ছুয়ে দিলে মন পর্ব ২৪+২৫+শেষ

#ছুঁয়ে দিলে মন ❤️
#লেখিকা:- তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:২৪

দুই বছর পর

আজকে তিতলির গায়ে হলুদ। আগামীকাল আমরা সবাই এখানে এসে পড়েছি। সারাবাড়ি বিয়ের আমেজ ফুটে উঠেছে। বিয়ে বাড়ি সাজানো হয়েছে যথাযথভাবে।

তিতলির পাশে বসে আছি আমি। তিতলিকে সাজানো হচ্ছে যার আর আমি ফোনে কথা বলছি জয়ের সাথে।
—তন্ময়টাও বিয়ে করে ফেললো আমাদেরটা যে কবে হবে।

—হবে খুব তাড়াতাড়ি।

–আর আশা দেখিও না জান। তোমার বাবা তোমাকে লেখাপড়া শেষ না করেই বিয়ে দিবেনা।কিছু বুঝলাম না বিয়ের পর কি তুমি লেখাপড়া করতে পারতেনা আমি কি তোমাকে লেখাপড়া করতাম না।

—আপনার জন্য সারপ্রাইজ আছে।

—কি সারপ্রাইজ ম্যাডাম?

—এখন না বিয়ে ঝামেলা শেষে পাবেন।

—তাহলে এখন বললে কেন? আমি তো অপেক্ষা করে থাকতে পারবো না প্লিজ বলে দাও।

—একটু অপেক্ষা করেন কষ্ট করে।

—আর কত অপেক্ষা করাইবা।

—খুব বেশি না।

কথার মাঝে তিতলি এসে টান মেরে নিয়ে নিলো ফোন।

কি হলো একটা ফোন নিলি কেন

এত কি কথা বলিস না বলতো আমার আগে তোদের বিয়েটা দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।

নিজে মনে হয় কম বলতিস। কিভাবে ধরা খেয়েছিলি ভুলে গেছিস।

তুই আবার সেই কথা মনে করাইতেছিস। কত ভয় পেয়েছিলাম সেদিন তুই জানিস। আল্লাহ আমার মনে পড়লে ভয়ে শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

6 মাস আগের কথা।

তিতলি নিজের রুমে ফোন কানে দিয়ে কথা বলছে তনময় এর সাথে। ইদানিং বেশিরভাগ সময় তার সাথে কথা হয়। কথা বলার সময় ওর ডান-বাম কিছু খেয়াল
থাকে না।

কথা বলেই যাচ্ছে বলে যাচ্ছে হঠাৎ কেউ ওর কানে থেকে ফোনটা কেড়ে নিল। আচমকা ঘটনায় ভয় পেয়ে যায় তাকিয়ে দেখে সে আর কেউ না নেহা। নেহা কে দেখে তার গলা শুকিয়ে আসে। নেহা ফোনটা নিয়ে কথা বলতে লাগে তিতলি স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। নেহা ফোনটা নিয়ে চলে যায়। ঘটনায় তার দ্রুত ঘটে যায় তিতলি কোনো রিয়্যাকশন করতে পারে না।

সারাদিন তিতলি রুম থেকে বের হয় না। নেহার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাও পারে না
বাড়ির সবাই কি বলে দিয়েছে কিনা সেই রুম থেকে বের হয়না। রাতে নেহা আপু আমাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করে, তন্ময়ের সাথে আমার কি সম্পর্ক?
ভাই আমার গলা দিয়ে কোন কথা বের হয় না। চিৎকার করে জিজ্ঞেস করতেই গরগর করে সব বলে দেই। সব বলার সাথে সাথে আপু ঠাস করে আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়।
আপু আমাকে তার সাথে যোগাযোগ করতে না করে ফোন নিয়ে চলে যাবে এমর সময় আমি তার হাত ধরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম। একটা কথাই বলেছিলাম আমি তন্ময়কে ছাড়া বাঁচবো না তুমি আমার জীবনে অক এনে দাও প্লিজ। তুমিও তো ভালবেসে সায়ন ভাইয়াকে বিয়ে করেছ তাহলে আমার সাথে এমন করছ কেন।
আপু আবার আমাকে মারতে গিয়ে মারে না। বাড়ির কেউ আমাকে কোন প্রশ্ন করেনা তার মানে বাড়িতে কেউ জানে না। এটা ভেবে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি তারপর ফোন দিয়ে সব মিষ্টিকে জানাই সেই ভাবে তনময় সবটা জানতে পারে। এরমাঝে নেহা তার শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। ফোনের খবর আর জানিনা এক সপ্তার মধ্যে আর তনময় সাথে যোগাযোগ করতে পারিনা।

