তুমি_আমার_অধিকার🍂 পর্ব ৪+৫

#তুমি_আমার_অধিকার. 🍂
#লেখকঃ সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্ট4

অন্তী আর নিলয় পাশাপাশি বসে আছে রেস্টুরেন্টে । অন্তী নিলয়ের পছন্দের খাবার অর্ডার দিছে ।
নিলয় অবাক হয়ে বললো ক্ষিধা লাগছে তুমার,তুমার পছন্দের খাবার অর্ডার না দিয়ে আমার পছন্দের খাবার অর্ডার দিছো কেনো…
অন্তীঃ কিছু হবে না । তুমার পছন্দের খাবার তো আমি খেতে পারি সমস্যা নেই ।
নিলয়ঃ হুম..
খাবার এসে গেলো দুজন খাওয়া শুরু করলো । খাবারের একফাকে অন্তীর ফোনে কল আসে । অন্তী বিরক্ত হয়ে কলটা কেটে দেয় । নিলয় বলে উঠলো কলটা না ধরে কেটে দিলা কেনো..
-অন্তীঃ আরে তেমন কিছু না । বাদ দেও.
খাওয়া শেষ নিলয় উঠে বিল দিতে গেলে অন্তী নিলয়কে থামিয়ে দেয়, আমি দিবো । নিলয় তো অবাকের ওপর অবাক হচ্ছে কি হচ্ছে এইসব অন্তীর এত টাকা কোথার থেকে এলো আর ওই ফোন কলটা কার.. সব কিছু তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে.
রেস্টুরেন্টে থেকে বের হয়ে নিলয় বললো চলো তুমায় এগিয়ে দিয়ে আসি অধিকার অন্তীঃ তার কেনো দরকার নেই আমি চলে যেতে পারবো ।নিলয় আর জোর করলো না সে সোজা বাসায় চলে আসলো
– অনেকক্ষণ ধরে কলিংবেল চাপছে নিরার কেনো খোজ নেই আসলে নিরার সেইদিকে কেনো খেয়াল নেই সে ফোনে হদয়ের সাথে কথা বলে যাচ্ছে ।

_ অনেকক্ষণ পর দরজা খুলে দিয়ে নিরা উচ্চস্বরে বলে উঠলো কি হয়েছে এতোবার বাজাচ্ছেন কেনো??

-নিলয়ঃ তুমি দরজা খুলতে দেরি করছো কেনো‌.
-নিরাঃ আমি বিজি ছিলাম তাই দেরি হয়েছে ।
-নিলয়ঃ কি কাজ করছিলা যে বিজি ছিলা
-নিরাঃ সেটা আপনাকে জানাবো কেনো??
-নিলয়ঃ আমাকেই তো জানাবে কারণ তুমি আমার বিবাহিত বউ তুমার ওপর আমার সেই অধিকার আছে ?
নিরাঃ ও আচ্ছা তাই না, এটার জন্য আপনি আমার ওপর অধিকার দেখাচ্ছেন!! এই আপনারা ছেলেরা কি মনে করেন হুম বিয়ে করে ফেললে তার ওপর অধিকার দেখাতে হবে নাকি হুম.
– হুম দেখাতে হবে কারণ শরীয়ত অনুযায়ী স্বামীর বউয়ের ওপর অধিকার আছে. কোথাও যেতে হলে তার অনুমতি লাগে । তুমি নেও হুম হুটহাট করে চলে যাও কেনো??
-নিরাঃ আমি এত কথা শুনতে চাই না । আমি আপনার কাছ থেকে মুক্তি চাই ।
-নিলয়ঃ কি বলো তুমি মাথা ঠিক আছে তুমার মুক্তি চাও মানে কি??
-নিরাঃ হুম যা শুনছেন তা ঠিক.আমার আপনার প্রতি ইন্টারেস্ট নেই আর আমাদের তো তেমন কিছু হয় নাই । আর আমি আপনাকে কখনো ভালোবাসতে পারবো না, সো একসাথে থাকার তো কেনো প্রশ্ন আসে না, আমি ভেবে নিয়েছি আমি হদয়ের কাছে চলে যাবো ।

-নিলয়ের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে । এতক্ষণ নিরার কথা তাকে হিট করে নাই । কিন্তু তার এই কথাগুলো তাকে হিট করছে । চোখের সামনে সব ঝপসা দেখছে সে হয়তো এখন ঘুরে পড়ে যাবে কোনোমতে সে সোফায় গিয়ে বসলো ঢক ঢক করে পানি খেতে শুরু করলো ।

– আর এইদিকে নিরার কেনো পাওা নেই সে রান্না ঘরে গিয়ে নিজের জন্য রান্না করে এনে খেতে শুরু করলো. নিলয় খেয়েছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করতে প্রয়োজন মনে করলো না ।
. খাবার খেয়ে নিরা ঘুমিয়ে গেলো আর ঘুমানের আগে নিরা নিলয়কে বললো ভুলেও একসাথে ঘুমানের চেষ্টা করবেন না। না হলে এর ফল ভালো হবে না । কথাটা যেনো মনে থাকে?

