ঝরা ফুলের বাসর পর্ব ৯+১০

#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_09&10
#Mst_Liza

পরের দিন সকালে হৃদকে হসপিটাল থেকে বাড়িতে আনা হয়।কলিং বেল বেজে ওঠার শব্দে ফুল ছুটে এসে দরজা খুলে দেখে হৃদ দাড়িয়ে আছে। হৃদকে দেখা মাত্র ফুল জড়িয়ে ধরে। আর কাঁদতে থাকে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, এই হৃদ তুমি এসেছো? আমার খুব কস্ট হচ্ছিলো হৃদ। তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিলো।

হৃদও কাঁদতে থাকে।ফুলকে জড়িয়ে ধরতে যাবে এমন সময় হৃদ সামনে তাকিয়ে নিজের মাকে দেখতে পায়।আর মায়ের ইশারায় নিজের চোখের পানি মুছে ফেলে।তারপর ফুলকে টেনে নিজের থেকে ছাড়িয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়ে কিছু না বলেই চলে যেতে লাগে।ফুল হৃদের হাতটা পিছনের থেকে টেনে ধরে।

আমাকে কাঁদাতে তোমার ভালো লাগছে হৃদ? হৃদকে টেনে আবার খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে ফুল, আমার খুব কস্ট হচ্ছে হৃদ।এতোটা কস্ট আমাকে আর দিও না। আমার তখনও এতো কস্ট লাগেনি যখন তোমার আমাকে মনে ছিলো না।কিন্তু এখন তুমি জেনে বুঝে কেন এতো কস্ট দিচ্ছো আমায়? আমি আর পারছি না হৃদ।তোমার এই অবহেলা সইতে পারছি না।প্লিজ, আমায় একটু ভালোবাসা দাও।সেই আগের মতোন।

হৃদ এবার আর পারে না ফুলকে দূরে ঠেলে দিতে। হৃদ দুই হাত দিয়ে ফুলকে খুব শক্ত করে ঝাপটে ধরে নিজের বুকে। তারপর শব্দ করে কেঁদে ওঠে।ফুলও কাঁদে। দু’জনই কাঁদতে থাকে।এমন সময় হৃদের মা এসে ফুলকে টেনে হৃদের থেকে আলাদা করে দেয়। ফুলের মাথায় হাত রেখে কেঁদে উঠে বলে, হৃদকে তুই ভুলে যা মা।এতে তোরই ভালো হবে।আমি তোর আবার বিয়ে দেবো।তুই মা হতে পারবি।

মায়ের মুখে এমন কথা শুনে হৃদ সেখান থেকে ছুটে চলে যায় নিজের রুমে।দরজাটা বন্ধ করে দরজার সাথে হেলান দিয়ে বসে কাঁদতে থাকে।আর ফুল রেগে গিয়ে তার খালাম্মার হাতটা নিজের মাথার উপর থেকে সরিয়ে নেয়।তারপর খালাম্মাকে ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞাসা করে, কেমন মা তুমি যে নিজের সন্তানের কস্ট দেখতে পাচ্ছো না? হৃদতো তোমারই সন্তান খালাম্মা তাহলে কেন বুঝছো না ওর কস্টটা? আর আমি? ওকে ছাড়া আমি সম্পূর্ণ নিঃস্ব।স্বামী হয় তোমার ছেলে আমার।তুমি চাইলেও তোমার ছেলের থেকে আমাকে দূরে সরাতে পারবে না।আর যদি চেস্টাও করো তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে।কথাগুলো বলে ফুল চলে যায় সেখান থেকে।

হৃদের রুমের দরজার কাছে এসে হৃদকে ফুল ডাকে।ফুল চিৎকার করে করে দরজা টাকাতে থাকে।আর বলতে থাকে, একটা বার আমাকে বোঝানোর সুযোগ দাও হৃদ।আমার কথাটা শুনো।হৃদ তুমি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছো? হৃদকে ডাকতে ডাকতে ফুলের গলা শুকিয়ে যায়।ফুল ক্লান্ত হয়ে বসে পরে দরজার কাছে।দরজার সাথে হেলান দিয়ে বসে পরে কাঁদতে থাকে। আর ওপাশ থেকে হৃদও কাঁদে।দুজনের মাঝে যদি দরজাটা না থাকতো তাহলে একজন আরেক জনের পিঠে পিঠ মিশিয়ে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়তো।

