চাঁদ হয়ে রবো পর্ব ১

ব্যথায় কুকরে উঠছে পৌষী।
পুরো শরীরে ব্যথা।মেজেতে রক্তের ছিটে পরে রয়েছে।এতক্ষণ জমাট বেধেছে রক্তে।
চিৎকার দিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে করছে।
পারছে না।শোকে জেনো মেয়েটা পাথর হয়ে গেছে।আগে উহ আহ শব্দ করতো এখন তাও করে না।মেজেতেই পরে আছে।এলোমেলো হয়ে।
,
ব্যলকনিতে বসে সিগারেট টানছে তুষার।
আজ মন ভরে মেরেছে সে পৌষীকে।
মারবে না কেনো।ওর মতো মেয়েকে মেরে ফেলা উচিৎ।বাচিয়ে রেখেছি ওর ভাগ্য।
আমার জীবনটা নরক করে দিলো।
কোন কুমতলবে আমার কাছে এসেছে ও নিজেই জানে।এই আশিকুর রহমান তুষার ।ওর রুপ যৌবন আর ছলছাতুরিতে আজ কাল ভোলবে না।
,
প্রেম করে বিয়ে ওদের।আসলে তুষারেরই ওকে পছন্দ হয়।সেখান থেকে ভালবেসে বিয়ে করে।বাবা মা কেউ নেই পৌষীর।
বাবা তো সেই মারা গেছে তখন ওর বয়স ১০।
মা তার দেড় বছরের মাথায়।বার বছর বয়সেই অনাত হয় মেয়েটা।বড় চাচার ঘরেই মানুষ হয়ে ওঠে।লেখা পড়া করতে থাকলেও।চাচির ভালবাসয় বড় হয়ে ওঠা।টুকটাক হাসি আনুন্দে বারে পৌষী।কাল বৈশাখীর ঝরের মতো ওলট পালট করে দেয় ওর জীবন তুষার।
প্রথম দেখাতেই পাগল প্রায়।ও বিয়ে করতে না চাইলেও।জোর করে বিয়ে করে ওকে তুষার।
আজ সব ভালবাসা উবে গেছে।আজ ওদের সম্পর্কটা নিম তেতো থেকেও বাজে রুপ নিয়েছে।
,
পৌষী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ব্যলকনির দিকে।
ব্যলকনির থাই গ্লাসের ওপারে।ধোয়া ভর্তি করে সিগারেটে টান দিচ্ছে তুষায়।ছেলেদের নাকি কষ্ট পেলে এসব খেলে সব কষ্ট কমে যায়।কিন্তু তুষারের চোখে মুখে আগুন ধাউ ধউ করে জলছে।
আগ্নেয়গিরির লাভা উপচে পরছে চোখ দিয়ে।
,
পৌষী ঘরেই ছিলো।শ্বাশুড়ির সাথে কথা কাটা কাটি হওয়ায় মন ভালো ছিলো না।
যদিও বা দোষ ওর ছিলো না।তবুও শ্বাশুড়ি গুরুজন।ক্ষমা চেয়ে নিলে কোনো সমস্যা নেই।ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে।তবুও ওর মন খারাপ ছিলো।বিনা দোষে কারো কাছে ও ক্ষমা চায় না।
সে সকল দিন গুল এখন শুধুই অতিত।
ও মিথ্যা কথা কোনো দিনও সায় দেয়নি।
ওর কেমন যেনো গাগুলিয়ে উঠে।
ওকে মেরেও কেউ মিথ্যা বলাতে পারতো না।
সে সব দোষ নিজের ঘারে নিয়ে ক্ষমা চাইলো।
মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে।একটু ক্ষমা চাওয়াতে সংসারে শান্তি থাকলে ও সেটা একবার কেনো বার বার করবে।

সেদিন ওর সাথে ঘটা কিছু অস্সাভাবিক। ঘটনার কথা মেজো চাচিকে বলেছে।
ইদানিং ওর মনে হয় কেউ ওর উপর নজর রাখছে।
হঠাৎ হঠাৎ আতর আথবা ফুলের গন্ধে ভরে ওঠে ওর রুম।প্রতি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙে।পাশে তুষার থাকে তবে খেয়াল করে না।ঘেমে নেয়ে একা কার হয় স্বপ্নেই।প্রতি রাতে কালো ছায়া দেখে।ঘরের যেখানে সেখানে।ভয়ে মেয়েটা কারো কাছে কিছু সেয়ার করতে পারে না।মেজো চাচি কে বলার পর এলাকার ইমাম সাহেবের কাছ দিয়ে।কিছু একটা এনে দিলো।ও যদিও বা জানে।এই সব তাবিজ পরা শিরিক।চাচিকে বলার পরও বলল।শরীরে না পরিস সাথে রাখ।ভয় পেলে কাছে নিবি।
এক প্রকার জোর করেই মেজো চাচি আর ছেটো চাচি দিয়ে দিলো।
,
বাড়ী ফিরর পর ওর শ্বাশুড়ি এটা দেখে তুষারের কাছে বলাতে।খুব মেরেছিলো তুষার।আমি নাকি কালা জাদু করি।ডায়নি।কতো কথা।সেদিন আস মিটিয়ে মেরেছিলো।কিন্তু সেটাতো সপ্তহ আগে।এখন মারলো কেন কিছু জানে না।
,
ব্যলকনিতে লাগানো কিছু মানি প্লান্ট।ফুল গাছে পানি দিয়ে দারিয়ে বাহিরে তাকিয়ে এক মনে শ্রাবনের উতাল মেঘ দেখছিলো।মোনটা খরাপের মাঝেও ভালো হয়ে গেলো।
তবে ও ভাবতেও পারেনি কিছুক্ষন পর ওর সাথে কি হবে।
পিছন থেকে তুষার এসেই ওকে মারা শুরু করলো।সাথে কিছু গালিও দিলো।ওর অবাক হওয়ার শেষ পর্যায় গিয়ে তুষার আজ ওকে বেল্ট দিয়ে মেরেছে।বেল্টের লোহার শক্ত অংশ পৌষীর মুখে লেগে ঠোট ফেটে গলগল করে রক্ত পরেছে।
সেদিকে কোনো হুস নেই তুষারের।ও তো মরন নেশায় মত্তো।
,
তুষার ব্যলকনি তেই বসা।হয়তো বা আজ ওখানেই ঘুমবে।অথবা জেগে থাকবে।কে জানে।
মাঝ রাতের দিকে পৌষী দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো।দাড়ালোও।তবে দাড়ীয়ে।দরজার কাছে কালো ছায়া দেখে আবার অজ্ঞ্যান হয়ে মাটিতে পরে গেলো।সাথে অদভুত গন্ধ।

সকালে উঠে তুষার পৌষীকে মেরে মেজেতে রেখে গিয়েছিলো সেখানে নেই।দরজার পাসে বেঘোরে পরে।কালকের কথা আবার মনে পরতে।ওর মাথায় রক্ত চেপে বসলো।ইচ্ছে করছে।পৌষীকে উঠিয়ে আবার মারতে।মনের আসায় সায় দিয়ে।অজ্ঞ্যান মেয়েটাকে তুলে।দু গালে কসিয়ে চর মারলো।
চুল ধরে বিছানায় ছুরে ফেলে দিয়ে আবার চলে গেলো বাইরে রাগে ফুসতে ফুসতে।।
,
,
চলবে,,
পর্ব-১
“চাঁদ হয়ে রবো”
~খাদিজা বিনতে হক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here