“চাঁদ হয়ে রবো”
~খাদিজা বিনতে হক
পর্ব-১৮
হতে পারে কোন রাস্তাই,
কোন হুক তুলা এক রিকশাই,
আমি নিল ছাতা নিয়ে দারাই
তুমি ডাকলে না।
,
রোদে পুড়ে এই রঙ্গিন চেহারা
তুমি বুজলে না আমার ইসারা
মন বলে যদি থামতে
তুমি থামলে না।
,
তোমার জুলিয়েট হাসি হেঁসে
যদি ডাকতে ভালবেসে
আমি তোমার চোখে তাকানোর সাহস পেতাম না…
আমার চড় শড়কাই শরীরে
তোমার হাওয়াই লাগছে ফুল ফুঁরে
প্রেম নাকি পাগলামি?
বলতে পারব না।
,,
লোকে পাগল বলুক, মাতাল বলুক
আমি… তোমার পিছু ছাড়বো না…,
লোকে পাগল বলুক, মাতাল বলুক
আমি… তোমার পিছু ছাড়বো না…,
তোমার পিছু ছাড়বো না…।
🎶🎶🎶
,
রেশ গানটা শেষ করে সামনে তাকালো।
মৃধূ হাসলো।একপলক হলেও সে পৌষীকে দেখে।
এটা অনেক শান্তি।শান্তি মানে মহা শান্তি।
আবার হাসলো।বাবাহ।মেয়েটা তো সেই লাজুক।
হঠাৎ বুকের বা পাশে হাত রাখলো।
হার্ট বিড মিস করছে।
এই অনুভুতিটা একদিন ওকে মেরে ফেলবে।
রেশ নেমে যাওয়া শার্টের হাতটা ভাজ করে উপরে তুলতে তুলতে দির্ঘস্বাস ছারলো
,
পৌষী ছাদের সিড়ি ঘরের দেয়ালে হেলান দিয়ে গানটা শুনলো
প্রতিদিন শুনে।চুপি চুপি আবার চলে।যায়।
আজ বড্ডো কাছে গিয়ে বলতে ইচ্ছা করছে।
-” তুই তো ভালোই গান করিস।প্রোগ্রাম টোপ্রাম করতে পারিস।দেখিস তুই অনেক বরো গায়োক হবি।আমার গুড উইস রইলো তোর জন্য”
,
কিন্তু কিছুই বলবে না।কারণ ও ধরা দিতে চায় না।
তহলে ছেলেটা সামনে আগাতে পারবে না।
ছেলে বেলা থেকে বলে।
—“শিশি আমি তোকে বিয়ে করবো।অতুল কাকার মতো।ছোটো কাকিকে যেমন ভাবে করেছে।
পায়ে লাল আলতা।নাকে ইয়া বড় নাকফুল।
পরনে লাল টকটকে শাড়ী।চাঁদ হয়ে রবি আমার ঘরে।বল থাকবি না।
শোন।কাকির মতো ফ্যছফ্যছ কান্তে পারবি না।বললাম কিন্তু আগেই।
আমার কান্না সহ্য হয় না।কেউ কান্না করলে আমার কান্না পায়।তাই তুই কান্না করলে।স্ব জোরে তোর গাল ফাটিয়ে চড় মারবো।তখনও কান্না করতে পারবি না।বুজলি।গটইট”
,
পৌষীর চোখ বেয়ে উষ্ণ জলধারা বয়ে নামলো।
ছুটে নিচে চলে গেলল।
-“তোর পৌষী প্রতিদিন কান্না করে।তোর মতো করে কেউ বলে না।কান্না করতে পারবি না ।উলটো আমায় কাদায়।অনেক কাদায়।”
রেশ কিছু একটা ভেবে।শার্টের কয়েকটা বাটন খুললো।আবার আটকে ফেললো।
,
পৌষী তুষারকে কিছু বলবে বলবে ভেবে।
পুরো ঘরে হাটছে।একবার ডানে হাটছে গডগড করে একবার বামে।
শাড়ীর আচল দিয়ে বারবার নাকের ঘাম।মুচ্ছে।
আবার কপাল।মুচ্ছে।
ব্যতিব্যস্ত হয়ে।বারবার বাধা চুলগুলো।
খুলছে আবার বাধছে।একবার পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে একবার হাত খোপা করছে।
তুষার বেস তিক্ষণ দৃষ্টি দিয়ে ওকে দেখছে।
ওর ধড়ফড়ানি দেখে শেষমেশ বলেই দিলো।
“কিছু বলার থাকলে বলতে পারো।”
পৌষীর কথাটা মাথায় নিয়ে ভাবতেও কিছুক্ষণ সময় নওলো।
,
“আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই”
“হুম বলো”
“আপনি কি মায়ের কথাটা বিশ্বাস করেছেন”
“কোন কথাটা”
“আমি যে অন্য পুরুষের সাথে রাত কাটিয়েছি।
আসলে কথাটা অন্য রকম হবে।রাত কাটায় নি।
সময়টা আসলে।বিকেল ছিলো”
তুষার ঘামছে।এবার মনে হয়।বুকে ব্যথাটা শুরু হবে।
পৌষী শান্ত গলায় বলল
