তুমি এলে তাই পর্ব ২৫

#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ২৫
.
চারপাশে কুয়াশায় আবছা হয়ে আছে। সবকিছুই ঝাপসা। তবে কুয়াশা ভেদ করে
হালকা সূর্যের আলোর রেখাও দেখা দিচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস আর তার শো শো শব্দে হাত পা কান সব জমে যাওয়ার। গুঞ্জন গায়ে একটা শাল জরিয়ে সেই আমগাছটার নিচে দাঁড়িয়ে গাছটার সাথে হেলান দিয়ে আছে। সারারাত এখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো ও। কেউ জানেনা যে ও সারারাত এখানে ছিলো। মনের ভেতরে এক অদ্ভুত চাপা কষ্ট হচ্ছে ওর। গুঞ্জন ছোটবেলায় কাঁদতো খুব বেশি কাঁদছো। কিন্তু তখন ওর কান্না দেখার কেঊ ছিলোই না। একপর্যায়ে কান্না করা একটু একটু করে থামিয়ে দিলো। এরপর ও আর কাঁদতোনা কারো সামনে তো একেবারেই না। যখন নিজেকে আর সামলাতে পারতো না তখন কাঁদতো। তবে আজ ওর খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কাঁদতে পারছেনা। আজ যেনো ওর সব কান্না গলাতেই আটকে আছে। সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে মন চাইছে কিন্তু পারছেনা। কেনো দেখা হয়েছিলো স্পন্দনের সাথে ওর? ভালোবাসতে গেলো ও স্পন্দনকে? কেনো বন্ধুত্ব করেছিলো? কেনো শুরু থেকে এভোয়েট করেনি? কেনো? কালরাতেই নিজের সব অভিমান, জেদ, বেপরোয়া ভাবকে মুছে ফেলে জীবণটাকে নতুন করে সাজানোর স্বপ্ন দেখেছিলো ও। কিন্ত নিমেষেই সব কিছু শেষ হয়ে গেলো।

আসলে রাতে গুঞ্জন মেঘলার রুমে দরজার কাছে গিয়ে ডাকতে নিলেই শুনতে পেলো যে মেঘলা একা একা কিছু একটা বলছে। তাই গুঞ্জন দুষ্টুমি করে মেঘলার কথাগুলো শোনার জন্যে একটু। কিন্তু যা শুনলো তাতে ও পুরো পাথর হয়ে গেলো, ওর পুরো দুনিয়া ঘুরছে। মেঘলা বুকের সাথে বালিশটা জরিয়ে ধরে একাএকাই বলছে,

— ” সত্যিই স্যারের মতো মানুষকে কখনো না ভালোবেসে পারা যায়না। আমার পুরো অস্তিত্বে জরিয়ে গেছেন উনি। এখন এমন মনে হয় অফিসে কাজ করতে নয় ওনাকে দেখতেই যাই। অফিসে গিয়ে এখন ওনাকে যতোক্ষণ না দেখতে পাই ততোক্ষণ একটুও শান্তি পাইনা।”

গুঞ্জন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। স্যার? মানেতো মিস্টার চৌধুরী। মিস্টার চৌধুরীকে ভালোবাসে মেঘুদি? হঠাৎ ভাবলো না ওর নিশ্চয়ই কোনো ভূল হচ্ছে। ও নিশ্চয়ই ভুল শুনেছে। এসব ভেবে নিজেক‍ে সামলে আবারও ওদের দিকে তাকাতেই দেখলো মেঘলা আবার বলল,

— ” হ্যাঁ ভালোবেসে ফেলেছি আমি স্যারকে। খুব ভালোবেসে ফেলেছি। স্যারের মতো মানুষকে ভালো না বেসে থাকা যায়না। খুব তাড়াতাড়ি স্পন্দন স্যারের সাথে আমাকে কথা বলতে হবে।”

গুঞ্জন দুকদম পিছিয়ে গেলো। ও নিজেকে কিছুতেই স্হির রাখতে পারছেনা। ও নিজেও তো স্পন্দনকে ভালোবাসে না চাইতেও খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছে স্পন্দনকে। না না ও স্পন্দনকে ছাড়তে পারবেনা। ওকে মেঘলার সাথে কথা বলতেই হবে । স্পন্দনও তো ওকে ভালোবাসে। ওরাতো একে ওপরকে ভালোবাসে। মেঘলাকে এটা বোঝালে মেঘলা ঠিক বুঝবে। এসব ভেবে মেঘলাকে কিছু বলতে যাবে তখনই মেঘলা বলে উঠল,

— ” আহিলের পর যে কখনো কাউকে এভাবে ভালোবাসতে পারবো সেটা কল্পনাও করিনি আমি। স্যারের মতোন কেউ আমার জীবণে আসবে বলেই হয়তো আহিলের মতোন একটা স্বার্থপর মানুষ আমায় ঠকিয়ে ছিলো।”

