তুমিই আমার প্রিয় নেশা পর্ব ১২+১৩

#তুমি_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:12+13
#Suraiya_Aayat

” তোমার মামু এসেছিলেন আয়াশ, তিনি সব সম্পত্তি নিজের নামে করবেন তাই আমাদের সকলকে সেখানে উপস্থিত থাকতে বলেছেন ৷”
আয়াশ স্থির দৃষ্টিতে ওর মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে বলল
” হমম যাবো, নিশ্চয়ই যাবো, না গেলে কি হয় বলো !”
আয়াশের বাবা মুচকি হেসে বললেন
” সে তো যাবেই কিন্তু আমি যে যাবো না আয়াশ !”
আয়াশ খানিকটা উচ্চস্বরে হেসে বলল
” তোমাকে তো যেতেই হবেই, তুমি না গেলে কি করে হবে বলো ‌৷ তাছাড়া মামার বাড়ির আদর মিস করলে হয়,তাই আমি তো এক সপ্তাহ আগে যাবো ৷”
কথাটা বলে ওর বাবার দিকে চোখ টিপ মেরে আয়াশ বেরিয়ে গেল ৷
আয়াশের বাবা আয়াশের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলেন, উনি নিজে কখনো ওনার ছেলেকে বুঝে উঠতে পারেননি ৷তবে আয়াশ যা করে তার পিছনে নিশ্চয়ই কোন না কোন কারন থাকে তা উনি জানেন ৷

” ভাবী আজকে একটু বাইরে যাবে ? তুমি তো বাসার বাইরে কোথাও যাও না, আমি তো না হয় টিউশনের জন্য একটু বাইরের হাওয়া বাতাস পাই কিন্তু তুমি তো ঘর থেকেই বার হওনা ৷ আচ্ছা তোমার কি বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না নাকি ভাইয়ার ভয়ে যেতে পারোনা কোনটা ?”
নূর মুচকি হেসে বলল
” আচ্ছা ইফা তুমি কি সত্যিই জানো না যে তোমার ভাইয়া কি করে ? তার ঘরের সেই গোপন কক্ষটা ঠিক কোথায় ৷”
ইফা কপাল কুচকে বলল ” আম নিজেও তো জানতে চাই যে ভাইয়া কি করে বা তার ঘরের গোপন কক্ষটা ঠিক কোথায় ৷তবে এটুকু বলতে পারি আহান ভাইয়া জানেন যে আয়াশ ভাইয়া কি করেন ৷ আয়াশ ভাইয়া আহান ভাইয়াকে অনেক ভালোবাসে ,তেমনি আহান ভাইয়াও আয়াশ ভাইয়াকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে তাই উনি নিশ্চিয়ই বলতে পারবেন যে কি করে ৷ তুমি চাইলে তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারো ৷”

নূর আহানের নামটা শুনে অনুভূতিহীন হয়ে বলল
” আমার কোন ইচ্ছা নেই ওনার সাথে কখনও কথা বলার , উনি আমার সাথে যা করেছ তা আমি কখনও ভুলবো না, উনি পুরো বিয়ে বাড়ির সব লোকের সামনে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে ওনার ভাইয়ের হাতে আমাকে তুলে দিয়ে চলে এসেছিলেন ,আমি ওনাকে কখনও ক্ষমা করবো না, কখনও না ৷” কথাগুলো বলতে বলতে নূরের চোখে জল চলে এলো ৷ বারবার সেই দিন গুলোর কথা মনে পড়ে ৷
ইফা নূরের অবস্থা দেখে সামাল দেওয়ার জন্য বলল
” ভাবী তুমি কোন ইয়ার অবধি পড়াশোনা করেছো ?”
নূর খানিকটা স্বভাবিক হয়ে বলল ” অনার্স 2nd ইয়ার অবধি ৷”
ইফা প্রশ্ন করে উঠলো
” তুমি আর পড়াশোনা কন্টিনিউ করবে না ? ”

নুর আগের দিনের রাতের কথা মনে করে বলল
” করছি তো ক্লাস , তোমার ভাইয়ার কাছে স্পেশাল ক্লাস ৷”
খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে কথাটা বলল নূর ৷ ইফা মুখ চেপে ফিক করে হেসে বলল
” ভাবি স্পেশাল ক্লাস চালিয়ে যাও ৷”

