তুমি হলেই চলবে পর্ব ২+৩+৪

২+৩+৪
#তুমি~হলেই~চলবে 🍁
#writer~হাফসা~আলম……🍂
২.
.
.
আমি বিছানায় বসে আছি।রাগে আমার মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমার পাশে, সামনে মিলিয়ে তিনজন মহান ব্যক্তি দাঁড়িয়ে, বসে আছে।এদের মধ্যে এজনের উপড় প্রচণ্ড বিরক্তি লাগছে।আর সে হচ্ছে আমার জানের জান পরানের পরান আম্মু।কারন একটাই বিগত ঘন্টা খানেক থেকে তিনি কেঁদেই চলেছেন।তার কান্নার একমাএ কারন আমি।আমার হাতের কামড়ের দাগ আর রক্ত দেখেই তিনি ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদেই চলেছে।তার কান্না দেখে আমার মনে হচ্ছে আমি মরে গেছি।তাই তিনি পৃথিবী কাঁপিয়ে একমাএ কন্যার জন্যে বিলাপ করছে।আশ্চর্য তো আমি তো ঠিক আছি।তবুও কান্নার দরকার কি…আমার সামনে বসে আছে আব্বু.. তিনি অতি মনযোগ দিয়ে আমার হাতে স্যাভলন লাগাছে আর গম্ভীর মুখ করে বসে আছে।পাশেই ভাইয়া ব্যান্ডেজ নিয়ে দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে দাড়িয়ে আছে।ইশশশ কি ভালোবাসা সবার..ভাইয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তিনি এবার ব্যাংকিং ছেড়ে ডাক্তারিতে নাম লেখাবেন।আমার সব রাগ শুধু আযমান ভাইয়াকে নিয়ে..কিন্তু বাসায় ওনার নামে কিছু বলা মনে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা..ওনার নামে কিছু বললে তো এই ভালোবাসা গুলো আমার রুমের পশ্চিমের জানালা দিয়ে পালাবে..আমার আব্বু এবার নিজে গম্ভীর ভাব নামিয়ে করুন ভাব করে আদুরে গলায় বলে উঠে……….
.
আমার আম্মুকে কে এভাবে কামড়ে দিয়েছে??একবার বল?তাকে আব্বু ভালো করে শায়েস্তা করবো…
.
আব্বু এমন আদুরে গলার কথা শুনে আমার চোখ বেহায়ার মত পানি ফেলা শুরু করে।আর গলাটাও ভ্যাঁ ভ্যাঁ শব্দ করে উঠে..আমি এখন আম্মুর মতই বিলাপ দিয়ে কাদঁছি আমাকে দেখে মনে হবে কেউ আমার গর্দান নিতে এসেছে.. তাই আমি এভাবে কাদঁছি..আমার কান্না দেখে ভাইয়া করুন সুরে বলে উঠে…….
.
এই হায়াত এভাবে বাচ্চাদের মত কান্নার কি আছে..এত বড় হয়েছিসস এখনো কান্নার নিয়ম বদলালি না..সে ছোটবেলার মতই ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্নাজুড়ে দিয়েছিসস..ভার্সিটিতে তো টিকে গেলি সাথে এই কান্নাকেও টিকিয়ে রাখলি…
.
.
আমি যানি ভাইয়া আমাকে চেতাতেই এমন আজাইরা প্রলেপ বকছে.. যাতে আমি রেগে গিয়ে কান্না অপ করে দি..কিন্তু এবার আমি এমন কিছুই করলাম না শুধু কান্নাজড়িত কন্ঠে.
.
আব্বু (বলে এক চিৎকার করে উঠলাম)
.
আব্বু ভাইয়াকে ধমক দিয়ে বলে উঠে….আজিম চুপ করবি.
.
আব্বু আমাকে আবারো বলে উঠে…বল আম্মু কিভাবে এই কামড়টা খেলে??..কোন বাচ্চা কি তোমাকে কামড়ে দিয়েছে??
.
.
আমি এবার নিজের মাথাটা খরগোশের মত বের করে যেই বলতে যাব ওমনি পিছন থেকে একটা কন্ঠ ভেসে আসে
.
আঙ্কেল তোমার খুকি দেখি এখনো বড় হল না বিড়াল ছানার মত এখনো কাদেঁ.. শুধু তফাত ওরা ম্যাউ ম্যাউ করে আর আয়ু ভ্যাঁ ভ্যাঁ…..
.

রাগে আমি তড়াত করে পিছনে তাকাতেই থ হয়ে গেছি..আযমান ভাইকে আজ তিন বছর পরে দিখছি.. ইশশশ কি সুন্দর হয়ে গেছে ওনি…আগে ছিল সাদা বান্দর সাথে এখন লাল টাও যোগ হল..খয়েরী রং এর শার্টাতে কি মারাত্মক লাগছে..সাথে কালো পেন্ট পরেছে.. টাকনির উপড়ে..গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি… তুর্কি নায়কদের মত চুল..ওনি দরোজার সাথে ঠেসস দিয়ে বুকে হাত ভাজঁ করে দাঁড়িয়ে আছে..লাল লাল ঠোঁটজোড়ায় হালকা হাসি ঝুলে আছে.. ভালো করে না দেখলে মনে হবে তিনি হাসছেই না…ছিই কি ভাবছি এগুলো যতই সুন্দর হক আমার বাপের কি?? নিশ্চুই আমার বারোটা বাজাতে এসেছে।ওনি হঠাৎ সটাং করে দাড়িয়ে হাটতে হাটতে আম্মুর কাছে এসে মাথাটা উচু করে পা ধরে সালাম করলেন..ব্যাপারটা একটু অবাক হওয়ার… ওনি মনে হয় আব্বুর কাছ থেকেই এই নিয়ম শিখেছে..এবার আব্বু একজন বৃদ্ধাকে এভাবে সালাম করেছিলেন আমি তাকে জিগ্যেস করায় বলে ছিলেন…..
.
ওরা আগে কার দিনের মানুষ। পা ধরে সালাম করলে নিজেদেরকে অধিক সম্মানিত মনে করে…আর মাথা উঁচু করার মানে আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথা নত না করা…
.
.
আম্মুর বিলাপ এখন বন্ধ।সাথে ভাইয়ার পকপকানি আর আব্বুর গম্ভীরতা।যাই হক ওনি সবার সাথেই কত হেসে হেসেঁ কথা বলে আমার বেলায় যত সব…একি সবাই আমাকে বাঘের খাঁচায় রেখে চলে গেল??আল্লাহ..তাদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে নতুন জামাইকে মেয়ের ঘরে রেখে যাচ্ছে.. আযমান ভাই এবার আমার বিছানায় বসে পরে..আমিও উঠতে যাব ওনি আমার হাত ধরে বসিয়ে দিলেন…আমার কামড়ান হাত তার কোলে রেখে খুব যত্নের সাথে পাশে থাকা টিসু দিয়ে আমার হাতে লাগান আব্বুর স্যাভলন গুলো মুছতে শুরু করে।আশ্চর্য আমার একটুও ব্যথা লাগছে না।প্রতিবারের মত এবারো তার চোখ নিচের দিকে।তিনি খুব মনযোগ দিয়ে কাজটা করছে। দেখে মনে হচ্ছে এটার চাইতে মহা মূল্যবান কাজ তার জিবনে আর একটাও নেই।সে নরমালি আমার দিকে তাকায় না যে দিন তাকিয়ে ছিলল তারপর থেকেই ওনি গায়েব….
.
.
আমি তখন দশম শ্রেণির স্টুডেন্ট.. ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল.. আমি শাওয়ার নিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে চুল শুকাছিলাম…হঠাৎ বৃষ্টি থেমে গেল আবার রোদও উঠে গেল। রোদের সোনালি কিরন বারান্দা দিয়ে আমার গায়ে পরা শুরু করে… ইশশশ কি সুন্দর প্রকৃতির খেলা।হঠাৎ পিছনে কে ডেকে উঠে…
.