গুঞ্জন এটা শুনে থেমে গেলো। কী করতে যাচ্ছিলো ও? দুবছর আগে শুধুমাত্র ওর জন্যে ওর মেঘুদির বিয়ে ভেঙ্গে গিয়েছেলো। সেই গ্লানিবোধ থেকে আজও বেড়োতে পারেনি। সেই একি কষ্ট আবার কীকরে দেবে ও? এসব ভাবতে ভাবতে এককদম এককদম করে পিছিয়ে যাচ্ছিল ও। এরপর আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে বাইরে চলে এলো। তখন মোটামুটি অনেক রাত সবাই ঘুমিয়ে আছে তাই টের পায়নি। শীত তাই গায়ে একটা শাল জড়ানো। ও সোজা সেই আমগাছটার নিচে গিয়ে দাঁড়ালো। ঐ কনকনে শীতের সারারাত ঐ গাছের নিচেই কাটিয়ে দিয়েছে ও। কিন্তু আজ ওর শীত গরম কোনো অনুভূতিই হচ্ছে না এইমুহূর্তে । সারারাত ধরে অনেক ভেবেছে ও। ভাবতে ভাবতেই সকাল হয়ে গেছে। নিজের ওপর নিজের খুব ঘৃণা হচ্ছে আজ ওর। দ্বিতীয়বার ওর বোনের কষ্টের কারণ হতে যাচ্ছিল ও। ভাগ্যিস ও সব শুনে নিয়েছে। যদি কিছু না শুনে ও গিয়ে মেঘলাকে নিজের মনে কথাটা বলে দিতো তাহলে কী হতো আজ? আবার ওর জন্যে ওর মেঘুদি আঘাত পেতো। দুবছর আগে যাই হয়েছে তার জন্যে ওর কাকা, কাকী এমনকি ওর বাবা মাও ওকে দায়ী মনে করে । অথচ খারাপটা যার সাথে হয়েছে সেই মেয়েটা সবার মতো ওকে ভুল বোঝে নি। বরং সবার থেকে ওকে আগলে রেখেছে, ওর হয়ে প্রটেস্ট করেছে, ওকে এতো ভালোবাসা দিয়েছে। তাকে আবার সেই একি ক্ষত কীকরে দেবে ও? আর তাছাড়াও ও তো মেঘলাকে কথা দিয়েছে ওর জন্যে আর কোনো কষ্ট পেতে দেবেনা মেঘলাকে ও। নাহ ও ঠিক করে নিয়েছে ওকে কী করতে হবে। ওর যতোই কষ্ট হোক। যে বোন ওকে সবসময় আগলে রেখেছে, এতো ভালোবেসেছে সেই বোনের মুখে হাসি দেখতে এটুকু তো ও করতেই পারে। ওকে পারতেই হবে। সেটা যে করেই হোক। এসব ভাবতে ভাবতে ও ঘরের ভেতরে ঢুকলো। হঠাৎই আবির ওর সামনে পরলো। গুঞ্জনখে দেখে আবির বলল,

— ” কীরে ? এতো সকালে কোথায় গিয়েছিলি।”

গুঞ্জন মাথা নিচু করেই নিচু কন্ঠে বলল,

— ” বাগানে গিয়েছিলাম একটু।”

গুঞ্জনের চোখ মুখের দিকে তাকিয়ে আবির বলল,

— ” কী হয়েছে তোর? চোখ মুখ এরকম লাল হয়ে আছে কেনো?

গুঞ্জন নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রেখে মুখে জোরপূর্বক একটুখানি হাসি ফুটিয়ে বলল,

— ” আসলে অনেক রাত অবধি জেগে ছিলাম। ঘুম হয়নি ঠিক করে। তো তাই হয়তো।”

অাবিরের কেনো জানিনা বিশ্বাস হলোনা কথাটা। কিছুক্ষণ গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,

— ” আজ অফ ডে তো? ব্রেকফাস্ট করে একটু ঘুমিয়ে নিস।”

গুঞ্জন কিছু বললনা। শুধু মাথা নেড়ে রুমে চলে গিয়ে দরজা লক করে দিলো। এরপর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো অনেকগুলো কল মেসেজস এসছে স্পন্দনের। গুঞ্জন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলো এরপর স্পন্দনকে কল করলো। কল করার সাথে সাথেই স্পন্দন রিসিভ করে ফেলল। গুঞ্জন কিছু বলার আগেই স্পন্দন রাগী কন্ঠে বলল,

— ” কাল রাত থেকে কল ম্যাসেজ করছি। কোথায় ছিলে জানো কতো টেনশন হচ্ছিলো।”

গুঞ্জন নিচু কন্ঠে বলল,

— ” সরি। ঘুমিয়ে পরেছিলাম।”

স্পন্দন একটু অবাক হলো। গুঞ্জন তো এরকম নয়। এতোক্ষণে তো ওর স্পন্দনকে উল্টো ঝাড়ি দিয়ে ঝগড়া করার কথা। অথচ কতো ইজিলি সরি বলে দোষ স্বীকার করে নিলো? স্পন্দন একটু চিন্তিত গলায় বলল,

— ” আর ইউ ওকে?”