_ নিলয়ের নিরার কথার প্রতি কেনো মনযোগ নেই ।

সে একটা সিগারেট নিয়ে ছাদে চলে আসলো । ছাদের ওই কোণে দুইটা চেয়ার রয়েছে একটা তার প্রিয়তমার জন্য আরেকটা তার জন্য.

_কিন্তু হায় আজকে তার বিয়ে করার বউ তার ওপর সে কেনো অধিকার রাখতে পারছে না……

নিলয় ফোনটা হাতে নিয়ে তার প্রিয় গায়ক হাবিব ওয়াহিদের গান শুনতে লাগলো ‌‌‌.. ( আমার ও প্রিয় গায়ক )

” তুমি হীনা
নিশি রাত একা চাদ এক পলক ছেয়ে রয় না ”
“তুমি হীনা
দূরের ওই আকাশ ছুয়ে যায় না ”
“” মন শুধু খোজে বেরায় “”
“” তুমাতে ঘুরে বেড়ায় একাকী “”ওওও
* এই ভুল শহরে স্মৃতির সব প্রহরে, অবুজ এই আমি কেনো তুমাকে খুজি,
“” জানি না আমি, জানো কি তুমি ??

_সকালে নিলয়ের আগে আগে ঘুম ভেঙ্গে গেলো, চোখ দুটো লাল বর্ণ হয়ে আছে । সম্ভবত এই চোখ দিয়ে অনেক ঝড় গেছে তাই লাল ।

_ উঠে ওয়াসরুমে যেতে দেখে নিরা নেই । সারাবাড়ি তন্ন তন্ন করে খুজে নিরাকে পাওয়া গেলো না । কোথাও গেলো বাড়ির কাজের লোককে জিজ্ঞাসা করতে সে বললো..

– কাজের বুুয়াঃ স্যার আফা অন্নের উঠার আগে চলে গেলো, আমাকে বললো দরজা খুলতে আমি খুলে দিয়েছে । আফা একটু ওয়েট করছে তারপর বাইকে করে একজন স্যার এসে আফাকে নিয়ে গেলো….. আমি এইটুকু জানি স্যার. এই বলে কাজের লোক চলে গেলো

নিলয় আর বুজতে বাকি রইলো না । নিরা কোথায় গেছে, আর ওই লোকটা কে?? নিলয় আর কিছু না ভেবে ওয়াস রুমে চলে চলে গেলো –

অফিসে যাওয়া হয় নি এই কয়েকদিন ভাবছিলো বিয়ে করে হানিমুন বা কোথাও ঘুরতে যাবে । তা আর কোথায় হলো অধিকারটুকু খাটানো যাচ্ছে না আর সেই খানে এইগুলো ভাবা নিছক বোকামি ছাড়া আর কিছু না.

_আর অফিস তো তাদের তাই যতদিন ইচ্ছা নিলয় ছুটি কাটাতে পারে ম্যানাজারকে সব বুজিয়ে দিয়ে আসছে…

ওয়াসরুম থেকে এসে নিলয় তার অফিসের ম্যানেজারকে কল দিলো
“হ্যালো মামুন সাহেব..

-জি স্যার কেমন আছেন ‌.

“হুম ভালো আছি তুমি কেমন আছো..
-এইতো স্যার আপনাদের দোয়ায় ভালো‌ আছি..
সব কিছু কেমন চলছে ঠিকঠাক..????
– জি স্যার সব ঠিকঠাক আপনি কেনো চিন্তা করার কিছু নেই!!

নিলয় একটু হাসি দিয়ে বলে হু আমি জানি । আমার অফিসে একমাএ তুমায় ছাড়া আর কাউকে ভরসা করা যায় না । তুমার হাতে সব কাজ দিয়ে আমি চিন্তা মুক্ত হই ।

– আচ্ছা ঠিক আছে রাখি ভালো থেকো..