এক সপ্তাহ নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে দেয় সব। এক সপ্তাহ পর হঠাৎ নেহা আপু বাসায় আসে এসে আমার বিয়ে নিয়ে কথা বলে। আমি তো অবাক হয়ে আপুর কান্ড-কারখানা দেখতে থাকি। অজানা ভয়ে আমার মধ্যে আসে
তনময় থেকে দূর করার জন্য কি আমার বিয়ে দিতে চায়। কারো সামনে কাঁদতেও পারি না। আপু কথা শুনেনা পরদিন আমাকে ছেলের বাসা থেকে দেখতে আসবে।

রাতে আপু আমাকে যা বলে তাতে আমি শখের উপর শক হয় কারণ বিয়েটা নাকি তন্ময়ের সাথে দিবে কাল তনময় আসবে আমাকে দেখতে।

সত্যি সত্যি পরদিন তন্ময় আসে।

এই আর কতক্ষণ এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবি।

মিষ্টি ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে আসি।
গায়ে হলুদ সন্ধ্যার শুরু হয়েছে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ঠিক মতো শেষ হয়। পরদিন বিয়ে।

জয় তনময় সাথে আসে বিয়ে বাড়িতে সেইখানে আমার সাথে ওর শেষ দেখা হয়। বিয়েটা ঠিকঠাকভাবে শেষ হয়।তিতলির ভালোবাসা মানুষের সাথে বিয়ে হলেও পরিবারকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য একটা কান্নার রোল পড়ে সারা বাড়িতে।

দুইদিন থেকে আমরা বাসায় চলে আসি। তনময় বিয়ের পর বিদেশে সেটেল হবে।সেটা জানতে পারি বিয়ের এক মাস পর ওরা বিদেশের সেটেল হয়ে যাবে। আমার দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল এক্সাম থাকে এজন্য আর আমি ওদের সাথে দেখা করতে পারিনা। ফোনে কথা বলে নেয়।

বিয়ে বাড়িতে থেকে আসার পরে হালকা কিছু কথা হয়েছে ফোনে জয়ের সাথে পরীক্ষার জন্য দেখা করা হয় না।

এভাবে আমার পরীক্ষাটা শেষ হয়ে যায়। পরীক্ষা শেষ করে জয়ের সাথে দেখা করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠি। তাই কিছু না ভেবেই জয়দের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। এতদিন পর বাসায় এসে আমাকে চমকে দেবো বলে।
আরশি নিজেও জানে না আমি এখানে আসব। ওকে বলা হয় নাই। আজকেও পরীক্ষার পর আমাকে কিছু বলতে চাইছিল। কিন্তু আমি শুনি নাই মনে মনে ভাবছি যাব যাওয়ার পরে শুনবো। ওকে খুব খুশি দেখাচ্ছিল। গাড়ি থেকে নামতে আমার চোখ চড়কগাছ হয়ে যায়। বাসায় এতো সাজানো কেন?এখন সন্ধ্যা আমার এক্সাম শেষে পরে বাসায় গিয়ে তারপরে এসেছি। মনে হচ্ছে
কোন অনুষ্ঠান আছে বাড়িতে। এ অনুষ্ঠানে কোথায় কি আমাকে আরশে বলতে চাইছিল। কিন্তু কিসের অনুষ্ঠান, আমি তো ওর কথা শুনি নাই। এসব ভাবতে ভাবতেই গেট খুলে ভেতরে ঢুকলাম।

মানুষেরই তো অভাব নাই। হঠাৎ কোথা থেকে ছুটে এসে আরশি আমাকে জড়িয়ে ধরে।

—ওতুই এছিস তুই জানলে কিভাবে আমি তোকে বলতে চাইলাম তুই তো শুনলেইনা।

—হ্যাঁ জানতাম না আমি এসেই জানলাম। তা কি অনুষ্ঠান বাসায়?