আয়ু…
.
আমি আমার ভিজাঁ চুলগুলো ঠাসস করে পিছনে মেলা দিয়ে তার দিকে ফিরে তাকাতে অবাক হলাম… ওনি ভিঁজে প্রায় হাবড়ু জাবরু হয়ে আছে..তার চুলগুলো ভিজেঁ একাকার অবস্থা.. সাথে টপটপ করে পানিও পরছে..কিন্তু আমাকে দেখে তার হাসি হাসি মুখ হঠাৎই কেমন যেন হয়ে গেল.. আমি আজও এর মানে খুজে পেলাম না… তার চোখগুলোর রংও পালটে গেল..ওনি ধীর পায়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন… নিজের কাপাঁ কাপাঁ হাতে আমার গালের এক পাশে এসে পড়া ভিজাঁ চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলল…তার ভাব দেখে মনে হয়েছে তিনি এই মুহূর্তে এক আশ্চর্য জনক জিনিসস আবিষ্কার করেছে..যা দেখে নিজেই হতবাক হয়ে গেছে…তার চোখে কেমন যানি নেশা ছিলল..তা আমি তখনও বুঝলাম না আর এখনো বুঝি না…. কিন্তু কিসের সেই নেশা তা আমি আজও যানি না…তারপরে ওনি ওনার ডান হাতটা আমার বাম গালে রেখে তার তাকানো অব্বাহত রেখে ছিলেন…হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুল দিয়ে ক্রমাগত আমার গালে স্লাইড করেই চলেছেন..কিন্তু কেন..তা যানা নেই…ওনি যখনই ওনার কাপাঁ কাপাঁ বাম হাত আমার কোমরে রাখতে যাবে… সাথে সাথে ওনি চোখ জোড়া বুঝে হুরহুর করে যে দিক দিয়ে এসেছিলেন সে দিকে হাটা ধরলেন….আমি শুধু হতভম্ভ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম..আমি স্পষ্ট দেখে ছিলাম সেদিনের তার ঘামে একাকার হাওয়া কপাল আর লাল হওয়া গাল টা… ওটা যে বৃষ্টির পানি না তা আমার জানা ছিলল…..সেদিনের পর থেকেই আযমান ভাইয়া গায়েব হয়ে গেছে…
.
.
কি আশ্চর্য ব্যাপার আমার চোখ কে বাধল??কাল্পনিক দুনিয়া থেকে এসেই আমি বুঝতে পারলাম কেউ আমার চোখে কাপড় দিয়ে বেধে দিয়েছে…আমি আরো অবাক হচ্ছি এটা ভেবে কেউ আমার ব্যথার হাতটা তার গালে ঘোঁষছে..এটা যে আযমান ভাইয়া তা আমি বেশ বুঝতে পারছি…তার খোঁচা খোঁচা দাড়ি আমার হাতে লাগছে..ব্যান্ডেজও করে দিয়েছে এই খানিক সময়ে.. বুঝা যাচ্ছে কারন তার খোঁচা খোঁচা দাড়ি আমার হাতের কিছু অংশে লাগছে না।কিন্তু আমার চোখ কেন বেধে রেখেছে??আমি যেই কিছু বলতে যাব তখনই হাতের বাহুতে পিন ডুকার ব্যথা অনুভব হল..আমি তো আউচুচচচচচু করে চিৎকার করে উঠলাম।সাথে সাথে কানে কিছু হাসির শব্দ এল..আমি তাড়াতাড়ি নিজের চোখের কাপড় সরাতেই দেখলাম আম্মু আব্বু আর ভাইয়া মিটমিট করে হাসছে..এবার আমার প্রচণ্ড রাগ লাগছে..আযমান ভাইয়া ভালো করেই যানে আমি ইনজেকশন দিতে ভয় পাই তাই এই কান্ড.. আমি রাগি চোখে আযমান ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখি ওনি ইনজেকশনটা যে পেকেট থেকে নিয়েছিলেন সেখানে রাখছে আর মিটমিট করে হাসছে…রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে..ওনি যে ডাক্তারের মত ইনজেকশন দিতে পারে তা আমার বহু আগেই জানা আছে..ওনি এবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে চিৎকার করে ময়না মনে কাজের মেয়েটাকে ডেকে উঠে..ময়নাও হাজির..এবার ওনি ঘুড়ে বলে উঠে……
.
ময়না কেমন আছিসস??
.
ভালো ভাইয়া..
.
যা তোর আপুমনির জন্যে এক মগ গরম কফি নিয়ে আশিস সাথে কিছু ফল..আর এইগুলো ফেলে দিসস(হাতের ইনজেকশনের পেকেটা দেখিয়ে)
.
.
আমি প্রচণ্ড ভাবে আশ্চর্য হয়ে আছি।এই লোক করতে কি চাচ্ছে। ময়না সব এনে হাজির করে।বাসার সবাই অতি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে..আমার তো মন চাচ্ছে সবাইকে ঝাড়ি দিয়ে রুম থেকে বের করে দি..একটা বাহিরের ছেলে নিজেদের মেয়ের উপড় জোড় খাটাছে আর তারা কিনা আরামছে তা দেখছে…অসজ্জকর…আযমান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে একটা একটা করে ফলের টুকরো মুখে পুরেই চলেছে আমি বেচারি কিছুই বলতে পারছি না.. আম্মু আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে..তার চোখের ভাষা আমি বুঝতে পারছি..সে বলতে চাচ্ছে না খেলে মাইর খাবি…কি আর করার আমি ফল গিলেই চলেছি..মনে হচ্ছে আমি গরু আর ওনি আমাকে ঘাসস খাওয়াচ্ছে।ফালতু..আমি এবার নিজের সব দৃষ্টি আযমান ভাইয়ার দিকে ডেলে দিলাম।তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে একটা বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে। তাও এক কি দুই বছরের বাচ্চাকে.. পান থেকে চুন ঘঁষলেই বাচ্চাটা ব্যথা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।এত যত্ন কোথেকে আসছে আর এত আদুরে ভাবই কোথায় পেল আল্লাহ যানে। কি আদুরে ভাবে আপেলের টুকরোটা মুখে পুরে দিচ্ছে। ইশশশশ আমি তো মনে হয় ক্রাশ খামু। কিন্তু না এটা হতে পারে না…আমি আর ক্রাশ ইম্পসিবল…..
.
আয়ু কফি খেয়ে নেওও.
.
আমি যত ওনাকে দেখছি তত অবাক হচ্ছি। আগের ওনার সাথে এখনকার ওনার কোনো মিল নেই..এখনকার আযমান এত যত্নবান কি করে হল..আমি বাদ্ধ মেয়ের মত কফির মগে চুমুক দিচ্ছি আর ওনি মগের দিকে তাকিয়ে আছে..অদ্ভুত..কফি শেষ করতেই ওনি আমার দিকে কতগুলো ঔষুধ বাড়িয়ে দিলেন। আমার তো দেখেই বমি বমি পাচ্ছে। আমি নাক মুখ খিঁচে বলে উঠলাম….
.
ছিই..আমি খাবো না।
.
এই এভাবে মুখ খিঁচবেনা।টুপ করে চুমু দিয়ে দিলে পরে আমার দোষ নেই…
.
.
আমি হতভম্ভ.. এটা কি শুনলাম.. আযমান ভাইয়ের মুখে এমন আজগোবি কথা শুনতে হবে জীবনেও ভাবি নি..ভাগ্যিস বাসার সবাই রুম থেকে আগেই চলে গেছে..তা না হলে এগুলো শুনেই টাশকি খেত..আমি বড় বড় চোখ করে আযমান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি।আর ওনি ভাবলেশহীন ভাবে হাতের ঔষুধ নাড়াচাড়া করছে।তাকে দেখে এখন একদম সাধু বাবা মনে হচ্ছে যে কিনা ভাজা মাছও উল্টে খেতে পারে না..আমার এমন চেহারা দেখেই ওনি বলে উঠে……
.
