#ছুয়ে দিলে মন❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি❤
#পর্ব:- ৬
মিষ্টি খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে আর চকলেট খাচ্ছে। ওর সামনে বসে আছে আকাশ, দীপা, কনা, রুনা, শান্ত, আলিম, হাসিব আর জুনায়েদ।
মিষ্টির ফ্রেন্ড সার্কেল সব এসে জরো হয়েছে জ্বর হয়েছে শুনা মাএ। পাগল হয়ে এসেছে কাল বৃষ্টিতে ভিজে এই অবস্থা সব শুনেছে মিষ্টির আম্মুর কাছে। সব থেকে দুষ্টু হচ্ছে মিষ্টি ও সবার সাথে দুষ্টুমিতে ফাস্ট কেউ রেগে থাকতে পারে না ওর উপর।একদিন মিষ্টি না গেলে সবার মুড খারাপ হয়ে যায় আজকেও তাই হয়েছে সকালে সব স্কুলে এসে উপস্থিত মিষ্টি আসে নি সবাই অপেক্ষা করছে। ক্লাস টাইম হয়ে এসেছে তবুও যখন মিষ্টি আসলো না ফোন করলো মিষ্টির আম্মুর কাছে আর তার থেকে জানতে পেরেছে মিষ্টির জ্বর হয়েছে বৃষ্টিতে ভিজে।
সবাঈ এসে হাজির কিছুক্ষণের মধ্যে চিন্তা হয়ে এসেছে সবাই কিন্তু এখানে এসে সবার চোখ চরক গাছ মিষ্টি গান ছেড়ে মিষ্টি লাফালাফি করছে আর চকলেট খাচ্ছে। সবাই চিন্তিত হয়ে এসে এসব দেখবে ভাবে নি।
তার পর থেকে মিষ্টি বসে খাচ্ছে আর সব গুলো ওর চারপাশে বসে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছে।
–ওই তোরা থামবি আমার মাথা ব্যাথা করছে?
বলে মিষ্টি শুয়ে পরলো।
–তোর আর মাথা ব্যাথা আমাদের এরিয়ে যাওয়ার জন্য বলছিস তাইনা। জ্বর এই তোর সত্যি জ্বর হয়েছে নাকি নাটক করছিস বলতো। [ হাসিব]
–দেখছে কতো কালো হয়ে গেছি শরীর টা দূর্বল কতো অসুস্থ আমি খেতে পারছি না সকাল থেকে। আর তোরা আমাকে দেখতে এসেছিস কোথায় আমার পছন্দের চকলেট আইস্ক্রিম নিয়ে আসবি একটু ভালো ভাবে কথা বলবি তা না এসে থেকেই আমার উপর গুয়েন্দা গীরী করছিস ফাজিল।[ মিষ্টি ]
–তোকে দেখে কেউ বলবে তুই দুর্বল যে নাচটাই না নাচলি। অসুস্থ হলে এভাবে কেউ লাফাতে পারে।[ দীপা]
–আবার বলছিস খাচ্ছ নি তো এখন কি খাচ্ছি? আমাদের দেখিয়ে দেখিয়ে একা খেয়ে যাচ্ছি এই তোর অসুস্থতা।[ কনা]
–একজন অসুস্থ মানুষ একটুওও খাচ্ছে তাও নজর দিচ্ছি স। আর তোরা খাবি কেন অসুস্থ আমি আমি খাবো। তোরা দেখতে এসেছিস দেখে চলে যা। [ মিষ্টি ]
–হার কিপ্টা একটা। [ কনা]
–ওই ওই একদম কৃপণ বলবি না আমাকে হূহ আমি কিন্তু তোদের খাওয়াই সব সময়। কৃপণ বললে কিন্তু,,
মাঝে থামিয়ে দিয়ে,
–খাওয়াচ্ছ এখন খোটি দিচ্ছি। [ কাদোকোদো মুখ করে বলল দীপা]
–হুম দিচ্ছি। [ মিষ্টি ]
