তুমি শুধু আমার পর্ব -৮+৯

#তুমি_শুধু_আমার
#written_by_ayrin
#part8

রান্না করে খাওয়াও না হয় এভাবেই জরিয়ে ধরে ঘুমাব,,ইশশ ডং কতো রিহান কে ব্যাঙ করে বলছে।
এই রাতে এখন রান্না করা লাগছে,,শুধু মাত্র রাত দেখে কিছু বললাম না। দিনের বেলা হলে রে রিহাইন্নার বাচ্চা কিহাইন্নআ তোকে আমার হাত থেকে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ বাচাতে পারতোনা। মেহের রান্না ঘরে রান্না করছে আর মনে মনে রিহান কে বকাবকি করছে।

তখন পিছন থেকে রিহান বলল তুমি এত ফাস্ট জানতাম না আমার বাচ্চার নাম ও ঠিক করে ফেলেছো দেখছি ।

মেহের রিহানের আওয়াজ শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখে রিহান দাড়িয়ে আছে। তারপর রিহান কে জিজ্ঞাসা করলো আপনার বাচ্চার নাম ঠিক করেছি মানে?

রিহান বলল এই যে কিছুক্ষণ আগে বললে রিহানের বাচ্চা কিহান।

মেহের চখ বড় বড় করে রিহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

রিহান সেটা দেখে বলল এভাবে তাকানোর কি আছে। আচ্ছা এখন এগুলা বাদ দাও বাচ্চার নাম ঠিক করার জন্য সারারাত রয়েছে। এখন আমকে খেতে দাও, ক্ষুদায় পেটে ইদুর গুলো লাফালাফি করছে।

মেহের- আপনি প্রেগন্যান্ট আগে বলবেন তো তাহলে তারাতাড়ি আপনাকে খেতে দিতাম। তাও আবার কতগুলা বাচ্চা।একটা হলেও হতো।

রিহান- প্রেগন্যান্ট মানে,কি বলো এসব?

মেহের- প্রেগন্যান্ট মানে হলো গর্ভবতী এটাও জানেননা। কানাডা থেকে পরাশুনা করে এতটুকু শিখতে পারেন নি।

রিহান- প্রেগন্যান্ট মানে গর্ভবতী আমি জানি কিন্তু আমি কখন বললাম আমি প্রেগন্যান্ট?

মেহের- আপনিই তো একটু আগে বললেন আপনার পেটে ইঁদুরগুলো লাফালাফি করছে। তার মানে হলো আপনার পেটে ইঁদুর আছে। কোন প্রানী পেটে থাকা মানেই প্রেগন্যান্ট।

মেহেরের লজিক শুনে রিহানের মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম। সে প্রেগনেন্ট তাও আবার তার বাচ্চা হলো ইদুর এর বাচ্চা৷ তার বমি বমি পাচ্ছে। ইয়াক ইয়াক করতে করতে বেসিনের দিকে গেলো। মেহের রিহান কে ইয়াক ইয়াক করতে দেখে মনে মনে বললো এখন কেমন লাগে বাছা। আমাকে এই রাতের বেলায় ঘুম থেকে উঠিয়ে রান্না করানো?

তারপর নিজে নিজেই একটু ভাব নিয়ে বললো আগে আগে দেখো হুতাহে কেয়া।

তারপর একটু লেবু কেটে এক গ্লাস সরবত বানিয়ে রেখে দিলো। আর একটু লেবু নিয়ে বেসিনের দিকে গেলো।

রিহান কতক্ষন ধরে ইয়াক ইয়াক করছে কিন্তু তার বমি আসছে না। সারাদিন কিছু খায়নি বমি আসবে কিভাবে।

যখন বের হলো তখন দেখলো মেহের দাড়িয়ে আছে। রিহান মনে মনে সেই খুশি৷

রিহান ভাবছে মেহের তাকে নিয়ে চিন্তিত তাই এখানে এসে দাড়িয়ে আছে।কিন্তু তার এই খুশি আর বেশিক্ষণ টিকলো না যখন মেহের বললো

লেবু টা খেয়ে নিন এই সময় একটু টক টক খেতে হয়।

রিহান নিজেই নিজেকে বলছে কেন যে তখন পেটে ইঁদুর আছে কথাটা বলতে গেলাম। এখন নিজের কথায় নিজেই ফেঁসে গেলাম।

মেহের রিহানের হাতে লেবুর খোসা টা দিয়ে আবার রান্নাঘরে চলে আসলো। তারপর খাবার নিয়ে এসে ডাইনিং এ রাখছে।