এই তিন বছরে তুমি খুব সুন্দর হয়ে গেছ আয়ু..
.
আর আবাক হতে পারছিনা। আল্লাহ দোড়ি দেও আমি আর এখানে থাকতে চাইনা… কি বলছে ওনি..তার এবারের কথা শুনে আমার মুখ হা হয়ে গেছে..আর এই সুযোগেরও ওনি সৎ ব্যবহার করে গালগুলো চেপে ঔষুধ ডুকিয়ে দেয়…সাথে সাথে আবার পানিও মুখে ধরে..ঔষুধ গিলতে বহুত কষ্ট হয়েছে।ঔষুধ গিলে আমি চোখবুজেই আছি।কি ভয়ঙ্কর একটা জিনিসস..ছিই..ওয়াককক..হঠাৎ ঠোঁটে কার স্পর্শেই আমি চমকে তাকাতেই দেখি তিন বছর আগের সেই নেশা ভরা চোখ দুটো।আযমান ভাইয়া কেমন যেন করে তাকিয়ে আছে আর তার বৃদ্ধা আঙ্গুলটা আমার ঠোঁটের উপড়.. আঙ্গুল নাড়াতেই আমি কেঁপে কেঁপে উঠছি…কি ভয়ঙ্কর ফিলিংস হচ্ছে…….আল্লাহহহহ্
.
#চলবে…………….🍁
.
একজনে কমেন্ট বক্সে বলেছে গল্পটা নাকি কপি করা..কার কার কাছে এমন মনে হয় বলবেন…আর প্রমান ও দেখাবেন… .আর আমি জানি এই গল্প অনেকে কপি করছেন তাদেরও বলছি.. আমি কোন সেরা লেখিকা না যে আমার গল্প কপি করতে হবে….আমার মত আজাইরা লেখিকার গল্প কপি করে কি লাভ হবে…শুধু শুধু মানসম্মান নিয়া টানা টানি….বুঝলাম না নিজের গল্প নিজেই কপি করব কিভাবে??আমি যদি ৩.পর্ব না দি দেখি কয় জনে খুঁজে বের করতে পারেন..আজিব পাবলি…বলে কিনা কপি পোস্টে এই পেইজ ১ নম্বর…. পাগল নাকি…একজনে বলেছে নায়করা নায়িকাকে কারো সাথে দেখলেই এমন করে.. ব্যাপারটা কিন্তু তেমন না ব্যাপারটা হল মানুষ নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে কেউ কম্পোমাইজ করতে চায় না।এটাই লেখিকারা গল্পে তুলে ধরতে চায়।তাই বলে সব গল্প এক না…ভালোবাসা মানে বিশ্বাস এটা সবাই জানি কিন্তু কয় জনে করে সেটা দেখার বিষয়।আর প্রথম পর্ব পরেই গল্প কেমন হবে ধারনা করা কিন্তু ঠিকনা।
.
ভুলগুলো আল্লাহ দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন………….🍁
#তুমি~হলেই~চলবে 🍁
#writer~হাফসা~আলম….🍂
৩.
.
.
কাল সারা রাত আমার আর ঘুম হল না..কিভাবে হবে এত ভয়ঙ্কর জিনিসস দেখে.. তার উপড় ভয়ঙ্কর কথাবার্তা।সকালে ফজর নামাজ পরেই আল্লাহর রহমতে একটু ঘুম আসছিল..কিন্তু শালি দিলের বাচ্চা দিলবার….কল করে ঘুমটা ভাঙ্গেয়ে দিয়েছে..মন তো চায় দিলবার গান দিয়ে এরে নাচাই.. ফাউলল মাইয়া..কল রিসিভ করতেই বলে উঠে…..
.
ওই তুই রেডি হয়েছিসস?? আজ কি ওই ভাইয়ার ভয়ে যাবি না।
.
কে বলেছে যাব না? আবশ্যই যাব..এইত আমি রেডি..(আসলে আমি এখনো বিছানায় গড়াগড়ি করছি😜😜বহু বছরের অভ্যাস.. আমি প্রতিবারই ওকে এমন বলে বলে আগে দাড় করিয়ে রাখি…)
.
তোকে ভালো করে চিনি.. আমি নিশ্চিত তুই এখনো ঘুমাসস..হারামি উঠ আর তাড়াতাড়ি আয় আমি অপেক্ষা করছি…
.
.
আমি জানতাম ধরা খামু এটা প্রায়াই হয় কিন্তু একটা কথা আছে মানুষ বদলালেও অভ্যাস বদলায় না।আমি রেডি হয়ে প্রচণ্ড দ্রুত না খেয়েই দৌড় দিছি।ভাগ্যিস আম্মু রান্নাঘরে ছিল তা না হতে ডিবাইয়া ডিবাইয়া খাওয়াতো। আমি আসতেই দিলকে বাসার গেটের কাছে দাড়িয়ে থাকতে দেখি।রিকশা আগে থেকেই রেডি করে রেখেছে..মেয়েটা ভারি ইন্টেলিজেন্ট……
.
.
আমি আর দিলল ভার্সিটির গেটের সামনে এসেই অবাক হলাম… ভার্সিটির গেটে দুইজন ভাইয়া দাবাং সিনেমার মত বেল্ট নিয়ে তা ক্রমাগত ঘুড়াছে।কি ভয়ঙ্কর দৃষ্ট.. কিন্তু কেন..আমাদেরকে মারবে নাকি.. কিছনে ঘুড়তেই দেখলাম কিছু ছেলে দৌড়ে পালাছে।এবার বুঝতে পাড়লাম..ওই ছেলেগুলো নিশ্চুই মেয়েদের ডিস্ট্রেব করে তাই এরা এমন করছিলল..আমরা হাসি হাসি মুখে কথা বলতে বলতে সামনে এগিয়ে যেতেই ছেলেগুলোর একসাথে বলে উঠে….
.
ভা..আসসালামু আলাইকুম…
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম…কিন্তু ভা মানে কি ভাইয়ারা??
.
তা যানতে হবে না ভা..আপনি ক্লাসে যান..আশি..
.
.
আল্লাহ কি হচ্ছে এগুলো. এখন এই ভা এর মানে কি…দিল বলে উঠে….
.
অত ভেবে কাজ নেই চলত এই সব আজাইরা পাবলি..
.
.
আমি আর দিল ভার্সিটির ক্যাম্পাস ঘুড়েঘুড়ে দেখছি।কি সুন্দর ক্যাম্পাস। যাকে বলে চোখ ধাঁদা নো টাইপের।কত গাছ পালা আছে।প্রকৃতির প্রেম প্রেম খেলা চলছে মনে হয়।আশেপাশে প্রেমিক প্রেমিকার ভিড়.. কেউ মাঠে বসে প্রেম করছে তো কেউ দেয়াল ঘেঁষে প্রিয়সির সাথে প্রেম আলাপ করছে।কলেজে থাকা কালিন স্যারা বলত..প্রেম করার হলে ভার্সিটিতে গিয়ে করিসস..কিন্তু এমন কপাল প্রেম নামের বস্তুটা কিছুতেই আমার ভিতর থেকে আসেনা।শুধু যে আমার ব্যাপারটা ভুল বলেছি দিলও এই সাবজেক্টে ফেল….এত এত প্রপোজাল পাইছি জীবনে বলার বাহিরে কিন্তু সব গুলোই প্রপোজ করে গায়েব। মনে হয় কেউ কঠিন ভাবে প্রতিজ্ঞা করেছে আমাকে প্রেম করতে দিবে না।আহহহু কি কষ্ট🙄..
.
.