সবাই লেগে পরলো ঝগড়ার মিষ্টি তেরামকি করেই যাচ্ছে সাথে সব গুলো। এখন মিষ্টি কে দেখলে কেউ বলবে না মিষ্টি অসুস্থ। ফ্রেন্ড দের সাথে থাকলে ওর সব দূর হয়ে যায়। রাতে অনেক জ্বর ছিলো সকালে তা কমে এসেছে। তাই এখন তেমন নাই মিষ্টি স্কুলে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু বাসার কেউ যেতে দেয় নি।
তাই বোরিং হয়ে গান শুনছিলো আর তার সাথে লাফাচ্ছিলো। তখন ও এই বান্দর গুলো আসে কে জানতো এগুলো আসবে তাহলে তো মিষ্টি ওই ভাবে লাফাতোই না। এখন আর কি করার ধরা খেয়ে গেছে তাই সবার এত কথা মিষ্টি ও কি এতো সহজে ছারবে নাকি ওদের সাথে নিজে ওপরছে। নিচে থেকে মিষ্টিদের কাজের বোয়া আসে খাবার নিয়ে। দশ পদের মতো খাবার এনে দেয় ঝগড়া কথা হাসাহাসি মাস্তি করে অনেক টা সময় চলে যায়। যে আকাশ সব সময় মিষ্টির সাথে লেগে পরে আজ আকাশই কথা কম বলছে ব্যাপার টা সবাই না ধরলে ও মিষ্টির মনে খটকা লেগেছে। আচ্ছা আকাশের কি মন খারাপ?
–কি রে আকাশ তুই এতো শান্ত হয়ে বসে আছিস শান্তর মতো ব্যাপারটা কি? [ মিষ্টি শান্তর মতো বলতে ওদের ফ্রেন্ড শান্তর কথা বলেছে]
সাথে সাথে সবাই হা করে আকাশে দিকে তাকায় আসলেই মিষ্টির জ্বর এর খবর পাওয়ার পর থেকেই আকাশ এমন চুপচাপ আছে। রাস্তা ও আর কথা বলে নি সবাই একটা ক্লাস করে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু আকাশ বলেছে আর আজ ক্লাস ই করবে না এখন ও যাবে কেউ না গেলে ও একাই যাবে। তাই সবাই আকাশের কথায় আগেই আসে আর ক্লাস আজ সব অফ।
এভাবে সবাই তাকেই আকাশ কিছু টা ভরকে যায়।
–কিরে আকাশে আসলেই তো তোর আবার কি হয়েছে তখন তো একাই আগে আগে চলে এলি এখন এভাবে চুপ করে আছিস কেন?[ আলিম]
–কই না তো সবাই কথা বলছিস তাই আর কি?[ আকাশ ]
–সবার কথা আবার ধরোস নাকি। সবাইকে ফেলে আগে তো নিজের কথা শেষ করিস কিন্তু আজ তো অন্য রকম লাগছে মন খারাপ। [ আলিম]
সবাই আকাশ কে সেকে ধরে আকাশ কিছু বলে না। ব্যর্থ হয়ে চুপ যায়। দুই ঘন্টার মতো থেকে সবাই চলে যেতে উঠে পরে সবাই বেরিতে যায় মিষ্টি আসলেই অসুস্থ কিন্তু ওদের বুঝতে দেয়নি। জ্বরটা বারছে মনে হয় মাথা চাপ ধরে ব্যাথা করছে।
সবাই বাই বলে চলে যায় মিষ্টি চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ মনে হয় কেউ ওর হাত ধরেছে সাথে সাথে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে আকাশ দাড়িয়ে আছে হাত ধরে,
আকাশকে দেখে চমকে উঠে ওরা না চলে গেল আবার আকাশে ই বা কি করছে ওকি যায় নি।
–তুই এখানে চলে না গেলি কিছু কি ফেলে গেছিস?
— মিষ্টি আই এম সরি।
মিষ্টি হা করে তাকিয়ে আছে ও সরি বলছে কেন?
–সরি বলছিস কেন কি হয়েছে?
