ঝরা ফুলের বাসর পর্ব ১৭+১৮+শেষ

#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_17&18
#Mst_Liza

ফুলের পেটে মুখ ডুবিয়ে শুয়ে আছে হৃদ।আর ফুল হৃদের চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।

আচ্ছা হৃদ সারাটা সকাল কোথায় ছিলে তুমি?

নূরের কাছে।

ওহহ একবার বলে যেতে পারতে।বাড়ি ভর্তি মেহমান তোমাকে খুঁজছিলো।বলছিলো মেয়ের মুখে ভাত অনুষ্ঠানে বাবা নেই কেন? অনেকে অনেক কথা শুনাচ্ছিলো।ওরা তো জানে না আমার হৃদ তার সন্তানকে কতোটা ভালোবাসে।কতো যত্ন নেই।তাই ওরা উলট পালট কথা বলছিলো।এসব শুনতে কি আমার ভালো লাগে বলো?

তুই কিছু বলিস নি?

হ্যাঁ, বলেছি তো।আমার হৃদকে নিয়ে কেউ কিছু বলবে আর আমি চুপ করে থাকবো সেটা কি হয়?

আচ্ছা, নূরের বাড়ি থেকে কেউ আসে নি?

এমন সময় নূরের মা আর নাহিদ এসে উপস্থিত হয়। বাড়িতে ঢুকেই নূরের মা চিৎকার করে হৃদ আর ফুলকে ডাকতে থাকে। তার চিৎকার শুনে ফুল আর হৃদ শোয়া ছেড়ে উঠে বসে।

হৃদ বলে, এটা তো নূরের মায়ের গলা।

হ্যাঁ, দেখেছো হৃদ উনিও এসেছে।আমাদের দোয়া করতে।

হৃদ নিরব। হৃদের যেন বিশ্বাস হচ্ছে না যে তার শ্বাশুড়ি মা এসেছে।হৃদকে চুপ থাকতে দেখে ফুল হৃদকে ঝাকিয়ে বলে,
কি হলো হৃদ ওভাবে চুপ হয়ে রয়েছো কেন?

আচ্ছা মা কি সত্যিই এসেছে?

মজা করছো তুমি? কন্ঠ শুনে বুঝছো না? ওঠো! এবার চলো তো নিচে।বাড়ি ভর্তি মেহমান আর তুমি আমাকে রুমে এনে শুইয়ে রেখেছো।

নূরের মায়ের চিৎকার যেন বেড়েই চলেছে।হৃদ আর ফুল বিছানা থেকে উঠে নিচে আসছে।আর হৃদের মনে সন্দেহ হচ্ছে। ভাবছে তার শ্বাশুড়ি মা সত্যি যদি এখানে তাদের দোয়া করতে আসে তাহলে এভাবে চিৎকার কেন করবে?

সিঁড়ি থেকে হৃদ আর ফুল একসাথে নিচে নামে।ফুল এগিয়ে গিয়ে হাসি মুখে নূরের মায়ের সামনে দাড়ায়। তারপর নূরের মায়ের হাতটা ধরে বলে, আমি জানতাম আন্টি আপনি আমাদের উপরে বেশি দিন রাগ করে থাকতে পারবেন না।কথাটা বলে ফুল নিচু হয়ে নূরের মায়ের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে যায় আর নূরের মা ফুলের চুলের মুঠি ধরে টেনে উঠিয়ে দাড় করায়।

বাড়ি ভর্তি মেহমান নূরের মায়ের কান্ড দেখছে।ফুল বুঝতে পারছে না এমন কেন করছে আন্টি? ফুল নিজের চুল ছাড়াবার চেস্টা করে আর নূরের মা ফুলকে জোড়ে একটা ধাক্কা দেয়।হৃদ এগিয়ে এসে ফুল পরে যাবার আগেই ধরে বসে।

হৃদ ফুলকে বুকে জড়িয়ে ধরে।তারপর ফুলের গালটা আকড়ে ধরে বলে,
তোর লাগে নি তো ফুল?

ফুল ছলছল চোখে হৃদের দিকে তাকিয়ে বলে, না।

হৃদ ফুলকে নিজের পিছনে সরিয়ে দিয়ে তার শ্বাশুড়ি মায়ের সামনে দাড়ায় আর জানতে চাই,
ফুলের সাথে এমন করলেন কেন মা?

