গ্যাংস্টার লাভ -২ পর্ব -০৮

#গ্যাংস্টার_লাভ (সিজন 2)
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
||পার্ট_৮||

ক্যান্টিনে বসে রিহা আজকে সকালের কথা ভাবছে।পাশে বসে লামিয়া খেয়ে যাচ্ছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো প্রাণী দীর্ঘদিন না খাওয়ার ফলে হাতে খাবার পেয়েছে।

_”সব কি আমার মনের ভুল?নাকি সত্যি।উফফ কাকে জিজ্ঞেস করবো?সকালে যখন আব্বুকে ফোন দিলাম তখন তো আব্বু তেমন কিছু বললো না তাহলে হয়তো আমার মনের ভুল। প্রফেসর ফিয়াজুর রহমান আফরান

এই সব মনে মনে ভেবে নিজের মনকে ধাতস্ত করে কফি খাওয়ায় মনোযোগ দিল।

কিছুক্ষণ অতিবাহিত হবার পর একজন পিয়ন এসে রিহাকে খুঁজলো।রিহা আর লামিয়া ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে।

পিয়ন রিহাকে উদ্দেশ্য ফিচেল কণ্ঠে বলে।

_”নতুন প্রফেসর তোমাকে ডাকছে এক্ষুনি যেতে বললো।

কথাটা বলে রিহার উত্তরের অপেক্ষা না করে পিয়ন চলে গেলো।লামিয়া অবাক হয়ে রিহার দিকে তাকাতেই দেখে রিহা ভাবনার জগতে ডুবে আছে।আলতো করে কাধে স্পর্শ করতেই রিহা কেপে উঠে ।

কাপা কাপা ঠোটে লামিয়া কে বলে

_”তুই আমার সাথে যাবি?চল প্লীজ

লামিয়া অস্থির কণ্ঠে বলে

_”তুই ঠিক আছিস তো?পানি খাবি

রিহা কপালে ডান হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে চুলকিয়ে বলে

_”আমি একদম ঠিক আছি ।তুই আমার সাথে চল

লামিয়া আর কথা না বাড়িয়ে রিহা কে নিয়ে প্রফেসরের কেবিনে যেতেই পিয়ন একা রিহা কে যেতে বললো।রিহা কোনো উপায় না পেয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কেবিনের সামনে দাড়িয়ে দরজা নক করে নরম কণ্ঠে বলে

_”মে আই কাম ইন টি

সম্পূর্ণ কথা শেষ করার আগেই হাতের ইশারায় রিহা কে ভিতরে আসতে বলে।রিহা যতেষ্ট স্বাভাবিক ভাবে ভিতরে যায়।

এদিকে লামিয়ার ফোনে বাঁধন করতেই লামিয়া একটু দূরে গিয়ে দাড়ায়।

ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ঝাড়ি শুনতে পায়।ফোন দেরি করে ধরার কারণে বাঁধন রাগ করে কিছু কড়া কথা শুনায় ।লামিয়ার ও ইচ্ছা করছে কিছু শুনিয়ে দিতে কিন্তু নিজের ইচ্ছাকে দমিয়ে রেখে বলে

_”এত রাগ শরীরের জন্য ভালো না মিস্টার জামাই।একটু রাগ কমান।আমার মত এত কিউট বউ থাকতে আপনি এত রাগারাগি করেন ।

ওপাশ থেকে বাঁধন কড়া গলায় জবাব দেয়

_”কি আমার কিউট বউ সেটা জানা আছে।ভার্সিটিতে আজ আমাকে ছাড়া প্রথম গিয়েছে পৌঁছে একবার ফোন দিলো না।এখন আবার বাড়ি আসতে দেরি।বলি কি ওখানে কোনো হ্যান্ডসাম ছেলে পছন্দ হইছে নাকি ?