–আমার জন্য আজ তোর এই অবস্থা কাল যদি তোর টাকাটা না নিতাম তাহলে তুই অসুস্থ হতি না সরি।
–ধূর পাগল এতে তোর কি দোষ আমি তো ইচ্ছে করেই ভিজেছি তোর এতে কোন দোষ নেই হাত ছার। আর নিজেকে দোষা রোপ করবি না ওকে। যা বাসায় যা কাল দেখা হচ্ছে কেমন বাই?
আকাশ চলে যায় মিষ্টি ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর মতিগতি মিষ্টির মাথায় ঢুকে না কিছু কখন কি বলে কি করে?
.
নুপুর অফিস রুমে বসে ওর কেবিনে। আর পাশে বসে আছে রাইসা একটু আগেই নুপুর ওকে ডেকে আনছে। একটা ফাইল মেঘের রুমে নিয়ে সাইন করে আনতে হবে ও যাবে না স্যার ওকি দেখলেই রেগে যায় নয়তো বকাবকি করে তার থেকে ও যাবে না। রাইসা কে পাঠাবে রাইসা ভয়ে আছে আরেকজনের কাজ কিনা ও কলবে তাও সেটা মেঘ স্যার এর রুমে স্যার ও খুব ভয় পায় কিন্তু নুপুর কি ফ্রেন্ড কম বোন বেশি ভাবে। ও যেহেতু একটা সাহায্য চেয়েছে আমার উচিত সাহায্য করা তাই ফাইল নিয়ে যেত লাগে।
বাইরে দাড়িয়ে বুকে কয়েক বার ফূ দিয়ে নক করে,
–মে আই কামিং স্যার?
–মেঘ না দেখেই বলে উঠে, ইয়েস কামিং।
–রাইসা ভেতরে ঢুকেই ফাইল এগিয়ে দেয়। সাথে সাথে মেঘের দিকে থেকে রাগি কণ্ঠ আওয়াজ বেরিয়ে আসে।
–মিস রাইসা আপনি কি করছেন এখানে?
–স্যার এই ফাইলটা,,
–মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে, এটা আপনি নিয়ে এসেছেন কেন? এটা তো মিস নুপুর এর কাজ উনি কোথায় আপনি কেন নিয়ে এসেছে। নিজের কাজ বাদ দিয়ে এসব কি যায় কাজ তাকে পাঠান যান।[ জোরে চিৎকার করে ফাইল ছুড়ে মারে মেঘ]
ভয়ে রাইসার প্রাণ যায় যায় অবস্থা, ফাইলটা নিয়ে কোন রকম দেয় এক দৌড়ে একেবারে নুপুরের কেবিনে এসে থামে।
নুপুর আরামছে বসে ছিলো হঠাৎ রাইসা কে এমন দৌড়ে আসতে দেখে ওর ভ্রু জোরা বেকে যায়, এভাবে দৌড়ে এলো কেন,
–কিরে তুই দৌড়ে আসলি কেন?