– ওকে স্যার । আসসলামু ওয়ালাইকুম..

নিলয়ের ফোনে রিং বেজে উঠলো, আননোন নাম্বার থেকে..
তার ফোনে তো সবার নাম সেভ করা থাকে । তো এটা কে..
সাত পাচ ভেবে কলটা রিসিভ করলো সে..
ওপর পাশ থেকে..
” হ্যালো স্যার ঘুম ভাঙ্গে নি এখনো হুম…
– হুম কে আপনি‌.
“” ওমা আমাকে চিনতে পারেন নি এখনো আয় আল্লাহ‌‌. ( অপর পাশ থেকে)
– না
” একটু চিন্তা করুন চিন্তে পারবেন…( অপর পাশ থেকে.)
– এত পারবো না আপনি বলুন ( নিলয়)

” ওই 30 মিনিটের ভিতর নদীর ধারে আসবা.

এইবার আর নিলয় তাকে চিন্তে ভুল হলো না । এটা অন্তী!!

-নিলয়ঃ কেনো আসবো আমি পারবো না বাবা ঘুমাবো..
-অন্তীঃ আসতে বলছি আসবা, বেশি জোর করবো না । আমি বসে থাকবো ইচ্ছা হলে আসবা না হলে নেই.. কারণ বেশি জোর করার অধিকার তুমি আমাকে দেও নাই..? এই বলে অন্তী কলটা কেটে দিলো…

-নিলয় কি করবো বুজতে পারছে না । একে তো অন্তী অনেক আগের বন্ধু তারওপর কখনো এমনভাবে বলে নাই আজকে বললো তাই সে ঠিক করলে যাবে অন্তত বন্ধুর খাতিরে ।

সই 30 মিনিট পর নিলয় অন্তীর কাছে গিয়ে বলে উঠলো কেউ আমায় আসতে বললো তাই আসলাম । এটা সে যেনো অন্য কিছু না ভাবে হুম..

-অন্তীঃ চুপ কেনো কথা বলে না..
-নিলয়ঃ ওকে ফাইন, আমার এখানে আসাতে কেউ মনে হয় বিরক্ত তো চলে যাচ্ছি, এই বলে পা বাড়াতেই..

-অন্তীঃ ওই বান্দর আরেক পা এগিয়ে দেখো, তোমাকে ঘুষিয়ে দিয়ে নাক ফাটামু.. চুপচাপ এইখানে এসে বসো..

-নিলয়ঃ হুম বসলাম, আচ্ছা ওইদিন বলছিলা তুমি এই কয়েকবছর কোথায় ছিলা কি করছো সব বলবা তো আজ তো বলতে পারো হুম..

-অন্তীঃ হুম আজ বলা যায় ।

অন্তী বলা শুরু করলো ওইদিন ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে তুমায় খুজছিলাম । তারপর তুমায় কোথায় না পেয়ে একা একা হোস্টলে ফিরছিলাম, তারপর রাস্তায় কিছু বখাটে ছেলে পেলে আমার পিছু নিলো, আমি তা বুজতে পেরে সোজা ভৌ দৌড় দিলাম..
নিলয় অবাক হয়ে বললো তারপর..

অন্তী বললো.. পানি খেয়ে নেই তারপর বলছি… #তুমি_আমার_অধিকার 🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ5
অন্তী এক বোতল পানি মূহর্তের মধ্যে শেষ করে দিলো ।
নিলয় অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো,
অন্তী তুড়ি মেরে এই যে মিস্টার পরের গল্পটা শুনবেন না হুম..

-নিলয়ঃ হুম শুনবো তবে অনেক ক্ষুধা লাগছে ।
অন্তীঃ কি বলো তুমি খাওনি হুম??
নিলয়ঃ না, তবে চলো আপতত ঝাল মুড়ি খাই..
অন্তী চলো খাওয়া যেতে পারে, তবে বিলটা আমি দিবো,
– নিলয়ঃ ওকে ঠিক আছে দিয়ো…

ঝাল মুড়ি খাওয়া শেষ, নিলয় তো ঝালে শেষ, অন্তী দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো কি মিস্টার ঝাল তো মনে হয় বেশি খেয়ে ফেলছেন আপনাকে কি ওইটা দিতে হবে হুম..
নিলয়:- কোনটা, ওইটা‌ মানে কি ???
অন্তী:- ওইটা মানে বুজেন না, ওয়েট দাড়ান দেখাচ্ছি এই বলে অন্তী এগিয়ে আসছে নীলয়ের দিকে…
নিলয় বেচারা হতবাক, হয়ে এইইইইইইই নাআআআআআআ, কি করছো প্লাবিক প্লেস এটা আর তাছাড়া তুমার সেই অধিকার নেই কিন্তু হুম…???

