#চিত্তদাহ
লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা
পর্ব ৪৭
🍂🍂🍂
সন্ধ্যার সময়, বাড়ির পাশের মসজিদে কিছুক্ষণ আগেই মাগরিবের আযান দিয়েছে। শুভ্রতা টেবিলে বসে ডায়েরি লিখছে। এমন সময় ঘরে আসার অনুমতি চাইলো রেনু। শুভ্রতা কপাল কুঁচকে তাকালো। ডায়েরি লিখতে লিখতেই বললো,
~কতদিন বলেছি আমার ঘরে আসতে হলে অনুমতি চাইবে না?
রেনু ঘরে প্রবেশ করলো। কফি মগ শুভ্রতার পাশে রেখে দু কদম পিছিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। শুভ্রতা ডায়েরি এক পাশে রেখে রেনুর দিকে ঘুরে বসলো। কফিতে চুমুক দিয়ে বললো,
~কিছু বলবে?
~আপনে আহনাফ ভাই রে বিয়া করবেন না ক্যান আপামনি? ভাইজান তো খুব ভালা মানুষ।
~এমনি।
~এমনেই নাকি আপনের রোগের লাইগা?
শুভ্রতা আনমনেই হেসে উঠলো। বললো,
~জানোই তো তাহলে।
~কিন্তু ভাইজান তো আপনারে সত্যিকারে ভালোবাসে।
~আমিও বাসি। কিন্তু ভালোবাসলে যে তাকে পেতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। প্রিয় মানুষটা কিসে ভালো থাকবে তা নিশ্চিত করাই তো ভালোবাসা। আমিও তো তাই করছি।
রেনু বলার মতো আর কিছুই খুজে পেলো না। নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
_________________________________________
রাত ১ টা ৪ মিনিটে ফোন বেজে উঠলো শুভ্রতার। শুভ্রতা মাত্রই বারান্দা থেকে ঘরে ফিরেছে ঘুমানোর উদ্দেশ্যে। রিংটোন কানে আসতেই শুভ্রতার মনে হলো নুর কল করেছে। শুভ্রতা বেশ খুশি হয়ে ফোন হাতে নিতেই দেখলো নুরের মা নিতা কল করেছেন। শুভ্রতা কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ফিসফিস করে নিতা বললেন,
~কেমন আছিস মেয়ে? ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করিস?
~আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো? আর নুর? আমার ঝাড়বাতি কেমন আছে?
ওপাশ থেকে দীর্ঘশ্বাস এর আওয়াজ।
~ভালো আছে। সারাদিন মন মরা হয়ে ঘুরে। আমি বলি কি তুই একবার ওকে বুঝা। প্রতিবারের মতো চেপে ধরলে দেখবি ঠিকই রাগ শেষ।
~যে আমার মৃত্যু কামনা করে তোমার মনে হয় আমাকে দেখলে তার মন গলবে? আমিও চাই নুর ফিরে আসুক। আমার বিশ্বাস সে আমার কন্ঠ শুনলে নরম হয়ে যাবে। আমি চাই না এই বিশ্বাসটা ভুল প্রমাণ হোক। কোথাও না কোথাও তুমি, আমি দুজনেই জানি নুর আর আমার দিকে ফিরবে না। যত পর্যন্ত না…
~যত পর্যন্ত না?
~আমার মৃত্যু হয়।
~কিসব কথা বলিস তুই!
~শোনো না! যদি সত্যিই আমার মৃত্যুর পর ও আসে আমাকে দেখতে আমি চাই ও যেনো আমাকে দেখতে পারে। কেউ যেনো বাধা না দেয়। ওকে নিয়ে আসবে তো তুমি? জেনে রাখো আমি কবরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করবো আমার বাড়িতে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর আসার। কথা দাও তুমি তাকে নিয়ে আসবে…
___________________________________________
নিতার সাথে কথা শেষে কল কেটেই শুভ্রতা কতক্ষন থম মেরে বসে রইলো। এরপর মুখ চেপে কেঁদে উঠলো। কোনো কিছু না পাওয়ার থেকে বেশি কষ্টকর পেয়েও হারিয়ে ফেলা। এই কষ্ট ঘুচে দেওয়া যায় না। স্মৃতি সব সারাজীবন পিছু করে।
_______________________________________________
সকালে ঘুম ভাঙতেই নিজেকে অপরিচিত এক রুমে দেখলে ভড়কালো শুভ্রতা। অবাক চিত্তে সারা ঘরে চোখ বুলালো। সামনে চন্দ্রকে দেখতেই কিঞ্চিৎ চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠলো। চন্দ্রের সূক্ষ্ম দৃষ্টি তার ওপরই নিবদ্ধ। শুভ্রতা ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো। চন্দ্র প্রশ্ন ছুড়লো,
~ভয় পাচ্ছো?
শুভ্রতা হ্যাসুচকে মাথা ঝাকাতে নিয়েও দ্রুত না তে মাথা নাড়ালো। আমতা আমতা করে বলল,
~ভয় পাবো কেনো? আপনি কি বাঘ না ভাল্লুক?
চন্দ্র ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। হুট করে এক ধমক দিয়ে বললো,
~এভাবে বসে আছো কেনো? যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো!
চন্দ্রের আকস্মিক ধমকে কেঁপে উঠলো শুভ্রতা। কোনোমতে ছুট লাগালো ওয়াশরুমের দিকে। ওয়াশরুমে এসেও সে কিছুটা অবাক হলো। সেখানে শুভ্রতার প্রয়োজনীয় সব কিছুই রাখা। শুভ্রতা খুশি হয়ে ওয়াশরুমের দরজা খুলে মাথা বের করলো। দরজা খোলার শব্দে চন্দ্র তার দিকে তাকাতেই শুভ্রতা মিষ্টি হেসে বললো,
~থ্যাংক ইউ।
চন্দ্র কপালে ভাঁজ ফেলে তেড়ে আসতে নিতেই শুভ্রতা ফট করে দরজা লাগিয়ে দিলো। বিড়বিড় করে বললো,
~বেটা খবিশ!
~~~
চলবে~
(আমি রেগুলার গল্প দেই না তা নিয়ে পাঠক পাঠিকাদের মনে হয়তো খুব অভিযোগ। আপনাদের হয়ে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমাকে খুব বকাঝকাও করে মাঝে মধ্যে। কিন্তু কি করবো বলুন তো! আপনারা গল্প পড়ে কোনো প্রকার কমেন্টস করেন না। আমি বুঝতে পারছি না গল্পটা আদৌ আপনাদের ভালো লাগছে কিনা। যার কারণে রোজ লিখতেও মন চাইছে না। অন্যদিকে পেজের রিচ খুব কমে গেছে। লেখার আগ্রহ প্রথম দিকে যেমন ছিল তার থেকে অনেক গুণ কমে গেছে। মাঝে মধ্যে মন চায় গল্প সব ডিলিট করে বসে থাকি। তবে পেজের এডমিন তার বিরুদ্ধে। আপনারাও কি এডমিনের পক্ষে? কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন গল্পটা কেমন লাগছে। ভুল হলে অবশ্যই শুধরে নিবো। আপনাদের একটা কমেন্ট আমার জন্য অনুপ্রেরণা 🤍 হ্যাপি রিডিং~)