সকাল সকাল কেন্টিনে বসে থাকার কোন ইচ্ছেই আমার ছিল না কিন্তু কি আর করার কপাল সবই কপাল..একটা ভাইয়া বলেছে কেউ অতি গুরুত্বের সাথে আমাকে এখানে আসতে বলেছে কিন্তু আসল কথা হল আমি তো নতুন তবে কে এভাবে আমাকে ইনভাইট করে কেন্টিনে আসতে বলবে..অসজ্জকর.. আমি আর দিল একটা টেবিলে বসে আছি হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় গতিতে একটা ছেলে এসে টেবিলের কোনার চেয়ারে বসে পরে।হাপাতে হাপাতে বলে উঠে….
.
সরি ভা..একটু দেরি হয়ে গেছে..ভাইকে বলবেন না।তা না হলে কপালে শনি আছে..আর আমার নাম নিলয়..আপনি শর্ট করে নীলও ডাকতে পারেন..এগুলো আপনার খাবার আর এগুলো ঔষুধ সাথে পানির বৌতল.. বৌতলটা কিন্তু ভাইয়ের ওনি বাসা থেকে নিয়ে এসেছে..আপনাকে বলেছে বাহিরের পানি পান না করতে..আর আর ওওও কি যেন বলেছে..দাড়ান ভা মনে করে নি…ওওও মনে পড়েছে ভাই বলেছে এগুলো কিছু যদি নষ্ট করেন বা ফেলে দেন তবে আপনার কপালে নাকি ঘূর্ণায়মান গতিতে ঘূর্ণিঝড় আছে।সো ভা ভালোয় ভালোয় খেয়ে নিন..আশি….
.
.
আমি তো হাবার মত তাকিয়ে আছি। ছেলেটা যে দিক দিয়ে এসেছে সে দিক দিয়েই এক বিশাল দৌড়..কি হল..আমি এখন এই বিচ্ছিড়ি..ঔষুধ খাবো না.. ওয়াককক..না কিছু তেই খাবো না।নিজেই কামড়ে অসুস্থ করেছে এখন ঔষুধ খাওয়াতে আসছে।যে দোষ করেছে তাকেইত শাস্তি পেতে হয় তবে আমার বেলাই কেন উল্টা…
.
ভাই দিলল এই আযমান ভাইয়া এখানে কেন এবং কিভাবে এসেছে একটু বলবি..(আমি চিৎকার করে বলে উঠি)
.
দেখ আযমান ভাইয়ার বাবা কিন্তু দেশের সেরা বিজন্যাস ম্যান সো ওনিও কিন্তু বিজন্যাস করবে তাহলে তো ওনাকে এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে তাই মনে হয় আইবিএতে কোর্স করতে এসেছে আর ওনি তো সচিবের ছেলে তাই ভর্তি হওয়া কোনো বড় ব্যাপার না।এই সামান্য ব্যাপারটা তোর মাথায় কেন ডুকছেনা।
.
ওনি যে একটা গাধা এটার প্রমান হচ্ছে এটা..আরে যদি বিজন্যাস ম্যানই হওয়ার থাকে তবে কে বলেছে বুয়েটে পড়তে..কচু আগে জানলে এখানে ভর্তি হতাম না।এখন এই ঔষুধের কি হবে…..
.
.
আমার প্রচুর কান্না পাচ্ছে যা আমার পছন্দ না তাই কেন আমার সাথে হয়.. খাবার গুলো প্রচণ্ড বিদঘুটে.. ফলমূল,কেক,জুস,স্যান্ডুইচ, এত এত পুষ্টি আমি কোই রাখি..খাব না দেখি কি হয়….আমি পেকেট গুলো সরিয়ে রাখতেই একটা ছোট ছেলে এসে হাজির হয়..ছেলেটা ক্যান্টিনে কাজ করে।ছেলেটার হাতে একটা ট্রে তার উপড়ে খুব সুন্দর একটা সাদা গোলাপ সাথে একটা কাগজ ভাজঁ করা..ছিলেটা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ট্রেটা রেখে চলে যায়।আমি আর দিল নিজেদের দিকে কিছুক্ষণ চাওয়া চায়ি করে কাগজটা ভাজ থেকে খুলতে শুরু করি তারপর পড়া ধরি…..
.
আয়ু যদি টেবিলের খাবার পেকেট প্লাসস ঔষুধের পেকেট খালি না হয় তবে তোমার কপালে কি আছে আই ডোন্ট নো..বট আই আল সো নো দেট.. ইউ নো দেট বেটার ফর মি…আন্টিকে ধোকা দিয়ে বাসা থেকে চোরের মত বেরিয়ে এসেছ আর আমার দেওয়া খাবারও খাও নি যদি ওনাকে এটা বলি তবে কি হবে???ইউ নো দেট বেটার…আর আইসক্রিম আছে তোমার জন্যে ওটা গিফট.. এবার বিড়াল ছানার মত কাচুমাচু না করে খাও……
.
.
এই লোকটাকে ত আমি খুন করমু..কচু এখন যদি না খাই নিশ্চিত আম্মুর কাছে বলে দিবে আর বিনিময়ে আমি কিছু ঝাড়ি খাব..আমি খাওয়া শুরু করলাম বাট বেশির ভাগ দিলের মুখে ডুকিয়ে দিলাম।কিন্তু ঔষুধটা খেতে বারোটা বেজে গেছে।একদম গলায় বেজে গেছে।ইশশশ কি যে ব্যথা গলাটা..সব ওই আসাবার জন্যে হইছে…দিলের অনেক দিনের ইচ্ছে আসাবার মানে যানবে আজকে এই শর্তের বিনিময়ে ও আমাকে খাবার খেতে স্পেশাল ভাবে সাহায্য করেছে..আজকে তাকে বলতেই হবে যে কোন মুল্যে…
.
বল আসাবার মনে?? সব খাওয়া শেষ..এবার বলার পালা..বল
.
দাড়া(আমি উকি ঝুঁকি দিয়ে চারিপাশ দেখে বলে উঠে)আযমান সাদা বান্দর..হি!হি!
.
.
দিল হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সে ভাবতেও পারে নি আমি এমন একটা কথা বলব।কিন্তু কি আর করার আছে ওনার জন্যে এটাই বেস্ট নাম..আবুল একটা..এই নামে ত আমি ওনার সামনেই ওনারে বকি বাট বেচারা বুঝতে পারে না! হি!হি!!কেউ একজন বলেছে একজন পুুরুষ কেম তা যানতে হলে তার বউকে জিগ্যেস করতে কারন বউ এর চাইতে নাকি ভালোভাবে আর কেউ সঠিক ইনফরমেশন দিতে পারবে না।কিন্তু আমি বলব..আযমান ভাইয়ার সম্পর্কে জানতে হলে আমাকে জিগ্যেস করেন..ওনি যে কি তা আমার চাইতে ভালো ওনার বউও যানবে না……ফাজিললল ছেলে একটা…
.
.
ক্লাস শেষ আজকে তেমন ক্লাসস হয় নি। নবীন বরন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।কিছু দিন পরেই নবীন বরন।মাঠে সবাই গোল হয়ে কারো গান শুনছে।দূর থেকে গায়কের গলা চিনা যাচ্ছে না।কিন্তু কি আর করার আমরা একটু এগিয়ে গিয়ে শুনতেই বুঝতে পেরেছি আযমার ভাইয়ার গলা।ওনার বেস্ট কিছু গুনের মধ্যে এটা অন্যতম.. ওনার গলার ভয়েস সেই লেভেলের সুন্দর। গানটাও সুন্দর…. হাম সাফার…শুনেই মনে হচ্ছে প্রিয়তমার জন্যে মন উজাড় করে গাইছে।তার গান বেশিক্ষণ শুনতে পারলাম না তার আগেই কিছু আপু টানতে টানতে আমাদেরকে একদম খোলামেলা জায়গায় নিয়ে এসেছে।আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি..আপু গুলোর মধ্যে একজন বলে উঠ…..
.
তুমি কি আযমান ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড….
.
আশ্চর্য আমি কেন তার গার্লফ্রেন্ড হব…..আমি তকে বলে উঠি……… আমি ওনার গার্লফ্রেন্ড না আপু..
.
না হলেই ভালো ও সুধু আমার..