জানো হৃদ, তোমার এক্সিডেন্টের পর থেকে আমি কিচ্ছু খাই নি।তোমার স্মৃতি ফিরে আসার পর খালাম্মা যেভাবে আমাকে নিয়ে আসলো আমার মন সারাক্ষণ তোমার কাছে পরেছিলো। আমি ভেবেছিলাম তুমি এসে আমাকে না খাইয়ে দিলে খাবো না।

ফুল এটুকু কথা বলতেই দরজার ওপাশ থেকে শক্ত গলায় হৃদ বলে ওঠে, খেয়ে নে ফুল।এভাবে না খেয়ে থাকলে তুই অসুস্থ হয়ে পরবি।

তাহলে দরজাটা খোলো।আমাকে তোমার কাছে আসতে দাও।নিজের হাতে খাইয়ে দাও আমাকে।নইলে আমি না খেয়ে খেয়ে মরে যাবো।চলে যাবো নূরের মতোই অনেক দূরে।তখন তুমি চাইলেও বলতে পারবে না তোমার জীবন থেকে সরে যেতে।

সাথে সাথেই হৃদ দরজাটা খুলে দেয়। ফুল উঠে দাড়ায়। হৃদের বুকে ঝাপিয়ে পরে কাঁদে। হৃদ ফুলকে ছাড়িয়ে ফুলের গালটা আকড়ে ধরে কেঁদে ওঠে।আর বলে, এমন কথা কেন বলিস?

ঠিকই বলি।তুমি যদি আমার কাছে না আসো।আমাকে পাত্তা না দাও।আর খালাম্মা যদি আমার আবার বিয়ে দিতে চাই তাহলে আমি কি করবো নিজেও জানি না।অন্য কারও হওয়ার আগেই হয় নিজেকে শেষ করে দেবো নইতো সারা জীবনের জন্য এমন কোথাও চলে যাবো যেখানে গেলে তোমরা কেউ আমাকে খুঁজে পাবে না।

এসব বলিস না ফুল।সবাইতো তোর ভালোর জন্য বলছে।তুই আমার সাথে থাকলে কখনো মা ডাক শুনতে পাবি না।জীবনের এই দীর্ঘ সময় তুই কি পারবি মা না হয়ে কাটিয়ে দিতে?

ফুল হৃদকে বলে, কেন পারবো না আমি? হৃদের হাত ধরে এনে ফুল বিছানায় গিয়ে বসায়। তারপর হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরে হৃদের চোখে চোখ রেখে বলে, সন্তান না হলে একটা মেয়ের জীবন কি থেমে থাকে হৃদ? আল্লাহ তা‘আলা যা ছিনিয়ে নেন, তার চেয়ে উত্তম কিছু বান্দাকে দান করেন।
দুনিয়া পরীক্ষার স্থান। কেউই এখানে পরীক্ষা দেয়া ছাড়া থাকতে পারে না।