রিহানের খাবার দেখে ক্ষুধা আরো বেরে গেছে। ও তারাতাড়ি খেতে বসে গেলো। যখন চিকেন নিয়ে খেতে যাবে তখন মেহের ঐটা সরিয়ে রেখে বললো এই সময় এত মশলা মাখানো খাবার খেতে নেই। আমি বরং আপনাকে শাক দেই।

রিহান বললো এই সব ঘাস পাতা কে খায়।

মেহের – এই সময় এসব খাবার ই খেতে হয়,, তাতে বেবি হেলদি এন্ড ফিট হয়।

রিহান- তোমার দেখি সবকিছু সম্পর্কে ভালো ধারণাই আছে। তাহলে তুমিও বেবি নিয়ে নাও। কি বলো লাগবে নাকি। বলে মেহেরকে চোখ মারলো।

মেহের – সবকিছু সম্পর্কে ধারণা রাখাই ভালো৷ কারণ মানুষ কখন কিসের জন্য ভালো মানুষের মুখোশ পরে পিছন দিক থেকে আঘাত করবে তা কেউ জানেনা। তাই আগে থেকে ধারণা রাখা ভালো।

রিহান- তুমি কি ইন্ডাইরেক্টলি আমাকে কথাটা বলছো?

মেহের – ডিরেক্টলি তো আপনাকেই বললাম তাও বুঝতে পারলেন না। এই তো কিছু মাস আগে আমাকে আপনার বাড়িতে দেখে নিজের বাড়ি ছেড়েই চলে যেতে চাচ্ছিলেন। আবার সেই আপনি এখন আমার বাড়িতে এসে আমার সাথে ভালো বিহেভিয়ার করছেন। তাই সন্দেহ করাটা কি অস্বাভাবিক কোন কিছু?

রিহান-এখন কি খেতে পারবো নাকি না খেয়েই থাকবো। যদি তোমার অপমান করা শেষ হয়ে থাকে তাহলে প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব না করে খেতে দাও।

আর তুমি যদি ভেবে থাকো আমাকে হার্ট করে কথা বললে তখনকার মতো চলে যাবো। তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। আমি যদি এখান থেকে যাই তাহলে তোমাকে নিয়েই যাবো।

আর যতদিন পর্যন্ত তুমি আমার সাথে না যাবে ততোদিন পর্যন্ত আমি এখানেই থাকবো।

আর আমি তোমাকেই আমার স্ত্রী হিসেবে চাই। আর যত তারাতাড়ি সম্ভব তুমিও আমাকে মেনে নাও। তাহলে তোমার জন্যই ভালো হবে।

মেহের আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে আসলো। বেডরুমের দরজা থেকে চিল্লিয়ে রিহান কে বললো আপনার খাওয়া শেষ হলে সব কিছু ক্লিন করে সোফায় ঘুমিয়ে যাবেন। আর হ্যা আমাকে ডাকাডাকি করবেন না। আর ডাকলেও আমি দরজা খুলবো না। বলে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো। ভিতর থেকে লক ও করে দিলো।

রিহান ডাইনিং এ বসে বসেই চিল্লিয়ে বলছে হ্যা আল্লাহ আমার বউটাকে একটু বুঝ শক্তি দাও। সে যেন তার স্বামীর মনের সমস্ত দুঃখ গুলো চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পায় আমিন।

মেহের রুমের ভিতর থেকেই রিহানের কথা শুনেছে। সে হাসতে হাসতে বিছানায় লুটোপুটি খাচ্ছে। আর মনে মনে বলছে মিষ্টার রিহান জামাই হিসেবে আপনাকে তো কবেই মেনে নিয়েছি। এখন জাস্ট একটু আপনাকে জালানোর পালা আমার। কাল থেকে মিশন জামাইকে জালানো শুরু করবো৷

এসব ভাবতে মেহের ঘুমিয়ে গেলো। আর অন্যদিকে রিহান মশার কামর খেতে খেতে শেষ।

রিহান- আল্লাহ তুমি এই অবলা ছেলেটার অবস্থাটা দেখো।এই মশার কামরে কি ঘুমানো যায়,কি করবো এখন গালে হাত দিয়ে ভাবছে। তারপর কিছু একটা ভেবে ফোন নিয়ে গুগুল এ সার্চ করলো বউকে পটানো যায় কিভাবে।

সেখানে দেখলো নানান রকম গিফ্ট এর কথা আছে,,,
তারপর রান্না করে খাওয়ানোর কথাও আছে। রিহান রান্না করাটাই ভালো মনে করলো।