.
এই তার মানে কি?? ও আমার(পাশের একজন বলে উঠে)
.
এই ওকি তোদেরকে বলেছে তোদের ও তো আমার..
.
আমি তো তোদের কারোকেই ওকে দি নি তবে তোদের কি করে হলল…
.
.
আল্লাহ এই মেয়েগুলো পাগল নাকি….আমি চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে…. দিলের হাত ধরে এক দৌড়।মেয়েগুলো একজনের সাথে আর একজন চুল ছিঁড়াছিঁড়ি টাইপের অবস্থা। একজনের জন্যে এত এত মেয়ে পাগল।ভাবা যায়?? কি ভয়ঙ্কর ব্যাপার।ওনার জন্যে শুধু ভার্সিটি কেন স্কুল কলেজের মেয়েরাও পাগল ছিল।আমাকে একদিন আমার স্কুলে দিয়ে এসেছিল কম করে হলেও ২০-২৫টা মেয়ে আমাকে লাভ লেটার ধরিয়ে দিয়েছে।ওনাকে দেওয়ার জন্যে।আমি যখন ওনার হাতে চিঠি গুলো দিলাম।ওনি সব একসাথে আগুনে পুরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন…তার বউ থাকতে অন্যের লাভ লেটার সে পরবে না।তার বউ যখন বড় হবে তখন নাকি তাকে লাভ লেটার লিখবে আর তা ওনি মনের মাধুড়ি মিশিয়ে পড়বে।যত সব।ওই বউ আর আমার চোখে পরলো না।…….না ভুল বললাম ওনার বউ তো সামনে ওনাকে জাপ্টে আছে।এই মেয়ে এখানেও হাজির..আল্লাহ মাফ করো।এই যে কি ভয়ঙ্কর বস্তু না শুনলে যানা যাবে না।এই মেয়ে আযমান ভাইয়া বলতে অজ্ঞান… ।আমার সামনে দাড়িয়ে আছে আযমান ভাই।আর তাকে জাপ্টে ধরে আছে ঝুলন্ত ডোঙ্গি..মানে মালিহা।এই মেয়েটা আযমান ভাইয়ের ফুপাতো বোন।আযমান ভাইয়া যেখানে এই মেয়েও সেখানে।তবে ও আগে থেকেই এখানে পড়ে শুনেছি।বয়সে আমার চার বছরের বড়।কিন্তু কোন এক ভয়ঙ্কর কারনে সে আমাকে প্রচণ্ড ভাবে অপছন্দ করে..এক কথায় সি হেটস্ মি…ছোট থেকেই সে আমাকে অপছন্দ করে….একবার আমাকে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়ে মাথা পাটিয়ে দিয়ে ছিলল।আমি তখন ছয় বছরের শিশু।। তার বিনিময়ে আযমান ভাইয়াও ওকে ধাক্কা মেরে মাথা পাটিয়ে ছিলেন।হি!হি!।আযমান ভাইয়া যখনই এই ঝুলন্ত ডোঙ্গিরে শায়েস্তা করত তখন আমার ওনাকে সেই লাগত।এই ঝুলন্ত ডোঙ্গি যখনই আমাকে ব্যথা দিত আযমান ভাইয়াও ওকে ব্যথা দিয়ে তা শোধবোধ করে দিত…ওই একটা কারনে ওনি মাঝে মাঝে আমার প্রিয় জায়গা গুলোতে থাকে।
.
.
আযমান ভাইয়া মালিহা আপুকে এক টানে সরিয়ে দিলেন।কি অদ্ভুত কান্ড ভাবা যায়।ওনি এক পা এক পা করে আমার দিকে কেন আগাচ্ছে.. ভয়ে ত আমার গলাটা শুকিয়ে যায় যায়।আল্লাহ বাচাও।থাপ্পড় দিবে না তো।আমি ভয়ে জড়সড় হয়ে দাড়িয়ে আছি মাঠের মাঝ খানে।ওনি মুচকি হাসছে।এত হাসি পাচ্ছে কেন?? কে যানে। কিন্তু আমার এখন ভয়ে দৌড়ে পালাতে ইচ্ছে করছে।আচ্ছা ওনিকি দেখেছে আমি যে দিলকে খাবার গুলো খাইয়েছি? নাকি ওনাকে দেওয়া সেই নাম শুনে ফেলেছে??এমন কিছু হলে আমার রেহায় নেই….ওনি এবার আমার সামনে বরাবর এসে আমাকে বলে উঠে…….
.
খাবার খেতে এত চালাকি এপ্লাই করা কে শিখিয়েছে তোমায় আয়ু…কিভাবে পার??তুমি যে কি তা আমি জানি..চল বাসায় দিয়ে আসি..তুমি অসুস্থ এখন ভার্সিটি না আসলেও চলবে..এভাবে তাকিয়ে থাকার মানে কি?আমি কি বান্দর না কি যে খামছে দিব??(ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠে)
.
.
আমি বেচারি ভালো ভাবে ফেসে গেছি ওনি সব শুনে ফেলেছে এখন কি হবে আল্লাহ…
.
ওই আযমান এই তোর সেই পরী???
.
.
কথাটা পিছন থেকে এসেছে।আমি তড়াত করে তাকাতেই শিহরিত ভাইয়া এখানে কেন??আর কি যাতা বলছে..আমি প্রচণ্ড বিস্মিত ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে… ভাইয়া এবার আমাদের সামনে এসে বলে উঠে…..
.
তুমি তো সত্যিই পরীর মত..লিটেল পরী..তো কিউটি কেমন আছ..আযমান ঠিকিই বলেছে।তুমি কিন্তু হুর পরীর মত.. গল্মুসস টাইপের….
.
ভাইয়া এগুলো কেমন কথা।তুমি এভাবে কথা বলছ কেন?? আর আমাকে তুমি কেন বলছ??আশ্চর্য ত…(রাগি চোখে তাকিয়ে বলে উঠে)
.
আয়ু ওর নাম সারফারাজ আমার বন্ধু।দেখতে আজিম ভাইয়ের মত..পৃথিবীতে এক রকমের সাত জন মানুষ হয় এটা তুমি জানো না??এটাই তার প্রমাম…
.
.
আমি এখনও তাকিয়ে আছি…বিশ্বাসই হচ্ছে না এটা আজিম ভাইয়া না।কত মিল দুজনের চেহারায়।এতটা বুঝি মিলে??না এমন ত হওয়ার কথা না..আমি বুঝতে পারচ্ছি ওনি আনইজি ফিল করছে।কিন্তু আমার তো চোখই সরছে না।আযমান ভাইয়ার দিকে না তাকিয়েই বুঝতে পারছি ওনি প্রচণ্ড বিরক্ত আমার এমন পালক বিহিন তাকানতে।কিন্তু আমি কি করব এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না ওনি আমার ভাই আজিম না…পৃথিবীর সব অদ্ভুত কান্ড আমার সাথেই হতে হয় নাকি…আজিব…….
.
#চলবে………………..🍁
.
ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন………..আপনারা যে অরিএান আর ওয়াসেনাতকে এত এত ভালোবাসেন আমার জানা ছিল না..তা হলে এত তাড়াতাড়ি শেষ করতাম না..দুঃখীত আমি না বুঝেই আপনাদেরকে এত এত কষ্ট দিয়েছি….😔
#তুমি~হলেই~চলবে 🍁
#writer~হাফসা~আলম🍂
৪.
.
.