ফুল বলছে আর হৃদ শুনছে।ফুল দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে, জানো হৃদ হযরত আয়েশা রা. কোনও সন্তান ছিল না।তিনি সন্তানসম্ভবা হয়েছিলো, এমন কোনও তথ্যও হাদীসে নেই। নবীজির ঘরে খাদীজা রা. এর ছয়টা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিলো। চার কন্যা, দুই ছেলে। এটা দেখে আয়েশা রা. এর মনেও আশা জাগাটা বিচিত্র কিছু ছিল না, আমারও সন্তান হোক! কিন্তু তিনি সন্তানের জন্যে দু‘আ করেছেন বা নবীজির কাছে দু‘আ চেয়েছেন এমন কোনও কিছু নজীর হাদীসে নেই। অথচ তিনি ছিলেন নবীজির প্রিয়তমা স্ত্রী। সন্তান চাওয়া অন্যায় কোনও কিছু নয়। নবীজিকে বললেই হত।তিনি আল্লাহর কাছে দু‘আ করতেন।আর অবশ্যই সন্তান পেতেন।কিন্তু আয়েশা রা. এমনটা করেন নি। নবীজি যখন ইন্তেকাল করেন, তখন তার বয়স ছিলো আঠার।তিনি ইন্তেকাল করেছেন ৫৮ হিজরীতে।তার মানে বুঝতে পারছো তুমি? নবীজির পরও তিনি প্রায় ৪৭ বছর বেঁচে ছিলেন।তিনি এই দীর্ঘ সময় স্বামী, সন্তান, সংসার ছাড়াই কাটিয়ে দিয়েছেন।কখনো সন্তান বা সংসারের জন্যে আক্ষেপ করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। তিনি ইলমচর্চা, ইবাদত-বন্দেগী,
শিক্ষকতা-ফতোয়া প্রদান করেই পুরো সময়টা কাটিয়ে দিয়েছেন। বড় বড় সাহাবী তার কাছ
থেকে পাঠ নিয়েছেন। মদীনার সমস্ত মহিলাকুলের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি।আয়েশা রা. বিষয়টা ভালভাবে জানতেন এবং কর্মের মাধ্যমে তা মেনে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন।আল্লাহর ফয়সালার প্রতি সন্তুষ্ট থেকেছেন। সবর-শোকরের সাথে জীবন কাটিয়ে গেছেন। কুরআন কারীমকে সাথী বানিয়েছেন, হাদীসচর্চাকে জীবনের অনুষঙ্গ বানিয়েছেন।হ্যাঁ, আমি তার মতোন হতে পারবো না।তার সাথে আমার কোনো তুলনা হয় না।তবে তোমার এই সময়ে আমি তোমার পাশে থাকবো না সেটা কিভাবে ভাবলে? আমার কথা শোনো হৃদ যেটা হচ্ছে সেটা মেনে নাও।আর আমি তো তোমারই স্ত্রী। আমার আপন বলতে তুমি খালাম্মা, খালু ছাড়া আর কে আছে বলো? আমার সুখ তোমাদের মাঝে।আমাকে একটু জায়গা দাও না তোমারা! তোমার স্ত্রী হিসেবে মেনে নাও না আমাকে! হয়তো স্বয়ং আল্লাহরও এটাই ইচ্ছে।

হৃদ কিচ্ছু বলে না।এতোক্ষণ শুধু ফুলের কথা শুনেছে।ফুল হৃদকে নাড়িয়ে বলে, এই হৃদ কিছু বলছো না কেন?

হৃদ কেঁদে উঠে ফুলের কপালের সাথে নিজের কপালটা ঠেকায়।আর কান্না জড়িত স্বরে বলে, তুই কি সত্যি আমাকে এতোটা ভালোবাসিস ফুল?

হুমম।তোমার থেকেও বেশি।

হৃদ সঙ্গে সঙ্গে ফুলকে নিজের বুকে টেনে নেয়। ফুলকে বুকের সাথে ঝাপটে ধরে বলে, আমার সেই পাঁচ বছর আগের পিচ্চি ফুলঝুরিটা এখন কত্ত বড় হয়ে গেছে।

হৃদের কথায় ফুলের চোখে পানি চলে আসে।ফুল আবার কেঁদে ওঠে।তবে এটা খুশির কান্না।

এমন সময় হৃদের মা এসে পিছনের থেকে চিৎকার দিয়ে হৃদের নাম ধরে ডাকে।হৃদ কেঁপে উঠে ফুলকে ছেড়ে দিতেই হৃদের মা এসে ফুলকে টেনে হিচরে হৃদের রুম থেকে নিয়ে যেতে লাগে।ফুল তার খালাম্মার কাছে অনেক মিনতি করে।খালাম্মা পায়ে পর্যন্ত ধরে। কিন্তু সে শোনে না।ফুলকে টানটেই থাকে।ফুল কাঁদে, চিৎকার করে, হৃদ আমাকে যদি খালাম্মা এখন তোমার রুম থেকে নিয়ে যায় তাহলে তুমি আমার মরা মুখ দেখবে।চলে যাবো আমি নূরের মতোন তোমাদের সবাইকে ছেড়ে।

