তুমি_আমারই পর্ব ২৩+২৪

#তুমি_আমারই
#পর্ব_২৩
#Sumaia_Jahan

—- দিয়া রাজিব তোমাদের বাসায় আমি সব জানিয়ে দিয়েছি।সবাই সব কিছুতে রাজি।আর তোমাদের লাগেজ পাঠিয়ে দিবে আজ থেকে বিয়ে পর্যন্ত তোমরা এখানেই থাকবে।সবাই এক সাথে থাকলেই তো বিয়ে বাড়ি বিয়ে বাড়ি লাগবে।বাড়িটা নাহলে মরা বাড়ির মতো লাগবে।এতে তোমাদের কোনো সমস্যা নেই তো?

দিয়া আর রাজিব দুজনেই শ্বাশুড়ি মায়ের মিষ্টি হাসি দিয়ে সায় জানালো। আর দিয়া মুখে বললো,

—- আরে আন্টি কি যে বলেন?আমি তো এক পায়ে খাঁড়া। আর সেখানে প্রবলেমের কথা তো এই দুনিয়াতেও আসবে না।

শ্বাশুড়ি মা দিয়ার উত্তরে বেশ খুশি হলেন।দিয়ার মুখে এক হাত রেখে ওর দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন,

—- আমার একটা লক্ষী মা!সারাজীবন এমন লক্ষী হয়েই থাকবে।

পাশ থেকে আমি দিয়ার পিট চাপরে খুব গর্ব নিয়ে বললাম,

—- দেখতে হবে না কার বেষ্টু।আমার মতো লক্ষীর সাথে থাকতে থাকতে অলক্ষীও লক্ষী হতে বাধ্য। আর ও তো শুধু পেত্নী থেকে লক্ষী হয়েছে।তুমি চিন্তা করো না মা সারাজীবন ওরে এমন লক্ষী বানিয়ে রাখবো পেত্নী হতে আর দিবো না।

দিয়া আমার কথা শুনে রাগি লুকে আমার দিকে তাকলো আর ইশারায় বুঝিয়ে দিলো এর তোলা রইলো।কিন্তু আমি ওকে পাত্তা না দিয়ে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে রইলাম।আর ও দাঁতে দাঁত চেপে মুখে জোরপূর্বক হাসি আনার চেষ্টা করে বললো,

—- জি আন্টি আপনার এই মহা লক্ষী বউমার সাথে থাকতে থাকতেই আজ আমার এই অবস্থা। সব ক্রেডিট কিন্তু আপনার এই মহা লক্ষী বউমার!

শ্বাশুড়ি মা আমাদের কথা শুনে নিঃশব্দে হাসলেন। তারপর সবার উদ্দেশ্য বললেন,

—- শুনো সবাই আজ বিকেলেই আমরা সবাই নিহাদের বাড়ি যাবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।তাই বিকেলে সবাই রেডি হয়ে থাকবে।যেহেতু সামনেই বিয়ে তাই বর কনেরা এখন আর একসাথে থাকতে পারবা না।দিয়া আর আশপিয়া তোমরা দুইজন আজ থেকে রুহির রুমে রুহির সাথে থাকবা।আর আকাশ,রাজিব, রাহাত আর রোদ্দুর তোমরা চারজন চাইলে দুজন দুজন করে আলাদা আলাদা রুমে থাকতে পারো আবার চাইলে একসাথেও থাকতে পারো।তবে বিয়ের আগে কোনো বর কনে একে অপরের সাথে দেখা করতে পারবা না।

আমরা মেয়েরা বেশ খুশি কয়টাদিন সবাই এক সাথে থাকতে পারবো।খুশিতে সবাই একসাথে “ইয়ে” বলে চিৎকার দিয়ে উঠলাম।কিন্তু ছেলেরা কেউ এক বিন্দু কি এক চিটে ফোটাও খুশি তো দুরের কথা মুখ টাকে একদম আমবর্স্যার চাঁদের থেকেও কালো বানিয়ে ফেলেছে। রোদ্দুর এবার মুখ খুললো।কালো মুখ করেই গম্ভীর গলায় বললো,

—- মা আমি কারো সাথে রুম শেয়ার করতে পারবো না।কেউ আমার রুমে থাকলে আমার অস্বস্তি হয়।তার থেকে ভালো যে যেমন ছিলো তেমনভাবেই থাক।

এ্যাহ টঙ দেখলে আর বাঁচি না।কেউ উনার রুমে থাকলে অস্বস্তি হয় তাইলে আমার সাথে এতোদিন থাকলো কিভাবে? চান্দু মনে করছো আমি তোমার ধান্দা বুঝি না!আমাকে এতোদিন অনেক জ্বালাইচছো।এতোদিন শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে পাইয়া গেছি।সুযোগটাকে কাজে লাগাইতে হবেই।এটা ভেবেই মুখে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বললাম,