—এখন আর বলতেছি না এসেই যেহেতু পড়েছিস চল ভেতরে গেলে জানতে পারবে।

—আচ্ছা চল।

আজকে আমি সিম্পল ড্রেস‌ই পড়ে এসেছি কে জানত বাসায় অনুষ্ঠান। তাহলে একটু ভালো
ড্রেসি পরে আসতাম।

আরশি সাথে ভিতরে ঢুকলাম, আলিয়া আপু মেয়ের সাথে হল ওর সাথে কথা বললাম চারপাশে শুধু চোখে খুঁজে যায় জয়কে কতদিন ধরে দেখিনা।কোথাও না পেয়ে জয়ের রুমে যেতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না আন্টির সাথে দেখা। আন্টি আমাকে দেখেই তো খুশি হয়ে অনেক কিছু বলতে লাগলো। তারপর কে যেন ডাকছে চলে গেল। একটা মেয়েকে আমার সামনে নিয়ে এলো মেয়েটা অনেক সুন্দর এসেই একটা মিষ্টি হাসির দিলো।

—মিষ্টি এই হচ্ছে নিশাত ভাবি।

ভাবি ডাক শুনে আমি ব্রু কুঁচকে উঠলো মেয়েটাকে কোন দিক দিয়ে তার বিবাহিত মনে হচ্ছে না।
আমার ভাবি বলছে কেমন ভাবি।

–ভাবি?

—হ্যাঁ জয় ভাইয়ার হবু ব‌উ আজকে এই অনুষ্ঠান ওনার ভাইয়ার।

জয় হবু ব‌উ শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো মনে হয় বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। আজকের অনুষ্ঠান আমাদের জন্য মানে আমি জিজ্ঞেস করার আগেই আরশি বলল, আজ নাকি এনগেজমেন্ট।

এতক্ষণ মেয়েটাকে দেখে যতটা ভালো লেগেছে এখন আমার ততটাই রাগ উঠছে। রাগী চোখে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি।

মেয়েটা আমার সাথে কথা বললো আমি কথা বললাম না। রাগে কষ্টে কিছু করতে মন চাইছে না।
#ছুঁয়ে_দিলে_মন ❤️
#লেখিকা:- তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#শেষ_পর্ব

জয় নিজের রুমে রেডি হচ্ছে। সব শেষ শুধু দাঁড়িয়ে নিজেকে ঠিক লাগছে কিনা দেখছে।

চুলে হাত নাড়িয়ে একটু ঠিক করতে থাকে হঠাৎ কেউ ঝড়ের গতিতে এসে জয়ের কলার চেপে ধরে। সে আর কেউ না মিষ্টি। জয় ত মিষ্টি কে এভাবে এসে পাঞ্জাবির কলার ধরায় হতবাক হয়ে গেছে। হতবাক হয়ে সে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। মিস্টি যে রেগে আছে তি ওর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে।

হোয়াট হ্যাপেনস মিষ্টি?

মিষ্টি এবার রেগে চিৎকার করে বলল,,, এত সাজুগুজু কার জন্য করছিস তুই।বিয়ে করার জন্য অন্য মেয়েকে বিয়ে করার জন্য এরকম সেজেগুজে যাচ্ছিস তাই না।

হোয়াট কি সব বলছো তুমি? আর এমন তুই তুকানি করছ কেন?

তুই তুকানি করবো না তো কি করবো? আমার সাথে প্রেম করেঅন্য মেয়ের সাথে আজকে ইংগেজমেন্ট করার জন্য তুমি সাজছো আর আমি তোমার সাথে এমন ব্যবহার না ভালো ব্যবহার করবা তাইনা।

অন্য মেয়ের সাথে মানে?

একদম ন্যাকামো করবে না। আরশি আমাকে একটু আগেই এসব বলেছে তুমি ওই নিশাত নাকি ফিশাত ওই মেয়েকে বিয়ে করবে। তোমার সাহস তো কম না তুমি আমাকে রেখে অন্য মেয়ের দিকে তাকাও আবার বিয়ে করতে চাও। তোমাকে মেরে ফেলব একদম।

কলার থেকে হাত সরিয়ে জয় কে মারতে লাগে।

মিষ্টি কি করছো কি?

জয় বুঝতে পেরেছে আরোশী কোন আকাম করেছে। এজন্য মিষ্টি এমন করছে। জয় মিষ্টির দুই হাত ধরে নিজের এক হাতে তারপর ওর কোমর জরিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে হাতে বন্দী করে ফেলেছে। মিষ্টি এখনো ছটফট করছে কিন্তু নরতে পারছে না।

ছাড়ো বলছি আমাকে। তোমার আজকে আমি মেরে ফেলবো।

সত্যি মেরে ফেলবে কষ্ট হবে না।

না কষ্ট হবে না।

সত্যি।

এবার মিষ্টির চোখ ছল ছল করে উঠলো।

একি কাদছো কেন?

