
ইকরা মেহজাকে বলল,
-‘শাড়ি পরতে পারো?’
-‘হ্যাঁ পারি।’
-‘তাহলে তো ভালোই। আচ্ছা ওয়াশরুমে শাড়ি নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। ভিজে যাবে। তুমি ব্লাউজ আর পেটিকোট নিয়ে যাও। রুমে এসে শাড়ি পরে নিও। আমি দরজা লাগিয়ে রাখব।’
-‘আচ্ছা আপু।’

সবাই হাত লাগিয়ে মেহজার গহনা, চুলের কাটা গুলো খুলে দিল। সবশেষে সে শাওয়ার নিতে ওয়াশরুমে ঢুকলেই ফুপি আসেন রুমে। তিনি এসে বললেন,
-‘ইকরা চল। এদিকটার সব তো শেষ। এখন ওরা থাকুক। আমরা যাই। রাত হয়েছে অনেক।’
ইকরা ইতস্তত করে বলল,
-‘ফুপু, মেহজা তো শাওয়ার নিচ্ছে। একটু অপেক্ষা করি।’

প্রথি ফট করে বলে উঠল,
-‘আপু আপনি বোধ হয় জানেন না। আসলে মেহজার গোসল করতে এক ঘন্টা লাগে। আমরা আসলে এতক্ষণ থাকি কীভাবে! আমারও ভীষণ দুর্বল লাগছে। বাসায় ফিরতে হবে। ফ্রেশ হতে হবে।’
-‘কিন্তু!’
ফুপি বললেন,
-‘খাওয়া দাওয়ার পর্বও তো শেষ। আর কিছু খাবারও এনে রেখেছি। ক্ষুধা লাগলে ওরা খেয়ে নিতে পারবে। ইরফান তো আছে। ওকে বলে আমরা বের হই।’
প্রথি বলল,
-‘হ্যাঁ আপু! শাড়িও তো ও নিজেই পরতে পারবে। সমস্যা নেই।’

অগত্যা বিছানার উপর শাড়ি রেখে ইকরা চলে এলো। মেহজাকে জানাতে গেলে প্রথি মানা করে, বলে,
-‘এখন আর ওকে ডাকবেন না আপু। ও শুধু শুধু এটা ওটা বলে আমাদের আটকে রাখবে। লেইট করাবে। কিন্তু নিজে এক ঘন্টার আগে আসবে না। আমরা চুপিচুপিই চলে যাই।’

পরে নিচে এসে সবাই ইরফানকে বলে বুঝিয়ে চলে গেল। তারপর ইরফান দরজা লক করে উপরে উঠে আসে।

মেহজার বিশ মিনিটের মধ্যেই গোসল হয়ে যায়। সে কয়েকবার ইকরা, অনা আর প্রথিকে ডেকেও সাড়া শব্দ পেল না। তারপর দরজা ফাঁক করে এদিক ওদিক তাকিয়ে তাদের কাউকেই দেখল না। তবে একজনকে ঠিকই দেখে। সে মানুষটি ছিল অপ্রত্যাশিত। ইরফান সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে। পরনে ট্রাউজার আর টি শার্ট। হাত একটা গোলাপ ফুল। সে একটা একটা করে পাঁপড়ি ছিড়ছে। তার দৃষ্টিও মেহজার দিকেই। মেহজা চমকে গেল। সে বলল-
-‘বাকিরা কোথায়?’
-‘চলে গেছে।’
-‘চলে গেছে মানে? কখন গেল! আমাকে বলে যায়নি কেন?’
-‘উফ! এত প্রশ্ন আমাকে না করে ওদেরকে করো।’
-‘আপনি রুম থেকে বের হোন।’
এক ভ্রু উঁচু করে ইরফান জবাব দিল,
-‘কেন?’
-‘আমার সমস্যা আছে।’
-‘তোমার এত সমস্যা কেন?’
-‘আপনি যান না হলে এক কাজ করুন। আমাকে বিছানার উপর থাকা জামা কাপড় গুলো দিন।’

ইরফান ভ্রু কুঁচকে বিছানায় তাকালো। শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট সব বিছানায় পরে আছে। মেহজা তখন তাড়াহুড়ো করে ব্লাউজ আর পেটিকোটটা পর্যন্ত নিয়ে যায়নি। ইরফান থম মেরে বসে রইল। মেহজা বলল,
-‘কি হলো! দিবেন নাকি যাবেন!’

