তবুও তোমায় ভালোবেসেছি পর্ব ১১

#তবুও_তোমায়_ভালোবেসেছি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১১

“দুজন মানুষ এক ছাঁদের নিচে বাস করলে তাদের মধ্যে ভালোবাসা হবেই তাই চলে যাওয়ার প্রশ্ন আসে না”
“আমার ভালোবসার কথা বাদ দেও, মিশ্মি তিশ্মি কি তোমাকে মেনে নিতে পারবে “?
“যদি কখনো আমার মেয়েরা আমাকে চলে যাতে বলে ওদের মায়ের অভাব পূরণ করতে না পারি তাহলে সত্যি চলে যাবো কিন্তু আপনি চলে যেতে বললে যাবো না”
“তোমার কথাটা আমি বিশ্বাস করতে পারি নি কারন তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে দিয়েছো তার প্রতি তোমার কোনো অধিকার খাটাতে পারো নি আর সেই তুমি পারবে আমার দেওয়া কষ্ট সহ্য করতে? ”
“হাহাহাহ্ আপনার প্রতি অধিকার খাটাবো দিবেন নাকি ”
“না না আমার প্রতি কেনো অধিকার খাটাবে? ”
“বারে আপনি তো আমার স্বামী আপনার প্রতি তো আমার সব চেয়ে বেশি অধিকার ”
“সে যাই হোক, এখন ঘুমাতে যাও ”
“জানেন আপন মানুষ কষ্ট দিয়ে কথা বললে কলিজা গিয়ে ব্যাথা লাগে ”

আবিরের সাথে কথা না বাড়িয়ে মায়ের রুমে গেলাম।
“তুমি এসে ভালো করেছো, দেখো ওরা আমার কাছে ঘুমাচ্ছে না ”
“ওদের নিয়ে আমি আপনার সাথে ঘুমাবো ”
“কেনো মা, আবিরের সাথে কি তোমার রাগারাগি হয়েছে?”
“না মা, উনি কিছু বলে নি এমনি আপনার সাথে ঘুমাবো ”
“তবুও তুমি তোমার রুমে গিয়ে ঘুমাও ”
“আপনার মেয়ে যদি বায়না করতো আপনার সাথে ঘুমানো জন্য তাহলে কি ফিরিয়ে দিতেন “(মাকে একটু ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করলাম কারণ আবিরকে এখন থেকে আমি প্রতি পদে পদে বুঝাবো জোর করে সব সময় অধিকার খাটানো যায় না)
” আচ্ছা তোমারা আমার সাথে ঘুমাও আমি আর কিছু বললো না ”

ওদিকে আবির রুমে এসে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করে আছে ইভা বাচ্চাদের নিয়ে এখনো আসছে না কেনো? কোনো উপায় না পেয়ে বাসার অন্য রুমগুলো দেখে সেখানে আবার ইভা ঘুমায় নি তো? মায়ের রুমের দরজা একটু খুলে রাখা আর কথা শুনা যাচ্ছে তাহলে ইভা মায়ের রুমে আছে।

“মা তুমি কি ঘুমিয়েছো? ”
“না ভিতরে আয়”
“ওরা কি তোমার কাছে ঘুমাবো “?
” হ্যাঁ, অনেক রাত হয়েছে তুইও রুমে গিয়ে ঘুমা ”
“হুম ”

আবির রুমে চলে গেলো, আমি কিন্তু ঘুমাইনি। আজকে রাতে যে আবিরের ঠিক মতো ঘুম হবে না সেটা খুব ভালো করে জানি তাও মায়ের রুমে ঘুমাবো।
সকাল সকাল উঠে ব্যাগ গুছিয়েছি। বাচ্চাদের খাইয়ে দিয়ে রেডি করে মায়ের কাছে রেখে এসে নিজে রেডি হওয়ার জন্য রুম গিয়ে দেখি আবির রুমে নেই হয়তো ওয়াস রুমে গিয়েছে।
ড্রেসিংটেবিলের উপর হিজাবের পিন রেখেছিলাম সেটা এখন আবার খুঁজে পাচ্ছি না। হিজাব পড়া হলো না তাই ওড়না ভালো করে মাথায় পেচিয়েছি।

“এরকম ওড়না পেচিয়ে রেখেছো কেনো? হিজাব পড়ো।”
“পড়বো না ”
“কেনো পড়বে? ”
“হিজাব বাঁধার জন্য যেসব পিন লাগে সেগুলো খুঁজে পাচ্ছি না ”
“ওগুলো তো আমি ফেলে দিয়েছি, এমন ভাবে আমার হাতে ঢুকে গিয়েছিলো যে রক্ত বের হয়েছে ”
“হবেই তো পারেন তো শুধু সিংহর মতো গর্জন করতে আর কিছু পারেন নাকি ”
“কিহ্ আমি সিংহ তাহলে তোমাকে এক্ষুনি ছিড়ে খাবলে খাই”
“আহ্ আমি কি সেটা বলেছি ”
“তোমার উপর এমনিতে মাথা গরম আছে, এখন নতুন করে মাথা গরম করো না ”
“কেনো আমি কি করেছি “?
” রাতে মায়ের রুমে ঘুমানোর কি দরকার ছিলো জানো না আমার মেয়েদের ছাড়া আমার ঘুম হয় না ”
“অধিকার খাটিয়ে মেয়ে -বৌকে নিয়ে আসতেন ”
“আমাদের রওনা দিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ”
“জানি তো উচিত কথা বললে কথার উওর থাকে না হুহ”

বাচ্চারা, মা, আবির, আমি বাবার বাড়িতে গেলাম। এতোদিন পরে নিজের চিরচেনা বাড়িতে এসে এতো বেশি ভালো লাগছে যা বলে বুঝাতে পারবো না। আবির সবার সাথে মানিয়ে নিয়েছে কেউ বলতেই পারবে না তার সাথে আমার স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক নেই তবুও আমি খুশি আমার বাচ্চাদের জন্য।
আমরা এসেছি শুনে ফুপি এসেছে তাও খুব খুশির খবর নিয়ে তানিয়ার বিয়ে।
সারাদিন সবার সাথে ছিলাম তাই আবিরের সাথে কথা হয় নি সন্ধ্যায় নিজের রুমে এসে দেখি আবির শুয়ে শুয়ে ফোনে গেমস খেলছে। আমাকে দেখা মাত্র বললো,

“তোমার ফুফাতো বোনের বিয়ে বলে কথা তোমার শপিং করতে হবে না? ”
“হ্যাঁ কিন্তু আপনার টাকায় না ”
“তোমার খুব বেশি জেদ ”

বলে আমাকে বিছানার উপর ফেলে দিলো।

চলবে,,,,,,,

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here