লামিয়া ভেংচি কেটে বলে

_”হলে কার কি ?আমার জামাই তো শুধু আমার সাথে ঝগড়া করে হ্ন।

বাঁধন আর একটা ধমক দিয়ে ফোন কেটে দেয়।লামিয়া মুখ ফুলিয়ে থাকলো।লামিয়া খুব ভালো করে জানে বাঁধন একটু অভার পজেসিভ।লামিয়া ছাড়া ওর দুনিয়াতে কেউ নেই সেইজন্য লামিয়া বাঁধনের সকল পাগলামি মুখ বুঝে মেনে নেয়।

লামিয়া পিছনে ফিরতেই দেখে রিহা আসছে।রিহা কে কিছু বলবে তার আগে রিহা বলে

_” লামি আমি বাসায় যাবো। আমাকে বাসায় নিয়ে চল ।তুই তো আমার মত বাইক চালানো শিখছিলি তাই না

লামিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিহা চাবি দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়।লামিয়া বেকুবের মত তাকিয়ে আছে ।

_” কবে জানি এই মাইয়ার মন আমি কাটা চামচ দিয়ে উঠায় ফেলায়।কখন, কিভাবে মুড চেঞ্জ হয় বুঝতে পারি না।আমার তো চিন্তা ভাইয়াকে নিয়ে এই মাল কে কেমনে সামলাবে

লামিয়া কথা বলতে বলতে সামনে এগিয়ে যেতেই কিছুর সাথে বেধে পড়ে যায়।

আশে পাশে ভালো করে দেখে নেয় কেউ দেখছে কি না।তাড়াতাড়ি উঠে এক দৌড়ে রিহার কাছে যায়। রিহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

লামিয়ার ইচ্ছা করে কষে নিজের গালে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে ।

বাড়িতে এসেই রিহা রুমে চলে যায়।লামিয়া বাইকে পার্ক করার আগেই রিহা দৌড়।লামিয়ার কেমন খটকা লাগলো ।

রেহান রুম থেকে বের হতে যাচ্ছিল সকাল থেকে কাজ করে একঘেমি লাগছে ।দরজার কাছে আসতেই তড়িৎ গতিতে কিছু রেহানের বুকের সাথে ধাক্কা খেলো।

রেহান রিহাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিহা ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

রেহান বেশ অবাক হয় ।অন্য সময় হলে রেহানের দোষ না থাকলেও রিহা কথা শুনিয়ে দেয় আর আজ হটাৎ এভাবে ছুটে আসার কি কারণ।

রেহান দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেয়।ভিতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায় না ।

রেহান আরো কিছুক্ষন ধাক্কা দেওয়ার ফলে রিহা চিৎকার করে বলে

_”বাইরে অনেক গরম।আমার শরীর ভালো লাগছে না আমি এখন একটু শাওয়ার নেবো।

রেহান আর কিছু না বলে চলে আসে।নিচে নামতেই দেখে লামিয়া আসছে।

লামিয়াকে প্রশ্ন করতেই লামিয়া বলে

_”জানিনা ভাইয়া সকালে ভার্সিটিতে যাওয়ার পর থেকে কেমন অস্থির অস্থির লাগছে ওকে।কিছু বললে কোন ভাবনায় ডুবে থাকছে কে জানে।

রেহান ছোট করে ওহ বলতে লামিয়া কিছু জিজ্ঞেস করবে তার আগেই বাঁধনের ডাক।লামিয়া নিজের রুমে চলে যায়।

রেহান হটাৎ ফোন বের করে কাউকে ফোন দেয়।

কিছুক্ষণ কথা বলে রিহার জন্য মিল্কশেক বানাতে বলে ।

রিহা অনেকক্ষণ ধরে শাওয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে আছে এটা যে শীতকাল সেটা রিহা কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছে। কথায় বলে না মন মানসিকতা ঠিক না থাকলে কোনো কিছু ঠিকভাবে বুঝা যায় না।

রিহা সকালের কথা ভাবছে রিহা কেবিনে ঢুকলো একজোড়া হাত রিহাকে দেয়ালে চেপে ধরে।রিহা প্রথমে অবাক হলেও পরে বুঝতে পারে ওর আশঙ্কা ঠিক।

রিহা ভনিতা ছাড়াই বলে

_” আফরান?