–তোকে বলেছিলাম ভাই আমাকে পাঠাস না। পাঠালি তো এত গুলো বকা খেতে হলো কি চিৎকার করে কথা বলল রে আমার তো জান যায় যা অবস্থা।
–সাইন করে নাই।
–আবার সাইন তুই না গেলে সাইন করবে না। যার কাজ তাকে যেতে বলেছে আর জীবনে আমি তোকে সাহায্য করছি না। আমি যাই আমাকে নিজের কাজ করবার কইছে। আর আপনাকে যেতে বলেছে কি যে করবো তোরে আল্লাহ জানে।
নুপুরের ভয় হতে লাগে কিন্তু না গিয়ে উপায় ও নাই। ফাইল নিয়ে চেয়ার এ বসে পরে আজ স্যার কি খুব রেগে গেছে ইসস কেন যে রাইসা পাঠাতে গেলাম।
নখ কামরাতে কামরাতে নুপুর দরজার কাছে দাড়ালো ভেতরে ডুকার সাহস হচ্ছে না। না থাক যাবো না আজ রেগে থাক জেনে শুনে তো বাগের গর্তে যাওয়ার মানেই হয় না। ভেবেই পেছনে ঘুরে দৌড়ে চলে আসবে কিন্তু আসতে পারেনা কেউ হাত শক্ত করে ধরেছে। পেছনে ফিরে দেখবে তার আগেই টেনে কেউ ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো নুপুর কে দেয়ালে চেপে ধরেছে ওকে। ভয়ে নুপুর চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়।
–তোমার সাহস দেখে আমি অবাক হয়। এতো সাহস তুমি কোথায় পেলে জান নিজে না এসে অন্য জনকে পাঠাতে।
বলেই মেঘ নুপুর এর হাত শক্ত করে ধরে।
নুপুর বড় বড় চোখ করে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। স্যার জান বলল কেন, আচ্ছা আমি কি ভাবছি স্যার তো এটা নাও বলতে পারে হয়তো আমি ভুল শুনেছি। কিন্তু এভাবে ধরেছে কেন আমার তো ধুম বন্ধ হয়ে আসছে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
#ছুঁয়ে দিলে মন ❤️
#লেখিকা:-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:-৭
মিষ্টি ফ্রেন্ডরা সবাই মিলে আজকে ঘুরতে যাবে।
স্কুলের মাঠে একটা শিমুল গাছ আছে সেখানে সবাই বসে আছে অপেক্ষা মিষ্টির জন্য ও আসতে লেট করছে। বিরক্ত হয়ে সবাই নানা কথা বলছে এই মেয়েটার আসতে সবসময় লেট করে। কিন্তু মিষ্টিকে রেখে কেউ যাবেনা মিষ্টি নয় গেলে হবেনা ও সবাইকে মাতিয়ে রাখে হাসিখুশি রাখে। মিষ্টি প্রচন্ড দুষ্টু কিন্তু মনটা খুব ভালো সবাইকে হাসাতে জানে। ফাজলামি করি কিন্তু কারো বিপদে সবার আগে ওই তার পাশে দাঁড়ায়।
অবশেষে সবার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো দুলতে দুলতে মিষ্টি আসছে হাত আইসক্রিম। স্কুলড্রেস পড়েই সবাই ঘুরতে যাবে কারণ স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে বের না হলে বাসায় অনেক কৈফত দিতে হয়। কোথায় যাব না যাব না না প্রশ্ন?
—ওই বান্দরনী তুই জীবনে আর সঠিক সময় আসতে পারলি না তাই না। বের হব 9 টায় ভাবছিলাম আর তুই আসলি 9:30।(দীপা)
—কি এমন করছি রে বাড়িতে সাজিস ও ত নি তাহলে এতো লেট হয় কেন তোর। আমরা সবাই আধাঘন্টা আগে আসি আর তুই সব সময় আধা ঘন্টা পরে আসিস।(আলিম) বিরক্ত নিয়ে কথাটা বলল,,,
—আয় তোরা থামবি। আরে এতই যদি আমার জন্য অপেক্ষা করছে তোদের বিরক্ত লাগে তাহলে অপেক্ষা করে আছিস কেন চলে যেতে।আমি যাবোই না তোদের সাথে যাগা তোরা।
বলে মিষ্টি শিমুল গাছের নিচে বসার জন্য ব্রাঞ্চ আছে তার এক কোণে বসে আইসক্রিম খেতে লাগলো।
সবগুলো যখন চোখ ও দিকে রাগী হয়ে তাকিয়ে আছে। মনে হয় চোখ দিয়েই ওকে বস করে ফেলবে।
মিষ্টি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নাই ওর মতো সানন্দে আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে।
—কি হলো এভাবে সব গুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন। যা তোরা ঘুরতে চলে যা আমি যাবনা।
—মিষ্টি মাথা খারাপ করবি না আমরা কিন্তু রেগে আছি। উল্টা তুই আমাদের সাথে রাগ দেখাচ্ছিস? (শান্ত)
