তুমিই আমার প্রিয় নেশা পর্ব ৪৭+৪৮

#তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:47
#Suraiya_Aayat

আহান ফিরেছে আজ দুই দিন, সাথে করে ছোট বাচ্চা ছেলে আর মেয়ের অনেক জামকাপড় নিয়ে এসেছে, নূর সহ পরিবারের সবাই অবাক ভীষনরকম ৷ নূর এখন আর আহানের সাথে আগের মতো রুক্ষ ব্যাবহার করে না,,নিজের ভাশুর হিসাবে অনেক শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলে আর ব্যাবহার ও করে ৷ কিছুখন আগেই সবাইকে আহান জানিয়েছে যে ইফাকে বিয়ে করতে চায়,,ইফা তো শুনে সেখান থেকে ছুটেছে আর ইফার কান্ডে সবাই হো হো করে হেসেছে ৷ খুব শীঘ্রই ওদের এনগেজমেন্ট হবে ৷
ড্রাইভ করছে আয়াশ পাশে বসে আছে নূর, গন্তব্যস্থলটা অতি পরিচিত, মায়ার বাসা ,,নূর আর আয়াশ সেখানেই যাচ্ছে ৷ আজ নূর আর আয়াশ নূরের মা কে নূরের বাবার বাসায় দিয়ে আসতে গিয়েছিলো তার পর সেখান থেকে জানতে পারে যে মায়ার সাথে রেদোয়ানের গুরুতর ঝামেলা হওয়ার দরুন তাদের মাঝে যোগাযোগ বন্ধ তাই নূর আর আয়াশ ওনাকে ড্রপ করে দিয়ে মায়ার বাসাতে যাচ্ছে যদিও রেদোয়ান অনেকবার না করেছে যে তারা যেন না যায় কিন্তু নূর রেদোয়ানকে কথা দিয়ে এসেছে যে তাদের মধ্যেকার সমস্ত মনোমালিন্য দূর করেই ছাড়বে ৷
আয়াশ আর নুরের টুকটাক আলাপচারিতার মাঝে শেষ হলো স্বল্প রাস্তা, অর্থাৎ মায়ার বাসা ৷ কোন রকম কোন দ্বিধা বোধ না করে আয়াশ আর নূর বাসাতে ঢুকলো, কলিংবেল বাজাতেই প্রায় 1 মিনিট পর মায়া দরজা খুললো, দরজায় আয়াশ আর নূরকে দেখে অবাক হলো বড্ড , খানিকটা ইতস্তত কন্ঠে প্রশ্ন করে উঠলো
” তোমরা !”

নূর মায়ার হাতের দিকে তাকিয়ে বলল
” তোমার হাত ঠিক হয়ে গেছে ভাবী ?”

মায়া মাথা নাড়িয়ে বলল
” হমম , আসো , ভিতরে এসে বসো ৷”

নূর আর আয়াশ ভিতরে ঢুকলো ৷
সোফাতে বসে আয়াশ প্রশ্ন করে উঠলো
” আন্টিকে কোথাও দেখছিনা যে , উনি কি বাসাতে নেই ?”

মায়া ওর মায়ের রুমের দিকে একবার তাকিয়ে বলল
” আসলে আম্মু এটু অসুস্থ তো তাই ঘরেই ঘুমিয়ে আছে ৷”

নূর বেশ ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে বলল
” কি হয়েছে আন্টির ৷”

মায়া মাথা নীচু করে রইলো বেশ কিছুখন তারপর থেমে ভলল
” তোমরা হঠাৎ এলে, কোন দরকার !”

নূর মায়ার পাশে দাঁড়িয়ে ওর কাধে হাত রেখে বলল
” হমম দরকার তো বটেই, তোমাদের দুজনের ভিতরকার মনোমালিন্য দূর করতেই আজ ছুটে আসা , অনেক তো করলে অভিমান এবার না হয় দুজনের এক হওয়ার পালা ৷”

মায়া এবার নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে হেসে বলল
” নাহ ,তার আর দরকার নেই, যেমন আছি বেশ আছি , বাকি জীবনটা আম্মুকে নিয়েই কাটিয়ে দেবো ৷”

” উহু তা হচ্ছে না, ভাইয়ার সাথে আল্লাহ তোমার ভাগ্য জুড়ে রেখেছেন তা এতো সহজে ছেড়ে দিলে হবে নাকি !”