নূরের ইফার হসির আওয়াজ শুনে হুশ ফিরল ,বুঝতে পারলো যে ওর অজান্তে মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে কথাটা ৷ তারপর নূর নিজের মাথায় একটা চাপট মেরে বলল
” সরি আমার মুখ ফসকে কথাটা বেরিয়ে গেছে ৷ আমি তা বলতে চাইনি ৷”

ইফা নূরের গালটা টেনে দিয়ে বলল
” একটা কথা কি জানোতো ভাবী ! আচমকাই মুখ ফসকে মানুষ সত্যি কথা বলে ফেলে ৷তুমিও যা বলেছো সত্যই বলেছো আমি জানি ৷”

নূরের লজ্জা লাগছে খানিকটা , কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলেছে ৷ কিন্তু এটা কথা তো সত্যিই যে আয়াশ নূরের সাথে যত খারাপ ব্যাবহার ই করুক না কেন দিন শেষ নূরের অভিমান গুলো ভালোবাসা দিয়ে জয় করে নেই ৷ নূরের কথার ভাবান্তর ঘটিয়ে ইফা বলল
” আচ্ছা ভাবী ভাইয়া অনেক রোমান্টিক তাইনা! ভাইয়াকে দেখেই তো মনে হয় যে সে কতো রোমান্টিক ৷”
নূর ধমকের সুরে ইফাকে বলল
” ইফা, তুমি পিচ্চি মেয়ে তবে বেশিই পাকা পাকা কথা বলো ৷”
ইফা মুখ চেপে হেসে বিছানা থেকে নেমে নূরের হাত ধরে বলল ” হু আমি বেশিই পেকে গেছি বা কাচা আছি যাই হোক এখন চলো ৷”

নূর অবাক হয়ে বলল
” কোথায় যাবো ?”

ইফা মুচকি হেসে বলল
” চলো আজ ঘুরতে যাবো , তুমি তো সারাদিন বাসায় বসে বসে বোর হও নিশ্চয়ই তাই আজকে ঘুরতে যাবো ৷”
নূর ভয়ার্ত কন্ঠে বলল
” নাহ কোথাও যেতে হবে না, বাসাতেই থাকবো , তোমার ভাইয়া জানতে পারলে আমার হাত পা ভেঙে রেখে দেবে ৷ তুমি গেলে যাও ইফা আমি কোথাও যাচ্ছি না ৷”
ইফা কপাল চাপড়ে নূরকে আশস্ত করে বলল
” আরে ভাবী ওত ভয় পাও কেন বলোতো ! ভাইয়া ই বললো তোমাকে ডেকে আনতে , ঘুরতে যাবে সে তোমাকে নিয়ে ৷”
নূর অবাক হয়ে বলল
” সত্যি নাকি তুমি মিথ্যা বলছো ? উনি নিজে বলেছেন?”

ইফা নূরের হাত ধরে টাতে টাতে জানালার কাছে নিয়ে গিয়ে বলল
” দেখ ভাইয়া গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, বেশি দেরি করো না আবার, ভাইয়া কিন্তু রেগে যাবে বলে দিলাম ৷”

নূর দেখলো আয়াশ গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে , শার্টের ওপরের দিকে দুটো বোতাম খোলা, কানে ফোন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, বোঝা যাচ্ছে কারোর সাথে কথা বলছে ৷
নূর আয়াশের দিক থেকে চোখ ফেরালো ৷ ইফা বলল
” দেখেছো ! বিশ্বাস হয়েছে তো এবার ? এখন তাড়াতাড়ি চলো নাহলে ভাইয়া রেগে যাবে ৷”