তারপর ভাবতে বসে গেলো কি রান্না করবে। মেহের কিরকম খাবার খেতে পছন্দ করে সেটাই তো জানেনা।
এসব ভাবতে ভাবতে সোফায়ই ঘুমিয়ে গেলো।

মেহের সকালে ঘুম থেকে উঠে বাহিরে এসে দেখলো রিহান ফ্লোরে মাথা রেখে সোফায় পা তুলে ঘুমোচ্ছে।

মেহেরের রিহানের অবস্থা দেখে খুব হাসি পাচ্ছে। ও ধীরে ধীরে রিহানের দিকে এগিয়ে গেলো।

রিহানকে টেনে টুনে সোফায় শুইয়ে দিলো। এতটুক করেই ওর জান বেড়িয়ে যাওয়ার ফিলিংস হচ্ছে। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে মেহের

তারপর রিহানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ওর হাতে পায়ে কতগুলো মশার কামরের দাগ।

এসব দেখে মেহেরের খারাপ লাগছে।কিন্তু তারপর মেহের নিজেই নিজেকে বলছে আমি কি জানতাম নাকি এখানে এতো মশা। আর আমাকে ডাকলেই তো হতো।

মেহের রান্না ঘরে গিয়ে সকালের ব্রেকফাস্ট তৈরি করে নিলো। তারপর সাওয়ার নেওয়ার জন্য ওয়াশরুমে চলে গেলো। কলিংবেল এর আওয়াজে রিহানের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। চোখ ডলতে ডলতে দরজা খোলে দিলো।

নিহান মেহেরকে নিতে এসেছে ভার্সিটিতে যাবার জন্য। কিন্তু দরজা খোলে যে ওর ভাইকে দেখবে সে ভাবতে পারেনি।

ও গোল গোল চোখ করে রিহানের দিকে তাকিয়ে আছে। তা দেখে রিহান বললো জীবনে কি আমাকে দেখোস নাই,এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?

নিহান থতমত খেয়ে বললো ইয়ে মানে মেহের কে নিয়ে যেতে এসেছি।

রিহান- আমার বউকে নিয়ে যাবার জন্য আমি একাই যথেষ্ট,তোর এসব আর করা লাগবেনা।যা ভাগ
#তুমি_শুধু_আমার
#written_by_ayrin
#part9

নিহান বোকার মতো তাকিয়ে আছে রিহানের দিকে। তার ভাই এখানে কি করছে সে কিছুতেই বুঝতে পারছেনা। তখনই মেহের বেড়িয়ে আসলো নিহানকে দেখে বললো তুই চলে এসেছিস?

নিহান কিছু না বলে মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। সে বুঝতে পারছেনা। রিহান এখানে থাকা সত্বেও মেহের কেন কোন রিয়েক্ট না করে স্বাভাবিক ভাবে কেন আছে। নিহানের মনে হচ্ছে মেহের আর রিহান দুজন দুজন কে মেনে নিয়েছে৷

রিহান নিহানকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বললো এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন, তোকে চলে যেতে বললাম না। এখনো যাচ্ছিস না কেনো?

মেহের নিহান কে বললো চল আমাদের লেট হয়ে যাচ্ছে।

রিহান- তুমি আমার সাথে যাবে। নিহান তুই চলে যা।

মেহের-নিহান আর আমি একসাথেই পড়ি। তাহলে আলাদা করে যাবো কেন,আর আপনি ঐখানে গিয়ে কি করবেন?
আর আপনি যেহেতু আমার বাড়িতে থাকবেন। আপনাকে তো আর ফ্রি তে থাকতে দিবো না। তারজন্য কাজ করতে হবে। তাই তাড়াতাড়ি সবকিছু পরিষ্কার করে ফেলুন৷ আমি এসে যেন সবকিছু পরিষ্কার পাই। আর তা নাহলে আমার বাড়ি থেকে চলে যেতে পারেন।

তারপর মেহের নিহানের হাত টানতে টানতে বাহিরে নিয়ে আসলো। নিহান এখনো চোখ বড় বড় করে মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে।

মেহের নিহানকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?

নিহান- ভাইয়া এই বাসায় কেন? কখন এ বাড়িতে আসলো। কাল হুট করে বাড়িতে এসে কারো সাথে কোন কথা না বলে দরজা আটকে বসে রইলো। আর সকালেও দেখতে পাইনি । ঐদিকে মা বাড়িতে যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে ভাইয়ার খবর না পেয়ে।

মেহের সব কিছু নিহানকে খুলে বললো। নিহান এসব শুনে হাসতে হাসতে শেষ।

রিহান মেহেররা বেড় হওয়ার পর সেও তাদের পিছু পিছু বের হয়েছে৷
মেহের আর নিহান যখন ভার্সিটিতে আসলো তখন তাদের সামনে এসে দাড়ালো আকাশ। আকাশ নিহানকে বললো প্রিন্সিপাল তোকে খুঁজছে।

নিহান- আমাকে কেন খুজছে?