নূরের মা খুব জোড়ে হেসে ওঠে।হাসতে হাসতে তার দু’চোখের অশ্রু বেড়িয়ে পরছে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে তার কান্ড দেখছে।সে বলে,
আমার মেয়েটাকে খেয়ে তোমার হয় নি হৃদ?মেরে ফেলেছো আমার মেয়েটাকে।আর এই মেয়েটা একটা নোংরা আর নস্টা মেয়ে।এর জন্যই তুমি আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলেছো তাই না? জানো হৃদ? আজও আমার রাতে ঘুম হয় না।রাতে চোখ বুজলেই মেয়েটার মরা মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।আমার মেয়ে তো কোনো ভুল করে নি।তাহলে ওর সাথে এমন কেন হলো?

হৃদের চোখেও পানি চলে আসে।হৃদ তার শ্বাশুড়ি মাকে শান্তনা দিতে বলে, আপনার অবস্থা আমি বুঝতে পারছি মা।আমিও নূরকে ভালোবাসি।আজও খুব মিস করি আমার নূরকে।কিন্তু মা আপনার যদি মনে হয় নূরের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী তাহলে আমাকে শাস্তি দিন আপনি। তবুও আমার ফুলকে এতোগুলা মানুষের সামনে নোংরা আর নস্টা মেয়ে বলে অপমান করবেন না।ও আমার স্ত্রী।ফুলের মতোন পবিত্র।নূর আমার জীবনে আসার অনেক আগেই ওকে আমি বিয়ে করেছি।

তাই নাকি? ফুলের মতোন পবিত্র? একটা তাচ্ছিল্যময় হাসি দিয়ে কথাটা বলে নূরের মা।

নাহিদ পিছনের থেকে হাত তালি বাজাতে বাজাতে বাড়ির ভেতরে ঢুকে আসে।এতোক্ষণ নাহিদ দরজার কাছেই দাড়িয়ে ছিলো।মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা করছিলো।এখন এসেছে মোক্ষম সময়।

নাহিদ এগিয়ে কাছে এসেই হাসতে থাকে। হাসতে হাসতে এবার কান্নার শব্দ শুরু করে দেয়।মাআআআ;
বলে মায়ের বুকে মাথা রাখে এবার ভ্যায়াআআ ভ্যায়াআআ করে কাঁদতে থাকে।

মা তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, কাঁদিস না বাবা।আমি আছি তো।আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি।তুই ছাড়া আর কে আছে আমার? তোকে এভাবে কস্ট পেতে দেবে না তোর মা। একটু ভরসা রাখ আমার উপর।

নাহিদ আর নাহিদের মায়ের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে।কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।এমন সময় হৃদ আর ফুলের মেয়ে মায়া কেঁদে ওঠে তার দাদির কোলে থেকে।নাহিদ তার মাকে ইশারায় মায়াকে দেখিয়ে কান্নার বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়।আর বলে, ওর কান্না আমি শুনতে পারছি না মা।আমার বড়ই কস্ট হচ্ছে।ভেতরটা ভেঙে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।

নাহিদের কথা শুনে পাশ থেকে একজন মহিলা বলে ওঠে, আচ্ছা নাহিদের মা তোমার ছেলেটার মাথায় কি কোনো সমস্যা হয়েছে? মানে পাগল…

নূরের মা সঙ্গে সঙ্গে তাকে দেয় এক ধমক।মহিলাটি চুপ হয়ে যায়। তারপর বলে, পাগল হয় নি।তবে এরা আমার ছেলেটাকে পাগল বানানোর চেস্টা করছে।মেয়েটাকে তো মেরেই ফেলেছে।এখন আছে ছেলে।তাকেও আমার বুক থেকে কেড়ে নিতে চায়।

হৃদের মা এগিয়ে এসে ফুলের কোলে মায়াকে দিয়ে বলে,
আপনার কথার কোনো মানে বুঝলাম না বিয়ান।

মানে বুঝেন নি তাই না? নূরের মা এগিয়ে এসে ফুলের কোল থেকে ছো মেরে মায়াকে নিজের কোলে কেড়ে নেয়।তারপর মায়ার গালে মুখে অনেক গুলো চুমু দিয়ে বলে,
তোকে আমি নিয়ে যাবো দাদুভাই। তুই যাবি না তোর দাদির সাথে? বল যাবি না?