আমি উষ্ণতার জোয়াড়ে ভাসছি…হ্যাঁ এমনটাই মনে হচ্ছে.. আমার মনে হচ্ছে কেউ তার উষ্ণ হৃদয়ে আমাকে জায়গা দিয়েছে..সাথে তার ধাকধাক সাউন্ড শুনার একমাএ অধিকার..কিন্তু কে..চোখ খুলতে ইচ্ছে করছে না।ভালোই লাগছে…অন্যরকম এক ফিলিংস.. আমার যত দূর মনে আছে..আমি ভার্সিটির গেট দিয়ে বের হতেই আযমান ভাইয়া আমাকে টেনে তার গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে ছিল..তারপর আর কিছু মনে নেই..খুব ঘুম পাছিলল..বাকিটা জানা নেই..কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কোন নিরাপদ স্থানেই আছি..চোখ না খুলে বুঝব কি ভাবে.??. কিন্তু চোখ খুলতেও ইচ্ছে করছে না।আমি মিটিমিটি করে চোখ খুলতেই একটি সাদা গলা দেখতে পাচ্ছি..বিস্মিত ভাব নিয়ে একটু উপড়ে তাকাতেই আবাক… আযমান ভাইয়া মনের সুখে সিটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আর আমি তার বুকের সাথে লেগে আছি।তার একটা হাত আমার মাথা চেপে আছে তার বুকের সাথে লাগিয়ে আর একটা আমার কোমড় জড়িয়ে…কি ভয়ঙ্কর দৃশ্য ভাবা যায়???আমি তাকিয়ে আছি আযমান ভাইয়ার ঘুমন্ত মুখের দিকে..কি আরামছে ঘুমাচ্ছে… গাড়ির সিটে বসে এমন আরামের ঘুম আসা মোটেও সহজ কথা না।আমাকে ওনি একদম নাদুস নুদুস বাচ্চার মত জড়িয়ে আছে।পৃথিবীতে বাবা আর ভাইয়া বাদে এই একটা লোক আমাকে এভাবে ধরলেও আমার খারাপ লাগে না।কিন্তু কেন তা যানা নেই।মনে হয় তার সাথে আমার সম্পর্কটা জন্ম থেকে যা অতিব মাএায় পবিএ।আসলে আমাদের কি সম্পর্ক একের সাথে অপরের আমার জানা নেই..তবে তা বহু গভীর..আমি তো কখনই সে সম্পর্কের সম্পর্কে জানার জন্যে অনুসন্ধান করিনি…আসলে কি করা প্রয়োজন??? জানি না।আমি গভীর মনযোগ দিয়ে ওনাকে দেখছি…তার এই ঘুমন্ত মুখ আমাকে প্রচণ্ড ভাবে মুগ্ধ করছে…কি সুন্দর করে সে ঘুমাচ্ছে আর তার লাল লাল ঠোঁট জোড়া হালকা প্রশারিত হয়ে আছে।গাল গুলো লাল হয়ে আছে…এমনটা আমারও হয় যখন রোদে যাই, লজ্জা পাই বা অনেক ভয় পাই…কিন্তু আযমান ভাইয়ার কেন এমন হচ্ছে?? সে ত এখন এই তিনটার একটাও ফিল করছে না।ঘুমের মানুষই প্রকৃত সুন্দর শুনেছি..আসলেই কি তাই??এখন ত মনে হচ্ছে তাই।আমি এক দৃষ্টিতে এই সুন্দর পুুরুষকে পর্যবেক্ষন করছি।আমার কি এটা করা উচিত??না ত। এটা তো একান্ত তার বউয়ের অধিকার। তবে কেন সে এই বুকে আমাকে জায়গা দিয়েছে??জানি না।পৃথিবী বড়ই বিচিএ। এর বেশির ভাগ জিনিসই অজানা। আমি এবার তার থেকে চোখ সরিয়ে আবার তার বুক ঘেঁষে মাথাটা এলিয়ে দিতেই একটা কন্ঠ ভেসে আসে কানে……….
.
এত তাড়াতাড়ি পর্যবেক্ষণ শেষ??আমি তো ভেবেছি আজ তুমি আমাকে নিয়ে একটা বই নিশ্চিত লিখবে।কিন্তু তুমি এত অল্প সময় আমাকে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে যে?? তবে তো তুমি লিখতে পারবে না।আমি যে বড় রহস্য মই….(ঠোঁটের কোনে রহস্য হাসি দিয়ে)সে যাই হক আসল কথা হল তুমি আমার এমন কোমল বুকে আরামের ঘুম দিতে চাও তাই ত???
.
.
তার এমন কথা শুনে আমি প্রচুর লজ্জা নিয়ে চট করে পাশের সিটে চলে যাই।ওনি হাসে।তারপর গাড়ি থেকে নেমে আমার পাশের দরজাটাও খুলে আমাকে বেড়িয়ে আসতে বলে।আমিও আশি।ওনি রাস্তার পাশে গাড়ি দাড় করিয়ে রেখে ছিলল।আমি অবাক হয়ে আশপাশ দেখছি।দুপাশে সবুজ গাছ পালা।সামনে কিছু দোকান।আর তেমন কিছু নেই।হালকা হালকা বৃষ্টি পরছে।আকাশে মেঘের খেলা তারা আগাম জানাচ্ছে এখনই ঝুম বৃষ্টি নামবে।পরিবেশটা কেমন যেন থমথমে।আর এই পরিবেশে ওনি গাড়ি কেন থামিয়েছে কে জানে। ওনি আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে উঠে……….
.
নিজের জিনিসস কেউ নিজে চুরি করে না।ডোন্ট ওয়ারি.. চা খাবে।ওও তুমি ত চা খাও না।আমি বরং খাবো।তুমি দেখবে..
.
আমরা কি চা খেতে এসেছি??
.
না গল্প করতে।একটু ঘুড়তে..একটু অনুভতি আদানপ্রদান করতে..আর একটু..থাক পরে বলব..ভয় নেই নিজের জিনিসস কেউ চুরি করে না।যানো ত??এভাবে তাকাবেনা..কেমন কেমন যানি লাগে..যেমন আদর আদর..হা!হা!দাড়াও চা নিয়ে আসি..
.
আপনি ত কখনো আমার সাথে গল্প করতেন না।তবে আজ কেন??(ভ্রু কুচকে বলে উঠি)
.
তখন ত ছোট ছিলে.. আমার গল্প তোমাকে ভাবাত না।কিন্তু এখন আমার গল্পগুলো তোমার মনে অনুভুতি জাগাবে।যে অনুভুতি শুধু আমাকে ঘিড়ে হবে..শুধুই আমি….
.
.
চলে গেল..আজিব সব কাজ কারবার।ওনার প্রতি আমার অনুভুতি দিয়ে কি করবে ওনি??কি সুন্দর কথা বলে ওনি..আগেত এমন বলতনা।সব সময় কেমন যেন রাগিরাগি থাকত।আর ধমক দিত।কিন্তু এখন কেমন যানি করে বলে।কেমন মাতালতা তার ভাষায়।আমি তো কখনো মদ খাইনি তবে মনে হয় মদের মাদকতা এটার চাইতেও কম।কথা দিয়ে ঘায়েল করছে নাকি??আমি কি তার প্রেমে পড়ছি??কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত না।প্রেম বড্ড আজব রোগ আমি শুনেছি হলে নাকি খাওয়া দাওয়া, এমনকি কিছুই করতে ইচ্ছে করেনা।এমন ভয়ঙ্কর রোগে না পড়াই ভালো।তার উপড় এই ব্যক্তির মত সুন্দর মানুষের প্রেমেত পড়ারই প্রয়োজন নেই।সুন্দর মানুষে ঘাপলা থাকে..সুন্দর মানুষ ভয়ঙ্কর যন্ত্রনার হয়।এদের ভালোবাসা মানে কষ্ট আর কষ্ট।হায়াত ভুলবি না চাঁদেও দাগ থাকে…….
.
তাই না কি??কিন্তু সব ত এক না।
.
চা নিয়ে কখন এলেন??
.