আকাশ – সেটা তো আমি জানি না।

নিহান- মেহের তুই ক্লাসে চলে যা আমি প্রিন্সিপাল এর সাথে কথা বলে আসছি।

নিহান এই বলেই চলে গেলো।

আকাশ মেহের কে বললো আজ আমাদের ফার্স্ট ক্লাস হবেনা৷ এখন কি করবে?
মেহের আকাশ কে বললো তাহলে চলো ক্যাম্পাসের দিকে যাই। তারপর তারা দুজন ক্যাম্পাস এর দিকে চলে গেলো।

এসব কিছু ধুর থেকে দাড়িয়ে রিহান দেখছিলো।মেহেরকে ঐ ছেলেটার সাথে যেতে দেখে রাগে ফুস ফুস করছে। তারপর মেহেরকে ক্লাসে না যেয়ে ক্যাম্পাসের দিকে যেতে দেখে মনে মনে বলছে,

কি যেন বলেছিলে তোমাদের লেট হয়ে যাচ্ছে। তো এ ব্যাপারে লেট হচ্ছিলো৷ আর আমার ভাই ও কেমন মেহের কে রেখেই চলে গেলো। আজ আসুক বাড়িতে মেহের। এসব বলতে বলতে মেহেরের ফ্লাটের উদ্দেশ্য রওনা হলো। ঐ ছেলের সাথে কিসের সম্পর্ক সব জানবো আজ৷

কিছুক্ষণ পর,

নিহান এসে মেহেরদের সাথে বসলো।

নিহান- প্রিন্সিপাল নাকি আমার বাবার বন্ধু তাই ডেকেছে খোজ খবর নেওয়ার জন্য। আর আকাশ তুই আমাকে বললি না কেনো এখন ক্লাস নেই। শুধু শুধু ক্লাসে গেলাম কষ্ট করে।

আকাশ- তোকে বলার আগেই তো তুই চলে গেলি কিভাবে বলবো তাহলে।

মেহের- তুই একটু হেটে নাহয় ক্লাসেই গিয়েছিলি, যেভাবে বলছিস মনে হচ্ছে তোকে পাহাড়ে উঠতে হয়েছে।

নিহান- তুই কি বুঝবি ব্যাচালেরদের কষ্ট। দিন দিন ভিটামিন জিএফ এর অভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছি আমি।

আকাশ- তাহলে একটা জিএফ খুজে নিলেই পারিস।

নিহান- একটা জিএফ থাকা মানে হচ্ছে নিজের জীবন তেজপাতার শহরে বিক্রি করে দেওয়া।

মেহের- তাহলে তো ভালোই হবে,তুই ওখান থেকে তেজপাতা এনে আমাদেরকে দিবি সেটা দিয়ে আমরা বিজনেস শুরু করবো।

নিহান- মজা নিচ্ছিস?আজ সিঙ্গেল বলে সবাই মজা নেয়।

তখনি একটা মেয়ে এসে নিহান কে বললো আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমার সাথে প্রেম করে তোমার সিঙ্গেল জীবনের সম্পাতি করো।

মেহের নিহান আকাশ তিন জনেই সামনে তাকিয়ে দেখলো একটা স্কুল ইউনিফর্ম পরা মেয়ে। এই পিচ্চি মেয়ে এই কথা বলেছে ভেবেই ওদের তিন জনের চোখ রসগোল্লার মতো হয়ে গেলো।

আকাশ মেয়েটাকে বললো কিগো পিচ্ছি তোমার নাম কি?
উত্তরে মেয়েটা বললো আমার নাম লামিয়া মুনতাহা।
আকাশ – তো লামিয়া তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?
লামিয়া- আমি এইবার নবম শ্রেণিতে পড়ি।

নিহান- নাইনে পড়েই এই অবস্থা। বাড়ির সবাই কি জানে তুমি ছেলেদের ভালোবাসি বলে বেড়াও রাস্তায় রাস্তায়।

লামিয়া- সব ছেলেদের তো বলিনা। শুধু তোমাকেই বললাম কারণ তোমাকে আমার ভালো লেগেছে।
বলেই দুইহাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ফেললো, লজ্জা পাওয়ার বাহানা করে।