মায়া কথা ঘোরানোর জন্য বলল
” তোমরা বসো আমি তোমাদের জন্য চা করে আনি ৷”

আয়াশ বলে উঠলো
” আন্টির সাথে আগে দেখা করি তারপর বাকি কাজ ৷”
কথাটা বলে নূর কে নিয়ে মায়ার মায়ের ঘরের দিকে গেল ৷ মায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিচেনে গেল ৷ সেদিনের পর থেকে মায়া নিস্তব্ধ হয়ে গেছে, ওর আম্মু ও এতো কিছু মানতে না পেরে অসুস্থ তার পর থেকে ,একা সংসারে মেয়েটার বিয়ে দেখে যেতে চান উনি ৷”

নূর আর আয়াশ কথা বলছে , তখন ঘরে ট্রে নিয়ে ঢুকলো মায়া ৷ মায়া আসতেই দেখলো ওর মা হাসছে, আজ বহুদিন পর ও ওর মায়ের মুখে হাসি,দেখেছে , অনেকদিন মন খুলে হাসেননি উনি তবে এখন ওনার হাসিটা প্রানবন্ত , মায়ার ও মনটা ভরে গেল তবে তাদের কথোপকথনের বেশিরভাগগে কেন্দ্রবিন্দু ও তা ওর বুঝতে বাকি হয়নি আগেও ৷

মায়া আসতেই মায়ার মা মুচকি হেসে বলল
” শেষমেশ আমার ইচ্ছাটা পূরন হলো ,তোর আর রেদোয়ানের বিয়েটা হলো আমার সবচেয়ে বড়ো ইচ্ছা ৷”

মায়া বিরস কন্ঠে বলল
” সেটা সম্ভব না, আমার পক্ষে আর এই সম্পর্কে ফিরে যাওয়া সম্ভব,না তাছাড়া দোষটা আমারই ছিলো ৷”

কথাটা বলে মায়ার চোখে জল চোলে এলো , চোখটা মুছে নিয়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বলল
” এই নাও তোমাদের চা ৷”
নূর মায়ার গালে হাত রেখে বলল
” ভুল তো মানুষ মাত্রই হয় আর আমাদের ভুলটাকে মানিয়ে নিয়েই চলতে হবে নাহলে জীবনে শিখলাম কি !”
মায়া ইতস্তত কন্ঠে বলল
“তবুও আমি পারবো না নূর, ভুলটা ভুল ই ৷”

নূর এবার মায়ার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
” আন্টি আপনিই ভাবীকে বোঝান,আর এটাও বলে দিন তাকে যে আর কিছুদিনের মধ্যেই তার আর আমার ভাইয়ার এনগেজমেন্ট আর খুব,তাড়াতাড়ি বিয়ে ৷”

মায়া এবার ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলল
” আমি পারবো না নূর , আমায় জোর করোনা ৷”

নূর মায়াকে জড়িয়ে বলল
” ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় , তোমার বেলা তা হবে না কেন ! আলবাত হবে , ভাইয়ার ও সাহস কি করে হয় তোমাকে বকার , আমি ওকে বকে দেবো, খুব,তাড়াতাড়ি ও তোমার কাছে আসবে দেখা করতে ৷ তোমরা দুজন দুজনকে যে ভীষণ
রকম ভালোবাসো ৷”

মায়া নূরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো, আয়াশ আর মায়ার মা দুজনে আনন্দের সাথে,তাকিয়ে আছেন ,,সত্যিই সম্পর্কের পরানতি হলো শ্রেষ্ঠ একটা পাওয়া ৷

….

মায়াকে অনেকরকম ভাবে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাসায় ফিরছে নূর আর আয়াশ , নূর একটু ক্লান্ত , এখন আর শরীর বেশি ধকল নিতে পারে না ৷ হঠাৎ আয়াশ ড্রাইভ করার ফাকে বলে উঠলো
” একটা গল্প শুনবে আফুসোনা ?”

নূর ক্লান্তি ভরা কন্ঠে বলে উঠলো
” হমম বলুন ,জানি আপনি কেবল আমাকে মিথ্যা বলে বোকা বানান যদিও আমি অভ্যস্ত তাতে ৷”
আয়াশ মুচকি হেসে বলল
” রাজকুমারী র ছোট বোনের কথা মনে আছে তোমার ?”