—- মা তাহলে ওকে ওর রুমেই থাকতে দিন।আর বাকিরা নাহয় অন্য রুমে থাকুক।তাহলে তো আর কোনো প্রবলেম নেই।

আমার কথাটা শ্বাশুড়ি মায়ের খুব পছন্দ পছন্দ হলো।তাই উনার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।

—- এই নাহলে আমার বউমা!একদম ঠিক বলেছিস। এটা করলে তো আর কোনো প্রবলেমই হবে না।তাহলে এটাই ফাইনাল হয়ে গোলো।

তারপর শ্বাশুড়ি মা চলে গেলেন আর যাওয়ার আগেে বলে গেলেন তারাতাড়ি সবাই যেন সবার রুমে চলে যাই।তাই আমি দিয়া আর রুহিকে পাঠিয়ে দিলাম রুহির রুমে আর আমি গেলাম রোদ্দুরের রুমে।আমার কিছু জিনিস আনা লাগবে ওই ঘর থেকে।কিন্তু রোদ্দুরের সামনে যাওয়া যাবে না ওই সময় যা করলাম তাতে আমাকে সহজে ছাড়বে বলে মনে হয় না।তখন তো দেখলাম ও কোথায় যেন বেরিয়ে গেলো।তাই এখন রুম ফাঁকা এটাই সুযোগ। তাই তাড়াতাড়ি রোদ্দুরের রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম।রুমে ঢুকে চারিদিকটা একবার দেখে নিলাম না কেউ নেই। একটা স্বস্তির শ্বাস ফেলে আলমারির কাছে গিয়ে আমার কিছু জিনিস নিতে লাগলাম।হঠাৎ একটা আওয়াজ হলো।আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম।তারপর আস্তে আস্তে পিছনে ঘুরে তাকাতেই ভয়ে আমার আত্মা শুকিয়ে গেলো।কারন দরজা লক করে আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে দাড়িয়ে আছে। কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয় আমার অবস্থা ঠিক সেই রকম।যার থেকে পালানোর জন্য এতো সাবধানে এলাম আর সেই কিনা আমার সামনে।কিন্তু ও এখানে এলো কোথা থেকে? আমি তো ভালো করে দেখে নিয়েছিলাম কেউ তো ছিলো না।তাহলে ও কিভাবে এলো?ম্যাজিক জানে নাকি?জানতেও পারে এতোদিন তো বিদেশে ছিলো হয়তো ওখান থেকেই শিখে এসেছে।নিজের কৌতূহল মেটানোর জন্য জিজ্ঞেস করেই বসলাম,

—- তুমি কি বিদেশ থেকে ম্যাজিক শিখে এসেছো?

রোদ্দুর চুলে হাত বোলাতে বোলাতে বললো,

—- হায় আল্লাহ!মানুষ অন্ধ হইলে যাহয় আরকি সব কিছুই ম্যাজিক মনে করে।শেষে কিনা এই আন্ধা বউরে দুইবার বিয়ে করতে হবে!হয়রে কি কপাল আমার!

আমার মাথা রাগে ফেটে যাচ্ছে আমারে আন্ধা কইলো?এতোটা ইনসাল্ট! দশবছর ধরে অপেক্ষা করে এই অপমান সইতে হইলো।আমারে আন্ধা কইলি?করমু না তোরে আমি বিয়া।রাগ৷ কন্ট্রোল করে দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

—- কি দরকার অন্ধ বউ বিয়ে করার! তুমি বরং ভালো বউ খুইজা নিও আমি আমার বাড়ি চলে যাই।

বলতে দেরি কিন্তু রোদ্দুর ঝড়ের গতিতে এসে আমাকে আলমারির সাথে চেপে ধরতে দেরি হলো না।আর জোরে চিৎকার দিয়ে বললো,

—- আমার থেকে দুরে যাওয়ার খুব শখ তাই না! বাড়ির বাইরে এক পা দিয়ে দেখো পা ভেঙ্গে সারাজীবন হুইল চেয়ারে বসিয়ে রেখে দেবো।তুমি আমারই ছিলে আছো আর আমারই থাকবে।