নিলয়ের কথা শুনে অন্তীর মুখটা চুপসে গেলো, আসলেই তো তার কেনো অধিকার নেই তো নিলয়ের ওপর । কিসের টানে সে নিলয়ের ওপর অধিকার দেখাচ্ছে, কি যেনো সেই অদ্ভুত মায়া, অনুভৃতি । নিলয়কে দেখলে একটা মায়া কাজ করে অন্তীর ।

_ অনেক বার মায়া কাটাতে চাচ্ছে অন্তী কেনোভাবে নিলয়ের ওপর তার মায়া কাটাতে পারছে না….
_অন্তী অন্যমনষ্ক হয়ে আছে দেখে নিলয় অন্তীকে ধাক্কা দিয়ে বললো কি হলো!! চুপসে গেলে কেনো এখন বলো কি হলো তারপর ঘটনা বলো…

অন্তী নিলয়ের ধাক্কা খেয়ে বর্তমানে ফিরে আসলো, আচ্ছা আমি যেনো কোথায় যেনো ছিলাম, ওপসস মনে পড়ছে না ।
ও মনে পড়েছে, তারপর অন্তী বলা শুরু করলো,,

_ আমি দৌড়াতে দৌড়াতে হাপিয়ে গেলাম, আর পারছি না দৌড়াতে তখন কিছু একটার সাথে বাড়ি খেয়ে পড়ে গেলাম, আমার চোখ গুলো ঝাপসা হয়ে আছে, মাথার ওপর আকাশটা মনে হচ্ছে ভন ভন করে ঘুরছে!!

ছেলে গুলো আমার কাছে চলে এসেছে তারা আমাকে ঘিরে ধরেছে,, আমি চোখ বন্ধ করে থাকলাম, হঠৎা বিকট আওয়াজে সব নিস্তব্দ হয়ে গেলো । চারজন থেকে দুজন মাটিতে লুটিয়ে পড়লো । আমার পাশে কালো করে পাজারো গাড়ি এসে দাড়ালো, অন্ধকারে তেমন দেখা যাচ্ছে না কাউকে তবে ধারাণা করা যাচ্ছে গাড়ি থেকে যে লোকটি নামছে সে লোকটি মধ্যবয়স্ক । গাড়ির হেড লাইটের আলো আমার চোখে এসে পড়ছে বারবার
এতটুকু আমার মনে ছিলো, আস্তে আস্তে আমি নিস্তেজ হয়ে গেলাম ।
নিলয় বলে উঠলো তারপর, অন্তী তারপর কি আরো বিরাট কাহিনি যেটা শুনলে চমকে যাবে ।

নিলয়ঃ হুম বলো তাহলে দেরি করছো কেনো । আমি আর ধৈর্য ধরতে পারছি না । নিলয়ের কথা শেষ হতেই অন্তীর ফোনে রিং বেজে উঠলো,
অন্তীঃ ফোনটা ধরলো কিছুক্ষণ কথা বলে নিলয়ের কাছে এসে বললো আমার এখন যেতে হবে আর্জেন্ট কাজ আছে,

নিলয়ঃ- কি তুমার আর্জেন্ট কাজ, বলো আমি শুনি কেনো সমস্যা??

অন্তীঃ পরে আরেকদিন সময় হলে বলবো…. অন্তীর সামনে কালো পাজারো দুটি গাড়ি এসে দাড়ালো, চারজন মোটা কালো লোক এসে অন্তীকে ঘিরে ধরলো একজন গাড়ির দরজা খুলে দিলো অন্তী গাড়িতে চড়ে বসলো

শো শো করে গাড়ি গুলো ভেনিস হয়ে গেলো..

ওইদিকে নিলয় বেচারা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই ছিলো না ।

_কি হচ্ছে এইসব?? অন্তী এমন পাল্টে গেলো কিভাবে আর এতদিন সে কোথায় ছিলো এখন সে কে ? এই কথা গুলো নিলয়ের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে..

– আর কিছু ভাবতে পারছে না মাথা ধরে যাচ্ছে,, এই বলে সে মাটিতে শুয়ে পড়লো ।

নিলয়ের বন্ধু আবির অথৈ কে কল দিলো নিলয়, কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসলো ।

আবিরঃ- কিরে নিলু এখানে এইভাবে শুয়ে আছিস যে?? কিছু হয়েছে..