ইফা নুরকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নীচে নিয়ে গেল ৷ নূর একটা লাল টুকটুকে শাড়ি পরে আছে, চুলগুলো খোলা, আর চোখে কাজল ৷ নূর সব সময় কাজল পরতে ভালোবাসে তাই অলটাইম পরে থাকে ৷ নূরের এই অতি সাধারণ লুকটাই আয়াশের কাছে অনেক প্রিয় ৷ নূর আয়াশের সামনে দাড়িয়ে আছে, ইফা এখনো ওর হাত ধরে আছে যেন ও বাচ্চা মেয়ে আর ওকে ছেড়ে দিলেই পালাবে ৷
ওরা দুজন দাঁড়িয়ে আছে, আয়াশ ওদের দুজনের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো, ফোনে বলে উঠলো
” ইয়েস ডারলো আই উইল কল ইউ ব্যাক ৷ টেক কেয়ার ইউরসেলফ ৷ লাভ ইউ ৷”
কথাটা শুনতেই নূর চমকে উঠলো ৷ কই আয়াশ তো আজ অবধি কখনো ওকে ভালোবাসি কথাটা বলেনি তবে এই মেয়েটাকে কত সহজেই ডারলো আর আই লাভ ইউ বলল ‌৷ কথাটা ভেবে নূরের মনের মাঝে সুপ্ত এক রাগানুভুতি হলো তবুও নিজেকে বুঝতে দিলো না ৷ আয়াশ কলটা কেটে বলল
” উঠে বসো ৷”
ইফা পিছনের সিটে উঠে বসলো, নূর ও ইফার সাথে বসতে গেলেই আয়াশ ওর হাত ধরে আটকে বলল
” তুমি কোথায় যাচ্ছো ?”
কথাটা শুনে নূর কেঁপে উঠলো ,তাহলে কি আয়াশ ওকে নিয়ে যাবে না ? শুধুই কি ইফাকে নিয়ে যাবে ?কথাটা ভেবে নূরের চোখে জল চলে এলো নিমেষেই ৷ আয়াশ হাত ধরে খানিকটা কাছে এনে বলল
” আমার পাশে বসবে তুমি , পিছনে কেন বসছো ? বাই দা ওয়ে লুকিং হট ৷” কথাটা বলে চোখ টিপ মেরে নূরকে ছেড়ে দিয়ে ড্রাইভিং সিটে গেল আয়াশ ৷ নুর মনের মাঝে একটু শান্তি অনুভব করলো ৷ নুর গিয়ে আয়াশের পাশে বসলো, আয়াশ লুকিং গ্লাসটা ঠিক করে নিজেকে দেখে নিয়ে নূরের দিকে ঘোরালো যাতে নূরকে ভালোমতো দেখা যাই ৷ নূর আজ অনেক দিন পর কোথাও ঘুরতে যাচ্ছে, মনটা একদম তরতাজা লাগছে ৷ আয়াশ কিছুখন পরপর নূরে দেখছে, নূর তা খেয়াল করতেই ওর নিজের কেমন একটু ইতস্তত বোধ হচ্ছে ৷
ইফা মাঝে মাঝে এটা ওটা বলছে ওদেরকে ৷ প্রায় 20 মিনিট পর আয়াশ ধানমন্ডির একটা পার্কের সামনে এসে গাড়ি থামালো , ওরা গাড়ি থেকে নামতেই নূর আর ইফা নামলো ৷ পার্কের ভিতর কত মানুষজন, কত বাচ্চারা খেলা করছে ,কত নতুন দম্পতি বসে আছে, কতো প্রেমিক প্রেমিকা ছবি তুলছে ,হাওয়াই মিঠাই খাচ্ছে ৷
আয়াশ নুরের হাতটা মুঠিবদ্ধ করে বলল
” চলো ৷ ইফা ণুই আগে আগে চল আমরা পিছন পিছন যাচ্ছি ৷”
ইফা আগে আগে যেতে লাগলো ৷ ইফা গিয়ে একটা দোলনায় গিয়ে বসলো , নূর আর আয়াশ দাঁড়িয়ে আছে ৷ হঠাৎ একটা হাওয়াই মিঠাই নিয়ে ছোট্ট 10 কি 11 বছর বয়সী একটা ছেলে বলে উঠলো
” আপা হাওয়াই মিঠাই নেবেন?” নূর ছেলেটার দিকে তাকালো, বাচ্চা ছেলেটার মুখটা কতো মায়াবী, দেখলেই মায়া হয়, কিন্তু ওর কাছে যে টাকা নেই যে ও কিবে কিন্তু আয়াশকেও ও কখনো বলবে না কিনে দেওয়ার জন্য ৷ তাই কিছুখন ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ছেলেটা আবার বলে উঠলো
” আফা নেন না, অনেক ভালো খেতে , দাম কমই আছে ৷ দয়া করে নেন আফা ৷”
নূর কি বলবে বুঝতে পারছে না, একটু ঘাবড়ে গেল ৷ আয়াশ হঠাৎ জিজ্ঞাসা করে উঠলো
” কি হলো আফু সোনা নেবে ? কিছু বলছো না যে ৷”
আয়াশের এমন মিষ্টি কন্ঠস্বর শুনে নূর আয়াশের দিকে তাকালো ৷ আয়াশকে আজকে একদম অন্য রকম লাগছে , কি নিষ্পাপ আর কতো সহজ সরল, যার মুখে আছে একরাশ মায়া যে মায়া তে সহজেই জড়িয়ে যাওয়া যাই ৷ নূর আয়াশের দিকে তাকিয়ে রইলো , বেশ অনেকখন তাকিয়ে রইলো, আজ কেন জানি না মানুষটাকে বোঝার ইচ্ছে যাচ্ছে প্রবল ৷ নূর আয়াশকে নিয়ে আকাশ পাতাল ভাবছে তখন আয়াশ একটাহাওয়াই মিঠাই নূরের সামনে ধরে বলল
” নাও ৷”
নূরের ঘোর যেন হঠাৎ ভেঙে গেল, আয়াশের হাতে হাওয়াই মিঠাই টা দেখে চমকালো না বরং একরাশ ভালো লাগা কাজ করলো ,তাহলে কি মানুষটা দিনকে দিন ওর কাছে সহজ হয়ে যাচ্ছে নাকি সে নিজেকে আর রহস্যময় হিসাবে নূরের সামনে ধরা দিচ্ছে না কোনটা ?