ইরফান হঠাৎ করেই মেহজার দিকে এগিয়ে আসে। মেহজা দ্রুত দরজা আটকে দিল। ভ’য়ে তার অ’ন্তরা’ত্মা কেঁ’পে ওঠে। তবে ইরফানের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সে পুনরায় দরজা খুলে মাথাটা হালকা বের করে। ইরফান নেই। দরজা হাট করে মেলে রাখা। সে দ্রুত তোয়ালে জড়িয়ে বের হয়ে রুমের দরজা লাগিয়ে পেছনে ফিরতেই চমকে উঠল।

বাথরুমের দরজার পাশেই দেওয়ালে হেলান দিয়ে ইরফান দাঁড়িয়ে। সে মাথা বের করে বাম পাশটাতেই কেবল চোখ বুলিয়েছিল। আর ডান পাশে না তাকিয়ে সোজা দরজার দিকে সে চলে এসেছিল। কি করবে না করবে কিছু বুঝে উঠার আগেই ইরফান তার দিকে এগিয়ে এসে বলিষ্ঠ হাত দিয়ে মেহজার কোমর আকড়ে ধরল। এদিকে তোয়ালে খুলে না পড়ে যায় সে ভ’য়ে বুকের কাছটায় মেহজা শক্ত করে চেপে ধরল। ইরফান এত সুন্দর করে মৃদু হাসল যে মেহজার মন কাননে ফুল ফুটতে শুরু করল। কখন যে ইরফান তাকে দুই হাতে তুলে ধরেছে সে বুঝতেই পারল না। বিছানায় ফেলতেই সে নড়ে চড়ে উঠল। ইরফান থামেনি, ঊষ্ণ চুম্বনে ভাসিয়ে দিচ্ছিল মেহজার সারা চোখে মুখে। মেহজা এক নতুন অনুভূতিতে এক অজানা শ’ঙ্কায় কে’পে ওঠে। তখনিই ইরফান তাকে ছেড়ে দিল। বলল,
-‘বাসরখাট ওইখানে আর আমি এইখানে বাসর করছি! একটু মনে করিয়ে দিবেনা? চলো তো আমরা আমাদের বাসর খাটে যাই।’

মেহজা কি বলবে! ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে রইল। আবারও ইরফান তাকে দুইহাত তুলে শূন্যে উঠিয়ে নিজের রুমে গমন করে। রুমে ঢুকেই মেহজার চোখ জুড়িয়ে গেল। সাথেই দেহে বয়ে গেল শি’হ’র’ণ। লাল সাদার মিশ্রণে সাজানো রুমটি এতটা রোমাঞ্চকর। সে ভীষণ ল’জ্জায় পড়ে গেল। ইরফান আলতো ভাবে তাকে বিছানায় বসায়। মেহজার গালে হাত দিতেই সে বলে উঠল,
-‘আমার চুল ভেজা। ভেজা চুলে এতক্ষণ থাকলে জ্বর আসবে। একদিনও হয়নি যে জ্বর থেকে উঠেছি।’
ইরফান মুঁচকি হেসে বলল,
-‘আচ্ছা। একটু অপেক্ষা করো।’

ইরফান রুম থেকে বের হয়ে গেল। মেহজা ইরফানকে চিনে উঠতে পারছেনা। ইশ! বাসর রাত এমন ল’জ্জার কেন? ইরফান এত বে’শ’র’ম হলো কবে! সে আশেপাশে নিজের ব্যাগটা খুঁজতে থাকে। অনা বলেছিল ব্যাগ এই রুমে রেখেছে। ব্যাগে তো জামা থাকার কথা। সে ব্যাগ খুঁজতে থাকে। কাবার্ডেও দেখে তবে পায়না। চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে থাকে সে। তখনিই ইরফান এলো। তার হাতে হেয়ার ড্রাইয়ার। সে মেহজার পাশে এসে বলল,
-‘এদিকে আসো। এখানে বসো।’
ড্রেসিং টেবিলের সামনে ইঙ্গিত করতেই মেহজা গিয়ে বসে। আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই ল’জ্জা পেল। সে এভাবে ইরফানের সামনে ঘুরঘুর করছে! ধুর।