অথৈঃ- ভাবিকে দেখছি না যে সে কোথায়….
এই তরা দুজন থামবি কি শুরু করছিস আমাকে জেরা করছিস নাকি??

আবিরঃ- কি হলো আপনার হঠৎা এত মেজাজ কেনো ।
নিলয়ঃ অন্তীর সাথে দেখা হয়েছে,
আবিরঃ- অন্তী??? ( অবাক হয়ে)
নিলয়ঃ- হুম অন্তী, দুই দিন হলো সে এসেছে ।
আগে বলে নেই অন্তী আর অথৈ ছিলো জানের জান কলিজার কলিজা । দুজন সবসময়ে এক অপরের সাথে খুনসুটিতে মেতে থাকতো… প্রিয় বন্ধু ছিলো তারা

আর সেই প্রাণের বান্ধবি এতোদিন পর ফিরে এসেছে শুনে অথৈ থম মেরে বসে আছে…

আবিরঃ- কি হলো তুমি থম মেরে বসে আছো কেনো?
অথৈঃ- অন্তী কোথায় সে কোথায় এখন আমি তার কাছে যাবো ।
নিলয়ঃ- সে একটু আগে চলে গেছে । আর অন্তী আর আগের অন্তী নেই অনেক চেন্জ হয়ে গেছে । তার সবকিছুতে কেমন জানি রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি । তারপর নিলয় তাদেরকে অন্তী যতটুকু বললো সব বললো..

অথৈঃ- কি বলিস, এটা আমাদের অন্তী না শিউর!! সে এমন পরিবর্তন কিভাবে হয়ে গেলো‌‌.. বড়লোক হয়ে গেলো কিভাবে??
নিলয়ঃ- আমিও তো তাই ভাবছি !!!

আচ্ছা তোরা থাম এখন, এত নির্জন জায়গায় এত কোলহল ভালো লাগে না । আস্তে আস্তে সব জানতে পারবো ।
অথৈঃ- আবার যদি অন্তী তর সাথে দেখা করে তাহলে আমাকে জানাবি কিন্তুু! না হলে তর খবর আছে??
নিলয়ঃ- আচ্ছা ওকে.. যা জানাবো

সাদা পান্জাবি ওয়ালা একজন লোক সাথে শাড়ি পড়া এক তরুণি, নিলয় আবির অথৈদের আড্ডার দিকে এগিয়ে আসতে থাকলো ।

“”স্যার” আসসালামু ওয়ালাইকুম..
নিলয়ঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম, আরে মনির যে ( ওই বাদাম ওয়ালা লোকটার কথা মনে আছে ওনার নাম মনির)
কেমন আছো..
মনিরঃ- জি স্যার ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন..
নিলয়ঃ- ভালো, তো এখানে কি মনে করে আসছো..
মনিরঃ- আসলে স্যার অনেকদিন ধরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় নাই । তো আইজ কাজ কাম শেষ হয়ছে আগে

_ বউটারে নিয়া একটু ঢাকা শহর ঘুরতে বের হয়ছি
নিলয়ঃ- বেশ তো ভালো করছো, আর পান্জাবিতে আর ভাবির লাল শাড়িতে তুমাদের দুজনকে তো খুব মানিয়েছে,

আচ্ছা চলো সবাই আমার ক্ষিধা লেগেছে, একসাথে বসে কোথাও খাবো ।

মনিরঃ- স্যার আপনারা যান, আমরা কেনো একদিন যাবো নে,
নিলয়ঃ- না এক্ষুণি কেনো কথা নেই, এই আবির অথৈ তরা হাদারামের মতো বসে আছিস কেনো চল…

কাল থেকে অফিসে যেতে হবে অনেকদিন হলো যাওয়া হয় নি ।
আবিরঃ- কি বলিস, এতো তাড়াতাড়ি অফিসে যাবি আর কিছুদিন থাক..

নিলয়ঃ- না রে এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে লেট করা যাবে না আর ।

শহরের ভালো রেস্টুরেন্টে গেলো তারা, ওয়াসরুম থেকে সবাই ফ্রেশ হয়ে বসলো, আবির এখনো আসলো না..

নিলয় বলে উঠলো আবির কোথায় তার ফ্রেশ হওয়া এখনো হয় নি ।.
অথৈঃ- না.
নিলয়ঃ- সে আসুক তারপর একসাথে অর্ডার করবো!!