নূর হাওয়াই মিঠাই টা নিতে যাবে তখনই কেউ খপ করে হাওয়াই মিঠাইটা নিয়ে পিছন থেকে আয়াশকে জড়িয়ে ধরলো , নূরের চক্ষু চড়কগাছ ৷ আয়াশ পিছন ঘুরে দেখে একটা মেয়ে যে আয়াশের ক্লাসমেট সেরিনা ৷ সেরিনাকে দেখে আয়াশ অবাক হয়ে বলল
” সেরিনা তুমি এখানে !”
নূর শুধূ দুজনের কাজ দেখছে, মেয়েটার এমন কাজে নূর ভেবেছিলো আয়াশ হয়তো তাকে কয়েকঙ চড় থাপ্পড় মেরে দেবে কিন্তু নাহ, আয়াশ কিছু বললো না উল্টে মেয়েটাকে দেখে আরো উচ্ছাসিত হয়ে গেল ৷ নূরের একটু রাগ লাগছে মেয়েটার ওপর, তাছাড়া মেয়েটা ওর হাওয়াই মিঠাইটা কেড়ে নিয়েছে ৷ আয়াশ খুশি হয়ে বলল
” সত্যি তোমাকে এখানে দেখবো আনএক্সপেকটেড, সত্যিই ভাবতে পারিনি ৷ ”
সেরিনা মুচকি হেসে বলল
” তোমার আমাকে মনে আছে আয়াশ ?”

” মনে থাকবে না আবার ! তুমি হলে আমাদের কলেজের ক্রাশ কুইন আর তোমাকে মনে থাকবে না?”

সেরিনাও মুচি হেসে আয়াশের নাকটা টেনে দিয়ে বলল
” আর তুমি হলে ক্রাশ কিং , তোমার ওপর যে কতো মেয়ে ক্রাশ খেতো তা বলার বাহিরে ৷”
আয়াশ চোখ টিপ মেরে বলল
” আর তুমি ?”
সেরিনা মুচকি হেসে বলল
” ধ্যাত তুমিও না, এগুলো আবার কেউ বলে !”লজ্জা পেয়ে বলল ৷