ইরফান নিজ হাতে যত্নের সহিত মেহজার চুল শুকিয়ে দিল। মেহজা বলল,
-‘আমার ব্যাগটা কোথায়?’
-‘আমি কীভাবে জানব!’
-‘অনা বলেছিল এই রুমেই রেখেছে।’
-‘তাহলে সেটা অনা-ই ভালো বলতে পারবে।’

মেহজার রা’গ হলো। ইরফানের দিকে চোখ গরম করে বলল,
-‘আমার জামা কাপড় পরতে হবে তো!’
-‘পরতে চাও?’
কথাটা শুনে মেহজা এমন ভাবে ইরফানের দিকে তাকালো। লোকটা কী পাগল হলো! এটা কেমন প্রশ্ন? জামা কাপড় পরতে চাইবেনা কেন?’

ইরফান এবার নিজের কাবার্ড খুলে একটা প্যাকেট মেহজার দিকে বাড়িয়ে দিল। মেহজা প্যাকেটটা হাতে নিয়ে বলল,
-‘এটা কি!’
-‘তোমার ড্রেস।’
-‘আমার ড্রেস মানে?’
-‘মানে আমি তোমার জন্য এটা এনেছি। দ্যাখো তো পছন্দ হয় কিনা!’

ড্রেসটা দেখে মেহজার চক্ষু চড়কগাছ। লাল রঙের শর্ট স্লিভলেস নাইটিটা দেখে তার মাথা চক্কর দিয়ে উঠল। সে এবার বুঝতে পারছে। আসলে উত্তম মধ্যম নয়। ইরফান তাকে এভাবেই একটা শা’স্তি দিচ্ছে। সে বলল,
-‘ছিঃ আমি এটা কখনোই পরব না।’
-‘কেন?’
-‘আপনি এই বিশ্রী জিনিসটা আমার জন্য কেন এনেছেন? টাকা কম পড়েছিল! বড় কাপড় পাননি!’
-‘টাকা আসলে বেশিই পড়েছিল। তুমি হয়তো জানোনা আজকাল যত বেশি টাকা হবে কাপড় তত কম পড়বে।’
-‘টাকার ফুটানি দেখাচ্ছেন?’
-‘দেখাচ্ছি নাকি!’
-‘হ্যাঁ।’
-‘বেশ। তবে দ্যাখো।’

মেহজা চুপ করে ফ্লোরে তাকিয়ে আছে। ইরফান একপু হেসে বলল,
-‘শোনো! তুমি যদি চাও আমার সামনে এমন টাওয়েল পেচিয়ে থাকবে আমার জন্য সেটাও ভালো। মানে বেশিই ভালো। টাওয়াল তো আর গায়ে আটকে থাকবেনা। বলা তো যায়না এক টানেই..
মেহজা ইরফানের দিকে ক্রো’ধিত নয়নে তাকায়। ইরফান আরেকটু হেসে বলল,
-‘তবে এইটা কিন্তু টানলেও নড়বেনা। টাওয়েল তো কোনো পোশাক না এটা তো পোশাক।’

মেহজা বুঝতে পারছে লোকটা ভালোই প্রস্তুতি নিয়েছে তাকে হারানোর জন্য। এর থেকে আর মুক্তি মিলবেনা। সে নাইটিটা নিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকল।

ইরফানের ঠোঁটে মুখে বিশ্বজয়ের হাসি। এবার বাকি কাজটা সারতে পারলেই হয়।

মেহজা বের হতেই ইরফান একটু নড়ে চড়ে বসল। সত্যি বলতে তার নিজেরও কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে। কিছুটা ল’জ্জা তারও লাগছে। তবে সেটা মেহজাকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা।
-‘দেখেছ আমি সাইজটা একদম পার্ফেক্ট এনেছি।’
মেহজা তাকালো না। ইরফান তার হাত ধরে টেনে এনে বিছানায় বসালো। বলল,
-‘তোমার ফোন কোথায়?’
-‘কেন!’
-‘কোথায় সেটা বলো। এত প্রশ্ন কেন করছ?’
মৃদু ধ’ম’কটা কাজে দিয়েছে। মেহজা বলল,
-‘ব্যাগেই তো থাকার কথা। এখন তো ব্যাগটাই পাচ্ছিনা।’
-‘ওহ ব্যাগে!’