আবির ফ্রেশ হয়ে আসতেই একজনের সাথে ধাক্কা খেয়ে আবিরের হাতের ফোনটা পড়ে গেলো..

সম্ভবত সে মেয়ে হবে..
মেয়েটিঃ- সরি, দ্রুত চলে গেলো..
আবিরঃ- ইট’স ওকে, বলে তার কি যেনো মনে হলো সে দৌড়ে গিয়ে রেস্টুরেন্টের বাহিরে গেলো সেখানে যা দেখলো তা দেখে তো সে হতভম্ব হয়ে গেলো..

এটা তো নিরা, আর নিরা এখানে কি করছে আর সে সেই ছেলেটা কে ?? আর নিলয় সে কি কিছু জানে না…

_ আবিরের ফোনে কল আসলো, নিলয়ের কল রিসিভ করতেই..
কিরে তুই‌ এখনো তর হয় নাই ফ্রেশ হওয়া জলদি আয় আমরা তর জন্য অপেক্ষা করবো কতক্ষন হুম..
আবিরঃ- আসছি বলে ফোনটা কেটে দিলো…
আবির এসে চুপচাপ নিলয়ের পাশে বসলো,
নিলয়ঃ- মহারাজার এতোক্ষন আসার দেরি হলো নে অর্ডার কর…???
আবিরের তো সেই দিকে কেনো খেয়াল নেই, তার মাথায় একটু আগে যেই সিনটা দেখছে সেটা ঘুরছে.!!

নিলয়ঃ- কিরে কি হয়েছে তর, অর্ডার কর.??
আবিরঃ- কি, কইইই ও আচ্ছা করছি অর্ডার.
সবাই তো আবিরের কান্ড দেখে হেসে উঠলো একসাথে..

খাওয়া দাওয়া শেষ নিলয় বিল মিটিয়ে দিয়ে আসলো..
মনিরঃ- স্যার আমরা তাইলে এহন যাই…
নিলয়ঃ- ওকে যাও আর মনিরের হাতে কিছু টাকা গুজে দিলো মনির অব্যশই নিতে চাইলো না । তবে নিলয়ের জোড়াজোড়িতে নিলো..

আবির তোর কি হয়েছে সে কখন থেকে দেখছি আনমনা হয়ে আছিস.. কি হয়েছে??
আবিরঃ- কিছু না এমনি..
নিলয়ঃ- সে ছাড়ার বান্দা না । অনেক জোড়াজোড়ি করতে লাগলো.. আবিরকে
আবিরঃ- আবির নিলয়ের জোড়াজোড়িতে বললো নিরাকে দেখছি একটা ছেলের সাথে বাইকে করে যেতে.. সে তোর বউ তর কাছে থাকবে, কিন্তু সে তো দেখছি অন্য কারো সাথে তর তো দেখছি বউয়ের প্রতি কেনো অধিকার নেই কেনো..

নিলয়:- আবিরের কথা শুনে চুপ হয়ে থাকলো…
আবিরঃ- কি হলো চুপ হয়ে আছিস কেনো বল..
নিলয় হঠৎাই মাথা ঘুরে পড়ে যেতে লাগলো আবির নিলয়কে ধরে ফেললো এই নিলয় নিলয় কি হয়েছে তর….
অথৈ দ্রুত পানি আন… অথৈ চলে গেলো পানি আনতে..

পানি এনে নিলয়ের চোখে মুখে ছিটিয়ে দেওয়া হলো, একটু পর নিলয়ের জ্ঞান ফিরলো, নিলয় তুই ঠিক আছিস তো..

নিলয়ঃ- হুম…
আবিরঃ- নিরার সাথে কিছু হয়েছে সব খুলে বল আমাদের..
নিলয় আবিরকে সব বলতে শুরু করলো…

( অন্তীর রহস্যটা কিছু পার্ট চলবে এক্ষুনি রহস্য খুলে দিলে গল্প শেষ হয়ে যাবে । আর গল্পটা কেমন চলছে জানাবেন ..)

চলবে

( অন্তীর রহস্যের জট খুলবে নাকি অজানা থেকে যাবে )

একদিন পর পর গল্প দেই….প্রত্যেকদিন দেওয়া টাপ হয়ে যায় অনেকটা , কাহিনি সাজাতে হয় আর সময় লাগে তাই ।আর আপনারা চাইলে নিয়মিত দেওয়ার চেষ্টা করবো..!! ধন্যবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here