ঝরা ফুলের বাসর পর্ব ১৫+১৬

#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_15&16
#Mst_Liza

ফুলকে দেখে হৃদ পুরাই স্তব্ধ হয়ে আছে।হৃদের হাত, পা আর চলছে না।ফুলের কাছে আগানোর বলটাও হৃদ হারিয়ে ফেলেছে।তিয়াস ছুটে এসে ফুলের পাশে বসে আছে।মৌরির হাতের চায়ের ট্রেটা ফুলকে দেখা মাত্র হাত থেকে নিচে পরে ভেঙে যায়।মৌরি ছুটে এসে ফুলকে নিজের কোলের উপরে বসায়।তিয়াসকে বলে এ্যাম্বুলেন্সে কল দিতে।

ফুল কাতরাতে কাতরাতে হাতের ইশারায় আবার হৃদকে ডাকে।হৃদ কাছে আসছে না দেখে হৃদকে বলে, হৃ..হিইইদ? আ..আমাহর খুউব কস..কস্ট হছ..ছে হৃইদ…….
.
কিছুক্ষণ পর,, হৃদের ধ্যান ফেরে।হৃদ সিঁড়ি ঘেষে নিচে নেমে আসে।ফুলকে মৌরির কোল থেকে নিয়ে নিজের বুকে ফুলের মাথাটা ঝাপটে ধরে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
কেউ কিছু করো।আমার ফুলকে বাঁচাও।ফুলকে ছাড়া আমি একেবারেই নিশ্ব!
ফুল নিজের রক্তাক্ত হাতটা হৃদের গালে রাখে।হৃদের মুখ ছুঁয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে হিচকি তুলে বলে, আ..আহমি ক কি আহ র বাহচবো না হৃ..হিদ? হৃদের হাতটা নিয়ে পেটে রেখে বলে, আআহমারর ক কিছু হলেএ আআমাদের সন.. সনন্তানকে…এটুকু বলেই ফুলের চোখদুটো বন্ধ হয়ে যায়।
হৃদ ভয় পেয়ে যায়। ফুলের মুখটা ধরে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। ফুলকে উঠতে বলে।
তিয়াস হৃদকে ঝাকিয়ে বলে, শান্ত হ দোস্ত। ফুল ভাবি এখনো বেঁচে আছে। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।উনাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।

এ্যাম্বুলেন্স চলে আসলে ফুলকে নিয়ে হসপিটালে যাওয়া হয়।খাটলি ঠেলে ও.টি তে নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদ ফুলের হাতটা কিছুতেই ছাড়তে চাচ্ছিলো না।হৃদ অনেক বার বলেছিলো আমিও যাবো ও.টি ‘র মধ্যে। তিয়াস হৃদকে টেনে বুঝিয়ে বাইরে রাখে।নার্স হৃদের থেকে ফুলের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