তুমি সত্যি ওই মেয়েটাকে বিয়ে করবে।

দূর-পাগলী এখন ও সেটা নিয়ে পড়ে আছ। আরশি তো তোমার সাথে মজা করেছে।

মজা কিন্তু কেন?

এই যে তুমি ওর ভাইয়ের সাথে প্রেম করেছ কিন্তু ওকে জানতে দেও নাই সেজন্য।

আরশি সব জেনে গেছে।

শুধু ও না বাসার সবাই জেনে গেছে।

বল কি?

ইয়েস ম্যাডাম , এইসব এবার বাদ দাও তাড়াতাড়ি যাও রেডি হয়ে নাও।

রেডি, রেডি হবো কেন? আর বললেনাতো আজকে কিসের অনুষ্ঠান?

একটু পরেই জানতে পারবে সেটা তোমার জন্য সারপ্রাইজ।

সারপ্রাইজ, নিশাত মেয়েটা কে হয় তোমার?

আমার ফুপাতো বোন।

শয়তান আরশির কতো ভয় পেয়েছিলাম তুমি জানো?

ভয় কেন পাবে তোমায় কী আমার উপর বিশ্বাস নাই। তোমার জয় কি তোমাকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবতে পারে। এই জয় শুধু তার মিষ্টি কে ভালোবাসে বুঝছো।

হ্যাঁ বুঝছি।

জয় মিষ্টি কে ছেড়ে দেয়। মিষ্টি আরশির রুমে চলে যায় দেখে আরশি আর কিছু মেয়ে বসে আছে সাথে নিশাত ও আছে।

আমি গিয়ে আসি সাথে তো ঝগড়া শুরু করে দিলাম। তারপর নিশাত আপুর সাথে কথা বললাম তখন রাগে কথা বলি নাই।

আচ্ছা সরি।

তোকে আমি মেরে ফেলবো শাকচুন্নি, তুই জানিস আমি কত ভয় পাইছিলাম।

আচ্ছা এই যে কান ধরেছি এবার মাফ কর। আর তুই এত দিন হয়ে গেছে জানাস নাই এজন্যই তো।

আমি তো জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু…

আর কিন্তু বলতে হবেনা তাড়াতাড়ি রেডি হও।

হ্যাঁ।

দুজনকে রেডি করে দিল। আমি আরশি দিকে তাকিয়ে বললাম,,

আমার মাপের ডেস কোথায় পেলি। আর…

ড্রেসটা ভাইয়া তোর জন্য কিনে এনেছি নিজে পছন্দ করে।

মিষ্টি মনে মনে ভাবছে পছন্দ তো ভালোই। রানী গোলাপি এর মাঝে আকাশী।* লেহেঙ্গা টা রানী গোলাপি আকাশের মধ্যে প্রেম মিক্সার করার কাজ। পাথর গুলো ক্রিম। ফতুয়াটা পড়ো আকাশী হাতা রানী গোলাপি। ওড়না ক্রিমের মধ্যে রানী গোলাপি আকাশী কালার মিক্স করা। অসম্ভব সুন্দর ড্রেসটা। পার্লারের লোক গুলো আমাকে গর্জিয়াস করে সাজিয়ে দিলো।

আরশির সাথেই রুম থেকে বের হলাম। কিছুদূর যেতেই আরশি আমাকে ছেড়ে দিল। দুই কদমে এগুতেই রুমের লাইট অফ হয়ে গেল। লাইটিং ভয় পেয়ে গেলাম হঠাৎ একটা লাইক শুধু আমার ওপর পরল,,
সাথে সাথে উপর থেকে কিছু আমার উপর পরতে লাগল হাত দিয়ে দেখি আমি গোলাপের পাপড়ি। আরেকটু যেতে কেউ আমার হাত টেনে শক্ত করে ধরল,,

সে অন্ধকার থেকে লাইটে আসতে দেখলাম এ আর কেউ নি জয় নিজে।
আশেপাশে থেকে তালির আওয়াজ আসছে। জয় হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলাম,,