চলবে,,,,,
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_18(Last)
#Mst_Liza

নূরের মা চিৎকার দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে বলে, আপনারা সকলে শুনুন এই বাচ্চাটা আমার নাহিদের।

তার কথা শুনে সকলেই স্তব্ধ।।

সে আবার বলতে শুরু করে, আমার দাদু ভাই এ।হৃদ কখনো বাবা হতে পারবে না।সেদিন এক্সিডেন্টে নূর মারা যায় আর ডাক্তার বলে হৃদ বাবা হওয়ার ক্ষমতা চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেছে। হৃদের স্মৃতি তো ওই এক্সিডেন্টের পরে ফিরে এসেছে।তার আগে হৃদ আমার নূরকে ভালোবাসতো। হৃদের স্মৃতিতে শুধুই আমার নূর ছিলো।তাহলে ফুলের গর্ভের সন্তান কিভাবে হৃদের হয় আপনারাই বলুন?

সকলে কানাঘুষা শুরু করে দেয়।ফুলের তো কথাটা শুনেই মরে যেতে ইচ্ছা করছে।হৃদ কিছু বলতে যাবে ফুল হৃদের পা জড়িয়ে ধরে বসে পরে আর বলে, বিশ্বাস করো হৃদ উনি মিথ্যা বলছে।এই সন্তান তোমারই।

নাহিদ ফুলের হাতটা টেনে ধরে বলে, তাই নাকি ছলনাময়ী? প্রথমে আমাকে ভালোবাসার প্রলভন দেখিয়ে নিজের রূপ, যৌবন দিয়ে মুগ্ধ করেছিস। তারপর আমার ইজ্জতটা পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছিস। এখন বলছিস আমার সন্তানের বাবা হৃদ?

ফুল এবার খুব রেগে যায়।রাগ সহ্য করতে না পেরে নাহিদের গালে ঠাসসসস! করে একটা কষিয়ে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।

নাহিদ নিজের গালে হাত রেখে বলে, তোর এতো বড় সাহস? তুই আমাকে থাপ্পড় মারিস? পাপি, নস্টা, ছলনাময়ী তোকে ত আমি…

বলেই হাত উঁচু করে ফুলকে থাপ্পড় মারার জন্য। ফুল নিজের চোখদুটো বন্ধ করে নেয়।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করে চর অনুভব করা যাচ্ছে না।তাই চোখ খুলে দেখে নাহিদের হাতটা হৃদ খুব জোড়ে শক্ত করে মুচড়ে ধরে আছে।

নাহিদের মা এক হাতে হৃদের থেকে নাহিদের হাত ছাড়ানোর চেস্টা করছে। আর মায়া কাঁদছে।

ফুল গিয়ে মায়াকে নিজের কোলে তুলে নেয়। মায়ার গালে চুমু দিয়ে হৃদকে বলে, আজ যদি তুমি আমাকে অবিশ্বাস করো! এদের কথা বিশ্বাস করে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলো! তাহলে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে মরবো হৃদ। কথাটা বলে ফুল পা পিছাতে পিছাতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে।

হৃদ নাহিদকে ছেড়ে দিয়ে হাত উঁচু করে ফুলকে ডেকে বলে, কোথায় যাচ্ছিস ফুল?

ছাদে। মরতে যাচ্ছি আমি।

কি বলছিস কি এসব?

ঠিকই বলছি।যে যাই বলুক।কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে কিছু বলবে সেটা আমি আর মেনে নিতে পারবো না।পারবো না আমি এই অপবাদ নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে। আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই হৃদ শুধু মুখের কথা ছাড়া।একটা কথার উত্তর দাও, হ্যাঁ কি না।বলো হৃদ তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করবে? যদি না করো এক্ষুনি আমি আমার মেয়েকে নিয়ে তোমার জীবন থেকে এই সমাজ থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তি নেবো।বলো হৃদ বলো?

নাহিদ হেসে উঠে বলে, দেখেছেন আপনারা কেমন নাটক করছে? ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল।আরে বাবাহ এতোই যদি মরবার ইচ্ছা থাকে তাহলে যা’না যা গিয়ে মর।আমার সন্তানটাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস? যত্তসব ন্যাকামি।

সঙ্গে সঙ্গে হৃদ নাহিদের নাক বরাবর একটা ঘুষি মেরে দেয়। ফুলকে বলে, মায়া আমার সন্তান ফুল। হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি।আমার কাছে প্রমাণ আছে। প্লিজ নিচে নেমে আয়।

হৃদের কথাটা শুনে ফুলসহ সবাই অবাক হয়ে যায়।অনুষ্ঠানের সকলে কানাঘুষা বন্ধ করে দেয়।

ফুল কেঁদে উঠে মাথাটা হালকা উপর নিচে ঝাকিয়ে বলে, তোমার কাছে প্রমাণ আছে হৃদ? সত্যি বলছো তুমি? ফুল আবার ভেবে বলে, কিন্তু কি প্রমাণ?