গুঞ্জন নিজের মনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,

— ” ইয়াহ। একটা কথা বলতে ফোন করেছিলাম।”

স্পন্দন জিজ্ঞাসু কন্ঠে বলল,

— ” কী কথা?”

গুঞ্জন স্বাভাবিকভাবে বলল,

— ” আজ তো রেস্টুরেন্টে দেখা করার কথা তাইনা?”

স্পন্দনের গুঞ্জনের গলার আওয়াজ কেমন জেনো লাগছে, কিছুতো হয়েছে, কিন্তু কী? ও ভ্রু কুচকে বলল,

— ” হ্যাঁ তো?”

গুঞ্জন একটু চুপ থেকে বলল,

— ” ওখানে নয়। আজ আমরা ঐ ব্রিজটাতে যাবো যেখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো। আপনি ওখানেই ওয়েট করবেন আমি নিজে যাবো।”

স্পন্দন একটু অবাক হয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ বাট আমি পিক করে নেই?”

— “নাহ আমি নিজেই যাবো। আপনি ওখানে থাকলেই হবে।”

স্পন্দনকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো গুঞ্জন। তারপর জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে বালিশে মুখ গুজে শুয়ে রইলো। ওদিকে স্পন্দন ও বেশ অবাক হলো। কী হলো এটা? কিছুই বোধগম্য হয়নি ওর। বিকেলে গুঞ্জনকে জিজ্ঞেস করবে। এসব ভেবে শুয়ে একটা ঘুম দেওয়ার চেষ্টা করলো। রাতে গুঞ্জনের চিন্তায় ঘুমোতে পারেনি ও। তার প্রায় দুঘন্টা পর দরজা খুলে ব্রেকফাস্ট করতে বের হলো ও। টেবিলে তখন শুধু মেঘলা ছিলো। আবির তিতলির সাথে একটু দেখা করতে গেছে আর বাকিরা নিজেদের রুমে। মেঘলা গুঞ্জনের চোখ মুখ দেখে বেশ চমকে উঠলো। ও তাড়াতাড়ি উঠে গুঞ্জনের কাছে গিয়ে ওর গালে হাত ছুইয়ে দিয়ে বলল,

— ” কীরে কী হয়েছে তোর? চোখ মুখ এতো ফুলে আছে কেনো? লালচেও হয়ে আছে?”

গুঞ্জন মুখে আবারো সেই জোরপূর্বক হাসি ফুটিয়ে নিয়ে বলল,

— ” আমি ঠিক আছি। আসলে রাতে ঘুমটা ঠিক করে হয়নি তাই আরকি। মেঘুদি। খুব খিদে পেয়েছে একটু সার্ভ করে দাওনা?”

মেঘলাও সন্দিহান দৃষ্টিতে গুঞ্জনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,

— ” হ্যাঁ তুই বোস । আমি দিচ্ছি।”

গুঞ্জন টেবিলে বসতেই মেঘলা খাবার সার্ভ করে দিলো। মেঘলা যতোটা সম্ভব নিজেকে শক্ত রাখার কথা চেষ্টা করছে। গুঞ্জনের খাওয়া শেষ হলে ও মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” মেঘুদি একটা কথা রাখবে?”

মেঘলা একটু হেসে বলল,

— ” তোর কোনো কথা ফেলেছি আমি?”

গুঞ্জন নিচের দিকে তাকিয়ে একটা শ্বাস ফেলে তারপর মলিন হাসি দিয়ে আবার মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আমাকে আজ বিকেলে একটু শাড়ি পড়িয়ে দেবে?”

মেঘলা তো বড়সরো ঝটকা খেলো অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,

— ” তুই আর শাড়ি? মজা করছিস নাতো?”

