তবুও তোমায় ভালোবেসেছি পর্ব ৮

#তবুও_তোমায়_ভালোবেসেছি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৮
সকাল বেলা বারান্দায় বসে কানে ইয়ারফোন গুছে মনের সুখে গান শুনছি আর এক মগ কফি খাচ্ছি।অনুভব করি পিছন থেকে কে জানো চুলে টানছে তাই ঘুরে তাকাতে মিষ্টার আবির রাগী মুখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে সাথে সাথে ইয়ারফোন খুলে বললাম,
“চুল টানছেন কেনো? ”
“তোমাকে যে আমি এখনো বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দেই নি এইতো তোমার কপাল ”
“সাতসকালে আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি হ্যাঁ? ”
“কি করো নি সেটা বলো? কতোক্ষণ ধরে তোমাকে ডেকেছি কোনো সাড়াশব্দ নেই, মহারানী এখানে বসে গান শুনছে ”
“ডেকেছেন কেনো? ”
“আমার সম্পর্কে একটা ভাই হয় সে এসেছে কয়েকমাস হয়তো আমাদের বাসায় থাকবে ”
“ভালো তো ”
“তুমি গিয়ে দরজা খুললে ভালো হতো, এখন ভালো হয় নি সাতসকালে আমার ঘুমটা মাটি করলো ”
“ভালো হয়েছে”
“আবার,,,,,,, ”
“মা ডাকছে আমি গেলাম ”
বারান্দা থেকে চলে না আসলে আজকে এমন ঝগড়া লাগতো যে আশেপাশের মানুষ এক জায়গায় জড়ো হতো তারচেয়ে উনার কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা ভালো।
সকালে উঠে সব রান্নাবান্নার কাজ সেড়ে রেখেছি। শ্বাশুড়ি মায়ের পায়ে ব্যাথা তাই তার রুমে খাবার দিয়ে এসে ডাইনিং টেবিলে খাবার বেড়ে আবিরকে ডাকতে যাওয়ার আগে সে হাজির হয়েছে সাথে তার সম্পর্কে ভাই হয় তাকে এনে বললো,
“এই হলো তমাল, আমার ভাই হয় ”
“জ্বি, আসসালামু আলাইকুম? ”
“ওয়ালাইকুম সালাম, ভাইয়া নতুন ভাবী দেখতে বেশ সুন্দরী “(তমাল)
“আচ্ছা আপনার বসুন, খেয়ে নেন ”
“তুমি খাবে না? ”
“পরে খাবো ”
“মিশ্মি -তিশ্মি ঘুম থেকে উঠে গেলে তোমার খেতে অনেক দেরি হবে তারথেকে এখন খেয়ে নেও ”
“হুম ”
আবিরের কথা মতো খেতে বসেছি। আবির আর তমাল কথা বলে যাচ্ছে আমি চুপচাপ কথা খাচ্ছি কিন্তু কয়েক বার মনে হলো আমার পায়ে কিছুতে যেনো খোঁচা লাগছে হয়তো বিড়াল হবে, তবে এই বাসায় তো বিড়াল নেই। তাহলে কি উনি খোঁচা দিচ্ছে কিন্তু উনি এমন করবে বলে তো মনে হয় না তাও আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
“বাসায় কি বিড়াল আছে যে আমার পায়ে খোঁচা দিচ্ছে ”
“না তো ”
“তাহলে আপনি দিয়েছেন ”
“নাহ্, কোনো দরকার হলে তোমাকে বলবো। খোঁচাখুঁচি কেনো করবো? ”
“ওহ্”
আমরা তিন ছাড়া এখানে আর কেউ নেই তাহলে কি তমাল এরকম করেছে? কিন্তু ও কেনো এমন করবে? দেখে তো মনে হয় ভালো ছেলে।
আবির অফিসে চলে গেলো, আমি নিজের রুমে মিশ্মি-তিশ্মিকে খাইয়ে দিয়ে আমার পাশে শুয়ে রেখেছি। ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠার কারনে এখন অনেক ঘুম পাচ্ছে। চোখ ঘুমে লেগে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়,
-ভাবী আপনাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি আর আপনি ঘুমাচ্ছেন?
তাড়াতাড়ি গায়ে ওড়না দিয়ে উঠে বসে উওর দিলাম,
-আপনি কি জানেন না কারো রুমে ঢোকার আগে দরজা নক করতে হয়?
-ভাবীর সাথে দেবরের সম্পর্কে এতো ফর্মালিটির দরকার হয় না।
-সেটা আপনার অন্য ভাবীদের সাথে করবেন আমার সাথে না।
-আরে মিষ্টি ভাবী রেগে যাচ্ছেন কেনো?
-আমাকে কেনো খুঁজেছেন সেটা বলুন?
-এইতো একটু গল্প করার জন্য।
-ওহ্ আচ্ছা
-ভাইয়ার সাথে আপনার সম্পর্ক ঠিক স্বামী স্ত্রীর মতো না তাই না?
-আমার স্বামী স্ত্রী তাহলে সম্পর্ক অন্য কিছু হবে কেনো?
-এতো ধাঁজ নিয়ে কথা বলা ঠিক না মিষ্টি চেহারায় মিষ্টি করে কথা বলতে হয়।
-আপনার সাথে পরে কথা হবে এখন আপনি যান
-আচ্ছা পরেই আসবো।
তমাল রুম থেকে বের হওয়ার পর দরজা লক করে দিলাম। এখন বুঝতে পেরেছি খাবার টেবিলের কাজটা তমাল করেছে, ওর কথা বার্তা ভালো না তেমন চোখের চাহনি বড্ড খারাপ।সকালের কথা মনে পরতে রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে।
সারাদিনে কাজ না থাকায় রুমে থাকতে পেরেছি, সন্ধ্যায় আবির অনেক ফুসকা -হালিম এনেছে। সবাই এক সাথে বসে খাচ্ছি তখন অনেক ঝাল লেগেছে তাই আবির পানি নিয়ে আসতে গেলো সাথে শ্বাশুড়ি মা-ও নিজের রুমে গেলো সেই ফাঁকে তমাল হঠাৎ করে আমার হাতের ফুসকা ওর মুখে নিলো,
“প্লেট ফুসকা রাখা আছে সেটা না খেয়ে আমার হাতেরটা নিছেন কেনো? এরকম অসভ্যতা আমি একদম পছন্দ করি নি ”
“পছন্দ করো না ঠিক আছে, তাহলে কি করবে ভাইয়াকে বলে দিবে দেও ”
“হ্যাঁ অবশ্যই বললো”
“বিশ্বাস করবে না ”
আবির পানি নিয়ে আসলো। আমি পানি খেতে খেতে তমাল বলে দিলো,
-ভাবীর এতো ঝাল লেগেছে তাও ফুসকা খাওয়া থাকে নি এমনি কি আমার হাতেরটা নিয়ে খেয়েছে।
তমালের কথাটা শুনে মনে চাচ্ছে ওর গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেই কিন্তু না আবির ওকে ভালো ছেলে বলে জানে।
চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here