” আপনাকে কি ঠাণ্ডা পানি দিবো।সঙ্গে আইস ব্যগ”
“ঠাণ্ডা পানি হলে চলবে।আইস ব্যগ কেনো”
“বলার কারন আছে।অবাস্সো।”
তুষারের কাধে ইসারা করে বলল
“দুঃশ্চিন্তায় মনে হয় আপনার হেয়ার ফল হচ্ছে”
“মানে”
“কঠিন কিছু না।সোজা সাপটা ব্যপার।বুজতে পরলে বুজবেন।সব কিছু আমার বোঝানোর ক্ষমতা নেই”
পৌষী কিচেন থেকে।ঠাণ্ডা পানি এনে দেওয়াতে তুষার একশ্বাসে পানিটা খেয়ে ফেললো।
পৌষী বেস উৎসাহ নিয়ে আবার বলল
“তো বললেন না তো।কথাটা বিশ্বাস করেছেন”
“না।করিনি”
“কেনো করেন নি”
” কথাটা মিথ্যা!! ফ্যইক!!তাই”
পৌষী অনেকটা শব্দ।করেই একটা দির্ঘস্বাস ফেললো।
দির্ঘস্বাসটা একদম।তুষারের বুকে গিয়ে লাগলো।
এমন ভাবে।যে ওর কথাট পৌষীর কাছে শুধু হাস্যকরি না বরং জোকস অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড মনে হয়েছে।
“কথাটা মিথ্য আথবা ফ্যইক কিছু না।”
দাঁতে দাঁত চেপে কঠিন স্বরে বলল
“কথাটা সত্যি”
একটু কথা বলতে ওকে মনের সাথে অনেক বড় একটা ধাক্কা সামলাতে হয়েছে।
কিছুক্ষন থেমে আবার বলল
“কথাটা রাত কাটানো নয় আরকি।
তবে অনেক বড় একটা ধাক্কা ছিলো আমার জন্য।”
তুষার বুক চেপে বিছানায় বসে পরলো।
“কথাটা বলতে হলো অনেক বছর পিছনে যেতে হবে।এই ধরুন।আজ থেকে।বছরখানেক আগে।এই ধরুন ৭ বছর।আমার বয়স তখন কতো হবে ১৫-১৬ বছর”
তুষার ভাঙা গলা ধরা কন্ঠে বলল
“চুপ করো।আমি শুনতে চাই না”
“বাস্তবতা কে এরিয়ে চললে হবে না।ফেস করতে হবে।যেটা সত্যি সেটা।তাছারা আমার মনে হয় আপনার যে এই কঠিন রোগটা যা বড় ডাক্তার বাবু সারতে পারলো না এবার মনে হয় সারবে।তাছাড়া….”
তুষার চোখ বন্ধ করে বলল
“শুনতে চাই না।আমি অসুস্থই থাকতে চাই।”
“আপনাকে।আমি সব বলবো”
“তুমি থামবে”
“মি.আশিক বস্তবতাকে দেখুন। তাছাড়া আপনারা তো পুরোটা সত্যি জানেন না।আমার বড় একটা দ্বায়িত্ব আপনাদের কে সবটা বলা।
আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখে কিন্তু। সবাই কিন্তু। চাঁদের সুন্দর্য্য দেখে।কাছে গিয়ে দেখলে বুঝতে খানা খন্দো এ্যব্রো থ্যবরো।
আসলে ঘটনা ঘটেছে বিকেলে”
তুষার আধ শোয়া হয়ে গা এলিয়ে দিলো কিছুটা।
তবে তখনও ওর চোখ বন্ধ।
পৌষী মেজের মাঝ খানটাতে দাড়ীয়ে।
” তার আগে আমি একটা কথা জানতে চাই।
আমি কোনো দিন ও মা না হতে পারলে।আপনি কি আমাকে…”
তুষার চোখ মেলে তাকলো।
চোখের চাউনিতে শুদু নিষ্ঠুরতা।
তার মানে পৌষী বুজলো।
“থাক বুজতে পরেছি।তাহলে সেদিনে ঘটনা বলি।
সত্যি বলতে পুরো দিনটা ভালোই কাটছিলো।
ঘটনাটা বিকেলের।
বেস ঘুর পাক না দিয়ে ক্লিয়ার বলি,,,,,
বাড়ীতে আমি একাই ছিলাম।হঠাৎ দরজায় নক করাতে আমি দরজার ম্যাজিক আই দেখে চিনতে পারলাম বাহির কেউ একজন আমার পরিচিতো।
দরজা খুলে দিলাম,,,,
আমার আপন একজন।আমার সাথে এতো জঘন্য কাজ করতে পারে ভাবতে পারিনি,,,।
তাও সে আমার বাবার বয়সি একজন,,,,”
পৌষীর দু চোখ বেয়ে জল পরছে।
দু হাত দিয়ে সেই জল লুকনোট আপ্রাণ চেষ্টা,,,
তুষারের মুখটা চিন্তায় ভরে গেছে।আসলে
একটু একটু করে মেয়েটা যে কথাটা বলবে।
সেটা পুরো পুরি শোনার শক্তি ওর মাঝে আছে,,,
পৌষী।কান্না ভেজা গলায় বলা শুরু করলো,,,
,
,
চলবে,