কথাগুলো এক নাগারে চিৎকার দিয়ে বলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে সোফায় গিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিচ্ছে রোদ্দুর।ঘটনাটা এতো তারাতাড়ি ঘটলো যে সবকিছু আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো।কিছুক্ষণ ওখানেই বেকুব মতো দাড়িয়ে থেকে হিসাব মিলাতে লাগলাম।আমি কি এমন বললাম যে এভাবে রিয়েক্ট করলো।কিছুই বুঝতে পারলাম না। বেশি মাথা খাটানোর দরকার নেই আমি যা নিতে এসেছি তা নিয়েই চলে যাই।সব জিনিস নিয়ে পা টিপে টিপে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম।রোদ্দুর এখনো চোখ বন্ধ করেই আছে।কিন্তু করে যেন বুঝে গেলো আমি যাচ্ছিলাম চোখ বন্ধ করে বললো,

—- আর কখনো চলে যাওয়ার কথা বলবে না।চলে যাওয়ার কথা শুলেই আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।তাই আর কখনো বলবে না।

আমি ঠক আছে বলেই এক দৌড়ে রুহির রুমে চলে আসলাম।এসে দেখি ওরা দুজন গল্পে মেতে উঠেছে।আমাকে দেখেই দিয়া বললো,

—- এই কয়টা জিনিস আনতে কয় ঘন্টা লাগে?আর তুই এমন গরুর মতো জোরে জোরে শ্বাস ফালাইতাছোস কেন?

দৌড়ানোর কারনে ক্লান্ত ক্লান্ত হয়ে গেছি। তাই অনবরত শ্বাস নিতেছি আর ফেলতেছি।একটু ভালো করে দম নিয়ে বললাম,

—- আরে কইস না দোস্ত অনেক লম্বা কাহিনি পরে এক সময় শুনাবো নে।এখন এক গ্লাস পানি খাওয়াতো।

বিকেলে…..

আমরা রওনা দিয়েছি নিহাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।এখান থেকে পাঁচ কিলোমিটার দুরেই ওদের বাড়ি।আমরা দুইটা গাড়ি নিয়েছি। একটাতে আমি,রোদ্দুর দিয়া,রুহি আর রাহাত উঠেছি।বেচারা আকাশ ভাইয়া আর রাজিব ভাইয়ার জায়গা হয়নি এ গাড়িতে তাই ওরা শ্বাশুড়ি মা আর শ্বশুর মশাই এর সাথে পিছনের গাড়িতে উঠেছে।রাহাতের মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব প্রথমবার হবু শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে বলে কথা।ওকে নিয়ে আমরা দারুণ মজা করছি।এভাবেই আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে নিহাদের বাড়ি এসে পৌছালাম।

বাড়িটা খুব সুন্দর চারিপাশে অনেক ফুলের বাগানও দেখতে পেলাম।রাহাত অবশ্য বলেছিলো নিহা ফুল খুব পছন্দ করে।তাই হয়তো এতো ফুলের বাগান লাগিয়ে রেখেছে।যাইহোক আমরা আস্তে আস্তে বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম।বাড়ির সামনে দাড়িয়ে একবার বেল বাজাতে না বাজাতেই দরজাটা হুট করে খুলে দিলো।আচমকা এমন হওয়াতে সবাই একটু ঘাবড়ে গেলো।আস্তে আস্তে সবাই নিজেকে সামলিয়ে নিলো।আমরা সবাই সামনে তাকিয়ে দেখি একটা লাল রঙয়ের কিছু একটা আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।রাহাত তো ভয়ে চিৎকার দিয়ে বলে ওঠলো,

—- ভুত ভুত ভুত……….

আর রোদ্দুরের পিছনে লুকিয়ে পরলো।আমরা ভালো করে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে লাল বেনারসী পরে প্রায় হাটু পর্যন্ত ঘোমটা দিয়ে আমাদের কাছে এলো।রাহাতের এমন কান্ড দেখে ঘোমটা খুলে বিরক্তি ভাব নিয়ে বললো,

—- কি কপাল আমার হবু বর দেখতে এসে আমাকে ভুত বলে ভাইয়ের পিছনে লুকিয়ে পরলো।

আমাদের এবার বুঝতে বাকি রইলো না এটাই আসলে নিহা।পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শ্বাশুড়ি মা মিষ্টি হেসে বললেন,

—- ওমা আমার বউমা তো দেখি খুব সুন্দর। নিহা মা তোমার মা বাবা বাবা কোথায় উনাদের ডাকো।

তারপর নিহা শ্বাশুড়ি মাকে সালাম দিয়ে ভিতরে নিয়ে ওর মা বাবার সাথে আলাপ করিয়ে দিলো।
#তুমি_আমারই
#পর্ব_২৪(অন্তিম-১ম খন্ড)
#Sumaia_Jahan