এদিকে মেহেরের চোখ মনে হয় বেড়িয়ে আসবে। একটা নাইনের পিচ্ছি মেয়ে কিনা ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেকে প্রপোজাল দিচ্ছে। ভাবা যায় এগুলো,

লামিয়া নিহানকে বললো তাড়াতাড়ি আমাকেও বলে ফেলো বাবু, লামিয়া আমিও তোমাকে ভালোবাসি।

নিহান- তোমাকে ভালোবাসবো কোন দুঃখে। তোমাকে বড় করতে করতে আমি বুড়ো হয়ে যাবো। পরে তুমি বলবে আমার মতো বুড়ো কে তোমার আর ভালো লাগেনা।

লামিয়া – হুম ঠিক বলেছো, তাহলে এখন থেকে বাচ্চা ছেলে বিএফ বানাবো। যেন আমি বুড়ি হয়ে গেলেও আমার বিএফ স্মার্ট থাকে বুড়ো নাহয়।

বলে হেলতে দুলতে দুলতে চলে গেলো।
লামিয়া যাওয়ার পর মেহের নিহান আকাশ উচ্চশুরে হেসে ফেললো।
তারপর থেকে শুরু হলো মেহের আর আকাশের নিহানকে পঁচানো।

ভার্সিটি শেষে টিউশন করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে মেহেরের সন্ধা হয়ে গেছে। রিহান যে এ বাড়িতে আছে সেটা সে বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলো। ড্রইং রুমে রিহানকে বসে থাকতে দেখে ওর কথা মনে হলো।

মেহের রিহানকে কিছু না বলে বেডরুমে চলে গেলো। তারপর ফ্রেস হয়ে কিচেনের দিকে গেলো। মেহের মনে মনে ভাবছে রিহান খাবার খেয়েছে কিনা? রান্নাঘর সকালে যেভাবে ছিলো এখনো তেমনি আছে। তারমানে রিহান এখনো কিছু খায়নি।

মেহের ওর আর রিহানের দুজনের জন্যই রান্না করলো। মেহের মনে মনে বলছে কি ব্যাপার আজ মিষ্টার রিহান কোন কথা বলছে না কেন?
মেহের ডাইনিংয়ে খাবার রেখে রিহানকে খাওয়ার জন্য ডাকলো।কিন্তু রিহান কোন উত্তর না দিয়ে একিভাবে বসে আছে।
তাই মেহের আর না ডেকে নিজেই খেয়ে নিলো।

খাবার শেষ করে মেহের রিহানের দিকে তাকিয়ে দেখলো রিহান সোফায় বসে ঘুমিয়ে গেছে। মেহের একটা কুশন নিয়ে রিহান কে শুইয়ে দিলো।গায়ে হাত দিয়েই বুঝতে পারলো রিহানের অনেক জ্বর। মেহের রিহান কে ডাকলো,
রিহান বললো কি হয়েছে ডাকছো কেন?
মেহের রিহান কে বললো রুমে চলুন। আর জ্বর কখন আসলো?
রিহান- জ্বর কি আমাকে বলে এসেছে। বলবে রিহান আমি জ্বর তোর কাছে আসছি।

মেহের রিহানকে টেনেটুনে রুমে নিয়ে আসলো। তারপর থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখলো ১০৪°।মেহের তাড়াতাড়ি কিছু খাবার নিয়ে এসে রিহানকে খাইয়ে দিলো।রিহানকে খাওয়াতে গিয়ে অনেক কামর খেয়েছে মেহের। ইচ্ছে করে কামর দিচ্ছিলো রিহান। মেহের রাগী দৃষ্টিতে তাকালেই ইনোসেন্ট ফেস করে কিউট করে সরি বলে,মেহের আর কিছু বলেনি।

তারপর ঔষধ খাইয়ে দিলো। তারপর জলপট্টি দিতে শুরু করলো। রাত ১২ টার দিকে রিহানের জ্বর কমলো।মেহের কখন ঘুমিয়েছে বলতে পারবেনা।

সকালে রিহান ঘুম থেকে উঠে দেখলো মেহের ওকে জরিয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।
রিহানের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। পরে ধীরে ধীরে কালকের কথা মনে হলো। রিহান মনে মনে ভাবছে ইশশ জ্বর এসে ভালোই করেছে বউয়ের একটু সেবাযত্ন পেলাম। মেহেরকে নড়াচড়া করতে দেখে আবার চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলো।

(রিচেক দেওয়া হয়নি, ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃস্টিতে দেখবেন)

#চলবে
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here