আয়াশ আর সেরিনার এমন আবেগঘন কথাবাত্রা শুনে নূর রিতীমতো বিরক্ত ৷ ওর আর কোন ইচ্ছা নেই ওদের কথা শোনার , তাই রেগে ওখান থেকে চলে গেল আয়াশকে কিছু না বলে ৷ ইফার পাশে দোলনায় গিয়ে বসলো নূর,দূর থেকে দুজনকে দেখছে , সেরিনাকে দেখে ওর রাগ বাড়ছে , আয়াশের প্রতি রাগটা চপা অভিমানে পরিনত হচ্ছে ক্রমে ক্রমে ৷
সেরিনা নূরকে চলে যেতে বলল
” ওই মেয়েটাকে চিনলাম না তো ?”
আয়াশ পাশ ফিরে দেখলো নূর নেই, তারপর পিছন ঘুরে দেখলো নূর একমনে দোলনা চড়ছে ৷ আয়াশ নূরের থেকে নজর সরিয়ে বলল
” কেমিষ্ট্রির ভাষায় আমার অক্সিজেন ৷ আর বায়োলজির ভাষায় আমার হার্ট ,লিভার কিডনি এভরিথিং আর আমার ভাষায় মাই লাইফ ৷
সেরিনা মুচকি হেসে বলল
” ওই হোই আয়াশ এতো রোমান্টিক তা তো জানতাম না , বাই দা ওয়ে সি ইজ কিউট ৷”
আয়াশ মুচকি হাসলো ৷ ওরা নিজেরা নিজেরা কথা বলছে ৷
নূর একমনে দোল চড়ছে আর ওদের দিকে তাকাচ্ছে , ওদের কে দেখতে রিতি মতো বিরক্ত লাগছে বলে নূর উল্টো দিকে ঘুরে বসলো যাতে ওদের দুজনকে একসাথে না দেখতে হয় ৷
হঠাৎ পিছন থেকে কেউ দোল দিতে লাগলে নূর ভাবলো আয়াশ ৷নূর রেগে বলল
” কি করতে এসেছেন এখানে ? কথা শেষ? প্রেমালাপ শেষ? যান যেখানে ছিলেন সেখানে যান ৷”
পিছন থেকে কোন উত্তর এলো না , মানুষটা আরো জোরে জোরে দোল দিতে লাগলো,নুর দোলনার লোহার শিকলটা শক্ত করে চেপে ধরে বলল
” এখন এখানে দোল দিতে এসেছেন? যান লাগবে না আমার ৷”
এবার খুব বেশী গতিতে দোল দিতে লাগলে নূর নিজেকে শক্ত করে দোলনায় আটকে রাখার চেষ্টা করলো, একটা সময় নূরের মনে হতে লগলো যে ও হাওয়াই ভাসছে , নূর ভয় পেয়ে বলল
” কি হচ্ছে টা কি থামান বলছি , আমার ভয় লাগছে, আর এতো জোরে দোল দিচ্ছেন কেন? থামান বলছি !”
তবুও মনুষটার থামছে না, এদিকে নূর মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যাওয়ার উপক্রম ৷ ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে , এই বুঝি পড়ে গিয়ে পাচিলের সাথে ধাক্কা খায় ৷ নূর এবার ভয় পেয়ে পিছন দিকে ঘুরে বলতে গেলেই মানুষটা যেন তার গায়ের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে দোল দিলো আর নূর তাল সামলাতে না পেরে ছিটকে দূরে পড়ে গেল ৷
হঠাৎ নুরের গলার জোরালো আওয়াজ শুনে আয়াশের বুকের ভিতর ধক করে উঠলো ৷ কিছু খনের জন্য মনে হলো ওর হৃদপিন্ড কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে ৷ নিমেষেই আশেপাশ থেকে চিৎকারের আওয়াজ আসতেই আয়াশ পিছন ঘুরলো , নূর মাটিতে পড়ে আছে রক্তাক্ত অবস্থায় , নাক মুখ থেকে রক্ত বার হচ্ছে , মাথ ফেটে গেছে ৷ আয়াশ উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলে উঠলো
” আফু সোনা !”

#চলবে,,,,.

পুরোটা পড়ে কেমন লাগলো জানাবেন প্লিজ😷 ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here