দেখতে দেখতেই কেটে গেলো সাতটা দিন। অবশেষে এসেই গেলো আমাদের চারটা বিয়ের দিন গুলো।এই সাত দিনে আমরা মেয়েরা অনেক অনেক এনজয় করেছি।ছেলেদের কে অনেক নাকানিচুবানি খাইয়েছি। আমাদের দিন গুলো দারুণ থাকলেও বেচারা ছেলেদের দিন গুলো একদমই ভালোছিলো৷ না।একদম উদাসীন উদাসীন ভাবনিয়ে কেটেছে ওদের দিন গুলো।

আজ আমাদের গায়ে হলুদ।চার জুটির গায়ে হলুদ একই সাথে একজায়গায়তেই হচ্ছে। তাই আনন্দ টাও চার গুণ হচ্ছে। আগের বার যতটা কষ্ট নিয়ে বিয়ে টা হয়েছিলো এবার ঠিক ততোটাই আনন্দ নিয়ে বিয়েটা হচ্ছে। সকাল থেকেই আমাদেরকে সাজানো শুরু হয়েছে। চারজনকে একসাথেই হলুদ শাড়ি পরানো হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো পার্লারে আছি।আর আমাদের সবার সাজও সেইম।আমাদের সাজ কমপ্লিট করে মাত্রই পার্লারের মেয়েগুলো গেছে। এর মধ্যেই দিয়া রুহি আর নিহার ফোনের মেসেজের টুং টুং শব্দে পুরো ঘর কেঁপে উঠলো।আমি কানে দুই হাত চেপে বললাম,

—- এই তোরা ফোন সাইলেন্ট করে রাখতে পারিস না।

কিন্তু একসাথে একইসময় তিনটা ফোনেই একের পর এক মেসেজ কেনো আসলো?ভাবনার বিষয় তো!আমি চোখ ছোটো ছোটো করে ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম,

—- কে মেসেজ করেছেরে?সবাই সত্যি করে বলো তো!

তিনজনেই নিজেদের ফোনে মেসেজ দেখে মুখে জোরপূর্বক হাসি আনার চেষ্টা করলো।একে অপরকে কি চোখ দিয়ে কি যেন ইশারা করলো।তারপর দিয়া হাসি হাসি ভাব নিয়ে বললো,

—- আরে কেউ না ওই সিম কম্পানির থেকে অফারের মেসেজ এসেছে।

কথাটা বলেই তিনজনে একে অপরকে ইশারা করে চোখের পলকেই উধাও হয়ে গেলো। ওদের ব্যবহার টা সন্দেহ জনক লাগলো।কেমন যেন পালাই পালাই ভাব।সত্যি কি সিম কোম্পানির মেসেজ এসেছে?কিন্তু আসবে তো আসবে তিন জনের ফোনে একসাথে আসবে?দেখি তো ওরা কোথায় গেলো।

রুম থেকে বেরিয়ে ওদের টিকিটিও দেখতে পেলাম না।এতো তারাতাড়ি কোথায় গেলো?কোথায় আবার যাবা এখানে তো ফিরতেই হবে তোমাদের। একবার শুধু তোমাদের সামনে পাই কথা কি করে বের করতে হয় তা আমি খুব ভালো করেই জানি।এখন রুমে গিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নেই।তারপর রুমের দিকে হাটা শুরু করি।দরজা পর্যন্ত আসার সাথে সাথেই কেউ আমাকে হেঁচকা টান দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।আমি তো ভিষন ভয় পেয়ে গেছি। কোনো জিনের খপ্পরে পরলাম না তো?আমি ভয়ে জোরে চিৎকার করতে গেলে সাথে সাথেই একটা হাত আমার মুখ চেপে ধরলো।সামনে তাকিয়ে দেখি রোদ্দুর আমার মুখ চেপে ধরেছ।একটানে হাতটা সরিয়ে ঝাঁঝালো গলায় বললাম,

—- আমায় ভয় না দেখালে তোমার শান্তি হয় না।আমি তো ভেবেছিলাম কোনো জিনের খপ্পরে পরেছি।কতো ভয় পেয়েছিলাম জানো।

রোদ্দুর আমার ঠোঁটের আঙ্গুল ছুঁইয়ে আমাকে থামিয়ে বললো,

—- হুস!আমি থাকতে কোনো জিন কেন একটা একটা পিপরাও তোমার কাছে আসতে পারবে না।এখন একটু চুপ করে থাকো তো।আমার কাজ টা করতে দেও।

আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,

—- এখানে কি কাজ করতে এসেছো?

—- সেটা তোমার না জানলেও চলবে।একটু চুপ থাকোনা সব ঠিক আছে কিনা।

কথাটা বলেই আমাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালোভাবে দেখে কিছু একটা ভেবে খুশি হয়ে পিছন থেকে দুই টা গোলাপ বের করে আমার খোঁপা করা চুলে গুঁজে দিয়ে মুখে চওরা হাসি এনে বললো,

—- এবার পারফেক্ট!