হৃদ কাঁদছে আর অপেক্ষা করছে।অনেকক্ষণ হয়ে গেছে ফুলের কোনো খবর নেই।হৃদ কেঁদেই চলেছে।
হঠাৎ ডাক্তার বেড়িয়ে আসে ও.টি থেকে।হৃদ, তিয়াস, মৌরি এগিয়ে এসে ডাক্তারের সামনে দাড়ায়।
ডাক্তার কিছু না বললে হৃদ রেগে ডাক্তারের কলার টেনে ধরে,
কথা বলছেন না কেন আপনি? বলুন আমার ফুল কেমন আছে?
তিয়াস আর মৌরি হৃদকে ছাড়িয়ে দূরে সরিয়ে এনে শান্ত হতে বলে।আর ডাক্তারকে বলে হৃদের মনের অবস্থা এখন ঠিক নেই ওর ব্যাবহারে আপনি কিছু মনে করবেন না ডাক্তার।আমাদের বলুন কি হয়েছে? খুব টেনশন হচ্ছে আমাদের?
ডাক্তার বলে, দেখুন প্রচুর ব্লাডিং হয়েছে প্রেশেন্টের।শরীরে কোনো শক্তি নেই।হসপিটালে যা রক্ত ছিলো তাই দিয়ে প্রেশেন্টকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও প্রেশেন্ট বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।এমতাবস্থায় পুশ করতে পারবে না।আর সিজার করলে মা, সন্তান দুজনের মধ্যে যে কোনো একজন বাঁচবে। তাই আপনাদের কাছে জানতে চাচ্ছিলাম দুজনের মধ্যে কাকে সেভ করবো আমরা?
হৃদ ডাক্তারের উপর এবার চরম আকারে রেগে যায়। ডাক্তারের কাছে এসে নাকের উপরে দেয় এক ঘুষি মেরে।তারপর ডাক্তারকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলে,
কি বললেন আপনি? আমার ফুল আর সন্তান দুজনকেই চায়? বুঝেছেন? যদি একজনের কোনো ক্ষতি হয়েছে তো আপনাকে আমি খুন করে ফেলবো ডাক্তার।
ডাক্তার ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়। মনে মনে ভাবে
কি বলছে এই লোকটা? আমতা আমতা করে হৃদকে বলে, দেখুন সবই তো উপর অলার ইচ্ছা। আমরা কি করতে পারি?
হৃদ দাঁত কটমট করে বলে, কিছু করতে পারেন না তাহলে আমাকে আসতে দিন।আমি জানি, আমার পাশে থাকলে আমার ফুল কিছুতেই পারবে না আমাকে ছেড়ে যেতে।

ডাক্তার ভয়ে ভয়ে হৃদকে ও.টি ‘তে আসতে দেয়। ফুলের জ্ঞান ফেরে আবার জ্ঞান হারিয়ে যায়।এবার হৃদ এসে ফুলের হাতটা ধরে।ফুল হৃদের দিকে অপলক চেয়ে থাকে। হৃদ ফুলকে বলে পুশ করতে। ফুল পারছে না তবুও হৃদের জন্য চেস্টা করছে।হঠাৎ বাচ্চার কান্নার আওয়াজ কানে আসলো।বাইরে থেকে তিয়াস আর মৌরি ভয়ে আছে তাহলে কি ফুল…???
মৌরি তিয়াসকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়। এমন সময় ডাক্তার বেড়িয়ে আসে।মৌরিকে কাঁদতে দেখে বলে,
একি আপনি কাঁদছেন কেন?
তিয়াস আর মৌরি ডাক্তারের দিকে তাকায়। ডাক্তারকে বলে, কাঁদবো না?
কেন কাঁদবেন? মা, সন্তান দুজনেই ঠিক আছে।
কথাটা শুনে তিয়াস আর মৌরি ডাক্তারের দিকে হাসি উজ্জ্বল মুখে তাকায়। দুজনেই অনেক খুশি। হৃদ বেবিটাকে নিয়ে বাইরে আসে। তিয়াস আর মৌরির এগিয়ে যেতেই তাদের দিকে ধরে বলে, মেয়ে হয়েছে।
মৌরি বেবিটাকে কোলে তুলে নেয় আর বলে, কত্ত কিউট তাই না তিয়াস?
হুমমমম।
হৃদ বলে, এই সবই আপনাদের জন্য সম্ভব হয়েছে ভাবি।আপনারা না থাকলে কিছুতেই আজ আমি আমার ফুলকে খুঁজে পেতাম না।আর ওর এতোদিন সব যত্নই তো আপনারা নিয়েছেন।

হয়েছে হয়েছে আর ধন্যবাদ দিতে হবে না।আমার বোনটা ভালো আছে এটাই অনেক।
হ্যাঁ ফুল ভালো আছে। ঘুমোচ্ছে এখন।
ডাক্তার বলে, কিছুক্ষণ পর প্রেশেন্টকে কেবিনে শিফট করে দেওয়া হবে।