—দেখা বই 100 বার দেখাবো তোর আমার কেমন ফ্রেন্ড হ্যাঁ একটু দেরি হয়েছে বলে এইভাবে আমাকে কথা শুনালি! এমন সব খচ্চর ফ্রেন্ডের আমার দরকার নেই আমার জন্য একটু অপেক্ষা করতে পারে না।
বলে মুখে ভেংচি কাটলো,
—এই তোরা কি এরকম ঝগড়া রাগ অভিমান নিয়ে থাকবি নাকি ঘুরতে যাবি। ঘুরতে যাব বল আমি সকাল ছয়টা থেকে সাজতে বসে ছিলাম শিশুরাম দেখ আমার স্বাদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর তোরা।
(কনা কথাটা বললেই আয়না বের করে লিপস্টিক লাগাতে লাগলো ও সব সময় একটু বেশি সাজে)
—তোর আর কি সাজ ছাড়া কোন কাজ হচ্ছে?(দীপা)
দীপা উঠে মিষ্টি কাছে গিয়ে হাতে টানতে লাগলো,,,,
—- আর এই ঢং ভালো লাগেনা চলতো।
—এই হাত ছাড় শয়তানের নানি যাবেনা বলছিনা।
কে শুনে কার কথা দীপা একবার যেহেতু মিষ্টি হাত ধরেছো কেটে নেয়া হলেও নিয়ে যাবে। দীপার যে জিদ একবার যেটা বলে সেটা করেই ছারে।
ওরা সবাই মিলে একটা পার্ক এসেছে কিন্তু ঝামেলা হয়েছে। ঢুকা নিয়ে স্কুলড্রেস থাকায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না পার্কের ভেতরে।
মিষ্টি তো তাও লাফাছে এতদূর আসছে ঘুরতে বাসার সবাই জানে না সেটা ভেবে খুশিতে লাফাচ্ছি।আরে দিকে সবার মুখ থমথমে । যদি জানতো ইস্কুল ড্রেস থাকলে ঢুকতে দেবেনা। তাহলে তো কষ্ট করে এতদূরে আসতো না।
—দেখ মিষ্টির কেমন লাফাচ্ছে ওই বাচ্চা গুলোর সাথে কেমন করছে।কোথায় ঢুকতে পারছেন একটা সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করবে তা না নিশ্চিন্তে হাসিখুশি মনে ঘুরছে।(হাসিব)
—ওর কথা বাদ দে তো এখন আমরা কি করবো? এখানে বসে থেকে কি করবো চলে যায় চল।(আকাশ)
ওরা সবগুলো পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে নানা কথা বলে যাচ্ছেন।কি করবে না করবে চলে যাবে নাকি আরেকটু চেষ্টা করবে । তবে সাহস নিয়ে আকাশ সামনে গিয়ে দাঁড়ায় দারোয়ান কাছে অনেক কাকুতি-মিনতি করতে থাকে।
কিন্তু ফলাফল ব্যর্থ কোন আশা নেই দাঁড়োয়ান ঢুকতে দেয় না।
—চলো ফিরে যায় না ঢুকতে দেবে না কিছুতেই?
অজ্ঞতা সবাই রাজি হয় ।
গাড়ি রিজার্ভ পড়ে গেছিল তাই সবাই আবার গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। কিন্তু প্রবলেম বাজলো গাড়ি ছাড়বে তখন রুপা চিৎকার করে বলল,,
–এই মিষ্টি কই অত গাড়িতে নাই।
সাথে সাথে সবাই আশেপাশে তাকাই আসলে নাই গাড়িতে উঠে নাই এক একে সবাই গাড়ি থেকে নেমে আসে। আশেপাশে মিষ্টি কোথাও নাই।
হন্যে হয়ে সবাই চারপাশে খুঁজতে লাগে এইতো এখানে কয়েকটা বাচ্চার সাথে কথা বলছিল সেকেন্ডে কোথায় চলে গেল। সবার মাথায় চিন্তার ভাঁজ মিষ্টিকে যেভাবে হোক খুঁজে বের করতে হবে। ওর বাড়ির কেউ জানতে পারলে আস্ত রাখবে না একটাকেও।
_______________________________
মেঘ একটা প্রজেক্ট এর দিল করতে রেস্টুরেন্ট এসেছে। সাথে নুপুর ওআছে।
সামনে একটা অতি সুন্দরী বিদেশি মহিলা বসা। মেঘ সাথেই কাজ করছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছে নুপুর মেয়েটিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।
অতি ভাবটি একটা মহিলাবয়স তাঁর আমার মায়ের সমান হবে বা তার থেকেও বেশি কিন্তু স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে যেন আমার থেকেও বয়স কম। মহিলাদের হাবভাব একটুও ভালো লাগছে না নুপুর একটু পরপরই মেঘ স্যার এর গায়ের উপর এসে পড়ছে আর হেসে হেসে একদম মুখের কাছে চলে আসছে।
অবশেষে মিটিং শেষ হলো।
–আচ্ছা মিস জেসিকা আমাদের আবার দেখা হবে বাই।
বলে মেঘ আর এক মুহূর্ত বসে থাকল না সোজা রেস্টুরেন্টের বাইরে এসে গাড়িতে উঠে বসে।
—কি হলো আপনি বাইরে দাড়িয়ে আছেন কেন?