ইসটেজের কাছাকাছি আসতেই আমার কানে মাইকের শব্দ কথাগুলো কানে গেল,,

আমার একমাত্র ছেলে আরাফাত হোসেন জয় সাথে রাতে চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে রাইসা সুলতানা মিষ্টি সাথে বিয়ে ঠিক করেছে আমরা। আজকে তাদের এঙ্গেজমেন্ট হবে। একমাস পর তাদের বিয়ে উপলক্ষে আজকের এই আয়োজন।

অ্যানাউন্সমেন্ট কানে আসতেই আমি বড় বড় চোখ করে জয়ের দিকে তাকালাম।

আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,,
সারপ্রাইজ টা কেমন লাগলো।

আমি লাফিয়ে বললাম,,, বিশ্বাস করতে পারতেছিনা। এত বড় শখ আমি কখনোই হয় নাই।

তুমি খুশি হয়েছো।

খুব।

এজন্যই তো এতো কিছু করা।

থ্যাঙ্ক ইউ।

জয় আর মিষ্টি স্টেজে উঠে দাঁড়ায়। মিষ্টিকে দেখতে পায় ওর বাবা-মা ভাই ভাবি সবাই নিচে আছে ওদের দিকে হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে।

তাদের হাসিমুখ দেখে মিষ্টি মুখে হাসি ফুটে ওঠে।

জয় আমার দিকে তাকিয়ে আমার হাতে পরিয়ে দেয়। হাতে আংটি পরিয়ে আমার হাত উপর একটা কিস করে,, আই লাভ ইউ বলে উঠে আমার দিকে তাকিয়ে।

আমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলি।

এদিকে আরশির চোখ যায় মেঘে দিকে । দূর থেকে আরশির কাছে মেঘকে একটু একটু চেনা লাগছে মনে হচ্ছে লোকটা কি চিনে।

আরশি মেঘের দিকে এগিয়ে যায়। মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়ে জিগ্যেস করে,

এক্সকিউজ মি।

মেঘের দৃষ্টি ছিলো স্টেজের দিকে,, জয় আর মিষ্টির আংটি পরানো দেখছে। হঠাৎ এমন সময একজন এসে দাঁড়ায় সামনে।

ও তাকাতেই আবার জিজ্ঞেস করেন,,

আচ্ছা আপনাকে না আমার চেনা চেনা লাগছে আপনি কি আমাকে চেনেন বা আমাদের আগে কখনো দেখা হয়েছে।

মেঘ একপলক আরশির দিকে তাকিয়ে থেকে বলে ,,, না।

আরশি না কথাটা শুনে,, বলে ওঠে,

সরি আপনাকে ডিস্টার্ব করলাম আসলে আপনাকে আমার চেনা চেনা লাগছিল কিন্তু আপনি যেহেতু আমাকে চেনেন না তাহলে মনে হয় আমার ভুল ধারণা। আচ্ছা আসছি বাই।

বলেই একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে আরশি সেখান থেকে চলে যায়।

মেঘ আরশির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
মেঘ আরশি কে প্রথম দেখেই চিনে ফেলেছে। কিন্তু সেটা বলে নাই বললে হয়তো আরশি কষ্ট পেত। মেঘ কষ্ট দিতে চাইনা আরশিকে । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নুপুরের দিকে তাকায়,,

সাথে সাথে নুপুর ও তাকায় দেখে মেঘ ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

ইশারায় জিজ্ঞেস করে নুপুর ,,,,কি?

মেঘ মাথা নেড়ে না জানায়। নুপুর একটা হাসি দিয়ে আবার স্টেজের নজর দেয়।

মেঘ নুপুরের দিকে তাকিয়ে থাকে।

❤️ সমাপ্ত ❤️

অনেকদিন আগেই গল্প টা শুরু করেছিলাম অবশেষে শেষ করতে পারলাম। অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে গল্পটা শেষ হলো যারা প্রথম থেকে গল্পটা পড়েছেন এবং সব সময় পাশে থেকেছেন। তাদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসা আমার পক্ষ থেকে। কেমন লেগেছে অবশ্যই মতামত জানাবেন। আর হ্যাপি এন্ডিং দিলাম।আরশির জন্য এখনো কাউকে ভাবা হয়নি তাই ওর জন্য কাউকে আনলাম না ভবিষ্যতে অবশ্যই কাউকে পেয়ে যাবে। আবার আরশির সজন্য ভাবতে গেলে আরো বড় হবে এজন্য আর ভাবলাম না। আপনাদের কোন জুটি সব চেয়ে ভাল লেগেছে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। মিষ্টি- জয়, তনময়- তিতলি, মেঘ- নুপুর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here