আফরান হেসে বলে।

_” বাহ ভালোবাসার টান আছে বলতে হবে।কখনো দেখোনি কিন্তু আমাকে ঠিক চিনতে পারলে।wow কি লাভ

হটাৎ আফরান নিজের চোখ মুখ শক্ত করে নেয়।রিহা শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ।আফরান রিহার আরো কাছে এসে বলে

_”এতই যখন ভালোবাসা তাহলে আমার হবু বউ হয়ে কি করে অন্যের বউ হলে ?আমার পাশে থাকার সেখানে তুমি কি করে অন্যের বিছানা

_”আফরান (চিৎকার করে)

রিহার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।রাগে এখন নিজের গালে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছা করছে।যেখানে রেহান স্বামী হয়ে কিছু বললে ছাড় পায় না সেখানে একটা বাইরের লোক।রিহার গা গুলিয়ে আসছে।

রিহা নিজেকে সংযত করে বলে

_”দেখো আফরান যা ছিল তো ছিল।এখন আমি অন্যের

আফরান হটাৎ রিহার গালে হাত দিয়ে বলে

_”হা আমিও সেটাই বলছি ।সব বাদ আমি জানি আমার রিহা #গ্যাংস্টারের_লাভে পড়তে পারে না।কিছুতেই না।সমস্যা নেই আমি ডিভোর্স পেপারের ব্যাবস্থা করছি । আই লাভ ইউ জান

রিহা আফরান কে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে বলে

_”তুমি কি পাগল? আমি অন্য কারোর স্ত্রী।বিয়ে যেইভাবে হোক না কেনো আমি এখন হালাল সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছে।আর এই পবিত্র বন্ধ ছেড়ে আসার অধিকার আমার নেই।জন্ম,মৃত্যু,বিয়ে সব আল্লাহর ইচ্ছায়। রেহান কেমন সেটা আমার জানার দরকার নেই।হাদীসে লিখা আছে তুমি যেমন তোমার জীবন সঙ্গী তেমন হবে। প্লীজ তুমি এই সব বলো না

আফরান চিৎকার করে বলে

_”রিহা তুমি আমাকে ভালোবাসো আর তুমি আমার হবেই কেউ আলাদা করতে পারবে না।তুমি ভুলে যেয়ো না তোমার প্রাণ ভোমরা

কথাটা বলে আফরান হাসতে থাকে ।হাসতে হাসতে রিহার কাছে আসতে চাইলে রিহা এক ছুটে চলে যায়।

রেহান দুইবার এসে দেখে গেছে ।রিহা এখনো বের হয়নি ।রেহানের খুব চিন্তা হচ্ছে।

রিহা চোখে মুখে পানি দিয়ে বলে

_”আমি কাউকে ঠকাবো না ।কখনো না।রেহানকে মেনে না নিলেও তার সাথে পবিত্র সম্পর্ককে আবদ্ধ আর এটা অস্বীকার করতে পারি না। আফরান বুঝতে হবে।

আরো কিছুক্ষন পর রিহা বের হয়ে আয়নার সামনে বসল ।টাওয়াল দিয়ে চুল মুছছে।

এমন সময় হাতের উপর আর একটা ঠান্ডা হাত পড়ায় রিহা আয়নায় তাকিয়ে দেখে রেহান ।রিহা আস্তে করে হাত সরাতেই রেহান টাওয়াল দিয়ে চুল মুছে দিতে লাগে

রিহা আয়নায় রেহানকে দেখতে থাকে রেহান চুল মুছতে মুছতে বলে

_” জানো রিহা কোনো বিষয় নিয়ে টেনশনে থাকলে সেটা কাছের কারোর সাথে share করতে হয় তাহলে মন হালকা হয়।মনের ভিতর হাজার রকমের বোঝা নিয়ে বাঁচা মুশকিল।তখন কারোর হেল্প দরকার একটা এমন ফ্রেন্ড যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়। আমার মনে হয় হাসব্যান্ড এর থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড আর কেউ হতে পারে না ।থিঙ্ক আবউট ইট। অন্য সব সম্পর্কের থেকে স্বামী স্ত্রীর বন্ধন সব চেয়ে পবিত্র।

রেহান চুল মু%LS