কথাটা শুনেই হৃদের ভেতরটা নাড়া দিয়ে ওঠে।হৃদ পিছনের থেকে গিয়ে তার মায়ের হাতটা ধরে বসে।আর গম্ভীর গলায় বলে, ফুলকে ছাড়ও মা।

একবার বললে ছাড়ে না।তাই পরেরবার চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে হৃদ, ছাড়ও আমার ফুলকে তুমি মা! হৃদ তার মায়ের হাতের মুঠোর থেকে ফুলের হাত ছাড়িয়ে ফুলকে জড়িয়ে ধরে মাকে বলে, কোথাও যাবে না ফুল।ও আমার স্ত্রী।আর নিজের অধিকারে আমার সাথে থাকবে।

হৃদের মা কিছু বলতে যাবে হৃদ হাত উঁচু করে থামিয়ে দিয়ে, খুব ভাবো না তুমি ফুলকে নিয়ে? আজ দুইদিন ফুল না খেয়ে আছে সেটা কি জানো? এতো ভালোবাসো তুমি ফুলকে অথচ ওকে একটু জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজনও মনে করো নি খাচ্ছে কিনা? কেন মা কেন?

হৃদের মা চুপ করে আছে।

ফুল হৃদকে বলে, খালাম্মাকে এসব বলছো কেন হৃদ?

তুই চুপ থাক ফুল।আমাকে বলতে দে আজ! হৃদ আবার বলে, তুমি যদি ফুলকে আমার থেকে আলাদা করতে চাও তাহলে আমি চলে যাবো ফুলকে নিয়ে এবাড়ি ছেড়ে।কথাটা বলে হৃদ ফুলকে রুম থেকে টেনে নিজের সাথে নিয়ে যায়। আর হৃদের মা হৃদের এমন আচারণে কাঁদতে থাকে। ভাবে, সত্যিই তো হৃদের চিন্তায় আমি ফুলের দিকে নজর দিই নি।ও খেয়েছে কিনা তারও খবর নিই নি।

ওদিকে হৃদ ফুলকে টেনে খাবার টেবিলে নিয়ে বসায়।

চলবে,,,,,

ভালোবাসার পরীক্ষা ফুলের দেওয়া শেষ।ফুলের কি আরও পরীক্ষা নেবো নাকি এটুকুই যথেষ্ট? সকলে জানাবেন কিন্তু😊
তারপর হৃদের পরীক্ষা শুরু হবে।হৃদের ভালোবাসা আর বিশ্বাস ফুলের উপর কতটুকু সেটা এবার দেখার পালা।🙂
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_10
#Mst_Liza

হৃদ নিজের হাতে ফুলকে খাইয়ে দেয়।তারপর নিজের রুমে এসে শুয়ে পরে।হৃদ শুয়ে আছে কিন্তু ঘুম আসছে না।হঠাৎ শব্দ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে ফুল আলমারি খুলে কিছু একটা করছে।

ফুল এসে হৃদের পাশে বসে বলে, আমার সব জামা-কাপড় তোমার আলমারিতে এনে গুছিয়ে রাখলাম।আজ থেকে আমি তোমার সাথে এই রুমে থাকবো। ফুল কথাটা বলতেই হৃদ একটানে ফুলকে বিছানায় নিয়ে আসে।তারপর ফুলের শরীরের উপর নিজের সবটুকু ভার ছেড়ে দিয়ে
ফুলের হাতদুটো শক্ত করে বিছানার সাথে চেপে ধরে বলে, আমার রুমে কেন থাকবি?