—- কি পারফেক্ট পারফেক্ট করছো হুম? আর তুমি এই কাজের জন্য এখানে এসেছো!

—- হুম!আমার বউ বলে কথা! পারফেক্ট হতে হবে না?

—- এবার পারফেক্ট লাগছে তো?

—- হুম অবশ্যই! রোদ্দুর খান যার দায়িত্ব নেয় সে-তো পারফেক্ট হতেই হবে।

—- তাহলে এবার এখান থেকে যাও।আর এক মিনিটও যদি এখানে দাঁড়াও মাকে ডাক দিবো।

রোদ্দুর বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,

—- কতক্ষণ এবাবে পালাবে আমার থেকে? নেহাৎ এখন আমার সময় খারাপ চলছে তাই যাচ্ছি। আমার কিন্তু সময় আসবে।তখন শুধে আসলে বুঝে নিবো।

একটু থেমে রোদ্দুর মুখ টা আমার কানের কাছে এনে বললো,

—– ভালোবাসি খুব বেশি ভালোবাসি।

তারপর হনহন করে বেরিয়ে গেলো।ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে দিয়ে বললাম,

—- আমিও ভালোবাসি খুব বেশিই ভালোবাসি।

পাঁচ মিনিট পর দিয়া রুহি আর নিহা একের পর এক রুমে আসলো।ওদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,

—- কোথায় গিয়েছিলি ওরা?

দিয়া ভাব শীল ভাবে আমার পাশে এসে আরাম করে বললো,

—- তুমি এতোক্ষণ যেই কাজে ছিলে আমরাও ওই কাজে গিয়ে ছিলাম।

—- আমি যেই কাজে ছিলাম মানে? ওয়েট ওয়েট তারমানে তোরা ছেলের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি?

—- হুম। আসলে ওরা ইমোশনালি ব্লাকমেইল করেছিলো রে দোস্ত তাই না গিয়ে থাকতে পারিনি।আর তোকে বলতে বারন করেছিলো।কারন তুই তো এ ক’দিনে কম ওদের প্লানে পানি ঢালিস নি!

এরমধ্যেই শ্বাশুড়ি মা সহ আরো কয়েক জন মহিলা ঢুকে পরলেন রুমে।আমাদের কে নিয়ে গেলেন হলুদের অনুষ্ঠানে। দুই দিকে দুই টা স্টেজ করা হয়েছে।একদিকে ছেলেদের আর আরেক দিকে মেয়েদের। ছেলেদের কে দেখলাম পুরো হলুদে ভুত বানিয়ে দিচ্ছে সাবাই।আমাদের মেয়েদের কে হলুদে মাখাচ্ছে কিন্তু ওদের মতো ওতোটা হলুদে ভুত বানায়নি।ওদের অবস্থা দেখে আমরা হাসতে হাসতে শেষ।আর ওরা করুন মুখ করে দারিয়ে আছে।এভাবেই হাসি মজার মধ্যমে আমাদের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলো।

হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত হয়ে গেলো।কাল আবার বিয়ে তাই আজ সবাই তারাতাড়ি যে যার মতো ঘুমিয়ে পরলো।আজ পুরো বাড়ি ভর্তি মেহমান।তাই যে যেখানে জায়গা পেছে সে সেখানেই ঘুমিয়ে পরেছে।আমরা চারজন যে রুমে ছিলাম সেখানে দেখি পুরো রুম লোকজনে ভরে গেছে ওল রেডি।এখানে আমরা চারজন শোয়ার মতো জায়গা হবে না।তাই বাধ্য হয়ে একটা পাটি হাতে নিয়ে পুরো বাড়িতে জায়গা খুঁজতে লাগলাম।আশ্চর্যের বিষয় এতো বড়ো বাড়ি কোথাও আমাদের জন্য একটু জায়গা পেলাম না।মনে হচ্ছে পুরো বাংলাদেশের মানুষ এসে ভরে গেছে। পুরো বাড়িতে একটুও জায়গা না পেয়ে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

ওমা ছাদেও দেখি অনেকে পাটি বিছিয়ে ঘুমিয়ে আছে।আমি দিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,

—- দিয়ারে আমরা তো জনসমুদ্রে ডুবে যাবো।এতো পুরো বাংলাদেশের লোক এসে ভরে গেছে।

—- কি আর করবিরে দোস্ত! এখন এই ছাদেই ঘুমাই!