যখন তুমি ভাবনায় বিভোর ছিলে…তুমি যান কৃষ্ণচূড়াও কিন্তু সুন্দর তার সৌন্দর্যে কিন্তু ঘাপলা নেই..দেখ সে কত ভালোবাসে তার রংকে..সে কিন্তু নিজের সাথে বা নিজের গাছের সাথে প্রতারণা করে না।এমন কি জমিনের সাথেও করে না।সে বাকি ফুলের থেকে বহু গুন আলাদা।সে তার রং ধরে রেখে নিজেকে সাজায় সাথে আবার গাছকেও আর জমিন যে কিনা তার জন্ম স্থান তাকেও কিন্তু সে ভুলে না।আপন রং দিয়ে সে সবাইকে সাজায়।এর জন্যেইত এই ফুল তোমার সবচাইতে প্রিয় তাই না??আর চাদঁ সে কিন্তু নিজের দাগ নিয়ে মোটেও ভাবে না।তার মন কিন্তু বিশাল।তাইত তোমাকে আমাকে সারা পৃথিবীকে নিজের রূপ,আলো,রং দিয়ে সজ্জিত করে।এটাই তার সৌন্দর্য। এখানে কিন্তু বিন্দু মাএ দাগ নেই।তাই এটা ভুল ধারনা যে সৌন্দর্যে ঘাপলা বা দাগ থাকে।
.
আপনি কি মনের কথা শুনতে পান নাকি??(অবাক হয়ে)
.
সবার না।যাকে দিয়েছি তার শুধু…
.
মানে..
.
একজন নিজের মনকে আর একজনের কাছে দিয়ে দিয়েছে।এখন দুটি মন একসাথে থাকে। তাহলে এক মন যদি কিছু ভাবে তবে আর এক মন তা শুনবে এটাই সাভাবিক নয় কি??এত ভাবতে হবে না।এটা নেও আর চল(হাতের আইসক্রিম গুলো বাড়িয়ে দিয়ে)
.
একটা হলেই ত চলত দুইটা কেন??আর আমরা কথায় যাব??
.
তুমি খুব সেল্ফিস তা না হলে শুধু নিজের কথা কেন ভাব??আমি আছি দেখছ না।একটা তোমার আর একটা আমার।বৃষ্টিতে ভিজেঁ আইসক্রিম খেতে মজা তুমিইত বলেছিলে মনে নেই??ওটাই আজ এপ্লাই করব..আর আমরা এখন প্রেম করব??
.
হোয়াট….
.
এই একদম এমন চিৎকার করবে না।আমি তো এমনেই বলছিলাম।চল।আজ তিন বছর পরে আমরা একসাথে কাটাবো।সো হাটঁ……
.
.
আমি হাবার মত তাকিয়ে আছি।আচ্ছা ওনি কি আমার কৃষ্ণচূড়ার সিক্রেটও জানে??আল্লাহ…. না জানাই ভালো।ওনার হাতে একটা মাটির চায়ের কাপ।আর গায়ে জ্যাকেট। এই গরমেও ওনি জ্যাকেট পরে।জ্যাকেট ওনার খুব প্রিয়। আন্টি বলেছে তার দুই আলমারিতে শুধু জ্যাকেট আর জ্যাকেট। পৃথিবী যেমন অদ্ভুত তার মানুষগুলো আরো অদ্ভুত। ওনি হাটঁছে।তার দৃষ্টি শূন্যে ভাসছে।বাম হাতে আমার ডান হাতটা আবদ্ধ করে রেখেছে।একবার চায়ের কাপে চুমুক দেয় তো একবার সামনে তাকায়।হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার এতে ওনার কোন নড়চড় নেই।রাস্তায় তেমন মানুষ ছিল না।যা একটু ছিল তারাও ছুটাছুটি করছে।মুহূর্তে পিছঢালা রাস্তাটার রংটাও বদলে গেছে।চারপাশ বৃষ্টির ঝাপটানিতে ঝাপসা হয়ে গেছে।রিনিরিনি বাতাস হচ্ছে। আমার ওড়নাটা উড়াউড়ি করছে।হেজাবও বাতাসে দুলছে।ওড়নাটা ওনার মুখের উপড়ে পরছে।আমি বারবার তা টেনে আনছি আর ওনি হাসছে..আশ্চর্য.. ধূসর রং এর জামাটা ভিজেঁ একাকার অবস্থা। বৃষ্টি নিজের আপন রংএ আমাদের রাঙাচ্ছে।আমরাও রঙ্গিন হচ্ছি। দুজনেই ভিজেঁ একাকার। কিন্তু এতেও তার আই ডোন্ট ক্যায়ার টাইপের ভাব।তাকে দেখে মনে হচ্ছে এটা তার জিবনের সেরা সময় চলছে।আমি তাকিয়ে আছি তার দিকে।বৃষ্টির ফোটাগুলো তাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। চুলগুলোতে মনে হচ্ছে শিশির কণা আটকা পরে আছে।তারা আপ্রাণ ছুটছে মুক্তির জন্যে।মাঝে মাঝে কেউ লাফিয়ে পরছে তার চোখ বেয়ে।হাতের চা টা এখনও সে খাচ্ছে। চায়ের কাপে বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দু আলিঙ্গন করছে।আর ওনি বেশ আয়েশে কাপে চুমুক দিয়ে তাদের সাগতম জানাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে বৃষ্টির পানিতে চায়ের রংও খানিকটা পরিবর্ত হয়েছে।তবুও সে চাটা খাচ্ছে। ইশশশ কি সুন্দর লাগছে তাকে।ভার্সিটির মেয়েরা ওনাকে এভাবে দেখলে আজ পাগলই হয়ে যেত……..
.
আমি কাউকে পাগল করতে চাইনা শুধু একজনকে নিজের করে চাই।সে হলেই চলবে….আর কিছু লাগবে না…
.
.
ওনি নিজের প্রিয় জ্যাকেটা আমার গায়ে জড়াতে জড়াতে বলে উঠে…কত যত্নে আমার গায়ে ওনি জ্যাকেটা জড়িয়েছে ইশশশশ…কেমন কেমন জানি লাগছে…এ এক বলতে না পারা ফিলিংস… ওপসস..আচ্ছা ওনি কি কারো প্রেমে পরেছে??হতেই পারে তবে কার??ভার্সিটির কোন সুন্দরী মেয়ের নাকি ওই মালিহার?? জিগ্যেস করি??যেই ভাবা সেই কাজ..
.
আপনি কি কারো প্রেমে পরেছেন??
.
আমার কথায় ওনি তড়াত করে আমার দিকে তাকায়।তারপর আবার সামনে তাকিয়ে হালকা হেসেঁ বলে উঠে…..
.
হুম পরেছিত..
.
কার..
.
সে এক পরী..সাদা তোয়ালে পেচিয়ে লাল টুকটুকে পরী..ইশশ প্রথম দেখাই শেষ হয়েছি…
.
ছিই আপনি তোয়ালে পড়া মেয়েদেরকে দেখেছেন.
.
আমার কথায় ওনি হুহা করে হেসে উঠে।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।ওনি কিন্তু কখনো এমন হু হা করে হাসে না।তবে আজ ওনার কি হয়েছে।সব অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ করছে।আমি চোখ ফালাফালা করে তাকিয়ে আছি।এই দৃশ্য মিস করা উচিত না।মোবাইল গাড়িতে রেখে এসেছি তা না হলে সবাইকে আমার দেখা অষ্টম আবিষ্কার দেখাতাম।ছেলেদের হাসলে কি এতটাই সুন্দর লাগে??কই ভাইয়াকে ত এত সুন্দর লাগে না। উল্টা ওর ভয়ঙ্কর হাসিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।কিন্তু ভাইয়ার হাসি ও সুন্দর। তবে এত না।আমাকে এভাবে হা করে থাকতে দেখে বলে উঠে……
.
