তুমি হলেই চলবে পর্ব -১৪

#তুমি_হলেই_চলবে
#part_14
writer : #Mahira_Megha

আর্শ আরুহীর সামনে এসে, ” দেখ রুহি আমি এতখন কিছু বলিনি। বাট আর না। আজ তোর বিয়ে ছিলো। তোর ভালোবাসার সাথে তোর বিয়ে হচ্ছিলো তুই কতটা হ্যাপি ছিলি তাহলে কেনো এমন করলি রুহি।
আর কেঁদেই যাচ্ছিস। কিছু বলবি তুই। ”

আরুহীর কান্না আরো বেড়ে গেলো।
আর্শ আরুহীর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে, ” বলনা রুহি তোর কি হয়েছে। আমাকেও বলবি না তুই। ”

আরুহী কান্না থামিয়ে বলতে শুরু করে,” আজ যখন আমি শপিং এ যাচ্ছিলাম। আমি অনেক হ্যাপি ছিলাম। ভাইয়ার জন্য গিফ্ট কিনতে গিয়েছিলাম। বাট রাস্তার ধারে ভাইয়াকে দেখতে পায়। ভাইয়া একটা মেয়েকে পাঁজাকোলা করে নিজের অফিসে নিয়ে যাচ্ছিলো। আমি একটু অবাক হয়ে ছিলাম আজ তো অফিস বন্ধ ছিলো তাহলে ভাইয়া কেনো যাচ্ছে মেয়েটায় বা কে।
আমি গাড়ি থেকে নেমে অফিসে যায় দরজায় দাড়িয়ে দেখি মেয়েটা অসুস্থ। মেবি সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলো।
ভাইয়া ওর চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।

আমি ভেতরে ঢুকবো তখনি দেখলাম ভাইয়া মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে গালে মুখে একে দিচ্ছে ভালোবাসার পরশ।আমি আটকে যায় ওখানে কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো পুরো পৃথিবী আমার চারপাশে ঘুরছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো।

কানে ভাইয়ার কন্ঠে ভেসে এলো,” নিজের খেয়াল রাখতে পারো না। আমি না থাকলে আজ কি হতো বলো তো। কেনো এমন করো। কেনো বারবার আমাকে কষ্ট দেও। একটু থেমে ভাইয়া আবার বলে উঠলো ভালোবাসি তোমায় খুব ভালোবাসি। কথাটা যেনো আমার মনে তীরের মতো বিধলো।

ভাইয়া ওকে জড়িয়ে বলছিলো ভালোবাসে ওকে।

আর্শঃ ভাইয়াকে তুই কিছু বলিস নি। হয়তো কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

-ভুল কি করে হবে আর্শ। আমি ভেতরে যায়, ভাইয়া আমায় দেখে মেয়েটাকে ছেড়ে দেয়। মাথা নিচু করে ছিলো।

আমি আর একমূহুর্ত ওখানে দাড়াতে পারিনি। চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে আসছিলাম ভাইয়া আমায় একবার ও ডাকে নি। কোনো এক্সপ্লেনেশন ও দেয় নি। ইভেন আমি আসার সময় ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলাম এটা ভেবে যে আমায় আটকাবে বাট আমায় আটকায় নি। না কিছু বলেছিল। ভাইয়া তখন ও নিরব ছিলো।

আর্শঃ তাহলে তুই সবাইকে বললি না কেনো। সবাই যে তোকে ভুল বুঝলো।

আরুহীঃ ভালোবাসি যে। ভাইয়াকে আমি খুব ভালোবাসি। আমি যদি সবাইকে বলতাম তাহলে তো সবাই ভাইয়াকে ভুল বুঝতো।

-এখন যে তোকে ভুল বুঝছে তার কি?

-আমি জানি আর্শ সবাই আমায় অনেক ভালোবাসে। সবাই সময়ের ব্যবধানে আমায় ক্ষমা করে দিবে। বাট ভাইয়াকে সবাই ভুল বুঝুক আমি তা চায় না। আমি চায় না ভাইয়া কারো চোখে ছোট হয়ে যাক। আমি চায় না ভাইয়া আবার বড়আব্বুর ভালোবাসা হারাক।

-তাহলে এখন কষ্ট পাচ্ছিস কেনো?

