তবুও তোমায় ভালোবেসেছি পর্ব ১০

#তবুও_তোমায়_ভালোবেসেছি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১০

“আমি আপনার ভাইয়ের বৌ, আপনি আমার সম্পর্কে দেবর হন আর আপনি কি না আমার ওড়না টেনে ধরছেন ছিঃ ছিঃ ”
“এই একদম আমাকে সম্পর্কের দোহাই দিয়ে কথা বলবে না, বিয়ে করছো একটা বুড়া লোককে আবার আমার কাছে সাধু সাজো”
“আপনাকে ভালো ভাবে বলছি, আমার ওড়না ছাড়ুন নয়তো চিৎকার করবো ”
“চিৎকার করো, আমি বলবো তুমি আমার সাথে সম্পর্কে জড়াতে চাও ”
“আপনার মতো নিচু মনের মানুষ একটাও দেখি নি”
“তোমার জন্য নিচু মনের মানুষ হতে হয়েছে, প্রথম যেদিন দেখেছি সেদিন থেকে তোমাকে পাবার জন্য মন হাহাকার করে তোমাকে আবিরের সাথে দেখতে পারি না ও তোমার থেকে বয়সে অনেক বড়। আমি তোমাকে খুব সুখে রাখতে পারবো যা আবির কখনো পারবে না।তুমি রাজি হয়ে যাও আমরা অনেক দূরে চলে যাবো।”

দু গালে ঠাসসসস্ করে থাপ্পড় লাগিয়ে দিলাম বললাম,

“তোকে কয়েকদিন অনেক সম্মান দিয়েছি কিন্তু তুই সম্মানের যোগ্য না। আর কি বললি আবির আমাকে সুখে রাখতে পারবে না তাই না?তাহলে শোন তুই এক যুগ তপস্যা করলেও আবিরের মতো হতে পারবি না। আবির আমাকে যতোটা সুখে রেখেছে তা আগে কোনোদিন থাকি নি ”

আমি কথাগুলো শেষ করা মাত্র আবির এসে তমালের শার্টের কলার্ট ধরে দুটো ঠাসসসস্ করে থাপ্পড় দিলো। শ্বাশুড়ি মা এসে বললো,
“আবির ওকে এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে বের করে দে, আপন বুঝে ঘরে কাল সাপ পুষেছি”
“ভাইয়া বিশ্বাস করো আমি কিছু করি নি তোমার বৌ আমার কাছে এসেছে ” (তমাল)

আবির আরো একটা তমাকে কষিয়ে থাপ্পড় মেরে বলে,

“ইভাকে আমি কয়েকদিন ধরে চিনলেও ওকে ভালো করে জানি ও খুব ভালো মেয়ে। অন্যের উসকানি মূলককথা শুনে বৌকে অবিশ্বাস করে বোকামি করবো না। ইভাকে তুই আমাদের প্রথম দিন এসে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেছিস সেটা বুঝেছি তারপরও কিছু বলি নি কারন আমি চেয়েছিলাম ইভা নিজে থেকে আমাকে সব কিছু ভরসা করে বলুক তারপর অবশেষে ও আমাকে আজকে অফিস থেকে আসার পর তোর ব্যপারে বলে ”
“শুধু তুই না ইভা আমাকেও বলেছে কিন্তু ও আমাকে বারন করেছে কিছু বলতে যাতে তোকে হাতেনাতে ধরতে পারি ” (শ্বাশুড়ি মা)
“তোমার আমাকে মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছো, বিশ্বাস করো আমি ভাবীর সাথে তেমন কিছু করি নি ” (তমাল)
“খারাপ কিছু করার আগেই তোর খারাপ উদ্দেশ্য ধরতে পেরেছি। সকালে ড্রাইনিং টেবিলে ওর পায়ের উপর তুই পা রেখেছিস বলে ও তোকে লাথি মারে সেই রাগ তুই পুষে রেখেছিস কখন ওকে একা পাবি আর আজকে যখন ইভা আমাকে সব বলে দিছে তাই আমি বলেছি এক গ্লাস পানি নিয়ে আসতে কারন এই সুযোগে তুই ইভাকে দেখলে তোর রাগ মেটাতে পারবি এবং আমিও তোর আসল রুপ দেখতে পারবো ” (আবির)
“বাহ্ বাহ্ আমার থেকে দেখি তুমি বেশি পাকা খেলোয়ার, আমাকে যে এতোক্ষণ এতো জ্ঞান দিলে তাহলে তুমি কেনো প্রথম ভালোবাসা ভুলে এই মেয়েকে নিয়ে আছো? এতো সহজে সব ভুলে পুরোনো ভালোবাসা ভুলে কয়েকদিনের চেনে মেয়েটা তোমার আপন হয়ে গেলো ” (তমাল)

এতোক্ষণ চুপ করে থাকলে এবার আর চুপ করে থাকতে পারলাম, স্বামীর অপমান কেনো মেয়ে সহ্য করে না তাই আমি বললাম,

“এই মানুষটা তার ভালোবাসার মানুষকে ঠকিয়ে আমাকে নিয়ে থাকছে না। এমনি কি একমুহূর্তে জন্যও ঐশী আপুকে ভোলে নি। তার ভাগ্যে ভালোবাসার মানুষ বেশি দিন ছিলো না, শুধু মাত্র তার বাচ্চাদের জন্য আমাকে বৌ করে এ বাড়িতে এনেছে। আমার স্বামীর নামে আর একটা খারাপ কথা বললে জিহ্বা টেনে ছিড়ে ফেলবো ”

শ্বাশুড়ি মা তমালের সব ব্যাগ গুছিয়ে এনে ওর গালে ছুড়ে মেরে বললো,
“আমার বাড়ি থেকে বিদায় হ ”

আবির দরজা খুলে ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিলো। মা নিজের রুমে চলে গেলো, রাতে কারো খাওয়া হলো না।
আবির রুমে এসে বারান্দায় গিয়ে সিগারেট টানতে শুরু করে, তমালের কথায় কষ্ট পেয়েছে সেটা খুব ভালো ভাবে বুঝেছি।
সিগারেটের গন্ধে বাচ্চাদের কষ্ট হবে তাই ওদের মায়ের রুমে দিয়ে এসে আবিরকে বললাম,
“নিজেকে এতো কষ্ট দিয়ে কি লাভ হয়? আপনার যে দুটি মেয়ে আছে সেটি ভুলে যান কেনো? ওদের নিয়ে সময় কাটান তাতে আপনার কষ্ট কমে যাবে ”

আবির আমার কথার উওর না দিয়ে প্যাকেট দিয়ে একটা সিগারেট বের করে জ্বালালো। আমি আবার বললাম,

“আমার কোনো ভুল হয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দেন বা আমাকে শাস্তি দেন তবুও নিজের ক্ষতি করবেন না। আমি, মা,মিশ্মি- তিশ্মি সবার ভরসা আপনি। আপনকে কষ্টে থাকলে দেখলে আমাদের কষ্ট হয় সেটা কি বুঝেন ”

আমরা কথাটা শুনে আবির বললো,

“তুমি অনেক ভালো মেয়ে কিন্তু তোমাকে আমার মনে হয়তো কখনো জায়গা দিতে পারবো না। একটা সময় তোমার মনে হতে পারে তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে তখন কি সত্যি চলে যাবে? “”

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here