নূর কথাটা শুনে যেন জেগে উঠলো ,,অনেক উৎসাহ নিয়ে বলল
” হমম মনে আছে তো ৷ আর সে তো আমার আম্মু তাইনা ?”

আয়াশ মুচকি হেসে বলল
” হ্যাঁ !”

” আমার আম্মুর পরের কাহিনি টুকু বলুন না প্লিজ , আমি জানতে চাই ৷”
আয়াশ গাড়ির স্পিডটা খানিকটা কমিয়ে বলল
” তেমন কিছুই না, তারপর রাজকুমারী পালিয়ে সংসার করতে লাগলো, অনেক বছর লুকিয়ে ছিলো যদিও তার বাবা তাকে ত্যাজ্য কন্যা করে দিয়েছিলো ৷ তারপর সেই রাজকুমারীর ছোট বোন একদিন আবার রাত প্রাসাদ এ ফিরে যায় ৷”

নূর উৎসাহ নিয়ে বলল
” কেন?”

” নিজের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ৷”

” তারপর ও পাইনি নিশ্চয়ই !”

” নাহ ৷”

” তারপর কি হলো?”

“,তারপর আর কিছুই হলো না ৷”

নূর মন খারাপ করে বলল
” আমি ভাবলাম ইন্টারেস্টিং কিছু হবে ৷”

আয়াশ হো হো করে হেসে বলল
” প্রয়োজন কি যে সব জিনিস ই ইন্টারেস্টিং হবে !”

নূর মাথা নীচু করে বলল
” না তা ঠিক না ,তবুও এতো ধামাকাদার একটা কাহিনতীতে টুইস্ট তো থাকতে পারতো ৷”

আয়াশ মুচকি হাসলো কিছু বলল না ৷ মনে মনে বলতে লাগলো
” তোমাকে সবকিছুর সত্যতা আমি জানাতে চাই না আফুসোনা, আমি কখনোই চাইনা তোমার ভালোবাসার মানুষগুলো তোমার থেকে দূরে সরে যাক, আমি বুঝি কাছের মানুষ ছেড়ে যাওয়ার কষ্টটা যদিও তুমিও খানিকটা অনুভব করতে পরো, থাক না তোমার কাছে তোমার মা এবং তোমার বাবার অতীতটা লুকিয়ে , সবকিছু না হয় না ই বা জানলে ৷”

কথাটা বলে আয়াশ ড্রাইভে মনোযোগ দিলো ৷
#তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:48
#Suraiya_Aayat

“ক্ষমা চাইছো কেন আজ তুমি আমার কাছে? আদতেও কি তুমি অনুতপ্ত নাকি আবার ছলনা করছো কোনটা ঠিক বলতে পারো?”

আরাফাত সাহেব অনুতপ্ত হওয়ার সুরে বললেন
“যা খুশি বলবে বলো কিন্তু আজ আমি কোন অভিযোগ করবো না কারন আমি জানি যে দোষটা আমারই ছিলো?”

নূরের মা বেশ কড়া কন্ঠে বললেন
“সেদিন যদি তুমি এই লোভ না করতে তাহলে আজ এই দুর্দশা কিছুই হতো না, না আমার আপু হারিয়ে যেতো আর না আমি আমার সন্তানের থেকে দূরে সরে যেতাম৷”

“তুমি তো জানো যে তখন আমার টাকার প্রয়োজন ছিলো৷”