-আমি য সত্যি ভাইাকে ভালোবাসি আর্শ।

সকালে

আর্শের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আরুহীর।
আর্শ হাতে চায়ের কাপ নিয়ে, ” গুড মর্নিং রুহি। ওঠ আর দাত ব্রাশ করে আয়। চা নিয়ে এসেছি একসাথে খাবো। ”

আরুহী ফ্রেস হয়ে আসলো।
আর্শ ওকে দেখে গান গাওয়া শুরু করলো নিজের বে সুরো গলায়।

larki bari anjani hai
shopna hai sach hai kahani hai
dekho a pagli bilkul na badli
a to ohi deewana hai

আরুহী কানে হাত দিয়ে এটা গলা নাকি বাঁশি।
আর্শ গান থামিয়ে মানে কি কত সুন্দর গান গায়ছিলাম।
-এটা গান তাইনা, বাংলাদেশ হলে শেয়াল নিজের সঙ্গি ভেবে নিতে আসতো।
আর্শঃ হ্যাঁ হয়ছে এবার চা খেয়ে নে। তারপর দুজন রান্না করবো।
-আমি করবো না আর খাবো ও না আমার খিদে নেই।
-দেখ রুহি রান্না না করার বাহানা একদম চলবে না। এটা বাংলাদেশ না আর এখানে শুধু আমরা দুজন থাকি আর কেউ না। রান্না তো তোকে করতেই হবে।

আরুহী মুখটা মলিন করে ওকে চল।

আর্শ মনে মনে,” তোর মুখের হাসি আমি ঠিক ফিরিয়ে আনবো রুহি। আমি জানি তুই কষ্ট পাচ্ছিস। ”

দুজন রান্না করছে আরুহীর গালে আটা লাগিয়ে দিলো আর্শ আর চেচিয়ে বলে উঠলো, ” বুরা না মানো হলি হ্যায়। ”
আরুহী ও হলুদ হাতে নিয়ে দৌড় দিলো আর্শের পেছনে। আর্শের গালে লাগিয়ে দিলো হলুদ।

বিকেলে আরুহী বসে আছে উদাস হয়ে মুখে কোনো হাসি নেয়।
আর্শঃ রুহি তুই কতদিন ভাইয়ার জন্য এভাবে কান্না করবি। তুই ভাইয়ার কাছে ফিরে যা। আর যদি এখানে থাকতে চাস তাহলে আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে হবে তোকে। হাসিখুশি দুষ্টুমি তে ভরা সেই রুহি হয়ে।
তোকে আমি এভাবে মানতে পারছি না রুহি।

আরুহীঃ আমি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছি তো বাট কি করবো বল পারছিনা যে।
-তোকে পারতেই হবে নিজের জন্য না হলেও আমার জন্য।

আরুহীঃ হুমম আর্শ আমি চেষ্টা করবো। আমি আর মনে করবো না ভাইয়াকে।
আর্শকে জড়িয়ে আর্শ আম্মু বড়আম্মু আমার কথা একবার ও জানতে চায় নি তাই না।
আর্শ ওর চোখের পানি মুছে। কথা বলবি ওদের সাথে?

আরুহী নাক টেনে কথা বলবে ওরা আমার সাথে?
আর্শ মুখে একটা হাসি এনে হ্যাঁ। এইনে কথা বল।

আরুহী কান্না মাখা কন্ঠে, ” আম্মু ”
নিলিমাঃ কেমন আছিস আরু।
-ভালো আছি তোমরা ভালো আছো?
-তোদের ছেড়ে আর কি ভালো থাকা যায়।

রিহানাঃ আর্শ তোর খেয়াল রাখতে তো আরু।
-না গো বড়আম্মু আর্শ আমার একটু ও খেয়াল রাখে না। আমায় দিয়ে রান্না করায়। আর্শ ফোনটা হাতে নিয়ে আম্মু তুমি ওর কথা একদম শুনবে না। ও একা না আমিও রান্না করি।

রিহানাঃ আর্শ আরু কে একদম জ্বালবি না। খেয়াল রাখবি ওর।
– ওহহো আম্মু এখানে এসেও শান্তি নেই। তোমাদের শুধু একটাই ভালোবাসা আরু। আমি ওকে জ্বালায় তাই না। ও আমার ঘারে উঠে নাচে।

-মোটেও না আমি ওর মাথায় উঠে নাচি হাহাহা আরুহি হাসছে সাথে নিলিমা আর রিহানা ও হাসছে ।

আর্শঃ তোমরা সবাই এক টিমে তাই তো।

আরুহীর মুখে হাসি দেখে আর্শের মন ভালো হয়ে গেছে।
তোকে তো সারাজীবন এভাবেই দেখতে চায় রুহি। তোর এই হাসিটা সবচেয়ে সুন্দর। আমি যে এতেই মুগ্ধ।

কয়দিন পর

আর্শ আরুহী ভার্সিটি যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে বসে দুজন জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
আরুহীর চোখ আটকে যায় একজনের ওপর। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না ও। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। একটু পর আরুহি উঠে দৌড়াতে লাগলো পেছনে ছুটতে আর্শ। আরুহীর হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছে না আর্শ

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here