নুপুর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। গাড়িতে উঠছে না দেখে জিজ্ঞেস করল,,,
—স্যার আপনি যান আমি একটু পরে আসতেছি।
মেঘ ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে নুপুরের দিকে,,,
—হুয়াই?
—স্যার আমার একটু সামনে শপিংমলে যেতে হবে আপনি চলে যান আমি এক্ষুনি চলে আসতেছি।
—কি দরকার শপিংমলে এখন আপনার অফিস টাইমস তাই আপনি আমার সাথে যেতে হবে উঠোন।
—প্লিজ স্যার আপনি যান না আমার সত্যি খুব দরকার। এখন গেলে গেলে ভালো হতো। না হলে আবার ছুটির পর আমাকে এই জায়গাতে ঘুরে শপিং মল আসতে হবে। আমাদের রাস্তায় ত আর বড় ভালো শপিংমল পাওয়া যায় না।
—কি দরকার সেটা বলেন?
—স্যার পার্সোনাল বলা যাবে না।
মুহূর্তে মেঘের রাগ সাত আসমানের উপরে উঠে যায়,,,
–আপনার ঘুরা হবে নাকি হবে না সেটা আমার বোঝার বিষয় না আপনি চুপচাপ করে গাড়ি উঠুন। আমার সাথে অফিসে যাবেন এখন ছুটির পরে আপনার যেখানে ইচ্ছে হয় সেখানে সেখানে জেয়েন আই ডোন কেয়ার। কিন্তু এখন আমার কথা আপনাকে শুনতে হবে কারণ আমি আপনার বস।
মেঘ মাঝে মাঝে নুপুর কে তুমি বলে আবার মাঝে মাঝে আপনি বলে।
–নুপুর কিছুক্ষণ মেঘের দিকে তাকিয়ে থেকে আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে কিছু করার নেই সে বস তার কথা শুনতেই হবে।
রাত করে আবার এই শপিংমল আসতে হবে ভাবতেই নুপুরের কষ্ট হচ্ছে রাতে মেয়েরা চলাফেরা করার রিস্ক তারপর আজকে জিনিসটা নিতে হবে।
মেয়ে নুপুরে দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখে নিরব হয়ে কিছু ভাবছে। গভীরভাবে কিছু ভাবছে হয়ত জিনিসটা সত্যিই খুব দরকার,
কি যেন ভেবে মেঘ শপিং মলের সামনে গাড়ি দাঁড় কারায়।
আচমকা গাড়ি থেমে যায় নুপুর চমকে তাকায় হয়তো অফিসে এসে পড়েছে তাই নামতে যায়। কিন্তু বাইরে তাকিয়ে দেখে না আসেনি তো এটাতো শপিংমল এখানে গাড়ি কেন থামিয়েছে ।জিজ্ঞেস করতে চেয়েও একটা চাপা অভিমান ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে জিজ্ঞেস করে না চুপ করে বসে থাকে।
মেঘের খেয়াল হলো নুপুর ওই ভাবে বসে আছে নামতে গিয়ে নামেনি
ব্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
—কি হলো এভাবে ভাবে বসে আছো কেন যাও তোমার না শপিংমলে কি দরকার?