গুঞ্জন উঠে গিয়ে মেঘলাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” আজ ইচ্ছে করছে একটু শাড়ি পরতে। তাই এতো প্রশ্ন না করে প্লিজ আমাকে শাড়িটা পড়িয়ে দেবে বলো? প্লিজ আমার সুইট দি।”

মেঘলাও হেসে গুঞ্জনের দুইহাত ধরে বলল,

— ” আচ্ছা দেবো পড়িয়ে এবার হ্যাপি? বাট কি হলো হঠাৎ। ”

— ” এমনি।”

বলে মেঘলার গালে একটা চুমু দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো ও।

____________________

মেঘলা গুঞ্জনকে খুব সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। শাড়ি ঠিক করতে করতে মেঘলা বলর,

— ” এতো সুন্দর শাড়ি কোথায় পেলি বলত?”

গুঞ্জন একটু মলিন হেসে স্পন্দনের দেওয়া চুড়ি গুলো পরতে পরতে বলল,

— ” আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু দিয়েছে।”

মেঘলা অবাক হয়ে বলল,

— ” কে সে?”

গুঞ্জন পার্সটা হাতে নিয়ে মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” বলবো কোনো একদিন। আজ যাই।”

বলে বেড়িয়ে গেলো। মেঘলা একটু অবাক হলো। কিছু তো একটা ব্লান্ডার হয়েছে সেটা বুঝতে পারছে কিন্তু সেটা কী? যাই হোক গুঞ্জন এলে জিজ্ঞেস করে নেবে আপাতত স্পন্দনকে কীকরে বলবে কথাটা সেটাই ভাবছে ও।

______________________

স্পন্দন সেই ব্রিজের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আর গুঞ্জনের জন্যে ওয়েট করছে। হঠাৎ ওর থেকে একটু দূরে একটা সি এন জি থামলো। সি এন জি থেকে গুঞ্জন বেড়িয়ে এলো। গুঞ্জনকে দেখে স্পন্দনের চোখ আটকে গেলো। অবাকের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে ও। গুঞ্জন ওর দেওয়া শাড়ি আর চুড়ি পরে এসছে? কী অপূর্ব লাগছে মেয়েটাকে? নীল শাড়ি, খোলা চুল, হাতের কাঁচের নীল চুড়ি। একদম নীল পরী। আচ্ছা আজকে গুঞ্জন এসব পরে কেনো এসছে? তারমানে আজ গুঞ্জন ওকে ওর মনের কথা বলবে? নিশ্চয়ই উত্তর হ্যাঁ হবে। নইলে তো আর এসব পরে আসতো না তাইনা? এসব ভেবে স্পন্দনের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। গুঞ্জন সি এন জি টা দাঁড় করিয়ে রেখেই স্পন্দনের দিকে যতো এগিয়ে আসছে স্পন্দনের হার্টবিট ততোটাই বাড়ছে। গুঞ্জন কাছে আসতেই স্পন্দন একটু অবাক হলো কারণ গুঞ্জনের মুখটা বেশ ফ্যাকাসে হয়ে আছে। যদিও কপালে ছোট নীল টিপ পরেছে। তবুও স্পন্দন হেসে কিছু বলতে নেবে গুঞ্জন হাতের ইশারায় থামিয়ে বলল,

— ” আজ এই সাজে কেপো এসছি আপনার সামনে তাইতো? কারণ আপনি বলেছিলেন যেদিন আপনাকে নিজের মনের কথা বলবো সেদিন যেনো এটা পরে আসি। আজ সেটাই বলতে এসছি।”

স্পন্দন মুচকি হেসে একটু উৎসাহি কন্ঠে বলল,

— ” হ্যাঁ বলো?”

গুঞ্জন চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে যথেষ্ট শক্ত করে নিয়ে চোখ খুলে স্পন্দনের চোখে চোখ রেখে বলল,

— ” অনেক ভেবে দেখেছি আমি। আপনার সাথে অনেকটা মিশেও দেখেছি। কিন্ত এমন কোনো অনুভূতি আমার মনে তৈরী হয়নি যেটাকে ভালোবাসা বলা যায়।”

সাথেসাথেই স্পন্দনের মুখের হাসিটা মিলিয়ে গেলো। স্পন্দন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গুঞ্জন একটা শ্বাস নিয়ে আবার বলল,

— ” হ্যাঁ আর আমি বুঝে গেছি যে আর যাই হোক আপনাকে কোনোদিন আমি ভালোবাসতে পারবোনা। তাই আপনার জন্যে এটাই ভালো হবে যে আপনি আমাকে ভুলে যান। আর তার সাথেই জীবণ শুরু করুন যে আপনাকে ভালোবাসে।”

স্পন্দন হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে গুঞ্জনের দিকে চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে ওর। কী বলছে এসব গুঞ্জন। এতো সহজে বলে দিলো কথাগুলো? একবারও বুক কাঁপলোনা? কাল থেকে চেষ্টা করেও কাঁদতে পারেনি কিন্তু এখন গুঞ্জনের পক্ষে কান্না আটকানো দ্বায় হয়ে যাচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টায় আছে ও।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here