ছাড়ও বলছি হৃদ! ছাড়ও না! ফুল মোড়ামুড়ি শুরু করে দেয় যা দেখে হৃদ হেসে ওঠে।

হাসতে হাসতে বলে, কেন ছাড়বো বউ না তুই আমার?

কথাটা শুনে ফুল খুব লজ্জা পেয়ে যায়। তাই দেখে হৃদ ফুলকে বলে, আমি কি আমার ময়নাটাকে একটু আদর করতে পারি?

ফুল লাজুক মুখে জোড়ে একটা শ্বাস নিয়ে বলে, তোমার ইচ্ছা।

ফুলের মুখে কথাটা শুনে হৃদ খুব খুশি হয়ে যায়।ফুলের গালে আর ঠোঁটে নিজের ঠোঁটের উষ্ণ পরস ছুঁইয়ে দিয়ে একটু নিচু হয়ে ফুলে বুকের কাছে এসে জামাটা সামনে থেকে টেনে ধরে।তারপর ফুলের বুকের উপরের তিলটাতে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

হৃদের এমন শিহরন জাগানো স্পর্শ ফুলকে মাতাল করে দিচ্ছে।কেঁপে ওঠা ছাড়া আর কিচ্ছু করতে পারছে না ফুল।হৃদ নিজের পা দুটো দিয়ে ফুলের পা দুটো আবদ্ধ করে রেখেছে।হাত দুটোও নিজের হাত দিয়ে চেপে রেখেছে। ফুলের বুকের তিলটাতে হৃদ গভীরভাবে ঠোঁটের আলতো পরস ছুঁইয়ে দিয়ে চলেছে। হঠাৎ করেই হৃদ ফুলের বুকের উপরের তিলতাতে একটা জোড়ে কামড় বসিয়ে দেয়। আর ফুল ব্যাথা পেয়ে চিৎকার দিতে যাবে সঙ্গে সঙ্গে হৃদ ফুলের মুখটা চেপে ধরে বলে, উসসসস! চুপপপপ! আদর করছি না আমি? চিৎকার করে সবাইকে শোনাবি নাকি?

ফুল কিছু না বলতে পেরে নাক ফুলিয়ে কেঁদে ওঠে।আর তাই দেখে হৃদ ফুলকে ছেড়ে দিয়ে ফুলের শরীরের উপর থেকে উঠে আসে।
ফুল উঠে বসে হৃদকে টেনে ধরে বলে, তুমি একটা রাক্ষস! দানব! এভাবে কেউ কাউকে কামড় দেয়?

জামার গলাটা নিচের দিকে টেনে ধরে হৃদকে দেখিয়ে বলে, দেখও কি করেছো।দাঁত বসিয়ে দিয়েছো তোমার।

তাই নাকি? ব্যাথা লেগেছে? তাহলে এখন কি করবো? মলম লাগিয়ে দেবো?

মজা করো না হৃদ।এইভাবে কেউ কাউকে কামড়াই আগে তাই বলো?

হৃদ ফুলের গালটা টেনে বলে, আমি কামড়ায়।আরও কামড়াবো।কামড়ে খেয়ে ফেলবো তোকে।

হৃদের কথা শুনে ফুল রেগে মেগে বলে, চলে যাবো আমি।এখানে আসায় আমার ভুল হইছে।আমি আমার সব জিনিসপত্র গুছিয়ে আবার চললাম আমার রুমে।

ফুল চলে যেতে লাগলে হৃদ ফুলকে টেনে নিজের কোলের উপরে নিয়ে আসে।তারপর ফুলের ঘাঢ়ে নিজের থুথনিটা রেখে বলে, আচ্ছা আর কামড়াবো না।এবার খুশি?এখান চুপচাপ আমাকে আদর করতে দেতো।আর তুইও..

হৃদকে পুরো কথা বলতে না দিয়ে রেগে ফুল ঘুরে হৃদের ঠোঁটে একটা কামড় বসিয়ে দেয় আর বলে, শোধবোধ!