—মানে আপনি আমার জন্য গাড়ি থামিয়ে আছেন?
তুমি তো বললে মরে যাবে আমি কি বলেছি শপিংমলে যাব।
—না কিন্তু আপনি আমার জন্য গাড়ি থামিয়ে সেন এটা বিশ্বাস করতে পারছিনা।
—ওকে বিশ্বাস করতে হবে না আমি তাহলে চাই। তুমি যেহেতু যাচ্ছ না তার মানে জিনিস্টা অতটাও জরুরী না।
বলেই গাড়ি স্টার্ট দিতে যাবে চিৎকার করে ওঠে,,,
—নানা না প্লিজ আমার সত্যিই জিনিসটা খুব দরকার!
বলে তারাতারি খেয়ে নে পরে আবার জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,
—আপনি কি আমার জন্য ওয়েট করবেন নাকি চলে যাবেন।
—10 মিনিটের মধ্যে আসবে।
এতে নূপুর বুজে যায় দাঁড়িয়ে থাকবে। বড় বড় পা ফেলে শপিংমলে ঢুকে পড়ে।
__________________________
আরাফ আজকে অফিসে যায় নাই আলিয়াকে শ্বশুরবাড়ি দিতে গেছিলো সকালে। তারপর বোনের জড়াজড়িতে এই দুপুর পর্যন্ত থাকতে হয়েছে অবশেষে জোর করে মিটিং এর কথা বলে বেরিয়ে এসেছে।
একমনে ড্রাইভ করে যাচ্ছে হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে,,
ফোনের স্ক্রিনে নেহা নাম ভেসে ওঠে।
নিহা আরাফের ফ্রেন্ড বেস্ট ফ্রেন্ড বলাই চলে।
আরাফাত গাড়ি সাইট করে থামিয়ে ফোনটা রিসিভ করে।
—হ্যাঁ নিহা বল কেমন আছিস?
–আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই কেমন আছিস?
—এইতো আলহামদুলিল্লাহ!
—তা হঠাৎ আমারে মনে পড়ল তোর।
–আমার তো সবসময়ই তোদের সবাইরে মনে পড়ে কিন্তু তোরা আমাকে মনে করিস না।
—আচ্ছা আচ্ছা বল কি জন্য এই দুপুর বেলা ফোন দিছিস!
—দোস্ত আমার না লজ্জা করছে।
—আরাফা অবাক হয়ে শুনছে নেহার কথা নেহা। খুব একটা লজ্জা পায় না লজ্জা পাচ্ছে কেন হুট করে?
—কি ব্যাপার লজ্জা পাচ্ছিস কেন? কি জন্য লজ্জা পাচ্ছিস বলবি তো তাহলে বুঝবো কিভাবে
—দোস্ত আমার না বিয়ে ঠিক আছে।
–এজন্য আবার লজ্জার কি আছে? বিয়ে ঠিক হয়েছে বিয়ে করে নিবি?
—এমন ভাবে বললো যেন একটা কোন লজ্জার বিষয়;
—তা ছেলেটাকে আমি চিনি তাকে নাকি অপরিচিত কেউ?
—সায়ন
—হোয়াট?
—-এসব কখন করলি তোরা?
—সে সব পরে জানতে পারবি এখন আগামী 9 তারিখ আমার গায়ে হলুদ তার আগেদিন তুইচলে আসিস কেমন? আর শুন তুই কিন্তু আমাদের বাড়ি আসবি সায়ন এর আগে আমি তোকে বলেছি তাই তুই আমাদের বাড়িতে আসবি ওকে আর তুই কনে পক্ষ।
বলেই খট করে নেহা ফোন কেটে দেয় আর হতভম্ব হয়ে বসে আছে। এই এরা এসব প্রেম-টেম কখন আমি একবারের জন্য টের ও তো পেলাম না।
চলবে