পাশ থেকে রুহি হতাস কন্ঠে বলে ওঠলো,

—- কি কপাল দেখো নিজেদের বিয়েতে নিজেরাই ঘর থেকে আউট হয়ে গেলাম।

আমি ওকে শান্তনা দিয়ে নিজেও হতাস কন্ঠে বললাম,

—- সবই ভাগ্য গো ভাগ্য! এখন যেটুকু জায়গা পেয়েছি সেটুকুতেই শুয়ে পরি।নাহলে আবার কেউ এসে জায়গা দখল করে ফেলবে।

তারপর আমরা ছাদেই পাটি বিছেয়ে চারজন ঘুমিয়ে পরলাম।আমরা যেহেতু খোলা আকাশের নিচেই ঘুমিয়েছি তাই সকালে সুর্য উঠার সাথে সাথেই আমাদের চোখের উপর পরলো।আর আমার সাধের ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে দিলো।চোখ ডলতে ডলতেই উঠে বসেছি।পাশে দেখি দিয়া রুহি নিহা তিন জনই মরার মতো ঘুমিয়ে আছে।এতো আলোতেও ওরা এমন মরার মতো ঘুমিয়ে আছে কিভাবে আল্লাই জানে।ওদের দেখে মনে হচ্ছে সারারাত না ঘুমিয়ে জেগেছিলো।ওদের কথা ভাবতে ভাবতেই আমার হাতের দিকে নজর পরলো।আমার হাত ভর্তি মেহেদি।কালকে সবাই মেহেদি পরলেও আমি পরিনি। তাহলে আমার হাতে মেহেদী আসলো কোথা থেকে?তবে আমি ঘুমানোর পরে দিয়া পরিয়ে দিয়েছে?

মেহেদীর ডিজাইন টা খুব সুন্দর। এক হাতে লেখা আদি আর আরেক হাতে আয়সু লেখা।আবার হাত দুইটা একসাথে করলে একটা র যুক্ত হয়ে “আদির আয়সু” লেখা টা ফুটে উঠে।এবার বুঝতে বাকি রইলো না এটা কার কাজ রাতে ঘুমিয়ে পরার পর রোদ্দুর এখানে এসে এসব করেছে।ও এতো কিছু করলো আর আমি টেরও পেলাম না!……..

চলবে,,,,,,দেখতে দেখতেই কেটে গেলো সাতটা দিন। অবশেষে এসেই গেলো আমাদের চারটা বিয়ের দিন গুলো।এই সাত দিনে আমরা মেয়েরা অনেক অনেক এনজয় করেছি।ছেলেদের কে অনেক নাকানিচুবানি খাইয়েছি। আমাদের দিন গুলো দারুণ থাকলেও বেচারা ছেলেদের দিন গুলো একদমই ভালোছিলো৷ না।একদম উদাসীন উদাসীন ভাবনিয়ে কেটেছে ওদের দিন গুলো।

আজ আমাদের গায়ে হলুদ।চার জুটির গায়ে হলুদ একই সাথে একজায়গায়তেই হচ্ছে। তাই আনন্দ টাও চার গুণ হচ্ছে। আগের বার যতটা কষ্ট নিয়ে বিয়ে টা হয়েছিলো এবার ঠিক ততোটাই আনন্দ নিয়ে বিয়েটা হচ্ছে। সকাল থেকেই আমাদেরকে সাজানো শুরু হয়েছে। চারজনকে একসাথেই হলুদ শাড়ি পরানো হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো পার্লারে আছি।আর আমাদের সবার সাজও সেইম।আমাদের সাজ কমপ্লিট করে মাত্রই পার্লারের মেয়েগুলো গেছে। এর মধ্যেই দিয়া রুহি আর নিহার ফোনের মেসেজের টুং টুং শব্দে পুরো ঘর কেঁপে উঠলো।আমি কানে দুই হাত চেপে বললাম,

—- এই তোরা ফোন সাইলেন্ট করে রাখতে পারিস না।

কিন্তু একসাথে একইসময় তিনটা ফোনেই একের পর এক মেসেজ কেনো আসলো?ভাবনার বিষয় তো!আমি চোখ ছোটো ছোটো করে ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম,

—- কে মেসেজ করেছেরে?সবাই সত্যি করে বলো তো!

তিনজনেই নিজেদের ফোনে মেসেজ দেখে মুখে জোরপূর্বক হাসি আনার চেষ্টা করলো।একে অপরকে কি চোখ দিয়ে কি যেন ইশারা করলো।তারপর দিয়া হাসি হাসি ভাব নিয়ে বললো,

—- আরে কেউ না ওই সিম কম্পানির থেকে অফারের মেসেজ এসেছে।

কথাটা বলেই তিনজনে একে অপরকে ইশারা করে চোখের পলকেই উধাও হয়ে গেলো। ওদের ব্যবহার টা সন্দেহ জনক লাগলো।কেমন যেন পালাই পালাই ভাব।সত্যি কি সিম কোম্পানির মেসেজ এসেছে?কিন্তু আসবে তো আসবে তিন জনের ফোনে একসাথে আসবে?দেখি তো ওরা কোথায় গেলো।