ইরফান বিছানার দিকে এগিয়ে গেল। তারপর খাটের পেছন থেকে ব্যাগটা টেনে বের করল। তা দেখে মেহজার মুখটা আপনাআপনি হা হয়ে গেল। অ’স’ভ্য লোকটা তার ব্যাগ লুকিয়ে রেখেছিল! আবার বলেছে সে জানেনা। কি বা’ট’পা’র!

ইরফান ব্যাগের ভেতর হাতড়ে মেহজার ফোনটা বের করল। তারপর মেহজার সামনে এনে বলল,
-‘লক খোলো।’
-‘খুলব না।’
-‘খুলবে না? আমার কথার অমান্য করবে তুমি? ভুলে যেওনা তুমি এখন আমার আন্ডারে। একদম একা, আমি চাইলে মে’রে গু’ম করে দিতে পারি।’
ভ’য়ে ভ’য়ে মেহজা লক খুলল। সত্যিই তো। এই লোককে তো বিশ্বাস নেই। যদি সত্যিই কিছু করে দেয়! তবে?
-‘এবার আমার নাম্বারটা আনব্লক করো। রাইট নাও!’
শেষ কথাটাতে আবার ধ’ম’ক। মেহজা বুঝতে পারল এই লোক ভালোই প্র’তি’শো’ধ নিচ্ছে। সে ফেসবুকে এমন একটা পোস্ট দেখেছিল। এক লোক বিয়ে করে তার আইডি বউয়ের ব্লকলিস্ট থেকে ছুটায়। ইরফানও সেই পদ্ধতি অ্যাপ্লাই করছে। মেহজা নাম্বারটা আনব্লক করতেই ইরফান তার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে ড্রয়ারের ওপর রেখে দিল। তারপর তার দিকে তাকিয়ে বলল,
-‘আর কোনো দিন ব্লক করবে?’
মেহজার ইচ্ছে করছিল ইরফানের চুলগুলো টেনে দিয়ে বলতে,
-‘শা’লা’র ব্যা’টা তোকে পারলে আমি জী’ব’ন থেকে ব্লক করি। এত জ্বা’লা’স কেন তুই?’

ইরফান উঠে দরজাটা নক করে দিল। লাইট টা অফ করতেই মোমবাতিগুলোর আলো এবার স্পষ্ট হলো। এতক্ষণ যাবৎ জ্ব’ল’ছি’ল তবে ঘ্রাণ পাওয়া ছাড়া আর কিছুই মেহজা বোঝেনি। এখনই তার নজরে এলো জ্ব’ল’ন্ত মোমবাতি গুলো।

ইরফান পাশে এসে তার হাত ধরতেই সে ছাড়িয়ে নিল। বলল,
-‘মেহজা আমি কিন্তু সত্যিই মা’র’ব যদি এমন করো!’

মেহজা এখন বুঝতে পারছে ইরফান তাকে মারবেনা। এটা কেবল মুখের কথা। মারার হলে বুঝি কারো হাত কাঁ’পে? এই যে ভালোবাসার স্পর্শ গুলো সে মেহজাকে দিচ্ছে মেহজা তো স্পষ্ট সেই স্পর্শের মালিকের কাঁ’পা’কাঁ’পি টের পাচ্ছে। একটু আগের রা’গ ক্ষো’ভ কোথায় যেন উড়ে গেল। মেহজা দম খিঁ’চে রাখল।
ইরফান তার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল,
-‘মেহজা মে আই?’

মেহজা চুপ করে রইল। এতকিছু করে এখন বলছে মে আই। ব্যা’টা ব’দ! এটা আস্ত এক দূ’ষি’ত পুরুষ। তার উচিত হয়নি এই লোকের প্রেমে পড়া। প্রেমের জ্বা’লা যে বড় জ্বা’লা সেটা এখন সে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।

#চলবে।
(আজ 1k রেসপন্স চাইছি। দেখি হয় কিনা। যদি হয় তাহলে পরের পর্ব আগামীকাল আসবে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here