হৃদ ছুটে গিয়ে সিঁড়িতে উঠে ফুলের কাছে যায়। ফুলকে জড়িয়ে ধরে ফুলের কপালে আর মায়ার মুখে চুমু দিয়ে বলে, একটু অপেক্ষা কর আমি আসছি।কথাটা বলে হৃদ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়। কিছুক্ষণ পরে হাতে করে একটা রিপোর্ট এনে ফুলের সামনে ধরে বলে, এটা দেখ ফুল।

রিপোর্টটা দেখে ফুলের দু’চোখ গড়িয়ে পানি আসতে থাকে। ফুল হৃদকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। আর বলে, তুমি এটা কবে করেছো হৃদ?

হৃদ বলে, যেদিন আমাদের মেয়ে হয়েছে সেইদিন।

তাহলে কি তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না?

করি তো।নিজের থেকেও বেশি।কিন্তু খুব ভয় করতো এইদিনটার জন্য। আমি জানতাম কোনো না কোনো দিন এমন প্রশ্নের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে।সবাই বলবে মায়া আমার সন্তান না।আমার ভালোবাসার অংশকে কেউ পাপের ফসল বলুক সেটা আমি কি কখনো মেনে নিতে পারি? তাই তোকে না বলেই ডি.এন.এ টেস্টটা করে রেখেছিলাম।আমি জানতাম এই টেস্ট টা আমি করেছি শুনলে তুই কস্ট পাবি তাই তোকে বলিনি।

নাহিদ নিচে থেকে চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে, দেখুন আপনারা এখন দুজনেই ঢং করছে।হৃদকে বলে, ওই হৃদ কিসের রিপোর্ট রে ওটা? যার জন্য ফিসফিসিয়ে তোরা দু’জনে ন্যাকামো করছিস?

হৃদ রেগে মেগে সিঁড়ি থেকে নেমে এসে, নাহিদের মুখের উপরে রিপোর্টটা ছুড়ে মেরে বলে, তুই দেখ।

নাহিদ রিপোর্টটা দেখে চুপসে যায়। আমতা আমতা করে বলে, মাআআনি না। মাআআনবো না।এই রিপোর্ট মিথ্যা।নাটক কককরিস না হৃদদ।

হৃদ এবার নাহিদের কলারটা টেনে ধরে, নাটক আমি করছি না তুই?

তারপর হৃদ ধুমছে মারতে থাকে নাহিদকে।নাহিদের মা নাহিদকে ছাড়ানোর চেস্টা করে কিন্তু পারে না।হৃদ মারতে মারতে নাহিদকে বলে, নূরের কথা ভেবে আগে আমি তোকে অনেকবার ছেড়ে দিয়েছি।কিন্তু আর না।তোর শেষ এবার আমার হাতে।

হৃদ নাহিদকে মারতেই থাকে।
এমন সময় তিয়াস আর মৌরি বাড়িতে ঢোকে।দু’জনেই একসাথে বলে ওঠে সারপ্রাইজ…

কারও কোনো সাড়া নেয়।ধুমধাম মাইরের শব্দ আসছে কানে।দু’জনে এগিয়ে গিয়ে দেখে হৃদ কাউকে মারছে। ফুল মাঝ সিঁড়িতে দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে।মৌরি ছুটে ফুলের কাছে যায়।আর তিয়াস যায় হৃদের কাছে।

মৌরি জিজ্ঞাসা করলে, ফুল সব বলে দেয়। কিন্তু তিয়াস হৃদকে কিছু বলাতে পারে না।হৃদ এতো রেগে আছে যে কারও বাঁধা মানছে না।নাহিদকে শুধু মেরে যাচ্ছে।

অবস্থা বিগতিগ দেখে মৌরি পুলিশকে ফোন দেয়।আর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে পরে।হৃদ এতোক্ষণে নাহিদকে মেরে আধ মরা বানিয়ে দিয়েছে।তাই দেখে পুলিশ এসে নাহিদের থেকে হৃদকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আসে।