রুম থেকে বেরিয়ে ওদের টিকিটিও দেখতে পেলাম না।এতো তারাতাড়ি কোথায় গেলো?কোথায় আবার যাবা এখানে তো ফিরতেই হবে তোমাদের। একবার শুধু তোমাদের সামনে পাই কথা কি করে বের করতে হয় তা আমি খুব ভালো করেই জানি।এখন রুমে গিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নেই।তারপর রুমের দিকে হাটা শুরু করি।দরজা পর্যন্ত আসার সাথে সাথেই কেউ আমাকে হেঁচকা টান দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।আমি তো ভিষন ভয় পেয়ে গেছি। কোনো জিনের খপ্পরে পরলাম না তো?আমি ভয়ে জোরে চিৎকার করতে গেলে সাথে সাথেই একটা হাত আমার মুখ চেপে ধরলো।সামনে তাকিয়ে দেখি রোদ্দুর আমার মুখ চেপে ধরেছ।একটানে হাতটা সরিয়ে ঝাঁঝালো গলায় বললাম,

—- আমায় ভয় না দেখালে তোমার শান্তি হয় না।আমি তো ভেবেছিলাম কোনো জিনের খপ্পরে পরেছি।কতো ভয় পেয়েছিলাম জানো।

রোদ্দুর আমার ঠোঁটের আঙ্গুল ছুঁইয়ে আমাকে থামিয়ে বললো,

—- হুস!আমি থাকতে কোনো জিন কেন একটা একটা পিপরাও তোমার কাছে আসতে পারবে না।এখন একটু চুপ করে থাকো তো।আমার কাজ টা করতে দেও।

আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,

—- এখানে কি কাজ করতে এসেছো?

—- সেটা তোমার না জানলেও চলবে।একটু চুপ থাকোনা সব ঠিক আছে কিনা।

কথাটা বলেই আমাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালোভাবে দেখে কিছু একটা ভেবে খুশি হয়ে পিছন থেকে দুই টা গোলাপ বের করে আমার খোঁপা করা চুলে গুঁজে দিয়ে মুখে চওরা হাসি এনে বললো,

—- এবার পারফেক্ট!

—- কি পারফেক্ট পারফেক্ট করছো হুম? আর তুমি এই কাজের জন্য এখানে এসেছো!

—- হুম!আমার বউ বলে কথা! পারফেক্ট হতে হবে না?

—- এবার পারফেক্ট লাগছে তো?

—- হুম অবশ্যই! রোদ্দুর খান যার দায়িত্ব নেয় সে-তো পারফেক্ট হতেই হবে।

—- তাহলে এবার এখান থেকে যাও।আর এক মিনিটও যদি এখানে দাঁড়াও মাকে ডাক দিবো।

রোদ্দুর বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,

—- কতক্ষণ এবাবে পালাবে আমার থেকে? নেহাৎ এখন আমার সময় খারাপ চলছে তাই যাচ্ছি। আমার কিন্তু সময় আসবে।তখন শুধে আসলে বুঝে নিবো।

একটু থেমে রোদ্দুর মুখ টা আমার কানের কাছে এনে বললো,

—– ভালোবাসি খুব বেশি ভালোবাসি।

তারপর হনহন করে বেরিয়ে গেলো।ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে দিয়ে বললাম,

—- আমিও ভালোবাসি খুব বেশিই ভালোবাসি।

পাঁচ মিনিট পর দিয়া রুহি আর নিহা একের পর এক রুমে আসলো।ওদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,

—- কোথায় গিয়েছিলি ওরা?

দিয়া ভাব শীল ভাবে আমার পাশে এসে আরাম করে বললো,

—- তুমি এতোক্ষণ যেই কাজে ছিলে আমরাও ওই কাজে গিয়ে ছিলাম।

—- আমি যেই কাজে ছিলাম মানে? ওয়েট ওয়েট তারমানে তোরা ছেলের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি?

—- হুম। আসলে ওরা ইমোশনালি ব্লাকমেইল করেছিলো রে দোস্ত তাই না গিয়ে থাকতে পারিনি।আর তোকে বলতে বারন করেছিলো।কারন তুই তো এ ক’দিনে কম ওদের প্লানে পানি ঢালিস নি!