নূরের মা ওনাকে থামিয়ে বললেন
“তোমাকে ভালোবেসে তোমার হাত ধরে পালিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন,আমি ছিলাম জমিদারী বংশের মেয়ে আর তুমি ছিলে সাধারন এক মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে তবুও আমি আমাদের সম্পর্কের মাঝে কখনও অর্থ টেনে আনিনি৷ তোমার হাতে হাত রেখে পাড়ি দিয়েছিলাম অজানা এক ভবিষ্যতের দিকে৷ তবুও তুমি খুব ভালো ভাবে আমাদের সংসারটাকে গড়ে তুলেছিলে, তোমার যা ছিলো তা দিয়েই তুমি সুখের সংসার গড়ে তুলেছিলে তারপর কয়েক বছর পর যখন রেদোয়ান বড়ো হলো আর নূর ও বেশ বড়ো, সেই সময় তোমার ব্যাবসায় তীব্র সংকট দেখা যায়,বাবা মায়ের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো ,তারা আমাকে ত্যায্য করেছিলো তাই তাদের কাছে আর ফেরার চৈষ্টা করিনি, প্রিয়ন্তি আপুও বোধহয় অনেক খোঁজার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু খুঁজে পাইনি আর পাবেই বা কি করে যে নিজে থেকে হারিয়ে যায় তাকে কি কখনও ফিরে পাওয়া যায়? যায়না!
তারপর তুমি একদিন বললে যে আমার নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে আর তোমরা নিজের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে,আমি নারাজ ছিলাম কিন্তু সেদিন তুমি আমার কথা শুনতে বাধ্য ছিলে না কারন তোমার তো টাকার প্রয়োজন ছিলো তাইনা?”

রেদোয়ান সাহেব মাথা নীচু করে নিলেন,হয়তো ভীষনভাবে অনুতপ্ত তিনি৷ ওনাকে দমিয়ে দিয়ে নূরের মা পুনরায় বললেন
“আমি বাধ্য হয়ে নিজের বাড়িতে যায় কিন্তু গেট থেকেই আমাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাই লজ্জায় আর ঘৃনার কখনো সেখান দুবার ফিরে যাওয়ার কথা ভাবিনি৷ তারা বলেছিলো যে তাদের নাকি কোন ছোট মেয়েই নেই৷ বেশ! কিন্তু তুমি তাতেও ক্ষান্ত হলে না তোমার এতোই টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো যে না পেরে আমাকে প্রিয়ন্তি আপুর কাছে যেতে হয়েছিলো যেখানে তুমি আমার আত্মসম্মান উপেক্ষা করে এতো বছর পর কেবলমাত্র টাকার কারনে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেছিলে৷
বেশ তাই হলো তোমার কথা মতোই যোগাযোগ করলাম আপুর সাথে,কিন্তু আপুর সাথে তেহেরাত ভাইয়ার সম্পর্কের অবমনানার কথা শুনে টাকা চাওয়ার সাহস হয়নি তাই না পেরে বাধ্য হয়ে বলেছিলাম যে আপু যাতে একটু আমার বাবার বাসায় সবাইকে অনুরোধ করে যেন তারা আমাকে মেনে নেয়৷”

কথাটা বরে নিশ্বাস ছাড়লেন নূরের মা,আরাফাত সাহেব ও নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছে,আজ আর বলার মতো মুখ নেই৷

“তারপর আপু তাদের কাছে আমার হয়ে কথা বললে আপুর ওপর ভাইয়া রেগে যান কারন তিনি কখনোই চাইতেন না যে তার সম্পত্তিতে কেও ভাগ বসাক যদিও পৌতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের একটা অধিকার থাকে তা বোধহয় উনি ভুলেই গিয়েছিলেন৷ ভাইয়া রাগ করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে আপুকে সব সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার আর তা ওনার একার পক্ষে সম্ভব ছিলো না তাই তিনি হঠাৎই একদিন আমার সাথে যোগাযোগ করেন আর আপুকে তার পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন এবং পরিবর্তিতে সম্পত্তির ভাগ না দিলেও কিছু টাকা দেওয়ার লোভ দেখান যদিও আমি তাতে গলিনি তুমি লোভে পড়ে রাজী হয়ে গিয়েছিলে৷ যে মানুষটা আসলেই তোমার কখনো কোন ক্ষতি চাইনি তুমি তাকেই সরিয়ে দিতে চেয়েছিলে৷ লজ্জার বিষয়! আমি তোমার এই কথা সবার সামনে ফাঁস করে দিতে চাইলে তুমি আমাকে বিচ্ছেদের ভয় পায় যদিও আমি ভয় পাইনি অবশেষে তুমি আমার নূরকে আর রেদোয়ানকে মেরে ফেলার হুমকি দাও,আমি দমে যাই তারপর হার মেনে নিই৷ আপু ডায়েরি লিখতেন সেখানে তিনি তার নিঁখোজ হওয়ার খানিকটা হলেও ভবিষ্যৎ বানী করেছিলেন তা তিনি তার ডায়েরি তে লিখেছিলেন আর সেটা কোনভাবেই আয়াশ হাতে পায় তারপর আমাকেও নিঁখোজ হতে হয় আয়াশের কাছে, আয়াশ আমাকে কখনো কোন অসুবিধা রাখেনি, ওকে আমি নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসি৷”

আরাফাত সাহেব প্রশ্ন করে উঠলেন
” তাতে আয়াশের স্বার্থ কি ছিলো?”