হৃদ শান্ত হয়।নাহিদের মা নাহিদের এমন অবস্থা দেখে কাঁদতে থাকে।আর নাহিদ ঝিমাতে ঝিমাতে বলে, হ্যাঁ হৃদ ওই সন্তান তোর।এই ডি.এন.এ টেস্টের রিপোর্ট ভুল না।আমিই নূর আর তোর বউ ভাতের অনুষ্টানের দিন তোদের সরবতে নেশার ঔষুধ মিসিয়ে দিয়।নাহিদ সব খুলে বলে…শুধু আমিই জানতাম ফুল আর তোর মধ্যে সেদিন কি হয়েছে।নেশার ওষুধটা এমন ছিলো যে তোদের কারও সেই সব মুহূর্তের কথা মনে পরে নি।তাই আমি সুয…

নাহিদের মা এসে নাহিদের গালে চর বসিয়ে দেয়। ছিঃ নাহিদ। এমন করতে পারলি তুই? নিজের বোনের স্বামীকে অন্য একটা মেয়ের সাথে তুই.. ছিঃ নাহিদ ছিঃ

মা মারে আমি ভুল করেছি ক্ষমা করে দাও না আমাকে।

কিসের ক্ষমা? নিজের বোনের সংসারের কথা একবারও ভাবলি না তুই? আজ যদি আমার মেয়েটা বেঁচে থাকতো।আর হৃদের সাথে ফুলের কোনো সম্পর্ক না থাকতো তাহলে কি হতো তুই বুঝতে পারছিস?

হ্যাঁ মা বুঝতে পারছি।প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দাও।আমি আমার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।

কিসের ক্ষমা? তোর মতোন ছেলেকে ক্ষমা করা যায় না।অফিসার নিয়ে যান আমার ছেলেকে।

নাহিদ কাতরাতে থাকে।মায়ের হাত ধরে টানে।আর ওর মা মুখ ঘুরিয়ে নিথর ভাবে দাড়িয়ে থেকে কাঁদে।

পুলিশ নাহিদকে টেনে নিয়ে যেতে লাগে ফুল নাহিদের মাকে দেখে পুলিশকে থামিয়ে দেয়।আর বলে, নাহিদকে আরেকটা সুযোগ দিতে চাই ভালো হবার জন্য।ফুলের এই সিদ্ধান্তে হৃদ প্রথমে রেগে গেলেও পরে ফুল হৃদকে বোঝায় আন্টি নূরকে হারিয়েছে এখন যদি নাহিদের জেল হয় তাহলে আন্টির কোল শূন্য হয়ে যাবে। মা হয়ে আর কত কস্ট সইবে আন্টি?

ফুলের কথায় নাহিদের মা ফুলের উপরে খুশি হয়।সবাইকে শুনিয়ে বলে, আজ থেকে ফুল আমার মেয়ে।ফুলকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে আর ফুলও কাঁদতে কাঁদতে বলে, হ্যাঁ তুমি আমার মা।

পুলিশ চলে গেলে নাহিদ ফুল আর হৃদের কাছে ক্ষমা চায়।ওদিকে মৌরি আর তিয়াস বলে, ফ্লাইট মিস করেছি।বিদেশ যাওয়া আর হলো না।

ফুল বলে, ভালো করেছেন।ভাতিজির মুখে ভাতের অনুষ্ঠান আর আপনারা আসবেন না তা কি হয়? এখন এসেই যখন পরেছেন আনন্দ করেন।সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে, কি ঠিক বললাম না?

সবাই হো হো হো করে হেসে দিয়ে বলে, হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক।

হৃদ ফুলকে ধরে নিয়ে স্টেজে যায়। ফুল কোলের উপরে মায়াকে বসিয়ে মায়ার মুখে প্রথম ভাত তুলে দেয়।তারপর হৃদও মায়ার মুখে ভাত দেয়।তারপর ওদের জীবনে কি হলো সেটা না জানলেও চলবে।এতটুকু জানুন ওরা এখন সুখে আছে।সবাই ওদের জন্য এত্তো এত্তো দোয়া করুন।😊গল্পটা ভালো লাগলে রাইটার আপুর জন্যও দোয়া করুন।😊আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন।ভালো থাকুন।আল্লাহ হাফেজ।।।🥰🥰🥰

।।।।।।সমাপ্ত।।।।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here