চলবে,,,,,
#ঝরা_ফুলের_বাসর
#Season_02
#Part_15
#Mst_Liza

ফুলকে দেখে হৃদ পুরাই স্তব্ধ হয়ে আছে।হৃদের হাত, পা আর চলছে না।ফুলের কাছে আগানোর বলটাও হৃদ হারিয়ে ফেলেছে।তিয়াস ছুটে এসে ফুলের পাশে বসে আছে।মৌরির হাতের চায়ের ট্রেটা ফুলকে দেখা মাত্র হাত থেকে নিচে পরে ভেঙে যায়।মৌরি ছুটে এসে ফুলকে নিজের কোলের উপরে বসায়।তিয়াসকে বলে এ্যাম্বুলেন্সে কল দিতে।

ফুল কাতরাতে কাতরাতে হাতের ইশারায় আবার হৃদকে ডাকে।হৃদ কাছে আসছে না দেখে হৃদকে বলে, হৃ..হিইইদ? আ..আমাহর খুউব কস..কস্ট হছ..ছে হৃইদ…….
.
কিছুক্ষণ পর,, হৃদের ধ্যান ফেরে।হৃদ সিঁড়ি ঘেষে নিচে নেমে আসে।ফুলকে মৌরির কোল থেকে নিয়ে নিজের বুকে ফুলের মাথাটা ঝাপটে ধরে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
কেউ কিছু করো।আমার ফুলকে বাঁচাও।ফুলকে ছাড়া আমি একেবারেই নিশ্ব!
ফুল নিজের রক্তাক্ত হাতটা হৃদের গালে রাখে।হৃদের মুখ ছুঁয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে হিচকি তুলে বলে, আ..আহমি ক কি আহ র বাহচবো না হৃ..হিদ? হৃদের হাতটা নিয়ে পেটে রেখে বলে, আআহমারর ক কিছু হলেএ আআমাদের সন.. সনন্তানকে…এটুকু বলেই ফুলের চোখদুটো বন্ধ হয়ে যায়।
হৃদ ভয় পেয়ে যায়। ফুলের মুখটা ধরে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। ফুলকে উঠতে বলে।
তিয়াস হৃদকে ঝাকিয়ে বলে, শান্ত হ দোস্ত। ফুল ভাবি এখনো বেঁচে আছে। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।উনাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।

এ্যাম্বুলেন্স চলে আসলে ফুলকে নিয়ে হসপিটালে যাওয়া হয়।খাটলি ঠেলে ও.টি তে নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদ ফুলের হাতটা কিছুতেই ছাড়তে চাচ্ছিলো না।হৃদ অনেক বার বলেছিলো আমিও যাবো ও.টি ‘র মধ্যে। তিয়াস হৃদকে টেনে বুঝিয়ে বাইরে রাখে।নার্স হৃদের থেকে ফুলের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