হৃদ টেনে ফুলকে শুইয়ে দিয়ে ফুলের ঠোঁটের কাছে নিজের ঠোঁটটা নিয়ে আসে।তারপর ঠোঁটে আঙুল রেখে অসহায়ের মতে দৃষ্টিতে ফুলের দিকে তাকিয়ে ফুলকে দেখিয়ে বলে, ব্যাথা লাগলো তো।

ফুল খপ করে হৃদের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।দুই তিনটা বাইট নিয়ে হৃদের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে নিজের মাথাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে হৃদকে বলে, আমার উপর থেকে ওঠো হৃদ।

নাহ! ফুলের গলায় নিজের নাকটা ঠেসে ফুলের জামাটা দাঁত দিয়ে কামড়ে টেনে ধরে বলে হৃদ, জামাটা খোল ফুল।

খুলবো না।বলে হৃদকে ঠেলে উঠে যাওয়ার চেস্টা করে ফুল।

কি হচ্ছে কি ফুল? এমন করলে কিন্তু জোড় করে আদর করবো।

তাতো করবাই! যদি এমন করো তাহলে বুঝবো তুমি একটা লুচ্চা।

কি বললি তুই?

ঠিকই বলেছি।আমাকে এখনো গিফট দাও নি।শুনেছি বাসর করার আগে বউকে স্বামীরা গিফট দেয়, তুমি কি দিয়েছো আমাকে?

কি লাগবে তোর?

বেশি কিছু না।ওই যে থুম্বু বুড়ির আম বাগান আছে না? ওখান থেকে আম পেরে এনে খাওয়াবা।পারবা বলো? নইলে সরো!

তার মানে আমাকে তুই আম চুরি করতে বলছিস?

হুমমমম।এ তোমার জন্য কি এমন কঠিন ব্যাপার? এটাতো তোমার পুরাতন অভ্যাস।ভুলে গেলে হৃদ? কত্ত চুরি করেছো তুমি বুড়ির বাগানের আম।

কিন্তু এখন আর পারবো না।তখনের মতোন এখন আর অভিজ্ঞতা নেয়।

আনবে না তাই বলছো তো? আমার জন্য তুমি এটুকুও করতে পারবে না? ঠিক আছে।ছাড়ও আমায়! ছাড়ও!

এই ফুল শোন নাহ?

কিচ্ছু শুনবো না আমি।আমি বলেছি মানে খাবোই।ওই বুড়ির বাগানের নাদুস নুদুস আম আমার চায়।আর সেটা এখনই।

এখনই? এই দিনের বেলা চুরি? মাথা ঠিক আছে তোর? ধরা পরে গেলে কি হবে বুঝতে পারছিস?

কি আর হবে? দুই একটা বুড়ির হাতের লাঠির বাঢ়ি খেয়ে আসবা।আমার জন্য এটুকু করতে পারবে না হৃদ? কি হলো চুপ করে আছো কেন? এই তুমি আনবে কিনা বলো তো? না আনলে আমায় যেতে দাও। ছাড়ও!

মহা মুশকিল তো! আচ্ছা দেখছি কি করা যায়!

দেখছি বললে হবে না করে দেখাতে হবে।

হ্যাঁ, যাচ্ছি।বলে হৃদ ফুলের উপর থেকে উঠে আসে।ফুল হৃদের পিঠে কিল দিয়ে হৃদকে ঠেলে বলে,

যাও।এখনো বসে আছো কেন তুমি? আরে যাও না?

হৃদ উঠে বিছানা থেকে নামলে ফুল বলে ওঠে, যাওয়ার সময় খালুর একটা লুঙ্গি পরে যেও।আগেরবার মনে আছে গাছ থেকে লাফ দেওয়ার সময় গাছে বেঁধে তোমার প্যান্ট ছিড়ে গিয়েছিলো?

তুই থামবি! যাচ্ছি তো।

হৃদ রুম থেকে বেড়িয়ে যায় কিছুক্ষণ পর বাবার একটা লুঙ্গি পরে ফুলের সামনে এসে বলে, কেমন লাগছে আমাকে?