“স্বার্থ খুবই সহজ,তার মা কে খুঁজে বার করা৷এখন যদি প্রশ্ন করো যে এতো বছর অপেক্ষা করেছে কেন তাহলে তার উত্তর ও আমার কাছে আছে৷”

“কি?”

“আয়াশের এক্সপেরিমেন্টের জন্য,আয়াশ এমন একটা জিনিস আবিষ্কার করতে চাইতো যাতে মানুষের যৌবনের সৌন্দর্যটা সবসময় ধরে রাখা যায় আর তাতে মানুষের বয়স বাড়লেও শরীরে যেন বয়স বাড়ার কোন চিন্হ না আসে, আর আয়াশ বানিয়েছেও আর এর জন্য ও পাবে কোটি কোটি টাকা, তোমার টাকা লাগলে তুমি তাকে বলতে পারো সে তোমার মুখে টাকা ছুঁড়ে মারবে৷”

কথাটা বলে নূরের মা উঠে গিয়ে জানালার পাশে দাঁড়ালেন, আরাফাত সাহেব বললেন
” আর একটা প্রশ্ন করবো?”

উনি কোন উত্তর দিলেন না,নিরবতা সম্মতির লক্ষন ৷

“আয়াশ নূরকে বিয়ে করলো কেন?আর তোমাকেই বা এতোদিন লুকিয়ে রেখেছিলো তার ফলাফল কি হলো?”

উনি গর্জে উঠে বললেন
” আয়াশ তোমার মতো লোভী নয় যে টাকার জন্য কাওকে বিয়ে করবে বা মানসিক অত্যাচার করবে৷সে নূরকে ভালোবাসে,নূরকে সে চায় তাই বিয়ে করেছে তার ভালোবাসা নিসার্থ৷ আয়াশ আমাকে মারার অভিনয় ও করেছিলো কারন শক্রপক্ষ জানতে পেরেছিলো যে আমি এখনও বেঁচে আছি তাই তারা মারতে চেয়েছিল তাই অয়াশ আমাকে মাঝ রাতে রাস্তার মাঝে গুলি মারার জন্য বন্দুক তাক করে আর আমি যদি আয়াশকে সব সত্যি কথা বলে দিই সেই কারনে পিছন থেকে ভাইয়ার পাঠানো একজন আমাকে গুলি মারে যাতে আয়াশ কখনো তার মায়ের হদিশ না পায় কারন ভাইয়ার ধারনা ছিলো যে আমি এতোদিন নিজেই লুকিয়ে ছিলাম আর আয়াশ আমাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেছে৷গুলিটা আমার গায়ে লাগতেই আয়াশ পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখেছিলো একজন পালাচ্ছে আয়াশ ও তখন তাকে যেতে দেয় কারন এতে আমদের সুবিধা হতো,আয়াশ আমাকে হসপিটাল নিয়ে যায় , চিকিৎসা করায়,আপু ফিরে আসে পরিকল্পনা মাফিক৷ এবার বলো তোমার শাস্তি কি হওয়া উচিত?”

আরাফাত সাহেব ধপ করে বিছানায় বসে পড়লেন,ওনার একটু টাকার প্রয়োজনের খাতিরে এতো কিছু হতে পারে তা উনি ধারনাতেও আনেননি,বুকের ভিতর হালকা চিনচিন ব্যাথা অনুভব করছেন,ব্যাথাটা বাড়ছে,নূরের মা চোখের জল মুছে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলেন হঠাৎ পিছন থেকে আহ করে শব্দ আসতেই ঘুরে দেখলেন আরাফাত সাহেব বুকের ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন,উনি দৌড়ে ছুটে গেলেন৷

#চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here