এরমধ্যেই শ্বাশুড়ি মা সহ আরো কয়েক জন মহিলা ঢুকে পরলেন রুমে।আমাদের কে নিয়ে গেলেন হলুদের অনুষ্ঠানে। দুই দিকে দুই টা স্টেজ করা হয়েছে।একদিকে ছেলেদের আর আরেক দিকে মেয়েদের। ছেলেদের কে দেখলাম পুরো হলুদে ভুত বানিয়ে দিচ্ছে সাবাই।আমাদের মেয়েদের কে হলুদে মাখাচ্ছে কিন্তু ওদের মতো ওতোটা হলুদে ভুত বানায়নি।ওদের অবস্থা দেখে আমরা হাসতে হাসতে শেষ।আর ওরা করুন মুখ করে দারিয়ে আছে।এভাবেই হাসি মজার মধ্যমে আমাদের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলো।

হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত হয়ে গেলো।কাল আবার বিয়ে তাই আজ সবাই তারাতাড়ি যে যার মতো ঘুমিয়ে পরলো।আজ পুরো বাড়ি ভর্তি মেহমান।তাই যে যেখানে জায়গা পেছে সে সেখানেই ঘুমিয়ে পরেছে।আমরা চারজন যে রুমে ছিলাম সেখানে দেখি পুরো রুম লোকজনে ভরে গেছে ওল রেডি।এখানে আমরা চারজন শোয়ার মতো জায়গা হবে না।তাই বাধ্য হয়ে একটা পাটি হাতে নিয়ে পুরো বাড়িতে জায়গা খুঁজতে লাগলাম।আশ্চর্যের বিষয় এতো বড়ো বাড়ি কোথাও আমাদের জন্য একটু জায়গা পেলাম না।মনে হচ্ছে পুরো বাংলাদেশের মানুষ এসে ভরে গেছে। পুরো বাড়িতে একটুও জায়গা না পেয়ে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

ওমা ছাদেও দেখি অনেকে পাটি বিছিয়ে ঘুমিয়ে আছে।আমি দিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,

—- দিয়ারে আমরা তো জনসমুদ্রে ডুবে যাবো।এতো পুরো বাংলাদেশের লোক এসে ভরে গেছে।

—- কি আর করবিরে দোস্ত! এখন এই ছাদেই ঘুমাই!

পাশ থেকে রুহি হতাস কন্ঠে বলে ওঠলো,

—- কি কপাল দেখো নিজেদের বিয়েতে নিজেরাই ঘর থেকে আউট হয়ে গেলাম।

আমি ওকে শান্তনা দিয়ে নিজেও হতাস কন্ঠে বললাম,

—- সবই ভাগ্য গো ভাগ্য! এখন যেটুকু জায়গা পেয়েছি সেটুকুতেই শুয়ে পরি।নাহলে আবার কেউ এসে জায়গা দখল করে ফেলবে।

তারপর আমরা ছাদেই পাটি বিছেয়ে চারজন ঘুমিয়ে পরলাম।আমরা যেহেতু খোলা আকাশের নিচেই ঘুমিয়েছি তাই সকালে সুর্য উঠার সাথে সাথেই আমাদের চোখের উপর পরলো।আর আমার সাধের ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে দিলো।চোখ ডলতে ডলতেই উঠে বসেছি।পাশে দেখি দিয়া রুহি নিহা তিন জনই মরার মতো ঘুমিয়ে আছে।এতো আলোতেও ওরা এমন মরার মতো ঘুমিয়ে আছে কিভাবে আল্লাই জানে।ওদের দেখে মনে হচ্ছে সারারাত না ঘুমিয়ে জেগেছিলো।ওদের কথা ভাবতে ভাবতেই আমার হাতের দিকে নজর পরলো।আমার হাত ভর্তি মেহেদি।কালকে সবাই মেহেদি পরলেও আমি পরিনি। তাহলে আমার হাতে মেহেদী আসলো কোথা থেকে?তবে আমি ঘুমানোর পরে দিয়া পরিয়ে দিয়েছে?

মেহেদীর ডিজাইন টা খুব সুন্দর। এক হাতে লেখা আদি আর আরেক হাতে আয়সু লেখা।আবার হাত দুইটা একসাথে করলে একটা র যুক্ত হয়ে “আদির আয়সু” লেখা টা ফুটে উঠে।এবার বুঝতে বাকি রইলো না এটা কার কাজ রাতে ঘুমিয়ে পরার পর রোদ্দুর এখানে এসে এসব করেছে।ও এতো কিছু করলো আর আমি টেরও পেলাম না!……..

চলবে,,,,,,

[এই পার্টেই শেষ করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু অনেক বড়ো হয়ে যাচ্ছে তাই আরো একটা পার্ট হবে।আজ রাতেই ইনশাআল্লাহ আরেক পার্ট দিয়ে শেষ করে দিবো।আশা করি সবাই পাশে থাকবেন]
চলবে,,,,,

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। কালকেই শেষ পার্ট দিবো ইনশাল্লাহ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here