হৃদ কাঁদছে আর অপেক্ষা করছে।অনেকক্ষণ হয়ে গেছে ফুলের কোনো খবর নেই।হৃদ কেঁদেই চলেছে।
হঠাৎ ডাক্তার বেড়িয়ে আসে ও.টি থেকে।হৃদ, তিয়াস, মৌরি এগিয়ে এসে ডাক্তারের সামনে দাড়ায়।
ডাক্তার কিছু না বললে হৃদ রেগে ডাক্তারের কলার টেনে ধরে,
কথা বলছেন না কেন আপনি? বলুন আমার ফুল কেমন আছে?
তিয়াস আর মৌরি হৃদকে ছাড়িয়ে দূরে সরিয়ে এনে শান্ত হতে বলে।আর ডাক্তারকে বলে হৃদের মনের অবস্থা এখন ঠিক নেই ওর ব্যাবহারে আপনি কিছু মনে করবেন না ডাক্তার।আমাদের বলুন কি হয়েছে? খুব টেনশন হচ্ছে আমাদের?
ডাক্তার বলে, দেখুন প্রচুর ব্লাডিং হয়েছে প্রেশেন্টের।শরীরে কোনো শক্তি নেই।হসপিটালে যা রক্ত ছিলো তাই দিয়ে প্রেশেন্টকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও প্রেশেন্ট বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।এমতাবস্থায় পুশ করতে পারবে না।আর সিজার করলে মা, সন্তান দুজনের মধ্যে যে কোনো একজন বাঁচবে। তাই আপনাদের কাছে জানতে চাচ্ছিলাম দুজনের মধ্যে কাকে সেভ করবো আমরা?
হৃদ ডাক্তারের উপর এবার চরম আকারে রেগে যায়। ডাক্তারের কাছে এসে নাকের উপরে দেয় এক ঘুষি মেরে।তারপর ডাক্তারকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলে,
কি বললেন আপনি? আমার ফুল আর সন্তান দুজনকেই চায়? বুঝেছেন? যদি একজনের কোনো ক্ষতি হয়েছে তো আপনাকে আমি খুন করে ফেলবো ডাক্তার।
ডাক্তার ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়। মনে মনে ভাবে
কি বলছে এই লোকটা? আমতা আমতা করে হৃদকে বলে, দেখুন সবই তো উপর অলার ইচ্ছা। আমরা কি করতে পারি?
হৃদ দাঁত কটমট করে বলে, কিছু করতে পারেন না তাহলে আমাকে আসতে দিন।আমি জানি, আমার পাশে থাকলে আমার ফুল কিছুতেই পারবে না আমাকে ছেড়ে যেতে।

ডাক্তার ভয়ে ভয়ে হৃদকে ও.টি ‘তে আসতে দেয়। ফুলের জ্ঞান ফেরে আবার জ্ঞান হারিয়ে যায়।এবার হৃদ এসে ফুলের হাতটা ধরে।ফুল হৃদের দিকে অপলক চেয়ে থাকে। হৃদ ফুলকে বলে পুশ করতে। ফুল পারছে না তবুও হৃদের জন্য চেস্টা করছে।হঠাৎ বাচ্চার কান্নার আওয়াজ কানে আসলো।বাইরে থেকে তিয়াস আর মৌরি ভয়ে আছে তাহলে কি ফুল…???
মৌরি তিয়াসকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়। এমন সময় ডাক্তার বেড়িয়ে আসে।মৌরিকে কাঁদতে দেখে বলে,
একি আপনি কাঁদছেন কেন?
তিয়াস আর মৌরি ডাক্তারের দিকে তাকায়। ডাক্তারকে বলে, কাঁদবো না?
কেন কাঁদবেন? মা, সন্তান দুজনেই ঠিক আছে।
কথাটা শুনে তিয়াস আর মৌরি ডাক্তারের দিকে হাসি উজ্জ্বল মুখে তাকায়। দুজনেই অনেক খুশি। হৃদ বেবিটাকে নিয়ে বাইরে আসে। তিয়াস আর মৌরির এগিয়ে যেতেই তাদের দিকে ধরে বলে, মেয়ে হয়েছে।
মৌরি বেবিটাকে কোলে তুলে নেয় আর বলে, কত্ত কিউট তাই না তিয়াস?
হুমমমম।
হৃদ বলে, এই সবই আপনাদের জন্য সম্ভব হয়েছে ভাবি।আপনারা না থাকলে কিছুতেই আজ আমি আমার ফুলকে খুঁজে পেতাম না।আর ওর এতোদিন সব যত্নই তো আপনারা নিয়েছেন।

হয়েছে হয়েছে আর ধন্যবাদ দিতে হবে না।আমার বোনটা ভালো আছে এটাই অনেক।
হ্যাঁ ফুল ভালো আছে। ঘুমোচ্ছে এখন।
ডাক্তার বলে, কিছুক্ষণ পর প্রেশেন্টকে কেবিনে শিফট করে দেওয়া হবে।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here