হ্যাঁ দেখেছি।তাকে দেখার সম্পূর্ন অধিকার আছে।তাই দেখেছি।যানো ও দেখতে লাল টুকটুকে ছিল।মনে হচ্ছিল সাদার মাঝে এক লাল কৃষ্ণচূড়া।যে নিজের সাথে সাথে আমাকে রাঙ্গাতে এসেছে।ও যখন ওর ডান হাতের তিনটা আঙ্গুল মুখে পুরে দিয়েছিলল কি মায়াবিনী লাগছিলল আমি তা এ জন্মে বুঝাতে পারব না।মৃত্যুর পরে যদি জান্নাত পাই তবে আল্লাহকে বলব।আবার একবার সরাসরি দেখাতে।আবার একবার তার মায়ায় নিজেকে হারাতে।সে বারবার মুখে হাত দিচ্ছিল আর হামি তুলছিল।ইশশশ কি কিউট লাগছিল।পুরাই কিউটের ডিব্বা। কিন্তু দুঃখের বিষয় সে তখন একবারও নিজের গহিন কালো চোখে লাকালো না।শুধু ঘন পাপড়ি গুলো কুঁচকে চোখ বুঝে ছিললল।
.
আহারে..খুব কষ্ট লেগেছিল বুঝি..
.
খুব…….
.
এটা একদম ভালো করেনি সে।মোটেও না।
.
ভুল করেছে তাই না??? হুম করেছে তো তাকে শাস্তি দেওয়া উচিতত খুব বেশি..তাই না।
.
আপনি কি তাকে ভালোবাসেন??
.
কত ক্ষানি বলতে পারবো না।কিন্তু বড্ড বেশি।খুবব খুববব বেশি…(ওনি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কথাগুলো বলছে।আমার অবুঝ মনের মনে হচ্ছে আমাকেই বলছে…ইশশশ কত লাকি সে যাকে ওনি এত ভালোবাসে…)
.
ভালোবাসলে তাকে শাস্তি কিভাবে দিবেন??ভালোবাসায় শাস্তির জায়গা নেই…আছে শুধু ভালোবাসার…তাকে শাস্তি দিলেত আপনার হৃদয়ে ভাঙ্গাচুর হবে…ব্যাপারটা কি ঠিক হবে??
.
.
আমার কথা শুনে ওনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।তার চোখ জোড়া চকচক করছে।ওনি হয়ত ভাবতেই পারে নি আমি এমন কিছু বলব…সে তার চোখ জোড়া সরিয়ে আবার হেসেঁ উঠে আমার হাতটা আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়।আর বলে উঠে…….
.
কখনো কষ্ট দেব না প্রমিসসসস…তুমি বড় হয়ে গেছ।খুব বড়……….

🍁

আমি ওনাকে দেখে দেখে হাটঁছি। তার ভালোবাসার কথা শুনে আমার নিজেকে ওই মেয়ের জায়গায় ভাবতে ইচ্ছে করছে।কি অনুভতি নিয়েই না সে বলেছে ওই মেয়ের কথা।তার চোখমুখ কেমন চকচক করছিলল… মনে হচ্ছে মেয়েটা তার সামনেই আছে…কেন যেন আমার চিনচিন ব্যথা হচ্ছে। মন বারবার বলছে কেন তুই হলি না ওর জায়গায়।কিন্তু কিছু করার নেই।আমারটা তো নতুন অনুভতি যা কিছুদিন পরেই গায়েব হয়ে যাবে।কিন্তু তারটা মনে হয় খুব গভীর।তাই ত এভাবে বলেছে।কিছু অনুভুতি তুষারের মত হয় এদের ধরতে গেলেই পানিতে পরিনত হয়।আমারটা না হয় তেমনই।আমি আবার হাঁটায় মনযোগ দিলাম।একটা বাচ্চা মেয়ে ভিজেঁ চুপচুপ হয়ে কলাপাতা নিয়ে আসছে।কালো বর্নের মেয়ে।কি মায়া তার চোখে।গায়ে ছিঁড়া জামা।কারো হাজার জামা হয় আর কারো একটাও থাকে না।কি কষ্ট না??হুম.. আল্লাহ সবাইকে কেন সমান সম্পদশালী করলেন না??তিনিই ভালো যানে।কালো মেয়েদের আমার দাড়ুন লাগে।এদের কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে একদম সাদা গোলাপের মত।এদের চোখে থাকে এক মায়ার পৃথিবী চুলগুলো হয় সীমাহীন সুন্দর। এদের গহনা পরালেও আবার সুন্দর লাগে।তবে সবার চোখে না।এদের সৌন্দর্য দেখতে হলে স্পেশাল চোখ লাগে তা হল অন্তরের চোখ।আমার নেই তবুও ভালো লাগে।সাদারা শুধু গা সুন্দর খালাত বোন টাইপের হয়।যেমন ইংরেজ বান্দর গুলো।মানুষ জাতি কিন্তু আবুল।তা না হলে মনের সৌন্দর্য ছেড়ে চেহারার টা কেন খুঁজে কে যানে।আমি একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিজের গায়ের জ্যাকেটা তাকে পরিয়ে দিলায়।সাথে টুপিটাও মাথায় দিয়ে দিলাম।ওর কপাল ভালো আযমান ভাইয়া আজকে টুপি যুক্ত জ্যাকেট পরেছে ওনি কিন্তু নরমালি এমন পরে না।মেয়েটা এক বিশাল হাসি দেয়।ইশশশ আল্লাহ কি সুন্দর সে হাসি।সত্যিই আজ ওর হাসিতে হৃদয়ে ভাঙচুর হচ্ছে। আমি ওর গাল টেনে নিজেও হাসলাম।তার চোখ আইসক্রিমের দিকে একবার গেয়েছে।কিন্তু ২য় বার আর সে তার চোখে সে দিকে দিল না।আমি একটা আইসক্রিম দিয়ে দিলাম।মেয়েটা খুশিতে আইসক্রিম নিয়ে জ্যাকেটার ভিতরে ডুকিয়ে নিল। যাতে না ভিজেঁ। আমি আবার হাসলাম।তারপর উঠে দাড়ালাম।বাচ্চাটা টাটা দিয়ে চলে গেছে।
.
.
আমি এবার আযমান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিললাম।আমি তাকে না বলে তার জ্যাকেট দিয়ে দিলাম।এখন কি হবে।ওনার দিকে তাকাতে ওনি এক অদ্ভুত হাসি হাসল।যাতে রহস্য রয়েছে।ওনি নিজের হাতের কাপটা এক সাইডে ছুড়ে দিল।তারপর নিজের পকেট থেকে একটা সাদা রুমাল বের করে আমার মাথা চাপিয়ে ধরে।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ওনি বলে উঠে……
.
ঠান্ডা লাগবে মাথায় পানি পরলে।যদিও হালকা পাতলা পানি ডুকেছে তবুও একটু হলেও রুমাল পানি শুষে নিবে।ভালো মানের রুমাল শোষণ ক্ষমতা বেশি।আর জ্যাকেট দিয়েছ তো কি হয়েছে আমরা আমরাইত…আমি তুমি মিলে আমরা…আইসক্রিম তোমার খাও…(হেসেঁ হেসেঁ)
.
.
আমি তাকিয়ে আছি।এত যত্ন কি সে তার ভালোবাসাকে করে।জানি না??জানার দরকারও নেই।এমনেইত ভালো আছি…আমি আইসক্রিম খাচ্ছি ওনার একহাত আমার মাথায় আর একহাতে আমার একটা হাত আবদ্ধ করে রেখেছে।নিজেকে কেমন যেন ওনার প্রেমিকা প্রেমিকা লাগছে।ছিই…কি সব ভাবছি…..
.
আমার প্রেমিকা হওয়ার অধিকার কারো নেই।কারন আমি প্রেমিকায় নয় প্রিয়সিতে বিশ্বাসী বুঝলে….আর সে প্রিয়সি আমার আছে……(ওনি হেসেঁ হেসেঁ বলে উঠে…..আচ্ছা ওনি সব কথাই কি শুনতে পায়??না ত..তবে মাঝে মাঝে পায়… এখন থেকে মনে মনেও চিন্তা করবো না।অন্যের জামাই নিয়ে এত চিন্তার কি আছে।ওনি আজকে থেকে আমার ভাইয়া শুধু ভাইয়া…..)
.
.#চলবে………………….🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন………….🍂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here