দারুন।একদম চোর চোর! মুখে একটু কালি মেখে যেতে পরো কেউ চিনতে পারবে না!

তবেরে!

হৃদ ফুলকে ধরতে যায় আর ফুল দৌড়ায়।রুমের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে দু’জনে।অনেক্ষণ পর দু’জনই ক্লান্ত হয়ে যায়।ফুল এসে বিছানার উপরে বসে পরলে হৃদ ফুলকে ধরে ফেলে।

এবার কোথায় পালাবি? ফুলকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হৃদ ফুলের জামার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়।

কি করছো কি হৃদ ছাড়ও! ভালো হচ্ছে না কিন্তু! ছাড়ও বলছি!

হৃদ ফুলকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাড়ায়। হৃদের উঠে দাড়ানোর পর পরই ফুল উঠে দাড়ায়।ফুল একটা জোড়ে নিঃশ্বাস ছেড়ে চলে যেতে লাগে হৃদ টেনে ফুলকে ঘুরিয়ে ফুলের পিঠ নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।ফুলের জামার চেইনটা পেছনের চুল সরিয়ে খুলে ফেলে ফুলের পিঠে নিজের ঠোঁটের পরস এঁকে দেয়।ফুল কেঁপে উঠে ঘুরে হৃদকে জড়িয়ে ধরতেই ফুলকে সামনে এনে ফুলের জামাটা টেনে অধ্যেক খুলে ফেলে হৃদ।তারপর ফুলের দিকে তাকাতেই দেখে লজ্জায় ফুল আর চোখ তুলে চাইতে পারছে না।ফুল হৃদের বুকের সাথে মিশে গিয়ে নিজের মুখ লুকায়।হৃদ ফুলকে টেনে সামনে আনতেই ফুল আবার হৃদকে জড়িয়ে ধরে।

আহা এভাবে বারবার জড়িয়ে ধরছিস কেন?

ফুল চোখদুটো শক্ত করে বন্ধ করে হৃদকে ছেড়ে দিয়ে দাড়ায়।তারপর হৃদের লুঙ্গিটা টেনে খুলে ফেলে। চোখ খুলে হৃদের দিকে তাকিয়ে বলে, কি? লাগছে লজ্জা?

হৃদ এগিয়ে এসে ফুলের পায়ের উপরে নিজের পা রেখে ফুলের মুখটা উঁচু করে চুলের ভাজে হাত ডুবিয়ে ফুলের নাকে নিজের নাক লাগিয়ে বলে, নাহ! বউয়ের কাছে কিসের লজ্জা?

ফুলকে উঠিয়ে হৃদ বিছানায় শুইয়ে দিয়ে কম্বলটা দুজনের গায়ে টেনে নেয়। তারপর নিজের শরীরের সবটুকু ভার ফুলের উপর ছেড়ে দিয়ে ফুলের হাতের আঙুলে নিজের আঙুল চেপে ফুলের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।

কিছুক্ষণ পর,,,
ফুল কম্বলের মধ্যে থেকে নিজের মুখটা বেড়িয়ে আড়মোরা দিয়ে চোখ মেলে চেয়ে দেখে রুমের কোথাও হৃদ নেয়।
কম্বলটা গালা পর্যন্ত টেনে উঠে বসে হৃদকে খোঁজে ফুল। এমন সময় রুমের দরজা খুলে হৃদ অনেকগুলো আম নিয়ে এসে ফুলের সামনে রেখে বলে, এই যে তোর আম।বাবাহ কত যে কস্ট করলাম।বুড়ি তিনবার দেখতে গিয়েও দেখে নি।

ফুল ঘুম ঘুম চোখ ডলতে ডলতে হাই তুলে বলে, কখন গেলে?

যখন তুই ঘুমোচ্ছিলি।

ওহহ এখানে রেখে দাও।আমি পরে উঠে খেয়ে নেবো।কথাটা বলে কম্বল টেনে মুখ ঢেকে ফুল আবার ঘুমিয়ে পরে।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here